বাংলাদেশ তাঁতী লীগের ঘোষিত লক্ষ্য দেশের তাঁতীসমাজের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত তাঁতীদের নিয়ে কোনো কর্মসূচিই গ্রহণ করেনি সংগঠনটি। বরং অভিযোগ আছে, আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আসছেন দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক নেতা। কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদও শেষ হয়েছে দুই বছর আগে।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংগঠনটির মূল লক্ষ্য তিনটি: তাঁতীসমাজসহ পশ্চাৎপদ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, তাঁতশিল্প ও বস্ত্র খাতের সংকট চিহ্নিত করে বাস্তবমুখী সমাধানের কর্মসূচি গ্রহণ ও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে দলের সব কর্মসূচি, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে কাজ করা।
পাকিস্তান তাঁতী সমিতি নাম নিয়ে ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই সংগঠন। স্বাধীনতার পর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলাদেশ তাঁতী সমিতি। ২০০৪ সালে তাঁতী লীগ নাম নিয়ে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে যাত্রা শুরু সংগঠনটির। তাদের প্রথম পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয় ২০১৭ সালে। ২০১৯ সালেই শেষ হয়েছে কমিটির মেয়াদ। সারা দেশের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলায় রয়েছে তাঁতী লীগের কার্যক্রম।
তাঁতীদের সংগঠন হিসেবে এতে তাঁতীদেরই প্রাধান্য পাওয়ার কথা। কিন্তু বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির ১০১ সদস্যের মধ্যে কোনো তাঁতী খুঁজে পাওয়া যায়নি। কমিটিতে রয়েছেন প্রকৌশলী, অধ্যাপক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ।
সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁতীদের উন্নয়নে কোনো কর্মসূচি নেই তাদের। বরং ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন হিসেবে নানা সুবিধা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে। করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সামাজিক বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিলেও তাঁতী লীগের এ রকম কোনো কর্মসূচির কথা শোনা যায়নি।
কমিটির বিরুদ্ধে বাণিজ্যের অভিযোগ
তাঁতীদের নিয়ে কোনো কার্যক্রম না থাকলেও সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কমিটি-বাণিজ্যসহ অর্থ আদায়ের নানা অভিযোগ রয়েছে। অর্থের বিনিময়ে অনেককেই কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
তাঁতী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. শওকত আলী পেশায় ব্যবসায়ী। নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় নানা ব্যবসা রয়েছে তার। শওকত আলীর বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখলের অভিযোগে আওয়ামী লীগ উচ্চপর্যায়ে বেশ কয়েকবার অভিযোগ দিয়েছেন সংগঠনের বেশ কয়েকজন কর্মী।
সাধারণ সম্পাদক খগেন চন্দ্র দেবনাথের বিরুদ্ধে শাখা কমিটি অনুমোদনের বিনিময়ে নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে অর্থ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, তিনি একই সঙ্গে ভারতের দ্বৈত নাগরিক। দেশ থেকে অর্থ পাচার করে ভারতে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতাদের কাছে দেয়া এমন বেশ কিছু লিখিত অভিযোগের কপি সংগ্রহ করেছে নিউজবাংলা।
২০১৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বরগুনা জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি ইদ্রিস চৌধুরী ও সাধারণ সম্পদক সাগর কর্মকার সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির বিরুদ্ধে বাণিজ্যের অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে একটি চিঠি লেখেন।
এতে তাঁতী লীগের সহসভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস জেলা কমিটি না ভেঙে দেয়ার জন্য ইদ্রিস চৌধুরী ও সাগর কর্মকারের কাছে ২ লাখ করে মোট ৪ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ করা হয়।
