বহুল আলোচিত ই-কমার্স সাইট ইভ্যালির কাছে বিপুলসংখ্যক গ্রাহক ও মার্চেন্টের পাওনা পরিশোধের পথ খুলতে যাচ্ছে। স্বাভাবিক ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে ফিরতে প্রতিষ্ঠানটিকে কিছুটা সময় দেয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে সরকার। সেই সঙ্গে ইভ্যালিতে যমুনা গ্রুপের বিনিয়োগের তথ্যও এসেছে সংবাদমাধ্যমে।
সম্প্রতি ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল ফেসবুক লাইভে এসে সংকট কাটাতে ছয় মাসের সময় চান। এ সময়ের মধ্যে সব গ্রাহকের পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। দেশের শীর্ষ আইনজীবীরাও ভোক্তা সুরক্ষার স্বার্থে ইতিবাচক মত দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলছে, আনুষ্ঠানিক লিখিত প্রস্তাব পেলে ডাকা হতে পারে রাসেলকে। চাওয়া হতে পারে টেকসই বিজনেস প্ল্যান। কঠোর মনিটরিংয়ে রেখে তাকে একটি সময়ও দেয়া হতে পারে।
ইভ্যালির কাছে বর্তমানে আটকে আছে গ্রাহকের অগ্রিম ও মার্চেন্টদের বকেয়া ৪০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে থাকা ৬৫ কোটি টাকা দিয়ে ১৬.২২ শতাংশ গ্রাহকের পাওনা পরিশাধ করা সম্ভব। বাকি পাওনা নিয়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ।
এ পরিস্থিতিতে গত ২৪ জুলাই রাতে ফেসবুক লাইভে আসেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল। তিনি দাবি করেন, ঘাটতি থাকা ওই টাকা তারা ইভ্যালির ব্যবসার ব্র্যান্ডিংয়ে খরচ করেছেন। তাদের ব্যবসার ব্র্যান্ডিং পলিসি হচ্ছে, ভোক্তাকে অস্বাভাবিক কম মূল্যে পণ্য দিয়ে বেশি ক্রেতা আকৃষ্ট করা।
তিনি বলেন, ‘এভাবে ইভ্যালিকে ব্র্যান্ডিং করতে বেশি দামের পণ্য অতি কম দামে দেয়ার কারণে তাদের সাময়িক লোকসান হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিষ্ঠিত ই-কমার্স সাইটগুলো প্রথমে এভাবেই লোকসান দিয়েছে। পরে তারা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। ইভ্যালির ক্ষেত্রেও সেই লোকসানই হয়েছে। তবে এতে ইভ্যালির যে ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি হয়েছে, সেই ব্র্যান্ড ভ্যালুই ব্যবসায় দেয়া লোকসান রিকভার করবে।’
মোহাম্মদ রাসেল মনে করছেন, দেশে-বিদেশে তাদের যে ব্র্যান্ডভ্যালু প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা দিয়ে লোকসান পুনরুদ্ধার করে ইভ্যালিকে আগামী ১০০ বছরের জন্য টেকসই করা সম্ভব। তবে এর জন্য ইভ্যালিকে বন্ধ না করে স্বাভাবিক ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে। কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থেকে ব্যবসা পরিচালনা করে ছয় মাসের মধ্যে সমস্ত গ্রাহক ও মার্চেন্টদের পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রতিও দেন মোহাম্মদ রাসেল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মনজিল মোরসেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যবসায় লোকসান হতে পারে। তা যেকোনো কারণেই হোক। কিন্তু সেটি যদি রিকভার করার সুযোগ থাকে, এতে যদি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ও মার্চেন্টদের পাওনা ফেরতের নিশ্চয়তা মেলে, তাহলে অবশ্যই সরকারের উচিত ভোক্তা সুরক্ষার স্বার্থে তাকে নির্দিষ্ট সময় দেয়া।’
ব্যবসাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ব্যারিস্টার মেজবাহুর রহমান এ প্রসঙ্গে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইভ্যালির কাছে যেসব গ্রাহক ও মার্চেন্টরা টাকা পান, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সেই টাকা উদ্ধারের কোনো সম্ভাবনা নেই।
