× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বিশেষ
Helicopter service and a forgotten accident in the sixties
google_news print-icon

ষাটের দশকের সেই হেলিকপ্টার সার্ভিস ও ভুলে যাওয়া দুর্ঘটনা

ষাটের-দশকের-সেই-হেলিকপ্টার-সার্ভিস-ও-ভুলে-যাওয়া-দুর্ঘটনা
যে সময় সড়ক যোগাযোগও তেমন একটা ছিল না, রেলপথ ছিল ব্রিটিশ আমলের, তাতে লক্কর-ঝক্কর রেলগাড়ি ছুটতো, দেশ জুড়ে বিমানবন্দরই ছিল সাকুল্যে চারটি – সে সময় হেলিকপ্টারের এমন রমরমা অবাক হওয়ার মতো।

হেলিকপ্টারের পাখার শব্দে কান ঝাঁঝা করে। তবু গ্রামের নানাবয়সী মানুষ ভিড় করেছে হেলিপ্যাডে। ফাঁকা মাঠে হেলিপ্যাড। সেটিকে ঘিরে একটা জটলা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়েছে ফেরিওয়ালার দল। বাদাম, চানাচুরসহ মনোহারি সব খাবার বিক্রি হচ্ছে। খোলা মাঠে যেন মেলা বসে গেছে।

হেলিকপ্টারের পাখার ঘুর্ণি বাতাসে উড়ে যাচ্ছে দর্শনার্থীদের ছাতা। উড়ছে মাথার চুল।

বরিশালের একটি মাঠে নামছে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের (পিআইএ) সিকোরস্কি এস-সিক্সওয়ান এন এস মডেলের একটি ঢাউস হেলিকপ্টার। আরোহী নানা ধরনের পেশাজীবী। তারা এ হেলিকপ্টারের নিয়মিত যাত্রী।

ষাটের দশকে দেশের জেলা-মহকুমা শহরের এটি একটি নিয়মিত দৃশ্য। এখন এটা শুনতে বিস্ময়করই লাগবে - ষাট বছর আগে তখনকার পূর্ব-পাকিস্তান, অর্থাৎ আজকের বাংলাদেশে নিয়মিত বাণিজ্যিকভাবে চলাচল করত হেলিকপ্টার। যাত্রী নিয়ে ছুটত ঢাকা থেকে অন্তত ২০টি গন্তব্যে, নিয়মিত।

যে সময় এমনকি সড়ক যোগাযোগও তেমন একটা ছিল না, রেলপথ ছিল ব্রিটিশ আমলের, তাতে লক্কর-ঝক্কর রেলগাড়ি ছুটতো, দেশ জুড়ে বিমানবন্দরই ছিল সাকুল্যে চারটি – সে সময় হেলিকপ্টারের এমন রমরমা অবাক হওয়ার মতো।

১৯৬২ সালে পিআইএ যুক্তরাষ্ট্র থেকে কিনে আনে তিনটি ব্র্যান্ড নিউ সিকোরস্কি এস-সিক্সওয়ান হেলিকপ্টার। মাত্র এক বছর আগে হেলিকপ্টারের এই মডেলটি বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমতি পায়। বড় আকৃতির এ হেলিকপ্টারে আসন সংখ্যা ছিলো ২৫টি। দুই পাইলট সহ ক্রু ছিলেন চারজন।

ষাটের দশকের সেই হেলিকপ্টার সার্ভিস ও ভুলে যাওয়া দুর্ঘটনা
পিআইএর কাছে ছিল তিনটি সিকোরস্কি এস-সিক্সওয়ান হেলিকপ্টার। ছবি: নিউজবাংলা

এই সিডিউল হেলিকপ্টার সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় ১৯৬৩ সালে। শুরুর দিকে বরিশাল, খুলনা ও ফরিদপুরে চলাচল শুরু করে এ সেবা। ধীরে ধীরে গন্তব্য বেড়ে হয় ২০টি।

বর্তমানে দেশের সরকারি এভিয়েশন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ও এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহেদুল আলম সে সময় ছিলেন কিশোর বয়সী। বাবার কর্মসূত্রে তখন তিনি ছিলেন বরিশালে। বরিশাল জিলা স্কুলের ছাত্র তিনি তখন। ওয়াহেদুল আলমের সুযোগ হয়েছিল এই সেবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘তখন ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম খুব খারাপ ছিল। আমরা বিশেষ করে খুলনা বরিশাল বা সন্দ্বীপ এসব জায়গায় যেতে হলে অনেকগুলো ফেরি পার হতে হতো। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতেও তিন চারটা ফেরি পার হতে হতো। অনেক সময় লাগতো। সারা দিনেও পৌছানো যেতো না। সে সময় এই সার্ভিসটি খুব জনপ্রিয় হয়েছিলো। আমার খুব ভালো করেই মনে আছে এটার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হলো, সেই ১৯৬৩ সালের কথা বলছি। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানে আব্বা দাওয়াত পেয়েছিলেন, তার সাথে আমিও সেখানে ছিলাম। এটা এখনো স্মৃতিতে রয়েছে।

