টোকিও অলিম্পিকের স্কলারশিপ নিয়ে গত আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে ফ্রান্সে আছেন সাঁতারু আরিফ। মাঝেমধ্যে দেশে ফেরার সুযোগ হলেও এবার ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পারছেন না অলিম্পিকে খেলার সুযোগ পাওয়া দেশের উদীয়মান সাঁতারু।
বাংলাদেশ থেকে প্রায় আট হাজার কিলোমিটার দূরে এবারের ঈদ অন্যরকম কেটেছে আরিফের। ফ্রান্সের উত্তরে নরম্যান্ডি প্রদেশের পেটিট কাউরন শহরে অবস্থিত প্রবাসী বাঙালীদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলেই ঈদ আনন্দে মেতেছেন তিনি।
উত্তর আটলান্টিক মহসাগরের পাশে ইংলিশ চ্যানেলের ধারের নরম্যান্ডি প্রদেশের এই শহরে এখন গ্রীষ্ম মৌসুম চলছে। এর মধ্যেই সতেজ হয়ে ২২ গজের আনন্দে মেতেছেন আরিফ।
ফ্রান্সে ঈদের দিন বৃহস্পতিবার। দিনটি যেভাবে কাটিয়েছেন নিউজবাংলাকে জানান আরিফ, ‘সকালে ঈদের নামাজ শেষে প্রবাসী বন্ধু-পরিজনদের সঙ্গে ব্যাট হাতে নেমে পড়েছি। সকালে শুরু করে ম্যাচ এখনও খেলছি। ১৪ প্রবাসী বাঙালী মিলে খেলছি। আরও ম্যাচ খেলার ইচ্ছা আছে।’
এর মাঝেও অবশ্য পরিবারকে অনেক মিস করছেন আরিফ। জানান, ‘কয়দিন আগেই বাংলাদেশ গেমস খেলতে দেশে গিয়েছিলাম। তাই আরেকটু খারাপ লাগছে। মিস করতেছি তাদের। তবে প্রবাসীরাও একটা পরিবারের মতো হয়ে গেছে। ঈদটা বলতে গেলে ভালোই কেটেছে।’
ফ্রান্সে গত আড়াই বছর ধরে অলিম্পিকসের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এবার ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে টোকিও আসরে খেলার সুযোগ পেয়েছেন আরিফ। ফ্রান্স থেকেই জাপানে খেলতে যাবেন এই সাঁতারু।
৫০ মিটার ফ্রি স্টাইলে অলিম্পিকে খেলবেন আরিফ। প্রস্তুতি অব্যহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
নওগাঁর পোরশায় একটি আম বাগান থেকে ৪০লাখ টাকা মূল্যের একটি বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার করেছে র্যাব-৫। এসময় পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। র্যাব-৫ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার দয়হার এলাকা থেকে প্রায় সাড়ে ১২ কেজি ওজনের ওই বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার করে র্যাব-৫, সিপিসি-৩ জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার রাতে জেলার পোরশা থানার শিশাবাজার এলাকায় র্যাব-৫, সিপিসি-৩ এর একটি টহল টিম ডিউটি করা কালিন সময়ে জানতে পারে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মূর্তি পাচারের উদ্দেশে অপেক্ষা করছে। এমন সংবাদে তেতুলিয়া ইউনিয়নের দয়হার গ্রামের একটি আমবাগানের ভেতর অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ওই আমবাগানের ভেতর থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় একটি কালো কষ্টি পাথর এর মুল্যবান বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার করে র্যাব সদস্যরা। প্রায় ৮ ইঞ্চি উচ্চতার বিষ্ণুমূর্তিটির ওজন প্রায় ১২.৩ কেজি। যার মূল্য আনুমানিক ৪০ লাখ টাকা। পরে উদ্ধারকৃত বিষ্ণুমূর্তিটি পোরশা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রতারণা ও চেক জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) ও সিইও, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার, শাখা ব্যবস্থাপকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ আদালতে মামলা হয়েছে। সম্প্রতি ঝিনাইদহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন মহেশপুর উপজেলার ভালাইপুর গ্রামের সালিম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী ইয়াসমিন আক্তার। মামলাটি নথিভুক্ত হয়েছে ঝিনাইদহ সি.আর মামলা নং-৮০৭/২০২৫ হিসেবে।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ঝিনাইদহ শাখার ব্যবস্থাপক, ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও, চারজন ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার এবং কোটচাঁদপুর উপজেলার আদর্শপাড়ার আবু জাফরের ছেলে আলমগীর হোসেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালে ঝিনাইদহ শাখা থেকে ১৮ লাখ টাকা ঋণ নেন ইয়াসমিন আক্তার। ঋণ নেওয়ার সময় তিনি জমির দলিল, বিভিন্ন কাগজপত্র ও ৩৭টি স্বাক্ষরিত ফাঁকা চেক ব্যাংকে জমা দেন। কিন্তু সম্প্রতি কোটচাঁদপুরের আলমগীর হোসেন ওই চেকগুলোর একটি ব্যবহার করে আদালতে মামলা করেন। তিনি দাবি করেন, ইয়াসমিনের স্বামী তার কাছে ৯৭ লাখ টাকা দেন।
