× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বিশেষ
The Tale of the Taliban
google_news print-icon

আফগানিস্তানে আবার যেভাবে তালেবান

আফগানিস্তানে-আবার-যেভাবে-তালেবান
আফগানিস্তানজুড়ে তালেবানের পূর্ণকালীন যোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ৮৫ হাজার। ছবি: এএফপি
ইসলামিক আমিরাত অফ আফগানিস্তান নামে একটি স্বঘোষিত সমান্তরাল রাষ্ট্র কায়েম করেছে তালেবান। নিজস্ব একটি সাদা পতাকাও আছে তাদের। আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশে নিজেদের ছায়া সরকারের প্রশাসনকে নেতৃত্ব দিতে ছায়া গভর্নরও নিয়োগ দিয়েছে গোষ্ঠীটি।

দীর্ঘ ২০ বছর পর আফগানিস্তান থেকে বিদায় নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। ঠিক এ সময় সংঘাতপ্রবণ দেশটিতে নতুন করে বিপুল শক্তি নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে সশস্ত্র সংগঠন তালেবান।

যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোটের সেনারা আফগানিস্তান ছাড়তে থাকার মধ্যে গত কয়েক সপ্তাহে দেশটির বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। সেখান থেকে পিছু হটেছে আফগান সেনা।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারসহ যুক্তরাষ্ট্রে একযোগে কয়েকটি ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয়, যাতে প্রাণ যায় প্রাণ তিন হাজার মানুষের। সে সময় আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ছিল তালেবান। নাইন-ইলেভেন নামে পরিচিত ওই হামলায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে সে সময় আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র, ক্ষমতাচ্যুত করে তালেবানদের।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন দেখা যাচ্ছে, আসলে গত দুই দশকে ধীরে ধীরে নতুন করে শক্তি অর্জন করেছে তালেবান। চালিয়েছে একের পর এক হামলা। বেসামরিক মানুষের পাশাপাশি আফগান, এমনকি বিদেশি সেনাদের ওপরেও হামলা চালিয়েছে গোষ্ঠীটি।

গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি তালেবানের সঙ্গে একটি শান্তিচুক্তিতে সই করেন যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ওই চুক্তিতে আফগানিস্তানে নিরাপত্তা নিশ্চিতের শর্তে তালেবানবিরোধী সেনা অভিযান বন্ধ ও সেনা প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা দেয় আন্তর্জাতিক জোট। চুক্তিটির মাধ্যমে সে সময় আন্তর্জাতিকভাবে কিছুটা বৈধতা অর্জন করতে সক্ষম হয় তালেবান।

ট্রাম্পের উত্তরসূরী জো বাইডেনও ক্ষমতায় এসে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত বদলাননি। তবে চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছরের ১ মে’র মধ্যে বিদেশি সেনা পূর্ণাঙ্গ প্রত্যাহারের কথা থাকলেও তারিখ কিছুটা পিছিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর নেয় বাইডেন প্রশাসন। নাইন-ইলেভেন হামলার ২০তম বার্ষিকীর সঙ্গে মিলিয়ে তারিখটি নির্ধারণ করা হয়েছিল।

তবে গত মাসে আবারও তারিখ পাল্টান বাইডেন। সময় কিছুটা এগিয়ে চূড়ান্ত সেনা প্রত্যাহারের নতুন তারিখ হিসেবে ৩১ আগস্ট নির্ধারণ করেন তিনি।

এর মধ্যে সেনা প্রত্যাহারের তারিখ পেছানো নিয়ে ক্ষুব্ধ তালেবান মে মাসেই আগ্রাসন শুরু করে। চুক্তি অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা অবকাঠামো লক্ষ্য করে কোনো ধরনের হামলা না চালালেও আফগান সেনাবাহিনী ও জনসাধারণের ওপর একের পর এক প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে গোষ্ঠীটি।

ব্যাখ্যা হিসেবে তালেবান জানিয়েছে, কাতারের রাজধানী দোহায় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে কোনো অবদান ছিল না পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থিত আফগান সরকারের।

অথচ যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান চুক্তির মাধ্যমে আফগান সরকারের সঙ্গে তালেবানের শান্তি আলোচনার পথ খুলে যাবে বলে মনে করা হচ্ছিল। মূলত আফগান ভূখণ্ডে দেশটির সেনাবাহিনী ও তালেবান যোদ্ধাদের মধ্যে তীব্র সহিংসতা চলতে থাকার কারণেই দোহায় আলোচনা ভেস্তে যায়।

এরপরই মে মাসে আফগান সরকারের বিরুদ্ধে সহিংস অভিযান শুরু করে তালেবান। দখলে নেয় প্রতিবেশী দেশ ইরান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো।

আফগানিস্তানজুড়ে তালেবানের পূর্ণকালীন যোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ৮৫ হাজার। আরও রয়েছে অগুণতি সমর্থক ও সহযোগী।

আফগানিস্তানের ৪১৯টি জেলার অর্ধেকের বেশি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার দাবি করেছে ধর্মভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। তালেবানের এ দাবির সত্যতার বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি গোয়েন্দারা।

জোরালো হচ্ছে গৃহযুদ্ধের শঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা, জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মাইলি গত বুধবার সতর্ক করে বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে ‘কৌশলগত বিজয়’ অর্জনের পথে আছে তালেবান।

প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘অচিরেই আফগান জনতা, সেনাবাহিনী ও সরকারকে সদিচ্ছা আর নেতৃত্বের প্রমাণ দিতে হবে।’

সহিংসতায় কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছে। গৃহহীনের সংখ্যা লাখের ঘরে। এমন পরিস্থিতিতে শান্তি আলোচনায় অচলাবস্থা আফগানিস্তানকে গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে শংকা জোরালো হচ্ছে।

