× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বিশেষ
তালেবান শাসন চলা এলাকায় ৫ দিন
google_news print-icon

তালেবান শাসন চলা এলাকায় ৫ দিন

তালেবান-শাসন-চলা-এলাকায়-৫-দিন
সংবাদ ও কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সভিত্তিক সাইট ভাইস-এর সংবাদকর্মীদের একটি দল সম্প্রতি আফগানিস্তানের তালেবাননিয়ন্ত্রিত ওয়ারদাক রাজ্যে পাঁচ দিন কাটিয়েছে। তাদের এই সফরের অভিজ্ঞতা উঠে এসেছে অ্যাডাম ডেসিডারিওর প্রতিবেদনে।

আফগানিস্তানে ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর হামলার পর পতন হয় তালেবান সরকারের। ওই বছরের ১৩ নভেম্বর কাবুল থেকে পিছু হটে তালেবান বাহিনী। তবে এর পরের ২০ বছরেও দেশটি থেকে উৎখাত করা যায়নি কট্টোর এই গোষ্ঠীকে। বরং সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পর ফের নতুন অঞ্চলের দখল নিচ্ছে তালেবানরা।

আফগানিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। দেশটির ৪০৭টি ডিস্ট্রিক্টের মধ্যে ৭০টিতে চলছে এই গোষ্ঠীর শাসন।

সংবাদ ও কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সভিত্তিক সাইট ভাইস-এর সংবাদকর্মীদের একটি দল সম্প্রতি আফগানিস্তানের তালেবাননিয়ন্ত্রিত ওয়ারদাক রাজ্যে পাঁচ দিন কাটিয়েছে। তাদের এই সফরের অভিজ্ঞতা উঠে এসেছে অ্যাডাম ডেসিডারিওর প্রতিবেদনে। নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন রুবাইদ ইফতেখার

ঘড়িতে ভোর ৫টার একটু বেশি। কোনো এক শুক্রবার এক পুরোনো টয়োটা করোলার পেছনের সিটে চেপে, লুকিয়ে আমরা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছি। গাড়ির সামনে বসা স্থানীয় গাইড আমাদের তিনজনের দলটিকে ঘাড় ঘুরিয়ে পরখ করে নেন যে, তালেবাননিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানে দুই দিনের ভ্রমণের জন্য আমাদের পোশাক ঠিক আছে কি না।

আমাদের গাড়িচালক স্থূল রসবোধসম্পন্ন, সাদা দাড়ির, বেঁটে ও গাট্টাগোট্টা শরীরের এক আফগান। রিয়ার ভিউ মিররে আমার দিকে তাকিয়ে তিনি জোরে বলে ওঠেন, ‘কান্দাহার’।

আমার পরনে ছিল একটা রোদে জ্বলে যাওয়া সালোয়ার-কামিজ, একটা সবুজ রঙের শাল আর তার সঙ্গে ম্যাচ করা টুপি, যাকে এখানে বলা হয় সিন্ধি। আর আমাদের দলের একমাত্র নারী সদস্য ভাইসের নিউজ করেসপনডেন্ট হিন্দ হাসানের পরনে ছিল তালেবানরা ঘরের বাইরে বের হওয়ার সময় নারীদের যেমন মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে রাখতে বলে, তেমনভাবে ঢাকা নীল রঙের আফগানি বোরকা।

তালেবান শাসন চলা এলাকায় ৫ দিন

আমাদের গন্তব্য ওয়ারদাক রাজ্য। এটি মধ্য আফগানিস্তানের একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, কারণ এটাই রাজধানী কাবুলে ঢোকার রাস্তা। ওয়ারদাকে যাওয়ার জন্য আমরা যুদ্ধবিধ্বস্ত ন্যাশনাল হাইওয়ে ওয়ান ধরে এগোচ্ছিলাম। কাবুলকে এটি তালেবানের জন্মস্থান কান্দাহারের সঙ্গে যুক্ত করে।

