টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে সিরিজ হারানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশ ছেড়েছিল জাতীয় ক্রিকেট দল। তখন মিরপুরের উইকেটে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কম হয়নি।
মিরপুরের ম্যাড়মেড়ে উইকেটে প্রস্তুতির খেসারত বিশ্বকাপে দিচ্ছে টাইগাররা। বাছাইপর্বে স্কটল্যান্ডের কাছে হারের পর সুপার টুয়েলভের পর্বেও টানা তিন ম্যাচে হার বরণ করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
আবারও আলোচনায় উইকেট। বিষয়টি নজরে এসেছে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমনের।
আন্তর্জাতিক আসরে ভালো করতে ঘরোয়া ক্রিকেটে উইকেটকে আরও উন্নত করার জায়গা রয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানালেন বাশার।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আপনি আপনার সুবিধা নিতে চাইবেন। এটা খুব স্বাভাবিক। আপনি জিততে চাইবেন। কিন্তু আমাদের যদি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ভালো করতে হয়, পাওয়ার হিটার তৈরি করতে হয়, আমি মনে করি আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে উইকেটগুলো অনেক উন্নতি করতে হবে।’
নির্দিষ্ট করে ব্যাটিং উইকেট না করায় পাওয়ার হিটার তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না বলে মত দেন তিনি।
বাশার বলেন, ‘যেখানে ২০০-১৮০ রানের খেলা হবে ধারাবাহিকভাবে। আমরা আসলে এটা খুব বেশি পাই না, যখন ঘরোয়া টুর্নামেন্ট হয়। পাওয়ার প্লে ব্যবহার করা, পাওয়ার হিটার তৈরি করা সেটা খুব বেশি হচ্ছে না।
‘আমার মনে হয়, আমাদের সবচেয়ে বেশি দরকার যেটা, পরবর্তীতে আমরা যখন ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট খেলব, তখন যেন ভালো উইকেটে আমরা খেলতে পারি সব সময়।’
ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ প্রস্তুতিতে ভালো উইকেট নয় বরং জয়ের প্রতি মনোযোগ বেশি ছিল বোর্ডের, এমনটাই জানান বাশার।
সাবেক এ অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা কিন্তু বিশ্বকাপের আগে, একটা বড় বিষয় ছিল যে, দল হিসেবে বিশ্বকাপ খেলতে আসার আগে অনেকগুলো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে এসেছি। আমাদের খেলার সুযোগ আসলে খুব বেশি হয় না। জয়টা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।’
ভবিষ্যতে ব্যাটিং উইকেটবান্ধব উইকেট তৈরির পরামর্শ বাশারের। বলেন, ‘আমাদের যেটা দরকার, বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য, ভবিষ্যতের জন্য, আমাদের ঘরোয়া যে টুর্নামেন্টগুলো খেলি, সেখানে ব্যাটিং উইকেট তৈরি করা।’
আরও পড়ুন:টপ অর্ডারের অবদানের পর আজ রোববারও খেই হারিয়েছে বাংলাদেশের মিডল অর্ডার। তবে শেষের দিকে জাকের আলী ও নাসুম আহমেদের কল্যাণে উইকেটের ধস থামিয়ে লড়াই করার মতো রান সংগ্রহ করেছে টাইগাররা।
সিরিজে টিকে থাকার লক্ষ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তারই ব্যাটিং দৃঢ়তায় ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫২ রান তুলেছে টাইগাররা।
টপ অর্ডারের ব্যাটাররা এদিন অল্পবিস্তর রান করে একে একে বিদায় নিতে থাকলেও ওয়ান ডাউনে নেমে উইকেটের একপাশে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন শান্ত। ১১৯ বলে এই রান করার পথে ৬টি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান তিনি।
এছাড়া ওপেনার সৌম্য সরকারের ৩৫, শেষের দিকে জাকের আলীর অপরাজিত ৩৭ এবং নাসুম আহমেদের ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান।
আফগানদের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন নাঙ্গেয়ালিয়া খারোতে। এছাড়া রশিদ খান ও আল্লা গজনফর নেন দুটি করে উইকেট।
এদিন ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েও চতুর্থ ওভারে ফিরে যান তানজিদ তামিম। তৃতীয় ওভারে পরপর দুটি চার মেরে চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে আল্লা গজনফরকে ছক্কা হাঁকান তিনি। তার পরের বলেও বড় শটের চেষ্টা করে মিডঅনে থাকা মোহাম্মদ নবীর হাতে ধরা পড়েন তামিম।
