২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশের মূল মঞ্চ যে ট্রাকের ওপর তৈরি করা হয়েছিল, সেই ট্রাকটির চালক ছিলেন মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। তার ওপর নির্দেশনা ছিল, সমাবেশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি যেন ট্রাক ছেড়ে কোথাও না যান। যে মুহূর্তে সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়, তখনও ট্রাকে নিজের আসনেই বসা ছিলেন তিনি।
নিউজবাংলাকে তিনি তার সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার গাড়িটা ছিল তালতলার এক বসের। সেই বস আবার আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। আমি সেখানেই চাকরি করতাম। আমি যে গাড়িটা চালাতাম, সেটা ছিল নতুন। সেটাই দেয়া হয়েছিল মঞ্চ তৈরি করার জন্য। আমি তালতলা থেকে ১১টায় গাড়ি নিয়ে খেজুরবাগান মোড় থেকে কিছু ফার্নিচার তুলি। এটা নিয়ে পার্টি অফিসের সামনে গিয়েছি।
‘সেগুলো নামিয়ে গাড়িটার ওপর মঞ্চ বানানো হয়। পরে পুলিশ, ডিবি আর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বারবার চেক করে। আমার গাড়িতে রং করা হয়েছিল, তার চক পাউডার ছিল। পরে এটা পাওয়ার পর ফেলে দিতে বলে। আমি ফেলে দিই। আধুনিক যন্ত্র দিয়ে চেক করল। এরপর আমরা দুপুরে খাওয়াদাওয়া করলাম। আমাদের পার্টির লোকেরা বলল, আপনাকে স্ট্যান্ডবাই থাকতে হবে। তো আমি থাকলাম।’
সারা দেশে একযোগে জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় আওয়ামী লীগ জনসভার আয়োজন করে। সেদিন বিকেলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য চলাকালে গ্রেনেড হামলা হয়।
ভয়াবহ এ হামলায় ২৪ জন নিহত এবং দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাসহ প্রায় ৩০০ লোক আহত হন। হামলায় নিহতদের মধ্যে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেত্রী আইভি রহমান ছিলেন, যিনি বাংলাদেশের ১৯তম রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী।
হামলার সেই মুহূর্তের বর্ণনা দিয়ে ট্রাকচালক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মিটিং শুরু হলো, অন্য নেতারা বক্তব্য দিলেন। সবার শেষে প্রধানমন্ত্রী (তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা) উঠলেন। বক্তব্য শেষ পর্যায়েই শুরু হলো বোম মারা।
‘প্রথম বোমটা ফোটেনি। ওটা গাড়ির ডালায় লেগে নিচে পড়ে গেল। পরেরটা আমার গাড়ির ডান পাশে যেখানে তেলের ট্যাংক থাকে সেটা নিয়ে পড়ল। এই বোমটাই আইভি রহমানের গায়ে পড়ে।
‘আমি গাড়ির মধ্যে সিটেই শুয়ে পড়লাম। তখন ছিটাগুলো আমার গায়ে পড়ল। আমার ঠোঁটে পড়েছে, দাড়ির ভেতরে পড়েছে, কোমরে পড়েছে, পায়ে পড়েছে। পরে আমি ট্রাক খুলে নামলাম লাফ দিয়ে। তখন আরও একটা বোম মেরেছে। সেগুলো সবই আমার কোমরে পড়েছে।’
এই ট্রাকচালকের মতে, সেদিন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে যেন কেয়ামত নেমে এসেছিল। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা যে দেখেনি, সে কল্পনাও করতে পারবে না। যখন আমি দেখলাম, দেখি মানুষগুলো সব শুয়ে আছে, কেউ কাত হয়ে, কেউ সোজা হয়ে কেউ উপুড় হয়ে।
‘কার দিকে কে চায়, সবাই কান্নাকাটি করছে, কেউ যন্ত্রণায় চিৎকার করছে। মানুষের রক্ত, জুতা, শরীরের অংশ….. কারও হাত পড়ে আছে, কারও পা পড়ে আছে। যে দেখেছে, সেই শুধু এটা অনুভব করতে পারবে। প্রচুর বোম আর গুলির আওয়াজ। অনেক শব্দ হচ্ছিল। তখন কেমন করে নিজেরে বাঁচাব, এটা নিয়েই ছিলাম।’
শরীরে স্প্লিন্টারের আঘাত নিয়েই কোনো রকমে হাসপাতালে পৌঁছান ট্রাকচালক রফিকুল। সেখানে গিয়েও দেখেন বিভীষিকাময় দৃশ্য। তিনি বলেন, ‘কোনো রকমে পাশের মার্কেটে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু দেখি গেট আটকে দিয়েছে। পরে দেখি মানুষজন ছিন্নবিচ্ছিন্ন, তাদের সিএনজিতে করে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে।
‘আমি একটা সিএনজির সাইডে দাঁড়িয়ে ঢাকা মেডিক্যালে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি কার চিকিৎসা কে করে! অনেক মানুষ, রক্তাক্ত। পরে সেখান থেকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিলাম। আমার শরীরে মোট ১১টা স্প্লিন্টার ছিল। এর মধ্যে ১০টা বের করা গেছে, কিন্তু এখনো একটা শরীরেই আছে। সেটা মাঝেমধ্যে অসহ্য যন্ত্রণা দেয়।’