একই রকম একটি অভিযোগ করেন ঠাকুরগাঁও জেলা তাঁতী লীগের সাবেক আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম রবি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠানো এক অভিযোগপত্রে তিনি দাবি করেন, প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হওয়ার পরেও ৫ লাখ টাকা চাঁদা না দেয়ায় তাকে পরবর্তী সময়ে কমিটিতে স্থান দেয়া হয়নি।
এ ছাড়া সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা দুর্নীতি দমন কমিশনেও আবেদন করেছেন। এসব আবেদনের কপিও সংগ্রহ করেছে নিউজবাংলা।
তবে অভিযোগ নিয়ে প্রকাশ্যে কেউই মুখ খুলতে রাজি হননি।
কী বলছেন সংগঠনের নেতারা
তাঁতীদের সংগঠন অথচ তাঁতীদের নিয়ে কোনো কর্মসূচি কেন নেই, তার সঠিক কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা।
সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খান নুর এ খোদা মঞ্জু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেহেতু এটা পেশাজীবী সংগঠন, তাঁতীদের সংগঠন, এখানে যেমন তাঁতীদের কাজ হবে, একইভাবে নেত্রীর আদর্শের সৈনিক হিসেবে আমরা কাজ করব, এমনটাই হওয়ার কথা। আমাদের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত ছিল আওয়ামী লীগের আদর্শকে তাঁতীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া। আর আমরা দলীয় সরকারের মাধ্যমে তাঁতীদের একটা স্মার্ট গ্রুপ তৈরি করব।
‘তারা যে বস্ত্র তৈরি করে, বিশ্বে এটার পার্মানেন্ট বাজার তৈরি করব। কিন্তু এটা নেতৃত্বের বিষয়। যারা এখানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, আমিও আছি, কিন্তু আমি দ্বিতীয় লাইনের। এটা হয়তো সভাপতি-সেক্রেটারি তাঁতীদের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি। এ কারণেই তাঁতীদের নিয়ে কোনো প্রোগ্রাম এখনো হয়নি।’
সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকের নামেই অনৈতিক অর্থ আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘যখন ১০১ সদস্যর কমিটি হলো, তখন তো কিছু দুর্বৃত্ত সেখানে ঢুকেছিল। ফ্রিডম পার্টি, জামায়াত-বিএনপি থেকে ঢুকেছে, এটা দেখা যায়। তিনজনকে বহিষ্কারও করা হয়েছে, তারা নেত্রীর ফাঁসি দাবি করেছিল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে, বহিষ্কার করা হয়েছে।
‘এরপরেও কয়েকজনের বিষয়ে শোনা যায়। কিন্তু এটা নিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করে লাভ নেই। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বলতে পারবেন। খগেন বাবুর (সাধারণ সম্পাদক) বিষয়েও বিভিন্ন অভিযোগ শোনা যায়। দু-একজন অভিযোগ করেছেন। কিন্তু আমি তো এটা দেখিনি। এটা আপনারা বের করেন। আমি শুনেছি।’
তাঁতী লীগের কাজ আসলে কী, টেলিফোনে জানতে চাইলে সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. শওকত আলী নিউজবাংলাকে জানান, তাঁতীদের নিয়ে তাদের অনেক কর্মসূচি রয়েছে। তবে কোনো কর্মসূচির নামই বলতে পারেননি তিনি।
তিনি বলেন, ‘তাঁতীদের নিয়ে অনেক প্রোগ্রাম করছি, এগুলো এভাবে তো বলতে পারব না। সাক্ষাতে বলব। এগুলো বিক্ষিপ্তভাবে বলা ঠিক হবে না। কারণ আমি তো একটা অবস্থানে আছি, আমার কথাটা ভুল হয়ে গেলে সমস্যা।’
তাঁতী নেই- এমন অনেক স্থানেই সংগঠনের কমিটি রয়েছে, এর কারণ জানতে চাইলে তাঁতী লীগের সভাপতি বলেন, ‘তাঁতী আছে সারা বাংলাদেশের কিছু এলাকায়। আমরা মূলত প্রতিটি জেলায়, থানায়, ইউনিয়নে (কমিটি) করছি। আমাদের এই নামে একটা সংগঠন দাঁড়ালে এটার মধ্যে লাখ লাখ কর্মী পাব।
‘সংগঠনকে গোছানোর মাধ্যমে দলের মধ্যে যেন জনপ্রিয়তা বাড়ে, লোক বেশি হয়, এ জন্য একটা সংগঠন, আমরা যে জেলায় তাঁতী নেই, সেই জেলাতেও কমিটি করি। কেন করি? সংগঠনটা হলে এটা তো আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন, যদি লোক আসে, তাহলে দলের প্রোগ্রামে লোক আসে। এ জন্য আমরা ইউনিয়ন ওয়ার্ড পর্যন্ত করছি।’
কমিটি-বাণিজ্য কিংবা অর্থ লেনদেনের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক খগেন চন্দ্র দেবনাথের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর গত ১৭ জুন তিনি জানান, তিনি একটি সভায় ব্যস্ত আছেন। পরে কথা বলবেন।
এরপর টানা কয়েক দিন তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি আর কথা বলেননি।
অপকর্মের দায় আওয়ামী লীগ নেবে না
