হাঁটুর ইনজুরিতে নিউজিল্যান্ড সিরিজে নেই তামিম ইকবাল। সময়টা বেশ বাজে যাচ্ছে সৌম্য সরকারের। অনভিজ্ঞ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওপেনার হিসেবে একমাত্র অভিজ্ঞ লিটন দাস।
স্বভাবত প্রশ্ন উঠতে পারে, লিটনকে সঙ্গ দেবেন কে ওপেনিংয়ে? অস্ট্রেলিয়া সিরিজে একেবারেই ‘ফ্লপ’ সৌম্য, না ভালো করা নাঈম শেখ? নাকি ওপেনার হিসেবে অপেক্ষাকৃত নতুন মুখ মাহেদী হাসান?
যেই ওপেন করুক না কেন তাদের নিয়ে চিন্তিত নন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ অ্যাশওয়েল প্রিন্স। তিনি মনে করেন এই জায়গাটা নিয়ে যে প্রতিযোগিতা চলছে তা দলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।
শনিবার শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের দেয়া এক ভিডিও বার্তায় এমনটা জানান প্রিন্স।
প্রিন্স বলেন, ‘ব্যক্তিগত ভাবে ওপেনিং ব্যাটসম্যানদের নিয়ে আমি চিন্তিত নই। জিম্বাবুয়েতে আমরা এক-দুটো ভাল জুটি পেয়েছি। অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে গত সিরিজটায় কন্ডিশন কঠিন ছিল। সহজে বল ব্যাটে আসে ও সহজে বাউন্ডারি মারা যায় সেরকম পিচ ছিল না।’
তিনি যোগ করেন, ‘এমন জায়গায় মানিয়ে নেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। জুটিটাও গুরুত্বপূর্ণ। আর ওপেনিংয়ে আমরা বেশ ভাল প্রতিযোগীতা পাচ্ছি। লিটন দাস ফিরে এসেছে। সে এমন কন্ডিশনে সুযোগ পাবে।’
গত সিরিজে বোলারদের চেয়ে ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্স ছিল দুর্বল। তবে লিটন ও মুশফিক ফেরায় সেই দুর্বলতা কেটে যাবে বলে আশা করেন সাউথ আফ্রিকান এই কোচ।
প্রিন্স বলেন, ‘লিটন ও মুশফিকের ফিরে আসাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। দলে অভিজ্ঞ ও তরুণদের মিশেল আছে। মুশফিক ও লিটনের অভিজ্ঞতা তরুণদের শেখার ব্যাপারে ভাল কাজে দেবে।’
সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ মাঠে গড়াবে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
আরও পড়ুন:ইউরোপিয়ান ফুটবলে বড় চমক। লিভারপুল, বায়ার্ন মিউনিখ নয়, বায়ের লেভারকুজেনেই থেকে কোচিং চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শাবি আলোনসো।
ট্রান্সফার মার্কেট গুরু ফাব্রিৎসিও রোমানো এক্স পোস্টে জানিয়েছেন, কিছুক্ষণ আগেই লেভারকুজেনের খেলোয়াড়দের শাবি জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি এ ক্লাবটিতেই থেকে যাচ্ছেন।
ওই পোস্টে রোমানো লেখেন, শিষ্যদের তিনি (শাবি) বলেছেন, ‘আমি তোমাদের সঙ্গে আরও ট্রফি জিততে চাই। আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জন্য প্রস্তুত হও।’
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে শাবি আলোনসো বলেন, ‘লেভারকুজেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমার মিটিং হয়েছে। সেখানে আমি তাদের জানিয়েছি, আগামী মৌসুমে আমি এখানেই নিজের কাজ চালিয়ে যাব।
‘অনেক ভেবেচিন্তে আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি মনে করি, আমার জন্য বর্তমানে এটিই (লেভারকুজেন) সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা।’
এ স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘এখানে আমার কাজ এখনও শেষ হয়ে যায়নি। ক্লাবকে আমি সাহায্য করতে চাই, খেলোয়াড়দের আরও উন্নতি করতে চাই। আমাদের ভক্তরা, (লেভারকুজেন) বোর্ডও অসাধারণ… এখানকার সবকিছুই চমৎকার।
‘ম্যানেজার হিসেবে আমি এখনও অনেক ছোট। তাই মনে করি, নিজের ভবিষ্যত সম্পর্কে এটিই আমার জন্য সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত। আমি এ কথাগুলো বলার আগে যথেষ্ট সময় নিয়েছি এবং এ বিষয়ে আমার মনে কোনো সংশয় নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘হ্যাঁ, শিষ্যদের আমি ইতোমধ্যে আমার সিদ্ধান্ত জানিয়েছি।’