এ ঘটনার পর অনেকে অনেক সহযোগিতা পেলেও তার কিছুই পাননি এই ট্রাকচালক, যদিও প্রায়ই মামলার সাক্ষী হতে তাকে ছুটতে হয় আদালত প্রাঙ্গণে।
আরও পড়ুন:সাত বছরের একমাত্র ছেলের জন্য মাদ্রাসায় নাস্তা নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে পালিয়ে গেছে প্রবাসীর স্ত্রী। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পরলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরিকল গ্রামে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে ওই গ্রামের বাসিন্দা কাঞ্চন শরীফের ছেলে ও দুবাই প্রবাসী মিরাজ শরীফ জানান, তিনি ও তার মা দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে কর্মের সুবাধে দুবাইতে থাকেন। গত নয় বছর পূর্বে একই বংশের সিরাজ শরীফের মেয়ে শান্তা আক্তার মনিকে (২৭) সামাজিকভাবে তিনি (মিরাজ) বিয়ে করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের আয়ান ইসলাম নামের সাত বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
প্রবাসী মিরাজ শরীফ আরও জানান, চলতি বছরের ৯ জুন তিনি ছুটিতে বাড়িতে এসে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন মোবাইল ফোনের পরিচয়ের সূত্রধরে তার স্ত্রী শান্ত আক্তার মনির সাথে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার মাইজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আমিনুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলামের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
ইতোমধ্যে একাধিকবার আরিফুল ইসলামের সাথে তার স্ত্রী শান্তা কুয়াকাটা ও বরিশালে একাধিকবার রাত্রীযাপন করেছে। যা তার স্ত্রী শান্তা অকপটে স্বীকার করলেও জীবনে আর কোনদিন এ ভুল করবে না মর্মে উভয়পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে লিখিত মুচলেকা দেয়। পরবর্তীতে তারা ভাল ভাবেই সংসার করছিলেন।
মিরাজ শরীফ বলেন, গত ৭ আগস্ট সকালে সরিকল বন্দরের মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত তাদের একমাত্র ছেলের জন্য সকালের নাস্তা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় শান্তা। এরপর দীর্ঘসময়ে সে (শান্তা) বাড়িতে না ফেরায় অনেক খোঁজাখুজি করেও তার কোন সন্ধ্যান মেলেনি।
পরবর্তীতে ওইদিন দুপুরে শান্তা তার বাবা সিরাজ শরীফকে ফোন দিয়ে জানায় সে মুন্সীগঞ্জে আরিফুলের কাছে রয়েছে। তাকে যেন খোঁজাখুজি করা না হয়। পরবর্তীতে বাসায় তল্লাশী চালিয়ে ঘরে থাকা চার ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ৬০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোনের কোন হদিস পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় প্রবাসী মিরাজ শরীফ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
পটুয়াখালীর বাউফল থানা হাজতে কম্বল ছিঁড়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন রাকিব সিকদার (২০) নামে এক আসামী। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাত ৯ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সিসি ক্যামেরায় বিষয়টি ধরা পড়লে পুলিশ দ্রুত তাকে উদ্ধার করে।
বাউফল পৌর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাহাবুদ্দিন সিকদারের ছেলে রাকিব সিকদার ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একই দিন দুপুর পৌনে ২টার দিকে পৌর শহরের চন্দ্রপাড়া সড়কের পাশে জেলা বারের সদস্য অ্যাডভোকেট এনামুল হকের বাড়িতে চুরির অভিযোগে স্থানীয়দের সহায়তায় রাকিবকে আটক করে থানায় আনা হয়। পরে এসআই মাসুদ খলিফা তাকে হাজতে রাখেন।
ডিউটিরত এএসআই মো. শাহীন হাওলাদার জানান, রাত ৯টার দিকে সিসি ক্যামেরায় নজর দিতে গিয়ে তিনি দেখতে পান রাকিব কম্বল ছিঁড়ে হাজতের গ্রিলে গলায় ফাঁস দিচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের নিয়ে দরজা খুলে তাকে উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে রাকিব বলেন, আমাকে যে অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেই অপরাধ আমি করিনি। আমাকে ডেকে নিয়ে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছে। আমি এই মিথ্যা অপবাদ সহ্য করতে পারছিলাম না, তাই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছি।
বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আক্তারুজ্জামান সরকার বলেন , চুরির অভিযোগে আটক রাকিবকে শুক্রবার আদালতে পাঠানোর কথা ছিল। আত্মহত্যার চেষ্টার পর তাকে ডিউটি অফিসারের কক্ষে রাখা হয়েছে।
সিলেটের ভোলাগঞ্জ থেকে লুটকৃত ৪০ হাজার ঘনফুট সাদা খনিজ পাথর উদ্ধার করেছে র্যাব-১১।বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে কাঁচপুর ব্রীজ সংলগ্ন ডেমরার সারুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে এই পাথর উদ্ধার করা হয়।
অভিযান শেষে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, অবৈধভাবে উত্তোলিত এসব বিপুল পরিমাণ পাথরের অনেকাংশ মেশিনে ক্রাশ করা হয়েছে। ৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে এসব পাথর জব্দ করা হয়েছে। তাদের মালিকপক্ষের তালিকা করা হয়েছে। অভিযানের অগ্রগতি সম্পর্কে বিস্তারিত শিগগিরই জানানো হবে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ২ লক্ষ ঘনফুট পাথর লুটপাট করা হয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ কোটি টাকা। এছাড়াও সাদা পাথর এলাকা থেকে প্রায় ৬ লক্ষ ঘনফুট বালু লুটপাট করা হয়েছে যার বাজার মূল্য ২৪০ কোটি টাকার মত। অবৈধভাবে উত্তলন করে সাদা পাথর স্থানীয় দয়ার বাজার, কলাবাড়ি ও ভোলাগঞ্জ ১০নং ঘাটে কালেকশন করে বিভিন্ন ক্রাশার মেশিনে প্রেরণ করা হয়৷ এদিকে র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ সাদা খনিজ পাথর উদ্ধারে ঢাকা জেলার ডেমরার সারুলিয়ায় যৌথ অভিযান চালানো হয়। এতে আনুমানিক ৪০ হাজার ঘনফুট আস্ত ও ক্রাশড পাথর উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হবে, যারা বয়কটের চেষ্টা করবে তারা রাজনীতি থেকে মাইনাস হয়ে যাবে। গতকাল বৃহস্পতিবার গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, 'আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে। যারা বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছে যে, দাবি পূরণ না হলে, সংস্কার পূর্ণাঙ্গ না হলে, বিচার পূর্ণাঙ্গ না হলে নির্বাচন হবে না, এগুলো মাঠের বক্তব্য।’
তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্ট করে তার ভাষণে বলেছেন যেসব সংস্কার প্রস্তাবে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেগুলো পরবর্তী নির্বাচিত জাতীয় সংসদে বাস্তবায়নের সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই প্রতিশ্রুতি আমরাও দিয়েছি যে, আমরা জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করব।’
‘এখন প্রশ্ন কারা নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চায়, অথবা বিলম্ব হোক বা অনিশ্চিত হোক সে পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। অথবা নির্বাচন না হোক সেটা চায়। জাতির সামনে তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে, এটা বলা যায়,’ বলেন সালাহউদ্দিন।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘তাদের মধ্যে যেন এই রিয়ালাইজেশন আসে যে একটা গণতান্ত্রিকভাবে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ এবং বিশ্বাসযোগ্য একটা নির্বাচন অনুষ্ঠান ছাড়া এই জাতির সামনে আর কোনো বিকল্প নেই।’
‘রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে অনেকেই হয়তো সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে তারা এসব বক্তব্য দিচ্ছে কিনা, এ প্রশ্নও বাজারে আছে। কিন্তু আমি মনে করি সেটা চাপের কোনো বিষয় নয়,’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘আমরা দলের পক্ষ থেকে আমাদের নির্বাচনী কৌশল ইতোমধ্যে প্রকাশ করেছি। আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের সঙ্গেই জোট করব যাদের সঙ্গে আমাদের প্রতিশ্রুতি ছিল, যারা আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে চাই, জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি যেটা হয়েছে সেটাকে ধরে রাখতে চাই। তবে এখানে আমরা বলেছি যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আমাদের নির্বাচনে জোট হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।'
