ডিয়েগো ম্যারাডোনার বিদায়ে কাঁদছে পুরো বিশ্ব। ভক্ত, সমর্থক ও সতীর্থরা মূহ্যমান আপনজন হারানোর বেদনায়। বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে, যে কোনো ফুটবল ভক্তের কাছে ম্যারাডোনা অতি আপনজন।
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক, নাপোলিকে শিরোপা জেতানো কিংবদন্তি, বার্সেলোনা ও বোকার মাঠে বল নিয়ে দৌঁড়ানো এক অমিত প্রতিভাধরের পরিচয় ছাপিয়ে ম্যারাডোনা হয়ে গেছেন গোটা পৃথিবীর অংশ।
তার মৃত্যুতে তাই বিশ্বব্যাপী এমন হাহাকার। মহাতারকার প্রস্থানে বিষণ্নতা চারদিকে।
এক দশকের কিছু আগে এমন আরেক মৃত্যু এসেছিল পৃথিবীতে। তিনি ম্যারাডোনার মতো ক্রীড়া ক্ষেত্রের কেউ নন, তবে একই রকম ক্ষ্যাপাটে, একই রকম বাউণ্ডুলে। যতটা আলোচিত, ঠিক ততটাই বিতর্কিত।
কাকতালীয় ভাবে দুইজনের মৃত্যুর তারিখটাও এক। ২৫। নভেম্বরের ২৫ গেলেন ম্যারাডোনা। আর ২০০৯ এর জুনের ২৫ প্রয়াণ ঘটে সেই আরেক ট্র্যাজিক আইকন মাইকেল জ্যাকসনের।
প্রশ্ন উঠতেই পারে ম্যারাডোনার সঙ্গে মাইকেল জ্যাকসনের প্রসঙ্গ কেন? দুই জনই নিজেদের ক্ষেত্রে সবার সেরা ও সবচেয়ে নন্দিত-নিন্দিত। আপাত দৃষ্টিতে মিল তো এটুকুই!
জ্যাকসন বা ম্যারাডোনার কর্মক্ষেত্র ছাপিয়ে যদি নজর দেয়া যায় তাদের ব্যক্তিগত জীবনে তাহলে সেখানে অমিলের চেয়ে মিলই বেশি খুঁজে পাওয়া যাবে।
ডিয়েগো ম্যারাডোনার জন্ম বুয়েনোস আইরেসের সুবিধাবঞ্চিত এলাকা ভিয়া ফিয়োরিতায়। ছোটবেলা থেকেই লড়তে হয়েছে অভাব, না পাওয়া এবং আর্থিক সংকটের সঙ্গে।
মাইকেল জ্যাকসনের জন্মটাও একইরকম পরিবেশে, অন্য আরেকটি দেশে। যুক্তরাষ্ট্রের ইনডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যুষিত অঞ্চল গ্যারিতে ১০ ভাইবোনের সঙ্গে দুই রুমের বাড়িতে বেড়ে ওঠা তার। ম্যারাডোনার চেয়ে বয়সে মাত্র দুই বছরের বড় জ্যাকসন।
দুই তারকাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সাফল্য পান একেবারে অল্প বয়সে। ১৩ বছর বয়সে জ্যাকসন হয়ে ওঠেন ভাইদের পপ গ্রুপ ‘জ্যাকসন ফাইভ’ এর মূল ভোকাল। তিন বছরের মধ্যেই হয়ে যান মাল্টি-প্ল্যাটিনাম আর্টিস্ট।
আমেরিকার দক্ষিণের আর্জেন্টিনাতেও ম্যারাডোনা জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ান মাত্র ১৬ বছর বয়সে। সত্তরের দশক ছিল দুই ক্ষেত্রে দুই ভবিষ্যত মেগাস্টারের নিজেকে তৈরির সময়।
কাকতাল খুঁজতে চাইলে পাওয়া যাবে এখানেও। ১৯৭৯ সালে ম্যারাডোনা যেমন আর্জেন্টিনাকে জিতিয়েছিলেন যুব বিশ্বকাপ। জ্যাকসনও ভাইদের ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে একই বছর রিলিজ করেন তার সলো অ্যালবাম ‘অফ দ্য ওয়াল’।
আশির দশকে দুই তরুণ পৌছান নিজেদের শিখরে। ৮৬ তে ম্যারাডোনার বিশ্বকাপ জয় আর এর তিন বছর আগে জ্যাকসনের অ্যালবাম ‘থ্রিলার’। দুটোকেই ধরা হয় তাদের স্ব-স্ব ক্ষেত্রের বেঞ্চমার্ক।
থ্রিলার সর্বকালের সর্বাধিক বিক্রির রেকর্ড গড়ে, যা আজও টিকে আছে। আর ৮৬ বিশ্বকাপের পারফর্মেন্সকে ফুটবল পণ্ডিতেরা এক বাক্যে মেনে নিয়েছেন সর্বকালের সেরা ফুটবল দক্ষতার প্রদর্শনী।
কিন্তু এই দুইজনের ট্রফি জয় বা অ্যালবাম বিক্রির সংখ্যার চেয়ে ঢের গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় তাদের ‘কালচারাল ইমপ্যাক্ট’।
ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনা ও নেপলসের নিপীড়িত মানুষের কাছে মসীহা বনে যান বিশ্বকাপ ও স্কুদেত্তো জিতিয়ে। আর্জেন্টাইন ও নেপোলিতানরা তাদের সব অপ্রাপ্তি, হতাশা, বিষন্নতাকে ভুলতে চাইত ম্যারাডোনার একটি গোল বা পাস থেকে। দিনের পর দিন তাদেরকে ঠিক সেটি-ই উপহার দিয়ে ১০ নম্বর জার্সি পড়া পাঁচ ফুট পাঁচ ইঞ্চির লোকটা মানুষ থেকে বনে গেছেন ঈশ্বর।
