ক্রোয়েশিয়ার সুপারস্টার মারিও মানজুকিচের সঙ্গে একই সাজঘর শেয়ার করা বাংলাদেশি প্রবাসী ফুটবলারকে দলে নিয়েছে বসুন্ধরা কিংস। ট্রায়ালের মাধ্যমে এই ফুটবলারকে মনে ধরেছে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ ক্লাবটির।
তার নাম ওবাইদ রহমান। ইতোমধ্যে দলের সঙ্গে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন ফেনীতে জন্ম নেয়া প্রবাসী এই ফুটবলার।
বিষয়টি বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন দলের মিডিয়া ম্যানেজার আহমেদ শায়েক।
তিনি বলেন, ‘সে প্রায় এক মাস যাবৎ আমাদের সঙ্গে অনুশীলন করছে। ট্রায়ালে তার খেলা পছন্দ হয়েছে ক্লাব ম্যানেজমেন্টের। কোচ অস্কার ব্রুজনসহ দলের পছন্দ হওয়ায় তার সঙ্গে চুক্তিতে যাচ্ছে কিংস। শিগগিরই তার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি করা হবে।’
২০০৬ সালে পরিবারের সঙ্গে কাতারে পাড়ি জমান ওবাইদ রহমান। দেশটির বিখ্যাত এসপায়ার অ্যাকাডেমিতে খেলার পর কাতারের শীর্ষ লিগের দল আল দুহাইল এফসির রিজার্ভ দলে সুযোগ পান এই মিডফিল্ডার কাম উইঙ্গার। পরে ২০১৯-২০ মৌসুমে ক্লাবটির মূল দলে জায়গা করে নিয়ে দুটি ম্যাচও খেলেন।
সপ্তাহখানেকের ট্রায়ালে তাকে মনে ধরেছে ক্লাব ম্যানেজমেন্টের।
ওবাইদের ব্যাপারে আশাবাদী দলটির টেকনিক্যাল ডিরেক্টর বায়েজিদ জুবায়ের নিপু বলেন, ‘এক সপ্তাহের ট্রায়ালে তাকে পছন্দ হয়েছে সবার। ফুটবলে তার ব্যাসিক সেন্স ভালো। যেটা দরকার। মিডফিল্ড আর উইঙ্গে খেলতে পছন্দ করে সে। আমাদের স্থানীয় ফুটবলারদের থেকে ভালো খেলে এই ফুটবলার।’
দলে মাঝমাঠে মাসুক মিয়া জনি, বিপলু আহমেদ ও ইমন বাবুর মতো পরীক্ষিত আছে। সঙ্গে উইঙ্গে ইব্রাহিম, মতিন মিয়া ও মাহবুবুর রহমান সুফিলের মতো ফুটবলার খেলছেন।
তারকা নির্ভর এমন দলে ওবাইদের সুযোগ পাওয়া কতটা কঠিন হতে পারে এমন প্রশ্নে নিপু বলেন, ‘মতিনদের বিট করে তাকে সুযোগ করে নিতে হবে। তবে কোচের ভাবনা হচ্ছে শাফেল করে তাকে সুযোগ করে দিতে চায় অস্কার ব্রুজন। ওবাইদের সংযুক্তির মাধ্যমে কিংসের বেঞ্চও শক্তিশালী হচ্ছে। করোনার এই সময়ে যেকোনো সময় ভালো ফুটবলারের প্রয়োজন থেকেই তাকে দলে নেয়া।’
ওবাইদের পাশাপাশি দলে আরও দুই বাংলাদেশি প্রবাসী ফুটবলার তারিক কাজী ও মাহাদী খেলছে কিংসের জার্সিতে। সম্প্রতি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া এলিটা কিংসলের সঙ্গে ইতোমধ্যে অনুশীলন শুরু করেছেন ২২ বছর বয়সী এই ফুটবলার। সামনে এএফসি কাপ ও প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় পর্বে কিংসের জার্সিতে অভিষেক হতে পারে এই ফুটবলারের।
আল দুহাইলে থাকাকালীন গত রাশিয়া বিশ্বকাপের রানার আপ ক্রোয়েশিয়ার সুপারস্টার মানজুকিচ খেলেছেন একই দলে। ইউভেন্তাসের সাবেক এই ফুটবলারের সঙ্গে অনুশীলন থেকে শুরু করে ড্রেসিং রুম শেয়ার করেছেন ওবাইদ।
আরও পড়ুন:শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা পোশাক খাতে উৎপাদনশীলতার চাবিকাঠি বলে মনে করেন বিশিষ্টজনরা। তারা বলেছেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতের দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে কর্মীদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তাদের সুস্থতা সরাসরি উৎপাদনশীলতা, প্রতিযোগিতা ও স্থায়িত্বের ওপর প্রভাব ফেলে। যা দেশের জিডিপির ৬ শতাংশ অবদান রাখে, রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশেরও বেশি উৎপাদন করে।
এই খাতে প্রায় ৪০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে, যার মধ্যে ৬৫ শতাংশ নারী।
রোববার (রাজধানীর একটি হোটেলে আয়াত এডুকেশন, ইন্টিগ্রাল গ্লোবাল কনসালটেন্সি (আইজিসি) ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) আয়োজিত সংলাপে এসব কথা বলেন তারা।
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন আয়াত এডুকেশনের চেয়ারপারসন ও আমান গ্রুপ অব কম্পানিজের ভাইস চেয়ারপারসন তাহসিন আমান। তিনি পোশাক খাতের কর্মীদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা উদ্যোগকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের জন্য শিল্প মালিক, নীতি-নির্ধারক, ক্রেতা এবং উন্নয়ন অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করেন।