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমি নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় দেখি না। যারা আগামী নির্বাচনকে বয়কট করার চেষ্টা করবে ডাইরেক্টলি বা ইনডাইরেক্টলি, তারা জাতীয় রাজনীতি থেকে মাইনাস হয়ে যাবে।’
‘বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, তার মধ্যে এক নম্বর অধিকার ছিল ভোটের অধিকার ফিরে পায়। এখন সেই পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে। সেই ভোটের অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে যেসব রাজনৈতিক দল নিরুৎসাহিত করবে, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত,’ বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আরো বলেন, গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় উপদেষ্টাদের কেউ জড়িত কি না, তা জনগণের সামনে তুলে ধরা দরকার। তদন্ত না হলে তাদের বিষয়ে আরও প্রশ্ন উঠবে। তিনি এই ঘটনার বিস্তারিত ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানান।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন খালেদা জিয়া। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ। বাবা এস্কান্দর মজুমদার ও মা বেগম তৈয়বা মজুমদার। পৈতৃক নিবাস ফেনীর ফুলগাজী হলেও খালেদা জিয়ার শৈশব-কৈশোর কেটেছে দিনাজপুরে, বাবার কর্মস্থলে।
চেয়ারপারসনের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয় ও মসজিদে দোয়া মাহফিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে নেতাকর্মীদের কেক কাটতে নিষেধ করা হয়েছে।
ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিএনপি এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সবপর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মিলাদ ও দোওয়া মাহফিলগুলোতে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
১৯৮১ সালের ৩০ মে স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে নাম লেখান খালেদা জিয়া। প্রথমে দলের ভাইস চেয়ারম্যান, ১৯৮৪ সালে দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন তিনি।
১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ এবং ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ মেয়াদে তিন দফা বিএনপি সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন খালেদা জিয়া।
আগামী সপ্তাহে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা আশা করছি, আগামী সপ্তাহে নির্বাচনী রোডম্যাপ দিতে পারব। এতে আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পাবেন।’
আগামী সপ্তাহে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গেও নির্বাচন কমিশন আলোচনা করবে উল্লেখ করে ইসি সচিব জানান, পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে নিবন্ধনের জন্য ৩১৮টি আবেদন পাওয়া গেছে, যা বর্তমানে পর্যালোচনাধীন।
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়ে তিনি বলেন, ২২টি রাজনৈতিক দলের আবেদন প্রাথমিকভাবে মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হবে প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাইয়ের জন্য। পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় রয়েছে যা নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা ও আলোচনা করা হচ্ছে এবং এসব বিষয়ে ধাপে ধাপে গণমাধ্যমকে অবহিত করা হবে। প্রবাসী ভোটারদের ভোট দেওয়ার পদ্ধতি নিয়েও গতকাল বৃহস্পতিবার আলোচনা হয়েছে বলে জানান ইসি সচিব। এ বিষয়ে কোথায়, কোন পদ্ধতিতে এবং কত দিনের মধ্যে কার্যক্রম শেষ করতে হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আলোচনার পর ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।