এরই মধ্যে বিভিন্ন অঞ্চলে কট্টরপন্থি তালেবানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়েছে স্থানীয় বেসামরিক আফগানরা। তাদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণে সহযোগিতা করছে আফগান সরকার।

তালেবানের মুখপাত্র সোহেল শাহীন শুক্রবার জানান, গৃহযুদ্ধ চায় না তার দল। দোহায় শান্তি আলোচনা ফের শুরু করতে হলে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিকে পদত্যাগ করতে হবে বলে শর্ত বেঁধে দেন তিনি।

বার্তা সংস্থা এপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে শাহীন বলেন, ‘একচেটিয়া ক্ষমতায় তালেবান বিশ্বাসী নয় বলে আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই। তালেবান যোদ্ধারা অস্ত্র নামিয়ে রাখবে।

‘কিন্তু এটা তখনই সম্ভব, যখন আলোচনার ভিত্তিতে সর্বসম্মত কোনো সরকার আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসবে।’

তালেবানের প্রধান হাইবাতুল্লাহ আখুনজাদা গত সপ্তাহে ‘রাজনৈতিক সমঝোতা’র আহ্বান জানান। কিন্তু সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র অভিযান অব্যাহত রাখতে নিজ দলের যোদ্ধাদের মধ্যেই চাপের মুখে তিনি।

তালেবানের জন্ম

আরবি ভাষায় তালেবান শব্দটির অর্থ হলো জ্ঞান অর্জনকারী বা শিক্ষার্থী।

সাবেক সোভিয়েত আমলে ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় বছরের লড়াই করে আফগান স্বাধীনতাকামীরা। ‘মুজাহিদিন’ হিসেবে পরিচিত স্বাধীনতাকামীদের একটি অংশ ছিল তালেবানও।

মূলত ১৯৭৮ সালে এক রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে আফগানিস্তানের প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ দাউদ খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়া থেকে এ লড়াইয়ের শুরু। ওই অভ্যুত্থান ঘটাতে সমাজতান্ত্রিক নেতাদের মদদ দিয়েছিল তখনকার সোভিয়েত সরকার।

এরপরই, ১৯৭৯ সাল থেকে সোভিয়েত উপনিবেশের বিরুদ্ধ সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে মুজাহিদিনরা। আশির দশকজুড়ে এ বিপ্লবে মুজাহিদিনদের অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

সোভিয়েতবিরোধী নীতির আওতায় ঔপনিবেশিক শাসনবিরোধী মুজাহিদিনদের সহযোগিতার দায়িত্ব নিয়েছিল ওয়াশিংটন। কারণ সে সময় স্নায়ুযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ ছিল তখনকার সোভিয়েত সরকার বা ‘ইউনিয়ন অফ সোভিয়েত সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকস’, সংক্ষেপে ইউএসএসআর, অর্থাৎ বর্তমান রাশিয়া।

তুমুল গোলমেলে পরিস্থিতির মধ্যে ১৯৮৯ সালে আফগান ভূখণ্ড ছাড়ে সোভিয়েত সেনারা। নেতৃত্ব সংকটে সে সময় চরম অস্থিতিশীলতার মুখে পড়ে আফগানিস্তান। ১৯৯২ সালে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। ক্ষমতার দ্বন্দ্বে লড়াইয়ে জড়ায় খোদ মুজাহিদিন কমান্ডাররাই।

বিভক্ত হয় কাবুল। প্রতিদিন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কয়েক শ রকেট এসে পড়ত রাজধানী নগরীটিতে।

তবে গৃহযুদ্ধে শক্তিশালী ভূমিকায় তালেবান অবতীর্ণ হয় মূলত ১৯৯৪ সালে। তৎকালীন তালেবান যোদ্ধাদের বেশিরভাগই শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন আফগানিস্তান আর পাকিস্তানের আফগান সীমান্ত এলাকার রক্ষণশীল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে।

কাবুলের পর আফগানিস্তানের দ্বিতীয় বড় শহর কান্দাহার দখল থেকে নব্বইয়ের দশকে উত্থান শুরু তালেবানের।

পশতুন অধ্যুষিত কান্দাহারের পর একে একে দেশের অন্যান্য শহরেও আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে গোষ্ঠীটি। জনসাধারণকে আশ্বাস দেয় নিরাপদ নাগরিক জীবনের।

বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধে অতীষ্ঠ আফগান জনতাও স্বাভাবিকভাবেই নতুন জীবনের আশায় স্বাগত জানায় তালেবান যোদ্ধাদের।

সে সময় ক্ষমতার প্রতিযোগিতায় তালেবানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মুজাহিদিন কমান্ডার ও তাদের সমর্থকদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়।

১৯৯৬ সালে রাজধানী কাবুল দখল করে তালেবান। কাবুল স্কয়ারে প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝোলায় আফগানিস্তানের শেষ বামপন্থি প্রেসিডেন্ট নাজিবুল্লাহ আহমাদজাইকে।

এরপরই আফগানিস্তানকে ইসলামিক আমিরাত ঘোষণা করে তালেবান। শুরু হয় তালেবানের নিজস্ব ব্যাখ্যায় দাঁড় করানো কট্টর শরিয়াহ আইনের বাস্তবায়ন।

সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তানসহ মোট তিনটি দেশ আফগানিস্তানের শাসক দল হিসেবে সে সময় তালেবানকে স্বীকৃতি দেয়।

আপাতদৃষ্টিতে স্থিতিশীল আফগানিস্তান প্রতিষ্ঠায় তা সক্ষমও হয়েছিল। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে শুরুর দিকে ব্যাপক জনপ্রিয়তাও পেয়েছে গোষ্ঠীটি।

