প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত ‘জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার্স দাবা টুর্নামেন্ট’-এর বর্ণাঢ্য উদ্বোধন হয়েছে।
রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয় এ আয়োজন। তবে বিভিন্ন রাউন্ডের খেলা রোববারই শুরু হয়েছে বিজয়নগরের হোটেল ৭১-এ।
বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন আয়োজিত ৯ দিনের এই টুর্নামেন্টে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশন ও সাউথ এশিয়ান দাবা কাউন্সিলের সভাপতি পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ। সম্মানীয় অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সহসভাপতি কে এম শহীদুল্লাহ্, দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. শোয়েব রিয়াজ আলম, ফেডারেশনের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মল্লিক এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মোহাম্মদ এ আরাফাত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো একজন মহীয়সী নারীর নামে এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পেরে আমরা অনেক গর্বিত ও আনন্দিত।’
তিনি বলেন, ‘১৯৮০-এর দশকে বাংলাদেশের জন্য মাত্র ৭০ মিলিয়ন ডলার উন্নয়ন সহায়তা জোগাড় করতে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে প্যারিসে জবাবদিহি করতে হতো। অথচ এখন সেই বাংলাদেশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কাকে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে, সুদানকে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে।’
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে। আমরা এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ।’
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে তিনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) যখন দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসেন, তখন বাংলাদেশের ৪৫ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করত। আর এখন সেটি ৯ ভাগের নিচে। করোনা মহামারি না এলে দারিদ্র্যসীমা এতদিনে হয়তো আরও নিচে নামত।’
চলতি বছর থেকে জেলা ও স্কুল পর্যায়ে দাবা টুর্নামেন্ট শুরুর ঘোষণা দেন দাবা ফেডারেশনের সভাপতি।
এ ছাড়া শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে অক্টোবরে আরও একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত বলেন, ‘আজ যে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন আমরা করতে যাচ্ছি সেটি একজন অনন্য নেতার নামে। শুধু বাংলাদেশের মানুষ নয়, পৃথিবীর সর্বত্র তাকে মানবতার জননী ও একজন শীর্ষস্থানীয় বৈশ্বিক চিন্তাবিদ হিসেবে মানুষ শ্রদ্ধা করে। বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেটি বাস্তবায়িত হয়েছে অনন্য এক নেতার কয়েক দশকের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। আমাদের গণতন্ত্র, উন্নয়ন, জীবনমান, সমৃদ্ধ অর্থনীতি- সবকিছুই অর্জন সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ নেতৃত্বের মাধ্যমে।’
তিনি বলেন, ‘সুন্দর মন মানুষের মর্যাদার পক্ষে কথা বলে। যে কারণে আমাদের গত বছরের দাবার আসর এতটা সাফল্য পেয়েছিল। অংশগ্রহণকারী, আয়োজক, সাংবাদিক ও স্টেকহোল্ডাররা জন্মদিন উদযাপনের এই টুর্নামেন্টের অংশ হতে পারাকে সত্যিকারের সম্মানের বিষয় হিসেবে বিবেচনা করেছেন।
“কারণ এই উদযাপন বাধ্যবাধকতা নয় বরং এটি ‘মানবতার জননীর’ প্রতি শ্রদ্ধা থেকে করা হয়েছে।”
আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম টুর্নামেন্ট আয়োজনে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা দেয়াসহ সব ধরনের সহায়তা দেয়ায় চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন ও কৃতজ্ঞতা জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ-এর প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ এ আরাফাত ক্রীড়া ও শিল্পের বিকাশে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন। টুর্নামেন্ট আয়োজনে সহায়তা দেয়ায় চৌধুরী নাফিজ সরাফাতকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বক্তব্য শেষে দাবার বোর্ডে ঘুঁটির চাল দিয়ে এবং ফিতা কেটে প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অতিথিরা।