এ সময় লিভারপুল ও বায়ার্ন মিউনিখ সম্পর্কে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নটি তিনি এড়িয়ে যান। বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। তারা (লিভারপুল ও বায়ার্ন) অবশ্যই অনেক বড় ক্লাব এবং দুই ক্লাবের সঙ্গেই আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তবে আমি যেখানে থাকতে চাই, সে জায়গাটিই এখন বেছে নিয়েছি।
‘নিজের ভবিষ্যত নিয়ে ভাবার সময় এখনই নয় বলে মনে করছি। বায়ের লেভারকুজেনে আমি নিজেকে আরও উন্নীত করতে চাই।’
চলতি মৌসুমে লেভারকুজেনের খেলোয়াড় ও ভক্ত-সমর্থকদের রূপকথার গালিচায় চড়িয়ে নিয়ে চলেছেন শাবি আলোনসো। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে শুধু তার দলই এখনও সব প্রতিযোগিতায় অপরাজিত।
বুন্দেসলিগায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে একপ্রকার অজেয় বায়ার্ন মিউনিখকে নাকানি-চুবানি খাইয়েছে তার শিষ্যরা। পয়েন্ট টেবিলেও বেশ বড় ব্যবধানে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে দলটি। চলতি মৌসুমে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বায়ার্নের সঙ্গে তাদের ব্যবধান ১০ পয়েন্টের। দুই দলেরই হাতে রয়েছে কেবল আটটি করে ম্যাচ।
অনেক ফুটবলবোদ্ধার মতো বায়ার্নের সাবেক অধিনায়ক ফিলিপ লামও মনে করেন, এবার লিগ শিরোপা লেভারকুজেনের ঘরেই যাচ্ছে। আর তা হলে ক্লাবটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বুন্দেসলিগার শিরোপা জয়ের স্বাদ দিতে চলেছেন আলোনসো।
শুধু তা-ই নয়, শীর্ষ চারে থাকায় আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে লেভারকুজেন।
গত ২৬ জানুয়ারি চলতি মৌসুম শেষে লিভারপুলের দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন ইয়ুর্গেন ক্লপ। ক্লপের এমন ঘোষণায় লিভারপুল সমর্থকরা চমকে গেলেও তখন থেকে ইংলিশ ক্লাবটির পরবর্তী কোচ কে হবেন, তা নিয়ে ফুটবল পাড়ায় শুরু হয় জোর আলোচনা।
এক্ষেত্রে আলোনসোর নামটি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেতে থাকে। আলোনসোর খেলোয়াড়ি জীবনের শুরুর দিকে অল রেডদের জার্সি পরে খেলার কারণে তার প্রার্থিতা বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছিল।
লিভারপুলের পরবর্তী কোচ হিসেবে আলোনসোকে দেখতে চেয়েছিলেন খোদ ক্লপও।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের ক্লপ বলেছিলেন, ‘সে (শাবি) বিশ্বমানের খেলোয়াড় ছিল। কোচিং পরিবার থেকে আসায় এ কাজেও সে ভালো মনোবল পায়।
‘খেলোয়াড়ি জীবন থেকেই সে কোচের মতো ছিল। (লেভারকুসেনকে) যে ফুটবল সে খেলাচ্ছে, যেভাবে খেলোয়াড় এনে দল সাজিয়েছে- এককথায় অনবদ্য।’
লিভারপুলের পরবর্তী কোচ সম্পর্কে ক্লপ বলেন, ‘আপনি যদি আমাকে আরও আট সপ্তাহ আগেও এই প্রশ্নটি করতে, তাহলেও আমি একই কথা বলতাম। ওর জন্য আমি যেকোনো মুহূর্তে স্থান ছেড়ে দিতে পারি।’
অন্যদিকে চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতায় ভালোভাবে টিকে থাকা সত্ত্বেও গত বছরের মার্চে কোচ ইউলিয়ান নাগেলসমানকে ছাঁটাই করে বায়ার্ন মিউনিখ। দল জয় পেলেও ‘পারফরম্যান্স ভালো নয়’ অজুহাতে তাকে সরিয়ে ডর্টমুন্ড ও চেলসির সাবেক কোচ টমাস টুখেলকে দায়িত্ব দেয় ক্লাবটি।
তবে টুখেলের কোচিংয়েও সন্তুষ্ট নয় বায়ার্ন কর্তৃপক্ষ। এমনকি চলতি মৌসুম শেষে তার সঙ্গে ক্লাবটির সম্পর্কচ্ছেদের কথাও জানিয়ে দেয়া হয়েছে ইতোমধ্যে। ফলে নতুন কোচের খোঁজে রয়েছে তারাও।
এদিকে বায়ার্নে খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার শেষ করা আলোনসো যেভাবে লেভারকুজেনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তাতে তার নামটি বায়ার্নেরও পরবর্তী কোচ হওয়ার তালিকায় উপরের দিকে স্থান পায়।
