ভালো একটা চাকরি আর সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে ১৪ বছর আগে বরিশাল থেকে রাজধানী ঢাকায় এসেছিলেন মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান। ভর্তি হন তিতুমীর কলেজে। খরচ জোগাতে শুরু করেন ‘ছোটখাটো’ চাকরি। এভাবে সেখানে স্নাতক শেষে ঢাকা কলেজ থেকে করেন স্নাতকোত্তরও। এরপর পুরোদমে চাকরি শুরু করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে; করেন বিয়েও।
ওই চাকরি দিয়ে মোটামুটি ভালোই চলছিল মনিরুজ্জামানের দিনকাল। আরেকটু ভালো থাকতে সরকারি চাকরির আশায় পরিচিত একজনকে সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়েও চাকরিটা পাননি।
তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন ভালো একটা চাকরির। সেটা নিশ্চিতও হয়েছিল। কিন্তু গত বছরের প্রথম দিকে করোনা লণ্ডভণ্ড করে দেয় তার স্বপ্ন। নিশ্চিত চাকরিটাও করতে পারেননি।
এমন পরিস্থিতিতে লাজলজ্জা ভুলে এক বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ধার করে রাস্তার পাশে দেন পান-সিগারেটের দোকান। এই দোকান থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে কোনোমতে চালিয়ে যাচ্ছেন জীবনসংগ্রাম। পাশাপাশি খুঁজছেন স্বপ্নের সেই চাকরি। কিন্তু করোনার কারণে কোথাও ঢুকতে পারছেন না। এদিকে বয়সও বাড়ছে। সব মিলিয়ে চরম হতাশার মধ্যে রয়েছেন ৩২ বছর বয়সী এই যুবক।
সম্প্রতি ধানমন্ডির শংকর এলাকায় পান-সিগারেটের ওই দোকানে তার সঙ্গে কথা বলে নিউজবাংলা। মনিরুজ্জামান জানান, তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি। ছয় বছর আগে তিনি বিয়ে করেন। তার বউ-বাচ্চা থাকেন বরিশালের গ্রামের বাড়িতে বাবা-মায়ের সঙ্গে।
তিনি জানান, গত বছর করোনার শুরুতেই বন্ধুর কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা ধার করে দোকানটি দেন, ওই বন্ধুর বাসায়ই থাকছেন তিনি। মাসে ৫-৬ হাজার টাকা বাড়ি পাঠান। কিন্তু বন্ধুর পরিবার আসছে সামনের মাসেই। তাই তাকে ভাড়া বাসায় উঠতে হবে। তাহলে গ্রামে বাবা-মা ও স্ত্রী-সন্তানের জন্য টাকা পাঠাবেন কীভাবে, সে চিন্তায় যেন ‘ঘুম হারাম’ তার।
এই যুবক জানান, গত বছরের মার্চ মাসে করোনা মহামারি শুরুর আগে একটি বেসরকারি হাসপাতালের কাস্টমার সার্ভিসে রিপোর্ট ডেলিভারিম্যান পদে চাকরি করতেন। ওই চাকরি দিয়ে মোটামুটি ভালোই চলছিল। তবে গত বছর লকডাউনের আগে হঠাৎ রাজশাহীতে বদলি করায় সেই চাকরি ছেড়ে দেন।
তিনি বলেন, ‘সে সময় রাজধানীর আরেকটি হাসপাতালে অন্য একটা চাকরি হয়েই গিয়েছিল। এপ্রিলে সেখানে যোগ দেয়ারও কথা ছিল। কিন্তু মার্চে লকডাউন শুরু হলে তারা ওই নিয়োগ স্থগিত করে দেয়, আর লোক নেয়নি।’
মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এরপর আমি চরম হতাশায় পড়ে যাই। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। পরে আমার এক কাছের বন্ধুর পরামর্শে তার কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা ধার করে এই পান-সিগারেটের দোকান দিই।
‘লজ্জা নিয়ে বসে থাকলে তো আর আমার জীবন চলবে না। কিছু একটা তো আমাকে করতেই হবে। গ্রামের বাড়ি স্ত্রী ও দেড় বছর বয়সী মেয়ে আছে। তারা থাকছে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সঙ্গে। তাদের তো বাঁচাতে হবে।’