আমাদের সামনেই ধীরেসুস্থে এগোতে থাকা আফগান ন্যাশনাল আর্মির (এএনএ) বেশ কিছু হামভি জিপ। কাছের কোনো পোস্টে সাপ্লাই নিয়ে যাচ্ছিল ওগুলো। পরের এক ঘণ্টায় আমরা যুদ্ধ করছে না, কিন্তু যুদ্ধের মধ্যে আটকে যাওয়া আফগান বেসামরিক নাগরিকদের জীবন কেমন হয়, সেটার ভয়াবহ কিছু ঝলক দেখতে পেলাম।

জানতে পারলাম, তালেবানরা এএনএকে আক্রমণের চেষ্টা করছে। সৈন্যরা আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য রাস্তার বাস ও আমাদের মতো গাড়ির লম্বা সারির মধ্যে লুকিয়ে থাকে।

এই কৌশল সরাসরি তালেবানদের কাছ থেকেই ওদের শেখা। আমরা এগোতে শুরু করার পরই সৈন্যরা সবুজ ঝোপের দিকে রাইফেল তাক করে গুলি করতে শুরু করে। এ ধরনের ঝোপ তালেবানরা লুকানোর জন্য ব্যবহার করে।

তালেবান শাসন চলা এলাকায় ৫ দিন

তালেবানদের দেশে

আমাদের স্থানীয় গাইড জানালেন, ‘এই চেক পয়েন্টের পর থেকে সবকিছুই তালেবানদের অধীনে।’

এখান থেকে মোটরসাইকেলে চড়া একদল তালেবান যোদ্ধা আমাদের পথ দেখাবেন। কাবুলে তারা আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের অনুমতি দেয়নি। আর যেকোনো ধরনের ট্র্যাকিং ডিভাইস ব্যবহারে ছিল কড়া নিষেধ।

মূল সড়ক থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের ওপর ছোট একটা গ্রাম আরব শাহ খেল। ওখানকার প্রায় পূর্ণ আর বিস্তৃত কবরস্থান খুব ভালোভাবে মনে করিয়ে দিচ্ছিল আমেরিকার দীর্ঘতম যুদ্ধের প্রকৃত মূল্য। ২০০১ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে এই যুদ্ধে ৭১ হাজার আফগান নাগরিক নিহত হয়েছেন।

নিজের বোন নাসিবাহর কবরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ২৫ বছরের আমরুল্লাহ ক্বানি বলেন, ‘এখানে প্রতিদিনই যুদ্ধ হয়। যখন ঘুমিয়ে থাকি, তখন বাড়িতে গুলি এসে পড়ে আর বিস্ফোরণ হয়।’

নিজ বাড়িতে মর্টারের আঘাতে নিহত হন নাসিবাহ। আমিরুল্লাহ বলেন, ‘আমার বোন খুবই হৃদয়বান ও বুদ্ধিমতী ছিলেন। দুর্ভাগ্যজনক যে এমনটা ওর সঙ্গে হয়েছে।’

কাছেরই আরেকটি গ্রাম মালি খেলের ২৮ বছরের বাসিন্দা সাফিউল্লাহ অশ্রুভরা চোখে স্থানীয় এক মসজিদ ধ্বংসের কথা আমাদের বলেন।

‘তারা (আমেরিকানরা) আমাদের কোরআনকে অপমান করেছে। মসজিদকে অপমান করেছে। এটা আমাদের কাছে মক্কার মতো ছিল।’

তালেবান শাসন চলা এলাকায় ৫ দিন

মসজিদের তৃতীয় তলায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। ধর্মীয় নেতারা শিশুদের ধ্বংসস্তূপে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কোরআন ও অন্যান্য ধর্মীয় বইয়ের টুকরাগুলো জড়ো করতে বিভিন্নভাবে নির্দেশনা দিচ্ছেন।

গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠদের একজন নেমাতুল্লাহ বলেন, ‘আমি সব মাফ করে দিতে পারব, কিন্তু এটা না। এখানেই আমার হৃদয় পড়ে আছে, আর এটাতেই আমি বিশ্বাস করি। এখানে কোনো তালেবান দেখছেন? আল-কায়েদা? নেই!’

