বহুল আলোচিত ই-কমার্স সাইট ইভ্যালির কাছে বিপুলসংখ্যক গ্রাহক ও মার্চেন্টের পাওনা পরিশোধের পথ খুলতে যাচ্ছে। স্বাভাবিক ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে ফিরতে প্রতিষ্ঠানটিকে কিছুটা সময় দেয়ার বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করছে সরকার। সেই সঙ্গে ইভ্যালিতে যমুনা গ্রুপের বিনিয়োগের তথ্যও এসেছে সংবাদমাধ্যমে।
সম্প্রতি ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল ফেসবুক লাইভে এসে সংকট কাটাতে ছয় মাসের সময় চান। এ সময়ের মধ্যে সব গ্রাহকের পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। দেশের শীর্ষ আইনজীবীরাও ভোক্তা সুরক্ষার স্বার্থে ইতিবাচক মত দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলছে, আনুষ্ঠানিক লিখিত প্রস্তাব পেলে ডাকা হতে পারে রাসেলকে। চাওয়া হতে পারে টেকসই বিজনেস প্ল্যান। কঠোর মনিটরিংয়ে রেখে তাকে একটি সময়ও দেয়া হতে পারে।
ইভ্যালির কাছে বর্তমানে আটকে আছে গ্রাহকের অগ্রিম ও মার্চেন্টদের বকেয়া ৪০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে থাকা ৬৫ কোটি টাকা দিয়ে ১৬.২২ শতাংশ গ্রাহকের পাওনা পরিশাধ করা সম্ভব। বাকি পাওনা নিয়ে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ।
এ পরিস্থিতিতে গত ২৪ জুলাই রাতে ফেসবুক লাইভে আসেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল। তিনি দাবি করেন, ঘাটতি থাকা ওই টাকা তারা ইভ্যালির ব্যবসার ব্র্যান্ডিংয়ে খরচ করেছেন। তাদের ব্যবসার ব্র্যান্ডিং পলিসি হচ্ছে, ভোক্তাকে অস্বাভাবিক কম মূল্যে পণ্য দিয়ে বেশি ক্রেতা আকৃষ্ট করা।
তিনি বলেন, ‘এভাবে ইভ্যালিকে ব্র্যান্ডিং করতে বেশি দামের পণ্য অতি কম দামে দেয়ার কারণে তাদের সাময়িক লোকসান হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিষ্ঠিত ই-কমার্স সাইটগুলো প্রথমে এভাবেই লোকসান দিয়েছে। পরে তারা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। ইভ্যালির ক্ষেত্রেও সেই লোকসানই হয়েছে। তবে এতে ইভ্যালির যে ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি হয়েছে, সেই ব্র্যান্ড ভ্যালুই ব্যবসায় দেয়া লোকসান রিকভার করবে।’
মোহাম্মদ রাসেল মনে করছেন, দেশে-বিদেশে তাদের যে ব্র্যান্ডভ্যালু প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা দিয়ে লোকসান পুনরুদ্ধার করে ইভ্যালিকে আগামী ১০০ বছরের জন্য টেকসই করা সম্ভব। তবে এর জন্য ইভ্যালিকে বন্ধ না করে স্বাভাবিক ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে। কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থেকে ব্যবসা পরিচালনা করে ছয় মাসের মধ্যে সমস্ত গ্রাহক ও মার্চেন্টদের পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রতিও দেন মোহাম্মদ রাসেল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মনজিল মোরসেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যবসায় লোকসান হতে পারে। তা যেকোনো কারণেই হোক। কিন্তু সেটি যদি রিকভার করার সুযোগ থাকে, এতে যদি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ও মার্চেন্টদের পাওনা ফেরতের নিশ্চয়তা মেলে, তাহলে অবশ্যই সরকারের উচিত ভোক্তা সুরক্ষার স্বার্থে তাকে নির্দিষ্ট সময় দেয়া।’
ব্যবসাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ব্যারিস্টার মেজবাহুর রহমান এ প্রসঙ্গে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইভ্যালির কাছে যেসব গ্রাহক ও মার্চেন্টরা টাকা পান, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সেই টাকা উদ্ধারের কোনো সম্ভাবনা নেই।
‘এখন ধরুন এ বিষয়ে মামলা হলো। তাকে গ্রেপ্তার এবং জেল দেয়া হলো। ইভ্যালির ব্যাংক হিসাব বা অন্যান্য সম্পদ জব্ধ করা হলো। আদালতও বলল ক্ষতিগ্রস্তের টাকা পুনরুদ্ধার করে তা পাওনাদারদের ফিরিয়ে দিতে। কিন্তু যে পরিমাণ টাকা গ্রাহক ও মার্চেন্ট পায় বলে তথ্য রয়েছে, ইভ্যালি কর্তৃপক্ষের কাছে তো ওই পরিমাণ অর্থ বা সম্পদ থাকতে হবে। না থাকলে ওই পাওনা পরিশোধের দায় তো সরকার নেবে না। নেয়া উচিতও না।