‘এরপর বরিশাল থেকে ৬৪ সালে আব্বা খুলনায় বদলী হয়ে আসলেন। সেখানে দেখা গেল যে আমরা যে বাসাটা ভাড়া নিলাম, সেটা হেলিপ্যাডের পাশেই ছিলো, ফায়ার ব্রিগেড রোডে। আমরা ওখান থেকে দেখতে পেতাম যে হেলিকপ্টার উঠা-নামা করছে নিয়মিতভাবে। সে সময় প্রচুর মানুষ এই হেলিকপ্টার দেখতে গ্রামগঞ্জ থেকে খুলনায় আসত। যাত্রীও কিন্তু সে সময় অনেক হতো। তখনকার দিনে পূর্ব পাকিস্তানের যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এটা একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল।’

ঢাকা থেকে চাঁদপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, খুলনা, চালনা বরিশাল, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম, রংপুর, পার্বতীপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী, পাবনা, সিলেট, শমশেরনগর, হবিগঞ্জ, ভৈরব, কুমিল্লা, যশোর, ভোলা, রাঙ্গামাটি, কক্সবাজারেও চলতো হেলিকপ্টার। বলতে কী এটিকে বলা হতো বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক হেলিকপ্টার সেবা। অন্তত তখনকার এভিয়েশন বিষয়ক ম্যাগাজিনগুলোর বিজ্ঞাপনে সেরকমই দাবি করতে দেখা যায়। এ দাবি কতটা সঠিক ছিল, নিশ্চিত করা কঠিন। তবে উপমহাদেশে আর কোথাও এরকম হেলিকপ্টার সেবা ছিল না। এমনকি পূর্ব পাকিস্তানে এ সেবা চালু করা হলেও এরকম কোনো সেবা পশ্চিম পাকিস্তানে চলেনি।

হেলিকপ্টার সেবাটি জনপ্রিয় হওয়ার একটি বড় কারণ এর টিকেটের দাম ছিল কম। টিকেটের গড় দাম ছিল ২৫ টাকা। কায়সার হোসেন নামে একজন স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, সে সময় ঢাকা থেকে কুমিল্লা হেলিকপ্টার ভাড়া ছিল ১২ টাকা, চাঁদপুর ছিল ১৫ টাকা, বরিশাল ছিল ৩৫ টাকা।

মাহবুবুল হক নামে এক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তার বাবার কাছে শোনা একটি অভিজ্ঞতা ফেসবুকে বর্ণনা করেছেন এভাবে :

আমার আব্বা ও মেজ মামা এই হেলিকপ্টার সার্ভিস ব্যবহার করতেন। আব্বা ও মামা ঢাকা, বরিশাল, ভোলা, ফরিদপুরের ভিতর যাতায়াত করতেন। ভাড়া ছিলো ১০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। উনারা এবং অন্যরা হেলিকপ্টারে মুরগী, হাঁস, ইলিশ মাছ, মহিষের দই নিয়ে উঠতেন। আমার আব্বা আমাকে এই গল্প বলেছেন।

ছোটবেলায় এই হেলিকপ্টারে ওঠার বর্ণনা পাওয়া যায় নবী এন মাহমুদ নামে একজনের লেখায়। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন:

এই ভ্রমণ খুবই উপভোগ্য ছিল। হেলিকপ্টারগুলো খুব নিচে দিয়ে উড়ে যেত। জানালা দিয়ে নিচে গাছ-পালা ঘর-বাড়ী এমনকি মানুষ পশু-পাখি পর্যন্ত স্পষ্ট দেখা যেত। পথ-ঘাট মাঠ নদী সব দৃশ্য অতুলনীয় মনে হতো। ভ্রমণের সময় ইচ্ছামতো চকলেট নেয়া যেতো।

প্রশ্ন হলো, যে সেবার এতো রমরমা, সেটা কোথায় হারিয়ে গেল? কেন? কী করে সেটা সবার স্মৃতি থেকে মুছে গেল?

কারও স্মৃতিতে এটা না থাকার কারণ এ সেবা খুব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মাত্র তিন বছর। যেভাবে হুট করে সেটা শুরু হয়েছিল, হুট করেই সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। রাতারাতি। আর এর জন্য দায়ী একটি দুর্ঘটনা। সেই দুর্ঘটনা ছিল ভয়াবহ।

১৯৬৬ সালের দোসরা ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশে উড়াল দেয় সেই তিন হেলিকপ্টারের একটি। তিন ক্রুসহ ২৪ আরোহী ছিল তাতে। গন্তব্য থেকে মাত্র দুই মিনিটের দূরত্বে সেটি বিধ্বস্ত হয়।