গ্রামবাসী দিয়ে ঘিরে থাকা অবস্থায় সাফিউল্লাহ জানান, মাঝরাতে মাথার ওপরে ড্রোনের শব্দে তার ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। এর একটু পরই মসজিদে আঘাত হানা হয়। ‘এটা শান্তি নয়’, বোমা বিস্ফোরণের জায়গা থেকে পাওয়া একটা শার্পনেলের টুকরা দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা সন্ত্রাস।’

আমরা আগ্নেয়াস্ত্র বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বোমার অংশবিশেষের ছবি দেখাই। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ধাতব খণ্ডটি জিবিইউ টুয়েলভ মডেলের লেজার গাইডেড বোমার ডানার অংশ। এমকে এইটি টু নামেও পরিচিত বোমাটি আফগান ও আমেরিকান দুই দেশের যুদ্ধবিমানই ব্যবহার করে। এতে আঁকা চিহ্ন দেখে বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আগ্নেয়াস্ত্র নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান রেথিওন গত বছরের মার্চে বোমাটি বানিয়েছে। বানানো হয়েছে দোহায় তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তিচুক্তির এক মাস পর।

ভাইস নিউজকে দেয়া এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী মালি খেলে আক্রমণের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তবে বারবার অনুরোধের পরেও আফগান সেনাবাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সম্প্রতি সংঘর্ষের ঘটনা বেড়ে যাওয়া নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তালেবানের সিভিল ক্যাজুয়াল্টিস প্রিভেনশন অ্যান্ড কমপ্লেইন্টস কমিশনের প্রতিনিধি কমান্ডার খাদেম বলেন, “এগুলো সবই কাবুলের ‘পুতুল সরকার’-এর কাজ। কাবুল সরকার এলাকায় তালেবানের উপস্থিতি আছে কি না, তা না জেনেই আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে।’

তালেবান শাসন চলা এলাকায় ৫ দিন

খাদেম রাতের বেলা আমাদের নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখছিলেন। একটি বৈরী এলাকায় আমরা পাশ্চাত্য সাংবাদিক, আর তাই তালেবানের অন্য উগ্রবাদী সদস্যদের কাছে থেকে আমাদের দূরে রাখার নির্দেশনা ছিল তার ওপর।

আমরা এক এপিক যাত্রা শুরু করি। নদীর ওপর দিয়ে, পাহাড়ের কিনারা ধরে কর্দমাক্ত চার ঘণ্টার এক যাত্রা শেষে দুর্গম এক পাহাড়ের সেফহাউসে পৌঁছাই, যেখানে আমাদের রাতে থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল।

পরদিন সকালে বান্দ-ই-চাক জেলার সামরিক প্রধান কমান্ডার খাতাবের সঙ্গে দেখা হয়। কালো কাপড় পরা ও কালাশনিকভ হাতে চার যোদ্ধাকে পাশে নিয়ে থাকা খাতাব আমাদের উপস্থিতিতে বিরক্ত হচ্ছিলেন, আর সাক্ষাৎকারের বেশির ভাগ সময়ে চুপ করে ছিলেন।

জেলার এক সামরিক উপ-প্রধান নাউয়িদ বলেন, ‘আমরা আমেরিকান গণতন্ত্র চাই না। আমেরিকা এখানে গণতন্ত্রের যে নীতি প্রয়োগ করেছে এবং জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে তা কেবল আফগানিস্তানের জনগণের ক্ষতিই করবে, আর কিছু নয়।’

আমেরিকান সেনারা এক মাসের মধ্যে আফগানিস্তান ছাড়তে যাচ্ছে। অনেক আফগানের আশঙ্কা, তালেবান তার পুরোনো পথে ফিরে আসবে, ইসলামি শরিয়াহ আইনের উগ্র ব্যাখ্যায় নারীর অধিকার সীমাবদ্ধ করবে ও সমাজকে পরিচালনা করবে। এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে কমান্ডার খাতাব দ্রুত প্রশ্নটি এড়িয়ে যান।