সাজঘরে ফেরার আগে ১৭ বলে দুটি চার ও একটি ছক্কায় ২২ রানের ইনিংস খেলে যান এই ওপেনার।
এরপর অধিনায়ক শান্ত ক্রিজে এলে তার সঙ্গে ৭১ রানের জুটি গড়ে দলের সংগ্রহকে মজবুত ভিত্তি এনে দেন সৌম্য সরকার। এই দুজনের সাবলীল ব্যাটিংয়ে প্রথম পাওয়ার প্লেতে ওই একটি উইকেট হারিয়েই ৫৯ রান তুলে এগুতে থাকে বাংলাদেশ।
১৮ ওভার ৪ বলে দলীয় সংগ্রহ ৯৯-তে রেখে বিদায় নেন সৌম্য। রশিদ খানের ঘূর্ণিতে বিভ্রান্ত হয়ে লেগ বিফোর হয়ে ফেরার আগে ৪৯ বলে দুটি করে ছক্কা-চারে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে যান তিনি।
অবশ্য রিভিউ নিলে বেঁচে যেতে পারতেন সৌম্য। শান্তর সঙ্গে কথা বলে রিভিউ না নিয়ে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে মাঠ ছাড়েন তিনি। পরে টিভি রিপ্লেতে বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, রশিদের ডেলিভারিটি লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করেছে, কিন্তু রিভিউ না নেয়ায় বৃথা উইকেট বিলিয়ে দেয় বাংলাদেশ।
সৌম্যর বিদায়ের পর রানের চাকা কিছুটা শ্লথ করে সতর্ক ব্যাটিং করতে থাকেন শান্ত ও চারে নামা মেহেদী হাসান মিরাজ। ইনিংসের মাঝপথে ৭৫ বলে নিজের হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন শান্ত।
শান্ত-মিরাজের জুটি পঞ্চাশ পেরুনোর পথে ৩২ ওভার ২ বলে দলীয় সংগ্রহ দেড়শ’ ছাড়ায় বাংলাদেশের। এরপরই মেহেদীকে সাজঘরে ফেরান রশিদ।
ওই ওভারের চতুর্থ বলটি অফস্টাম্পের বাইরে পড়ে টার্ন করে ভেতরে ঢোকার সময় রুম করে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাট চালান মিরাজ। তবে বল খানিকটা নিচু হয়ে আসায় পরাস্ত হন এই অলরাউন্ডার। ৩৩ বলে ২২ রান করে দলীয় ১৫২ রানের মাথায় প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। এর ফলে ভাঙে ৫৩ রানের জুটি।
এরপর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে ফের আরেকটি জুটি গড়ায় মনোযোগী হন শান্ত। তবে স্কোরবোর্ডে ২২ রান যোগ করতেই ভাঙে এই জুটি।
মিরাজের সঙ্গে ব্যাট চালানোর সময় থেকে রানের গতি কিছুটা পড়ে গিয়েছিল। ইনিংসের ৩৫ ওভার শেষ হয়ে যাওয়ার পর বাউন্ডারির মাধ্যমে রানরেট বাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা শুরু করেন হৃদয় ও শান্ত। এর একপর্যায়ে ৩৯তম ওভারে খারোতের প্রথম বলে সীমান্তে ধরা পড়েন হৃদয়। ১৬ বলে একটি চারের সাহায্যে ১১ রান করে তিনি যখন ফিরছেন, তখন দলের সংগ্রহ চার উইকেট হারিয়ে ১৭৪।
এরপর আরও ৯ রান বাড়িয়ে দিয়ে একই কায়দায় লং-অফে ধরা পড়েন উইকেটের এক পাশ আগলে রাখা শান্ত। ১১৯ বলে ৭৬ রান করে তিনি ফেরার দুই বল পরে ক্যাচ হয়ে যান মাহমুদুল্লাহও (৩)। ফলে পরপর দুই ওভারে তিন উইকেট নিয়ে আফগানদের ম্যাচে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন খাতোরে।
শেষের দিকে নাসুম আহমেদ (২৫) ও জাকের আলীর (৩৭*) কল্যাণে ২৫২ রান তুলে ইনিংস শেষ করে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২৫২/৭ (শান্ত ৭৬, জাকের ৩৭*, সৌম্য ৩৫; খাতোরে ৩/২৮, রশিদ ২/৩২, গজনফর ২/৩৫)।
আরও পড়ুন:জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
বিএফআইইউ বুধবার রাতে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করে।
পুঁজিবাজারে কারসাজি ও আর্থিক অনিয়ম খতিয়ে দেখতে গত ২ অক্টোবর সাকিব, তার স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশির ও তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্য তলব করে সংস্থাটি।
তদন্ত শেষে সরকারের নির্দেশে বিএফআইইউ তার সব ব্যাংক হিসাব জব্দ করে।
প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজি করে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের দায়ে গত ২৪ সেপ্টেম্বর সাকিবকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
তারকা অলরাউন্ডার সাকিব জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আদাবর থানায় হওয়া হত্যা মামলার আসামি তিনি।
বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন সাকিব আল হাসান।
আরও পড়ুন:ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুঃসময় কাটিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে গেছে টাইগাররা। বুধবার সিরিজের প্রথম ম্যাচেই দারুণ বোলিংয়ে সেই দুঃসময়টা পেছনে ফেলার ইঙ্গিত দিয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করে ২৩৫ রানে অলআউট হয়ে গেছে আফগানিস্তান।
আফগানদের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৪ রানের ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ নবী। ৭৯ বল মোকাবিলা করে তিনটি ছক্কা ও চারটি চারের সাহায্যে এই রান করেন তিনি। এছাড়া ৯২ বল খেলা অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদির ব্যাট থেকে এসেছে ৫২ রান।
বাংলাদেশের হয়ে চারটি করে উইকেট নিয়ে আফগান ব্যাটিং লাইন-আপ ধসিয়ে দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ।
এদিন ব্যাটিংয়ে নেমে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে আফগানিস্তান। এরই ধারাবাহিকতায় ৩৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় তারা। এরপর শহীদির সঙ্গে ৩৬ রানের জুটি গড়ে উইকেটের ভাঙন ঠেকান গুলবদিন নাইব। তাসকিনের বলে ক্যাচ দিয়ে ২২ রান করে গুলবদিন ফিরে গেলে ২০ ওভারে ৭১ রান তুলতে পাঁচ উইকেট হারায় আফগানরা।
এরপর মোহাম্মদ নবীকে সঙ্গে নিয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান শহীদি। দলীয় সংগ্রহ ৭১ থেকে ১৭৫-এ তোলার পর তাসকিনের বলে বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় শহীদিকে। এরপর আবারও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও ছোট ছোট কয়েকটি জুটিতে ২৩৫ রান তুলে ফেলেন আফগান ব্যাটাররা। তবে ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে ফজল হক ফারুকি রান আউট হয়ে গেলে অলআউট হয়ে যায় আফগানিস্তান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান: ২৩৫/১০ (নবী ৮৪, শহীদি ৫২; মোস্তাফিজ ৪/৫৮, তাসকিন ৪/৫৩)।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ইনিংস ও ২৭৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে সফরকারীদের করা ৫৭৫ রানের বিপরীতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৫৯ রানে অলআউট হয় নাজমুল শান্তর দল। স্বাভাবিক হিসাবেই ফলো-অনে পড়ে স্বাগতিকরা। ৪১৬ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসেও খেই হারান বাংলাদেশের ব্যাটাররা।
প্রথম ইনিংসের চেয়েও ভয়ানক ব্যাটিং বিপর্যয়ের কবলে পড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৩ রানে অলআউট হলে বিশাল হারের মুখ দেখার পাশাপাশি ২-০ ব্যবধানে সিরিজ হারে টাইগাররা।
টেস্টের তৃতীয় দিনেই লজ্জার পরাজয় দেখতে হলো বাংলাদেশকে। তৃতীয় দিনের শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ৪৮ রানে ৮ উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর অবশ্য মুমিনুল-তাইজুল জুটিতে দারুণ এক প্রতিরোধ গড়ে তোলে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার লাঞ্চের পরপরই প্রথম ইনিংসে ১৫৯ রানে অলআউট হয়ে ফলোঅনে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে ৪১৬ রানে পিছিয়ে থেকে আবারও ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিকরা।
আগের দিনের ৪ উইকেট খুইয়ে ৩৮ রান পুঁজিতে খেলতে নিয়ে তৃতীয় দিনের শুরুতে ফের খেই হারায় নাজমুল শান্তর দল। স্কোর বোর্ডে ১০ রান যোগ হতেই বিদায় নেযন আরও চার ব্যাটার। দলীয় ৪৬ রানের পর স্কোর বোর্ডে ২ রানের মাঝে সাজঘরে ফেরেন শান্ত, মুশফিক, মিরাজ ও অঙ্কন। এর মাঝে রাবাদা একাই নেন ৩ উইকেট।
অধিনায়ক নাজমুল শান্তকে বিদায় করে দিয়ে বাংলাদেশের মিডল অর্ডারে প্রথম আঘাত হানেন রাবাদা। ব্যক্তিগত ৯ ও দলীয় ৪৬ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর ডাক মেরে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মুশফিক। পিটারসনের বলে জর্জির তালুবন্দি হন তিনি। এরপর মিরাজ-অঙ্কন দুজনকেই বিদায় করেন রাবাদা।