বাদীর অভিযোগ, যে চেক ব্যাংকের ভল্টে থাকার কথা, সেটি কীভাবে আলমগীর হোসেনের হাতে গেল তা রহস্যজনক। তার দাবি, ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তারা আলমগীরের সাথে যোগসাজশ করে চেক চুরি করেছে এবং জালিয়াতির মাধ্যমে মামলা দায়ের করেছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মনিরুজ্জামান লাল বলেন, ‘আমার মক্কেলের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। চেক জালিয়াতি ও জাল কাগজপত্র দেখানো হচ্ছে। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ করে এ অপকর্ম করেছে। এ জন্য আমরা আদালতে মামলা দায়ের করেছি।’
এ ঘটনায় আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওয়াজিদুর রহমান মামলা তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন পিবিআইকে। আগামী ৬ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
তবে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখার ব্যবস্থাপক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল, ডিস্ট্রিক্ট ৩১৫ এ১, বাংলাদেমের উদ্যোগে এবং এলসিআইএফ ইমার্জেন্সি গ্র্যান্টের সহায়তায় ফেনী জেলার বন্যাদুর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার দুপুর ১২টায় ফেনী চাড়িপুর বিসিক শিল্প নগরী এলাকা এবং সাড়ে ১২টায় উত্তর সহদেবপুর খায়রুল ইসহাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় এ কর্মসূচিতে ১২ শত ৫০ জন সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে চাল, ডাল, আলু, লবণ, চিনি, তেল ও ওষুধপত্রসহ জরুরি খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর লায়ন এ. কে. এম. গোলাম ফারুক। এছাড়া লায়ন্স জেলা ৩১৫ এ১-এর ডিস্ট্রিক্ট এলসিআইএফ কোঅর্ডিনেটর আনিসুর রহমান পিএমজেএফ, ক্যাবিনেট সেক্রেটারি মিজানুর রহমান মিজান, ক্যাবিনেট ট্রেজারার মো. সাইদুর রহমান খান পিএমজেএফ, ডিস্ট্রিক্ট জিএসটি কোঅর্ডিনেটর মো. রমজান খান এমজেএফ, ডিস্ট্রিক্ট জিএমটি কোঅর্ডিনেটর মো. মোরসালিন খান, ডিস্ট্রিক্ট মার্কেটিং চেয়ারপারসন নুর মোহাম্মদ হাওলাদার চুন্নু, ডিস্ট্রিক্ট গভর্নরের প্রোটোকল কামার উদ্দিন আহমেদ এমজেএফ, আরসি (এইচকিউ)-প্রজেক্ট মো. ইউসুফ আলী খান এমজেএফ, আরসি (এইচকিউ)-লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স কানু বিশ্বাস দুলাল এবং ফেনী অঞ্চলের বিশিষ্ট লায়ন রিজিয়ন চেয়ারপারসন লায়ন আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, লায়ন ওমর ফারুক ভূঁইয়া বেলালসহ নেতারা এবং লিও নেতারা উপস্থিত থেকে ত্রাণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
লায়ন নেতারা জানিয়েছেন, মানবতার সেবায় নিবেদিত লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল সবসময় দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ায়। দ্রুততম সময়ে সহায়তা প্রদান ও বিপর্যস্ত মানুষের জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা লায়নদের অঙ্গীকার।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের আনারপুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ইউটার্নে যাত্রীবাহী বাস ও রেডিমিক্সের গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ উভয় পরিবহনের ১২ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় মহাসড়কের আনারপুরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে ১০ জনের নাম জানা গেছে গেছে। তারা হলেন- আয়াজ (৩৫), ইউনুস মুন্সী (৪৫), মাইন উদ্দিন (৪২), রাসেল(৪০), ওমর ফারুক (২৫), মারুফ (৪০), তারেক রহমান (৩০), হারুন-অর-রশিদ(৪০), হাবিবুর রহমান (৪৫) ও জেমস(২৮)।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, চট্টগ্রাম থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার দিকে যাচ্ছিল শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস। পথে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশের আনারপুরা এলাকায় প্রিমিয়ার সিমেন্ট কোম্পানির একটি রেডিমেক্সের গাড়ি ইউটার্ন নেওয়ার সময় সেটিকে ধাক্কা দেয় বাসটি। ঘটনায় বাসের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ ঘটনায় রেডিমিক্সের গাড়ির চালক ও হেলপার ও বাসের ১০ জন যাত্রী আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায় স্থানীয়রা।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ১০ জন গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। গুরুতর অবস্থায় ইউনুস মুন্সী, মাইন উদ্দিন, মারুফ ও রাসেলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে।