এতে থাকা ২৪ আরোহীর ২৩ জনেরই মৃত্যু হয়, ঘটনাস্থলে। বেঁচে যান মাত্র একজন।

কেন বিধ্বস্ত হয়েছিল হেলিকপ্টারটি? তখনকার পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন বা পিআইএ-এর প্রেসিডেন্ট এয়ার মার্শাল আসগর খান বলেছিলেন, হেলিকপ্টারটির পেছনের অংশ এবং মূল পাখায় শকুনের ধাক্কা লেগেছিল। পরদিন তেসরা ফেব্রুয়ারি দৈনিক ইত্তেফাকের আট কলাম জুড়ে প্রধান সংবাদ ছিল এই দুর্ঘটনাটি। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে:

ফরিদপুরে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার অব্যহিত পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ইত্তেফাকের নিজস্ব সংবাদদাতা টেলিফোনযোগে জানান যে, একটি উড়ন্ত শকুনের সহিত সংঘর্ষই যে ফরিদপুরের অদূরে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ, সে সম্পর্কে কাহারও মনে আর সংশয় থাকিতে পারে না। হেলিপোর্টের তিন মাইল দক্ষিণ-পূর্বের তুলাগ্রামে যখন অগ্নি প্রজ্বলিত অবস্থায় হেলিকপ্টারটি মাটিতে পড়িয়া বিধ্বস্ত হইতেছে, তাহার কয়েক সেকেন্ড পূর্বে বায়তুল আমানের টেকনিক্যাল স্কুল প্রাঙ্গণে ক্রীড়ারত ছাত্র আবদুর রাজ্জাক ও তাহার সঙ্গীরা আকাশ হইতে একরাশ পাখীর পালক ঝরিয়া পড়িতে দেখে ও পরক্ষণেই একটি দ্বিখণ্ডিত শকুন আসিয়া ধপাস করিয়া তাহাদের সামনে পড়ে। এ ঘটনা হইতে কাহারও আর বুঝিতে বাকী থাকে না যে, শকুনের সহিত সংঘর্ষের ফলেই হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।

ষাটের দশকের সেই হেলিকপ্টার সার্ভিস ও ভুলে যাওয়া দুর্ঘটনা
দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার খবর। ছবি: নিউজবাংলা

এই ঘটনায় যে একজন মাত্র যাত্রী বেঁচে যান, বর্তমানে সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনিও ঘটনার স্মৃতিচারণ করেছেন। একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার হয়ে কর্মসূত্রে তিনি সেদিন ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া যাচ্ছিলেন।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হেলিকপ্টারটা দুপুর ২টায় ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ছাড়ল। আমি টিকিট কিনে উঠলাম। আমি যখন উঠলাম, তখন সামনের দিকে বসার চেষ্টা করলাম হেলিকপ্টারের। তখন কম বয়স, দেখতে চাই পাইলটের কাজ কারবার। কিন্তু ওরা আমাকে সামনে বসতে দিলো না। যে স্টুয়ার্ট ছিল, সে আমাকে বলল, আপনি পেছনে যান। সবার পেছনে নিয়ে আমাকে বসিয়ে দিলো। ফ্লাইটে সব মিলিয়ে ২৪ জন মানুষ ছিলো। আমি একটু বিরক্ত হলাম, মন খারাপ যে সামনে বসতে পারলাম না। হেলিকপ্টার উড়াল দিলো।

‘এর ২০ মিনিটের মাথায় বলল যে, আমরা ফরিদপুরের কাছাকাছি এসে গেছি, নামব এখন। সে সময় শুরু হলো একটা কড়্-কড়্ আওয়াজ, ইঞ্জিনের আওয়াজ, মাথার উপরে ব্লেড যেখানে ঘোড়ে। এরপর দেখি ফ্লাইটটা মাথা ঘুড়ছে, এদিক সেদিক যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে এক ধরনের চাপা কান্না মনে হচ্ছে, কী জানি হচ্ছে। তাকিয়ে দেখি মাটি দেখা যাচ্ছে আর হেলিকপ্টারটা চক্কর খাচ্ছে। মিনিট খানেকের মধ্যে এটা ধপাস করে মাটিতে পড়ে গেল। আমি তখন সিটে বসা, কেন জানি না বেল্টটা খুলে ফেললাম। মাটিতে পড়েই আগুন জ্বলে উঠলো, সেটা আমি দেখলাম। সঙ্গে সঙ্গে হুশও চলে গেল আমার। বেহুশ হয়ে গেলাম। মিনিট খানেক পরেই হুশ আসলো। দেখি যে মাটিতে পড়ে আছে সবাই। কোনো আওয়াজ নেই নিস্তব্ধ, সামনে আগুন দেখা যাচ্ছে। আমি তখন সচেতন হয়ে গেছি। দেখি যে আমার বাঁ দিকে জানালা নাই। তখন আমি সেদিকে পা বাড়িয়ে মাটিতে পড়ে গেলাম।’