‘এখন ধরুন এ বিষয়ে মামলা হলো। তাকে গ্রেপ্তার এবং জেল দেয়া হলো। ইভ্যালির ব্যাংক হিসাব বা অন্যান্য সম্পদ জব্ধ করা হলো। আদালতও বলল ক্ষতিগ্রস্তের টাকা পুনরুদ্ধার করে তা পাওনাদারদের ফিরিয়ে দিতে। কিন্তু যে পরিমাণ টাকা গ্রাহক ও মার্চেন্ট পায় বলে তথ্য রয়েছে, ইভ্যালি কর্তৃপক্ষের কাছে তো ওই পরিমাণ অর্থ বা সম্পদ থাকতে হবে। না থাকলে ওই পাওনা পরিশোধের দায় তো সরকার নেবে না। নেয়া উচিতও না।
‘কারণ এখানে দুই পক্ষ ইভ্যালি ও ভোক্তা লেনদেন করেছে। পাওনা পরিশোধের দায়িত্ব ইভ্যালির ওপরই বর্তায়। সেখানে কর্তৃপক্ষের নগদ অর্থ, সম্পদ না থাকলে কোথা থেকে কী হবে। অর্থাৎ গ্রাহক ও মার্চেন্টদের পাওনা অপরিশোধই থেকে যাবে।’
সংকট কাটানোর উপায় সম্পর্কে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘উপায় একটাই হতে পারে– গ্রাহকের পাওনা ফিরিয়ে দেয়ার স্বার্থে ইভ্যালিকে বাঁচিয়ে রেখে বা ব্যবসা করতে দিয়ে নির্দিষ্ট সময় প্রদান করা। সেখানে কঠোর মনিটরিং বজায় রাখতে হবে। প্রয়োজনে পাওনা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত সরকার মনোনীত কোনো বিশেষজ্ঞ টিমকে ইভ্যালির ম্যানেজমেন্ট কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে এই ঘটনার পর গ্রাহক বা ভোক্তা কতটা আস্থা রাখে তার ওপর।’
ইভ্যালির ছয় মাস সময় চাওয়ার বিষয়ে সরকার কী ভাবছে, জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইভ্যালি যা চায় তার পরিকল্পনা প্রস্তাব এখনও মন্ত্রণালয়ে আসেনি। লিখিত প্রস্তাব পেলে প্রয়োজনে আমরা তাদের ডাকব। বিজনেস প্ল্যান সম্পর্কে জানব। তা যদি আইনসিদ্ধ হয় এবং এতে যদি ভোক্তার পাওনা পাই টু পাই পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকে, তাহলে সরকার ভোক্তার স্বার্থে ইভ্যালির ব্যবসা সচল রেখে পাওনা পরিশোধের উদ্যোগে যাবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে যে পরিমাণ দায় দেখানো হয়েছে এবং এর বিপরীতে ইভ্যালির কাছে যে অর্থের হদিস নেই বলে তথ্য এসেছে, তার সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে বিষয়টি এখন অধিকতর তদন্তাধীন। এর বাইরে আরও অন্যান্য কাজও চলছে। যদি দেখা যায় ইভ্যালির কাছে পাওনা পরিশোধের মতো সম্পদ নেই এবং গ্রাহকের পাওনা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে, তাহলে তো তাদেরকে জেলেই যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে পাওনা পরিশোধের বিষয়টি জটিলতায় পড়বে। সব মিলিয়ে ভোক্তা সুরক্ষার স্বার্থে সরকার সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্তটিই নেবে।’
অন্যদিকে, বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কিন্তু আইনের মধ্যেই কাজ করতে হবে। কোনো ব্যক্তি যদি প্রতারিত হন তিনি মামলা করতে পারেন। তখন আদালত নির্ধারণ করে দেবে, তার যে ক্ষতি হয়েছে সেটা কীভাবে পূরণ করা হবে। ইভ্যালির ক্ষেত্রেও আমার মনে হয়, আদালতের মাধ্যমেই একটি নির্দেশনা আসতে হবে, ভোক্তাদের পাওনা অর্থ কোথা থেকে কীভাবে উদ্ধার করা যায় সে বিষয়ে।’
বাণিজ্যসচিব আরও বলেন, ‘পেইডআপ ক্যাপিটালের সঙ্গে অ্যাসেটের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এসেছে উনার ৬৫ কোটি টাকার সম্পদ তদন্তে পাওয়া গেছে। এর বাইরেও উনার সম্পদ আছে কি না, সেটি আমরা এখনও জানি না। এর বাইরেও সম্পদ থাকতে পারে। এ বিষয়টির অধিকতর তদন্ত চলছে। আমার মনে হয় সেই তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ জানার পরেই ব্যবস্থা নেয়া যাবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খুব শিগগিরই আমরা ইভ্যালিসহ অভিযুক্ত আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের বিজনেস মডেল চেয়ে চিঠি দেব। ওই চিঠির জবাব সন্তোষজনক না হলে এবং প্রচলিত বিজনেস মডেল যদি বাংলাদেশে আইনসিদ্ধ না হয়, তাহলে ওইসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলসহ বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
যমুনা থেকে বিনিয়োগ পাওয়ার ঘোষণা