এ বিষয়ে গজারিয়া ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শওকত হোসেন বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িগুলো মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান বলেছেন, সংগঠনকে শক্তিশালী করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সংগঠন শক্তিশালী না থাকলে কারোরই মূল্যায়ন থাকবে না। তিনি বলেন দ্রুতই তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন। জেলায় জেলায় সফর করবেন। আমরা যেন তাকে বিজয়ের বেশে বরণ করতে পারি। তিনি বলেন, বিএনপি জনগণের দল, জনগণ বিরক্ত হয় বা কষ্ট এমন কাজ করা যাবে না। কেউ এ ধরনের কাজ করলে তাদের স্থান বিএনপিতে হবে না। গত শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল শেরপুর জেলা শাখার এক মতবিনিময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেরপুর জেলা শহরের মাধবপুর শপ্নিল কমিউনিটি সেন্টারে সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক মামুনুর রশীদ মামুনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নিয়ামুল হাসান আনন্দের সঞ্চালনায় এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনে কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি, ইয়াছিন আলী, সহসভাপতি সফি উদ্দিন আহমদ সেন্টু, যুগ্ম সম্পাদক আব্দুর রহিম হাওলাদার সেতু, সাহিত্য সম্পাদক মিজানুর রহমান সজিবসহ মহিলা সম্পাদক পারভেছুন্নাহার নিপুসহ আরও অনেকে।
সংগঠনকে শক্তিশালী করতে তৃণমূলের কমিটি পুনর্গঠনসহ নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আওয়ামী সরকারের পতনের পরেও দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্যুৎ খাতে পরিবর্তন আসেনি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। এলাকাবাসী বলছেন, পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে পিরোজপুর, মঠবাড়িয়া ও বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় দীর্ঘসময় লোডশেডিং চলছে। দিনে প্রায় ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে লাখো মানুষ।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা একাধিকবার ঘোষণা দিয়েছেন, ‘ঢাকায় আগে লোডশেডিং হলে তবেই বাইরে হবে। কিন্তু বাস্তবে দক্ষিণাঞ্চলেই দীর্ঘ লোডশেডিং চলছে। স্থানীয়রা বলছেন, জাতীয় গ্রিডে কোনো ঘাটতি না থাকলেও কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে ভোগান্তি বাড়ছে।
জাতীয় গ্রিড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো সংকট নেই বরং চাহিদার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তাদের ভাষায়, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল সব জায়গায় সমানভাবে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। দক্ষিণাঞ্চলে সামান্য লোডশেডিং হতে পারে, কিন্তু দিনে ৬-৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকার প্রশ্নই ওঠে না।’
অভিযোগ রয়েছে, পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ থেকে খুলনার কিছু কলকারখানায় ৩ টাকা বেশি দামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ফলে ঘাটতি পুষিয়ে নিতে পাথরঘাটা, মঠবাড়িয়া ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত লোডশেডিং চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