‘কারণ এখানে দুই পক্ষ ইভ্যালি ও ভোক্তা লেনদেন করেছে। পাওনা পরিশোধের দায়িত্ব ইভ্যালির ওপরই বর্তায়। সেখানে কর্তৃপক্ষের নগদ অর্থ, সম্পদ না থাকলে কোথা থেকে কী হবে। অর্থাৎ গ্রাহক ও মার্চেন্টদের পাওনা অপরিশোধই থেকে যাবে।’
সংকট কাটানোর উপায় সম্পর্কে পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘উপায় একটাই হতে পারে– গ্রাহকের পাওনা ফিরিয়ে দেয়ার স্বার্থে ইভ্যালিকে বাঁচিয়ে রেখে বা ব্যবসা করতে দিয়ে নির্দিষ্ট সময় প্রদান করা। সেখানে কঠোর মনিটরিং বজায় রাখতে হবে। প্রয়োজনে পাওনা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত সরকার মনোনীত কোনো বিশেষজ্ঞ টিমকে ইভ্যালির ম্যানেজমেন্ট কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। তবে এর সবকিছুই নির্ভর করছে এই ঘটনার পর গ্রাহক বা ভোক্তা কতটা আস্থা রাখে তার ওপর।’
ইভ্যালির ছয় মাস সময় চাওয়ার বিষয়ে সরকার কী ভাবছে, জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইভ্যালি যা চায় তার পরিকল্পনা প্রস্তাব এখনও মন্ত্রণালয়ে আসেনি। লিখিত প্রস্তাব পেলে প্রয়োজনে আমরা তাদের ডাকব। বিজনেস প্ল্যান সম্পর্কে জানব। তা যদি আইনসিদ্ধ হয় এবং এতে যদি ভোক্তার পাওনা পাই টু পাই পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকে, তাহলে সরকার ভোক্তার স্বার্থে ইভ্যালির ব্যবসা সচল রেখে পাওনা পরিশোধের উদ্যোগে যাবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে যে পরিমাণ দায় দেখানো হয়েছে এবং এর বিপরীতে ইভ্যালির কাছে যে অর্থের হদিস নেই বলে তথ্য এসেছে, তার সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে বিষয়টি এখন অধিকতর তদন্তাধীন। এর বাইরে আরও অন্যান্য কাজও চলছে। যদি দেখা যায় ইভ্যালির কাছে পাওনা পরিশোধের মতো সম্পদ নেই এবং গ্রাহকের পাওনা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে, তাহলে তো তাদেরকে জেলেই যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে পাওনা পরিশোধের বিষয়টি জটিলতায় পড়বে। সব মিলিয়ে ভোক্তা সুরক্ষার স্বার্থে সরকার সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্তটিই নেবে।’
অন্যদিকে, বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কিন্তু আইনের মধ্যেই কাজ করতে হবে। কোনো ব্যক্তি যদি প্রতারিত হন তিনি মামলা করতে পারেন। তখন আদালত নির্ধারণ করে দেবে, তার যে ক্ষতি হয়েছে সেটা কীভাবে পূরণ করা হবে। ইভ্যালির ক্ষেত্রেও আমার মনে হয়, আদালতের মাধ্যমেই একটি নির্দেশনা আসতে হবে, ভোক্তাদের পাওনা অর্থ কোথা থেকে কীভাবে উদ্ধার করা যায় সে বিষয়ে।’
বাণিজ্যসচিব আরও বলেন, ‘পেইডআপ ক্যাপিটালের সঙ্গে অ্যাসেটের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এসেছে উনার ৬৫ কোটি টাকার সম্পদ তদন্তে পাওয়া গেছে। এর বাইরেও উনার সম্পদ আছে কি না, সেটি আমরা এখনও জানি না। এর বাইরেও সম্পদ থাকতে পারে। এ বিষয়টির অধিকতর তদন্ত চলছে। আমার মনে হয় সেই তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সম্পদের পরিমাণ জানার পরেই ব্যবস্থা নেয়া যাবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খুব শিগগিরই আমরা ইভ্যালিসহ অভিযুক্ত আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের বিজনেস মডেল চেয়ে চিঠি দেব। ওই চিঠির জবাব সন্তোষজনক না হলে এবং প্রচলিত বিজনেস মডেল যদি বাংলাদেশে আইনসিদ্ধ না হয়, তাহলে ওইসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলসহ বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
যমুনা থেকে বিনিয়োগ পাওয়ার ঘোষণা
চলমান সংকটের মধ্যেই ইভ্যালিতে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ যমুনা গ্রুপের ১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা এসেছে। প্রাথমিকভাবে ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে যমুনা। এরপর বিভিন্ন পর্যায়ে বিনিয়োগ করা হবে ১ হাজার কোটি টাকা।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইভ্যালির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। যমুনা গ্রুপ থেকেও তথ্যটি নিশ্চিত করা হয়েছে।
তবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির মূল বাজারদর (ভ্যালুয়েশন) প্রকাশ করেনি কোনো পক্ষ।
এমন বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়ে ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘একটি দেশীয় উদ্যোগ হিসেবে আমাদের পাশে আরেকটি দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে পেয়ে আমরা সত্যিই আনন্দিত।’
তিনি বলেন, ‘যমুনার এই বিনিয়োগ ধারাবাহিক বিনিয়োগের অংশ। পরবর্তী ধাপেও তাদের বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এই বিনিয়োগ ইভ্যালির ভবিষ্যৎ উন্নয়ন এবং ব্যবসা পরিধি বৃদ্ধিতে ব্যয় করা হবে।’
গ্রাহকদের পুরোনো অর্ডার ডেলিভারি নিয়ে মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘পুরোনো অর্ডার যেগুলো পেন্ডিং, সেগুলোর ডেলিভারির ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দিচ্ছি। প্রয়োজনে আমরা আরও বিনিয়োগের ব্যবস্থা করব।’
ইভ্যালিতে বিনিয়োগ বিষয়ে যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উন্নয়নে আমরা দেখছি, স্থানীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে অ্যামাজন, চীনের ক্ষেত্রে আলিবাবা। তেমনি বাংলাদেশে ইতোমধ্যে নিজের একটি অবস্থান তৈরি করেছে দেশীয় ই-কমার্স ইভ্যালি। শুধু দেশের সাধারণ মানুষের স্বপ্নপূরণে কাজ করে যাচ্ছে তারা।’
যমুনা গ্রুপ দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে দেশ ও দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করছে উল্লেখ করে শামীম ইসলাম আরও বলেন, ‘এখন থেকে ইভ্যালি এবং যমুনা গ্রুপ সেই স্বপ্নপূরণে একে অপরের অংশীদার হলো।’
ইভ্যালি ও যমুনা গ্রুপের এই অংশীদারত্বকে স্বাগত জানিয়ে যমুনা গ্রুপের গ্রুপ পরিচালক মনিকা ইসলাম বলেন, ‘দেশের বাজারে মানসম্পন্ন পণ্য ও সেবা নিয়ে যমুনা গ্রুপ ব্যবসা করে আসছে। বাংলাদেশে সব থেকে বড় অফলাইন মার্কেটপ্লেস যমুনা ফিউচার পার্ক। আর এখন সবচেয়ে বড় অনলাইন মার্কেটপ্লেস গড়ে তোলার জন্য ইভ্যালির সঙ্গে থাকবে যমুনা।’
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং দেশের ই-কমার্স খাতকে একটা মজবুত অবস্থানে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে ইভ্যালির সৎ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যের প্রতি বিশ্বাস রেখে দেশের এই করোনাকালীন দুঃসময়ে দেশের অর্থনীতিকে চাঙা রাখতে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি।’
যমুনা গ্রুপের পরিচালক (অ্যাকাউন্টস) শেখ ওয়াদুদ বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারি করোনার সময়ে আমরা দেশীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে চাই। এই বিনিয়োগ নিয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য আমরা ধাপে ধাপে প্রকাশ করব।’
আরও পড়ুন:স্টারকম বাংলাদেশ “স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৪ আল্ট্রা – সামারাইজ, জাস্ট লাইক দ্যাট!” ক্যাম্পেইনের জন্য ডিজিটাল ক্যাটাগরিতে যুক্তরাজ্যের ক্রিয়েটিভপুল ২০২৫ পুরস্কার পেয়েছে।
স্টারকম বাংলাদেশ যা গ্লোবাল স্টারকম নেটওয়ার্ক এবং বিটপী গ্রুপের একটি অংশ, দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন এজেন্সি যা মিডিয়া প্ল্যানিং, বায়িং ও ৩৬০° মার্কেটিং সলিউশ্যনের জন্য সুপরিচিত।
এ বিষয়ে স্টারকম বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সারাহ আলী বলেন, "এই পুরস্কারটি বাংলাদেশের জন্য একটি গর্বের বিষয়। এটি শুধু আমাদের টিমের সৃজনশীলতাকে নয়, বরং শক্তিশালী গল্প বলার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার ক্ষমতাকে প্রমাণ করে। স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৪ আল্ট্রা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করেছি যে বাংলাদেশ বিশ্বমানের ডিজিটাল উদ্ভাবন করতে পারে যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়।"
