গত মাসে বোর্ডের বার্ষিক সাধারণ সভায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি জানান করোনাকালেও বড় অঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে বোর্ডের। টাকার অঙ্কে সেটি ৯০০ কোটি। যেটির বড় অংশ ব্যবহার হওয়ার কথা ক্রিকেটের উন্নয়নে।
ক্রিকেটের উন্নয়নের ভেতর ক্রিকেটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্টেডিয়ামের অবকাঠামোগত উন্নয়নও অন্তর্গত। বিসিবির সভাপতির পদে নাজমুল হাসান পাপন বসার পর ক্রিকেটের অবকাঠামোর আমূল পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু বোর্ডের নজর এড়িয়ে গেছে সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ।
দীর্ঘদিন ধরে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারির দর্শকদের বসার চেয়ারগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে কতটা অযত্নের শিকার সেগুলো। বেশির ভাগ চেয়ার ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। নেই কোনো সংস্কারের উদ্যোগ।
আন্তর্জাতিক সিরিজ আয়োজনের আগে স্টেডিয়ামের বাইরে জোড়াতালি দিয়ে চলে সংস্কারের কাজ। যা স্থায়ী থাকে সিরিজ শেষ হওয়া পর্যন্ত। কিছুদিনের মধ্যে আগের জীর্ণদশায় ফিরে যায় সেগুলো।
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো দুই আন্তর্জাতিক হেভিওয়েট দলের বিপক্ষে সিরিজের সময় পাওয়া গেছে মিরপুরের স্টেডিয়াম নিয়ে বোর্ডের অবহেলার নজির। গ্যালারির চেয়ারগুলোর নিচে জমে গেছে শ্যাওলার আস্তর।
যা ইঙ্গিত দেয় দীর্ঘদিন ধরে চলছে না পরিচ্ছন্নতার কাজ। বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নিয়মিতভাবে তদারকি করা হচ্ছে স্ট্যান্ড, গ্যালারি, বক্সসহ ও স্টেডিয়ামের পুরো এলাকার।
শুধু গ্যালারির অবস্থাই যে জরাজীর্ণ তা নয়। অত্যাধুনিক মিডিয়া সেন্টার থেকে ইনডোরে যাবার পথটি খুবই বিপজ্জনক রূপ নিয়েছে। যাতায়াতের পথে এয়ার কন্ডিশনের পানি মেঝেতে জমে থাকে প্রায় সময়। ফলে শ্যাওলা জমে রাস্তাটি এতটাই পিচ্ছিল হয়ে গেছে যে যেকোনো সময় পা ফসকে ঘটতে পারে বিপত্তি।
হোম অফ ক্রিকেটের পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা এমন হওয়ার কথা ছিল না। লম্বা সময় ধরে এই অবস্থা এখন বিসিবির নিত্যনৈমিত্যিক চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা কিনা দেখার কেউ নেই। টনক নড়ছে না গ্রাউন্ডস কমিটির সদস্যদের।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে একটা উত্তরই আসে কর্তাদের কাছ থেকে। বিষয়টি চলমান প্রক্রিয়া, সংস্কারের কাজ চলছে। আর সম্প্রতি অজুহাতের খাতায় যুক্ত করা হয়েছে করোনাকে।
করোনার সময়ে সিরিজ উপলক্ষে মাঠের সংস্কারকাজ ও স্টেডিয়ামের বাইরে বিজ্ঞাপনের ঝকঝকে ব্যানার লাগানো হলেও ভেতরের অধিকাংশ জায়গায় পড়েনি পরিচ্ছন্নতার ছাপ। একই হাল সাংবাদিকদের জন্য বরাদ্দ প্রেসবক্সেরও।
সংবাদকর্মীরা যেখানে বসে ম্যাচ কভার করেন সেখানে রয়েছে চেয়ার সংকট। ম্যাচের সময় অনেক সংবাদকর্মীকে বসার জায়গা না পেয়ে দাঁড়িয়ে থেকে করতে হয় তাদের কাজ। চেয়ার যে কয়টা আছে তার অধিকাংশই ভাঙা।
সবকিছু দেখার পর প্রশ্ন আসাটা স্বাভাবিক, রিজার্ভে ৯০০ কোটি টাকা থাকার পরও স্টেডিয়ামের অবকাঠামো উন্নয়নে বিসিবির কি কোনো ফান্ড বরাদ্দ নেই? নাকি এমনটা হচ্ছে দেখভালের দায়িত্বে থাকা লোকজনের দায়িত্বে গাফিলতির কারণে?