এসব বিষয় নিয়ে এতদিন টুঁ-শব্দ করেননি শাবি। তবে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এসে সব জল্পনায় জল ঢেলে দিলেন তিনি। জানিয়ে দিলেন, লেভারকুজেন থেকে সরছেন না লিভারপুল, রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখের জার্সি গায়ে মাঝমাঠ সামলানো সাবেক এ তারকা ফুটবলার।
আরও পড়ুন:প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে জায়গা করে নিয়েছেন শরফুদ্দৌলা ইবনে শহিদ সৈকত। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সৈকতের এ কীর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আইসিসি।
বৃহস্পতিবার আইসিসি প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আইসিসির বার্ষিক পর্যবেক্ষণ ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সৈকতকে আন্তর্জাতিক আম্পায়ার প্যানেল থেকে এলিট প্যানেলে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি আইসিসি আম্পায়ারদের ‘ইমার্জিং’ প্যানেলের ওপরের দিকে ছিলেন সৈকত। সেখান থেকে যে কয়জন আম্পায়ার এলিট প্যানেলে জায়গা পাওয়ার দৌড়ে ছিলেন, তাদের চেয়ে এগিয়েই ছিলেন তিনি।
কিছুদিন আগে আইসিসির এলিট প্যানেলের আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস অবসরে গেছেন। তার অবসরের পর জায়গাটি ফাঁকা পড়ে ছিল। সেই জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন সৈকত।
এক্ষেত্রে আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার-ক্রিকেট ওয়াসিম খান (চেয়ারম্যান), সাবেক খেলোয়াড় ও ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার, নিউজিল্যান্ডের সাবেক আম্পায়ার টনি হিল এবং কনসালট্যান্ট অফিসিয়েটিং এক্সপার্ট মাইক রাইলি বড় ভূমিকা রেখেছেন।
কারণ তাদের পরামর্শেই আইসিসি এলিট প্যানেলের দরজা খুলে গেছে সৈকতের। তারা আইসিসির একটি নির্বাচক প্যানেলে আছেন। তাদের ওপরই দায়িত্ব ছিল এলিট প্যানেলের জন্য একজন আম্পায়ারকে নির্বাচিত করার।
এলিট প্যানেলে যোগ দিতে পেরে দারুণ আনন্দিত সৈকত।
আইসিসিকে দেয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘আমার দেশের প্রথম আম্পায়ার হিসেবে এই প্যানেলে আসতে পারাটা আমার জন্য বিশেষ কিছু। আমার ওপর যে আস্থা রাখা হয়েছে তার প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা করব। কয়েক বছর ধরে আমি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি তার মাধ্যমে সামনে দিনের চ্যালেঞ্জ নিতে আমি প্রস্তুত।’
২০১০ সালে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজে আম্পায়ার হিসেবে অভিষেক হয় সৈকতের। এরই মধ্যে পুরুষদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে ইতোমধ্যে একশর বেশি ম্যাচ পরিচালনা করে ফেলেছেন তিনি।
আইসিসি নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালনের মতো অভিজ্ঞতাও তার ঝুলিতে রয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার টেস্ট সিরিজে আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশের এই আম্পায়ার।
শুধু তা-ই নয়, গত বছর ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি আম্পায়ার হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।
এক নজরে আইসিসির এলিট প্যানেল অফ আম্পায়ার ও ম্যাচ রেফারি
আম্পায়ার: কুমার ধর্মসেনা (শ্রীলঙ্কা), ক্রিস্টোফার গ্যাফানি (নিউজিল্যান্ড), মাইকেল গফ (ইংল্যান্ড), অ্যাড্রিয়ান হোল্ডস্টক (দক্ষিণ আফ্রিকা), রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ (ইংল্যান্ড), রিচার্ড কেটলবরো (ইংল্যান্ড), নিতিন মেনন (ভারত), আহসান রাজা (পাকিস্তান), পল রাইফেল (অস্ট্রেলিয়া), শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ (বাংলাদেশ), রডনি টাকার (অস্ট্রেলিয়া) এবং জোয়েল উইলসন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।
ম্যাচ রেফারি: ডেভিড বুন (অস্ট্রেলিয়া), জেফ ক্রো (নিউজিল্যান্ড), রঞ্জন মাদুগালে (শ্রীলঙ্কা), অ্যান্ড্রু পাইক্রফট (জিম্বাবুয়ে), রিচি রিচার্ডসন (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) এবং জাভাগাল শ্রীনাথ (ভারত)।