কোনো সহযোগী সংগঠন বা আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-কর্মী অপকর্ম করলে তার দায় দল হিসেবে আওয়ামী লীগ নেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
তাঁতী লীগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে, আমাদের সামনে তা উপস্থাপন করলে আমরা অবশ্যই কঠোরভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এদের আমরা দল থেকে বের করে দেব। কারণ দলের বদনাম করার কোনো সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মানুষের কল্যাণে কাজ করে। দু-একজন যদি কোথাও কোনো অপকর্ম করে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময়ই নির্দেশনা দিয়ে রেখেছেন।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় যোগ দেয়নি জামায়েতে ইসলামীর কোনো প্রতিনিধি। বিএনপি ও এনসিপির মাঝে জামায়াতের জন্য সংরক্ষিত আসনটি মধ্যাহ্নভোজের আগ পর্যন্ত ছিল ফাঁকা।
জামায়াতের আলোচনায় যোগ না দেয়ায় নানা রাজনৈতিক দল নানা মত দিয়েছেন। অনেকে বলছেন, কমিশনের বেশ কয়েকটি বিষয়ে জামায়াতের বনিবনা না হওয়ায় মঙ্গলবারের আলোচনায় তারা যোগ দেননি।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘কেন জামায়াত আলোচনায় যোগ দেয়নি সেই উত্তর কমিশনই ভালো দিতে পারবে।’
জামায়াতের আলোচনায় যোগ না দেয়া প্রসঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমরা যতদূর জানি জামায়াত আজকের বৈঠক প্রতীকী বয়কট করেছে। ঐকমত্য কমিশনের আজকের আলোচ্য বেশ কয়েকটি বিষয়ে জামায়াত হয়তো একমত হতে পারেনি। তাই আলোচনায় অংশ নেয়নি।’
জামায়াতের আলোচনায় যোগ না দেয়া প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল হিসেবে আজকের আলোচনায় জামায়াতের থাকা উচিত ছিল। তারা এই আলোচনা বয়কট করেছে কিনা সে বিষয়ে পরিষ্কার কিছু জানায়নি। যদি মধ্যাহ্নভোজের পরেও জামায়াত আলোচনায় না আসে তাহলে পুরো ব্যাপারটি বোঝা যাবে।’
ইসলামী আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘আদর্শিক জায়গা থেকে আমরা বেশিরভাগ বিষয়েই একমত হয়েছি। কিন্তু নারীদের জন্য আলাদা করে সংরক্ষিত ১০০ আসন রাখার প্রয়োজন দেখি না। নারীর ক্ষমতায়ন আমরাও চাই, কিন্তু কোনো বৈষম্যমূলক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে না।’
বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল মনে করছে, নারী আসনসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে মতানৈক্য হওয়ায় আলোচনার প্রথম পর্যায়ে জামায়াত যোগ দেয়নি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ের সভার মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে সাংবাদিকদের বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী জাতীয় সংসদে ৫০টি স্থায়ী কমিটির মধ্যে চারটি বিরোধী দলের জন্য ধার্য হয়েছে এবং সব রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে একমত।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মঙ্গলবারের (১৭ জুন) সভায় চারটি গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় স্থায়ী কমিটি পাবলিক অ্যাকাউন্ট, প্রিভিলেজ, ইস্টিমেশন এবং পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটির সভাপতি পদ বিরোধী দল থেকে দেওয়ার সিদ্ধান্তে সবাই একমত বলে জানিয়েছে তিনি।
বাকি স্থায়ী কমিটি প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘শুধু এই চারটি কমিটি না, সংখ্যাধিক্যের ভিত্তিতে বাকি কমিটিতেও আনুপাতিক হারে বিরোধীদলের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা থাকবে।’
‘এছাড়া সংবিধানের ৭০ নং অনুচ্ছেদ যেখানে নিজ দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলে সদস্য পদ বাতিলের বিধান আছে, সে বিষয়ে আস্থা ভোট এবং অর্থ বিল বাদে অন্য কোনো বিষয়ে ভোটদানে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে সবাই একমত,’ বলেন তিনি।
তবে বিএনপির পক্ষ থেকে যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং জাতীয় নিরাপত্তা এই দুই বিষয়েও দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া যাবে না এমন মত দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে এই দুই বিষয়ে অটল থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা নির্বাচিত হলে ৭০নং অনুচ্ছেদে এ দুটি বিষয়ও যুক্ত করা হবে।’