‘শুটিং বন্ধ করুন। বন্ধ করুন,’ হাসতে হাসতে বলে ওঠেন খাতাব। মাঝপথে সাক্ষাৎকার বন্ধ করে দেন এবং আমাদের ক্যামেরা বন্ধ করে কাবুল ফিরে যেতে বলেন।

তালেবান শাসন চলা এলাকায় ৫ দিন

তালেবানের অধীনে জীবন

ছয় মাস পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিষেকের প্রাক্কালে তালেবানদের সঙ্গে তিন দিন কাটানোর জন্য আমাদের আবার ওয়ারদাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

এবার পরিষ্কার ছিল যে, নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জোর করে ক্ষমতা ফিরে পেতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী দেশজুড়ে বিস্তৃত অঞ্চল দখলের অভিযান আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। ধারণা অনুযায়ী, গোষ্ঠীটি দেশের ৫০ শতাংশেরও বেশি অংশে নিয়ন্ত্রণ করছে বা দখলের চেষ্টা করছে। ৭০টিরও বেশি জেলা তাদের কবজায়। প্রতি সপ্তাহে এই সংখ্যা বাড়ছে।

তালেবান যোদ্ধা ও বোমা কারিগর মজিবুল রাহমান বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে যত কনভয় আসুক না কেন, আমরা তাদের জন্য আইইডি পেতে রাখি।’ সোডার বোতলে বোমা ভরে আফগান সৈনিকদের হত্যা করে গর্বিত মজিবুল যোগ করেন, ‘আমি তাদের টুকররা করে উড়িয়ে দিয়েছি। একেবারে আকাশে উড়িয়েছি।’

তালেবান ও আফগান সরকারের মধ্যে শান্তি আলোচনার অচলাবস্থায় এবং আমেরিকান বাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রগুলোকে দ্রুত ছেড়ে দিতে থাকায় তালেবানরা তাদের পূর্ববর্তী শাসনব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার একেবারে কাছাকাছি আছে। যে ব্যবস্থা আমেরিকান নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের মাধ্যমে ২০০১ সালে ক্ষমতা থেকে তাদের হটে যাওয়ার আগে ছিল।

‘আফগানিস্তান তাদের (আমেরিকানদের) তৈরি ব্যবস্থায় চলে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়’, বলছিলেন ২০ জন যোদ্ধা দিয়ে ঘিরে থাকা কমান্ডার হামাস। পাহাড়ের ওপর থেকে টাঙ্গি উপত্যকার দিকে তাকিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যখন তারা আমাদের বলবে, দেশে ইসলামিক শাসনব্যবস্থা কায়েম হচ্ছে, তখনই আমরা অস্ত্র জমা দিয়ে ইসলামিক শাসনব্যবস্থার অংশ হতে প্রস্তুত।’

তালেবানদের দাবি, তারা আগের মতো নারীদের অধিকার বঞ্চিত করা, মেয়েদের স্কুলে যেতে বাধা দেয়া, চোরদের হাত কেটে শাস্তি দেয়া, প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত করা ও ব্যভিচারের দায়ে নারীদের পাথর ছুড়ে হত্যা করার মতো নৃশংস গোষ্ঠী আর নেই।

কমান্ডার হামাসের দাবি, ‘সত্যি কথা হচ্ছে, আফগানিস্তানে বসবাসকারী মুসলিম পুরুষ ও নারীর ইসলামিক ব্যবস্থাকে ভয় পাওয়ার কারণ নেই, কারণ ইসলামিক শাসনব্যবস্থা শান্তি, একতা ও উন্নয়ন নিয়ে আসে। ইনশাল্লাহ সবার অধিকারই রক্ষা করা হবে এবং সবাই নিরাপদে থাকবেন।’