বিজয়ী ক্যাম্পেইনটি স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৪ আল্ট্রা এর এআই ফিচার প্রদর্শনের জন্য ইন্টারঅ্যাকটিভ ব্যানার বিজ্ঞাপন ব্যবহার করা হয়, যেখানে ব্যবহারকারীরা সংবাদ প্রতিবেদনগুলোর ৬০ শব্দের রিয়েল-টাইম সারাংশ দেখানো হয়।
এই ক্যাম্পেইনটি একটি সহজ প্রশ্নকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হয়েছিল -“সংবাদের মূল বিষয়বস্তু কি পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে? বলেন স্টারকম বাংলাদেশের ডিজিটাল মিডিয়া ডিরেক্টর রবিউল হাসান সজিব। তিনি আরও জনান “এই পদ্ধতি ব্যাবহারের মাধ্যমে আমরা সৃজনশীল ভাবে ফোনটির বিশেষ ফিচারগুলো গ্রাহকের দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরেছি, এবং দেখিয়েছি ফোনটির উল্লেখযোগ্য এআই পাওয়ারড রিয়েল টাইম সামারাইজেশন এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যাবহার।“
স্টারকম বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আহমেদুন ফায়েজ, বলেন “আমরা কয়েক বছর ধরে স্থানীয় পর্যায়ে বেশ কিছু পুরষ্কার জিতেছি, এখন আমাদের লক্ষ্য হল আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের উপস্থিতি প্রতিষ্ঠা করা। এই পুরস্কারটি আমাদের প্রথম অর্জন এবং ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে এমন অনেক পুরস্কার আমরা অর্জন করতে চাই।“
ক্রিয়েটিভপুল একটি আন্তর্জাতিক ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রি নেটওয়ার্ক যারা সারা বিশ্বের এজেন্সি, ব্র্যান্ড এবং দক্ষ পেশাদারদের একত্রিত করে তাদের এই প্লাটফর্মের মাধ্যমে। প্রতি বছর এই ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রি বিজ্ঞাপন, ডিজাইন, ব্র্যান্ডিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, টেকসই উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পুরস্কার প্রদান করে থাকে। কাজের স্বীকৃতির পাশাপাশি ক্রিয়েটিভপুলের এই আয়োজন উদ্ভাবন, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং বিশ্বব্যাপী পরিচিতি বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এখানে বিজয়ীদের নির্বাচিত করা হয় বিশেষজ্ঞ বিচারকমণ্ডলী এবং সাধারণ মানুষের ভোটের মাধ্যমে।
ডিজিটাল ক্যাটাগরিতে এই বিজয়ী ক্যাম্পেইন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন ঃ https://creativepool.com/annual/2025/winners/
দেশে ক্যাশলেস লেনদেনের সম্প্রসারণ ও গ্রাহক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হলো ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ উদ্যোগ’ কর্মসূচি। লিড ব্যাংক হিসেবে এই কর্মসূচির আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রাজশাহী কারা ট্রেইনিং একাডেমি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন ব্যবসায়ী, গ্রাহক, ব্যাংক কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সাধারণ মানুষ। দুদিনব্যাপী চলা এই কর্মসূচিতে সেমিনার, আলোচনা, প্রদর্শনী ও প্রচারণার মাধ্যমে বিশেষ করে বাংলা কিউআর-এর ব্যবহার ও অন্যান্য ডিজিটাল লেনদেনের সুবিধা তুলে ধরা হয়, যা ক্যাশ-টু-ডিজিটাল ইকোসিস্টেম গঠনের মাধ্যমে ক্যাশলেস বাংলাদেশ কার্যক্রম সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক মো. আরিফ হোসেন খান, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক মো. শরাফত উল্লাহ খান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান। আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক রাফেজা আক্তার কান্তা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ অপারেটিং অফিসার সাব্বির হোসেন।
