ক্রোয়েশিয়ার সুপারস্টার মারিও মানজুকিচের সঙ্গে একই সাজঘর শেয়ার করা বাংলাদেশি প্রবাসী ফুটবলারকে দলে নিয়েছে বসুন্ধরা কিংস। ট্রায়ালের মাধ্যমে এই ফুটবলারকে মনে ধরেছে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ ক্লাবটির।
তার নাম ওবাইদ রহমান। ইতোমধ্যে দলের সঙ্গে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন ফেনীতে জন্ম নেয়া প্রবাসী এই ফুটবলার।
বিষয়টি বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন দলের মিডিয়া ম্যানেজার আহমেদ শায়েক।
তিনি বলেন, ‘সে প্রায় এক মাস যাবৎ আমাদের সঙ্গে অনুশীলন করছে। ট্রায়ালে তার খেলা পছন্দ হয়েছে ক্লাব ম্যানেজমেন্টের। কোচ অস্কার ব্রুজনসহ দলের পছন্দ হওয়ায় তার সঙ্গে চুক্তিতে যাচ্ছে কিংস। শিগগিরই তার সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি করা হবে।’
২০০৬ সালে পরিবারের সঙ্গে কাতারে পাড়ি জমান ওবাইদ রহমান। দেশটির বিখ্যাত এসপায়ার অ্যাকাডেমিতে খেলার পর কাতারের শীর্ষ লিগের দল আল দুহাইল এফসির রিজার্ভ দলে সুযোগ পান এই মিডফিল্ডার কাম উইঙ্গার। পরে ২০১৯-২০ মৌসুমে ক্লাবটির মূল দলে জায়গা করে নিয়ে দুটি ম্যাচও খেলেন।
সপ্তাহখানেকের ট্রায়ালে তাকে মনে ধরেছে ক্লাব ম্যানেজমেন্টের।
ওবাইদের ব্যাপারে আশাবাদী দলটির টেকনিক্যাল ডিরেক্টর বায়েজিদ জুবায়ের নিপু বলেন, ‘এক সপ্তাহের ট্রায়ালে তাকে পছন্দ হয়েছে সবার। ফুটবলে তার ব্যাসিক সেন্স ভালো। যেটা দরকার। মিডফিল্ড আর উইঙ্গে খেলতে পছন্দ করে সে। আমাদের স্থানীয় ফুটবলারদের থেকে ভালো খেলে এই ফুটবলার।’
দলে মাঝমাঠে মাসুক মিয়া জনি, বিপলু আহমেদ ও ইমন বাবুর মতো পরীক্ষিত আছে। সঙ্গে উইঙ্গে ইব্রাহিম, মতিন মিয়া ও মাহবুবুর রহমান সুফিলের মতো ফুটবলার খেলছেন।
তারকা নির্ভর এমন দলে ওবাইদের সুযোগ পাওয়া কতটা কঠিন হতে পারে এমন প্রশ্নে নিপু বলেন, ‘মতিনদের বিট করে তাকে সুযোগ করে নিতে হবে। তবে কোচের ভাবনা হচ্ছে শাফেল করে তাকে সুযোগ করে দিতে চায় অস্কার ব্রুজন। ওবাইদের সংযুক্তির মাধ্যমে কিংসের বেঞ্চও শক্তিশালী হচ্ছে। করোনার এই সময়ে যেকোনো সময় ভালো ফুটবলারের প্রয়োজন থেকেই তাকে দলে নেয়া।’
ওবাইদের পাশাপাশি দলে আরও দুই বাংলাদেশি প্রবাসী ফুটবলার তারিক কাজী ও মাহাদী খেলছে কিংসের জার্সিতে। সম্প্রতি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া এলিটা কিংসলের সঙ্গে ইতোমধ্যে অনুশীলন শুরু করেছেন ২২ বছর বয়সী এই ফুটবলার। সামনে এএফসি কাপ ও প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় পর্বে কিংসের জার্সিতে অভিষেক হতে পারে এই ফুটবলারের।
আল দুহাইলে থাকাকালীন গত রাশিয়া বিশ্বকাপের রানার আপ ক্রোয়েশিয়ার সুপারস্টার মানজুকিচ খেলেছেন একই দলে। ইউভেন্তাসের সাবেক এই ফুটবলারের সঙ্গে অনুশীলন থেকে শুরু করে ড্রেসিং রুম শেয়ার করেছেন ওবাইদ।
আরও পড়ুন:বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম ও জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ ইকবালের নির্দেশক্রমে ফরিদপুর মহানগর জিয়া মঞ্চের নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরিদপুরের জিয়ার সৈনিক, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার মোহাম্মদ কাইয়ুম মিয়াকে আহ্বায়ক ও এনামুল করিমকে সদস্য সচিব করে ২২ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রোববার জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দপ্তর সম্পাদকের চলতি দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার মো. জামাল হোসেনের স্বাক্ষরীত এক পত্রে ফরিদপুর মহানগর জিয়া মঞ্চের ২২ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