প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে গত বছরের সেপ্টেম্বরে হয়েছিল জয়তু শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অনলাইন দাবা টুর্নামেন্ট। ওই টুর্নামেন্টের সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সভাপতি আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ এবং সহসভাপতি চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্রতিবছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে গ্র্যান্ডমাস্টার টুর্নামেন্ট আয়োজন করার। সে ঘোষণা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত হচ্ছে এবারের টুর্নামেন্ট।
এর আগে গত শুক্রবার টুর্নামেন্টের বিস্তারিত জানাতে বনানীর হোটেল শেরাটনে সংবাদ সম্মেলন করেন আয়োজকেরা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সচিব ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, ফেডারেশনের সহসভাপতি কে এম শহীদুল্লাহ্, দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. শোয়েব রিয়াজ আলম।
বাংলাদেশসহ ১০টি দেশের ১২ জন গ্র্যান্ডমাস্টার, ১৬ জন আন্তর্জাতিক মাস্টার ও তিনজন নারী আন্তর্জাতিক মাস্টার এই টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছেন। বিদেশি খেলোয়াড়রা হচ্ছেন: গ্র্যান্ডমাস্টার দীপ দাস গুপ্ত (ভারত), এহসান ঘাইম মাগামি (ইরান), মাসোউদ মোসাদেগপোর (ইরান), ভাদিম মালাখাটকো (বেলজিয়াম), অড্রে সুমেটস (ইউক্রেন), জুভারেভ আলেক্সান্ডার (ইউক্রেন) ও আলেক্সেই কিসলিনসি (চেক রিপাবলিক)।
আন্তর্জাতিক, ফিদে ও ক্যান্ডিডেট মাস্টারেরা হলেন শেখ মোহাম্মদ নুবাইর শাহ (ভারত), আবদিহাপার আসিলবেক (কিরগিজস্তান), মাহমুদ লোদি (পাকিস্তান), অরোক ঘোষ (ভারত), কোস্তোভ চ্যাটার্জি (ভারত), চক্রবর্তী রেড্ডি মেরেড্ডি (ভারত), মিত্রভা গুহ (ভারত), মোকশকুমার অমিতকুমার দোশি (ভারত), নিলাশ সাহা (ভারত), সামেদ সেকুয়ার সেটি (ভারত), সায়ন্তন দাস (ভারত), সোমক পালিত (ভারত), শ্রীজিত পাল (ভারত), শুভায়ন কুণ্ডু (ভারত), সংকল্প গুপ্ত (ভারত), সংকেত চক্রবর্তী (ভারত), সৌরথ বিশ্বাস (ভারত), অরপিতা মুখার্জি (ডব্লিউআইএম, ভারত), লিয়ানাগে রানিদু দিলশান (সিএম, শ্রীলঙ্কা), সাসিথ নিপুন পিউমান্থা (এফএম, শ্রীলঙ্কা) এবং রুপেশ জসওয়াল (এফএম, নেপাল)।
দেশের পাঁচ গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ, জিয়াউর রহমান, রিফাত বিন সাত্তার, মোল্লা আব্দুল্লাহ আল রাকিব, এনামুল হোসেন রাজীব; তিন আন্তর্জাতিক মাস্টার আবু সফিয়ান শাকিল, মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন, মোহাম্মদ ফাহাদ রহমান, দুই নারী আন্তর্জাতিক মাস্টার রানী হামিদ ও শারমীন সুলতানা শিরিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের খেলোয়াড়দের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
৯ রাউন্ড সুইস লিগ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠেয় এ প্রতিযোগিতায় গ্র্যান্ডমাস্টার, আন্তর্জাতিক মাস্টার, নারী গ্র্যান্ডমাস্টার ও নারী আন্তর্জাতিক মাস্টারের নর্ম অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিযোগিতায় মোট নগদ ১৫ হাজার আমেরিকান ডলার অর্থ পুরস্কার দেয়া হবে।
এর মধ্যে মূল পুরস্কার থাকবে ১৩ হাজার ডলার (চ্যাম্পিয়ন ৪০০০, রানার-আপ ২৫০০, তৃতীয় ১৫০০, চতুর্থ ১০০০, পঞ্চম ১০০০, ষষ্ঠ ১০০০, সপ্তম ১০০০, অষ্টম ১০০০ ডলার)।
বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের জন্য দুই হাজার আমেরিকান ডলার (প্রথম ৭০০, দ্বিতীয় ৫০০, তৃতীয় ৪০০, চতুর্থ ২০০ এবং পঞ্চমকে ২০০ ডলার) পুরস্কার দেয়া হবে।
বনানীর হোটেল শেরাটনে ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হবে প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠান।
