আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহারের সঙ্গে সঙ্গে তালেবান বাহিনীর প্রভাব বাড়ছে দেশটিতে। তালেবানের এই প্রভাব নিয়ে চিন্তিত উপমহাদেশীয় পরাশক্তি ভারত। সংবাদ ও কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সভিত্তিক ম্যাগাজিন সাইট ‘ফরেন পলিসির’ এক নিবন্ধে তালেবানের সঙ্গে ভারতের নতুন সমীকরণ নিয়ে লিখেছেন সাংবাদিক আঁচল ভোহরা। নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য নিবন্ধটি অনুবাদ করেছেন রুবাইদ ইফতেখার।
ভারত বেশ চিন্তিত। আফগানিস্তান থেকে সবশেষ আমেরিকান সেনা প্রত্যাহার করায় নয়াদিল্লির শঙ্কা খুব স্পষ্ট। তালেবানদের ক্ষমতায় ফিরে আসার মানে ভারতে আক্রমণ করা পাকিস্তানের মদদপুষ্ট জিহাদি দলগুলোর ফের সক্রিয় হওয়া। সবচেয়ে বড় ভয় হচ্ছে, আফগানিস্তানে ভারতীয় সেনা মোতায়েনের আহ্বান জোরদার হওয়ার সম্ভাবনা।
ভারত সরকার একা নয়, রাশিয়া, ইরান ও চীনও আফগান গৃহযুদ্ধের পরিণাম নিয়ে চিন্তিত। দুশ্চিন্তার অন্যতম হচ্ছে শরণার্থীর আগমন। ভারত এদিক থেকে সবচেয়ে অসুবিধায় আছে।
বেশ কয়েক বছর আগেই রাশিয়া, চীন ও ইরান তালেবানের সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু করে যেন ক্ষমতায় ফিরে এলে তাদের সঙ্গে সমস্যার সমাধান করতে সরাসরি আলোচনায় বসা সম্ভব হয়। তখন ভারত আদর্শগতভাবে তালেবানের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে আফগানিস্তান সরকারের মিত্রদের সমর্থন দিয়েছে।
এখন যখন আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী ও ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা যখন মেনে নিচ্ছেন, আফগান সরকারের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব শুধু শহরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকতে চলছে, তখন নয়াদিল্লি তড়িঘড়ি করে তালেবানকে সমাধানমূলক বার্তা পাঠানোর ওপর জোর দিচ্ছে। সেই একই বার্তা তারা পাঠাচ্ছে, এতদিন যেগুলোর কোনো উত্তর আসেনি।
আফগান সরকার বিষয়টিতে খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারছে না। তারা বরং ভারতকে তাদের বিপদের সময় সহায়তা ও সমর্থনের মাত্রা আরও বাড়াতে অনুরোধ করেছে।
ফরেন পলিসিকে এক উচ্চপদস্থ আফগান কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে দেশটিকে বছরে ৪৫০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যার অধিকাংশ ব্যয় হবে আফগান প্রতিরক্ষা বাহিনী ও ২৯টি ব্ল্যাকহক কমব্যাট হেলিকপ্টারের পেছনে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আরও ব্ল্যাকহক পেলে যুদ্ধের অঙ্কের হিসাব আমাদের দিকে থাকবে।’
আফগান সরকার ভারতের কাছ থেকে এখনও সামরিক সহায়তা চায়নি, কিন্তু ভারতে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত ফারিদ মামুন্দজাই ফরেন পলিসিকে বলেছেন, তাদের এই সাহায্য চাইতে হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘তালেবানের সঙ্গে যদি আমরা অচলাবস্থায় পৌঁছাই, তাহলে হয়তো ভারতের কাছ থেকে সামরিক সহায়তা চাইতে হতে পারে।’
আফগান রাষ্ট্রের পতনের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে এবং প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত তা ঘটতে পারে। আমেরিকান গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ছয় মাসের মধ্যে সরকারের পতন হতে পারে।
জাতিসংঘে ভারতের সাবেক দূত ও জ্যেষ্ঠ কূটনৈতিক সৈয়দ আকবরউদ্দিনের মতে, আফগানিস্তানে ভারতীয় সেনা মোতায়েনের কোনো সম্ভাবনাই নেই।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের সীমান্তেই সমস্যা আছে। এমন অবস্থায় আমার মনে হয় না রাজনৈতিক বা জনসমর্থন পাবে বিষয়টি।’
ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক রাহুল বেদি এর সঙ্গে যোগ করেন, বিদেশের মাটিতে, বিশেষ করে আফগানিস্তানের মতো জায়গায় যেখানে অধিকাংশ বিদেশি সেনাবাহিনী পরাজিত হয়েছে, সেখানে ভারত সেনা মোতায়েন করতে চায় না।
বেদি বলেন, ‘ভারত সামরিক অস্ত্রশস্ত্র যেমন চারটি হেলিকপ্টার, যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করার মতো গোলাবারুদ, ছোট অস্ত্র, গুলি এগুলো দিয়েছে। ৯০-এর দশকে আফগান আর্মির সোভিয়েত হেলিকপ্টার দেখভালের জন্য সেখানে কর্মীও রেখেছে তারা।’