‘করোনা হয়ে একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছে’
করোনার কারণেই বেকার হয়ে রাস্তার পাশে দোকানদারি করলেও একদিক থেকে ভালোই হয়েছে বলে মনে করেন এই যুবক।
বলেন, ‘করোনা হয়ে একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছে। মাস্ক পরে দোকানদারি করি। রাস্তা দিয়ে অনেক পরিচিত চলে যায়। কেউ কলেজের বন্ধু, কেউ দেশের বাড়ির পরিচিত, আরও কত পরিচিত আছে। মাস্ক পরা থাকার করণে তারা আমাকে চিনতে পারে না। আর চিনলেইবা কী? আমার কাজ আমি করি। এই কাজ করেই জীবন চালাই।’
‘সবাই বলছে, করোনায় কোনো নিয়োগ হবে না’
এভাবে নিজেকে একপ্রকার সান্ত্বনা দিলেও ভেতরে ভেতরে সারাক্ষণই যে দুশ্চিন্তা করেন, চরম হতাশায় ভোগেন, তাও তিনি জানিয়েছেন নিউজবাংলার সঙ্গে আলাপকালে।
মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এখন খুব হতাশার মধ্যে আছি ভাই। আমার বয়স ৩২ বছর চলছে। ৩৫ বছর পর আর কোনো বেসরকারি চাকরিও হবে না আমার। এক জায়গায় ইন্টারভিউ দিয়েছি, চাকরি হয়নি। আরও কয়েক জায়গায় কথা বলেছি। সবাই বলছে, করোনার ভেতরে কোনো নিয়োগ হবে না।
‘আর এই করোনা কবে যাবে, সেটাও তো বলা যাচ্ছে না। লাজলজ্জা ভুলে বেঁচে থাকার তাগিদে এই ব্যবসা হয়তো কিছু দিন করা যাবে। কিন্তু সারা জীবন তো আর করা যাবে না। সব মিলিয়ে চরম হতাশার মধ্যে আছি, ভাই।’
‘কেউই জানত না পান-সিগারেটের ব্যবসা করি’
লজ্জায় প্রথম দিকে পরিবারের কাউকেও পান-সিগারেটের দোকান দেয়ার কথা জানাতে পারেননি এই যুবক।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে আমার পরিবারের কেউই জানত না আমি পান-সিগারেটের ব্যবসা করি। সবাই জানত একটা বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি করি। কিন্তু কত দিন আর লুকানো যায় বলেন? তাই পাঁচ মাস আগে বউকে এই ব্যবসার কথা প্রথম জানাই। আস্তে আস্তে মা-বাবাসহ পরিবারের সবাই জেনে যায়।’
মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ছয় বছর আগে বিয়ে করে সংসার গড়ি। দেড় বছরের একটা মেয়ে আছে আমার। বউ আর মেয়ে আমার মা-বাবার সঙ্গে গ্রামের বাড়ি থাকে। আমরা তিন ভাই ও দুই বোন। আমি সবার ছোট।’
কেমন চলছে দোকান, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন তিন-চার হাজার টাকার বেচাকেনা হয়। সেখান থেকে চার-পাঁচ শ টাকা লাভ থাকে। এই টাকা থেকে প্রতি মাসে বাড়িতে পাঁচ-ছয় হাজার পাঠাই। বাকি টাকা দিয়ে আমি ঢাকায় চলি। এর মধ্যে যে টাকা জমাতে পারি, দুই-তিন মাস পরপর বাড়ি গেলেই তা শেষ হয়ে যায়।’
‘বড় চিন্তা সামনের মাস থেকে থাকব কই’
মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ঢাকায় আমি আমার ওই বন্ধুর বাসায় থাকি। সে আমার সবই জানে। তাই আমার কাছ থেকে বাসা ভাড়া নেয় না। আমি শুধু মাঝে মাঝে বাজার করে দিই। কিন্তু কয়েক দিন পরেই বন্ধু তার পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে আসবে। তাই তার বাসা আমাকে ছেড়ে দিতে হবে। এখন বড় চিন্তা সামনের মাস থেকে আমি কই থাকব। এখন তো বাড়ি ভাড়া দেয়া লাগে না। অন্যখানে গেলে তো বাড়ি ভাড়া, খাওয়া খরচ সব লাগবে। তখন চলব কীভাবে?’