জ্যাকসনও ভাঙতে থাকেন ‘অ্যামেরিকান স্টিরিওটাইপ’। প্রথম কালো শিল্পী হিসেবে পান মেইনস্ট্রিম জনপ্রিয়তা। প্রথম কালো শিল্পী হিসেবে তার মিউজিক ভিডিও মুক্তি দেওয়া হয় পপ সঙ্গীতের তীর্থস্থান খ্যাত এমটিভিতে। দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হওয়ার পরও অ্যামেরিকার সামাজিক শৃঙ্খলে বন্দি কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান-অ্যামেরিকানরা জ্যাকসনের মাধ্যমে প্রথম স্বাদ পান সর্বস্তরে সাফল্য ও গ্রহণযোগ্যতার।
দুই প্রান্তের দুই কিংবদন্তি সাফল্য দিয়ে স্থান করে নেন মানুষের হৃদয়ে। দুই জনই হয়ে ওঠেন আশি ও নব্বই দশকে বেড়ে ওঠাদের জন্য কালচারাল আইকন। কোনো স্থান, কাল, পাত্রের সীমারেখা দিয়ে থামানো যায়নি তাদের জনপ্রিয়তার অগ্রযাত্রা।
নব্বই দশকেই পতনের শুরু হয় দুই সম্রাটের। ফুটবল সম্রাটের পরাজয় ঘটে মাদকের হাতে। আর পপ সম্রাটের বিপক্ষে আসতে থাকে একের পর এক যৌন কেলেংকারির অভিযোগ।
দুইজনই অসংখ্যবার এইসব অভিযোগকে ষড়যন্ত্র বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। ম্যারাডোনা স্বীকার করেছেন কোকেন নেয়ার কথা, কিন্তু বারবার বলেছেন ফুটবল খেলতে তার মাদকের ‘সাহায্যের’ দরকার নেই।
১৯৯০ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ইতালির বিপক্ষে আর্জেন্টিনাকে জেতানোর খেসারত তাকে দিতে হয়েছে- এই কথা বহুবার বলেছেন ক্যারিয়ারের তুঙ্গে থাকার সময় নাপোলির কুখ্যাত মাফিয়া পরিবারের ঘনিষ্ঠ বনে যাওয়া ম্যারাডোনা।
জ্যাকসনকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয় আদালত। তবে ততদিনে মানসিকভাবে তাকে ধ্বংস করে দেয়ার চেষ্টায় সফল ইউএস মিডিয়া। জ্যাকসন বারবার মিডিয়ার সামনে আনার চেষ্টা করেন কীভাবে সোনি কর্পোরেশনের মতো বিরাট একটা কোম্পানি চেষ্টা করছে তাকে ইন্ডাস্ট্রি থেকে সরিয়ে দিতে। যেন তার গানগুলোর কপিরাইট তারা কিনে নিতে পারে বিনা বাধায়।
তার লড়াইয়ের যৌক্তিকতা পরিস্কার হয়ে ওঠে যখন মৃত্যুর পরের বছরই তার গানের সম্পূর্ণ প্রচার স্বত্বের জন্য সোনি ২৫ কোটি ডলারের চুক্তি করে জ্যাকসনের কোম্পানির সঙ্গে।
বারবার ক্যারিয়ারে ম্যারাডোনা লড়ে এসেছেন ফিফা সভাপতি জোয়াও হাভেলাঞ্জের দূর্নীতির বিরুদ্ধে। লড়েছেন সাম্রাজ্যবাদ আর পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে। ‘রানির’ মুখের ভাষা বলে ইংরেজি শিখতে চাননি কখনও। অ্যামেরিকার কুনজর পড়বে জেনেও বন্ধুত্ব করেছেন ফিদেল ও রাউল কাস্ত্রোর সঙ্গে।
একই ভাবে জ্যাকসন লড়েছেন অ্যামেরিকান মিডিয়াতে কৃষ্ণাঙ্গদের ইমেজের বিরুদ্ধে। গায়ের রঙ পাল্টানো নিয়ে অনেক সমালোচনা সইতে হয়েছে জ্যাকসনকে। সমালোচকদের পাল্টা জবাব দিয়ে বলেছেন, ‘আমার ভিটিলিগোর (চর্মরোগ) কারণে রঙ পরিবর্তীত হয়েছে। তারপরেও তারা আমাকে বারবার একই প্রশ্ন করে ব্যতিব্যস্ত করে। কিন্তু যখন দেখি সূর্যের নিচে শেতাঙ্গদের গায়ের রঙ পালটানোর জন্যে বিলিয়ন ডলারের সান ট্যানিং ইনডাস্ট্রি নিয়ে কেনো কেউ প্রশ্ন করছে না, তখন বিষয়গুলো পরিষ্কার হয়’।
এই প্রতিবাদ ও বিদ্রোহী স্বভাবের কারণে সাধারণ মানুষের আরও কাছে পৌছে গিয়েছিলেন দুই জগতের দুই মেগাস্টার। জ্যাকসনের বিদায়ে কান্নার রোল ওঠে লস এঞ্জেলিস থেকে লাগোস, ডারবান থেকে রেকিয়াভিক, বেইজিং থেকে ব্রাসিলিয়া পর্যন্ত। আশি ও নব্বই দশকে বড় হওয়া মিলেনিয়ালদের কাছে ২০০৯ সালের জ্যাকসনের মৃত্যু ছিল শৈশব হারিয়ে ফেলার মতোই কষ্টের।
একই রকম কিংবা তার চেয়েও বেশি আবেগ ম্যারাডোনার ক্ষেত্রেও। পুরো এক প্রজন্মের কাছে আইকন তিনি। তার চলে যাওয়া যেন মাইকেল জ্যাকসনের মতোই সময়কে ধারণ করা আরেক বিয়োগান্তক চরিত্রের চির প্রস্থান।