ছয় বছরের শাসন

শুরুর দিকে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের যুক্তি হিসেবে গৃহযুদ্ধকালীন অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঠেকানোর কথা বলেছিল তালেবান। কিন্তু পরে সেসব বিধিনিষেধ আর প্রত্যাহার করেনি।

এসব বিধিনিষেধের মধ্যে ছিল নারীদের শিক্ষাগ্রহণ ও চিকিৎসা বাদে অন্য সব ধরনের পেশায় তাদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা ইত্যাদি।

ধর্মীয় রীতির নামে নিষিদ্ধ ছিল গান শোনা, টেলিভিশন দেখাসহ বিনোদন ও অবসর সময় কাটানোর নির্দোষ নানা মাধ্যমের ব্যবহার। খেলাধুলাও নিয়ন্ত্রণ করা হতো কঠোরভাবে। শুধু পুরুষরাই খেলাধুলায় অংশ নিতে পারতো, কিন্তু তাদের রক্ষণশীল পোশাক পরে খেলতো হতো এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় বিরতি বাধ্যতামূলক ছিল।

তালেবানের শাসনামলে এসব কঠোর বিধিনিষেধ কেউ না মানলে তাকে প্রকাশ্যে পেটানো হতো বা কারাদণ্ড দেয়া হতো।

ছয় বছরের শাসনজুড়ে আদিবাসী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপরেও চরম নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে।

২০০১ সালে বামিয়ান প্রদেশে গৌতম বুদ্ধের ঐতিহাসিক ভাস্কর্য ধ্বংসে তালেবানের সিদ্ধান্ত সমালোচিত হয়েছিল বিশ্বজুড়ে।

যেভাবে তালেবানের বিরুদ্ধে তৎপর বিশ্ব সম্প্রদায়

সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে কালোতালিকাভুক্ত আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ১৯৯৯ সালে তালেবানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় জাতিসংঘ।

নাইন-ইলেভেন হামলার পর আফগানিস্তানে লুকিয়ে থাকা হস্তান্তরে তালেবানকে অনুরোধ করে যুক্তরাষ্ট্র।

সাবেক মুজাহিদিন কমান্ডার আব্দুল রব রসুল সায়াফের আমন্ত্রণে আফগানিস্তানে গিয়েছিলেন আল-কায়েদা নেতা সৌদি নাগরিক ওসামা বিন লাদেন। তখন থেকে সেখানেই আত্মগোপনে ছিলেন লাদেন।

লাদেনকে হস্তান্তরের অনুরোধটি প্রত্যাখ্যান করে তালেবান। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসনের কাছে নাইন-ইলেভেন সন্ত্রাসী হামলায় লাদেনের ভূমিকার প্রমাণ চায় গোষ্ঠীটি। পাশাপাশি, ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনারও প্রস্তাব দেয়।

দুটি প্রস্তাবই প্রত্যাখ্যান করে বুশ প্রশাসন। লাদেনকে হস্তান্তর না করায় ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানে সেনা অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।

এর ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদের জোটবদ্ধ বিমান হামলার মুখে কয়েক মাসের মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত হয় তালেবান।

তালেবানপরবর্তী আফগানিস্তান ও তালেবানের পুনরুত্থান

২০০১ সালের ডিসেম্বরে হামিদ কারজাইয়ের নেতৃত্বে আফগানিস্তানে গঠিত হয় একটি নতুন অন্তর্বর্তী সরকার।

এর তিন বছর পর প্রণীত হয় নতুন সংবিধান। ষাটের দশকের সংশোধিত সংবিধানের আলোকে তৈরি নতুন সংবিধানে নারী ও আদিবাসী সংখ্যালঘুদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়া হয়।

১৯৩৩ সাল থেকে ১৯৭৩ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় ৪৩ বছর আফগানিস্তান শাসন করেছিলেন বাদশাহ মোহাম্মদ জহির শাহ। দুররানি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠার সময় থেকে দেশ শাসন করা জহির শাহ সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে প্রথমবার আফগান নারী ও আদিবাসী সংখ্যালঘুদের নাগরিক অধিকারে অনুমোদন দিয়েছিলেন।

এদিকে প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের শাসনামলেই ২০০৬ সাল নাগাদ আবারও সংঘবদ্ধ হতে শুরু করে তালেবান। বিদেশি সেনা ও তাদের আফগান সহযোগীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শুরু হয় যোদ্ধাদের এক ছাদের নিচে আনা।

আফগান সরকার ও তালেবানের মুখোমুখি শান্তি আলোচনার উদ্যোগ

গত ২০ বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোটের হামলায় প্রাণ গেছে ৪০ হাজারের বেশি বেসামরিক মানুষের। নিহত হয়েছে আফগান সেনা ও পুলিশের কমপক্ষে ৬৪ হাজার সদস্য আর আন্তর্জাতিক জোটের সাড়ে তিন হাজারের বেশি সেনা।

বিদেশি ভূখণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘতম এই যুদ্ধ আর অবকাঠামো পুনঃনির্মাণে আমেরিকান সরকারের খরচ হয়েছে প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার। কিন্তু এখনও আফগানিস্তানে দারিদ্র প্রকট, ভঙ্গুর অবকাঠামো শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ প্রায় সব খাতে।

যুদ্ধের খরচ বেড়ে চলায় আর রাজনৈতিক সমাধান না আসায় ২০১১ সালে কাতারের দোহায় তালেবানের একাংশের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট কারজাইয়ের সরকারের সঙ্গে তালেবানকে মুখোমুখি আলোচনায় বসানোর লক্ষ্যে হয় ওই আলোচনা।

