মাদারীপুরের ১৪ বছরের কিশোর ফাহাদের (ছদ্মনাম) স্বপ্ন পেস বোলার হওয়ার। স্থানীয় ম্যাচগুলোতে দারুণ বোলিং করে এলাকার সবার নজরে আসলেও নিজ জেলায় অ্যাকাডেমির অভাবে প্রতিভার বিকাশ হয়নি এই কিশোরের। নিয়মিত ঢাকায় এসে কোনো অ্যাকাডেমিতে কোচিং করাটাও ছিল তার জন্য সময় ও অর্থ সাপেক্ষ। ফলে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও খুব বেশি এগোতে পারেননি ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে।
বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোরের অবস্থা ফাহাদের মতো। প্রতিভা থাকলেও শেখার জায়গার অভাবে খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন ছাড়তে হচ্ছে কাঁচা বয়সেই।
উলটো ছবিও আছে। হাতের কাছে অ্যাকাডেমি থাকলেও সেখানে সুযোগ-সুবিধার অভাবে প্রতিভা বিকশিত হয়নি অনেকেরই। তাদের মধ্যে একজন রাহাত চৌধুরী।
১৯ বছর বয়সী এই কিশোর ২০১৪ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত খেলেছেন ঢাকার একটি ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। কিন্তু নামে অ্যাকাডেমি হলেও, বাস্তবিকভাবে সেখানে দুই বছরে ক্রিকেট শিখতে পেরেছেন সামান্যই। রাহাত জানান, ‘কোচদের কাছে ছাত্রদের তুলনায় মায়া বেশি ছিল টাকার। যেখানে খেলোয়াড় থেকে ৫০-১০০ টাকা নিলেই হয় একটি ম্যাচের জন্য, সেখানে তারা নিতেন ৫০০ টাকারও বেশি।’
রাহাত আরও জানান, খেলার মাঠ পরিচর্যার ক্ষেত্রেও উদাসীন ছিল ক্লাব কর্তৃপক্ষ। অ্যাকাডেমি থেকে গিয়ে পেশাদার ক্রিকেট খেলবেন, তেমন কোনো সুযোগও ছিলো না।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনে এমন চিত্র অস্বাভাবিক কিছু নয়। গত দুই দশকে দেশের ক্রিকেট দেখেছে অভাবনীয় সাফল্য। সঙ্গে বেড়েছে পেশা হিসেবে ক্রিকেটকে বেছে নেবার প্রবণতা।
একজন খেলোয়াড়ের বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়াটা ধারাবাহিক। নিরলস পরিশ্রম, নিয়মিত অনুশীলন ও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি নিবিড় পরিচর্যা প্রয়োজন একজন উঠতি ক্রীড়াবিদের।
তাদের খেলা শেখার জন্য ব্যাঙের ছাতার মত অ্যাকাডেমি গড়ে উঠলেও সেখানেও রয়েছে মানসম্পন্ন কোচের সংকট। ঢাকার বাইরে মাঠ থাকলেও অ্যাকাডেমি রয়েছে হাতে গোনা।
ঢাকায় মাঠ সংকট, ঢাকার বাইরে অ্যাকাডেমির
শহরায়নের প্রভাবে ঢাকায় বেড়েছে মাঠ সংকট। সে কারণেই পাওয়া যাচ্ছে না পর্যাপ্ত খেলোয়াড়। মাঠের অভাবকেই খেলাধুলায় নতুন প্রজন্মের অনাগ্রহের কারণ মনে করেন বিকেএসপির ক্রিকেট পরামর্শক নাজমুল আবেদীন ফাহিম। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘মাঠ সংকট অবশ্যই একটা বড় কারণ। বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকায় মাঠ কম থাকার কারণে মানুষের উৎসাহ কমে যাওয়া, খেলাধুলার প্রচলন কমে যাওয়া এটা খুবই স্বাভাবিক।’
নাজমুল আবেদীনের সঙ্গে একমত ইন্দিরা রোড ক্রীড়া চক্রের কোচ আব্দুল মজিদ এবং শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের কোচ মনিরুল ইসলাম তাজ।
‘পর্যাপ্ত মাঠের অভাব ঢাকায়। এই সমস্যা তো দীর্ঘ দিনের। এটা নিয়ে আর বলে লাভ নেই। আমরা প্রতিদিনই এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি,’ বলেন আব্দুল মজিদ।
মনিরুল ইসলাম তাজ বলেন, ‘অবশ্যই এটা (মাঠ সংকট) একটি বাধা। এটার কারণেই আমরা কিছুটা পিছিয়ে আছি। এটা যদি হতো তাহলে আরও কিছু প্লেয়ার বের হতো।’
ঢাকায় অবশ্য ক্রিকেট অ্যাকাডেমির অভাব নেই। নাজমুল আবেদীন ফাহিমের মতে, ঢাকায় অ্যাকাডেমি আছে ১০০-১২০টি । পর্যাপ্ত খেলার সুযোগ নেই সেখানে। ঢাকার বাইরের অ্যাকাডেমি সংকটও ফুটে উঠল তার কথায়।
‘ঢাকায় অনেক অ্যাকাডেমি আছে। বাইরে সেভাবে নেই। ঢাকায় হয়তো ১০০-১২০টা অ্যাকাডেমি আছে। তার মধ্যে অনেকগুলোতে ভালো মানের উইকেট নেই। কোচ নেই৷ কাজেই অ্যাকাডেমির সংখ্যা কত সেটা খুব বড় ব্যাপার নয়’, বলেন ফাহিম।