চলমান সংকটের মধ্যেই ইভ্যালিতে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ যমুনা গ্রুপের ১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা এসেছে। প্রাথমিকভাবে ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে যমুনা। এরপর বিভিন্ন পর্যায়ে বিনিয়োগ করা হবে ১ হাজার কোটি টাকা।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইভ্যালির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। যমুনা গ্রুপ থেকেও তথ্যটি নিশ্চিত করা হয়েছে।
তবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির মূল বাজারদর (ভ্যালুয়েশন) প্রকাশ করেনি কোনো পক্ষ।
এমন বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়ে ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘একটি দেশীয় উদ্যোগ হিসেবে আমাদের পাশে আরেকটি দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে পেয়ে আমরা সত্যিই আনন্দিত।’
তিনি বলেন, ‘যমুনার এই বিনিয়োগ ধারাবাহিক বিনিয়োগের অংশ। পরবর্তী ধাপেও তাদের বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এই বিনিয়োগ ইভ্যালির ভবিষ্যৎ উন্নয়ন এবং ব্যবসা পরিধি বৃদ্ধিতে ব্যয় করা হবে।’
গ্রাহকদের পুরোনো অর্ডার ডেলিভারি নিয়ে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘পুরোনো অর্ডার যেগুলো পেন্ডিং, সেগুলোর ডেলিভারির ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দিচ্ছি। প্রয়োজনে আমরা আরও বিনিয়োগের ব্যবস্থা করব।’
ইভ্যালিতে বিনিয়োগ বিষয়ে যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উন্নয়নে আমরা দেখছি, স্থানীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে অ্যামাজন, চীনের ক্ষেত্রে আলিবাবা। তেমনি বাংলাদেশে ইতোমধ্যে নিজের একটি অবস্থান তৈরি করেছে দেশীয় ই-কমার্স ইভ্যালি। শুধু দেশের সাধারণ মানুষের স্বপ্নপূরণে কাজ করে যাচ্ছে তারা।’
যমুনা গ্রুপ দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে দেশ ও দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করছে উল্লেখ করে শামীম ইসলাম আরও বলেন, ‘এখন থেকে ইভ্যালি এবং যমুনা গ্রুপ সেই স্বপ্নপূরণে একে অপরের অংশীদার হলো।’
ইভ্যালি ও যমুনা গ্রুপের এই অংশীদারত্বকে স্বাগত জানিয়ে যমুনা গ্রুপের গ্রুপ পরিচালক মনিকা ইসলাম বলেন, ‘দেশের বাজারে মানসম্পন্ন পণ্য ও সেবা নিয়ে যমুনা গ্রুপ ব্যবসা করে আসছে। বাংলাদেশে সব থেকে বড় অফলাইন মার্কেটপ্লেস যমুনা ফিউচার পার্ক। আর এখন সবচেয়ে বড় অনলাইন মার্কেটপ্লেস গড়ে তোলার জন্য ইভ্যালির সঙ্গে থাকবে যমুনা।’
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং দেশের ই-কমার্স খাতকে একটা মজবুত অবস্থানে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে ইভ্যালির সৎ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যের প্রতি বিশ্বাস রেখে দেশের এই করোনাকালীন দুঃসময়ে দেশের অর্থনীতিকে চাঙা রাখতে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি।’
যমুনা গ্রুপের পরিচালক (অ্যাকাউন্টস) শেখ ওয়াদুদ বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারি করোনার সময়ে আমরা দেশীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে চাই। এই বিনিয়োগ নিয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য আমরা ধাপে ধাপে প্রকাশ করব।’
আরও পড়ুন:দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে বিগত বছরগুলোর প্রতিকূলতা কাটিয়ে রেকর্ড ও টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চলেছে পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি। চলতি বছর ওয়ালটন পণ্যের বিক্রয় বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। যার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি হিসাব বছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই’২০২৩-মার্চ’২০২৪) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ওয়ালটন হাই-টেকের মুনাফা বেড়েছে ৫১২.৪২ কোটি টাকা বা ২০৫ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা ব্যাপক বৃদ্ধিসহ আর্থিক প্রায় সব সূচকেই উন্নতি হয়েছে।
