চারপাশে ধানি জমি। ফাঁকে ফাঁকে জলমগ্ন ডোবা। ডোবা আর ধানক্ষেত পেরোলে বাঁশবাগান-ঝোপঝাঁড়। কোনো রাস্তা নেই। ক্ষেতের আলপথ ধরে বাঁশবাগান পেরিয়ে সামনে গেলেই দেখা মেলে একটি বাড়ির।
বড় উঠানের শেষ প্রান্তে টিন ও বাঁশ দিয়ে তৈরি সাধারণ ভাঙাচোরা ঘর। দারিদ্রের স্পষ্ট ছাপ থাকা এই বাড়ি নিয়েই গড়ে উঠেছে একটি গ্রাম। নাম শ্রীমুখ। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে অবস্থান এই গ্রামের।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর নথি ও ভোটার তালিকাতেও রয়েছে একটি পরিবার নিয়ে গড়ে ওঠা এই গ্রামের নাম। শ্রীমুখ দেশের তো বটেই, এমনকি বিশ্বের ‘সবচেয়ে ছোট গ্রাম’ বলে দাবি করছেন গবেষকেরা।
সরকারি নথিতে অবশ্য সবচেয়ে ছোট গ্রাম হিসেবে আলাদা করে শ্রীমুখের উল্লেখ নেই। তবে সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, নথিপত্র ঘেঁটে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে শ্রীমুখের এই স্বীকৃতি আদায়ের উদ্যোগ নেয়া হবে।
কোথায় শ্রীমুখ
সিলেটের একেবারে পশ্চিমের উপজেলা বিশ্বনাথ। প্রবাসীবহুল এলাকা হিসেবে পরিচিত হলেও এখানকার বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর অবস্থান দারিদ্র্যসীমার নিচে। উপজেলা সদর থেকে রামপাশা হয়ে ২০ মিনিট এগোলেই পৌঁছানো যাবে খাজাঞ্চি ইউনিয়নের শ্রীমুখ গ্রামে। তেলিকোনা ও পশ্চিম নোয়াগাও নামে দুটি গ্রামের মাঝখানে অবস্থান শ্রীমুখের।
গ্রামের আয়তন মাত্র ৬০ শতক। লোকসংখ্যা মোট চার জন, যারা সবাই একই পরিবারের সদস্য। এর মধ্যে পরিবারের একমাত্র পুরুষ সদস্য দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে। বাকি তিন জনের মধ্যে দুজন নারী ও একজন শিশু। সবশেষ ভোটার তালিকায় এই গ্রামে ভোটার আছেন দুজন।
পরিসখ্যান ব্যুরোর নথিতে শ্রীমুখ গ্রামের উল্লেখ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এই দপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের উপ পরিচালক মুহাম্মদ আতিকুল কবীর। তিনি বলেন, ‘সবশেষ জরিপ অনুসারে বিশ্বনাথের শ্রীমুখ গ্রামে একটি পরিবার রয়েছে, আর লোকসংখ্যা ৪ জন।’
সবচেয়ে ছোট গ্রাম
আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না থাকলেও গবেষকরা মনে করছেন, আয়তন ও লোকসংখ্যার দিক দিয়ে শ্রীমুখই বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রাম।
এই গ্রাম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তথ্য সংগ্রহ করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিকাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একটি মৌজা নিয়েই শ্রীমুখ গ্রাম। দাগ, খতিয়ান এবং মৌজাসহ সরকারি সব নথিপত্রে শ্রীমুখ আলাদা গ্রাম হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। এর আয়তন ৬০ শতক, ফলে এটি দেশের পাশাপাশি বিশ্বেরও সবচেয়ে ছোট গ্রাম।’
তিনি বলেন, ‘এখন বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রাম ধরা হয় ক্রোয়েশিয়ার ‘হাম’-কে। সেখানকার জনসংখ্যা ৩০ জন। হাম আয়তনের দিক থেকেও শ্রীমুখের চেয়ে অনেক বড়।’
তবে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ঘেটে দেখা গেছে, হামকে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট শহর হিসেবেও সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে।
ড. জহিরুল হক শাকিল নিজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রাম হিসেবে শ্রীমুখের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য সরকারের উদ্যোগ নেয়া উচিত। এতে এই গ্রামের পরিচিত বাড়বে। পর্যটকদের জন্যও গ্রামটি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।’
বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দাশ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই গ্রামটির ব্যাপারে আমি শুনেছি। সম্প্রতি বিশ্বনাথের সহকারী কমিশনার (ভূমি) গ্রামটি পরিদর্শন করেছেন। আমরা এখন বিভিন্ন নথিপত্র জোগাড় করছি। তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে সবচেয়ে ছোট গ্রাম হিসেবে শ্রীমুখের স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করা হবে।’
এ প্রসঙ্গে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, ‘পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যে এটি আলাদা গ্রাম হিসেবেই উল্লেখ আছে। এই গ্রামে মাত্র একটি পরিবার রয়েছে।’
