টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে দলের হয়ে সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে আসে ২০ রান। বল হাতে বেশ গোছান হলেও ১৭ রানের খরচায় নিয়েছিলেন দুই উইকেট।
দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে এসে ব্যাট হাতে সাকিব ছিলেন দুর্দান্ত। দলের বিপর্যয় দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে ৪২ রান করার পাশাপাশি দলকে নিয়ে গেছেন সুবিধাজনক অবস্থানে।
বল হাতে শুরুতে খানিকটা এলোমেলো ছিলেন সাকিব। প্রথম দুই ওভার সাকিব একেবারেই ধরে রাখতে পারেননি লাইন লেংথ। কিন্তু তৃতীয় ওভারেই এসে নিজেকে যেন ফিরে পেলেন দেশসেরা এই অলরাউন্ডার।
বিপজ্জনক হয়ে ওঠা জতিন্দর সিংকে ৪০ রানে লিটন দাসের তালুবন্দি করে সাজঘরে ফেরান এই বাঁহাতি স্পিনার। এখান থেকেই শুরু।
এরপর ব্যক্তিগত শেষ ওভারের তৃতীয় এবং চতুর্থ বলে সাকিবের শিকার বনে মাঠ ছাড়েন আয়ান খান ও নাসিম খুশি। দুই জনই মাঠ ছাড়েন মাহমুদুল্লাহর তালুবন্দি হয়ে। আর তখন স্কোরবোর্ডে ওমানের স্কোর সাত উইকেটের খরচায় ১০৫ রান।
দলের হয়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করায় ম্যাচসেরার পুরস্কারটাও নিজের করে নেন এই বাঁহাতি।
ম্যাচ শেষে সাকিব বলেন স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারে শোকাহত হয়েছে পুরো দল।
এই চ্যাম্পিয়ন অলরাউন্ডার বলেন, ‘স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারে সবাই কষ্ট পেয়েছে। সেটা কাটিয়ে আজকের ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে আমরা স্নায়ুচাপ ধরে রেখেছি। তারা ১৫ ওভার পর্যন্ত ম্যাচে ছিল। অনেক সাহস নিয়ে খেলেছে। আমাদের আরেকটা ম্যাচ আছে সেটা জিততে হবে ও দেখতে হবে ওমান-স্কটল্যান্ড ম্যাচে কী হয়।’
ব্যাট হাতে দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলা সাকিবের মতে বাংলাদেশ ১৫ থেকে ২০ রান কম করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ১৭০-১৮০ করে ফেলতে পারতাম যদি সবার ব্যাটিং ক্লিক করত। সে কারণে অনেকের ব্যাটিং অর্ডার ওঠানামা করেছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এমন হয়েই থাকে। যখন একটা দল ১০-১২ ওভার ব্যাট করে এক বা দুই উইকেট থাকে তখন স্বাভাবিকভাবে ৬-৭ নম্বর ব্যাটসম্যানরা উপরের দিকে চলে আসে।’
দলের পক্ষে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে অধিনায়ককে সব সময় সমর্থন করেন সাকিব, এমনটা উল্লেখ করে বলেন, ‘দল যখন সফল হয় তখন অধিনায়কের সিদ্ধান্তের কৃতিত্ব দেয়। আর ব্যর্থ হলে সবাই দোষ দেয়। যেহেতু ক্রিকেট খেলি, মনে করি এরকম দলের প্রয়োজনে কোচ, অধিনায়ককে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সতীর্থ হিসেবে আমরা দলের বাকিরা সেটাকে সমর্থন দেই। সব সময় চিন্তা করি কীভাবে দলে অবদান রেখে জেতানো সম্ভব।’
আইসিসির ইভেন্টে বাংলাদেশের শেষ পাঁচ জয়ের ম্যাচে ম্যাচসেরার পুরস্কার গেছে সাকিবের ঝুলিতে।
শুরুটা সাকিবের ২০১৭ সালের চ্যম্পিয়ন্স লিগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ১১৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছিলেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। যদিও ৫২ রানের খরচায় সেই ম্যাচে কোনো উইকেট ঝুলিতে পুরতে পারেননি সাকিব।
এরপর ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। বাংলাদেশ বিশ্বকাপের সেই আসরে জয়ের দেখা পেয়েছিল সাউথ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে সাকিব ম্যাচসেরার পুরস্কার বাগিয়ে নিয়েছিলেন ব্যাট হাতে ৭৫ রান এবং বল হাতে ৫০ রানের বিনিময়ে এক উইকেট নেয়ার মধ্য দিয়ে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গত বিশ্বকাপে সাকিব ছিলেন দুর্দান্ত। ১২৪ রানে অপরাজিত থাকার পাশাপাশি ৫৪ রানের খরচায় ঝুলিতে পুরেছিলেন দুটি উইকেট।
আর আফগানিস্তানের বিপক্ষে অর্ধশতকের একটি ইনিংস খেলর পাশাপাশি ২৯ রানের খরচায় শিকার করেছিলেন পাঁচ আফগান ব্যাটারকে। সবশেষ সাকিব চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ওমানের বিপক্ষের ম্যাচেও হয়েছেন ম্যাচসেরা।
যার ফলে সন্দেহের আর খুব একটা অবকাশ নেই সাদা বলের ক্রিকেটে কেন তিনি বিশ্বসেরা। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পুরোটাই সাকিবময়। বাংলাদেশের হয়ে শর্টার ফরম্যাটের এই বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রাহক সাকিব আল হাসান। তার ব্যাট থেকে এখন পর্যন্ত এসেছে ৬২৯ রান।