এ বিষয়ে নিউজবাংলা কথা বলেছে বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির ম্যানেজার আবদুল বাতেনের সঙ্গে। উত্তরে জানা গেছে চিরাচরিত চলমান প্রক্রিয়া ও করোনার দোহাই।
বাতেন বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া সিরিজের সময় আমরা কিছু উন্নয়নের কাজ করেছি। বোর্ডের পক্ষ থেকে কী দিয়েছে সেটা ওভাবে বলা যাবে না, কিন্তু আমরা ধাপে ধাপে উন্নয়ন করছি।
‘চেয়ার যেগুলো ভাঙা আছে সেগুলো পর্যায়ক্রমে সংস্কারের কাজ চলছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। করোনার কারণে কাজ বন্ধ ছিল, কিন্তু এখন ধীরে ধীরে সেগুলো সংস্কারের কাজ চলছে। কিছু চেয়ার আমরা ইতিমধ্যেই বদলে দিয়েছি। বাকিগুলোও আমরা ক্রমান্বয়ে বদলে দেব।’
তো দাবি করেন প্রেসবক্সের নিচে থেকে অনেক চেয়ার বদলে দেয়া হয়েছে। বাস্তবে তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। নতুন করে বদলে দেয়া হলেও অল্প সময়ে সেগুলো বেহাল।
বাতেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘যখন যেটা লাগে সেটা আমরা করছি। চেয়ারগুলোর ব্যাপারে খোঁজ নেয়া হয়েছে। শিগগির সেগুলো সংস্কারের আওতায় আনা হবে। স্কোর বোর্ডের দিক থেকে শুরু করে আপনাদের সাংবাদিকদের প্রেসবক্সের নিচ পর্যন্ত চেয়ারগুলো আমরা বদলে দিয়েছি। আর পানির ব্যাপার যেটা বললেন সেটা আসলেই একটু সমস্যা রয়েছে, আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’
সামনের মাস দুয়েক শেরে বাংলায় ম্যাচ নেই। বিশ্বকাপের পর শুরু হচ্ছে পাকিস্তান সিরিজ। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটের ব্যস্ততা। এর ফাঁকেই হোম অফ ক্রিকেটের জৌলুস ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট বিসিবি এমনটা জানালেন বাতেন।
তিনি বলেন, ‘মিডিয়া বক্সের বিষয়টা আমরা জানি। এটাও দ্রুত বদলে দেয়া হবে। কবে নাগাদ সেটা বলতে পারছি না, একটা গোলমাল হয়ে গেছে তো। বদল করাটা আসলে ব্যাপার না। কিছু কোম্পানি রয়েছে তাদের দিয়ে দিলে তারা বদল করে দেবে। নিজেরাও আমরা বানিয়ে নিতে পারব। শিগগিরই বদলে দেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:বিশ্বখ্যাত স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদকে জাতীয় দলে নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
পাকিস্তানের সাবেক লেগ স্পিনার ও বিশ্বকাপজয়ী এই খেলোয়াড়ের এ পদে কাজ করার প্রচুর অভিজ্ঞতা ও সাফল্যের রেকর্ড রয়েছে।
৫৩ বছর বয়সী মুশতাক এর আগে ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানসহ বিখ্যাত ক্রিকেট দলের দেশগুলোর স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেছেন। তার চিত্তাকর্ষ জীবনবৃত্তান্ত পাকিস্তানের বোলিং পরামর্শদাতা হিসাবেও গর্বিত।
নিয়োগের বিষয়ে মুশতাক বলেন, ‘স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অংশ হতে পারাটা আমার জন্য অনেক গর্বের। আমি এই ভূমিকার জন্য আগ্রহী এবং আমার অভিজ্ঞতা খেলোয়াড়দের দিতে চাই। কারণ, তারা খুব কোচিং যোগ্য এবং আমি সবসময় বিশ্বাস করি যে, তারা বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দলগুলোর মধ্যে একটি।’
চলতি মাসের শেষের দিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি ক্যাম্পের আগে মুশতাককে নিয়োগ দেয়া হলো। ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সমাপ্তি পর্যন্ত দলের সঙ্গে কাজ করবেন তিনি।
চলমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দারুণ ফর্মে আছেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। ৫ ম্যাচ থেকে ১০ উইকেট নিয়ে আছেন উইকেট শিকারিদের তালিকার ৩ নম্বরে। প্রথম ম্যাচেই হয়েছিলেন ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’ও। বোলারদের শ্মশানঘাটখ্যাত আইপিএলে মুস্তাফিজের এমন পারফরম্যান্স বেশ ভালোভাবেই দেখছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। ফিজের এমন পারফরম্যান্স এ বছরই অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বেশ কাজে দেবে বলে মত তাদের।
তবে বিপত্তি বেঁধেছে আগামী মাসে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। সেই সিরিজের জন্য মুস্তাফিজকে অনাপত্তিপত্র দেওয়া হয়েছে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর দেশে ফিরে ফিজকে খেলতে হবে জাতীয় দলের হয়ে। তবে অনেকেই মনে করেন বিশ্বকাপের জন্য সঠিক প্রস্তুতি নিতে মুস্তাফিজকে জিম্বাবুয়ে নয় আইপিএলে খেলতে দেওয়া উচিত। সেজন্য এ বাঁহাতি পেসারের অনাপত্তিপত্রের মেয়াদ বাড়ানো উচিত বিসিবির।