এর ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে দোহায় তালেবানের একটি কার্যালয় স্থাপন চালু হয়। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের নেতৃত্বে বর্তমান আফগান সরকারের সঙ্গে প্রথমবার আনুষ্ঠানিক ও সরাসরি আলোচনায় বসে তালেবান।

তালেবানের ‘সমান্তরাল সরকার’

ইসলামিক আমিরাত অফ আফগানিস্তান নামে একটি স্বঘোষিত সমান্তরাল রাষ্ট্র কায়েম করেছে তালেবান। নিজস্ব একটি সাদা পতাকাও আছে তাদের। আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশে নিজেদের ছায়া সরকারের প্রশাসনকে নেতৃত্ব দিতে ছায়া গভর্নরও নিয়োগ দিয়েছে গোষ্ঠীটি।

তালেবানপ্রধান একটি পরিষদে নেতৃত্ব দেন। পরিষদটি অর্থ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ ১২টির বেশি কমিশন দেখভালের দায়িত্ব পালন করে। তাদের নিজস্ব আদালত ব্যবস্থাও আছে।

তালেবান সদস্য ও জাতিসংঘের একটি কমিটির তথ্য অনুযায়ী, তালেবানের এই ছায়া সরকারের বার্ষিক আয় প্রায় দেড় শ কোটি ডলার।

আঞ্চলিক মাদক ব্যবসায় জড়িত স্থানীয় ও আঞ্চলিক বিভিন্ন অপরাধী চক্রের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতেও রাজস্ব পায় তালেবান। মেথামফেটামাইনধর্মী এক ধরনের মাদক উৎপাদনও করে গোষ্ঠীটি। গত বছর খনিজ সম্পদ উত্তোলন ও বিক্রি থেকেও শত-কোটি ডলার আয় করেছে তারা।

তালেবানের নিজস্ব কর সংগ্রহ ব্যবস্থা আছে। বিদেশ থেকেও বিপুল অঙ্কের অনুদান পায় তারা। ধারণা করা হয়, ইরান ও পাকিস্তানে তালেবানের অনেক আর্থিক পৃষ্ঠপোষক আছে। যদিও এ অভিযোগ অস্বীকার করে গোষ্ঠীটি।

জনজীবনে শান্তির সম্ভাবনা

বিদেশি সেনা প্রত্যাহার পুরোদমে শুরুর আগেই এবং শান্তি আলোচনা চলাকালীনই চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সহিংসতায় হতাহত হয়েছে এক হাজার ৮০০ বেসামরিক আফগান। গত বছরের তুলনায় এ সংখ্যা প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি।

গুপ্তহত্যার শিকার অনেক সংবাদকর্মী ও অধিকারকর্মীর মৃত্যুর জন্যও তালেবানের দিকে সন্দেহের তীর। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে গোষ্ঠীটি।

এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে- যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক জোটের সেনারা পূর্ণরূপে আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার পর কী ঘটবে? আফগানিস্তানের নির্বাচিত সরকার কি আদৌ টিকতে পারবে?

২০১৯ সালের উল্লেখযোগ্য একটি জনমত জরিপে উঠে এসেছে, বর্তমানে তালেবানের প্রতি কোনোরকম সহানুভূতি রাখেন না আফগানিস্তানের ৮৫ শতাংশ মানুষ।

আফগানিস্তানে আবারও তালেবান পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করলে দেশটিতে জনজীবনের কী হাল হবে, তা নিয়ে শঙ্কিত আফগানরা।

এমনকি সাধারণ নাগরিকদের মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করা সংবিধানটি তালেবান ছুড়ে ফেলে দেবে কি না, ঘনিয়ে উঠছে সে শঙ্কাও।

নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি উপসম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে মোটামুটি স্বচ্ছ ধারণা দিয়ে রেখেছে তালেবান। তারা জানিয়েছে যে ইসলামিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায় তারা। সে ব্যবস্থায় শিক্ষা থেকে শুরু করে পেশাগত বিষয় পর্যন্ত সবকিছুতে নারীরা কেবল ততটুকু অধিকারই পাবেন, যতটুকু ইসলাম ধর্মে তাদের দেয়া হয়েছে।

যদিও তালেবান মুখপাত্র শাহীন চলতি সপ্তাহের শুরুতে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘হিজাব বা মাথা ঢাকা পোশাক পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কর্মক্ষেত্রে যাওয়া, এমনকি রাজনীতিতেও অংশ নিতে পারবেন নারীরা।’

বিভিন্ন মুসলিম অধ্যুষিত দেশে আগে থেকেই এ চর্চা বিদ্যমান।

আরও পড়ুন:
আফগানিস্তানে ২ মাসে ২৪০০ জনের মৃত্যু: জাতিসংঘ
তালেবানের ভয়ে কান্দাহার ছেড়েছে দেড় লাখ মানুষ
ঈদের নামাজে হামলা: কমান্ডারসহ তালেবানের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার
আফগানিস্তানে তালেবানের ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা
আফগান দোভাষীর শিরশ্ছেদ করেছে তালেবান

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বিশেষ
The wealth of the richest candidate in Indias second phase election is Rs 622 crore

ভারতে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন: শীর্ষ ধনী প্রার্থীর ৬২২ কোটি রুপির সম্পদ

ভারতে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন: শীর্ষ ধনী প্রার্থীর ৬২২ কোটি রুপির সম্পদ ভেঙ্কটরমন গৌড়া। ছবি: এনডিটিভি
লোকসভা নির্বাচনে সবচেয়ে কম সম্পদ নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন নাগোরাও পাটিল। মহারাষ্ট্রের নান্দেদ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তার সম্পদ রয়েছে ৫০০ রুপি এবং কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নেই।

ভারতের ১৩ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৮৮টি আসনে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ।