আমাদের তালেবান গাইড দেখাতে উদগ্রীব ছিলেন যে তারা কতটা বদলে গেছেন। তারা গ্রামের একটা বাজারে আমাদের নিয়ে যান যেখানে তরুণ যুবকরা প্রকাশ্যে ধূমপান করছিল, ভলিবল খেলছিল। এসব কর্মকাণ্ড আগে তালেবানরা নিষিদ্ধ করেছিল, কিন্তু এখন কিছু কিছু এলাকায় তারা এসবের অনুমতি দিয়েছে।

এটাই হয়তো তারা আমাদের দেখাতে চেয়েছিল। তবে এটি স্পষ্ট যে, প্রাত্যহিক জীবনের অনেক দিকেই কোনো বদল আসেনি। বাইরে খুব বেশি নারীর দেখা মেলে না; টেলিভিশন দেখা, গান শোনা ও খেলাধুলা করা এখনও নিষিদ্ধ; আর এই সামাজিক নিয়মকানুন গ্রামে ঘুরে ঘুরে কঠোরভাবে কার্যকর রাখে সশস্ত্র যোদ্ধারা, যারা ভয়, সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের ওপর নির্ভর করে শাসন করছে।

তালেবান শাসন চলা এলাকায় ৫ দিন

শরিয়াহ আইন

তালেবান আন্দোলনের মূল ভিত্তি এবং এর রাজনৈতিক লক্ষ্য সব সময় ছিল শরিয়াহ আইনের মৌলবাদী ব্যাখ্যার ভিত্তিতে একটি ইসলামি রাষ্ট্র গঠন করা। শরিয়াহ আইন অ্যাডহক আদালত প্রণীত এক ধরনের ইসলামিক আইন।

এর ব্যাখ্যায় তালেবান কমান্ডার তাওয়াকুল বলেন, ‘সামরিক দায়িত্বের সঙ্গে আমাদের নাগরিক দায়িত্বও আছে। যখন আমরা কোনো অপরাধের ব্যাপারে জানতে পারি, সেই অপরাধী বা চোরকে ধরার পর কোনো জোরজবরদস্তি ছাড়া আমরা তাদের বক্তব্য শুনি, যাতে করে সে তার অপরাধ স্বীকার করতে পারে।’

এখানে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে। কিছু ক্ষেত্রে তালেবান কমান্ডারদের তাদের পছন্দমতো শাস্তি কার্যকর করার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।

তাওয়াকুল যোগ করেন, ‘তার স্বীকারোক্তির পর বিচারকাজ শুরু হয়। আমাদের আদালত একটা পঞ্চায়েতের মতো। সেখানে বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকেন মুফতি ও প্রশাসনিক পর্যায়ের মতো বিজ্ঞ ব্যক্তিরা। তারা একসঙ্গে আলোচনায় বসেন। তাদের নীতিগত রায় গ্রন্থের ওপর ভিত্তি করে করা হয় এবং কোরআন অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হয়।’

এদিন স্থানীয় এক ভেড়া পালকের কাছ থেকে ভেড়া চুরি ও অন্যান্য অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির প্রাথমিক শুনানি দেখার জন্য আমাদের নজিরবিহীন ছাড় দেয়া হয়। অভিযুক্তকে কয়েক দিন আগে গ্রেপ্তার করে কোনো আইনি প্রতিনিধি ছাড়াই তালেবানদের কারাগারে রাখা হয়েছে।

মামলার শুনানিতে নেতৃত্ব দেন ২৭ বছরের এক তালেবান কমান্ডার। অভিযুক্তকে ঘিরেছিলেন একাধিক তালেবান যোদ্ধা। তাকে কমান্ডারের মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়।

তাওয়াকুলের চড়ে মাথার টুপি পড়ে যায় অভিযুক্ত ব্যক্তিটির। তাওয়াকুল তাকে বলেন, ‘আসল ঘটনা স্বীকার করো। নাহলে আমরা তোমাকে পেটাব! কোন ভেড়াটি নিয়েছ? কোথায় নিয়েছ? তুমি চুরি করেছ?... ওভাবে বলার দরকার নেই, বল যে তুমি চুরি করেছ।’

অভিযুক্ত স্বীকার করে, ‘আমি চুরি করেছি।’

লোকটির মুখের ওপরে মোবাইল ফোন ধরে তাওয়াকুল জিজ্ঞাস করেন, ‘এটা ছাড়া আর কী কী চুরি করেছ?’