ইন্দিরা ক্রীড়া চক্রের কোচ আব্দুল মজিদও জানান, ঢাকার বাইরে অ্যাকাডেমির সংখ্যা কম এবং বেশিরভাগ খেলোয়াড়ের পক্ষেই ঢাকায় এসে নিজেকে গড়ে তোলা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না।
তিনি বলেন, ‘ঢাকার বাইরে অ্যাকাডেমি সংখ্যায় কম কিন্তু মাঠ অনেক বেশি। (এটি খেলোয়াড়দের জন্য) অবশ্যই কঠিন। কারণ সবার পক্ষে তো আর ঢাকায় এসে, ট্রেনিং করে বেড়ে ওঠাটা সম্ভব হয় না’।
মানসম্পন্ন কোচের অভাব দেশজুড়ে
ঢাকায় প্রচুর অ্যাকাডেমি থাকলেও মনিরুল ইসলাম মনে করেন, মানসম্পন্ন কোচের অভাবও খেলোয়াড় না উঠে আসার অন্যতম একটি কারণ।
‘অ্যাকাডেমিগুলোয় মানসম্পন্ন কোচের অভাব আছে। দেশে অনেক অ্যাকাডেমি আছে কিন্তু সব জায়গায় কোয়ালিটি কোচ নেই। মাঠের পাশাপাশি কোচের অভাবটাও (খেলোয়াড় উঠে না আসার) একটি কারণ’, মনিরুল জানান।
নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, কোচদের মূল্যায়নের সংস্কৃতি নেই বাংলাদেশে। খেলোয়াড় গড়ে তোলার বা প্রস্তুত করবার জন্য যে অবকাঠামো, সেরকম কিছু কোচদের জন্য নেই।
‘ভালো খেলোয়াড় খোঁজার জন্য আমাদের দেশে এখন একটা অবকাঠামো আছে। যেমন, অনূর্ধ্ব-১৪, অনূর্ধ্ব-১৬, অনূর্ধ্ব-১৮ - সেখানে যদি খুব ভালো করে তাহলে আমরা বলি যে তার সম্ভাবনা আছে জাতীয় দলে খেলার। এভাবে কোচ, ফিজিও, ট্রেনার- সবারই এমন ধাপ পার করে আসা উচিত।
‘কেউ যদি জেলা পর্যায়ে কোচ হিসেবে ভালো করে, তাকে পরবর্তীতে বিভাগীয় পর্যায়ে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। রিওয়ার্ডশিপের ব্যাপারটা নিয়ে আসতে হবে। সেখানে ভালো করলে ধাপে ধাপে তাদেরকে অ্যাকাডেমি দল, এ দল, হাই পারফরম্যান্স দলের সাথে আমরা সংযুক্ত করতে পারি’, বলেন ফাহিম।
নাজমুল আবেদীনে মতে এখন যে কেউই কোচ হচ্ছে। তবে কোচ হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যে জ্ঞান সেটি নেই অনেকেরই।
তিনি বলেন, ‘কোচদের শিক্ষার বিষয়টা আমাদের দেশে দারুণভাবে বাধাগ্রস্ত। একজন বিশ্বমানের কোচ হতে গেলে অনেক পড়াশোনা করতে হয়। জানতে হয়। আমাদের দেশে সেই সংস্কৃতিটাই দুর্ভাগ্যজনকভাবে গড়ে ওঠেনি। এখন যে কেউ আসতে পারে এবং কোচ হতে পারে।’
দেশের পেশাদার ক্লাবগুলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তালিকাভুক্ত। তাদের অ্যাকাডেমির খেলোয়াড়েরা সুযোগ পান বিভিন্ন বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে খেলার। নাজমুল আবেদীনের মতে অধিকাংশ ক্লাবেই বছরজুড়ে করানো হয় শুধু অনুশীলন। যা মোটেও খেলোয়াড় তৈরি করার ক্ষেত্রে সাহায্য করে না।
‘ক্রিকেট এমন একটা খেলা, যেখানে আপনাকে খেলে শিখতে হবে। আমাদের অনেক অ্যাকাডেমি আছে। যেখানে সারা বছর অনুশীলন করানো হয়। অথচ এভাবে খেলা শেখা সম্ভব না। বরং, আমাদের উচিত খেলার সুযোগ করে দেয়া। তখন দেখা যাবে খেলতে খেলতেই তারা অনেক কিছু শিখেছে। ভিত্তিটাও শক্ত হয়েছে’, বলেন নাজমুল।
শুরু হয়েছে অনলাইন অ্যাকাডেমি
মাঠ ও মানসম্পন্ন অ্যাকাডেমির বিকল্প হিসেবে অনেকেই ঝুঁকছেন ভার্চুয়াল সমাধানের দিকে। ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তির যুগে দেরিতে হলেও ঢাকার শিশু-কিশোর এবং উঠতি খেলোয়াড়দের জন্য শুরু হয়েছে অনলাইন কোচিং প্ল্যাটফর্ম।
বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল বা ইউটিউব চ্যানেল এরই মধ্যে অনিয়মিত, আধা নিয়মিত ভাবে ক্রীড়া কোচিং বা টিপস দিয়ে থাকলেও সম্প্রতি শুরু হয়েছে পূর্ণাঙ্গ অনলাইন অ্যাকাডেমি।
‘খেলবেই বাংলাদেশ’ নামের এই প্ল্যাটফর্মে ফুটবল ও ক্রিকেটের ক্লাস নিচ্ছেন সাইফুল বারী টিটু এবং শাহরিয়ার নাফীসের মতো স্বনামধন্যরা।
এর প্রতিষ্ঠাতা কাজী সাবিরের লক্ষ্য অনলাইনে উচ্চমানের প্রশিক্ষণ পুরো দেশে ছড়িয়ে দেওয়া।
‘ঢাকার বাইরে কোয়ালিটি কোচিংয়ের অভাব আছে। জেলা পর্যায়ের কোচেরা ট্রেনিং দিচ্ছেন। কিন্তু এর পরের পর্যায়ে প্রশিক্ষণ তারা পায় না। শাহরিয়ার নাফীস, সাইফুল বারী টিটু এখানে অনলাইন ক্লাস নিচ্ছেন। আমরা সু্যোগটা তৈরি করে দিতে চাই’, বলেন সাবির।