কমিটির অন্যান্য কর্মকর্তারা হলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মজিবর রহমান দিলীপ, যুগ্ম আহ্বায়ক নাইম আক্তার মুকুল, মাহবুবুর রহমান আজাদ, মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, ফরিদ হোসেন, কিবরিয়া জামান, সম্রাট আলম, আসাদুজ্জামান, ডা. মোফাজ্জুল হোসেন চৌধুরী, সদস্য মোহাম্মদ নাসির মিয়া, উজ্জল মিয়া, শেখ আব্দুল আলীম মুক্তি, মাসুদ খান, নয়ন শেখ, তুষার আহমেদ, আব্দুর রহিম, মোস্তাফিজুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আসাদুজ্জামান আরিফ, ইউসুফ শেখ ও শহীদ আলম চৌধুরী ফরহাদ।
এদিকে জিয়া মঞ্চ ফরিদপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন মহানগর জিয়া মঞ্চের নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, তারুণ্যদীপ্ত নতুন এই কমিটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আর্দশকে বুকে ধারণ করে আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করে তোলবে। এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে।
গাইবান্ধায় আশ্বিনের প্রথম সপ্তাহে টানা তিন দিনের প্রবল বৃষ্টিতে রোপা আমন খেত পানিতে ডুবে যেন মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। দুই দফায় আমন ধান রোপণের পরও কৃষকের স্বপ্নের ফসল পানিতে ডুবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
এদিকে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় হালচাষ, সার-বীজ, শ্রমিকের খরচ জোগাড় করে তিনগুণ দামে ধানের চারা কিনে জমি লাগালেও অতিবৃষ্টির স্রোতে সবুজের আশা নিমেষেই ভেসে গেছে। চোখের সামনে সোনার ফসল পচে যেতে দেখে নিঃস্ব কৃষকরা এখন হাহাকার অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন।
গাইবান্ধা কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, এ বছর বড় ধরনের বন্যা না হলেও তিন দফা বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে ৩৫৯ হেক্টর জমির আমন খেত আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দুই দফায় ৪৪ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। তৃতীয় দফায় ৯৬ হেক্টর জমির ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কাজ করছে কৃষি বিভাগ। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৬১৬ বিঘা জমিতে পুনরায় চাষাবাদ করা সম্ভব হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের পশ্চিম রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামে শুধু পানি আর পানি। আর ধান খেত পানির নিচে পড়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বরের প্রবল বর্ষণে প্রায় দেড়শ বিঘা জমি পানিতে তলিয়ে যায়। কোথাও নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে চারা, কোথাও আবার দু-একটি মৃতপ্রায় গাছ দাঁড়িয়ে আছে। আবার কিছু জমিতে কৃষকের সোনার ধান পানির নিচে পচে যাচ্ছে। মরিয়া হয়ে পুনরায় রোপণ করলেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি ফসল।
কৃষকের হাহাকার, সংকটের আশঙ্কা:
কৃষকের হাহাকার আজ চারপাশে ভেসে বেড়াচ্ছে। ধার-দেনা করে, দিনরাতের ঘাম ঝরিয়ে যে ধান চাষ করেছিলেন, বৃষ্টির পানিতে তা একেবারে ভেসে গেছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন বর্গাচাষীরা। প্রথম দফায় নিজেদের তৈরি চারা দিয়ে বিঘাপ্রতি ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ করে রোপণ করলেও তা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। পরে দ্বিতীয় দফায় আবার রোপণ করতে গিয়ে কয়েকগুণ বেশি খরচ গুনতে হয়েছে। সময়মতো চারা না পাওয়ায় এক বিঘা জমির জন্য দোগাছি বলানো কিনতে হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায়। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাদের আশঙ্কা, এ ক্ষতির ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে, আর সামনে মানুষ ও গবাদিপশুর খাদ্যের ভয়াবহ সংকট দেখা দিতে পারে।
রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামের বর্গাচাষী শাহারুল আলম বলেন, ‘দুই বিঘা জমি রোপণে চারা, হাল-সার ও শ্রমিকে প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দুই বিঘা জমিই পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। জমিতে পানি বেশি থাকায় ভাদ্রের শেষ সময়ে রোপণ করেছিলাম তবুও রক্ষা হয়নি। খাদ্য ও গোখাদ্যের সংকটে পড়তে হবে।’
আরেক বর্গাচাষী খোকা মিয়া বলেন, প্রতি বছর সামান্য বৃষ্টি হলেই এ এলাকার ধান খেত পানিতে ডুবে যায়। এবার দুই দফায় চারা রোপণ করেও শেষ রক্ষা হলো না। খরচের টাকা উঠবেনা, উল্টো ঋণের বোঝা বাড়ল।’
এই গ্রামের কলেজ শিক্ষক ও গৃহস্থ চাষি আমিনুল ইসলাম কামাল বলেন, ‘আমাদের এখানে দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার সমস্যা রয়েছে। নালা সংকটের কারণে প্রতি বছরই জমি পানিতে ডুবে যায়। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হওয়ায় কৃষকদের বারবার ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।
এদিকে শুধুই ত্রাণ বা ক্ষতিপূরণ নয়, স্থায়ী সমাধান চান ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। তাদের বিশ্বাস, মাত্র দুই কিলোমিটার জায়গায় নালা খনন করলে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে।
প্রশাসনের বক্তব্য: গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিকুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘তিন দফায় প্রায় ৪০০ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছিল। এর বেশিরভাগ রিকভারি হয়েছে। তবে ১৮ সেপ্টেম্বরের প্রবল বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া ৯৬ হেক্টরের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করছি। সঠিক পরিমাণ নিরূপণের পর পুনর্বাসনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ আল হাসান বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে আমরা জানি। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে দ্রুত নালা খননের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মীরসরাইয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি কাভার্ডভ্যানের পেছনে দ্রুতগামী বাসের ধাক্কায় মোহাম্মদ মুরাদ (২৫) নামের বাস চালকের সহকারী ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৯ জন। মুরাদ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং মুসলিমপাড়ার জামাল হোসেনের ছেলে। রোববার ভোরে উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাপাহাড় এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা সৌদিয়া পরিবহনের একটি এসি বাস ভোরে কাভার্ডভ্যানটিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই মুরাদ নামে একজন নিহত হন। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে দুজনকে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহতরা হলেন, চট্টগ্রাম শহরের বাকলিয়া থানার চকবাজার এলাকার সাইদুল ইসলাম (২৮), নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার কম্বলনগরের আব্দুল মোমেন (৪৮), লক্ষীপুরের নন্দনপুরের নুর আলম (৪৩), পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়ার সোহেল রানা (৩৮), সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ ইউনিয়নের আব্দুল কাদের (৩৪) ও মিজানুর রহমান (৫০), দিনাজপুর সদরের সোহেল রানা (৩৫), শরিয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার রিপন মণ্ডল (৩৪) এবং মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলার রবিউল হোসেন (৩৬)। তারা সবাই ঢাকায় এসিআই ফুডসে চাকরি করেন।
আহত যাত্রী আব্দুল কাদের বলেন, আমরা ১৯জন মিলে কক্সবাজার ঘুরতে গিয়েছিলাম। ভোরে ঘুমের মধ্যে হঠাৎ জোরে ধাক্কা লাগে। অনেকে জানালা ভেঙে বের হয়, বাকিদের ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করে।
মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ফাহিম ফেরদৌস বলেন, আহতদের মধ্যে দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শঙ্কামুক্ত আছেন।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার পরিদর্শক বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘কাভার্ডভ্যানটি দাঁড়িয়ে ছিল। বাস পেছন থেকে এসে ধাক্কা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মুরাদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
একই সাথে একই মঞ্চে দুই সহকর্মীর বিদায় সংবর্ধনা। তবে এই দুইজনের সম্পর্ক শুধু সহকর্মীর নয়, তারা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। ফরিদপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরের এই দম্পতি, মোহাম্মাদ নুরুল হুদা এবং তাসফিয়া তাছরীণ, বদলিজনিত কারণে বিদায় নিলেন। তাদের সম্মানে রোববার সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা), ফরিদপুর-এর হল রুমে এক আবেগঘন বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মোহাম্মাদ নুরুল হুদা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন এবং তার সহধর্মিণী তাসফিয়া তাছরীণ সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা)-এর তত্ত্বাবধায়ক (সহকারী পরিচালক) ছিলেন।
মোহাম্মাদ নুরুল হুদা, যিনি ২০০৭ সালে ফরিদপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরে কর্মজীবন শুরু করেন, তিনি এখন সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হিসেবে নতুন দায়িত্ব পালন করবেন।
তাসফিয়া তাছরীণ, যিনি ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে ফরিদপুর সমাজসেবা অধিদপ্তরে যোগদান করেন, তিনি এখন সমাজসেবা অধিদপ্তরের জাতীয় বিশেষ শিক্ষা কেন্দ্র, মিরপুরে যোগদান করবেন। বক্তব্য দিতে গিয়ে দম্পতি উভয়েই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। মোহাম্মাদ নুরুল হুদা বলেন, ‘ফরিদপুরের মাটি ও মানুষ আমাদের কর্মজীবনকে অর্থবহ করেছে। এখানকার সহকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি, তা সারাজীবন পাথেয় হয়ে থাকবে। সমাজসেবা পরিবার আমার কাছে শুধু অফিস নয়, একটি প্রকৃত পরিবার ছিল।’
অন্যদিকে, তাসফিয়া তাছরীণ বলেন, ‘সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা)-এর শিশুদের সাথে আমার কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত অমূল্য। তাদের মায়া ছেড়ে যাওয়াটা খুব কঠিন। সকলের সহযোগিতা ও ভালোবাসার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’
সমাজসেবা অধিদপ্তর, ফরিদপুরের আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক, এ এস এম আলী আহসান। সঞ্চালণা করেন সদরপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার কাজী শামীম আহমেদ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মো. শফিকুল ইসলাম (সহকারি পরিচালক, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, ফরিদপুর), নব যোগদানকারী মোহাম্মদ আরিফ হোসেন, মো. কাজী নেমেরী (নগরকান্দা উপজেলা সমাজসেবা অফিসার), কল্লল সাহা (মধুখালী সমাজ সেবা অফিসার), ফজলে রাব্বি নোমান (সালথা উপজেলা সমাজসেবা অফিসার), এস এম সুজাউদ্দিন রাশেদ (শহর সমাজসেবা অফিসার) এবং সদর সমাজসেবা অফিসার মো. মাহবুবুরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
ফেনীতে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে আসামি গ্রেপ্তার, প্রসেস জারী, তদন্ত প্রতিবেদন প্রদান, মেডিকেল সার্টিফিকেট ও চার্জশীট দাখিল, ফৌজদারী কার্যবিধি (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ এর মাধ্যমে আনীত সংশোধনী ও মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। গত শনিবার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ছালামত উল্লাহ এর সভাপতিত্বে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।