আরও পড়ুন:বৃষ্টির মৌসুম শুরু হতেই ঢাকার বায়ুমানে উন্নতি লক্ষ করা যাচ্ছে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গত কয়েকদিনের মতো আজও ঢাকার বাতাস যেকোনো প্রকার অস্বাস্থ্যকর শ্রেণি থেকে বেশ দূরে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল দশটার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৭৯, একিউআই সূচকে যা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ।
সাধারণত বায়ুদূষণের সূচক (এইকিআই) শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। তারপর থেকে ১০০ পর্যন্ত একিউআই স্কোর ‘মাঝারি’।
এই সময়ে ভারতের রাজধানী দিল্লির বায়ুমানও ‘মাঝারি’ শ্রেণিতে ছিল, তবে তা ঢাকার চেয়ে কিছুটা খারাপ ছিল। দিল্লির বাতাসের সূচক ছিল তখন ৯০ এবং দূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় অবস্থান ছিল ১৭তম।
তবে অবশেষে আজ দূষিত বাতাসের শহরগুলোর তালিকার শীর্ষ পাঁচ থেকে বের হতে সক্ষম হয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। একই সময়ে ১২৪ স্কোর নিয়ে তালিকার অষ্টম স্থানে অবস্থান করছিল শহরটি। বেশ কিছুদিন পর আজ সকালে লাহোরের বায়ুমানে এত উন্নতি হয়েছে। সাধারণত ১৫০-এর নিচে নামে না লাহোরের একিউআই স্কোর।
আজ সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল চিলির সান্তিয়াগো। শহরটির সূচক ছিল ১৬২। ১৬০, ১৫৬ ও ১৫৪ স্কোর নিয়ে তার পরের তিন শহর ছিল উগান্ডার কাম্পালা, বাহরাইনের মানামা ও কঙ্গোর কিনশাসা। শীর্ষ চার শহরের বায়ুমানই ছিল ‘অস্বাস্থ্যকর’। পঞ্চম স্থানে থাকা মিসরের কায়রোর বাতাসের স্কোর ছিল এই সময় ১৩২, অর্থাৎ ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’।
কণা দূষণের এই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আর ১৫১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আজ থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী পার্বত্য ফল উৎসব ও মেলা।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র মেলার সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকছে।
আজ বিকেলে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য কমপ্লেক্সে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন পাহাড়ি সংস্থা পাহাড়ি ফলমূল নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
মেলা উপলক্ষে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান- বিজয় সরণি, সার্ক ফোয়ারা, রমনা পার্ক, বেইলি রোডের পশ্চিম পাশে রমনা পার্ক সংলগ্ন ও পূর্ব পাশে অফিসার্স ক্লাব সংলগ্ন, টিএসসি ও দোয়েল চত্বরে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স-এর সম্মুখে একটি বেলুন স্থাপন করা হয়েছে।
রাজধানীর ৩৩ বেইলি রোডে অবস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রতিদিন এই মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা কমিটির ৭ম (সপ্তম) কর্পোরেশন সভা
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিচালনা কমিটির ৭ম (সপ্তম) কর্পোরেশন সভা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এর প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধির সমন্বয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা কমিটির ২৫ (পঁচিশ) জন সদস্য আজ সোমবার নগর ভবনে উপর্যুক্ত সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভার শুরুতে ০৫ মে ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ কর্পোরেশনের সভার কার্য বিবরণী দৃঢ়ীকরণ এবং বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হয়। পরবর্তীতে সভার আলোচ্য সূচি অনুযায়ী আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা (অতি. দা.) জনাব আলী মনসুর। পরবর্তীতে, পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন প্রদান করেন।
বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ ও অনুমোদন প্রদান করায় পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এর প্রশাসক বলেন, “ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বাজেট কেবল গাণিতিক সংখ্যা নয়। এই বাজেট আমাদের কাছে সম্মানীত করদাতাদের আমানত। এই বাজেট সফলভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উপর নির্ভর করছে আমাদের সবার প্রিয় এই নগরীর ব্যবস্থাপনা এবং আমাদের দৈনন্দিন নাগরিক সমস্যার সমাধান।”
সভায় ১৯৯৮ সাল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবাসকারী নগরবাসীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও মাতৃত্বকালীন বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী ‘আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রকল্প-২ পর্যায়’ শীর্ষক প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং বিদ্যমান প্রকল্পের আওতায় সেবা প্রদানকারী এনজিওসমূহের মধ্যে সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
পরবর্তীতে, অর্থ বিভাগের পরিপত্র অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত সাময়িক শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৬০০/- (ছয় শত) টাকা হতে ৮০০/- (আট শত) টাকা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, মন্ত্রীপাড়ায় অবস্থিত অস্থায়ী মসজিদটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক একটি তিনতলাবিশিষ্ট নান্দনিক মসজিদে রূপান্তরের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব জনাব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সকল বিভাগীয়গণ উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মতিঝিলে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীর ৩০ লক্ষ টাকা ডাকাতির ঘটনায় তিন ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি’র মতিঝিল থানা পুলিশ। এ সময় ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত হাইয়েস গাড়ি ও নগদ ৮৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. শামিম রহমান (২৯), মো. মিজান রহমান (৫১) ও রবিউল ইসলাম জুয়েল (৪২)।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৭-২৯ জুন ঢাকা ও ঝালকাঠিতে পৃথক অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের সময় শামিমের হেফাজতে থাকা ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত হাইয়েস গাড়ি, মিজানের কাছ থেকে নগদ ৮০ হাজার টাকা ও জুয়েলের কাছ থেকে নয় হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
ডিএমপি’র মতিঝিল থানা সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জুন রাজধানীর ওয়ারীর নবাবপুরের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মো. খলিল মিয়া (২৬) ও ইব্রাহীম হোসেন রিফাত (২৪) নামের দুই ব্যক্তি নগদ ৩০ লক্ষ টাকা মতিঝিল সিটি ব্যাংক শাখায় জমা দেওয়ার জন্য একটি স্কুটিতে করে রওয়ানা দেন।
দুপুর পৌনে ১টার দিকে মতিঝিলের ঘরোয়া হোটেলের সামনে পৌঁছা মাত্রই ৬/৭ জনের একটি দল নিজেদের ডিবি পরিচয়ে তাদেরকে ডিবি লেখা একটি হাইয়েস মাইক্রোবাসে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যায়।
পরে দুজনকে মারধর করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা নিয়ে হাত-পা বেঁধে সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি ময়লার ডাস্টবিনে ফেলে পালিয়ে যান।
স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে সাইনবোর্ডের প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাইদুল ইসলামের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিএমপি’র মতিঝিল থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু হয়।
থানা সূত্রে আরও জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মিজানের নামে ঝালকাঠির রাজাপুর ও নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার থানায় আরো দুটি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও লুন্ঠন হওয়া অন্যান্য টাকা উদ্ধারসহ আত্মগোপনে থাকা ডাকাতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
রাজধানীর হাজারীবাগের একটি বাসায় পানির ট্যাংক পরিষ্কারের সময় বিস্ফোরণে দুই শিশুসহ একই পরিবারের চারজন দগ্ধ হয়েছেন।
শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় হাজারীবাগের জিগাতলা ট্যানারি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়।
আহতরা হলেন- মো. জিয়াউর রহমান (৪৫) ও তার দুই মেয়ে ফারিয়া (৮) ও রাইফা (৪) এবং ট্যাংক পরিষ্কারের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক বেলাল হোসেন (২৮)।
আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া শাহপরান জানান, চাচার বাসায় বেলাল হোসেন নামের এক শ্রমিক ট্যাংক পরিষ্কার করছিলেন, এ সময় চাচা জিয়াউর রহমান ট্যাংকে পর্যাপ্ত আলো না থাকায় একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব চালু করার পরই এ বিস্ফোরণ ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, ট্যাংকের ভেতরে জমে থাকা গ্যাস থেকে এমনটা হয়েছে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের রেসিডেন্ট সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বলেন, ‘বেলাল হোসেনের শরীরের ১৭ শতাংশ, জিয়াউর রহমানের ৪ শতাংশ, ফারিয়ার ৫ শতাংশ এবং রাইফার ৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।’
বর্তমানে তারা সবাই শঙ্কামুক্ত এবং জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
রাজধানীর উত্তরা এলাকায় দ্রুতগামী ট্রাকের ধাক্কায় একই পরিবারের তিন সদস্য নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন, আহসানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী অমিত (২৩), তার আত্মীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নাইমুল হক (৩২) এবং জাবেদ আলম খান (৫৫)।
উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, শনিবার (২৯ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে উত্তরা পূর্ব থানাধীন আজমপুর মোড়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। এ সময় ময়মনসিংহ থেকে আসা পাথরবোঝাই একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন বলে জানান তিনি। ওসি বলেন, অপরজনকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই মারা যান।
তিনি আরও জানান, মরদেহগুলো শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
নিহতরা কাছাকাছি একটি হাসপাতালে রোগী দেখতে গিয়েছিলেন এবং সেখান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে এবং এর চালক রাকিবুল ইসলামকে (৪২) আটক করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
রাজধানীর উত্তরায় ‘মব’ সৃষ্টি করে ‘হোটেল মিলিনা’ নামের একটি আবাসিক হোটেল দখলের চেষ্টা করা হয়। এমন অভিযোগে ৯ জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১)।
রোববার র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, শনিবার দুপুরে শফিক মোল্লা নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে হোটেল মিলিনিার মালিক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে পূর্বের ব্যবসায়িক সূত্র ধরে ‘মব’ সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। সেসময় ১০টি মোটরসাইকেলে করে কমপক্ষে ২৪ জন জোরপূর্বক হোটেলটি দখল করতে যায়।
এ সময় দূর থেকে ওই ঘটনার কিছু ছবি ধারণ করেন র্যাব-১ এর এক গোয়েন্দা সদস্য। ছবি ধারণের সময় ‘মব’ সৃষ্টিকারীরা র্যাব সদস্যদের ঘেরাও করে এবং ছবি তুলতে বাধা দেয়। এ ঘটনার পর র্যাব-১ এবং উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশের টহল দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ‘মব’ নিয়ন্ত্রণ করে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে বাধা দেওয়া এবং ‘মব’ সৃষ্টির অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে মোট ৯ জনকে আটক করা হয়। তারা হলেন, মো. সাজ্জাদ হোসেন (২৮), মো. শফিক মোল্লা (৩০), মো. আরিফুল ইসলাম (৩০), মো. তন্ময় হোসেন শাওন (২৭), মো. রবিউল ইসলাম (২৫), মো. আনোয়ার হোসেন আশিক (২৭), মো. সাইফুল ইসলাম সাগর (২৭), মো. জালাল খান (৩০) ও মো. আমির (২১)।
আটকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য