স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

এর আগে ভারতের ২১ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২টি আসনে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোট শুরু হয় ১৯ এপ্রিল।

দ্বিতীয় দফার ভোটে সবচেয়ে বেশি ও সবচেয়ে কম সম্পদ নিয়ে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের তথ্য দিয়ে শুক্রবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে সবচেয়ে ধনী প্রার্থী হলেন কর্নাটকের কংগ্রেস প্রার্থী ভেঙ্কটরমন গৌড়া। জাতীয় নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামা অনুযায়ী, ৬২২ কোটি রুপি সমমূল্যের সম্পদ রয়েছে তার। তিনি এ নির্বাচনে এইচডি কুমারস্বামীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন।

দ্বিতীয় ধনী প্রার্থী হলেন কংগ্রেসের ডিকে সুরেশ। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৫৯৩ কোটি রুপি। ডিকে সুরেশ বেঙ্গালুরু গ্রামীণ আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো প্রার্থী হয়েছেন।

তৃতীয় ধনী প্রার্থী হলেন বিজেপি নেত্রী এবং অভিনেত্রী হেমা মালিনী। তিনি মথুরা লোকসভা আসন থেকে লড়ছেন। তার সম্পদের পরিমাণ ২৭৮ কোটি রুপি। মধ্য প্রদেশের কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় শর্মা চতুর্থ ধনী প্রার্থী, তার সম্পদের পরিমাণ ২৩২ কোটি রুপি।

সম্পদের পরিমাণ সবচেয়ে কম যাদের

লোকসভা নির্বাচনে সবচেয়ে কম সম্পদ নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন নাগোরাও পাটিল। মহারাষ্ট্রের নান্দেদ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তার সম্পদ রয়েছে ৫০০ রুপি এবং তার কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নেই।

এরপরেই আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজেশ্বরী কেআর। তিনি কেরালার কাসারাগড় আসন থেকে লড়ছেন। তার সম্পদের পরিমাণ ১০০০ রুপি।

২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লোকসভায় ৩৫৩টি আসন পায় এনডিএ, যেখানে বিজেপির একক আসনের সংখ্যা ৩০৩টি।

ভারতে এবার ১৮তম লোকসভা নির্বাচন হচ্ছে, যার ব্যাপ্তিকাল ৪৪ দিন। দেশটিতে মোট সাত দফায় এ ভোট হবে। লোকসভা নির্বাচনের শেষ ধাপের ভোট ১ জুন।

আরও পড়ুন:
ঝিনাইদহ-১ আসনে উপনির্বাচন ৫ জুন
উপজেলা নির্বাচন: চতুর্থ ধাপে ভোটগ্রহণ ৫ জুন
উপজেলা ভোটে প্রথম ধাপে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত
ইউপি চেয়ারম্যানরা পদে থেকেই উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন
ভোটের মাঠে উপজেলা প্রতি থাকছে ২-৪ প্লাটুন বিজিবি

মন্তব্য

বিশেষ
We are ashamed to see the progress of Bangladesh Pakistan PM

বাংলাদেশের উন্নতি দেখে আমাদের লজ্জা হয়: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের উন্নতি দেখে আমাদের লজ্জা হয়: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ছবি: সংগৃহীত
শাহবাজ শরিফ বলেন, “যে সময় বাংলাদেশ পাকিস্তানের অংশ ছিল তখন তাদের বলা হতো, এই অংশটি ‘পাকিস্তানের ওপর একটি বোঝা’। কিন্তু ওই ‘বোঝাই’ এখন অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ব্যাপক উন্নতি করেছে।”

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বাংলাদেশের উন্নতির ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নতি দেখে আমাদের লজ্জা হয়।

দেশটির ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বুধবার মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন বলে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।

তিনি বলেছেন, “যে সময় বাংলাদেশ পাকিস্তানের অংশ ছিল তখন তাদের বলা হতো, এই অংশটি ‘পাকিস্তানের ওপর একটি বোঝা’। কিন্তু ওই ‘বোঝাই’ এখন অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ব্যাপক উন্নতি করেছে। ফলে এখন বাংলাদেশের দিকে তাকালে আমি লজ্জিত হই। কারণ বাংলাদেশ এগিয়ে গেলেও পাকিস্তান এখনও অনেক পিছিয়ে আছে।”

সময়ের পরিক্রমায় সেই ‘বোঝা’র জনপদ এখন উন্নতির নানান সূচকে ছাড়িয়ে গেছে পাকিস্তানকে।

১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ভাগ হওয়ার পর বাঙালিদের এ ভূখণ্ড পাকিস্তানের একটি অংশ হয়ে শাসিত হতে থাকে, কিন্তু সবকিছুতে এ জনপদের মানুষের ওপর ছিল বৈষম্য। পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে একসময় মুক্তির সংগ্রাম শুরু হয়, যার ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে হয় স্বাধীনতার যুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ শেষে বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।

পাকিস্তানের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে গত বুধবার সিন্ধ সিএম হাউসে একটি মতবিনিময় সভা করেন শাহবাজ শরিফ।

সে সভায় মুক্তিযুদ্ধের আগের সময়ের প্রসঙ্গ টেনে শাহবাজ শরিফ বলেন, “আমি তখন অনেক তরুণ ছিলাম...তখন আমাদের বলা হতো ওই অঞ্চল (বাংলাদেশ) আমাদের জন্য বোঝা। আজ আপনারা জানেন, সেই ‘বোঝা’ কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। তাদের দিকে তাকালে আমি এখন লজ্জিত হই।”