বল হাতেও বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাকিব নিজের ঝুলিতে পুরেছেন ৩৫টি উইকেট।
আর মাত্র ৫টি উইকেট পেলেই সাকিব নিজের নাম লেখাবেন বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হিসেবে। টপকে যাবেন পাকিস্তানি সাবেক তারকা শাহিদ আফ্রিদির করা ৩৯ উইকেটের রেকর্ডকে।
আরও পড়ুন:🐐 allrounder in white-ball cricket?
— ESPNcricinfo (@ESPNcricinfo) October 19, 2021
🏅 42 & 3-28 v Oman, T20WC 2021
🏅 51 & 5-29 v Afg, CWC 2019
🏅 124* & 2-54 v WI, CWC19
🏅 75 & 1-50 v SA, CWC19
🏅 114 & 0-52 v NZ, CT 2017
Shakib Al Hasan was named Player of the Match in all of Bangladesh's last five wins at ICC events 🤯 pic.twitter.com/cKgryNhuG3
বিশ্বখ্যাত স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদকে জাতীয় দলে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
পাকিস্তানের সাবেক লেগ স্পিনার ও বিশ্বকাপজয়ী এই খেলোয়াড়ের এ পদে কাজ করার প্রচুর অভিজ্ঞতা ও সাফল্যের রেকর্ড রয়েছে।
৫৩ বছর বয়সী মুশতাক এর আগে ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানসহ বিখ্যাত ক্রিকেট দলের দেশগুলোর স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। তার চিত্তাকর্ষ জীবনবৃত্তান্ত পাকিস্তানের বোলিং পরামর্শদাতা হিসাবেও গর্বিত।
নিয়োগের বিষয়ে মুশতাক বলেন, ‘স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অংশ হতে পারাটা আমার জন্য অনেক গর্বের। আমি এই ভূমিকার জন্য আগ্রহী এবং আমার অভিজ্ঞতা খেলোয়াড়দের দিতে চাই। কারণ, তারা খুব কোচিং যোগ্য এবং আমি সবসময় বিশ্বাস করি যে, তারা বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দলগুলোর মধ্যে একটি।’
চলতি মাসের শেষের দিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি ক্যাম্পের আগে মুশতাককে নিয়োগ দেয়া হলো। ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সমাপ্তি পর্যন্ত দলের সঙ্গে কাজ করবেন তিনি।
চলমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দারুণ ফর্মে আছেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ৫ ম্যাচ থেকে ১০ উইকেট নিয়ে আছেন উইকেট শিকারিদের তালিকার ৩ নম্বরে। প্রথম ম্যাচেই হয়েছিলেন ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’ও। বোলারদের শ্মশানঘাটখ্যাত আইপিএলে মুস্তাফিজের এমন পারফরম্যান্স বেশ ভালোভাবেই দেখছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। ফিজের এমন পারফরম্যান্স এ বছরই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বেশ কাজে দেবে বলে মত তাদের।
তবে বিপত্তি বেঁধেছে আগামী মাসে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। সেই সিরিজের জন্য মুস্তাফিজকে অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়েছে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর দেশে ফিরে ফিজকে খেলতে হবে জাতীয় দলের হয়ে। তবে অনেকেই মনে করেন বিশ্বকাপের জন্য সঠিক প্রস্তুতি নিতে মুস্তাফিজকে জিম্বাবুয়ে নয় আইপিএলে খেলতে দেওয়া উচিত। সেজন্য এ বাঁহাতি পেসারের অনাপত্তিপত্রের মেয়াদ বাড়ানো উচিত বিসিবির।
যদিও একদিন বাড়িয়ে ১ মে পর্যন্ত করা হয়েছে ফিজের ছুটি। তবে মুস্তাফিজকে পুরো সময়ের জন্যই আইপিএলে খেলানোর পক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবি পরিচালক আকরাম খান। তার মতে, মোস্তাফিজ আইপিএলে থাকলে বাংলাদেশই লাভবান হবে। গতকাল মিরপুরে গণমাধ্যমকে বলেন আকরাম খান।
তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, সে চেন্নাইয়ের হয়ে যত ম্যাচ খেলবে, ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবে, তার সঙ্গে বাংলাদেশও লাভবান হবে। কারণ, জিম্বাবুয়ের সঙ্গে খেলার চেয়ে সেখানে খেললে অনেক কিছু শিখতে পারবে। ড্রেসিংরুমের ব্যাপার আছে, বড় খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলবে। সেখানকার মান ভালো, বিভিন্ন উইকেট, বিভিন্ন মানের খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলবে। আমার মনে হয়, ওর সুযোগ পাওয়া উচিত।’
