দুবাইয়ে চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে হারিয়ে পাকিস্তানের জাতীয় নায়কে পরিণত হয়েছেন বাবর আজম। সেই সঙ্গে ক্রিকেটের এই ফরম্যাটে ব্যাটার র্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থানটি দখলে নিয়েছেন তিনি।
তবে ভারতকে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে দেয়ার পর পাকিস্তানি ক্রিকেট অধিনায়ককে ‘জহির উদ্দিন বাবর’ হিসেবেও অভিহিত করছেন ধারাভাষ্যকাররা। যিনি ষোলশত শতাব্দীতে মোগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং শাসন করেন ভারতবর্ষ।
তবে প্রশংসায় গা ভাসাচ্ছেন না ২৭ বছর বয়সী বাবর, মাটিতেই পা রাখছেন আসরে গ্রুপ পর্বের পাঁচ ম্যাচের সবকটিতেই পাকিস্তানকে জয় এনে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এই ব্যাটার।
সেমিফাইনালে পাকিস্তান প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি।
ইতোমধ্যে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ২৬৪ রান সংগ্রহ করেছেন পাক অধিনায়ক। গত রোববার স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেও হাফ সেঞ্চুরি করেছেন বাবর। আসরে এটি ছিল তার চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি।
টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে করেছিলেন অপরাজিত ৬৮ রান। ভারতের বিপক্ষে ওই ম্যাচে সতীর্থ ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান করেছিলেন অপরাজিত ৭৯ রান। তাদের এ ব্যাটিং নৈপুণ্যে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপে ১৩ বারের প্রচেষ্টায় প্রথম জয় পায় পাকিস্তান।
শুধু ভারতের বিপক্ষে নয়, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫১ এবং নামিবিয়ার বিপক্ষে ৭০ রান সংগ্রহ করেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর। অসাধারণ এই ইনিংস তাকে ফের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের র্যাংকিংয়ের শীর্ষস্থান ফিরিয়ে দিয়েছে।
বাবর বলেন, ‘এটি অবশ্যই গর্ব করার মতো মুহূর্ত। এই সফলতার মূলে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম ও লক্ষ্যে অবিচলতা। আমি দিনের পর দিন আরও উন্নতি করতে চাই।’
চলতি বছরের এপ্রিলে ওয়ানডে ক্রিকেটে শীর্ষ ব্যাটার হিসেবে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলির তিন বছরের টানা আধিপত্যের অবসান ঘটিয়েছিলেন বাবর আজম। সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে তিনি যথাক্রমে ১০৩, ৩২ ও ৯৪ রান করেছিলেন। সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয় পায় পাকিস্তান।
শিশুকাল থেকেই আলো ছড়ানো বাবর ইউটিউবে আঁচড় কেটেছেন ১৩ বছর বয়সে।
২০০৭ সালে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বল বয়ের দায়িত্ব পালনের সময় সাউথ আফ্রিকার জেপি ডুমিনির বলে বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে বসেছিলেন। বলটি লং অন দিয়ে সীমানা ছাড়া করেন তিনি। তার ওই ব্যাটিংয়ের স্লো মোশন রিপ্লে দেখে প্রশংসা করেন ধারাভাষ্যকাররা।
ছেলের অসাধারণ মেধা প্রমাণিত হওয়ার পরও বাবরের পিতা আজম সিদ্দিকির দৃঢ় বিশ্বাস ছিল টিনএজ আজম নিজে থেকে খুব বেশি দূর এগোতে পারবে না।
বাবর বলেন, ‘আমার জন্য আশীর্বাদের বিষয় হচ্ছে, আমার বাবা আমাকে যথেষ্ট সমর্থন দিয়ে গেছেন। সত্যিকার অর্থে তিনি এখনও আমাকে ভালো না খেললে কিংবা বাজে শট খেললে তিরস্কার করেন।’
পাকিস্তানের সাবেক ওপেনার মুদাসসর নাজার ১৯৯৯ সালে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির দায়িত্বরত অবস্থায় তাকে দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। বাবর অতীতের ঘটনা স্মরণ করে বলেন, ‘১৫ বছর বয়সে আমি যখন অনূর্ধ্ব-১৫ ক্যাম্পে, তখন একদিন জাতীয় দলের অনুশীলনে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। আর মুদাসসর আমাকে শোয়েবের বোলিংয়ের মোকাবিলার সুযোগ দেন।’