সংলাপে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. সানশেয়ার জাহান ভূঁইয়া শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘কর্মীদের সুস্বাস্থ্যই শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি ও প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতার মূলভিত্তি। তাই আমরা সব শ্রমিকের তথ্যের জন্য একটি সমন্বিত শ্রম ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা করছি। যা পরিকল্পনা ও নীতিমালা তৈরিতে সহায়তা করবে।
বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান বলেন, ‘পোশাকশিল্প দেশের অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বিশেষ করে নারীদের জন্য বিশাল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।যা লাখ লাখ পরিবারকে সহায়তা করছে। আর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য তৈরি পোশাক শ্রমিকদের, বিশেষ করে নারীদের সুস্থতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে সব কারখানায় শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।’ বৈশ্বিক পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও দেশের অবস্থান শক্ত করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
সংলাপে অংশগ্রহণকারীরা (বিজিএমইএ, এশিয়া ফাউন্ডেশন, আইএলও, শিল্পনেতা, ক্রেতা এবং কারখানা মালিকরা) সক্রিয় আলোচনায় অংশ নেন। তারা কর্মীদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে প্রযুক্তিনির্ভর সমাধান গ্রহণে নীতি সহায়তা ও বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং কর্মীদের সুস্থতাকে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির কেন্দ্রে স্থাপন করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আজ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সম্মেলন কক্ষে যমুনা সেতুর বর্তমান রেললেনের সঠিক ব্যবহারের জন্য ডেক সংস্কার ও সংশ্লিষ্ট কাজের সম্ভাব্যতা যাচাই, বিশদ নকশা প্রণয়ন এবং ভবিষ্যতে একটি নতুন অ্যানেক্স সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন করার জন্য বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ও আইইউটি-ডেভকন জেভি-এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির আওতায় উভয় পক্ষের মধ্যে মোট ১৪,২৯,৮৫,৪০৫.৪১ (চৌদ্দ কোটি ঊনত্রিশ লক্ষ পঁচাশি হাজার চারশত পাঁচ টাকা একচল্লিশ পয়সা) টাকার আর্থিক চুক্তি সম্পাদিত হয়। উক্ত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ, সচিব, সেতু বিভাগ ও নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এর পক্ষে প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো: ফেরদাউস এবং আইইউটি-ডেভকন জেভি-এর পক্ষে অধ্যাপক ড. শাকিল মোহাম্মদ রিফাত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগ, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং আইইউটি-ডেভকন জেভি-এর প্রতিনিধিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তির আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি যমুনা সেতুর ডেকের ওপর অবস্থিত সকল কম্পোনেন্ট পুনর্বিন্যাস করে বর্তমান ৬.৩১৫মিটার প্রশস্তের দুই-লেন একমুখী ট্রাফিক-কে ৭.৩০মিটার প্রশস্তের দুই-লেন একমুখী ট্রাফিক-এ পরিণত করার কাজে কারিগরী পরামর্শ প্রদান করবে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সমীক্ষা প্রতিবেদন ও নকশা প্রণয়নসহ কাজটি বাস্তবায়নে ঠিকাদার নিয়োগের বিওকিউ, কারিগরী স্পেসিফিকেশনসহ দরপত্র দলিল প্রস্তুত ও নির্মাণ কাজ তদারকিতে সহায়তা গ্রহণ করা হবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সচিব বলেন, দ্রুত চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে জনদুর্ভোগ লাঘবের বিষয়ে মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জনাব মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান-এর সদয় নির্দেশনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে সেতুর বর্তমান রেললেনের ডেক সংস্কার এবং সংশ্লিষ্ট আনুষঙ্গিক কাজের যথাযথ সম্ভাব্যতা যাচাই করে সেতুর গুরুত্বপূর্ণ অংশটিকে কার্যকর ও নিরাপদ ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হবে। এর ফলে