শিক্ষাজীবন সম্পর্কে জানতে চাইলে এই যুবক বলেন, ‘এসএসসিতে এ গ্রেড পেয়েছি, এইচএসসিতে বি গ্রেড পেয়ে তিতুমীর কলেজে ইসলামিক স্টাডিজে অনার্সে ভর্তি হই, সেকেন্ড ক্লাস পাই। পরে মাস্টার্স করার জন্য ঢাকা কলেজে ভর্তি হই। ২০১৩ সালে ফার্স্ট ক্লাস নিয়ে বের হই।’
‘সব শেষ হয়ে যায় ২ বছর আগেই’
মনিরুজ্জামান জানান, ঢাকায় পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করে কিছু টাকা সঞ্চয় করেছিলেন। সরকারি এক হাসপাতালে চাকরির আশায় সেই সঞ্চয় এবং ধার করে মোট সাড়ে তিন লাখ টাকা দিয়েছিলেন এক পরিচিতকে। কিন্তু সেই চাকরি হয়নি, টাকাও ফেরত পাননি। পেয়েছেন শুধু ঋণের বোঝা।
তিনি বলেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে যায় দুই বছর আগেই। পড়াশোনা করা অবস্থায় চাকরি করে কিছু টাকা জমাইছিলাম। হঠাৎ পরিচিত একজন আমার কাছে প্রস্তাব দেয় সাড়ে তিন লাখ টাকা দিলে আগারগাঁওয়ের সরকারি চক্ষু হাসপাতালে একটা চাকরি দিয়ে দেবে। আমি লোভে পড়ে আমার জমানো কিছু টাকা আর ধারদেনা করে তাকে মোট সাড়ে তিন লাখ টাকা দিই। এরপর সেই চাকরিও আমার হলো না, আর সেই টাকাও পাইলাম না। তখনই আমার সবকিছু শেষ হয়ে যায়।’
‘মাস্ক পরা ছবি তোলেন, ভিডিও কইরেন না ভাই’
মনিরুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাই, আমার ভিডিও কইরেন না। রিপোর্টের জন্য ছবি দরকার হলে মাস্ক পরা ছবি দিয়েন।’
এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বোঝেনই তো ভাই। পরিবারের লোকজন জানে আমি পান-সিগারেট বেচি। কিন্তু বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন, এলাকার মানুষজন তো জানে না। আমার সহপাঠীদের কেউ সরকারি কর্মকর্তা, কেউ সরকারি শিক্ষক, কেউ ব্যাংকার। এভাবে রাস্তায় পান-সিগারেট বেচতে দেখলে তারাও অনেক কষ্ট পাবে।’
আরও পড়ুন:রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে গত দুই দিনে ২ হাজার ২৪৬টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৯৯টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ঢাকা মহানগরীতে দরিদ্র ও অসচ্ছল মানুষের জন্য ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে আজ সকাল থেকে।
ঢাকার সচিবালয়ের সামনে থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, ধোলাইপাড়, ধোলাইখাল, রামপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন নির্বাচিত ডিলাররা।
প্রতিটি ট্রাক থেকে দরিদ্র একটি পরিবার ২ কেজি ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল ন্যায্য মূল্যে কিনতে পারছেন।
টিসিবির উপ পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) উদ্যোগে রোববার থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ভর্তুকি মূল্যে রাজধানীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। পণ্যগুলো হল ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল।
জানা যায়, ঢাকা মহানগরীতে আজ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন (শুক্রবার ছাড়া) টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৫টি, গাজীপুর মহানগরীতে ৬টি, কুমিল্লা মহানগরীতে ৩টি এবং ঢাকা জেলায় ৮টি, কুমিল্লা জেলায় ১২টি, ফরিদপুর জেলায় ৪টি, পটুয়াখালী জেলায় ৫টি ও বাগেরহাট জেলায় ৫টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে আজ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১৯ দিন (শুক্রবার ছাড়া) পণ্য বিক্রি করা হবে।
দৈনিক প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫শ’ জন সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। একজন ভোক্তা একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২ লিটার ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল কিনতে পারবেন। ভোজ্যতেল ২ লিটার ২৩০ টাকা, চিনি ১ কেজি ৮০ টাকা এবং মসুর ডাল ২ কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হবে। যে কোনো ভোক্তা ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে ধাক্কামারা চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জুথী আক্তার শ্রাবন্তী ওরফে যুথী আক্তার জ্যোতি ওরফে লিমা আক্তার (২২) এবং শাহনাজ বেগম (৪২)।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে তেজগাঁও থানাধীন বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আসামিরা বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের সপ্তম তলার লিফটের সামনে কৌশলে এক নারীকে ধাক্কা মেরে তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা চুরি করে। এ সময় সন্দেহ হলে তিনি তার ব্যাগ পরীক্ষা করে টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপর ভুক্তভোগী ও তার স্বামী চিৎকার দিলে শপিং মলের নিরাপত্তা প্রহরীরা এগিয়ে আসেন। তাদের সহায়তায় ওই দুই নারীকে আটক করা হয়। তবে তাদের সঙ্গে থাকা অপর দু’জন কৌশলে পালিয়ে যান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরও দুই নারী ভুক্তভোগী জানান, তাদের যথাক্রমে এক লাখ টাকা ও ৪.৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণের টিকলি (মূল্য আনুমানিক ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা) এবং ১০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা চুরির কথা স্বীকার করেছে।