ওয়ালটন হাই-টেকের চলতি হিসাব বছরের জুলাই-২০২৩ থেকে মার্চ-২০২৪ পর্যন্ত সময়ের প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
রোববার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ৩৮তম সভায় আলোচ্য সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২০২৪ হিসাব বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময়ে অর্থাৎ প্রথম নয় মাসে কোম্পানিটির মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৬২.৩৪ কোটি টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ২৪৯.৯১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা বেড়েছে ৫১২.৪২ কোটি টাকা। শতকরা হিসেবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২০৫ শতাংশ।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২০২৪) ওয়ালটনের মুনাফা হয়েছে ৪২১.৯৮ কোটি টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ২৩৫.৫৫ কোটি টাকা।
বিক্রয় বৃদ্ধির পাশাপাশি কস্ট অব গুড্স সোল্ড উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাওয়ায় কোম্পানিটির মোট মুনাফার শতকরা হার পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য আর্থিক সূচকেও ব্যাপক উন্নতি হয়েছে ওয়ালটন হাই-টেকের। তাছাড়া মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ব্যাপক হারে হ্রাস পাওয়ায় কোম্পানিটির কর পরবর্তী নিট মুনাফার পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস), শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস)।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমাপ্ত সময়ে (জুলাই’২০২৩-মার্চ’২০২৪) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫.১৭ টাকা; যা আগের অর্থ বছরের একই সময়ে ছিলো ৮.২৫ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির এনএভিপিএস পুনর্মূল্যায়ন ব্যতীত দাঁড়িয়েছে ২৫৮.২২ টাকা এবং পুনর্মূল্যায়নসহ ৩৫৯.৬৮ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ২২.৮৮ টাকা।
চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে কোম্পানির আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ ও শতকরা হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। প্রথম নয় মাসে বিক্রয়ের বিপরীতে আর্থিক ব্যয়ের শতকরা হার দাঁড়িয়েছে ৬.১৪ শতাংশ। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিলো ১৪.৭৯ শতাংশ।
এ ছাড়াও মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় গত অর্থ বছরের প্রথম নয় মাসে কোম্পানিটি ৩৯২.৭৩ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলো। সেই ক্ষতি চলতি বছরের আলোচ্য সময়ে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়ে মাত্র ৪১.৬০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
এদিকে জুলাই-২০২৩ থেকে মার্চ-২০২৪ পর্যন্ত সময়ে কোম্পানির মোট আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬৩.০৭ কোটি টাকা, যা পূর্বের অর্থ বছরের একই সময়ে ছিল ৬০৪.৭৯ কোটি টাকা।
এছাড়া, শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২০২৪) কোম্পানির মুনাফা আরো দৃঢ় অবস্থানে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ওয়ালটন ম্যানেজমেন্ট। প্রেস রিলিজ
শীর্ষস্থানীয় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ উবারের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ইনডেক্স-এর অষ্টম সংস্করণ প্রকাশ হয়েছে রোববার।