দেশে সম্প্রতি নারীদের বিভিন্ন বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে কয়েকটি বাধা প্রদানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিশেষ করে মেয়েদের দুটি ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধার বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছে সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নারীরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং পুরুষদের মতোই সমানভাবে মানবিক ও নাগরিক অধিকার ভোগ করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, কেউ নারীদের অধিকার লঙ্ঘন করার মতো ঘটনায় সম্পৃক্ত হলে বা এই ধরনের বেআইনি বিধিনিষেধ আরোপের সঙ্গে যুক্ত হলে তিনি বা তারা দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থার মধ্যে পড়বেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেকোনো গোষ্ঠীর নাগরিকদের প্রতি বৈষম্য বা নিপীড়নের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ইতোমধ্যে দিনাজপুর এবং জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনকে স্থগিত ফুটবল ম্যাচ পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জেলা প্রশাসকরা জানিয়েছেন যে, তারা সম্প্রতি তাদের জেলায় নারী ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচ আয়োজন করেছেন।
‘শত শত মানুষ ম্যাচগুলো উপভোগ করেছেন এবং তাদের জেলার সকল শ্রেণির মানুষ এসব আয়োজনের প্রশংসা করেছেন। আমরা এই বিবৃতির সঙ্গে জয়পুরহাটের নারী ফুটবল ম্যাচের একটি ভিডিও সংযুক্ত করেছি।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত এক মাসে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের বৃহত্তম যুব উৎসবগুলির মধ্যে একটি আয়োজন করেছে, যার মধ্যে শত শত গ্রামীণ জেলা এবং উপজেলা শহরে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নারী খেলোয়াড়দের জন্য নানা ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। অনেক প্রত্যন্ত গ্রামীণ জেলায়ও হাজার হাজার মেয়ে ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল।
‘প্রফেসর ইউনূস আজীবন নারী অধিকারের পক্ষের একজন। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের ৯০ শতাংশেরও বেশি মালিকানা ছিল নারীদের। গত সপ্তাহে প্রফেসর ইউনূস ফিফা প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সাথে দেখা করেন এবং বাংলাদেশে নারী ফুটবলারদের জন্য অবকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে তার সহায়তা চান।’
আরও পড়ুন:ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে শুক্রবার বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো দশম কেএসআরএম গলফ টুর্নামেন্ট।
এ টুর্নামেন্টে নারী, সিনিয়র ক্যাটাগরিসহ ১৫৮ গলফার অংশ নেন।
টুর্নামেন্ট উপলক্ষে সবুজে আচ্ছাদিত গলফ ক্লাবকে সাজানো হয় দৃষ্টিনন্দন সাজে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সেনানিবাসের স্টেশন কমান্ডার ও ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ভিপি (প্রশাসন ও অর্থ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম এনডিসি, পিএসসি।
কেএসআরএমের পরিচালক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জসিম উদ্দিন, বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. আশফাকুল ইসলাম, ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ইও অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. মোকাদ্দেস হোসেন, কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম, আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সাইফুল আলম চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা কেএসআরএমের সহযোগিতায় এ টুর্নামেন্টের আয়োজন করে থাকি, যা অত্যন্ত আনন্দের ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা। এ জন্য কেএসআরএম কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ।