দুদিনব্যাপী এই কর্মসূচিতে ডিজিটাল লেনদেনের নানান দিক নিয়ে সেশন পরিচালনার পাশাপাশি গ্রাহক সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচার-প্রচারণা, ক্যাম্পেইন ও রোড-শো অনুষ্ঠিত হবে। গ্রাহকদের জন্য দ্রুত ও সুবিধাজনক ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিকাশে ক্যাশলেস লেনদেনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন উদ্যোগের প্রশংসা জানিয়ে ভবিষ্যতেও এ ধরনের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এই উদ্যোগে লিড ব্যাংক হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংকের অংশগ্রহণ দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিকাশে ব্যাংকটির প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ১৯১টি শাখা, ১০০টি উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
আলিবাবা.কম বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বি-টু-বি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম সফলভাবে অংশগ্রহণ করেছে ২৪তম টেক্সটেক বাংলাদেশ ২০২৫ আন্তর্জাতিক এক্সপোতে । সিইএমএস-গ্লোবাল ইউএসএ আয়োজিত এই মেলায় আলিবাবা.কম- এর বুথে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি রপ্তানিকারকদের যারা ডিজিটাল ট্রেডের মাধ্যমে ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ খুঁজছে।
আলিবাবা.কম-এর গ্লোবাল পটেনশিয়াল মার্কেটস বিভাগের প্রধান ফনসেল ল্যান বলেন, “টেক্সটেক বাংলাদেশ ২০২৫ আন্তর্জাতিক এক্সপোতে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের সক্রিয় উপস্থিতি প্রমাণ করে যে তারা ডিজিটাল বাণিজ্যের প্রতি অত্যন্ত আগ্রহী ও প্রতিশ্রুতিশীল।” আমাদের লক্ষ্য হলো এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন টুলস, নির্দেশনা এবং বিশ্বব্যাপী এক্সপোজার দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্ত করে তাদের ব্যবসাকে আরও বড় ও সফল করার সুযোগ করে দেয়া।“
এক্সপো চলাকালীন সময়ে দর্শনার্থীরা মূলত মেম্বারশিপ প্যাকেজ, খরচ, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ভেরিফিকেশন সময়সূচি এবং কার্যকরীভাবে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে কীভাবে পণ্য উপস্থাপন করতে হয় সে বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়েছেন। অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বিশ্বস্ত ক্রেতা খুঁজে পাওয়া, সক্রিয় বাজারে লক্ষ্য নির্ধারণ এবং নিরাপদ পেমেন্ট ব্যবস্থা ও লজিস্টিকস সলিউশনের মত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য।
এই বিষয়ে পাই সোর্সিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, "আমরা আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে পৌঁছাতে এবং ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধি করতে আলিবাবা.কম এর সফল ও স্বতন্ত্র সহায়তা পেয়েছি। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমরা মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহের পাশাপাশি দৃঢ় বৈশ্বিক ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পেরেছি।" ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত, পাই সোর্সিং লিমিটেড একটি বাংলাদেশ-ভিত্তিক অন্যতম পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক কোম্পানি।
২৪তম টেক্সটেক বাংলাদেশ ২০২৫ আন্তর্জাতিক এক্সপো আবারও প্রমাণ করেছে যে এটি বাংলাদেশের টেক্সটাইল এবং অ্যাপারেল সেক্টরের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। এক্সপোতে ৩৫টিরও বেশি দেশ থেকে ২৫ হাজারের অধিক শিল্প পেশাজীবীরা অংশগ্রহণ করেছেন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অ্যাপারেল রপ্তানিকারক হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান এই এক্সপোতে আরো শক্তিশালী হয়েছে। আলিবাবা. কম –এর এই সফল অংশগ্রহণ বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ডিজিটাল প্রবৃদ্ধি এবং বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার জন্য নতুন পথ তৈরি করেছে।