কনফারেন্সে পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মন্জুর আহসান, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সাহেদা আক্তাদ সুমী এবং জেলায় কর্মরত সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিজিবি, ব্যাটলিয়ান-৪ এর সহকারী পরিচালক, সামাজিক বন বিভাগের কর্মকর্তার প্রতিনিধি, বিভিন্ন সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তা, সিআইডিসহ সকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং তদন্তের সাথে সম্পৃক্ত অন্যান্য ইউনিটের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কনফারেন্সে ফোকাল পার্সন হিসেবে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. জহির আহমেদ মজুমদার জানান, কনফারেন্সে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিগত বছরগুলোর মামলার নিষ্পত্তির বিবরণী পেশ করা হয়। উপস্থিত সকলে মামলা নিষ্পত্তি ও বিচার কার্যক্রম নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় পুলিশ সুপার ও তার নিয়ন্ত্রণাধীন অফিসাররা নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
কনফারেন্সের সভাপতি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ ছালামত উল্লাহ বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়া মামলার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মামলার সিংহভাগ কাজই তদন্তকারী সংস্থা করে থাকেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সাক্ষীদের সাক্ষ্য, মেডিকেল সনদ সংগ্রহ, আলামত জব্দকরণ, রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন সংগ্রহ, ডিএনএ টেস্ট, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ও ভিসেরা রিপোর্ট সংগ্রহ, বিশেষজ্ঞের মতামত, এজাহারকারী/ নালিশকারীর বক্তব্য রেকর্ড ও সংগ্রহে বিচ্যুতি হলে মামলায় বিচ্যুতি ঘটলে মামলায় বিরূপ ফল হয়। এজন্য সকল তদন্তকারী সংস্থা ও এজেন্সিকে সতর্ক থাকতে হবে।
একই সাথে রিমান্ড শুনানিতে কেইস ডকেট ও সিডি উপস্থাপন, মামলার তদন্ত প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা পরিহার, দ্রুত মেডিকেল সনদ সরবরাহ, ফরেনসিক রিপোর্ট প্রাপ্তিতে আন্তঃবিভাগ যোগাযোগ জোরদার, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দাখিলে আরও দায়িত্ববান হওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন।
তিনি ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৪/১৪৫ ধারার বিধানসমূহ যথাযথভাবে পালনের নিমিত্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা প্রদান করেন।
এছাড়াও তিনি ফেনী জেলার ট্রাফিক ব্যবস্থা আরো গতিশীলকরণসহ ট্রাফিক আইনে রুজুকৃত মামলাগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য ট্রাফিক ইন্সপেক্টরকে সার্বিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, আনোয়ারায় ১ হাজার মেট্রিকটন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি খাদ্যগুদাম আছে আরও ৫শ মেট্রিকটন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন গুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজের অগ্রগতি হয়েছে। আশাকরি আগামী জুনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এ সময় তিনি প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবং কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেন এবং নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে জোর দেন। রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় আনোয়ারার সদরে নির্মাধীণ ৫০০ মেট্রিকটন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন খাদ্য গুদাম পরিদর্শনে আসেন তিনি কথা বলেন।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন কৌশলগত স্থানে নতুন খাদ্য গুদাম ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় আনোয়ারা, সাতকানিয়া ও সন্দ্বীপে ৩টি প্রজেক্টে ১০কোটি ৭৪লাখ ৩৩হাজার ৩২টাকায় তিন উপজেলায় ৩টি খাদ্য গুদাম নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের জুলাই মাসে।