সেতুর ওপর এবং সংযুক্ত এপ্রোচ রোডে বিশেষ করে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার সময় যে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়, তা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে সচিব আরও বলেন, দেশের ক্রমবর্ধমান ট্র্যাফিকের চাপ এবং পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে উন্নত ও দ্রুত যোগাযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যমুনা নদীর উপর বিদ্যমান সেতুর পাশে একটি নতুন অ্যানেক্স সেতু নির্মাণের লক্ষ্যে প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন করা হবে। এই যাচাইয়ে নতুন সেতুর সম্ভাব্য স্থান, কারিগরি চ্যালেঞ্জ, অর্থনৈতিক প্রভাব এবং পরিবেশগত দিকগুলি নিবিড়ভাবে বিশ্লেষণ করা হবে।
সুনামগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়ে়ছে। রোববার সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ এই রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার পৈলনপুর গ্রামের বাসিন্দা শাহীন মিয়া (৪৮)। তিনি পলাতক আছেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. শামছুর রহমান।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ছাতক উপজেলার পৈলনপুর গ্রামের শাহীন মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল একই উপজেলার মৈশাপুর গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী ছবদর আলীর মেয়ে সুহেনা বেগমের। বিয়ের পর থেকেই শাহীন মিয়া ব্যবসার জন্য বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে সুহেনা বেগম চাপ দিতে থাকেন। বিভিন্ন সময় এ জন্য তাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। শাহীন ও সুহেনার দুই সন্তান আছে। সুহেনার বাবা ছবদর আলী মেয়ের সংসার টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন সময় টাকাও দিয়েছেন। এক পর্যায়ে শাহীন পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু সুহেনা বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অস্বীকার করেন। ২০১২ সালে ২০ মার্চ সন্ধ্যায় সুহেনা বেগম তার মা হালিমা বেগমকে ফোন করে জানান যৌতুকের টাকার জন্য তার স্বামী তাকে মারধর করেছেন। এরপর রাত ২টার দিকে শাহীন মিয়া হালিমা বেগমেক ফোন করে বলেন, সুহেনাকে পাওয়া যাচ্ছে না। হালিমার স্বামী তখন প্রবাসে। পরদিন সকালে তিনি পৈলনপুর গ্রামে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাননি। তখন শাহীনও বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে তিনি থানায় একটি জিডি করেন। এর দুদিন পর গ্রামের পাশের সুরমা নদীতে সুহেনার লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় সুহেনার মা হালিমা বেগম ছাতক থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় আটজন সাক্ষ্য দেন। মামলার দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে রোববার রায় ঘোষণা করেন আদালতের বিচারক।
‘পরিবেশ রক্ষায় ডিজিটাল যুগে তথ্যের অধিকার নিশ্চিতককরণ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সারাদেশে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালিত হয়েছে। তথ্য অধিকার সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইউনেস্কো স্বীকৃত এই দিবসটি প্রতি বছর ২৮ সেপ্টেম্বর বিশ্বজুড়ে পালিত হয়। এটি আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস-২০২৫-এ ইউনেস্কোর নির্ধারিত থিম ‘দ্য রাইট টু ইনফরমেশন ইন দ্য ডিজিটাল এইজ ফর দ্য প্রটেকশন অব দ্য এনভারমেন্ট’-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণ করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। দৈনিক বাংলার প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