প্রতি সপ্তাহে অন্তত এক দিন বা দুদিন গণমাধ্যমের সঙ্গে তিনি এবং নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ (অব.) কথা বলবেন বলে সচিব জানান।
নির্বাচনী রোডম্যাপে কী কী থাকবে-এমন প্রশ্নের জবাবে আখতার আহমেদ বলেন, রোডম্যাপ প্রকাশের সময়ই তা জানানো হবে এবং এতে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ, গণমাধ্যমের সঙ্গে সংলাপ, আইন-বিধি সংশোধনসহ যাবতীয় তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
উল্লেখ্য, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। এর অংশ হিসেবে গত ৬ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠিয়ে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির রমজানের আগেই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে বলেছে। এ চিঠির মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সরকারের অনুরোধের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলা শহরে খাদিজা সেবা ক্লিনিকে একজন প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগষ্ট)উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগের একটি দল তদন্ত সাপেক্ষে ওই ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারসহ ক্লিনিক সিলগালা করেছেন ।
ক্লিনিক সূত্রে জানা গেছে,বুধবার (১৩ আগষ্ট)সকালে উপজেলার কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া গ্রামের কামাল শেখের প্রসূতি স্ত্রী লাবনী আক্তারকে খাদিজা সেবা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয় । ওইদিন বিকেলে রোগীকে সিজারিয়ান অপারেশন করা হলে জমজ সন্তানের জন্ম দেন ।
অপারেশনের পর লাবনী আক্তার গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তড়িঘড়ি করে রোগীকে খুলনার একটি হাসপাতালে রেফার করেন ক্লিনিক পরিচালক খাদিজা পারভিন । হাসপাতালে নেওয়ার পথে লাবনী আক্তারের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেন ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ।
লাবনী আক্তারের দেবর মো.আসলাম হোসেনের অভিযোগ ক্লিনিকে কোন অ্যানেথেসিয়া চিকিৎসক ছিল না । কোন রকমে অজ্ঞান করেই রোগীকে অপারেশন করা হয় । যে কারণে অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে আমার ভাবীর মৃত্যু হয়েছে । তিনি বলেন,জমজ সন্তান দুইটি বর্তমানে খুলনা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে । এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,আমার ভাই মা বাবা সকলেই নবজাতকের চিকিৎসার জন্য খুলনায় অবস্থান করছে । তারা বাড়ীতে আসলে পরে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো.শোয়াইব হোসেন বলেন,ওই ক্লিনিকে সেবিকা ও ডিউটি চিকিৎসক নেই । এছাড়া মানসম্মত অপারেশন থিয়েটারও নেই । তিনি বলেন,সিভিল সার্জন মহোদয়ের নির্দেশ ক্রমে আমিসহ কালিয়া উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম বিশ্বাস,মেডিকেল কর্মকর্তা মো.হাসিবুর রহমান,ডেন্টাল সার্জন মো.সরোয়ার হোসেন,উপজেলা সেনেটারী ইন্সপেক্টর মো.মঈনুদ্দীন ওই ক্লিনিক তদন্তে গিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম দেখতে পাই ।
উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা পার্থ প্রতীম বিশ্বাস বলেন,এর আগেও খাদিজা সেবা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার অভিযোগ পাওয়া গেছে । ক্লিনিকে মেয়াদোত্তীর্ণ অসুধ ব্যবহারের জন্য ভ্রাম্যমান আদালত বেশ কয়েকবার জেল জরিমানা করেছে । কিন্তু তারপরও ওই ক্লিনিক চালু রয়েছে ।
জানতে চাইলে ক্লিনিক পরিচালক খাদিজা পারভিন সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন । তিনি মামলা করারও হুমকী দেন ।
সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুর রশীদ বলেন,ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাবার পর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ একটি তদন্ত টিম পাঠানো হয়েছিল । তিনি বলেন,প্রাথমিক পর্যায়ে ক্লিনিক সিলগালা করা হয়েছে । আগামি তিন কর্মদিবসের মধ্যে একটি তদন্ত টিম গঠন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য