বেদির মতে, ভারত হয়তো তাদের প্রকল্পগুলো থেকে সরে আসবে ও বিভিন্ন পুনর্গঠনমূলক প্রকল্পে নিয়োজিত থাকা ৩ হাজার ১০০ নাগরিক, যাদের অধিকাংশই ইঞ্জিনিয়ার, তাদের দেশে ফিরিয়ে আনবে।
তিনি বলেন, ‘ভারত আরও সামরিক অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাহায্য করতে পারে, হয়তো তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে অর্থ দিয়ে সমমনা মিলিশিয়াদেরও সহযোগিতা করবে, কিন্তু তারা সেনা পাঠাবে না।’
আফগানিস্তানে সেনা মোতায়েনের ক্ষেত্রে ভারত সামরিক খেলোয়াড় হিসেবে বেশ সচেতন, তবে কিছু আফগানের দাবি, জাতিসংঘের পতাকার নিচে ভারত তার শান্তিরক্ষীদের পাঠাতে পারে।
আফগান বিশ্লেষক দাভুদ মোরাদিয়ান এক মন্তব্যে লিখেছেন, জাতিসংঘের এখানে মূল ভূমিকা পালন করা উচিত। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শান্তিরক্ষী মিশনের সেনাদের মোতায়েন করে প্রকট হতে থাকা নিরাপত্তাব্যবস্থার শূন্যতা পূরণ করা।
তিনি লিখেছেন, ‘আফগানিস্তানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন অরাজকতা ও রাষ্ট্রীয় ভাঙনের দিকে দেশটির পতন রোধে পাকিস্তান ও ভারতকে একত্রিত করতে পারে।’
এক আফগান জ্যেষ্ঠ কূটনৈতিক জানান, কয়েক মাস আগে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর প্রস্তাব প্রথম উত্থাপন করেন, আফগান-আমেরিকান কূটনীতিবিদ ও তালেবানের সঙ্গে কাতারের দোহায় আমেরিকার শান্তিচুক্তির মূল কারিগর জালমায় খালিলজাদ।
চীনও একদল শান্তিরক্ষী পাঠাতে পারে আফগানিস্তানে। এর মিত্র দেশ পাকিস্তান, যারা কিনা তালেবানের পৃষ্ঠপোষক। ভারতীয়রা বিষয়টি নিয়ে সন্দিহান।
সাবেক দূত আকবরউদ্দিন বলেন, ‘আফগানিস্তানে এই মুহূর্তে জাতিসংঘের বিরাট কোনো শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোয় কাজ হবে না। শান্তিরক্ষীরা এমন একটা পরিবেশে কাজ করে, যেখানে শান্তি আছে ও সেটাকে বজায় রাখতে হবে। তাদের কাজের জায়গা এম কোথাও নয়, যেখানে শান্তিই নেই। যুদ্ধে লিপ্ত একটি পক্ষে পাকিস্তানের সমর্থন রয়েছে। সুতরাং তাদের শান্তিরক্ষী হিসেবে মেনে নেয়া যাবে না। তারাও ভারতকে সেখানে চাইবে না। আফগানিস্তানে ভারত ও পাকিস্তানের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সম্ভাবনাটা ওখানেই শেষ।’
ভারতীয় বিশ্লেষকেরা এখন এই বিতর্কে লিপ্ত যে, তালেবানের যখন নয়াদিল্লির স্বীকৃতি দরকার ছিল, তখন তাদের আরও কাছে পৌঁছানো উচিত ছিল কি না। আফগানিস্তানে ভারতীয় সাবেক রাষ্ট্রদূত আমার সিনহা জানান, তিনি গত সেপ্টেম্বরে তালেবানের সঙ্গে আলোচনার পক্ষে মত দিয়েছিলেন।
সিনহা বলেন, ‘আফগান সরকার ও তালেবান যখন আলোচনায় বসেছিল, তখন তাদের সঙ্গে আমাদের কথা বলা দরকার ছিল। তখন কেন আমরা কথা বলিনি, যখন অন্য সবাই বলছিল? ঠিক যেমনটা আমরা অন্য দলগুলোর সঙ্গেও বসি, তেমনি তাদের সঙ্গেও আমাদের আলোচনায় বসতে হবে।’
তালেবানের দোহা শাখার প্রধান মোল্লা সৈয়দ তায়াব আগার কাজিন, সৈয়দ আকবর আগা ২০১৬ সালে কাবুলে আমাকে বলেছিলেন, ভারতের সঙ্গে সন্ধি করতে পারলে তালেবান খুশিই হবে।
আগা বলেছিলেন, ‘হিন্দুস্তানের সঙ্গে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আমরা তাদের শান্তি ও বন্ধুত্বের বার্তা দিতে চাই।’
এমন একটা সময়ে তারা বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে এই বার্তা দিতে চাচ্ছিল, যখন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক তালেবানকে আন্তর্জাতিকভাবে বৈধতা দিতে পারত। ২০১৮ সালে দুই সাবেক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত তালেবানের উপস্থিতিতে আফগানিস্তানে রাশিয়ার আঞ্চলিক ফোরামের পর্যবেক্ষক হিসেবে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন।
আলোচনায় উপস্থিত সূত্র থেকে জানা যায়, তালেবান প্রতিনিধিরা তখন সরাসরি ভারতীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন এবং দূরত্ব হ্রাস করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এখন তারা যখন যুদ্ধের ময়দানে জিতে চলেছে, তখন তাদের সুর পাল্টে গেছে এবং সেই কোমল স্বর আর নেই।
তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন মস্কো থেকে ফিরে আসার পর দোহা থেকে ফরেন পলিসিকে জানান, তিনি ও তার সহযোগীরা সাবেক সোভিয়েত রাজ্যগুলোর সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার বিষয়ে রাশিয়াকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার আশ্বাস দেন।