নড়াইল প্রতিনিধি জানান, আর্ন্তজাতিক তথ্য অধিকার দিবস পালনে নড়াইলে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জেলা তথ্য অফিস এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রোববার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। ‘পরিবেশ রক্ষায় ডিজিটাল যুগে, তথ্যের অধিকার নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেণ, জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. রোস্তম আলী। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লিংকণ বিশ্বাস, সহকারি কমিশনার এবিএম মনোয়ারুল আলমসহ সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মসূচিতে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লিংকন বিশ্বাস, সহকারী কমিশনার এবিএম মনোয়ারুল আলমসহ সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, ‘পরিবেশের তথ্য ডিজিটাল যুগে হোক সুনিশ্চিত’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসন, পটুয়াখালীর আয়োজনে ও সনাক-টিআইবি, পটুয়াখালীর সহযোগিতায় ‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০২৫’ পালিত হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মহসিন উদ্দীন এর সভাপতিত্বে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
‘তথ্য অধিকার আইন ২০০৯’ এবং জাতীয় তথ্য বাতায়নের ‘পটুয়াখালী জেলার সরকারি অফিস সমূহের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন ২০২৫’ বিষয়ক দুটি পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন টিআইবির এরিয়া কোঅর্ডিনেটর-সিই মো. মনিরুল ইসলাম। সভায় দিবসের তাৎপর্যের উপর বক্তব্য প্রদান করেন অনিমেষ হালদার, উপপরিচালক, জেলা তথ্য অফিস, অ্যাড. সহিদুর রহমান, সভাপতি, সনাক-পটুয়াখালী, এইচ, এম শামীম অতিরিক্ত উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মো. জাকির হোসেন, আহ্বায়ক, পটুয়াখালী প্রেসক্লাব, কে এম এনায়েত হোসেন, নির্বাহী পরিচালক, এসডিএ, ইয়েস সহদলনেতা আবদুল্লাহ আল ইমন, সদস্য মো. রিয়াজ উদ্দিন মৃধা। উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, সনাক ও ইয়েস সদস্যরা।
নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, তথ্য প্রযুক্তির যুগে জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত হোক এই স্লোগানকে সামনে রেখে নেত্রকোণায় আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকালে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাফিকুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি) শামীমা ইয়াছমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সাকেল) সজল কুমার সরকার, জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কিবরিয়া চৌধুরী হেলিম। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা জামায়েত ইসলামীর আমীর সাদেক মোহাম্মদ হারিছ, জামায়েত ইসলামীর সেক্রেটারী মাহবুবুর রহমান, জামায়েতের পৌর আমীর মো. রফিকুল ইসলাম, বিএনপির সুজাদুল ইসলাম সুজা, সাংবাদিক হাফিজ উল্লাহ চৌধুরী আলিম, সাংবাদিক পল্লব চক্রবতী, কাজী শফিকুর রহমান চৌধুরী জুয়েল, সমন্বয় প্রীতম সোহাগসহ জেলার বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তাসহ আরো অনেকে।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানান, ‘পরিবেশের তথ্য ডিজিটাল যুগে হোক সুনিশ্চিত’ এ শ্লোগানকে সামনে রেখে ঝিনাইদহে আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ও টিআইবির আয়োজনে রোববার সকালে শহরের পুরাতন ডিসি কোর্ট চত্বরে বেলুন উড়িয়ে দিবসটি উদ্বোধন করা হয়। পরে সেখান থেকে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে পোস্টঅফিস মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় মানববন্ধন কর্মসূচী। এতে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাইফুর রহমান, সনাকের সভাপতি এম সাইফুল মাবুদ, সদস্য এনএম শাহজালাল, নাসরিন ইসলামসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। সেসময় বক্তারা, অবিলম্বে স্বাধীন তথ্য কমিশন গঠন, জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ আইন সম্পর্কে সচেতন ও কার্যকর ব্যবহারে উদ্যোগ গ্রহণসহ বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন।
বরগুনা প্রতিনিধি জানান, আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে বরগুনায় রোববার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) টিআইবির সহযোগিতায় বরগুনা জেলা প্রশাসকের সুবর্ণজয়ন্তী সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুদ। সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) অনিমেষ বিশ্বাস।