পরিদর্শনে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এস এম কায়সার আলী,
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ রিয়াদ কামাল রনি, আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার, আনোয়ারা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জান্নাতুল আকসা উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের কেশবপুর ও আশপাশ এলাকা থেকে অবাধে কৃষকের অগোচরে বন্ধুর ভূমিকা পালনকারী প্রাকৃতিক পানি শোধন ফিল্টার নামক প্রাণি শামুক নিধন করা হচ্ছে। এর ফলে মৎস্য ও কৃষি বিভাগও এখন হয়ে পড়েছে চিন্তিত। দাবি উঠেছে এখনি শামুক নিধনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এলাকা থেকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হয়ে পড়বে। ভবদহ অঞ্চলের কেশবপুর উপজেলায় ৫৫ হাজার ৮৬৭ বিঘাতে ৪ হাজার ৬৫৮টি ঘের ও ৫ হাজার ৮৮৭ বিঘায় ৬ হাজার ৯৯৫টি পুকুর ও দিঘী রয়েছে। মনিরামপুর উপজেলায় রয়েছে ৬৮ হাজার ৬১০ বিঘায় ৪ হাজার ৮৮৯টি ঘের ও ৩৪ হাজার ২৩৭ বিঘায় আছে ১১ হাজার ৬৪৩টি পুকুর ও দিঘী এবং অভয়নগর উপজেলায় রয়েছে ৩৪ হাজার ৪২৫ বিঘা জমিতে ১ হাজার ২০৫টি ঘের ও ২৫ হাজার ৮৯০ বিঘায় ৪ হাজার ৮১০টি পুকুর ও দিঘী। এ ছাড়াও তিনটি উপজেলায় রয়েছে অসংখ্য উন্মুক্ত জলাবদ্ধ বিল যা ঘের হিসেবে ব্যবহার করা হয় না। এলাকার দরিদ্র নারী পুরুষ ও শিশুরা এ সব ঘের, পুকুর, দিঘী ও উন্মুক্ত জলাবদ্ধ বিল থেকে শামুক সংগ্রহ করে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ৭ থেকে ৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে থাকে। ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন সড়কের পয়েন্টে পয়েন্টে পাইকাররা ভ্যান, সাইকেল, দাঁড়িপাল্লা নিয়ে বসে থাকে। সকাল থেকেই ওই সব পয়েন্টে গিয়ে নারী-পুরুষ ও শিশুরা শামুক-ঝিনুক বিক্রি করে থাকে। এ সব পাইকারি ব্যবসায়ীরা শামুক-ঝিনুক থেকে মাংস বের করে ঘের মালিকদের কাছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেন। আবার শামুক ঝিনুকের খোলা বস্তা প্রতি ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করছে চুন তৈরির কারখানায়। মূলত ঘের ও চুন কারখানার মালিকরাই অস্বচ্ছল পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুদের উদ্বুদ্ধ করে শামুক-ঝিনুক ধরতে। চুন কারখানার মালিকরা পাইকারদের কাছে অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখে শামুক-ঝিনুক কেনার জন্য। মনিরামপুরের গোপালপুরে ২টি ও চেচুড়িয়ায় ১টি মোট ৩টি বড় ধরণের চুন তৈরির কারখানা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, শামুক মারা গেলে মাংস পঁচে ও খোলায় ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশ জাতীয় বস্তু মাটিতে তৈরি হয়। এর ফলে যে ক্ষেতে বেশি শামুক থাকে সেখানে ফসল ভালো উৎপাদন হয়। শামুকের কারণে ক্ষেতের উর্বরতা শক্তি বাড়ে।
কেশবপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ বিশ্বাস বলেন, শামুকের শরীরে রয়েছে প্রাকৃতিক জল শোধন ব্যবস্থা (ফিল্টার)। এরা ময়লা যুক্ত পানি পান করে ময়লা খাদ্য হিসেবে ভেতরে রেখে যে পানিটা বাইরে ছেড়ে দেয় সেটা বিশুদ্ধ। শামুকের বিশুদ্ধ পানির কারণে বিলে কই, শোল, শিং ও কার্প জাতীয় মাছ শামুক ও শামুকের ডিম খেয়ে বেঁচে থাকে। জলাবদ্ধ বিল থেকে শামুক কমে গেলে পানি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে পানির রং পরিবর্তন হয়ে রোগ জীবাণু বেড়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ২০১২ সালে ১০ জুলাই প্রকাশিত সরকারি প্রজ্ঞাপনে শামুককে বন্য প্রাণি হিসেবে গণ্য করা হয়। সে হিসেবে অবৈধ ভাবে শামুক ধরা ও বিক্রি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
মন্তব্য