এওয়ার্ড উইনিং পোভা সিরিজ বাংলাদেশে নিয়ে আসছে নতুন ৫জি স্মার্টফোন অভিজ্ঞতা
বিশ্বের অন্যতম প্রযুক্তি ব্র্যান্ড টেকনো, সর্বদা তাদের ডিভাইসে নতুনত্ব নিয়ে আসার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে। যা ব্যবহারকারীদের প্রয়োজন বুঝে তাদের জীবনকে সহজ করে। এখন ব্র্যান্ডটির বহুল প্রতীক্ষিত পোভা সিরিজ বাংলাদেশে আসছে, যেটি ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। এই সিরিজটি দেশের প্রযুক্তিপ্রেমীদের জন্য উন্নতমানের পারফরম্যান্স, অত্যাধুনিক ফিচার এবং গেম-চেঞ্জিং প্রযুক্তি নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
পোভা সিরিজ সম্প্রতি তাদের ডিজাইনের জন্য নিউ ইয়র্ক প্রোডাক্ট ডিজাইন অ্যাওয়ার্ডসে গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড এবং লন্ডন ডিজাইন অ্যাওয়ার্ডসে প্ল্যাটিনাম অ্যাওয়ার্ড জিতেছে। এই সিরিজের একটি মডেলকে বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা ফোন হিসেবেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
নতুন পোভা সিরিজটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেন এটি ব্যবহারকারীদের জন্য দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি লাইফ, অত্যাধুনিক ডিজাইন এবং হাই পারফরম্যান্স সরবরাহ করতে পারে।
রবি আজিয়াটা এবং গ্রামীণফোনের বাণিজ্যিকভাবে ৫জি সেবা চালুর মাধ্যমে এ বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ৫জি যুগে প্রবেশ করেছে। এই যাত্রাকে সম্পূর্ণ করতে টেকনো তাদের এই সিরিজ নিয়ে প্রস্তুত, যা একটি সম্পূর্ণ ৫জি লাইনআপ এবং পরবর্তী প্রজন্মের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য তৈরি।
যদিও টেকনো আনুষ্ঠানিকভাবে লঞ্চিং ডেট নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি, তবে ধারনা করা হচ্ছে শীগ্রই সম্পূর্ণ লাইনআপের বিস্তারিত ঘোষণা আসবে। আরও আপডেটের জন্য সামাজিক মাধ্যমে টেকনো বাংলাদেশ ফলো করুন এবং ভিজিট করুন ঃ www.tecno-mobile.com/bd
বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের আয়োজনে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী “বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ এক্সিবিশন ২০২৫” ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি), ঢাকায় শেষ হয়েছে। এ প্রদর্শনীতে প্রিমিয়ার ব্যাংক একটি প্যাভিলিয়ন স্থাপন করে (হল-২, স্টল ৭৫ ও ৭৬)। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এস কে বশির উদ্দিন এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাবুর হোসেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)-এর অতিরিক্ত সচিব ও উইং প্রধান মিরানা মাহরুখ।
উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এস কে বশির উদ্দিন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন প্রিমিয়ার ব্যাংকের প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন। এ সময় তাঁদের স্বাগত জানান প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ড. আরিফুর রহমান; স্বতন্ত্র পরিচালক ও রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মো. সাজ্জাদ হোসেন; ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আবু জাফর; প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহেদ সিকান্দার; অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও গুলশান শাখার প্রধান নাসিম সিকান্দার; ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার সৈয়দ আবুল হাশেম, FCA, FCMA; ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও বনানী শাখার প্রধান অমলেন্দু রায়সহ ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম ৬) পদ্ধতি অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সর্বশেষ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের হাই-টেক পণ্য উৎপাদন খাতে অনন্য এক মাইলফলক অর্জিত