এদিকে শাহবাজ শরিফের সঙ্গে আলোচনায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন ব্যবসায়ীরা। তারা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গেও ব্যবসাবিষয়ক আলোচনা শুরুর তাগিদ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে জাতীয় পরিষদের নির্বাচন হয়। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন শাহবাজ শরিফ। বেশ কিছু বছর ধরে পাকিস্তানের অর্থনীতি ধুঁকছে। মূল্যস্ফীতি, দারিদ্র্য বৃদ্ধি, দুর্নীতিসহ নানা সঙ্কটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।

গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নাজুক অবস্থায় রয়েছে। অনুষ্ঠানে শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য দেশটির ব্যবসায়ীদের রপ্তানি বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেন।

এ ছাড়া দেশে ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার’ জন্য পিটিআই প্রধান ইমরান খানের প্রতি তার নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গিও প্রকাশ করেন শাহবাজ।

মন্তব্য

বিশেষ
Russia vetoes proposal to ban nuclear weapons in space

মহাকাশে পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধের প্রস্তাবে রাশিয়ার ভেটো

মহাকাশে পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধের প্রস্তাবে রাশিয়ার ভেটো জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া। ছবি: সংগৃহীত
জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বুধবার ভোটাভুটির পর তার বক্তব্যে রাশিয়ার উদ্দেশে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘কেন? আপনি যদি নিয়ম মেনে চলেন, তাহলে কেন এমন একটি প্রস্তাব সমর্থন করবেন না? আপনি কী লুকাতে পারেন? এটা বিস্ময়কর এবং এটি লজ্জাজনক।’

মহাকাশে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ করার বিষয়ে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে রাশিয়া। অপরদিকে রাশিয়া ও চীনের উত্থাপিত সংশোধনী প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে পরিষদ।

মস্কো স্যাটেলাইট ধ্বংস করতে সক্ষম এমন একটি পারমাণবিক ডিভাইস তৈরির চেষ্টা করছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সমর্থিত উদ্বেগের মধ্যে বুধবার এমন প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল।

রাশিয়ার অ্যাম্বাসেডর ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া জাতিসংঘের খসড়াটিকে একটি ‘নোংরা প্রদর্শনী’ এবং প্রস্তাবের সমর্থক যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের তৈরি করা ‘খামখেয়ালি চাল’ বলে বর্ণনা করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত ফেব্রুয়ারিতে নিশ্চিত করে বলেন, রাশিয়া স্যাটেলাইট বিধ্বংসী পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা অর্জন করছে বলে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে।

গোয়েন্দা তথ্যের সঙ্গে জড়িত তিনটি সূত্র পরে সিএনএনকে জানায়, এই অস্ত্র বিস্ফোরিত হয়ে ব্যাপক শক্তির তরঙ্গ তৈরি করে স্যাটেলাইটকে ধ্বংস করতে পারে।

জাতিসংঘে ভোটাভুটির আগে যুক্তরাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দাবি করেছিলেন, ওই প্রস্তাবে ভেটো দিলে বুঝতে হবে রাশিয়া কিছু গোপন করার চেষ্টা করছে।

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড বুধবার ভোটাভুটির পর তার বক্তব্যে এসব দাবির প্রতিধ্বনি করেন।

প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘কেন? আপনি যদি নিয়ম মেনে চলেন, তাহলে কেন এমন একটি প্রস্তাব সমর্থন করবেন না? আপনি কী লুকাতে পারেন? এটা বিস্ময়কর এবং এটি লজ্জাজনক।’

ভোটাভুটির সময় চীনের অনুপস্থিতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বেইজিং দেখিয়েছে যে বিশ্বব্যাপী বিস্তার রোধ ব্যবস্থাকে রক্ষা করার পরিবর্তে তারা বরং রাশিয়াকে তাদের অংশীদার হিসেবে রক্ষা করবে।’

থমাস গ্রিনফিল্ড বলেন, ‘বুধবারের ভোটে অনুপস্থিতি বিদ্যমান অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বাধ্যবাধকতার ওপর অতিপ্রয়োজনীয় আস্থা পুনর্নির্মাণের একটি সত্যিকারের সুযোগ হারানো।’

যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের খসড়া প্রস্তাব ৬০টিরও বেশি সদস্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে আন্তঃআঞ্চলিক সমর্থন পেয়েছে।

জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোকে পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপনের জন্য পরিকল্পিত পারমাণবিক অস্ত্র বা গণবিধ্বংসী অন্যান্য অস্ত্র তৈরি না করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

মন্তব্য

বিশেষ
Free beer in India to attract polling booths
ভারতের লোকসভা নির্বাচন

ভোটকেন্দ্রে টানতে ভারতে ‘ফ্রি বিয়ার’

ভোটকেন্দ্রে টানতে ভারতে ‘ফ্রি বিয়ার’ প্রতীকী ছবি
ভোটারদের ভোটের মাঠে আকৃষ্ট করতে এবার রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি কোমর বেঁধে নেমেছে ব্যাঙ্গালুরুর বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও। ভোট দেয়ার পুরস্কার হিসেবে সেখানে হোটেল, ট্যাক্সি পরিষেবা এমনকি কিছু প্রতিষ্ঠান কর্মীদের প্রণোদনা দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। শুক্রবার দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। দেশের নাগরিকদের ভোটদানে উৎসাহ দিতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো। তাদের সঙ্গে এবার যুক্ত হয়েছে বিভিন্ন কোম্পানি।

দক্ষিণ ভারতের বেঙ্গালুরুতে নাগরিকদের ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করতে অনেক কোম্পানি বিনামূল্যে খাবার থেকে শুরু করে ফ্রিতে ট্যাক্সি পর্যন্ত অফার করেছে।