আরও পড়ুন:অস্ট্রেলিয়ার কাছে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ নারী দল।
বুধবার সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৮ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডে ১১৮ রানে এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ৬ উইকেটে হেরেছিল টাইগ্রেসরা।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমবারের মতো দ্বিপাক্ষীক ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নেমেই হোয়াইটওয়াশের লজ্জা পেল নিগার সুলতানার দল। এই প্রথমবার ঘরের মাঠে প্রথম কোন ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলো টাইগ্রেসরা। তবে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে তিন ম্যাচের সিরিজে এই নিয়ে তৃতীয়বার হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ। এর আগে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা নারী দলের কাছে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছিলো টাইগ্রেসরা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে সিরিজে প্রথমবার টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলে খালি হাতে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার সুমাইয়া আকতার। পরের ওভারে সাজঘরের পথ ধরেন আরেক ওপেনার ৫ রান করা ফারজানা হক।
৮ রানে ২ ওপেনারকে হারানোর পর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন মুরশিদা খাতুন ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা। কিন্তু ২৮ বলে ১৬ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি দুজন। ২১ বলে ১টি চারে ৮ রানে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে আউট হন মুরশিদা।
১১তম ওভারে জোড়া উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পাঁচ নম্বরে নামা রিতু মনি ১ ও ফাহিমা খাতুন খালি হাতে বিদায় নেন। এতে ৩২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে মহাবিপদে পড়ে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন নিগার ও স্বর্ণা আকতার। সাবধানে জুটি গড়ার চেষ্টা করছিলেন তারা।
কিন্তু দলীয় ৫৩ রানে বিচ্ছিন্ন নিগার ও স্বর্ণা। ২টি চারে ৩৯ বলে ১৬ রান করেন নিগার। জুটিতে ৩৯ বলে ২১ রান যোগ করেন নিগার ও স্বর্ণা।
এরপর ১০ রানের ব্যবধানে আরও ৩ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যাবার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ৬৩ রানে নবম উইকেট পতন হয় তাদের। কিন্তু দশম উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের উপর চড়াও হন শেষ দুই ব্যাটার সুলতানা খাতুন ও মারুফা আকতার। তাদের মারমুখী ব্যাটিংয়ে ১শর রানের এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু ২৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সুলতানা আউট হলে ৮৯ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। শেষ উইকেটে ২২ বল খেলে ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৬ রানের জুটি গড়েন সুলতানা-মারুফা। ২টি চারে ১০ রানে সুলতানা আউট হলেও ১টি বাউন্ডারিতে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন মারুফা। অস্ট্রেলিয়ার কিম গ্যারেথ ১১ রানে ও অ্যাশলে গার্ডনার ২৫ রানে ৩টি করে উইকেট নেন।
৯০ রানের সহজ টার্গেটে খেলতে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ বল বাকী রেখেই ম্যাচ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া নারী দল। নবম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম উইকেট শিকার করেন অফ-স্পিনার সুলতানা। ফোবি লিচফিল্ডকে ১২ রানে আউট করেন সুলতানা। ১৩তম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যালিসা হিলিকে ৩৩ রানে আউট করেন লেগ-স্পিনার রাবেয়া খান। তৃতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৩৯ রান যোগ করে অস্ট্রেলিয়ার জয় নিশ্চিত করেন এলিসা পেরি ও বেথ মুনি। পেরি ২৭ ও মুনি ২১ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের সুলতানা ও রাবেয়া ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন গ্যারেথ ও সিরিজ সেরার পুরস্কার জিতেন গার্ডনার।