অভিষিক্ত অঙ্কনের শূন্য রানে বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন তাইজুল। তাকে সঙ্গে নিয়ে মোটামুটি বড় জুটি গড়েন মুমিনুল হক। অর্ধশতক তুলে নেন মুমিনুল হক।
৮ উইকেটে ১৩৭ রান নিয়ে লাঞ্চের পর নেমে আরও ১৪ রান যোগ করে ফেরেন মুমিনুল। মুথুসামির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে তার ৮১ রানের ইনিংস শেষ হয়। এরপর নবম উইকেটে ১০৩ রানের জুটি গড়া তাইজুলও দ্রুত ফিরে যান। কেশব মহারাজকে তার বলেই ক্যাচ দিয়ে ৩০ রানে থামেন তিনি। শেষ হয় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।
আরও পড়ুন:প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার ৫৭৫ রানের পাহাড়সম সংগ্রহের পর ব্যাটিংয়ে নেমে বিপর্যয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। আলোক-স্বল্পতায় দিনের খেলা আগেভাগে শেষ না হলে ক্ষত হয়তো আরও বড় হতো।
চট্টগ্রামের ব্যাটিং স্বর্গে সাবলীল ব্যাটিং করে ৬ উইকেট হারিয়ে পৌনে ছয়শ’ রান সংগ্রহ করেছে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা।
অন্যদিকে প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে নেমে মাত্র ৯ ওভার খেলতে গিয়েই চার ব্যাটারকে খুইয়ে বসেছে বাংলাদেশ, সংগ্রহ মাত্র ৩৮ রান। অর্থাৎ এখনও ৫৩৭ রান পিছিয়ে আছে শান্তর দল। ফলো-অন এড়াতেও প্রয়োজন আরও অন্তত ৩৩৮ রান। বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনে ব্যাট হাতে নামবেন মুমিনুল হক (৬) ও নাজমুল হোসেন শান্ত (৪)।
সাগরিকায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে তিনটি শতক ও দুটি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংসে ভর করে ৬ উইকেট হারিয়ে ৫৭৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ১৭৭ রানের ইনিংস খেলেন ওপেনার টনি ডি জর্জি।
এছাড়া ট্রিস্টান স্টাবস ১০৬ ও দিনের শেষভাগে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান ভিয়ান মুল্ডার। ১০৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিনি। আর তার সঙ্গে ৬৮ রানে অপরাজিত ছিলেন সেনুরান মুথুসামি। তিনিও টেস্টে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন আজ। এছাড়া ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন ডেভিড বেডিংহ্যাম।
বাংলাদেশের পক্ষে ১৯৮ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট নেন তাইজুল। অপর উইকেটটি পেয়েছেন নাহিদ।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমেই শুরু হয়ে যায় বাংলাদেশি ব্যাটারদের যাওয়া-আসার খেলা। রাবাদার বলে প্রথম ওভারেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে ফেরেন সাদমান। এরপর পঞ্চম ওভারে ফের রাবাদার শিকার হন জাকির। কট বিহাইন্ড হন তিনিও। অথচ বুঝতেই পারেননি বল তার ব্যাটে লেগেছে। উল্টো একটি রিভিউ নষ্ট করে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
২১ রানে দুই উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে আর আট রান যোগ করতে না করতেই স্লিপে দাঁড়ানো প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করামের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মাহমুদুল হাসান জয়। ফেরার আগে তিনি অবশ্য এ পর্যন্ত ইনিংস-সর্বোচ্চ ১০ রান করতে সক্ষম হন।
২৯ রানে তিন উইকেট হারিয়ে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে হাসান মাহমুদকে ক্রিজে পাঠায় বাংলাদেশ। তবে প্রতিরোধ গড়তে গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন তিনিও। কেশভ মহারাজের বলে বোল্ড হয়ে ফেরার আগে ৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