প্রতিবারই কম ভোটার উপস্থিতির জন্য খবরের শিরোনাম হয় কর্ণাটক রাজ্যের শহর বেঙ্গালুরু। তাই ভোটারদের ভোটের মাঠে আকৃষ্ট করতে এবার রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি কোমর বেঁধে নেমেছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও। ভোট দেয়ার পুরস্কার হিসেবে সেখানে হোটেল, ট্যাক্সি পরিষেবা এমনকি কিছু প্রতিষ্ঠান কর্মীদের প্রণোদনা দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এসব সুবিধার মধ্যে ফ্রি বিয়ার, বিনামূল্যে ট্যাক্সি রাইড এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষার মতো সুবিধাকে উল্লেখযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করছে বিবিসি।

এছাড়া আঙুলে ভোটের কালি দেখাতে পারলে অনেক হোটেল ক্রেতাদের বিনামূল্যে খাবার খাওয়াবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে।

বুধবার নির্বাচনি আইন লঙ্ঘন না করার শর্তে স্থানীয় হোটেল মালিক সমিতিকে ফ্রিতে বা বিশেষ ছাড়ে খাবার বিক্রির অনুমতি দিয়েছে রাজ্যের উচ্চ আদালত।

এ বিষয়ে ব্যাঙ্গালুরুর হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি পিসি রাও ডেইলি মিররকে বলেন, ‘ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহ দিতে হোটেলগুলো বিভিন্ন পরিকল্পনা করেছে। কেউ কেউ বিনামূল্যে কফি, ডোসা দেবে। আবার কেউ কেউ গরমে ভোটারদের জুস খাওয়াবে। কিছু হোটেল তো খাবারের ওপর বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে।’

ভোটকেন্দ্রে টানতে ভারতে ‘ফ্রি বিয়ার’

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কর্ণাটক রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পড়ে দক্ষিণ ব্যাঙ্গালুরুতে। সেবার ওই নির্বাচনি এলাকার মোট ভোটারদের ৫৩.৭ শতাংশ নাগরিক ভোট দিয়েছিলেন।

ব্যাঙ্গালুরুর জনপ্রিয় পার্ক ‘ওয়ান্ডারলা’ ভোটারদের জন্য টিকিটে বিশেষ মূল্যছাড় দিয়েছে। অন্যদিকে ভোট দিয়ে আসা প্রথম পঞ্চাশ জন ক্রেতাকে বিনামূল্যে বিয়ার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ‘ডেক অফ ব্রুস’ নামের একটি পানশালা।

স্থানীয় রাইড শেয়ার অ্যাপ ‘ব্লু-স্মার্ট’ ভোটকেন্দ্রের ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে ভোটারদের রাইডে ৫০ শতাংশ ছাড় দিয়েছে। এছাড়া ‘র‌্যাপিডো’ নামের ট্যাক্সি শেয়ারিং কোম্পানি ভোটারদের বিনামূল্যে রাইড দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

মিস্টার ফিলি’স নামের একটি ফাস্টফুড রেস্তোরাঁ প্রথম ১০০ জন ভোটারকে বার্গার ও মিল্কশেকের ওপর ৩০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘এটি আসলে নাগরিকদের ভোটের গুরুত্ব বোঝানো এবং আমাদের গণতন্ত্র উদযাপনের উপায়।’

তিনি বলেন, ‘আশা করছি, এই উদ্যোগটি ব্যাঙ্গালুরুর নাগরিকদের মধ্যে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ ও পরিবর্তন আনতে উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে।’

উল্লেখ্য, ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ২১টি রাজ্যের ১০২টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। দেশটির নির্বাচন কমিশনের মতে, প্রথম দফা নির্বাচনে সব রাজ্যে গড়ে প্রায় ৬০-৬৫ শতাংশের বেশি ভোটারের উপস্থিতি রেকর্ড করা হয়েছে।

দ্বিতীয় দফায় দেশটির ১৩ রাজ্যের ৮৯টি লোকসভা আসনে ভোটগ্রহণ হবে। ছত্তিশগড়, কর্ণাটক, কেরালা, আসাম, বিহার, মণিপুর, রাজস্থান, ত্রিপুরা, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং জম্মু-কাশ্মীরে শুক্রবার ভোটগ্রহণ হবে।

এবার ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে সাত ধাপে, চলবে প্রায় দুই মাস ধরে। ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হবে আগামী ১ জুন এবং ৪ জুন ভোটের ফল ঘোষণা হবে।

মন্তব্য

বিশেষ
Iran and Russia agree to strengthen security cooperation

নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদারে ইরান-রাশিয়া সমঝোতা

নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদারে ইরান-রাশিয়া সমঝোতা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। ছবি: এপি
ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম প্রেস টিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এসএনএসসি) সচিব আলি আকবর আহমেদিয়ান ও তার রাশিয়ার সমকক্ষ নিকোলাই পাত্রুশেভ এমওইউতে সই করেন।

নিরাপত্তা খাতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে একটি সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) সই করেছে রাশিয়া ও ইরান।

রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে বুধবার নিরাপত্তা বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের আন্তর্জাতিক বৈঠকের ফাঁকে এমওইউটি সই করে দুই দেশ।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম প্রেস টিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এসএনএসসি) সচিব আলি আকবর আহমেদিয়ান ও তার রাশিয়ার সমকক্ষ নিকোলাই পাত্রুশেভ এমওইউতে সই করেন।

সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, কৌশলগত বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে কাজ করবে তেহরান ও মস্কো।

যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক গভীরতর করেছে ঘনিষ্ঠ ও কৌশলগত দুই মিত্র ইরান ও রাশিয়া।

সেন্ট পিটার্সবার্গে গত ২৩ এপ্রিল থেকে নিরাপত্তা বিষয়ে ১২তম আন্তর্জাতিক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের বৈঠক শুরু হয়, যা শেষ হবে ২৫ এপ্রিল। এতে অংশ নেন ১০৬টি দেশের প্রতিনিধিরা।