উবার ব্যবহারকারীরা কোন জিনিসগুলো গাড়িতে সবচেয়ে বেশি ফেলে রেখে গেছেন এবং দিনের কোন সময়ে, সপ্তাহের কোন দিনে ও বছরের কোন সময়ে হারানো জিনিস রিপোর্ট করেছেন, এসব তথ্যের একটি স্ন্যাপশট হলো এ ইনডেক্স।
গত এক বছরের মে ও জুন মাসে বাংলাদেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি জিনিসপত্র ভুলে ফেলে রেখে গেছেন। বেশির ভাগ জিনিসপত্র ফেলে রেখে আসার ঘটনাটি ঘটেছে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে।
গত বছর বাংলাদেশজুড়ে যাত্রীদের ভুলে যাওয়া জিনিসের তালিকায় প্রথম দুটি স্থানে ছিল পোশাক ও ছাতা। তালিকায় এর পরেই ছিল ওয়ালেট, বালিশ ও হেডফোন।
বাংলাদেশিরা উবারে এ রকম সাধারণ জিনিসপত্র যেমন ভুলে ফেলে রেখে গেছেন, স্পিকারের মতো অপ্রত্যাশিত জিনিসও তেমনি ভুলে রেখে গেছেন।
উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড নাশিদ ফেরদৌস কামাল লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ইনডেক্স সম্পর্কে বলেন, ‘যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য উবারের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ট্রিপের সময় যাত্রীদের ফেলে যাওয়া জিনিস নিরাপদে তাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়াও এর অন্তর্ভুক্ত। হারানো জিনিস খুঁজে পেতে উবারের কিছু ইন-অ্যাপ অপশন আছে।
‘এ ব্যাপারে যাত্রীদের জানানোর জন্য লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ইনডেক্স একটি চমৎকার শিক্ষণীয় উপায়। যাত্রীদের আমরা জানাতে চাই যে, রাইডের সময় তারা কিছু ভুলে ফেলে গেলে তাদের সাহায্য করার জন্য আমরা প্রস্তুত।’
ফেলে যাওয়া জিনিস উদ্ধারের উপায়
গাড়িতে ফেলে যাওয়া কোনো জিনিস উদ্ধারের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো চালককে কল করা। কীভাবে করবেন জেনে নিন।
১. ‘ইয়োর ট্রিপস’ অপশনে ট্যাপ করুন এবং যে ট্রিপে আপনার জিনিসটি হারিয়ে গেছে, তা সিলেক্ট করুন
২. নিচে স্ক্রল করে ‘ফাইন্ড লস্ট আইটেম’ অপশনে ট্যাপ করুন
৩. ‘কনটাক্ট ড্রাইভার অ্যাবাউট আ লস্ট আইটেম’ অপশনে ট্যাপ করুন
৪. স্ক্রল করে নিচে নামুন এবং আপনার সঙ্গে যোগযোগ করা যাবে এমন একটি ফোন নম্বর লিখুন। সাবমিট অপশনে ট্যাপ করুন
৫. যদি নিজের ফোন হারিয়ে যায়, তাহলে আপনার বন্ধুর ফোন নম্বর ব্যবহার করুন (এর জন্য আপনাকে কম্পিউটার বা বন্ধুর ফোন থেকে নিজের অ্যাকাউন্টে লগ ইন করতে হবে)
৬. আপনার ফোন বেজে উঠবে এবং আপনার চালকের মোবাইল নম্বরের সঙ্গে আপনাকে সরাসরি যুক্ত করে দেয়া হবে
৭. যদি চালক ফোন ধরেন এবং নিশ্চিত করেন যে আপনার জিনিসটি পাওয়া গেছে, সেটি ফিরিয়ে নিতে উভয়ের জন্য সুবিধাজনক একটি সময় ও স্থান নির্বাচন করুন
৮. যদি চালকের সাথে যোগাযোগ করতে না পারেন, আপনার হারানো জিনিসটির বিস্তারিত বর্ণনা এবং আপনার সঙ্গে যোগাযোগের উপায় জানিয়ে চালককে একটি ভয়ে সমেইল পাঠিয়ে রাখুন
উবারে কিছু হারিয়ে ফেললে সহজে কীভাবে তা ফিরে পেতে পারেন, এই ভিডিও থেকে তা দেখে নিন।
উবার যাত্রীরা যেসব জিনিস সবচেয়ে বেশি ভুলে ফেলে রেখে গেছেন, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে পোশাক। এরপরই রয়েছে ছাতা, ওয়ালেট, নেক-পিলো, হেডফোন ও স্পিকার।
যে শহরগুলোতে যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি জিনিস হারিয়েছেন, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ঢাকা। এরপরের স্থানগুলো যথাক্রমে চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল।
বছরের যে দিনগুলোতে যাত্রীরা সবচেয়ে বেশিসংখ্যক জিনিস ভুলে রেখে গেছেন তার মধ্যে রয়েছে ১৩ মে, ২০২৩। এ ছাড়া ৯ জুন এবং ১৬ জুন, ২০২৩ বেশি ভুল করেছেন যাত্রীরা।
সপ্তাহের শুক্র, শনি ও রোববার সবচেয়ে বেশি জিনিস হারিয়েছে।
দিনের যে সময়ে যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি জিনিস ফেলে রেখে যান, তার সময় রাত আটটা। এরপরই সন্ধ্যা সাতটা ও রাত ৯টায় বেশি জিনিস ফেলে রেখে গেছেন।