নারীদের ১০০ সংরক্ষিত আসন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই এ বিষয়ে একমত। তবে নির্বাচন পদ্ধতি কেমন হবে তা নিয়ে মতানৈক্য আছে। আশা করছি, আজকের আলোচনা শেষে এ বিষয়ে সমাধানে আসা যাবে ‘
এছাড়া জুলাই সনদের পাশাপাশি প্রতিটি রাজনৈতিক দলের আলাদা আলাদা ইশতেহার গুরুত্ব পাবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির এ নেতা।
এপ্রিল মাসকে জাতীয় নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত সময় নয় উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে সময়সূচি পুনঃবিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘অন্তবর্তী সরকার বাস্তবতার ভিত্তিতে এই বিষয়টি পুনঃবিবেচনা করবে।’
আজ মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এখনো (এপ্রিলের প্রথম দিকে নির্বাচন) নিয়ে দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি। আমরা আশা করি, সরকার এই বিষয়টি বাস্তবতার আলোকে বিবেচনা করবে।’
অন্তবর্তী সরকার যে সময়ে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেছে, তা সঠিক নয় বলেও দাবি এই বিএনপি নেতার।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা প্রথম দিনই বলেছি যে, এই সময় নির্বাচনের জন্য ভালো নয়। রমজান মাস শেষ হবে, ঈদ হয়ে যাবে, তারপর কয়েকদিন পর নির্বাচন হবে। একটু ভাবুন, রমজান মাস জুড়ে প্রার্থী এবং রাজনৈতিক কর্মীরা কী ধরনের পরিস্থিতিতে পড়বেন।’
ফখরুল আরও বলেন, তিনি এখন থেকেই চিন্তিত যে প্রতিদিন ইফতার পার্টি আয়োজন করতে হবে, যা নির্বাচনী ব্যয় বাড়িয়ে দ্বিগুণ করবে।
তিনি রমজান মাসে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর অসুবিধাগুলো তুলে ধরে বলেন, বিশেষত তীব্র গরম এবং বৃষ্টিপাত বা ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া, তিনি উল্লেখ করেন, তীব্র গরমের কারণে নির্বাচনী সমাবেশের জন্য লোকজন জড়ো করা সম্ভব হবে না। ‘কর্মসূচিগুলো রাতের দিকে নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, অতীতে দুটি বিতর্কিত নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশে প্রায় সব জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দল বলেছে যে, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন সম্ভব, এবং আমরা দৃঢ় বিশ্বাস করি যে এটি একটি বাস্তবসম্মত বিকল্প।’
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিএনপি যেকোনো সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, কারণ এটি নির্বাচনমুখী দল। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিপ্লবী দল না, আমরা জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসতে চাই।’
ফখরুল বিএনপির সংস্কার না করার যে অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে, তা খণ্ডন করে বলেন, ‘এটা মিথ্যা প্রচারণা।’
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, বিএনপি প্রথম দল হিসেবে ভিশন-২০৩০ কর্মসূচি তুলে ধরে এবং গণঅভ্যুত্থানের আগেই ৩১ দফা সংস্কারের খসড়া উপস্থাপন করেছিল।
ফখরুল সকল রাজনৈতিক দল, সংগঠন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কর্মীদের জাতিকে বিভক্ত না করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘দেশ একটি বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ: আমরা গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা চাই এবং আমরা চাই দেশটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পরিচালিত হোক। আমরা ভোট দিতে চাই, আমাদের প্রতিনিধিদের নির্বাচন করতে চাই এবং সংস্কার দেখতে চাই। সুতরাং, অযথা বিভেদ সৃষ্টি করবেন না।’