স্থানীয়দের সহায়তায় এম এ মান্নানকে প্রথমে গ্রামেই একটি বাড়িতে নেয়া হয়। পরে তাকে নিয়ে আসা হয় ঢাকার হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে। সেই সময় ফরিদপুরের ডিসি ছিলেন এম কে আনোয়ার, যিনি পরে বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে মন্ত্রী হয়েছিলেন। এই দুর্ঘটনাটি এম এ মান্নানের মনে এমন দাগ কেটেছিল, যেটাকে মনোবিজ্ঞানের ভাষায় বলে ট্রমা।

এই দুর্ঘটনা ১০ মাস পর আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটে। ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর অদূরে রূপপুর এলাকায় বিধ্বস্ত হয় দ্বিতীয় একটি হেলিকপ্টার। প্রাণ হারান পাইলট সৈয়দ হাবিবুল হাসান। আরেক পাইলট আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। হাবিবুল হাসান একই সাথে এই হেলিকপ্টার সার্ভিসের চিফ পাইলট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরদিন ১১ ডিসেম্বর দৈনিক আজাদির প্রধান খবর ছিল এই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা।

প্রত্যক্ষদর্শী বিবরণে প্রকাশ যে, রূপপুর গ্রামের আকাশে উড্ডীয়নকালে অকস্মাৎ বিকট শব্দ করিয়া হেলিকপ্টারের পেছনের চাকা পড়িয়া যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ ঘুরিয়া যায়। এই সময় বিমানটির একটি ব্লেড ভাঙ্গিয়া নিকটবর্তী একটি বাড়ির রান্নাঘরের উপর গিয়া পড়ে, ফলে রান্নাঘরটি বিধ্বস্ত হয়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে হেলিকপ্টারটি অসমতল ভূমির উপর নিক্ষিপ্ত হয় এবং ভূতলে পড়িবার সঙ্গে সঙ্গেই হেলিকপ্টারটির মাঝখানে আগুন ধরিয়া যায়। প্রকাশ পায়, হেলিকপ্টার চালকের উপস্থিত বুদ্ধির ফলে উহা দিক পরিবর্তন করিয়া উল্লিখিত গ্রামের পার্শ্ববর্তী মাঠে বিধ্বস্ত হয়। অন্যথায় লোকালয়ের উপর বিধ্বস্ত হইলে নিহতের সংখ্যা আরও অধিক হইতে পারিত। বিধ্বস্তের পর ক্যাপ্টেন হাসানের মৃতদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয় নাই। প্রচন্ড আঘাতে তাহার মুখমন্ডল বিকৃত হইয়া যায় এবং আগুনে পুড়িয়া দেহ শনাক্তের বাহিরে চলিয়া যায়।

আগেই বলা হয়েছে, সে সময় পিআইয়ের কাছে এ ধরনের হেলিকপ্টার ছিল মাত্র তিনটি। যার একটি ফেব্রুয়ারিতে, আরেকটি বিধ্বস্ত হয় ডিসেম্বরে। ফলে তাদের বহরে অবশিষ্ট থাকে আর মাত্র একটি হেলিকপ্টার। এ ঘটনার পর সাময়িকভাবে এই হেলিকপ্টার সেবা বন্ধ করে দেয় পিআইএ। পরে আর কখনই সেটি চালু করা যায় নি।

ষাটের দশকের সেই হেলিকপ্টার সার্ভিস ও ভুলে যাওয়া দুর্ঘটনা
দৈনিক আজাদে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার খবর। ছবি: নিউজবাংলা

এভাবেই বন্ধ হয়ে যায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক হেলিকপ্টার সার্ভিস। অক্ষত থাকা শেষ হেলিকপ্টারটি ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের কাছে বিক্রি করে দেয় পিআইএ।

স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশে আকাশপথে যাত্রী বেড়েছে কয়েক গুণ। এক সময় যেখানে শুধু রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস দেশের ভেতরে এবং আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী পরিবহন করত, সেখানে এখন যুক্ত হয়েছে বেসরকারি এয়ারলাইনসও। এক সময় যে আকাশপথে চলাচল করাকে বিলাস হিসেবে দেখা হতো, সেটি এখন পরিণত হয়েছে প্রয়োজনে।

শুধু যাত্রী পরিবহনই নয়, ব্যবসা বাণিজ্যের বিকাশেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে এই আকাশপথ। বিশেষ করে বিদেশ থেকে আসা বিনিয়োগকারীরা সড়ক বা রেলে ভোগান্তি কমাতে আরামে চলাচল করছেন এই আকাশপথে। কিন্তু সমস্যা হলো দেশের সব জেলায় তো আর বিমানবন্দর নেই। দেশের ভেতরে বিমানবন্দর মাত্র সাতটি।

ষাটের দশকের সেই হেলিকপ্টার সার্ভিস ও ভুলে যাওয়া দুর্ঘটনা
সংবাদ মাধ্যমের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম.এ মান্নান। ছবি: নিউজবাংলা