আকরাম খান আরও বলেন, ‘আমার কাছে যেটা মনে হচ্ছে, মোস্তাফিজের পারফরম্যান্স নিয়ে আমরা চিন্তিত ছিলাম। কারণ, সে গত এক বছর ধরে ধুঁকছিল। আইপিএলে কিন্তু ওর পারফরম্যান্স ভালোর দিকেই যাচ্ছে, একদম যে ভালো হচ্ছে, তা না।’
সাবেক এ অধিনায়কের মতে, ‘যেহেতু সে (মুস্তাফিজ) লঙ্গার ভার্সনে খেলে না, আইপিএলে গিয়ে যদি এ রকম ভালো করতে থাকে তাহলে বিশ্বকাপে আমরা বেশি লাভবান হব। এই জিনিসটা চিন্তা করতে পারে বোর্ড। তারপরও এটা নির্ভর করছে কোচিং স্টাফ, নির্বাচকদের চিন্তা-ভাবনার ওপর। কিন্তু সে যে ভালো করছে, এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো।’
আরও পড়ুন:দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন ২০২৭ সালের ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্ট শুরুর তিন বছর আগেই নিজেদের ৮ ভেন্যু চূড়ান্ত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান নির্বাহী ফোলেতসি মোসেকি এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকান নিউজ ২৪ ওয়েবসাইটকে মোসেকি বলেন, ‘বৈজ্ঞানিক কারণ বিবেচনা করে দক্ষিণ আফ্রিকার আট ভেন্যু বাছাই করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে দূরত্ব ও হোটেল রুমের সহজলভ্যতা বিবেচনায় রাখা হয়েছে।’
দেশটির নিয়মিত টেস্ট ভেন্যু জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স, সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্ক, কেপটাউনের নিউল্যান্ডস, ডারবানের কিংসমিড ও গেবেরার সেন্ট জর্জে’স পার্কে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের অধিকাংশ ম্যাচ।
অন্য ভেন্যুগুলো হচ্ছে, ব্লুমফন্টেইনের মানগাউং ওভাল, পার্লের বোল্যান্ড পার্ক ও ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্ক।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের আসর আয়োজন করতে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ে। এর আগে ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল তারা। তবে এ টুর্নামেন্টের আয়োজনে নামিবিয়া এবারই প্রথম।
আয়োজক দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেও আসরের টিকিট পেতে আফ্রিকান কোয়ালিফায়ারে খেলতে হবে নামিবিয়াকে।
তিনজন স্বাধীন নারী পরিচালক নিয়োগ দিয়ে ইতিহাস গড়েছে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লুআই)। ক্রিকেট বিশ্বে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল।
নিয়োগ পাওয়া তিন নারী পরিচালক হলেন- ডায়ান ক্যাম্পবেল, লুইস ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও ডেবরা করিয়াট-প্যাটন। এক বছরের মেয়াদে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত কাজ করবেন তারা।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিডব্লুআই জানিয়েছে, ক্যাম্পবেল, ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও করিয়াট-প্যাটনকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বোর্ড। আপাতত তাদের মেয়াদ এক বছর, যা শেষ হবে আগামী বছরের মার্চ।
তিনজনের মধ্যে প্রথমবার পরিচালকের দায়িত্ব পেলেন ক্যাম্পবেল ও ভিক্টর-ফ্রেডেরিক। অন্যদিকে ২০১৯ থেকে ২০২১ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন করিয়াট-প্যাটন।
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলকে উপহার প্রদানের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গণভবনে আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসে নারী দলের প্রত্যেককে উপহার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেটারদেরও গণভবনে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। তার আমন্ত্রণে দুই দলের নারী ক্রিকেটাররা ক্রীড়াপ্রেমী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
অস্ট্রেলিয়ার পুরো ক্রিকেট দলের সঙ্গে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের ১৫ স্কোয়াডের সদস্যরা গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে। এর বাইরে ক্রীড়ামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
সেখানে নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে সবাইকে নিয়ে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ক্রিকেটারদের হাতে উপহার তুলে দেন তিনি। সাদা রংয়ের একটি প্যাকেট তুলে দেওয়া হয় মারুফা-নিগারদের হাতে।