হাসানের বিদায়ের পর মাঠে নামেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ৬ বল খেলে একটি বাউন্ডারির সাহায্যে ৪ রানে অপরাজিত তিনি। তার সঙ্গে অপরাজিত রয়েছেন মুমিনুল হক। ১০ বলে তিনিও একটি বাউন্ডারি মেরে করেছেন ৬ রান। এ দুই ব্যাটারের দিকেই আগামীকাল তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস: ৫৭৫/৬ ডিক্লে. (ডি জর্জি ১৭৭, স্টাবস ১০৬, মুল্ডার ১০৫*; তাইজুল ৫২.২-৫-১৯৬-৫, নাহিদ ২৪-২-৮৩-১)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৩৮/৪ (৯ ওভার) (অতিরিক্ত ১৩, জয় ১০, মুমিনুল ৬*; রাবাদা ৩-০-৮-২, প্যাটারসন ৩-০-১৫-১, মহারাজ ২-১-৪-১)।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে টসে জয়ী হয়ে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা।
মিরপুরে প্রথম টেস্টের একাদশ থেকে তিনটি পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ।
জ্বরের কারণে লিটন দাস এবং ইনজুরিতে পড়ে একাদশে নেই জাকের আলি। দল থেকে বাদ পড়েছেন স্পিনার নাঈম হাসান।
এ তিনজনের জায়গায় একাদশে সুযোগ হয়েছে জাকির হাসান, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও নাহিদ রানার।
বাংলাদেশের ১০৬তম খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট অভিষেক হলো উইকেটরক্ষক-ব্যাটার অঙ্কনের। ৪৩টি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তিনটি সেঞ্চুরি ও ৯টি হাফ সেঞ্চুরিতে ৩০.৬৯ গড়ে ১ হাজার ৯৩৪ রান করেছেন ২৫ বছর বয়সী অঙ্কন।
প্রথম টেস্টের একাদশ থেকে দুটি পরিবর্তন এনেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাথু ব্রিটস্কি ও ড্যান পিয়েটের জায়গায় একাদশে নেয়া হয়েছে সেনুরান মুথুসামি ও ড্যান পিটারসনকে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এ পর্যন্ত ১৫টি টেস্টে মুখোমুখি হলেও কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ১৩টিতে হার ও দুটি টেস্ট ড্র করেছে টাইগাররা।
বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, মোমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, জাকির হাসান, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন (উইকেটরক্ষক), মেহেদি হাসান মিরাজ, নাহিদ রানা, তাইজুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ।
দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশ: এইডেন মার্কর্যাম (অধিনায়ক), টনি ডি জর্জি, ট্রিস্টান স্টাবস, ডেভিড বেডিংহ্যাম, রায়ান রিকেলটন, কাইল ভেরেইনি, উইয়ান মুল্ডার, কেশব মহারাজ, কাগিসো রাবাদা, সেনুরান মুথুসামি ও ড্যান পিটারসন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হিসেবে আর দায়িত্ব পালন করতে চান না নাজমুল হোসেন শান্ত।
ক্রিকেটবিষয়ক আন্তর্জাতিক একটি সংবাদমাধ্যম শনিবার এ খবর প্রকাশ করেছে।
চট্টগ্রামে ২৯ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের জন্য বাংলাদেশ দল প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ সময়ে খবরটি এসেছে।
ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ জানায়, শান্ত তার ভূমিকায় থাকতে অনিচ্ছুক এবং তিনি এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) অবহিত করেছেন।
শান্ত ওয়েবসাইটটিকে নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি এখন বোর্ডের উত্তরের অপেক্ষা করছেন।
বাঁহাতি ব্যাটসম্যান শান্ত ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সব ফরম্যাটে বাংলাদেশের অধিনায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আসন্ন দ্বিতীয় টেস্টের পর অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিতে চান বলে বোর্ডকে জানিয়েছেন শান্ত।
ঠিক কী কারণে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা স্পষ্ট নয়। সম্প্রতি ব্যাট হাতে বাজে পারফরম্যান্স নিয়ে তাকে সমালোচনার মুখে পড়ার পাশাপাশি অধিনায়ক হিসেবেও তিনি নতুন কিছু করতে পারেননি।
শান্তর অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বোর্ড এখনও কিছু বলেনি। তিনি যদি শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন, তবে কে অধিনায়কের দায়িত্ব নেবেন, তা স্পষ্ট নয়।
শান্ত ৯টি টেস্ট, ৯টি ওয়ানডে এবং ২৪টি টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ জেতাই এখন পর্যন্ত তার অধিনায়কত্বে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য