সভা পরিচালনা করেন সনাকের জেলা সভাপতি মনির হোসেন কামাল।
মুক্ত আলোচনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা তথ্য অফিসার সেলিম মাহমুদ, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম, বরগুনা জেলা প্রিন্ট মিডিয়া সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান ও এনজিও ব্যক্তিত্ব সামছুদ্দিন সানু।
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উদযাপিত হয়েছে। রোববার দুপুরে দিবসটি উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আহমদে মাহবুব-উল-ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল আল নাসের, জেলা তথ্য অফিসার শিল্পী মন্ডল, সাবেক অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মুন্সী আবু সাইফসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে কী নোট উপস্থাপন করেন সহকারী কমিশনার আশফাকুর রহমান।
সভায় তথ্য আদান প্রদান বিষয়ে সবাইকে আরও যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
নীলফামারী প্রতিনিধি জানান, নীলফামারীতে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস। এ উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও টিআইবি সনাকের আয়োজনে রোববার সকাল সারে ১০টার দিকে একটি শোভাযাত্রা শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, তথ্য অধিকার আইনের মূল উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষকে সেবা দেয়া। তিনি বলেন, তথ্য জানানোর মাধ্যমে দুর্নীতি কমানো সম্ভব। তথ্যই শক্তি উল্লেখ করে তথ্যের অপব্যবহার যেন, না হয়, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক। তিনি সনাক-টিআইবির ওয়েব পোর্টাল স্টাডির সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ (পিপিএম-সেবা), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, জেলা তথ্য কর্মকর্তা বায়েজীদ হোসেন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান, সহকারী কমিশনার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ ইমাম মোশারফ, সহকারী কমিশনার মো. তানজ্বীর ইসলাম, সুমনা পারভীন মিতা ও সনাক সভাপতি মো. আকতারুল আলম, সনাক সদস্য মো. মিজানুর রহমান লিটু, জেলা ব্রাক প্রতিনিধি মো. আকতারুল ইসলামসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা এবং সনাক, এসিজি ও ইয়েস সদস্যরা।
অপরদিকে, বিকেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সম্মেলনকে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন নীলফামারী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল। সনাক সভাপতির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপজেলার সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের প্রধানরা অংশগ্রহণ করেন। এ সময় সনাকের উপজেলা তথ্য বাতায়ন বিষয়ক স্ট্যাডির পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশসমূহ এবং তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
দিনব্যাপী আয়োজিত এসব কর্মসূচির মাধ্যমে সাধারণ জনগণ ও অংশীজন প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে সচেতন হয়ে বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে উৎসাহিত হবেন এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়।
এছাড়া দিনব্যাপী ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপের সদস্যরা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে র্যালি ও ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে তথ্য অধিকার বিষয়ে সচেতন করে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম ও জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ ইকবালের নির্দেশক্রমে ফরিদপুর মহানগর জিয়া মঞ্চের নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরিদপুরের জিয়ার সৈনিক, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার মোহাম্মদ কাইয়ুম মিয়াকে আহ্বায়ক ও এনামুল করিমকে সদস্য সচিব করে ২২ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রোববার জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দপ্তর সম্পাদকের চলতি দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার মো. জামাল হোসেনের স্বাক্ষরীত এক পত্রে ফরিদপুর মহানগর জিয়া মঞ্চের ২২ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