দেশে সম্প্রতি নারীদের বিভিন্ন বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে কয়েকটি বাধা প্রদানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিশেষ করে মেয়েদের দুটি ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধার বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছে সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নারীরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং পুরুষদের মতোই সমানভাবে মানবিক ও নাগরিক অধিকার ভোগ করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, কেউ নারীদের অধিকার লঙ্ঘন করার মতো ঘটনায় সম্পৃক্ত হলে বা এই ধরনের বেআইনি বিধিনিষেধ আরোপের সঙ্গে যুক্ত হলে তিনি বা তারা দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থার মধ্যে পড়বেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেকোনো গোষ্ঠীর নাগরিকদের প্রতি বৈষম্য বা নিপীড়নের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ইতোমধ্যে দিনাজপুর এবং জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনকে স্থগিত ফুটবল ম্যাচ পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জেলা প্রশাসকরা জানিয়েছেন যে, তারা সম্প্রতি তাদের জেলায় নারী ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচ আয়োজন করেছেন।
‘শত শত মানুষ ম্যাচগুলো উপভোগ করেছেন এবং তাদের জেলার সকল শ্রেণির মানুষ এসব আয়োজনের প্রশংসা করেছেন। আমরা এই বিবৃতির সঙ্গে জয়পুরহাটের নারী ফুটবল ম্যাচের একটি ভিডিও সংযুক্ত করেছি।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত এক মাসে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের বৃহত্তম যুব উৎসবগুলির মধ্যে একটি আয়োজন করেছে, যার মধ্যে শত শত গ্রামীণ জেলা এবং উপজেলা শহরে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নারী খেলোয়াড়দের জন্য নানা ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। অনেক প্রত্যন্ত গ্রামীণ জেলায়ও হাজার হাজার মেয়ে ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল।
‘প্রফেসর ইউনূস আজীবন নারী অধিকারের পক্ষের একজন। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের ৯০ শতাংশেরও বেশি মালিকানা ছিল নারীদের। গত সপ্তাহে প্রফেসর ইউনূস ফিফা প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সাথে দেখা করেন এবং বাংলাদেশে নারী ফুটবলারদের জন্য অবকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে তার সহায়তা চান।’
আরও পড়ুন:ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে শুক্রবার বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো দশম কেএসআরএম গলফ টুর্নামেন্ট।
এ টুর্নামেন্টে নারী, সিনিয়র ক্যাটাগরিসহ ১৫৮ গলফার অংশ নেন।
টুর্নামেন্ট উপলক্ষে সবুজে আচ্ছাদিত গলফ ক্লাবকে সাজানো হয় দৃষ্টিনন্দন সাজে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সেনানিবাসের স্টেশন কমান্ডার ও ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ভিপি (প্রশাসন ও অর্থ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম এনডিসি, পিএসসি।
কেএসআরএমের পরিচালক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জসিম উদ্দিন, বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. আশফাকুল ইসলাম, ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ইও অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. মোকাদ্দেস হোসেন, কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম, আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সাইফুল আলম চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা কেএসআরএমের সহযোগিতায় এ টুর্নামেন্টের আয়োজন করে থাকি, যা অত্যন্ত আনন্দের ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা। এ জন্য কেএসআরএম কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ।