শাহিনের দাবি, ভারতকে তার নিরপেক্ষতা প্রমাণ করতে হবে, যদি তারা তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায়।
তিনি বলেন, ‘রাশিয়া, ইরান ও চীনের সঙ্গে আমাদের এক বা দুই বছর নয়, বহু বছর ধরে রাজনৈতিক সম্পর্ক আছে। আমি তাদের দেশে বহুবার গিয়েছি ও তাদের আশ্বস্ত করেছি যে, আমরা আফগান এলাকাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেব না। ভারত বিদেশিদের বসানো সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। তারা আমাদের সঙ্গে নেই। তারা যদি জোর করে আফগানিস্তানে বসানো সরকারকে সমর্থন করার নীতিতে অটল থাকে, তাহলে তাদের চিন্তিত হওয়াই উচিত। এটা একটা ভুল নীতি যেটা তাদের কোনো উপকারে আসবে না।’
শাহিনের অভিযোগ, ভারত আফগান সরকারকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছে, যার কারণে নাখোশ তালেবান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কমান্ডারদের কাছ থেকে জেনেছি, ভারত প্রতিপক্ষকে অস্ত্র দিচ্ছে। এটা কী করে সম্ভব যে তারা কাবুলকে অস্ত্র, ড্রোন সবকিছু দিচ্ছে আবার তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায়? এটা তো দুমুখো আচরণ হয়ে গেল।’
ভারতীয় বিশ্লেষকরা বলেছেন, আফগান সরকারকে সামরিক সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রে ভারত সরকার সতর্ক ছিল। তাদের মতে, স্বেচ্ছাসেবক বা মিলিশিয়াদের সমর্থন করার ক্ষেত্রে ভারত তড়িঘড়ি করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় প্রতিনিধিদল তালেবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে কি না তা স্পষ্ট নয়। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই প্রতিবেদনগুলো অস্বীকার করেছে, তবে এও বলেছে, ভারত সরকার ‘বিভিন্ন পক্ষের’ সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর একই সময়ে রাশিয়া ও ইরানে ছিলেন, যখন আফগান সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য তালেবান প্রতিনিধিদল ওখানে গিয়েছিল। ইরান ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে জয়শংকর ভারতের চিন্তার জায়গাটি নিয়ে আলোচনা করেন।
পুরো বিশ্ব যখন কাবুল পতনের শঙ্কায়, তখন আফগান সরকার ও তাদের ভারতীয় মিত্ররাই একমাত্র এর টিকে থাকা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। তবে একটা পর্যায়ের পর ভারত এমন একটা যুদ্ধে জড়াতে চায় না, যেখানে শক্তিশালী ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী হেরে গেছে।
ভারতকে হয়তো পাকিস্তানের সঙ্গে এর লাইন অফ কন্ট্রোলের (এলওসি) নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। আর আশায় থাকতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র আফগান সরকারকে টিকিয়ে রাখবে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত সিনহা বলেন, ‘তালেবান এমন আচরণ করছে যে তারা এরই মধ্যে যুদ্ধ জিতে গেছে। জনগণের সঙ্গে তারা কেমন আচরণ করে, সেটার ওপরই নির্ভর করবে তাদের বৈধতা।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিচার চলাকালে আদালতের বাইরে নিজ গায়ে আগুন দিয়েছেন এক যুবক।
নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যে আদালতে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার চলছে, তার বাইরে নিজের গায়ে আগুন দিয়েছেন এক ব্যক্তি। আদালতের বাইরে স্থাপিত টেলিভিশন ক্যামেরায় ওই ব্যক্তিকে কয়েক মিনিট ধরে পুড়তে দেখা যায়।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, ৩০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির নাম ম্যাক্সওয়েল অ্যাজারেলো। তাকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে তিনি বেঁচে ফেরেন।
সম্পর্ক গোপন রাখতে পর্নো তারকাকে দেয়া ঘুষের মামলায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিচারিক কার্যক্রম চলছিল এ আদালতে। ওই ব্যক্তি যখন নিজ শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন, ট্রাম্প তখন ভেরতেই ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করছেন, তিনি ট্রাম্পকে লক্ষ্যবস্তু করে এমনটা করেননি।
প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ব্যক্তি প্রথমে নিজের শরীরে তরল জ্বালানি ঢালেন, এর পর আগুন ধরিয়ে দেন সবার সামনেই।