কমিটির অন্যান্য কর্মকর্তারা হলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মজিবর রহমান দিলীপ, যুগ্ম আহ্বায়ক নাইম আক্তার মুকুল, মাহবুবুর রহমান আজাদ, মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, ফরিদ হোসেন, কিবরিয়া জামান, সম্রাট আলম, আসাদুজ্জামান, ডা. মোফাজ্জুল হোসেন চৌধুরী, সদস্য মোহাম্মদ নাসির মিয়া, উজ্জল মিয়া, শেখ আব্দুল আলীম মুক্তি, মাসুদ খান, নয়ন শেখ, তুষার আহমেদ, আব্দুর রহিম, মোস্তাফিজুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আসাদুজ্জামান আরিফ, ইউসুফ শেখ ও শহীদ আলম চৌধুরী ফরহাদ।
এদিকে জিয়া মঞ্চ ফরিদপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন মহানগর জিয়া মঞ্চের নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, তারুণ্যদীপ্ত নতুন এই কমিটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আর্দশকে বুকে ধারণ করে আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করে তোলবে। এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে।
গাইবান্ধায় আশ্বিনের প্রথম সপ্তাহে টানা তিন দিনের প্রবল বৃষ্টিতে রোপা আমন খেত পানিতে ডুবে যেন মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। দুই দফায় আমন ধান রোপণের পরও কৃষকের স্বপ্নের ফসল পানিতে ডুবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
এদিকে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় হালচাষ, সার-বীজ, শ্রমিকের খরচ জোগাড় করে তিনগুণ দামে ধানের চারা কিনে জমি লাগালেও অতিবৃষ্টির স্রোতে সবুজের আশা নিমেষেই ভেসে গেছে। চোখের সামনে সোনার ফসল পচে যেতে দেখে নিঃস্ব কৃষকরা এখন হাহাকার অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন।
গাইবান্ধা কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, এ বছর বড় ধরনের বন্যা না হলেও তিন দফা বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে ৩৫৯ হেক্টর জমির আমন খেত আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দুই দফায় ৪৪ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। তৃতীয় দফায় ৯৬ হেক্টর জমির ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৬১৬ বিঘা জমিতে পুনরায় চাষাবাদ করা সম্ভব হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের পশ্চিম রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামে শুধু পানি আর পানি। আর ধান খেত পানির নিচে পড়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বরের প্রবল বর্ষণে প্রায় দেড়শ বিঘা জমি পানিতে তলিয়ে যায়। কোথাও নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে চারা, কোথাও আবার দু-একটি মৃতপ্রায় গাছ দাঁড়িয়ে আছে। আবার কিছু জমিতে কৃষকের সোনার ধান পানির নিচে পচে যাচ্ছে। মরিয়া হয়ে পুনরায় রোপণ করলেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি ফসল।
কৃষকের হাহাকার, সংকটের আশঙ্কা:
কৃষকের হাহাকার আজ চারপাশে ভেসে বেড়াচ্ছে। ধার-দেনা করে, দিনরাতের ঘাম ঝরিয়ে যে ধান চাষ করেছিলেন, বৃষ্টির পানিতে তা একেবারে ভেসে গেছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন বর্গাচাষীরা। প্রথম দফায় নিজেদের তৈরি চারা দিয়ে বিঘাপ্রতি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ করে রোপণ করলেও তা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। পরে দ্বিতীয় দফায় আবার রোপণ করতে গিয়ে কয়েকগুণ বেশি খরচ গুনতে হয়েছে। সময়মতো চারা না পাওয়ায় এক বিঘা জমির জন্য দোগাছি বলানো কিনতে হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায়। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাদের আশঙ্কা, এ ক্ষতির ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে, আর সামনে মানুষ ও গবাদিপশুর খাদ্যের ভয়াবহ সংকট দেখা দিতে পারে।
রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামের বর্গাচাষী শাহারুল আলম বলেন, ‘দুই বিঘা জমি রোপণে চারা, হাল-সার ও শ্রমিকে প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দুই বিঘা জমিই পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। জমিতে পানি বেশি থাকায় ভাদ্রের শেষ সময়ে রোপণ করেছিলাম তবুও রক্ষা হয়নি। খাদ্য ও গোখাদ্যের সংকটে পড়তে হবে।’