‘আমরা আশা করছি কেএসআরএমের সঙ্গে আমাদের ধারাবাহিক এ সম্পর্ক আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। আঞ্চলিক পর্যায়ের এসব গলফ টুর্নামেন্ট জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আশফাকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সব বড় বড় প্রকল্পে কেএসআরএমের রড ব্যবহার হয় ব্যাপক হারে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নে গর্বিত নির্মাণ অংশীদার ছিল কেএসআরএম।
‘আমাদের কাঁচামাল বিশ্বমানের। যেকোনো ডায়ামিটার ও গ্রেডের রড তৈরিতে সক্ষম আমরা। আমাদের শিপিং সেক্টরে ২৮টি মাদার ভ্যাসেল রয়েছে, যা দিয়ে আমরা জাতির সেবা করছি। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছি প্রচুর।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবসময় চেষ্টা করি গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে। আগামীতেও আমাদের সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের উপ-মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল নুরুল মোমেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মবিনুর রহমান চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক তাজ উদ্দিন, উপব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান রিয়াদ, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিজান উল হক, মিথুন বড়ুয়া, আশরাফুল ইসলামসহ অনেকে।
টুর্নামেন্টে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ ও র্যাফেল ড্রর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
সাত সদস্যের এ কমিটিতে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
কমিটির সদস্য পদে আরও যে পাঁচজনের নাম রয়েছে তারা হলেন ওসমান গনি (ক্রীড়া অনুরাগী), মানিক রায় (কোচ), মো. মামুন (রেফারি), দিবস তালুকদার (ক্রীড়া সাংবাদিক) এবং আরিফুর রহমান (ছাত্র প্রতিনিধি)।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে কমিটির অনুমোদনপত্র পাঠানো হয় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
এ ছাড়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়য়ের সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সচিব, সচিবের একান্ত সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব বরাবর অনুমোদনপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়।
গত ১৯ জানুয়ারি অনুমোদন হওয়া ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাত সদস্যের অ্যাডহক কমিটির অনুমোদনপত্রে লেখা রয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ২ (১৫)-এ উল্লিখিত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার সংশ্লিষ্ট গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপর অর্পিত ক্ষমতা অনুসরণে ঝালকাঠি জেলার জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ৮-এ বর্ণিত পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক সদয় অনুমোদিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ৫১তম আগা খাঁন গোল্ড কাপ গলফ টুর্নামেন্ট।
তিন ব্যাপী এ টুর্নামেন্ট শেষ হচ্ছে শনিবার, যা শুরু হয় বৃহস্পতিবার।
টুর্নামেন্টে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের দেশি/বিদেশি সদস্যসহ দেশের সব গলফ ক্লাবের প্রায় ৫০০ জন গলফার অংশ নেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা ছাড়াও কমান্ড্যান্ট, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ও কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক, প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মাদাদ আলী ভিরানী, ক্লাব ক্যাপ্টেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌহিদ হোসেন, টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবিদুর রেজা খান (অব.), সংশ্লিষ্ট ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য, ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কর্নেল