২০০৩ বিশ্বকাপে দ্রুততম গতির বল করে ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ খেতাব লাভ করেছিলেন শোয়েব আখতার। তার বলের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৬১.৩ কিলোমিটার।
বাবর বলেন, ‘শোয়েব অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলেও আমাকে উৎসাহ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই ছেলে তোমাকে বল প্রতিহত করতে হবে। আমি ওপরে বল করব। দুই তিনটা ডেলিভারির পর আমি তাকে ড্রাইভ করি।
‘তিনি কিছুটা বিরক্ত হন এবং নতুন বল দিতে বলেন। যেটি দিয়ে তিনি বাউন্সার করেন। তখন আমি হাঁসফাঁস করে আশপাশে তাকাতে থাকি। পরে নেটের বাইরে থেকে মুদাসসর আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যান।’
অবসরে যাওয়া শোয়েব গত বছর বাবরের ছোটবেলার ব্যাটিংয়ের কথা স্মরণ করেছিলেন। সাবেক এই পেইস বোলার বলেন, ‘তখন থেকেই সে মেধাবী ছিল। এখনও তেমনই আছে। নেটে সে আমাকে আগ্রাসী ব্যাট করেছিল।’
পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি সুপার লিগে কোচের দায়িত্ব পালন করা অস্ট্রেলিয়া অল রাউন্ডার টম মুডির বিশ্বাস বাবর বড় একজন তারকা হবেন। এমনকি ছাড়িয়ে যাবেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলিকে।
গত বছর তিনি বলেছিলেন, ‘তোমরা মনে কর কোহলি ভালো। বাবর আজমের ব্যাটিং দেখ। বাবরকে আমি প্রায় কোহলির মতোই মনে করি। ব্যাটার হিসেবে কোহলি কীভাবে এমন সাবলীল ব্যাট করে আমরা সেটি নিয়ে কথা বলি।
‘তবে যদি কোহলির খেলা দেখতে ভালো লাগে তাহলে বাবর আজমের খেলার দিকেও তাকাও। তার মধ্যেও আলাদা কিছু আছে।’
আরও পড়ুন:আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৭৭ রানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে সিরিজ জয় নিশ্চিত করল টাইগাররা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে বুধবার এ ম্যাচেই মাত্র ১৮ বলে ৫০ তুলে নিয়েছেন লিটন দাস। ৫ চার ও ৩ ছক্কায় তার এই ঝড় ভেঙে দিয়েছে মোহাম্মদ আশরাফুলের ২০০৭ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০ বলে ফিফটি করার রেকর্ড।
লিটনের ক্যারিয়ারসেরা ব্যাটিং আর সাকিবের দুর্দান্ত বোলিংয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই হেসেখেলে সিরিজ জিতেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। বৃষ্টিবিঘ্নিত আগের ম্যাচে প্রথম টি-টোয়ন্টিতে ২২ রানে আয়ারল্যান্ডকে হারায় বাংলাদেশ।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার লিটন দাস এবং রনি তালুকদার শুরুটা করেন। তাদের ব্যাটিংয়ে মাত্র ৩.৩ ওভারেই পঞ্চাশ রান পেরোয়, বাংলাদশের ইতিহাসে যা দ্রুততম দলীয় ফিফটি।
লিটন দাসের ফিফটিতে দুই ওপেনারের ঝড়ে ভেঙেছে গত ম্যাচেই গড়া দ্রুততম দলীয় শতকের রেকর্ডও। আগের ম্যাচে ৫৩ বলে ১০০ করা বাংলাদেশ এই ম্যাচে সে মাইলফলক ছুঁয়েছে তার চেয়েও ১০ বল কম খেলে।
লিটন (৮৩) সেঞ্চুরি এবং রনি (৪৪) ফিফটির আক্ষেপ নিয়ে আউট হলেও সাকিব-হৃদয়ের সময়োপযোগী ব্যাটিংয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে দুই শ ছাড়ানো স্কোর পায় বাংলাদেশ। বৃষ্টিতে ছোট হয়ে আসা ম্যাচে নির্ধারিত ১৭ ওভারে ৩ উইকেটে ২০২ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে টাইগাররা।
ইনিংসের প্রথম বলেই অধিনায়ক পল স্টার্লিংকে হারায় আয়ারল্যান্ড। তাসকিন আহমেদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। এরপর শুরু সাকিবের ঘূর্ণিজাদু। ম্যাচে নিজের প্রথম বলে লরকান টাকারকে (৬) শিকার করেন সাকিব।