আরও পড়ুন:কমানোর পরের দিনই বাড়ল স্বর্ণের দাম। ভালো মান বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৬২৯ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৭ টাকা।
রোববার বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, রোববার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৫১৩ টাকা বাড়িয়ে ৯৭ হাজার ৭০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৪২০ টাকা বাড়িয়ে ৭৮ হাজার ৬৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল দেশের বাজারে রেকর্ড স্বর্ণের দাম বাড়ায় বাজুস। ওই সময় ভরিতে ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়। তাতে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা। এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিল। পরে শনিবার ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম কমে ৮৪০ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনে বৈধপথে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১২৮ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ হাজার ৯৬ কোটি টাকা।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তথ্যমতে, এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনে বৈধপথে ১২৮ কোটি ১৫ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১১ কোটি ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১০৮ কোটি ৮১ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৩৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার এসেছে।
এর আগে মার্চ মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে এসেছে ২১০ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
দেশের স্বর্ণের বাজারে চলতি এপ্রিল মাসেই ২২ ক্যারেটের ভরিতে তিন দফায় ৪ হাজার ৫৬০ টাকা দাম বাড়ানো হয়েছে। এবার প্রতি ভরিতে দাম কমানো হয়েছে ৮৪০ টাকা। নামমাত্র এই কমানোর পর ভালো মানের (২২ ক্যারেট) এক ভরি স্বর্ণের দাম দাড়িয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) শনিবার এই দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। সংগঠনটির মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম কিছুটা কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।
বাজুস এর চলতি মাসে তিন দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ৬ এপ্রিল ১৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের স্বর্ণ ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯৭ হাজার ১৯৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা ভরি বিক্রি হবে।
এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়নো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। বর্তমানে ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি রুপা ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপা ১ হাজার ২৮৩ টাকা ভরি বিক্রি হচ্ছে।
রমজানের মধ্যে শসার বাজার চড়া দাম থাকলেও বর্তমানে শসাচাষিরা দাম পাওয়া নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছেন।
এমন দুঃসময়ে শসাচাষিদের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের অন্যতম রিটেইল চেইন সুপারশপ ‘স্বপ্ন’।
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়, ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার শসাচাষিরা। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে চার টাকায়। ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না চাষিরা।
এমন সময় সেই শসাচাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্যটি কেনে ‘স্বপ্ন’ কর্তৃপক্ষ। সেই শসা এখন খোলাবাজারের চেয়ে কম দামে স্বপ্ন আউটলেটে পাওয়া যাচ্ছে।