খুব সহসাই বিমানবন্দরের সংখ্যা যে বাড়বে, তা ভাবারও কোনো কারণ নেই। প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ যে কোনো এলাকায় ভ্রমণের জন্য বিত্তশালীরা এখন বেছে নিচ্ছেন ভাড়ার হেলিকপ্টার সেবা। কিন্তু তা ঠিক সাধারণের বাহন আর হয়ে উঠতে পারেনি। কেন তা হয়নি তা ব্যাখ্যা করেছেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহেদুল আলম।

তিনি বলেন, ‘হেলিকপ্টার সার্ভিস সম্বন্ধে বলা হয়ে থাকে যে এটা একটু এক্সপেনসিভ। এখানে যে ফুয়েলটা ব্যবহার হয় এটার দাম বেশি, এটার মেইনটেন্যান্স কস্ট বেশি। এ কারণে এখন অনেকে এটাতে উৎসাহ দিতে চায় না বা কেউ হয়তো এভাবে চিন্তাও করে নি।

‘এটা কমার্শিয়ালি অপারেশনের জন্য যে ধরনের উদ্যোগ বা ইনিশিয়েটিভ নেয়া দরকার সেটা হয় নি। যার ফলে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও আমরা হেলিকপ্টার সার্ভিসটা প্রচলন করতে পারি নি।’

ষাটের দশকের সাধারণের সেই হেলিকপ্টার সেবা আর ফিরে না এলেও দেশে এখন ভাড়ায় হেলিকপ্টার সেবা নেয়া যায়। শুরুতে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এই হেলিকপ্টারগুলোর অনুমোদন দেয়া হলেও এগুলো দিয়ে বাণিজ্যিক সেবাও মিলছে। এখন দেশে প্রায় ১০টি প্রতিষ্ঠানের ৩০টি হেলিকপ্টার বাণিজ্যিক সেবা দিচ্ছে। এগুলো সাধারণত চার্টার্ড সেবা দিয়ে থাকে।

এর মধ্যে স্কয়ার লিমিটেডের তিনটি, মেঘনা এভিয়েশনের চারটি, আর অ্যান্ড আর এভিয়েশনের সাতটি, সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনসের চারটি, বসুন্ধরা এয়ারওয়েজের চারটি, ইমপ্রেস এভিয়েশনের একটি, বিআরবি এয়ার লিমিটেডের দুটি, বাংলা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের একটি, পারটেক্স এভিয়েশন ও বিসিএলে দুটি করে হেলিকপ্টার বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে এগুলো আকারে অনেক ছোট। আসন সংখ্যা ৪ থেকে ৮টি।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) হিসেবে কয়েক বছর আগেও মাসে হেলিকপ্টারের ফ্লাইটসংখ্যা ছিল ১ হাজারের মতো। এখন প্রতি মাসে হেলিকপ্টারের ফ্লাইট রয়েছে প্রায় ৫ হাজারেরও বেশি। সাধারণত করপোরেট প্রয়োজন কিংবা মেডিকেল ইমারজেন্সিতে ব্যবহার হয় এই হেলিকপ্টারগুলো। প্রতি ঘণ্টায় খরচ হয় ৫০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা।

সেই ষাটের দশকে যদি সুনির্দিষ্ট গন্তব্যে নিয়মিত হেলিকপ্টার সেবা থেকে থাকে এবং সেটা আর্থিকভাবে লাভজনক হয়, তাহলে এ যুগে সেটি আবার চালু হচ্ছে না কেন? জানতে চাওয়া হয়েছিল দেশি এয়ারলাইনসগুলোর সংগঠন এভিয়েশন অপারেটরস এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এ টি এম নজরুল ইসলামের কাছে।

তিনি বলেন, ‘আগে যেমন ছিল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল আগে যেটা ছিলো সেটার চেয়ে কিন্তু এখন অনেক নিয়ম বদল হয়ে গেছে। আগের এয়ার স্পেসগুলো ছিল জাস্ট ইনফরমেশন সার্ভিস। একটা এয়ারক্রাফট যে টেকঅফ করে যাবে, যেখানে ল্যান্ড করবে সেটা কিন্তু জানানো হতো না। সেই দায়বদ্ধতা কে নেবে?

‘যতক্ষণ পর্যন্ত না হেলিপ্যাড নির্মাণ হবে আর সিভিল এভিয়েশন সেখানে একটা শ্রেণী বা নিয়ম তৈরি করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সূচি হিসেবে যাওয়াটা কঠিন। আর যদি এয়ারপোর্ট টু এয়ারপোর্ট যায় তাহলে মানুষ হয়তো শখের বসে যাবে, কিন্তু কমার্সিয়ালি এটা ভায়াবেল হবে না। হেলিকপ্টারের ভাড়াটা কিন্তু অনেক বেশি হবে।’

আবার এ ধরনের সেবা চালাতে গিয়ে যদি কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়, সেক্ষেত্রে দায় কার হবে, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। যেমন ধরা যাক যদি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় কেউ নিহত বা আহত হন, তাহলে ইন্সুরেন্সের মাধ্যমে নিহতের আইনসিদ্ধ উত্তরাধিকারী বা আহত ব্যক্তি নির্দিষ্ট হারে ক্ষতিপূরণ পেয়ে থাকেন। আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বা আইকাও-এর নিয়ম এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত কড়া। এটির ব্যতয় ঘটানোর সুযোগ নেই। কিন্তু হেলিকপ্টারের ক্ষেত্রে এমনটা করা বেশ জটিল। পাশাপাশি নিরাপত্তার ঝুঁকির বিষয়টিও রয়েছে।