নিজের কোটার পরের দুই ওভারে আরও দুটি করে উইকেট তুলে নিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো পাঁচ উইকেট পান বাংলাদেশ অধিনায়ক। এই মাইলফলকের সুবাদে কিউই পেসার টিম সাউদিকে ছাড়িয়ে আবারও টি-টোয়েন্টির শীর্ষ উইকেট সংগ্রাহক বনে গেছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।
মাত্র ৪৩ রানে ৬ উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। তবে শেষ দিকে ব্যবধান কমে কার্টিস ক্যাম্ফারের ৩০ বলে ৫০ এবং টেক্টর (২২) ও হিউমের (২০*) অবদানে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০০৭ বিশ্বকাপে ২০ বলে ফিফটি করেছিলেন আশরাফুল। ১৫ বছর পর সে রেকর্ড ভেঙেছেন লিটন দাস।
চট্টগ্রামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে মাত্র ১৮ বলে ৫০ তুলে নিয়েছেন ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান। ৫ চার ও ৩ ছক্কায় তার এই ঝড় ভেঙে দিয়েছে মোহাম্মদ আশরাফুলের রেকর্ড।
১৭ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে পাওয়ার প্লেও এক ওভার কমে এসেছিল। প্রথম কোনো চার ছয় মারেননি লিটন ও রনি তালুকদার। কিন্তু একটু পরই সেটা পুষিয়ে দিয়েছেন দুজন।
পরের ওভারে একটি করে চার মেরেছেন দুজন। তার পরের ওভারে একটি করে চার ছক্কায় এসেছে ১৬ রান। তিন ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ছিল ৩৭। ৭ বলে তখন লিটনের রান ১৬।
মার্ক অ্যাডেইরের পরের ওভারের প্রথম বলেই পরের দুই বলে দুটি চার মারেন লিটন। দ্বিতীয় চারে বাংলাদেশের রান ৫০ পেরিয়েছে। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে এত দ্রুত (৫১) কখনো ৫০ পেরোয়নি বাংলাদেশ। পরের ওভারে হ্যান্ডকেও একই স্বাদ উপহার দিলেন লিটন। এবার চার, চার, ছক্কা!
ওভারের তৃতীয় বল শেষে ১৫ বলে ৪৬ রান লিটনের। পরের তিন বলে চার রান তুলে মোহাম্মদ আশরাফুলের রেকর্ড নিজের করে করে নেন তিনি।
আরও পড়ুন:বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে প্রথম টি-টোয়ন্টিতে ২২ রানে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে সোমবার চার বল বাকি থাকতেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরুর আগে ১৯.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে বংলাদেশ করে ২০৭ রান।
এই সংগ্রহের পর ডিএলএস মেথডে আয়ারল্যান্ডের জন্য নতুন লক্ষ্য ঠিক করা হয় ৮ ওভারে ১০৪ রান। তবে শেষ পর্যন্ত পারেনি তারা। ৫ উইকেটে আয়ারল্যান্ড করে ৮১ রান।
শুরুতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় আয়ারল্যান্ড। আমন্ত্রণ লুফে নিয়ে মাঠে নামে দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের রেকর্ড ৮১ রান তুলেছেন দুজন।
শুরুর সে ঝড় পরে স্তিমিত হয়ে গিয়েছিল একটু। অষ্টম ওভারে লিটন আউট হয়ে যান ৪৭ রানে। ২৩ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা মারা লিটনের বিদায়ের পর নাজমুল হোসেন শান্ত একটু ধীরগতিতে এগিয়েছেন।
রনি অবশ্য ২৪ বলে ফিফটি পেয়ে গেছেন। পরে ১৪তম ওভারে দলকে ১৫৪ রানে রেখে ফিরেছেন তিনিও। ৩৮ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৭ রান করা রনি ফেরার পর বাংলাদেশ ইনিংসের গতি হারিয়েছে।
শামীম পাটোয়ারী (৩০) ও সাকিব আল হাসানের (২০*) ছোট ইনিংস দুই শ পার করিয়ে দেয়। বৃষ্টি শুরু হয় ১৯ ওভার ২ বলে ২০৭ রান তোলার পর। নির্দিষ্ট সময়ে খেলা শুরু না হওয়ায় ওখানেই শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৮ সালে টি-টোয়েন্টিতে করা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ২১৫ রান বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করা ২১১-এর দুটিরই স্কোর ছুঁই ছুঁই করেও অল্পের জন্য কোনোটিই ছাড়াতে পারল না টাইগররা।