বৈঠকে দেয়া ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে আগ্রহী যেকোনো অংশীদারের সঙ্গে নিবিড় সহযোগিতায় প্রস্তুত মস্কো।

আরও পড়ুন:
ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইসরায়েলের
ইরানের ওপর পশ্চিমাদের নতুন নিষেধাজ্ঞা
বড় হামলা করলে ইসরাইলের কিছুই অবশিষ্ট থাকত না
ইউক্রেন যুদ্ধে ৫০ হাজারের বেশি রুশ সেনা নিহত
ইরানের তেল বাণিজ্যে লাগাম টানতে পারে যুক্তরাষ্ট্র

মন্তব্য

বিশেষ
The US is secretly sending long range missiles to Ukraine

গোপনে ইউক্রেনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

গোপনে ইউক্রেনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এটিএসিএমএস পরীক্ষা। ছবি: যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী
দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দূরপাল্লার এটিএসিএমএস সরবরাহ করেছে বলে আমি নিশ্চিত করতে পারি।’

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যবহার শুরু করেছে ইউক্রেন, যেগুলো যুক্তরাষ্ট্র গোপনে সরবরাহ করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

বিবিসি বৃহস্পতিবার জানায়, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনুমোদিত ৩০ কোটি ডলার সামরিক সহায়তা প্যাকেজের অংশ। চলতি বছরের মার্চে সহায়তার অনুমোদন দেয়া হয়। এপ্রিলে অস্ত্রগুলো ইউক্রেনে পাঠানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের বরাতে বিবিসির খবরে বলা হয়, ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য অন্তত একবার দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।

এদিকে ইউক্রেনের জন্য নতুন করে ছয় হাজার ১০০ কোটি ডলার সহায়তার প্যাকেজে সই করেছেন বাইডেন।

ইউক্রেনে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে বিভিন্ন সময়ে ওয়াশিংটনকে তাগিদ দিয়ে আসছিল কিয়েভ, তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এর আগে ইউক্রেনকে মধ্যমপাল্লার আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেমস তথা এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দেয়া হয়েছিল।

ইউরোপের দেশটিকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিতে রাজি হচ্ছিল না বৈশ্বিক পরাশক্তিটি।

বিবিসির খবরে বলা হয়, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা দিতে বাইডেন ফেব্রুয়ারিতে সবুজ সংকেত দেন। এসব ক্ষেপণাস্ত্র ৩০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দূরপাল্লার এটিএসিএমএস সরবরাহ করেছে বলে আমি নিশ্চিত করতে পারি।’

আরও পড়ুন:
বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গণগ্রেপ্তার
বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নেই: যুক্তরাষ্ট্র
ইসরায়েলের জন্য ২৬ বিলিয়ন ডলার সহায়তার বিল পাস প্রতিনিধি পরিষদে
ট্রাম্পের বিচার চলাকালে আদালতের বাইরে গায়ে আগুন যুবকের
ইরানের ওপর পশ্চিমাদের নতুন নিষেধাজ্ঞা

মন্তব্য

বিশেষ
Mass graves found in two Gaza hospitals

গাজার দুই হাসপাতালে গণকবরের সন্ধান

গাজার দুই হাসপাতালে গণকবরের সন্ধান জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক। ছবি: সংগৃহীত
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক বলেন, ‘গাজা শহরের আল শিফা মেডিক্যাল সেন্টার ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের নাসের হাসপাতাল ধ্বংস এবং ইসরায়েলিরা চলে যাওয়ার পর ওইসব স্থাপনার আশপাশে গণকবরের সন্ধান পাওয়ার খবরে আমি আতঙ্কিত।’

ইসরায়েলি সৈন্যরা অভিযান চালিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা গাজার দুটি প্রধান হাসপাতালে গণকবরের সন্ধান মিলেছে। সেসব গণকবরের স্পষ্ট, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্বস্ত তদন্তকারীদের অবশ্যই স্থানগুলোতে প্রবেশাধিকার থাকতে হবে। গাজার প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরার জন্য আরও সাংবাদিকদের নিরাপদে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’

এর আগে মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক বলেন, ‘গাজা শহরের আল শিফা মেডিক্যাল সেন্টার ও দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের নাসের হাসপাতাল ধ্বংস এবং ইসরায়েলিরা চলে যাওয়ার পর ওইসব স্থাপনার আশপাশে গণকবরের সন্ধান পাওয়ার খবরে আমি আতঙ্কিত।’

এই হত্যাকাণ্ডের স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দায়মুক্তির বিদ্যমান পরিবেশের পরিপ্রেক্ষিতে এতে আন্তর্জাতিক তদন্তকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।’

ভলকার তুর্ক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে হাসপাতালগুলো বিশেষ সুরক্ষার অধিকারী। আর যুদ্ধে অংশ নিতে অক্ষম এমন বেসামরিক নাগরিক, বন্দি ও অন্যদের ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা যুদ্ধাপরাধ।’

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল হাসপাতালগুলোতে গণকবরের খবরকে অবিশ্বাস্যভাবে উদ্বেগজনক বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইসরায়েলি সরকারের কাছে এ বিষয়ে তথ্য চেয়েছেন।

আরও পড়ুন:
বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গণগ্রেপ্তার
ফের ‘ভুল’ না করতে ইসরায়েলকে কড়া বার্তা ইরানের
ইসরায়েলের গভীরে হামলা হিজবুল্লাহর
ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ইসরায়েলের জন্য ২৬ বিলিয়ন ডলার সহায়তার বিল পাস প্রতিনিধি পরিষদে

মন্তব্য

p
উপরে