এভিয়েশন অপারেটরস এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এ টি এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পিআইএ যখন এটা করেছিল, তারা নিজেদের অ্যারেঞ্জমেন্টে করেছিল। সেখানে সিভিল এভিয়েশনের নিয়মগুলো কতটা ফলো করা হয়েছে, আমার জানা নেই। তখন হয়ত এমন একটি এয়ারস্পেসের কথা চিন্তা করা হয়েছে, যেখানে দায়ভার সম্পূর্ণভাবে পাইলট বা অপারেটরের উপরে থাকবে।

‘ওই অবস্থান এখন নেই। এখানে নিরাপত্তার একটি বিষয়ও আছে। এয়ারপোর্ট থেকে যদি একটা আননোন প্লেসে যায়, আবার সেখান থেকে যাত্রী নিয়ে আসে বিমানবন্দরে, সেখানে যদি সিকিউরিটি চেকগুলো না হয়, তাহলে সেটা অন্যদের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে।’

আশার কথা হচ্ছে, রাজধানীর অদূরে কাওলা এলাকায় দেশের প্রথম হেলিপোর্ট নির্মাণ করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। বঙ্গবন্ধু হেলিপোর্ট নামের এই হেলিপোর্টে অন্তত ৮০টি হেলিকপ্টার রাখার ব্যবস্থা থাকবে। একই সময়ে একাধিক হেলিকপ্টার ওঠানামার প্রযুক্তিও সংযুক্ত থাকবে এতে। হয়তো অদূর ভবিষ্যতে আবারও ষাটের দশকের সেই হেলিকপ্টার সার্ভিসের মতো কোনো সেবার দেখা মিলতে পারে।

আরও পড়ুন:
যে রহস্যের কিনারা নেই

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বিশেষ
People will play a key role in the free and fair and participatory elections Home Advisor

অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণই মুখ্য ভূমিকা রাখবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণই মুখ্য ভূমিকা রাখবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণই মুখ্য ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

উপদেষ্টা আজ সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।

মতবিনিময় সভায় সিলেট বিভাগের সকল জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), আনসার-ভিডিপি, কারা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সিলেট জেলার বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

উপদেষ্টা বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শুধু নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়, মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণ যেন নির্ভয়ে নির্বাচন কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করতে পারে সেরকম পরিবেশ তৈরি করতে প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে একযোগে কাজ করতে হবে। সকলের সহযোগিতায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভবপর হবে।

পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োগ ও পদায়ন সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, এবার বিভিন্ন বাহিনীর নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পদায়ন অনেক স্বচ্ছ হয়েছে। তাই সবাইকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মাদককে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য অন্যতম হুমকি উল্লেখ করে তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতি জিরো টলারেন্স দেখানোর নির্দেশনা দেন। এছাড়া পরিবেশ রক্ষায় সিলেটের পাথরখেকোদের বিরুদ্ধে সবসময় সজাগ থাকার কথা বলেন।

দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব তুলে ধরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, কৃষকরাই এদেশের খাদ্য নিরাপত্তার মূল কারিগর। তাই উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষকেরা যেন তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। উপদেষ্টা এসময় পতিত কৃষিজমিগুলো আবাদের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।

সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাবৃন্দ সিলেটের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও এর চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বিভিন্ন মতামত প্রদান করেন। উপদেষ্টা সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌক্তিক পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। মতবিনিময় সভা শেষে উপদেষ্টা উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।

উপদেষ্টা এর আগে বিজিবি'র সিলেট সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স এবং সিলেট পুলিশ লাইন পরিদর্শন করেন।

মন্তব্য

বিশেষ
Roadmap of national elections will be announced tomorrow EC Secretary

জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে কাল: ইসি সচিব

জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে কাল: ইসি সচিব

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে সচিব সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা যে কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) করেছি, সে কর্মপরিকল্পনাটা আপনাদের জানাবো। আমি ঢাকার বাইরে থাকায় একটু পিছিয়ে পড়েছি। এটা আমার টেবিলে এখন আছে। আগামীকাল পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করেন।’
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব আজ এক বৈঠকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে কমিশন।
এখন যেকোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
উল্লেখ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংস্কার, বিধিমালা ও নীতিমালা জারি, প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড নিবন্ধন ও পোষ্টাল ব্যালট পদ্ধতি ও নির্বাচনী সরঞ্জাম কেনাকাটা বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে রোডম্যাপে।

মন্তব্য

বিশেষ
Authorization of the Roadmap of the National Election

জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ অনুমোদন

জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ অনুমোদন

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

যে কোনো সময় এই নির্বাচনের রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে পারে ইসি।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন।