যদিও একদিন বাড়িয়ে ১ মে পর্যন্ত করা হয়েছে ফিজের ছুটি। তবে মুস্তাফিজকে পুরো সময়ের জন্যই আইপিএলে খেলানোর পক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবি পরিচালক আকরাম খান। তার মতে, মোস্তাফিজ আইপিএলে থাকলে বাংলাদেশই লাভবান হবে। গতকাল মিরপুরে গণমাধ্যমকে বলেন আকরাম খান।
তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, সে চেন্নাইয়ের হয়ে যত ম্যাচ খেলবে, ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবে, তার সঙ্গে বাংলাদেশও লাভবান হবে। কারণ, জিম্বাবুয়ের সঙ্গে খেলার চেয়ে সেখানে খেললে অনেক কিছু শিখতে পারবে। ড্রেসিংরুমের ব্যাপার আছে, বড় খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলবে। সেখানকার মান ভালো, বিভিন্ন উইকেট, বিভিন্ন মানের খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলবে। আমার মনে হয়, ওর সুযোগ পাওয়া উচিত।’
আকরাম খান আরও বলেন, ‘আমার কাছে যেটা মনে হচ্ছে, মোস্তাফিজের পারফরম্যান্স নিয়ে আমরা চিন্তিত ছিলাম। কারণ, সে গত এক বছর ধরে ধুঁকছিল। আইপিএলে কিন্তু ওর পারফরম্যান্স ভালোর দিকেই যাচ্ছে, একদম যে ভালো হচ্ছে, তা না।’
সাবেক এ অধিনায়কের মতে, ‘যেহেতু সে (মুস্তাফিজ) লঙ্গার ভার্সনে খেলে না, আইপিএলে গিয়ে যদি এ রকম ভালো করতে থাকে তাহলে বিশ্বকাপে আমরা বেশি লাভবান হব। এই জিনিসটা চিন্তা করতে পারে বোর্ড। তারপরও এটা নির্ভর করছে কোচিং স্টাফ, নির্বাচকদের চিন্তা-ভাবনার ওপর। কিন্তু সে যে ভালো করছে, এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো।’
আরও পড়ুন:দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন ২০২৭ সালের ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্ট শুরুর তিন বছর আগেই নিজেদের ৮ ভেন্যু চূড়ান্ত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান নির্বাহী ফোলেতসি মোসেকি এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকান নিউজ ২৪ ওয়েবসাইটকে মোসেকি বলেন, ‘বৈজ্ঞানিক কারণ বিবেচনা করে দক্ষিণ আফ্রিকার আট ভেন্যু বাছাই করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে দূরত্ব ও হোটেল রুমের সহজলভ্যতা বিবেচনায় রাখা হয়েছে।’
দেশটির নিয়মিত টেস্ট ভেন্যু জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স, সেঞ্চুরিয়নের সুপারস্পোর্ট পার্ক, কেপটাউনের নিউল্যান্ডস, ডারবানের কিংসমিড ও গেবেরার সেন্ট জর্জে’স পার্কে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপের অধিকাংশ ম্যাচ।
অন্য ভেন্যুগুলো হচ্ছে, ব্লুমফন্টেইনের মানগাউং ওভাল, পার্লের বোল্যান্ড পার্ক ও ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্ক।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের আসর আয়োজন করতে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবুয়ে। এর আগে ২০০৩ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল তারা। তবে এ টুর্নামেন্টের আয়োজনে নামিবিয়া এবারই প্রথম।
আয়োজক দেশ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেও আসরের টিকিট পেতে আফ্রিকান কোয়ালিফায়ারে খেলতে হবে নামিবিয়াকে।
তিনজন স্বাধীন নারী পরিচালক নিয়োগ দিয়ে ইতিহাস গড়েছে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সিডব্লুআই)। ক্রিকেট বিশ্বে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল।
নিয়োগ পাওয়া তিন নারী পরিচালক হলেন- ডায়ান ক্যাম্পবেল, লুইস ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও ডেবরা করিয়াট-প্যাটন। এক বছরের মেয়াদে আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত কাজ করবেন তারা।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিডব্লুআই জানিয়েছে, ক্যাম্পবেল, ভিক্টর-ফ্রেডেরিক ও করিয়াট-প্যাটনকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বোর্ড। আপাতত তাদের মেয়াদ এক বছর, যা শেষ হবে আগামী বছরের মার্চ।
তিনজনের মধ্যে প্রথমবার পরিচালকের দায়িত্ব পেলেন ক্যাম্পবেল ও ভিক্টর-ফ্রেডেরিক। অন্যদিকে ২০১৯ থেকে ২০২১ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন করিয়াট-প্যাটন।
বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলকে উপহার প্রদানের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গণভবনে আমন্ত্রণ করে নিয়ে এসে নারী দলের প্রত্যেককে উপহার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেটারদেরও গণভবনে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী। তার আমন্ত্রণে দুই দলের নারী ক্রিকেটাররা ক্রীড়াপ্রেমী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
অস্ট্রেলিয়ার পুরো ক্রিকেট দলের সঙ্গে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের ১৫ স্কোয়াডের সদস্যরা গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে। এর বাইরে ক্রীড়ামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