দীর্ঘ লোডশেডিংয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন জেলে ও কৃষকরা। পাথরঘাটার সমুদ্রগামী ট্রলারগুলোতে সময়মতো বরফ সরবরাহ করতে না পারায় মাছ দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রতি বছর হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়ছে উপকূলীয় জেলেরা। কৃষকরাও সেচ যন্ত্র চালাতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন। সরকারি রাজস্ব হারাচ্ছে দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় মৎস্য খাত।
পাথরঘাটা সাব-জোনাল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিজিএম জানান, ‘পিরোজপুর থেকে পাথরঘাটার দূরত্ব ৬৬ কিলোমিটার। ঝড়-বৃষ্টিতে গাছপালা পড়ে গেলে লাইনে সমস্যা হয়। তখন মেরামতের জন্য কিছু সময় বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হয়।
কেরানীগঞ্জের তালেপুর উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে কার্যত সেবা বন্ধনের মধ্যে পড়ে আছে। হাসপাতালের ভেতরে ও মাঠে জমে থাকে কোমর থেকে হাঁটু সমান পানি। সামান্য বৃষ্টিতেই পুরো এলাকা জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। তাই রোগীরা আসেন না তেমন। হাসপাতাল দেখে মনে হয় হাসপাতাল নিজেই রোগী।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা দিতে ডাক্তার আসেন সপ্তাহে মাত্র তিন দিন। ডাক্তার আঞ্জুমান আরা দুয়েল ওই তিন দিনে রোগী দেখেন। বাকি দিনগুলোতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট শারমিন এবং ফার্মাসিস্ট অজিৎ কুমার দাস সীমিত চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী রোগীরা বলছেন, এখানে কোনো ওষুধ দেওয়া হয় না, শুধু প্রেসক্রিপশন ধরিয়ে দেন। গরিব রোগীরা বাধ্য হয়ে বাইরের ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে নেন। স্থানীয়রা বলছেন, এভাবে সেবা দেওয়ার ফলে রোগীরা সুস্থ হওয়ার বদলে আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।
রোগী সালেহা বেগম জানান, বাড়ির কাছে সরকারি হাসপাতাল ভালো মনে করে আসতে আসতে দেখি কোন ডাক্তার নাই, নেই কোনো ওষুধ। আগে এখানে সব ওষুধ পাওয়া যেত, ডাক্তারও আসত কয়েকজন। এখন শুধু কাগজে প্রেসক্রিপশন।
অবকাঠামোর অবস্থা এতটাই খারাপ যে সেবা দিতে হচ্ছে হাসপাতাল ছেড়ে সামান্য দূরের একটি যাত্রী ছাউনিতে। সেখানে ধুলাবালি, যানবাহনের শব্দ এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ রোগীদের ভোগান্তি আরও বাড়াচ্ছে।
স্থানীয় খাইরুল ইসলাম জানান, হাসপাতালটি এমন অবস্থায় পড়ে আছে যে কোনো দিন এটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এত বড় জায়গা, মাঠ, একাধিক বিল্ডিং সবই নষ্ট হচ্ছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। দীর্ঘদিন কোনো মাটি পড়েনি, কোন নতুন বিল্ডিংও হয়নি।
দুই দশক আগে উপজেলার কলাতিয়া ইউনিয়ন ও তার আশেপাশের এলাকার সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের মাঝে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে আশির দশকের মাঝামাঝি এলাকার কৃতি সন্তান ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক ব্রি. জেনারেল ডা. হেদায়েত নিজ গ্রাম তালেপুরে স্থাপন করেন একটি দাতব্য চিকিৎসালয়। উদ্দেশ্য ছিল এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা। শুরুতে চোখের অপারেশন, ছোট ও মাঝারি সার্জারি, টিকা এবং ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হতো।
বর্তমানে এটি শুধুই রোগীর দুর্ভোগের জায়গা। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, অবিলম্বে হাসপাতালের সংস্কার, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা, নিয়মিত ডাক্তার নিয়োগ এবং পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। না হলে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র কেবলই অকার্যকর ভবনের খোলস হয়ে থাকবে।
এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোকাদ্দেস হোসেন জানান, এ বছরের মধ্যেই এটিকে সাময়িক সংস্কার করা হবে। হাসপাতালটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে গেছেন এবং আগামী বছর আশা করি এখানে ৮ তলা বিল্ডিং হবে যার পরিকল্পনাও ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ন্যাশনাল ইপিআই ড্রাই স্টোর হবে। আর আগামী মাসের ৩ তারিখ থেকে ওষুধ পাওয়া যাবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
মন্তব্য