বৈঠকে কর্মপরিকল্পনার (রোডম্যাপ) অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। এখন, যে কোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসি’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’

এদিকে সংসদীয় আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ইসি’র শুনানি আজ বিকেলে শেষ হচ্ছে।

শুনানি শেষে বিকেলে সার্বিক বিষয় নিয়ে ইসি’র সিনিয়র সচিব আকতার আহমেদের ব্রিফিং করার কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা ব্রিফিংয়ে আসব। তখন সীমানার শুনানির বিষয়টির পাশাপাশি এ বিষয়টিও (রোডম্যাপ) দেখা যাবে।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি কর্মকর্তা বৈঠক করেন।

ওই দিন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছিলেন, বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে ইসি সচিব ব্রিফ করবেন।

গত ১৮ আগস্ট ইসি’র সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়ে ছিলেন, ‘একটা কর্মপরিকল্পনার (নির্বাচনী রোডম্যাপ) বিষয়ে বলেছিলাম, আমরা এই সপ্তাহে এটা করবো। কর্মপরিকল্পনার তো আমাদের আন্তঃঅনুবিভাগ সম্পর্কিত এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে। কর্মপরিকল্পনার ড্রাফ্ট করা হয়েছে। ড্রাফ্টটি এখন কমিশনে দিয়ে আমরা অ্যাপ্রুভ করবো।’

মন্তব্য

বিশেষ
The 5th meeting of the Tripartisan Advisory Council was held in the amendment of Labor Act

শ্রম আইন সংশোধনে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের ৮৯ তম সভা অনুষ্ঠিত

শ্রম আইন সংশোধনে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের ৮৯ তম সভা অনুষ্ঠিত

শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধনের লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি)-এর ৮৯তম সভায় শ্রমিক, মালিক ও সরকারের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত এক বছরের পর্যালোচনা ও সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার এক হোটেলে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, "শ্রমিক ও মালিক পক্ষের পরামর্শের ভিত্তিতে শ্রম আইন যুগোপযোগী করা হবে। এটি বাংলাদেশের শ্রমখাতের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।’

সভায় শ্রমিক ও মালিক পক্ষের প্রতিনিধিরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। একটি সুসমন্বিত ও আন্তর্জাতিক মানের শ্রম আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা উপস্থিত সকলেই করেন। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ সভায় সংশোধিত শ্রম আইন দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দেওয়া হয়।

সভায় বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন দূতাবাস, কানাডা হাই কমিশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর প্রতিনিধিরা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত জনাব লুৎফে সিদ্দিকী।

এছাড়াও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) এর নির্বাহী পরিচালক এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ)-এর সভাপতি, টিসিসি সদস্যবৃন্দের মধ্যে তাসলিমা আক্তার, কোহিনুর মাহমুদ, বাবুল আকতার , নাজমা আক্তার, রাজেকুজ্জামান রতন, এডভোকেট আতিকুর রহমান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সংশোধনী বাংলাদেশের শ্রমবাজারকে আরও গতিশীল ও আন্তর্জাতিক মানসম্মত করবে এবং শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মন্তব্য

বিশেষ
Quick Response Team is working to prevent violence against women

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে

সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সারাদেশে কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত প্রযুক্তি সুবিধাপ্রাপ্ত লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবেলায় নীতিগত সুপারিশ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা একথা বলেন।

সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে প্রযুক্তিগত সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে নারীদের সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এ সকল অপকর্ম প্রতিরোধে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিচালিত কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে বাল্য বিয়ের সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। এর মূল কারণ হচ্ছে মোবাইল নামক যন্ত্রটি। মোবাইল প্রযুক্তির অপব্যবহারের ফলে ছোট ছোট মেয়েরা প্রেমের ফাঁদে পড়ে নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

মেয়েরা অবুঝ এজন্য অভিভাবকদেরকে এ বিষয়ে আরো সচেতন হতে হবে। যাতে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েরা প্রেমের ফাঁদে পড়ে নারী সহিংসতা শিকার না হয়।

উপদেষ্টা বলেন, জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা, নারী পক্ষ, হিউম্যান রাইটস বাংলাদেশ, সাইবার টিনস ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), ব্র্যাকসহ বাইশটি সংগঠন আজ নারী নির্যাতন প্রতিরোধে একযোগে কাজ করছে। তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

উপদেষ্টা বলেন এই ২২ টি সংগঠনের প্ল্যাটফর্মে যে সমস্ত শিক্ষিত তরুন যুবক যুবতীরা আছেন তাদেরকে টেকনোলজির মাধ্যমে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন ব্যক্তিগত এবং সামাজিক ও পরিবারের সচেতনতাই পারে একটি মেয়েকে নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে। এজন্য সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে।

মন্তব্য

বিশেষ
Action is being taken even though the hilsa production is reduced Farida Akhter