‘আমরা আশা করছি কেএসআরএমের সঙ্গে আমাদের ধারাবাহিক এ সম্পর্ক আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। আঞ্চলিক পর্যায়ের এসব গলফ টুর্নামেন্ট জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আশফাকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সব বড় বড় প্রকল্পে কেএসআরএমের রড ব্যবহার হয় ব্যাপক হারে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নে গর্বিত নির্মাণ অংশীদার ছিল কেএসআরএম।
‘আমাদের কাঁচামাল বিশ্বমানের। যেকোনো ডায়ামিটার ও গ্রেডের রড তৈরিতে সক্ষম আমরা। আমাদের শিপিং সেক্টরে ২৮টি মাদার ভ্যাসেল রয়েছে, যা দিয়ে আমরা জাতির সেবা করছি। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছি প্রচুর।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবসময় চেষ্টা করি গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে। আগামীতেও আমাদের সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের উপ-মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল নুরুল মোমেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মবিনুর রহমান চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক তাজ উদ্দিন, উপব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান রিয়াদ, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিজান উল হক, মিথুন বড়ুয়া, আশরাফুল ইসলামসহ অনেকে।
টুর্নামেন্টে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ ও র্যাফেল ড্রর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
সাত সদস্যের এ কমিটিতে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
কমিটির সদস্য পদে আরও যে পাঁচজনের নাম রয়েছে তারা হলেন ওসমান গনি (ক্রীড়া অনুরাগী), মানিক রায় (কোচ), মো. মামুন (রেফারি), দিবস তালুকদার (ক্রীড়া সাংবাদিক) এবং আরিফুর রহমান (ছাত্র প্রতিনিধি)।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে কমিটির অনুমোদনপত্র পাঠানো হয় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
এ ছাড়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়য়ের সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সচিব, সচিবের একান্ত সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব বরাবর অনুমোদনপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়।
গত ১৯ জানুয়ারি অনুমোদন হওয়া ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাত সদস্যের অ্যাডহক কমিটির অনুমোদনপত্রে লেখা রয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ২ (১৫)-এ উল্লিখিত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার সংশ্লিষ্ট গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপর অর্পিত ক্ষমতা অনুসরণে ঝালকাঠি জেলার জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ৮-এ বর্ণিত পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক সদয় অনুমোদিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ৫১তম আগা খাঁন গোল্ড কাপ গলফ টুর্নামেন্ট।
তিন ব্যাপী এ টুর্নামেন্ট শেষ হচ্ছে শনিবার, যা শুরু হয় বৃহস্পতিবার।
টুর্নামেন্টে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের দেশি/বিদেশি সদস্যসহ দেশের সব গলফ ক্লাবের প্রায় ৫০০ জন গলফার অংশ নেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা ছাড়াও কমান্ড্যান্ট, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ও কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক, প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মাদাদ আলী ভিরানী, ক্লাব ক্যাপ্টেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌহিদ হোসেন, টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবিদুর রেজা খান (অব.), সংশ্লিষ্ট ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য, ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কর্নেল মো. শহিদুল হক (অব.), ক্লাব সেক্রেটারি কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন, কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের লেডি ক্যাপ্টেন প্রফেসর শাহীন মাহবুবা হক, ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, ক্লাব অ্যাফেয়ার্স লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু মো. সাইদুর রহমান (অব.), ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, গলফ অপারেশনস লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আনোয়ার হোসেন (অব.), বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিল বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
শনিবার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নবনিযুক্ত সভাপতি। পদাধিকারবলে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিওএ-র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর সেনাবাহিনী প্রধান তার এই প্রথম সভায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিওএ-র কার্যনিবাহী কমিটির সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন এবং সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মাইনুল হাসান বলেছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পুলিশ সার্ভেইল্যান্সে (নজরদারিতে) রাখা হয়েছে।
রোববার পল্টনে আউটার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘ওয়ালটন-ক্র্যাব স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’-এর ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এরকম (শীর্ষ সন্ত্রাসী) যারা ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে, তারা দীর্ঘ সময় জেল খেটে আদালতের মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে। তারা আমাদের সার্ভেইল্যান্সে রয়েছে। নতুন করে অপরাধে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পুলিশে এখনও যোগদান না করা সদস্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে মাইনুল হাসান বলেন, ‘এটা একেবারেই মিনিমাম নম্বর। যারা যোগদান করেননি তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএমপি মহানগরীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। তেমনই ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) বিভিন্নভাবে অপরাধ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করছে।
‘ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন, যেটি বহুদিন থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ সব সময় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে থাকে।’
ডিএমপি কমিশনার পরে পল্টন আউটার স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ক্র্যাব সদস্যদের সঙ্গে পরিচিত হন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানসহ ক্র্যাবের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আসিয়ান ঢাকা কমিটির পক্ষ থেকে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ সময় আসিয়ান ঢাকা কমিটির প্রতিনিধি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রুনাই দারুসসালামের হাইকমিশনার হারিস বিন ওথম্যান, ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত হিরু হারতানতো সুবোলো, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কেইও সোয়ে মোয়ে, ফিলিপাইনের জুনিয়র রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আউসান, সিঙ্গাপুর প্রজাতন্ত্রের হাইকমিশনার মাইকেল লি, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিটমোর, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন মানহ কুওয়ংসহ কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য