দেড় ঘণ্টার বৃষ্টিতে বদলে যায় সব হিসাব। আবার ম্যাচ শুরু হয় বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে।
আরও পড়ুন:বৃষ্টিতে চার বল বাকি থাকতেই থেমেছে বাংলাদেশের ইনিংস। ১৯.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে প্রথম টি-টোয়ন্টিতে বংলাদেশ করেছে ২০৭ রান।
চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে সোমবার বাংলাদেশের এই সংগ্রহের পর আয়ারল্যান্ডের জন্য নতুন লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ৮ ওভারে ১০৪ রান।
শুরুতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় আয়ারল্যান্ড। আমন্ত্রণ লুফে নিয়ে মাঠে নামে দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের রেকর্ড ৮১ রান তুলেছেন দুজন।
শুরুর সে ঝড় পরে স্তিমিত হয়ে গিয়েছিল একটু। অষ্টম ওভারে লিটন আউট হয়ে যান ৪৭ রানে। ২৩ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা মারা লিটনের বিদায়ের পর নাজমুল হোসেন শান্ত একটু ধীরগতিতে এগিয়েছেন।
রনি অবশ্য ২৪ বলে ফিফটি পেয়ে গেছেন। পরে ১৪তম ওভারে দলকে ১৫৪ রানে রেখে ফিরেছেন তিনিও। ৩৮ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৭ রান করা রনি ফেরার পর বাংলাদেশ ইনিংসের গতি হারিয়েছে।
শামীম পাটোয়ারী (৩০) ও সাকিব আল হাসানের (২০*) ছোট ইনিংস দুই শ পার করিয়ে দেয়। বৃষ্টি শুরু হয় ১৯ ওভার ২ বলে ২০৭ রান তোলার পর। নির্দিষ্ট সময়ে খেলা শুরু না হওয়ায় ওখানেই শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৮ সালে টি-টোয়েন্টিতে করা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ২১৫ রান বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করা ২১১-এর দুটিরই স্কোর ছুঁই ছুঁই করেও অল্পের জন্য কোনোটিই ছাড়াতে পারল না টাইগররা।
আরও পড়ুন:
গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে চার বল বাকি থাকতেই থেমেছে বাংলাদেশের ইনিংস।
চট্টগ্রামে জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে সোমবার ১৯.২ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে প্রথম টি-টোয়ন্টিতে বংলাদেশ করেছে ২০৭ রান।
এর মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৮ সালে টি-টোয়েন্টিতে করা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ২১৫ রান বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করা ২১১-এর দুটিরই স্কোর ছুঁই ছুঁই করেও অল্পের জন্য কোনোটিই ছাড়াতে পারল না টাইগররা।
বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় আয়ারল্যান্ড। আমন্ত্রণ লুফে নিয়ে মাঠে নামে দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের রেকর্ড ৮১ রান তুলেছেন দুজন।
শুরুর সে ঝড় পরে স্তিমিত হয়ে গিয়েছিল একটু। অষ্টম ওভারে লিটন আউট হয়ে যান ৪৭ রানে। ২৩ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা মারা লিটনের বিদায়ের পর নাজমুল হোসেন শান্ত একটু ধীরগতিতে এগিয়েছেন।
রনি অবশ্য ২৪ বলে ফিফটি পেয়ে গেছেন। পরে ১৪তম ওভারে দলকে ১৫৪ রানে রেখে ফিরেছেন তিনিও। ৩৮ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৭ রান করা রনি ফেরার পর বাংলাদেশ ইনিংসের গতি হারিয়েছে।
শামীম পাটোয়ারী (৩০) ও সাকিব আল হাসানের (২০*) ছোট ইনিংস দুই শ পার করিয়ে দেয়। বৃষ্টি শুরু হয় ১৯ ওভার ২ বলে ২০৭ রান তোলার পর। নির্দিষ্ট সময়ে খেলা শুরু না হওয়ায় ওখানেই শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।
আরও পড়ুন:
টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা ২৫৮ রানকে মামুলি বানিয়ে দিল সাউথ আফ্রিকা। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৭ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয় পেয়েছে স্বাগতিক দল! রান তাড়ায় বিশ্বরেকর্ড তো হয়েছেই। পরে ব্যাট করে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও ভেঙেছে সাউথ আফ্রিকা।
সেঞ্চুরিয়নে রোববার টসে জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় সাউথ আফ্রিকা। তৃতীয় বলেই ১ উইকেট হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু সে ধাক্কাকে পাত্তা না দিয়ে ঝড় তোলেন তিনে নামা জনসন চার্লস ও কাইল মেয়ার্স। ২৭ বলে ৫১ রান করেছেন মেয়ার্স। ওদিকে ৩৯ বলেই সেঞ্চুরি পাওয়া চার্লস থেমেছেন ১১৮ রানে। ১০ চার ও ১১ ছক্কার ইনিংসটি ছিল ৪৬ বলের। ১৪ ওভারে দলকে ১৭৯ রানে রেখে ফিরেছেন চার্লস। রোভমান (২৮*) ও রোমারিও শেপার্ডের (৪১*) শেষদিকের ঝড় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে রেকর্ড ২৫৮ রান এনে দেয়।
এই বিশাল সংগ্রহও মামুলি করে তুলেছিলেন কুইন্টন ডি কক ও রিজা হেনড্রিকস। মাত্র ১০.৫ ওভার স্থায়ী ওপেনিং জুটিতে ১৫২ রান তুলেছেন দুজন। সেঞ্চুরির পরের বলেই কক বিদায় নিলেও ১২ ওভারেই ১৮০ তুলে ফেলে স্বাগতিক দল। হেনড্রিকসের (৬৮) পর মিলারও দ্রুত বিদায় নিলেও এইডেন মার্করাম (৩৮*) বিশ্বরেকর্ড গড়ে তবে ফিরেছেন। এই জয়ে ফিরল ১৭ বছর আগের স্মৃতি। ২০০৬ সালে এই সাউথ আফ্রিকা অস্ট্রেলিয়ার ৪৩৪/৪ স্কোর তাড়া করে গড়েছিল ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ সফল রান তাড়ার রেকর্ড।
রাসেল ডমিঙ্গো প্রধান কোচ থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমের অবস্থা যে ভালো না, বিরাজ করছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ— সে কথা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিজেই জানিয়েছিলেন।
পরিবেশ ঠিক করতেই কিনা ডমিঙ্গোর জায়গায় ‘কড়া হেডমাস্টার’ নামে পরিচিত চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে আবার হেড কোচের দায়িত্ব দিয়েছে বিসিবি। লঙ্কান কোচ ফেরায় মাঠের ক্রিকেটে ধারাবাহিক বাংলাদেশ। হাথুরুসিংহের দাবি, ড্রেসিংরুমের পরিবেশও বদলে গেছে।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে আজ রোববার চট্টগ্রামে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘আগের খেলোয়াড়, আগের স্কিল। আমার মনে হয় না কিছু পরিবর্তন হয়েছে, শুধু ড্রেসিংরুমের ভেতরে পরিবেশ একটু বদলেছে। কথা-বার্তা, আলোচনা বদলেছে।’
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টিতে ধবলধোলাইয়ের পর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। ফল যাইহোক, খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে সমর্থন দিচ্ছেন হাথুরু।
এই কোচ বলেন, ‘আমি দলের মধ্যে মানসিক নিরাপত্তা নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। তাদের এটা নিশ্চিত করতে চাই, ফলাফল যাইহোক, তারা ব্যর্থ হোক, তাদের মূল্য কমে যাচ্ছে না। খেলোয়াড়দের আমরা আগের মতো করেই চাচ্ছি। তাদের স্কিল আছে বলেই দলে নির্বাচন করা হয়েছে। আমার মনে হয় না আর কিছু পরিবর্তন হয়েছে। অথবা আমি জানি না আগে কী হতো। তবে স্কিল আগের মতোই আছে।’
তবে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হলে যে দলে জায়গা নেই সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন আফিফ হোসেনের উদাহরণ টেনে, ‘অন্য কাউকে দল থেকে বাদ পড়লে যা করতে হয় আফিফকেও তাই করতে হবে। তাকে আরও কাজ করতে হবে, রান করতে হবে। কোন কোন জায়গায় উন্নতি করতে হবে, এসব নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়েছে। সে ভালো করলে আর দলে জায়গা খালি থাকলে অবশ্যই দলে ফিরতে পারবে। অবশ্যই সে পারফরম্যান্সের কারণেই দলের বাইরে। চেহারার কারণে নয়।’
মন্তব্য