খোলা বাজারে বৃহস্পতিবার ৪০ টাকা কেজিতে শসা বিক্রি করতে দেখা গেলেও স্বপ্ন আউটলেটে তা ১২ টাকা কেজিতে গ্রাহকরা কিনতে পেরেছেন। এরই মধ্যে দিনাজপুরের খানসামার ওই এলাকা থেকে দুই টন এবং ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট এলাকা থেকে ছয় টন শসা কিনেছে স্বপ্ন প্রতিনিধি।
বর্তমানে তাদের উৎপাদিত শসা পৌঁছে গেছে স্বপ্নর আউটলেটে। স্টক থাকা অবধি এ অফার গ্রাহকরা পাবেন।
স্বপ্নর নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, ‘আমরা শসাচাষিদের দুর্ভোগের কথা জানতে পেরেছি নিউজের মাধ্যমে। আমরা দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ বেশ কিছু এলাকার কৃষকের দুর্ভোগের কথা জানার পর তাদের কাছ থেকে শসা কিনেছি ন্যায্য মূল্যে।
‘অন্যান্য ব্যবসায়ীদেরও কৃষকদের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান থাকবে। মধ্যস্বত্বভোগীদের লাভবান না করে কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি সেতুবন্ধের চেষ্টা করে আসছে স্বপ্ন। এ চেষ্টা সবসময় অব্যাহত থাকবে।’
এ প্রসঙ্গে স্বপ্নর হেড অফ পার্চেজ সাজ্জাদুল হক বলেন, “বিভিন্ন গণমাধ্যমে শসাচাষিদের সংকটের খবর দেখার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে, কৃষকদের পাশে আমরা দাঁড়াব। দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে এরই মধ্যে ৮ টন শসা আমরা কিনেছি।
“দুঃসময়ে কষ্টে থাকা অনেক কৃষকদের পাশে ‘স্বপ্ন’ এর আগেও দাঁড়িয়েছে। সামনেও পাশে থাকবে।”
দিনাজপুরের খানসামা এলাকার কৃষক সাকিব হোসেন বলেন, ‘প্রায় এক বিঘা জমিতে শসা চাষ করেছিলাম এবার। শসার বীজ, সারসহ নানা কাজে লাখ টাকা খরচ হয় আমার, কিন্তু ১০ রমজান অবধি কিছু শসা বিক্রি করার পর বাজারে শসার দাম কমে যায়। প্রতি কেজি ১০ টাকা, এরপর পাঁচ টাকা এবং সবশেষে আরও কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। অনেক শসা নষ্ট হয়ে যায়। অনেক লোকসান হচ্ছিল।’
তিনি আরও বলেন, “আমার এলাকার এক সাংবাদিক নিউজ করার পর এসিআই কোম্পানির ‘স্বপ্ন’ থেকে যোগাযোগ করে আমার অনেকগুলো শসা কিনে নিয়েছেন উনারা। এতে করে লোকসানের অনেক ঘাটতি পূরণ হয়েছে আমার। তাদের অশেষ ধন্যবাদ।”
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে রেকর্ড ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের সাড়ে তিন মাসে অষ্টমবারের মতো স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হলো।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৃহস্পতিবার বৈঠক করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। নতুন নির্ধারিত এই দাম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী- ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেট প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৬৫৬ টাকা বেড়ে ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৩৮৮ টাকা কমে ৭৮ হাজার ৮০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সবশেষ দশ দিন আগে ৮ এপ্রিল বাজুস ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৪৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা নির্ধারণ করে। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও দাম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দেশের স্বর্ণের বাজারে উচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হলো।
অবশ্য স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের আরও বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সেসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ১ লাখ ২৯ হাজার ১১৯ টাকা।
এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য