ছোট গ্রাম হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া কিছুটা ঝামেলার এবং অনেক সময়সাপেক্ষ। তবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা এলে এটি দ্রুততম সময়ে সম্ভব হবে। আমাদের পক্ষেও তখন কাজ করতে সুবিধা হবে।’
তবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য ইতোমধ্যে তৎপরতা শুরু করেছেন জানিয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া বলেন, ‘আমি পরিকল্পনামন্ত্রীর সঙ্গে এ গ্রাম নিয়ে কথা বলে এসেছি। কীভাবে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গ্রাম হিসেবে শ্রীমুখ গ্রামের স্বীকৃতি আদায় করা যায় সে ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে তাকে অনুরোধ করেছি। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।’
শ্রীমুখ গ্রামের অস্পষ্ট ইতিহাস
শ্রীমুখ গ্রামে এখন বসবাস করে সৌদি প্রবাসী আপ্তাব আলীর পরিবার। আপ্তাব আলীর স্ত্রী, সন্তান ও বোন থাকেন গ্রামের একমাত্র বাড়িটিতে। এর আগে বাড়িটি ছিল একটি হিন্দু পরিবারের।
তথ্য অনুযায়ী, ১৯৬৪ সালে হিন্দু পরিবারটি আপ্তাব আলীর দাদা হাবিব উল্লাহর কাছে বাড়ি ও জমি বিক্রি করে ভারতে চলে যায়। দাদার কাছ থেকে এই বাড়ি পান আপ্তাব আলী।
ওই বাড়িতে গিয়ে কথা হয় আপ্তাব আলীর স্ত্রী রাহিমা বেগমের সঙ্গে। গ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না। বিয়ের পর থেকেই এ বাড়িতে বসবাস করছেন বলে জানান রহিমা।
রহিমা বেগম বলেন, ‘আমরার একটা বাড়ি লইয়াই আমরার গ্রাম। এক বাড়ি লইয়া কিলা গ্রাম অইলো ইটা আমি জানি না।’
স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা খাজাঞ্চি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আইনজীবী আব্দুর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুনেছি ব্রিটিশ আমলে এখানে একটি হিন্দু পরিবার বসবাস করতো। পরে তারা অন্যত্র চলে যায়। এসময় পাশের পশ্চিম নোয়াগাওঁ গ্রামের আব্দুল গনির পিতা মরহুম হাবিব উল্লাহ এই বাড়িটি ক্রয় করেন। পরে শ্রীমুখ গ্রামের বাড়িটি হাবিব উল্লাহ তার মেয়ে কটাই বিবিকে দান করেন। এরপর কটাই বিবি স্বামী আব্দুল রহমানকে নিয়ে এ বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। কটাই বিবি ও তার স্বামী মারা যাওয়ায় পর ছেলে আপ্তাব আলীর পরিবার বর্তমানে এ বাড়িতে আছে।
অধ্যাপক জহিরুল হক শাকিল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রামটির আয়তন আগে হয়তো অনেক বেশি ছিলো। সম্ভবত নদীভাঙনে কিছু এলাকা তলিয়ে গেছে। অন্য গ্রামের লোকদের কাছে বিক্রি করার ফলে এই গ্রামের জায়গা অন্য গ্রামের অন্তর্ভুক্তও হয়ে যেতে পারে। এছাড়া আগে এখানে একাধিক পরিবারও বসবাস করে থাকতে পারে। তবে ১৯৬৪ সালের পাওয়া হিসাবে এখানে একটি পরিবারই ছিল।’
শ্রীহীন শ্রীমুখ
গ্রামে যেতে নিজস্ব কোনো রাস্তা নেই। হেমন্তে অন্যের জমির আলপথ পেরিয়ে, আর বর্ষায় কিছুটা নৌকায় করে ও কিছুটা কাদামাটি পেরিয়ে যেতে হয় শ্রীমুখ গ্রামে।
আপ্তাব আলীর স্ত্রী রহিমা বেগম বলেন, ‘আমাদের বাড়িত ঢুকার কোনো রাস্তা নাই। আরোকজনোর জমিনোর উপর দিয়া আইতে অয়। বাইচ্চার স্কুলো যাইতে খুব সমস্যা অয়। আর বর্ষার সময় তো পানিত বন্দি থাকি।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘একটামাত্র বাড়ি হওয়ায় আমরার গ্রামোর উন্নয়নোর কথা কেউ জিন্তা করইন না।’
গ্রামটির দুরবস্থা প্রসঙ্গে খাজাঞ্চি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তালুকদার মো. গিয়াস উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রামের একটিমাত্র বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছেছে। তাদের প্রধান সমস্যা এখন নিজস্ব সড়ক না থাকা, তবে বাড়ির চাপাশে অন্যের ব্যক্তিমালাকাধীন জমি থাকায় চাইলেই সড়ক নির্মাণ করা সম্ভব নয়।’
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘জমির মালিকরা যদি একটু জমি ছেড়ে দেন তাহলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সড়ক তৈরি করতে উদ্যোগ নেব।’
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে জানাগেছে।
সোমবার রাতে মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পরে তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।