সিরিজটি নারী চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ ছিলো। এখন অবধি ১৮ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে অস্ট্রেলিয়া। সমানসংখ্যাক ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের সপ্তমস্থানে আছে বাংলাদেশ। আগামী ৩১ মার্চ থেকে মিরপুরের ভেন্যুতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দলের সঙ্গে থাকছেন না হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ব্যক্তিগত কারণে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন তিনি।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য দিয়ে বিসিবি জানায়, দ্বিতীয় টেস্টে হাথুরুসিংহের পরিবর্তে দায়িত্ব পালন করবেন সহকারী কোচ নিক পোথাস।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হারলেও ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জেতে বাংলাদেশ। এরপর সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৩২৮ রানের বড় ব্যবধানে হারে টাইগাররা।
আগামী ৩০শে মার্চ চট্টগ্রামে মাঠে গড়াবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। এই টেস্টের জন্য দলে ডাক পেয়েছেন সাকিব আল হাসান ও হাসান মাহমুদ।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের জন্য দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এই টেস্টে দলে ফিরছেন সাকিব আল হাসান, ফেরানো হয়েছে পেসার হাসান মাহমুদকেও।
সাকিব ফেরায় কপাল পুড়েছে তৌহিদ হৃদয়ের। ফলে লাল বলের ক্রিকেটে অভিষেকের অপেক্ষাটা তার আরও দীর্ঘ হচ্ছে।
আগামী ৩০ মার্চ থেকে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। প্রথম ম্যাচে শোচনীয় হারের পর সাকিব দলে ফেরায় তাই দলের আত্মবিশ্বাস কিছুটা হলেও বাড়বে।
গত এপ্রিলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট খেলেছেন সাকিব। এরপর বিশ্রাম ও চোটের কারণে প্রায় এক বছর সাদা পোশাকে মাঠে নামা হয়নি তার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সীমিত ওভারের সিরিজেও বিশ্রামে ছিলেন এ অলরাউন্ডার।
লঙ্কানদের বিপক্ষে ব্যাটে-বলে সাকিবের পরিসংখ্যানটা দারুণ। এই ফরম্যাটে ৯ টেস্ট ম্যাচে ১ সেঞ্চুরি ও ৪ হাফ সেঞ্চুরিতে ৩৮.১৮ গড়ে ৬১১ রান করেছেন সাকিব। এছাড়া বল হাতে নিয়েছেন ৩৮ উইকেট।
এ ছাড়াও দ্বিতীয় টেস্টের দল থেকে বাদ পড়েছেন পেসার মুশফিক হাসান। প্রথম ম্যাচে না খেললেও চট্টগ্রাম টেস্টের আগে চোটে পড়েছেন তিনি। গোড়ালির চোটের কারণে তিনি ছিটকে যাওয়ায় তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন হাসান মাহমুদ।
চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ স্কোয়াড
নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), জাকির হাসান, মাহমুদুল হাসান জয়, সাদমান ইসলাম, লিটন দাস, মুমিনুল হক, সাকিব আল হাসান, শাহাদাত হোসেন দিপু, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসান, তাইজুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, খালেদ আহমেদ, নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদ।
আরও পড়ুন:বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেট ফ্র্যাঞ্জাইচিগুলোর একটি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। কাড়ি কাড়ি টাকা খরচায় এই টুর্নামেন্টে যেমন দেখা যায় তারকার ছড়াছড়ি, তেমনই কোটি কোটি টাকার জুয়া বাণিজ্য চলে আইপিএল চলাকালে।