বিসিবির পরিচালক এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী দুই দলের নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সুযোগ সুবিধার খোঁজ খবরও নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভালো খেলতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রী মেয়েদের অনুপ্রাণিত করেছেন। ক্রিকেটারদের হাতে উপহারও তুলে দিয়েছেন।’
তিনি জানান, ‘সবাইকে ঈদের পর আবার দাওয়াত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেসময় আমাদের সাবেক অনেক ক্রিকেটারসহ পুরো দলকে যেতে বলেছেন তিনি।’
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে এসেছে অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দল। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছে অজিরা। মঙ্গলবার এক ম্যাচ হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে।
গত ১৭ মার্চ ঢাকায় পা রাখে অ্যালিসা হিলির দল। ২১ মার্চ থেকে শুরু হয় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
আইসিসি উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত এই সিরিজে বাংলাদেশ ধবলধোলাই হয়েছে। এরপর এক ম্যাচ হাতে রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজও ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে অজিরা। বৃহস্পতিবার সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
মাঠের খেলায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোনোভাবেই সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে সম্পর্কের দিক থেকে এগিয়ে থাকল। বন্ধুত্বের জায়গা থেকে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যালিসা হিলিকে ঢাকাইয়া জামদানি শাড়ি উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
সিলেটে প্রথম টেস্টে ৩২৮ রানে হারের পর চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টেও বড় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারণী এ ম্যাচের পঞ্চম দিন বুধবার ১৯২ রানের জয় তুলে নিয়েছে সফরকারীরা।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ছয় ব্যাটারের অর্ধশতকে ৫৩১ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান তুলতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা।
প্রথম ইনিংসে সাড়ে তিন শর বেশি লিড নেয়া শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয়টিতে সাত উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। তাতে ৫১১ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।
বিশাল এ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ইনিংসের মতো হতাশাজনক ব্যাটিং না করলেও বিজয় থেকে অনেক দূরেই থেমে যায় টাইগারদের রানের চাকা। মমিনুল হক ও মেহেদি হাসান মিরাজের জোড়া অর্ধশতকে ৩১৮ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারী।
এ জয়ের মধ্য দিয়ে ২-০তে সিরিজ জিতে নিল শ্রীলঙ্কা। ব্যাটে-বলে নৈপুণ্য দেখিয়ে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ ও প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন কামিন্দু মেন্ডিস।
আরও পড়ুন:সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ৫১১ রানের বিশাল টার্গেট দিয়েছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা।
প্রথম ইনিংসে পাওয়া ৩৫৩ রানের লিডকে সাথে নিয়ে ৭ উইকেটে ১৫৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। খবর বাসসের
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ১০২ রান সংগ্রহ ছিল শ্রীলঙ্কার।
মঙ্গলবার চতুর্থ দিন ১ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান যোগ করে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা।
৩৯ রান নিয়ে খেলতে নেমে সাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হবার আগে ৫টি চারে ৫৬ রান করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ৩ রানে শুরু করা প্রবাথ জয়সুরিয়া ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্যপ্রান্তে বিশ্ব ফার্নান্দো অপরাজিত ৮ রান করেন।
বাংলাদেশের হাসান মাহমুদ ৬৫ রানে ৪টি, খালেদ আহমেদ ৩৪ রানে ২টি ও সাকিব ৩৯ রানে ১টি উইকেট নেন।
মন্তব্য