ফখরুল সতর্ক করে বলেন, দেশে কোনো ধরনের বিভেদ সৃষ্টি হলে তা বিদেশি শক্তি এবং ষড়যন্ত্রকারীদের দেশের ক্ষতি করার সুযোগ করে দেবে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বৈঠক রাজনীতিতে এই মুহূর্তে প্রধান ইভেন্ট বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে এই বৈঠকের গুরুত্ব অনেক বেশি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবেও এই ইভেন্টের গুরুত্ব অনেক বেশি। তাদের সাক্ষাতের মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ বৈঠকের মাধ্যমে রাজনীতির নতুন ডাইমেনশন সৃষ্টি হতে পারে। অর্থাৎ অনেক কিছুর সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। এখন এটা নির্ভর করবে আমাদের নেতারা সেটাকে কীভাবে নেবেন। বিএনপির পক্ষ থেকে তারেক রহমানকে সম্পূর্ণ এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। এই সাক্ষাৎকারে তার সাফল্য প্রার্থনা করছি।
বৈঠকের সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা না থাকলেও আগামী নির্বাচনের তারিখ নিয়ে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা এর মাধ্যমে সমাধান হতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় এসেছে। আমরা তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছি। তাদের যথেষ্ট রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। তবে, তারা প্রত্যেকে নিজ-নিজ সেক্টরে যথেষ্ট অভিজ্ঞ।
আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে বলে জাতীর উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই ঘোষণা গোটা জাতিকে হতাশ করেছে বলে অভিহিত করে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেছে বিএনপি।
শনিবার (৭ জুন) সকালে দেওয়া এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করেছে দলটি।
বিবৃতিতে বিএনপি জানায়, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ছাত্রসমাজ ও জনতার বিপুল ত্যাগের মধ্য দিয়ে জনগণের বিজয় অর্জিত হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন আয়োজনের অযৌক্তিক বিলম্ব জনগণকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে।’
এ সময় রমজান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষা এবং আবহাওয়া পরিস্থিতি ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করে বিএনপি।
এর আগে, শুক্রবার (৬ জুন) রাতে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জরুরি ভার্চুয়াল বৈঠকে বসে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম। বৈঠকের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে শনিবার ভোরে বিবৃতিটি দেওয়া হয়।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের বিষয়বস্তু বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করা হয়। সেখানে এই ঘোষণা দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করেছে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রায় দেড় দশক ধরে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত এ দেশের জনগণ। বারবার গুম, হত্যা, কারাবরণ, হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েও তারা ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।’
ঐকমত্য গঠনের কথা বললেও অন্তর্বর্তী সরকার একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিজেদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।
তারা বলেন, ‘এ কারণে বৈঠকে মনে করে এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কি না; তা নিয়ে জনগণ উদ্বিগ্ন হওয়াই স্বাভাবিক।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভাষ্যে, এপ্রিলের শুরুতে নির্বাচন দিলে তা আবহাওয়াজনিত জটিলতা ও রমজান মাসে প্রচার-প্রচারণা ও নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে, যা পরবর্তীতে নির্বাচনের সময়সূচি পেছানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
তারা বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব নয়— এমন কোনো সুস্পষ্ট যুক্তি উপস্থাপন করা হয়নি।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আরও বলা হয়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাণী দেওয়ার কথা থাকলেও প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য এক পর্যায়ে জাতির উদ্দেশ্য ভাষণে রূপ নেয়।