হলো। দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্যের ব্র্যান্ড ওয়ালটন প্রথমবারের মতো আমেরিকাতে রপ্তানি শুরু করলো মাদারবোর্ড (পিসিবি ও পিসিবিএ)। ওয়ালটনের তৈরি বিশ্বমানের এই মাদারবোর্ড ব্যবহৃত হবে আমেরিকায় তৈরি অত্যাধুনিক সক্রিয় গানশট শনাক্তকরণ এবং জরুরি উদ্ধারকাজ পরিচালনা সিস্টেমের সিকিউরিটি ডিভাইসে। মানুষের জীবন রক্ষাকারী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা সরঞ্জামে ওয়ালটন হার্ডওয়্যার ব্যবহৃত হওয়া বাংলাদেশের হাই-টেক পণ্য উৎপাদন খাতের জন্য অত্যন্ত গর্ব ও সম্মানের। আমেরিকাতে মাদারবোর্ড রপ্তানির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে বিশ্বমানের বাংলাদেশি প্রযুক্তিপণ্যের বিপুল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করলো ওয়ালটন।
এই উপলক্ষ্যে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) রাজধানীতে ওয়ালটন করপোরেট অফিসে এক জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে জানানো হয়, বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ইলেকট্রনিক্স পণ্য রপ্তানি করা ওয়ালটন প্রাথমিকভাবে আমেরিকার উইসকনসিন প্রদেশে অবস্থিত তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠান সেফপ্রো টেকনোলজিস ইনকরপোরেশন (ঝঅঋঊচজঙ ঞবপযহড়ষড়মরবং ওহপ.) এর অনুকূলে প্রায় ২,৫০০ পিসেরও বেশি মাদারবোর্ড রপ্তানি করছে, যা প্রায় ২.৫ মিলিয়ন বাংলাদেশি টাকার সমপরিমাণ। জরুরি অবস্থায় আমেরিকার স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ সব ধরনের মানুষের জীবন রক্ষায় কার্যকর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরবরাহে সেফপ্রো টেকনোলজিস ইনকরপোরেশনের ব্যাপক সুনাম ও অবদান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ডিভাইসে এবার যুক্ত হলো বাংলাদেশের ওয়ালটনের হার্ডওয়্যার।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের একমাত্র পিসিবি (প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড) উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। মাদারবোর্ড হিসেবে পরিচিত প্রযুক্তিপণ্যের অন্যতম প্রধান যন্ত্রাংশ ওয়ালটনের পিসিবিএ দিয়ে তৈরি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ নিরাপত্তা ডিভাইস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হবে। এই ডিভাইস তাৎক্ষণিক অবৈধ শুটিং সনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, সতর্কীকরণ ও দ্রুত উদ্ধারকাজ পরিচালনা করায় সহযোগিতা করবে। এটি অডিও এবং ভিজ্যুয়াল সংকেতের মাধ্যমে সতর্ক করে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে, আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিপদ থেকে দ্রুততার সাথে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে এবং হুমকির প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সক্রিয়ভাবে সাহায্য করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে আরো ছিলেন ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম রেজাউল আলম, ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস এম মঞ্জুরুল আলম অভি, ওয়ালটন মাইক্রো-টেক করপোরেশনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) নিশাত তাসনিম শুচি এবং রবি আজিয়াটার সহযোগী প্রতিষ্ঠান এক্সেনটেকের এমডি ও সিইও আদিল হোসেন নোবেল। এছাড়াও অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান সেফপ্রো টেকনোলজিস ইনকরপোরেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট পল এল একারট (চধঁষ খ. ঊপশবৎঃ)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, যে দেশে সিলিকন ভ্যালী আছে, সেই দেশে আমরা মাদারবোর্ড রপ্তানি করছি। নিঃসন্দেহে এটি ওয়ালটন এবং বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক মাইলফলক।