সেখানে নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে সবাইকে নিয়ে ছবি তোলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ক্রিকেটারদের হাতে উপহার তুলে দেন তিনি। সাদা রংয়ের একটি প্যাকেট তুলে দেওয়া হয় মারুফা-নিগারদের হাতে।
বিসিবির পরিচালক এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাদেল জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী দুই দলের নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সুযোগ সুবিধার খোঁজ খবরও নিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভালো খেলতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রী মেয়েদের অনুপ্রাণিত করেছেন। ক্রিকেটারদের হাতে উপহারও তুলে দিয়েছেন।’
তিনি জানান, ‘সবাইকে ঈদের পর আবার দাওয়াত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেসময় আমাদের সাবেক অনেক ক্রিকেটারসহ পুরো দলকে যেতে বলেছেন তিনি।’
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে এসেছে অস্ট্রেলিয়া নারী ক্রিকেট দল। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতেছে অজিরা। মঙ্গলবার এক ম্যাচ হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে।
গত ১৭ মার্চ ঢাকায় পা রাখে অ্যালিসা হিলির দল। ২১ মার্চ থেকে শুরু হয় তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ।
আইসিসি উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত এই সিরিজে বাংলাদেশ ধবলধোলাই হয়েছে। এরপর এক ম্যাচ হাতে রেখে টি-টোয়েন্টি সিরিজও ২-০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে অজিরা। বৃহস্পতিবার সিরিজের শেষ ম্যাচটিতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
মাঠের খেলায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোনোভাবেই সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে সম্পর্কের দিক থেকে এগিয়ে থাকল। বন্ধুত্বের জায়গা থেকে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যালিসা হিলিকে ঢাকাইয়া জামদানি শাড়ি উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।
সিলেটে প্রথম টেস্টে ৩২৮ রানে হারের পর চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টেও বড় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজ নির্ধারণী এ ম্যাচের পঞ্চম দিন বুধবার ১৯২ রানের জয় তুলে নিয়েছে সফরকারীরা।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ছয় ব্যাটারের অর্ধশতকে ৫৩১ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রান তুলতে সক্ষম হয় স্বাগতিকরা।
প্রথম ইনিংসে সাড়ে তিন শর বেশি লিড নেয়া শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয়টিতে সাত উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। তাতে ৫১১ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।
বিশাল এ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ইনিংসের মতো হতাশাজনক ব্যাটিং না করলেও বিজয় থেকে অনেক দূরেই থেমে যায় টাইগারদের রানের চাকা। মমিনুল হক ও মেহেদি হাসান মিরাজের জোড়া অর্ধশতকে ৩১৮ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারী।
এ জয়ের মধ্য দিয়ে ২-০তে সিরিজ জিতে নিল শ্রীলঙ্কা। ব্যাটে-বলে নৈপুণ্য দেখিয়ে প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ ও প্লেয়ার অফ দ্য সিরিজ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন কামিন্দু মেন্ডিস।
আরও পড়ুন:সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ৫১১ রানের বিশাল টার্গেট দিয়েছে সফরকারী শ্রীলঙ্কা।
প্রথম ইনিংসে পাওয়া ৩৫৩ রানের লিডকে সাথে নিয়ে ৭ উইকেটে ১৫৭ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। খবর বাসসের
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিন শেষে ৬ উইকেটে ১০২ রান সংগ্রহ ছিল শ্রীলঙ্কার।
মঙ্গলবার চতুর্থ দিন ১ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান যোগ করে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা।
৩৯ রান নিয়ে খেলতে নেমে সাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হবার আগে ৫টি চারে ৫৬ রান করেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ৩ রানে শুরু করা প্রবাথ জয়সুরিয়া ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্যপ্রান্তে বিশ্ব ফার্নান্দো অপরাজিত ৮ রান করেন।
বাংলাদেশের হাসান মাহমুদ ৬৫ রানে ৪টি, খালেদ আহমেদ ৩৪ রানে ২টি ও সাকিব ৩৯ রানে ১টি উইকেট নেন।
মন্তব্য