দীর্ঘ ওই ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস নিজেই স্বীকার করেছেন বন্দর ও করিডর ইস্য অন্তবর্তী সরকারের তিনটি নির্দিষ্ট দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।
এ ছাড়াও ওই ভাষণে ব্যবহৃত কিছু শব্দ রাজনৈতিক সৌজন্যের সীমা অতিক্রম করেছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির নেতারা।
চোখের চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ড থেকে আজ শুক্রবার রাতে দেশে ফিরছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি ব্যাংককের রুটনিন আই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী মির্জা ফখরুলের দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান শুক্রবার দুপুরে বাসস’কে জানান, দলের মহাসচিব রাতে দেশে ফিরবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘রাত ১১টায় ব্যাংকক থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন মির্জা ফখরুল। তাকে বহনকারী ফ্লাইটটি রাত ১টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
এর আগে, চোখের জটিলতাসহ অন্যান্য শারীরিক সমস্যার কারণে গত ১৩ মে রাত ২টা ৪৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ব্যাংককের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন মির্জা ফখরুল। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম।
নতুন অর্থবছরের (২০২৫-২৬) প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটকে অকার্যকর ও গতানুগতিক এবং একতরফা বলে সমালোচনা করেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি ও দরিদ্রতার মতো অর্থনৈতিক দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাগুলো সমাধানে এবারের বাজেট সুর্নিদিষ্ট কৌশল দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) বাজেট নিয়ে দলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বিএনপি সব ধরনের সহায়তা দিয়ে আসছে অন্তর্বতী সরকারকে। আমরা আশা করেছিলাম যে অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জড়িত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে বাজেট তৈরি করবে, যাতে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার ন্যূনতম স্তর তৈরি হয়।’
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী নেতা ও যুব প্রতিনিধিদের নিকট থেকে মতামত নিতে পারত।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যদি এমনটি হতো, তাহলে বাজেট একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতীক হত। এটি দেশের বিভিন্ন অংশের কণ্ঠস্বর প্রতিফলিত করত। কিন্তু সেই সুযোগটি ব্যবহার করা হয়নি। ফলে, বাজেটটি একপেশে, অংশগ্রহণমূলক নয় এবং গতানুগতিক হয়ে গেছে। এতে নতুন চিন্তা-ভাবনার প্রতিফলন নেই।’
বর্তমান বিশেষ পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য বাজেট চূড়ান্ত করার আগে এই ধরনের আলোচনা আরও জরুরি ছিল, যেহেতু ২০২৫-২৬ অর্থবছরে একটি নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসবে।
প্রস্তাবিত বাজেটের উপর তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে তাদের চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই প্রেস কনফারেন্স আয়োজন করে বিএনপি।
সোমবার (২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন। এটি জুলাই মাস থেকে কার্যকর হবে।
বাজেট সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানকে মাথায় রেখে তৈরি করা উচিত উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট সেই বৈষম্যমুক্ত সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়নি, যার জন্য আন্দোলন করা হয়েছিল।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাজেটে চলমান অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোর যেমন উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, দরিদ্রতা বৃদ্ধি, কম বেসরকারি বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের কম সুযোগের স্পষ্ট সমাধান দেওয়া হয়নি।
বিএনপির এই নেতা বাজেটের সমালোচনা করে বলেন, বাজেটটি অপ্রয়োজনীয় এবং দুর্নীতিপ্রবণ প্রকল্পগুলোতে বেশি মনোযোগ দিয়েছে, অথচ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে।
মন্তব্য