ট্রাম্পই হচ্ছেন প্রথম কোনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের মধ্যেই এ মামলায় ট্রাম্পের বিচার চলবে।
আরও পড়ুন:মিয়ানমারে রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নৃশংসতার ঘটনায় ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন সাত দেশের জোট জি-৭-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
তারা এক যৌথ বিবৃতিতে এ অবস্থান ব্যক্ত করেন বলে শনিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউএনবি।
বার্তা সংস্থাটির খবরে বলা হয়, যৌথ বিবৃতিতে তারা মিয়ানমারে অস্ত্র ও জেট ফুয়েলসহ অন্যান্য উপকরণের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য সব দেশের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
জোটভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সব রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিয়ে কথা বলেছেন। তারা একটি অর্থবহ ও টেকসই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে অবিলম্বে যেকোনো সহিংসতা বন্ধ, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতাদের থেকে শুরু করে নির্বিচারে আটক সব বন্দিদের মুক্তি এবং সব অংশীজনের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপ প্রতিষ্ঠার জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি শুক্রবার বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রতি মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে, যেকোনো ধরনের জোরপূর্বক শ্রম থেকে বিরত থাকতে এবং সব বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি ও অভাবী মানুষের কাছে দ্রুত, নিরাপদ ও অবাধ মানবিক প্রবেশাধিকার দেয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছি।’
মিয়ানমারে সংঘটিত গুরুতর অপরাধের জন্য জবাবদিহি অপরিহার্য উল্লেখ করে জি-৭ দেশগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমরা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২৬৬৯ নম্বর প্রস্তাবের (২০২২) ব্যাপক বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেছি। মিয়ানমার বিষয়ক নবনিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূতের নেতৃত্ব এবং দেশটিতে আবাসিক সমন্বয়কারী নিয়োগের মাধ্যমে এ সংকটে জাতিসংঘের আরও সম্পৃক্ততা সমর্থন করি।’
আরও পড়ুন:ইরানের ইস্পাহানে শুক্রবার ‘ইসরায়েলের’ হামলার তাৎক্ষণিক জবাব দেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘ঘটনার বিদেশি উৎসের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা বাইরের কোনো হামলার শিকার হইনি এবং আলোচনা হামলার চেয়ে বেশি হচ্ছে অনুপ্রবেশ নিয়ে।’
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, ইস্পাহানের কাছে বিস্ফোরণের পর কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়। সেখানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়নি।
ইস্পাহান শহরের কাছে ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক ক্ষেত্র রয়েছে, যেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে দাবি করেছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম।
আরও পড়ুন:ইরানের ইস্পাহানে বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলের হামলার খবরে শুক্রবার পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে উল্লেখ করে রয়টার্স জানিয়েছে, এশিয়ার শেয়ার ও বন্ডে ধস নামে, যেখানে উল্লম্ফন দেখা যায় স্বর্ণ ও অশোধিত জ্বালানি তেলের দামে।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি হামলার বিষয়টি জানার পর পুঁজিবাজার ও তেলের বাজারে শুরুতে যে প্রভাব পড়ে, সেটি কমে এসেছে। হামলার পরিসর ছোট এবং কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়নি বলে ইরানের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এমন বাস্তবতা সৃষ্টি হয়।
শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটিভিত্তিক এমএসসিআইয়ের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় সূচকের পতন হয় দুই দশমিক ছয় শতাংশ, যেটি পরবর্তী সময়ে কমে দাঁড়ায় দুই শতাংশে।
অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার শঙ্কায় ব্রেন্টের অশোধিত জ্বালানি তেলের দাম শুরুতে চার দশমিক দুই শতাংশ বাড়লেও পরবর্তী সময়ে তা কমে বৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়ায় দুই দশমিক চার শতাংশ। মূল্যবৃদ্ধি কমার পর ব্যারেলপ্রতি ব্রেন্টের অশোধিত তেলের দাম দাঁড়ায় ৮৯ দশমিক ২২ ডলারে।
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, ইস্পাহানের কাছে বিস্ফোরণের পর কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়। সেখানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়নি।
ইস্পাহান শহরের কাছে ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক ক্ষেত্র রয়েছে, যেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে দাবি করেছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের তিনটি ড্রোন ইরান ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করেছে দেশটির মহাকাশ সংস্থা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শুক্রবার কোয়াডকপ্টারের ছবি সংযুক্ত করে দেয়া পোস্টে ইরানের মহাকাশ সংস্থার মুখপাত্র হোসেইন দালিরিয়ান লিখেন, ‘তারা (ইসরায়েল) বলেছে যে, আমরা ৫০০ সুইসাইড ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছি...এখন তারা জবাব দিয়েছে এই তিন কোয়াডকপ্টার (ড্রোনসদৃশ আকাশযান) দিয়ে, যার সবগুলোকে ভূপাতিত করা হয়েছে।’
হাসির ইমোজি দিয়ে ওই পোস্টে দালিরিয়ান আরও লিখেন, ‘তারা শুধু বলেছে যে, তারা (হামলার) আগে আমেরিকাকে জানায়নি।’
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের হামলার খবরের মধ্যে ইরানের স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম শুক্রবার বলেছে, দেশটির পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদে আছে।
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
এদিকে ইরানের মহাকাশ সংস্থার মুখপাত্র হোসেইন দালিরিয়ান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া পোস্টে লিখেন, দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সফলভাবে কিছু ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। এ মুহূর্তে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কোনো খবর নেই।
ইস্পাহানের কাছে শেকারি সেনা বিমানঘাঁটিতে তিনটি বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ।
আরও পড়ুন:ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) হ্যাটট্রিক তথা টানা তৃতীয় জয়ের সম্ভাবনার মধ্যে শুক্রবার দেশটিতে লোকসভা নির্বাচনের ভোট শুরু হয়েছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভারতের ২১ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২টি আসনে আজ ভোট হচ্ছে।
সাত ধাপের এ নির্বাচনের প্রথম ধাপে সব আসনে ভোট হচ্ছে তামিলনাড়ু (৩৯), রাজস্থান (১২), উত্তর প্রদেশ (৮), উত্তরাখণ্ড (৫), অরুণাচল প্রদেশ (২), মেঘালয় (২), আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ (১), মিজোরাম (১), নাগাল্যান্ড (১), পুদুচেরি (১), সিকিম (১) ও লাক্ষাদ্বীপে (১)। এর বাইরে আসাম ও মহারাষ্ট্রের পাঁচটি করে আসনে, বিহারের চারটি, পশ্চিমবঙ্গের তিনটি, মণিপুরের দুটি এবং ত্রিপুরা, জম্মু-কাশ্মীর ও ছত্রিশগড়ের একটি করে আসনে ভোট হচ্ছে।
লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই চার রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশ, ওড়িশা, সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশ বিধানসভার ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিমে আজ ভোট।
ভারতে কংগ্রেসসহ বিরোধীদের জন্য বড় পরীক্ষার এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপি লোকসভার ৫৪৩ আসনের মধ্যে এককভাবে ৩৭০টিতে জয়ী হওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে। আর বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স তথা এনডিএ ৪০০টি আসনে জয়ী হোক, এমনটি চান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এর আগে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লোকসভায় ৩৫৩টি আসন পায় এনডিএ, যেখানে বিজেপির একক আসনের সংখ্যা ৩০৩টি।
লোকসভা নির্বাচনের শেষ ধাপের ভোট ১ জুন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য