তিনি জানান, পিসিবি এবং পিসিবিএ গ্লোবাল মার্কেট প্রায় ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আগামী ৫-৬ বছরে গ্লোবাল মার্কেট আরো ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পাবে। আমেরিকায় পিসিবিএ রপ্তানির মধ্য দিয়ে এই বিশাল গ্লোবাল মার্কেটে যাত্রা শুরু করেছে ওয়ালটন। প্রযুক্তি পণ্যের বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগি সক্ষমতায় এগিয়ে যেতে ওয়ালটনকে হার্ডওয়্যার ডিভাইসের পাশাপাশি এআই প্রযুক্তি ভিত্তিক সফটওয়্যার পণ্য, নেটওয়ার্কিং ও সাইবার সিকিউরিটি ডিভাইস তৈরির মাধ্যমে এক শক্তিশালী ইকো-সিস্টেম গড়ে তোলার পরামর্শ দেন তিনি।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ও উন্নত দেশ আমেরিকা বাংলাদেশ থেকে মাদারবোর্ডের মতো উন্নত প্রযুক্তি পণ্য আমদানি করছে। এটা শুধু ওয়ালটনের জন্যই নয়; বাংলাদেশের জন্যও অত্যন্ত গর্বের এবং ঐতিহাসিক সাফল্য।
আমেরিকার সেফপ্রো টেকনোলজিস ইনকরপোরেশন এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট পল এল একারট বলেন, ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন খাতে ওয়ালটন ইনোভেশন, কোয়ালিটি ও আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে। ওয়ালটন প্রতিটি পণ্যের ডিজাইন, নতুন উদ্ভাবন এবং উৎপাদনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এটি ওয়ালটনকে অন্যদের চেয়ে স্বতন্ত্র অবস্থান গড়ে দিয়েছে। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে ওয়ালটন বিশ্ববাজারে সম্মানজনক স্থান করে নিয়েছে। ওয়ালটনের কাছ থেকে বিশ্বমানের মাদারবোর্ড নিতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত। ওয়ালটনের মাদারবোর্ড নিঃসন্দেহে আমাদের সিকিউরিটি ডিভাইসের মান আরো অনেক বৃদ্ধি করবে।
বাংলাদেশকে প্রযুক্তিপণ্যের হাব হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত করায় তিনি ওয়ালটনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সিকিউরিটি ডিভাইসসহ টেকসই প্রযুক্তির অন্যান্য ক্ষেত্রেও ওয়ালটন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলে আমেরিকার এই উদ্যোক্তা উল্লেখ করেন ।
এস এম রেজাউল আলম বলেন, আমরা নিজস্ব প্রোডাকশন প্ল্যান্টে বিশ্বমানের পিসিবি ও পিসিবিএ তৈরি করছি যা ওয়ালটনের পণ্যসমূহে ব্যবহার করা হচ্ছে। নিজস্ব চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের বাজারেও দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি উদোক্তাদের জন্য পিসিবি ও পিসিবিএ সরবরাহ করে আসছে ওয়ালটন। সম্প্রতি ইউরোপিয়ান দেশ গ্রিসেও সাফল্যের সাথে ১০ হাজার পিসেরও বেশি পিসিবি ও পিসিবিএ রপ্তানি সম্পন্ন করেছে ওয়ালটন। বাংলাদেশেই উন্নতমানের পিসিবি ও পিসিবিএ উৎপাদনের ফলে একদিকে যেমন সাশ্রয় হচ্ছে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা, সেইসঙ্গে দ্রুততম সময়ে দেশীয় উদ্যোক্তাগণ পাচ্ছেন তাদের চাহিদামত পণ্য। পাশাপাশি অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্যের মতো পিসিবি ও পিসিবিএ রপ্তানি করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার যোগানে উল্লেখ্যযোগ্য অবদান রাখতে সক্ষম হচ্ছে ওয়ালটন।
তিনি জানান, সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে একীভূত হচ্ছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি এবং ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ইলেকট্রনিক্স এবং প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন খাতের শীর্ষ এই দুই প্রতিষ্ঠানের একীভূতকরণে দেশে ব্যাপক আকারে ইলেকট্রিক বাইক এবং লিথিয়াম ব্যাটারি উৎপাদনে যাওয়া সহজ হবে।
অনুষ্ঠানে নতুন বাজারে আসা ওয়ালটনের দুই মডেলের পরিবেশবান্ধব তাকিওন ইলেকট্রিক বাইক বা ই-বাইকও উন্মোচন করেন অতিথিরা। আধুনিক ডিজাইন, শক্তিশালী মোটর, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যাকআপ এবং মাত্র ১০-১৫ পয়সা খরচে প্রতি কিলোমিটারে চলার সুবিধাযুক্ত ওয়ালটনের নতুন এই ই-বাইকগুলো নগর ও গ্রামীণ জীবনের স্মার্ট ও পরিবেশবান্ধব যাতায়াত সঙ্গী হয়ে উঠবে।
মন্তব্য