তেমনই আইপিএলে বাজি ধরে বারবার হেরে কোটি রুপির বেশি ঋণী হয়ে পড়েছিলেন ভারতের কর্ণাটকের দর্শন বাবু নামের এক ইঞ্জিনিয়ার। তবে টাকা সময়মতো পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় পাওনাদারদের ক্রমাগত হয়রানিতে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুয়ার নেশায় টাকা ধার করতে করতে ঋণের পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায় দর্শনের। তার পরও ধার করে বাজি ধরতে থাকেন তিনি।
দেড় কোটি টাকা ধার নেয়ার পর পাওনাদাররা তার বাড়িতে এসে টাকা আদায়ের জন্য চাপ দিকে শুরু করেন। শুধু তা-ই নয়, ওই প্রকৌশলীকে বাড়িতে না পেয়ে তার স্ত্রী রঞ্জিতাকে হেনস্থা করা হয়েছে অভিযোগ উঠেছে।
আর পাওনাদারদের হয়রানি সহ্য করতে না পেরেই রঞ্জিতা আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গত ১৮ মার্চ কর্ণাটকের চিত্রদুর্গায় নিজের বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়।
স্থানীয় পুলিশের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, এ ঘটনায় রঞ্জিতার বাবা ১৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন।
চিত্রদুর্গের বাসিন্দা দর্শন সেচ দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।
স্থানীয়দের দাবি, দর্শন মাঝেমধ্যেই অনলাইনে জুয়া খেলতেন। সেই নেশার কারণে ধারের বোঝা বাড়ছিল তার।
যদিও দর্শনের শ্বশুরের পাল্টা দাবি, তার জামাই নির্দোষ। তাকে এই জুয়া খেলতে বাধ্য করা হয়েছিল। বাধ্য করা হয়েছিল টাকা ধার নিতেও। যাদের কাছে থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন, তারাই এই কাজ করিয়েছিলেন তার জামাইকে দিয়ে।
তিনি আরও জানিয়েছেন, দ্রুত অর্থ উপার্জনের জন্য দর্শনকে লোভ দেখানো হয়। তারপর তাকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে।
এ ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ জানিয়েছে, দর্শনের ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। সেটি রঞ্জিতা লিখেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ওই সুইসাইড নোটে ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন রঞ্জিতা।
তার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে এরইমধ্যে শিবু, গিরিশ এবং ভেঙ্কটেশ নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
সিলেটে শুক্রবার শুরু হওয়া টেস্টের এক দিন বাকি থাকতেই শোচনীয় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
শ্রীলঙ্কার দেয়া ৫১১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চতুর্থ দিন সোমবার পার না হতেই ৩২৮ রানে হেরেছে স্বাগতিকরা।
সফরকারীদের পক্ষে বাংলাদেশ শিবিরে ধস নামান কাসুন রাজিথা, যিনি ১৪ ওভার বল করে ৫৬ রান খরচায় তুলে নেন পাঁচটি উইকেট। এ ছাড়া বিশ্ব ফার্নান্দো তিনটি ও লাহিরু কুমারা পান দুটি করে উইকেট।
টস হেরে প্রথম ইনিংসে আগে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কা করেছিল ২৮০ রান। জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ১৮৮ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে ধনঞ্জয় ডি সিলভার ১০২ রানের পর দ্বিতীয়টিতে তার ব্যাট থেকে আসে ১০৮ রান। দলের টেস্ট অধিনায়কের জোড়া এ শতকের সুবাদে দুই ইনিংসেই রানের ভিত মজবুত করার সুযোগ পায় সফরকারীরা।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১৮ করে পাঁচ শর বেশি রানের লিড নিয়ে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলে শ্রীলঙ্কা।
দলটির দেয়া বিশাল এ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ইনিংসের চেয়ে কম ১৮২ রান করে হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।
প্রথম টেস্টে পরপর দুই সেঞ্চুরি করে দলের জয়ে মূল ভূমিকা রাখা ধনঞ্জয় ডি সিলভা হয়েছেন প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য