মুন্নির পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীতে রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন তারাগুনিয়া ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বলেন, “রোগী কীভাবে মারা গেছে সেটা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, “রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “গতকাল রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক এলাকায় উত্তেজনা ও হট্টগোলের আশঙ্কায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠাই। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকা থেকে কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে।”
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক। ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে বলবো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
একই ক্লিনিকে এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখানের) সাবেক সংসদ সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিমের নামে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে সেলিম নামে এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকায় শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া স্বাক্ষাতকারে এ দাবি করেন হাফিজ ইব্রাহিম।
এর আগে দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, যায়যায়দিন সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকার ডিজিটাল প্লাট ফরমে একটি সংবাদে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তুলে সেলিম নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, সংবাদটি ডিজিটাল প্লাট ফরমে প্রকাশ হওয়ার পর আমার নজরে আসে। আমি মনোযোগ দিয়ে তার অভিযোগ শুনি। যে ব্যক্তি আমার নামে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা না। আমি খবর নিয়ে জেনেছি, তিনি ভোলা-১ সদর আসনের বাসিন্দা ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের বাড়ির পাশে তার বাড়ি। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেলিম নামে ওই ব্যক্তির সাথে তার আপন ভাতিজি জামাইয়ের দীর্ঘদিন ধরে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে তার ভাতিজি জামাই তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এমনকি ওই বিষয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা রয়েছে।
হাফিজ ইব্রাহিম আরও বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পতিত সরকারের পলাতক একটি কুচক্রী মহল বিএনপির নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা এই ঘটনার পেছনে যে আসল সত্য রয়েছে তা উদঘাটন করুন।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী মহানগরীর একটি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব-৫।
রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর টিকাপাড়া এলাকার একটি বালুর স্তূপের আনুমানিক ২ ফুট গভীর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
সোমবার সকালে র্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অভিযানে একটি ৭.৬২ মি.মি. বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৫; সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল জানতে পারে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন লুট হওয়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি দুষ্কৃতকারীরা বোয়ালিয়া থানাধীন টিকাপাড়া এলাকায় লুকিয়ে রেখেছে। পরে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে বালুর স্তূপের ভেতর থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র্যাবের গোয়েন্দা দল।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসস’কে জানান, এটি পুলিশের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। তবে কোন থানার অস্ত্র সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। কারণ পিস্তলের গায়ে বাট নম্বর ঘষা-মাজার চিহ্ন স্পষ্ট। উদ্ধারকৃত বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি বোয়ালিয়া থানায় জিডির পর হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য