ইলিশ উৎপাদন কমলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে: ফরিদা আক্তার

ইলিশ উৎপাদন কমলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে: ফরিদা আক্তার

ইলিশের উৎপাদন একদিকে কমছে, এতে প্রাকৃতিক কারণও রয়েছে। নদীর নাব্যতা কমে যাচ্ছে, মেঘনা নদীর অববাহিকায় দূষণের মাত্রা বেড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টি না হলে ইলিশ মাছ ডিম পাড়তে পারে না। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকৃতিক কারণ ও তথাকথিত উন্নয়নের কারণে নদী ভরাট ও দখল হয়ে যাচ্ছে। এমন মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার। বরিশাল ক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত উপকূলীয় এলাকার মহিষের চারণভূমি ও উন্নয়নের সমস্যা এবং সাধন শীর্ষক জাতীয় কর্মশালা-২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ইলিশ একটি মাইগ্রেটরি মাছ এটি সমুদ্র থেকে নদীতে আসে এবং আবার ফিরে যেতে হয়। কিন্তু বর্তমানে তা হচ্ছে না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ঝাটকা নিধন। কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী অভিযান চালালেও এটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা যায়নি। এছাড়া অবৈধ জালের ব্যবহার ইলিশের প্রাপ্যতা কমাচ্ছে। তবে এসবের বিরুদ্ধে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।

তিনি জানান,খুব শীঘ্রই ঢাকায় একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে নদী থেকে মাছ ধরে হাত বদলের সিন্ডিকেট বন্ধ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সরাসরি বাজারে মাছ পাবে এবং সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে আসবে।

ফরিদা আক্তার বলেন, উপকূল এলাকায় মহিষের চারণভূমি সংকুচিত হয়ে গেছে। আমরা গবেষণায় দেখেছি এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে। বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও নির্মিত হচ্ছে। আমাদের দেশে গরু, ছাগল ও মহিষ পালন অন্তত মানুষের খাদ্য ও জীবন রক্ষার জন্য জরুরি। চারণভূমি বিষয়ে আমরা দেখছি যে অনেক কিছু পরিকল্পনা বিহীনভাবে তৈরি হচ্ছে। এতে মহিষের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তবে সঠিক নীতি ও ব্যবস্থা নিলে এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,পিকেএসএফ উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, জিজেইউএস নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন। সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ড. ওমর ফারুক, প্রেসিডেন্ট।

বক্তারা বলেন, নদী ও সমুদ্রের টেকসই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। মৎস্যজীবী, প্রশাসন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান একত্রিতভাবে কাজ করলে মাছ চাষ ও সংরক্ষণ কার্যকর হবে।

এছাড়া তারা বলেন, উপকূলীয় এলাকায় মহিষ পালনের সম্ভাবনা অনেক, তবে জলবায়ু পরিবর্তন, চারণভূমির অভাব ও বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা খাতটির উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। গবেষণা ও আধুনিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মহিষ পালনকে লাভজনক ও টেকসই খাতে রূপান্তর করা সম্ভব।

মন্তব্য

বিশেষ
The first meeting of the Triparthya Committee on the standard of international labor is held

আন্তর্জাতিক শ্রম মান নিয়ে ত্রিপক্ষীয় কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত

আন্তর্জাতিক শ্রম মান নিয়ে ত্রিপক্ষীয় কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান এর সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক শ্রম মান বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় শ্রম সচিব বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ৩৬টি কনভেনশন ও একটি প্রটোকল অনুমোদন করেছে। আইএলও সংবিধান অনুযায়ী, অনুমোদিত ও অননুমোদিত উভয় ধরনের সনদের প্রয়োগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা সকল সদস্য রাষ্ট্রের জন্য বাধ্যতামূলক। এই কমিটি আইএলও কনভেনশন ১৪৪-এর বাধ্যবাধকতার আলোকে বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনে মালিকপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর মতামত, পরামর্শ ও সুপারিশ নিশ্চিত করবে।

সচিব আরও উল্লেখ করেন যে, আইএলও এর ১১টি কনভেনশন (C-01, C-14, C-19, C-81, C-89, C-100, C-106, C-111, C-118, C-138, MLC-2006) নিয়ে আলোচনা করা হয়। এগুলোর মধ্যে C-81 (শ্রম পরিদর্শন), C-100 (নারী ও পুরুষের সমান পারিশ্রমিক), C-111 (কর্মসংস্থান ও পেশায় বৈষম্য) এবং C-138 (ন্যূনতম কাজের বয়স) বিষয়ক চূড়ান্ত প্রতিবেদন আইএলও সংবিধানের ২২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে খুব দ্রুত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার জেনেভাস্থ প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হবে।

সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রতিনিধি নিরান রাজমুঠান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, ইমপ্লোয়ার্স ফেডারেশন এর প্রতিনিধি , ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি , বেপজা প্রতিনিধি , NCCWE এর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

p
উপরে