তেজগাঁও থানা পুলিশ ও নারী পুলিশের সহায়তায় আসামি যুথী আক্তারের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে চুরি হওয়া নগদ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং স্বর্ণের টিকলি উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, যুথী আক্তার আন্তঃজেলা পকেটমার চক্রের নেতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানানো হয়।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ২ হাজার ১৭২টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ২৮৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৭৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
রাজধানী ঢাকার বস্তির শিশুদের দেহে নীরব ঘাতক সিসার বিপজ্জনক মাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এসব শিশুদের ৯৮ শতাংশের দেহে প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসা শনাক্ত করা হয়েছে।
আইসিডিডিআরবির (আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ) এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার আইসিডিডিআরবির সম্মেলনকক্ষে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) শিশুদের দেহে প্রতি লিটারে ৩৫ মাইক্রোগ্রামের উপস্থিতিকে উদ্বেগজনক মাত্রা বলে বিবেচনা করে। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সিসার কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই। সিসার যেকোনো মাত্রাই শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
আইসিডিডিআরবি ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে থাকা বস্তির শিশুদের ওপর গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। ওই গবেষণায় ২ থেকে ৪ বছর বয়সী ৫০০ শিশুর রক্তের নমুনা নেওয়া হয়।
আইসিডিডিআরবির অ্যাসিস্ট্যান্ট সায়েন্টিস্ট ডা. জেসমিন সুলতানা জানান, এসব শিশুর রক্তে প্রতি ডেসিলিটারে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে তাদের মধ্যে অর্ধেকের শরীরের এই মাত্রা ছিল ৬৭ মাইক্রোগ্রামের বেশি। গবেষণায় দেখা যায়, সিসা পোড়ানো, গলানো বা রিসাইক্লিংয়ের (পুনঃচক্র) মতো কাজগুলো যেখানে হয়, সেসব এলাকার শিশুদের মধ্যে সিসায় আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি।
উদাহরণ দিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, গবেষণায় চিহ্নিত সিসানির্ভর শিল্পস্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী শিশুদের রক্তে সিসার মাত্রা ছিল পাঁচ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে বসবাসকারী শিশুদের তুলনায় ৪৩% বেশি। সিসার অন্যান্য উৎসের মধ্যে রয়েছে ঘরের ভেতর ধূমপান, দূষিত ধূলিকণা, সিসাযুক্ত প্রসাধনসামগ্রী ও রান্নার পাত্র।
এই আলোচনা সভা থেকে লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি বানানো বা রিসাইক্লিং করার কারখানা বা স্থান, অথবা যেসব কারখানা বা স্থাপনায় সিসা গলানো বা পোড়ানো হয়, এমন সিসানির্ভর শিল্পস্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। কারণ, এসব প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিলে বা দূষণ কমানোর ব্যবস্থা নিলে সেসব এলাকার শিশুদের সিসা দূষণ থেকে বাঁচানো সম্ভব।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আইসিডিডিআরবির রিসার্চ ট্রেইনি ডা. সানজিদা তাপসি আদিবা। স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিডিডিআরবির হেলথ সিস্টেম অ্যান্ড পপুলেশন স্টাডিজ ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ পরিচালক ড. সারাহ স্যালওয়ে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ১২ হাজার পিস ইয়াবা ও ইয়াবা পরিবহনে ব্যবহৃত বাসসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-বিভাগ (ডিবি)। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মো. বাবু মিয়া (৩৬) ও মো. রাকিবুল হাসান (২৮)। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার ডিবি-মতিঝিল বিভাগ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কতিপয় মাদক কারবারি একটি যাত্রীবাহী বাসে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ যাত্রাবাড়ীর আসমা আলী সিএনজি রিওয়েলিং অ্যান্ড ওয়ার্কশপ লি. এর পূর্ব পাশে হামজা বডিবিল্ডারের সামনে অবস্থান করছে বলে জানতে পারে।
পরে দুপুর পৌনে ৩ টার দিকে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা পরিবহনে ব্যবহৃত একটি বাসসহ বাবু ও রাকিবুলকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ১২ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দীর্ঘদিন যাবৎ কক্সবাজার সীমান্ত এলাকা থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন মাদক কারবারিদের কাছে বিক্রি করত বলে স্বীকার করে।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ৩ হাজার ১৯২টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ২৬৭টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৮৪টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
মন্তব্য