আরেক বর্গাচাষী খোকা মিয়া বলেন, প্রতি বছর সামান্য বৃষ্টি হলেই এ এলাকার ধান খেত পানিতে ডুবে যায়। এবার দুই দফায় চারা রোপণ করেও শেষ রক্ষা হলো না। খরচের টাকা উঠবেনা, উল্টো ঋণের বোঝা বাড়ল।’
এই গ্রামের কলেজ শিক্ষক ও গৃহস্থ চাষি আমিনুল ইসলাম কামাল বলেন, ‘আমাদের এখানে দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার সমস্যা রয়েছে। নালা সংকটের কারণে প্রতি বছরই জমি পানিতে ডুবে যায়। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হওয়ায় কৃষকদের বারবার ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।
এদিকে শুধুই ত্রাণ বা ক্ষতিপূরণ নয়, স্থায়ী সমাধান চান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। তাদের বিশ্বাস, মাত্র দুই কিলোমিটার জায়গায় নালা খনন করলে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে।
প্রশাসনের বক্তব্য: গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিকুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘তিন দফায় প্রায় ৪০০ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছিল। এর বেশিরভাগ রিকভারি হয়েছে। তবে ১৮ সেপ্টেম্বরের প্রবল বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া ৯৬ হেক্টরের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করছি। সঠিক পরিমাণ নিরূপণের পর পুনর্বাসনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ আল হাসান বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে আমরা জানি। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দ্রুত নালা খননের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মীরসরাইয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি কাভার্ডভ্যানের পেছনে দ্রুতগামী বাসের ধাক্কায় মোহাম্মদ মুরাদ (২৫) নামের বাস চালকের সহকারী ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৯ জন। মুরাদ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং মুসলিমপাড়ার জামাল হোসেনের ছেলে। রোববার ভোরে উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাপাহাড় এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা সৌদিয়া পরিবহনের একটি এসি বাস ভোরে কাভার্ডভ্যানটিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই মুরাদ নামে একজন নিহত হন। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে দুজনকে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহতরা হলেন, চট্টগ্রাম শহরের বাকলিয়া থানার চকবাজার এলাকার সাইদুল ইসলাম (২৮), নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার কম্বলনগরের আব্দুল মোমেন (৪৮), লক্ষীপুরের নন্দনপুরের নুর আলম (৪৩), পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়ার সোহেল রানা (৩৮), সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ ইউনিয়নের আব্দুল কাদের (৩৪) ও মিজানুর রহমান (৫০), দিনাজপুর সদরের সোহেল রানা (৩৫), শরিয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার রিপন মণ্ডল (৩৪) এবং মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলার রবিউল হোসেন (৩৬)। তারা সবাই ঢাকায় এসিআই ফুডসে চাকরি করেন।
আহত যাত্রী আব্দুল কাদের বলেন, আমরা ১৯জন মিলে কক্সবাজার ঘুরতে গিয়েছিলাম। ভোরে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ জোরে ধাক্কা লাগে। অনেকে জানালা ভেঙে বের হয়, বাকিদের ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করে।
মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ফাহিম ফেরদৌস বলেন, আহতদের মধ্যে দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শঙ্কামুক্ত আছেন।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার পরিদর্শক বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘কাভার্ডভ্যানটি দাঁড়িয়ে ছিল। বাস পেছন থেকে এসে ধাক্কা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মুরাদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য