মো. শহিদুল হক (অব.), ক্লাব সেক্রেটারি কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন, কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের লেডি ক্যাপ্টেন প্রফেসর শাহীন মাহবুবা হক, ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, ক্লাব অ্যাফেয়ার্স লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু মো. সাইদুর রহমান (অব.), ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, গলফ অপারেশনস লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আনোয়ার হোসেন (অব.), বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিল বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
শনিবার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নবনিযুক্ত সভাপতি। পদাধিকারবলে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিওএ-র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর সেনাবাহিনী প্রধান তার এই প্রথম সভায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিওএ-র কার্যনিবাহী কমিটির সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন এবং সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মাইনুল হাসান বলেছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পুলিশ সার্ভেইল্যান্সে (নজরদারিতে) রাখা হয়েছে।
রোববার পল্টনে আউটার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘ওয়ালটন-ক্র্যাব স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’-এর ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এরকম (শীর্ষ সন্ত্রাসী) যারা ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে, তারা দীর্ঘ সময় জেল খেটে আদালতের মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে। তারা আমাদের সার্ভেইল্যান্সে রয়েছে। নতুন করে অপরাধে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পুলিশে এখনও যোগদান না করা সদস্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে মাইনুল হাসান বলেন, ‘এটা একেবারেই মিনিমাম নম্বর। যারা যোগদান করেননি তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএমপি মহানগরীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। তেমনই ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) বিভিন্নভাবে অপরাধ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করছে।
‘ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন, যেটি বহুদিন থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ সব সময় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে থাকে।’
ডিএমপি কমিশনার পরে পল্টন আউটার স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ক্র্যাব সদস্যদের সঙ্গে পরিচিত হন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানসহ ক্র্যাবের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আসিয়ান ঢাকা কমিটির পক্ষ থেকে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ সময় আসিয়ান ঢাকা কমিটির প্রতিনিধি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রুনাই দারুসসালামের হাইকমিশনার হারিস বিন ওথম্যান, ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত হিরু হারতানতো সুবোলো, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কেইও সোয়ে মোয়ে, ফিলিপাইনের জুনিয়র রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আউসান, সিঙ্গাপুর প্রজাতন্ত্রের হাইকমিশনার মাইকেল লি, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিটমোর, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন মানহ কুওয়ংসহ কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য