‘আর কিছু করিনি’, অনুনয়ের সুরে বলে ওঠে লোকটি। ‘যদি প্রমাণিত হয়, আমার হাত কেটে ফেলেন।’

তালেবান শাসন চলা এলাকায় ৫ দিন

প্রাথমিক শুনানি শেষে লোকটির ক্যামেরায় দেয়া জবানবন্দি নিশ্চিতভাবেই তার ভাগ্য নির্ধারণ করে ফেলবে। এখন ভ্রাম্যমাণ তালেবান বিচারক ওয়ারদাকে আসবেন চূড়ান্ত রায়ের জন্য। এ ক্ষেত্রে সেটা হতে পারে জনসমক্ষে চাবুক মারা বা হাত কেটে ফেলা।

তাওয়াকুল বলেন, ‘আমরা যা কিছু শিখেছি, আমাদের সব পদক্ষেপ, আচরণ শরিয়াহ মোতাবেক এবং এর সঙ্গে একমত। এর বাইরে আর কিছু নেই।’

বিচারকে নিষ্ঠুর মনে হলেও স্থানীয়দের মধ্যে এ ধরনের দ্রুত বিচারের প্রতি এক রকম আস্থা রয়েছে। কারণ তারা একে আফগান সরকারের বিচারব্যবস্থার চেয়ে কম কলুষিত মনে করে।

এটি পরিষ্কার যে বিচারের এই ধারার বাস্তবায়ন তালেবানরা কাবুলসহ পুরো আফগানিস্তানে দেখতে চায়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তালেবানরা আফগান সরকার ও পুরো দেশকে তা অনুসরণ করতে বাধ্য করতে পারে কি না?

তাওয়াকুল বলেন, ‘(আফগান সরকারের সঙ্গে) সমঝোতার আগ পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।’

আরও পড়ুন:
পাকিস্তানে চীনা রাষ্ট্রদূতই কি হামলার লক্ষ্য
পাকিস্তানে অভিজাত হোটেলে গাড়িবোমায় নিহত ৪
যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা আফগানিস্তান ছাড়বে ৯/১১-এর আগে
বহুবিবাহ না করতে নেতাদের আদেশ তালেবানের
আফগান সরকারের সঙ্গে তালেবানের শান্তি আলোচনা শুরু

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বিশেষ
Israel has approved the construction of four thousand new housing on the west bank

পশ্চিম তীরে চার হাজার নতুন আবাসন নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল

পশ্চিম তীরে চার হাজার নতুন আবাসন নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল

পশ্চিম তীরে চার হাজারের বেশি নতুন আবাসন নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েল। কট্টর ডানপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ গত বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। আলজাজিরার খবরে বলা হয়, ইসরায়েলি বসতিবিরোধী পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘পিস নাউ’ জানিয়েছে— অনুমোদিত ৪ হাজার ৩০টি আবাসন ইউনিটের মধ্যে ৭৩০টি নির্মিত হবে আরিয়েলের পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যমান বসতিতে এবং বাকি ৩ হাজার ৩০০টি স্থাপন করা হবে মা’আলে আদুমিম এলাকায়।

ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী স্মোট্রিচ জানান, নতুন বসতি প্রকল্পের জন্য শিগগিরই বাড়ি নির্মাণের দরপত্র অনুমোদন করা হবে। এর লক্ষ্য জেরুজালেম ও ইসরায়েলি বসতি মা’আলে আদুমিমের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন। তিনি আরও দাবি করেন, এই উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনাকে চিরতরে শেষ করবে। তার ভাষায়, ‘এমন কিছু নেই যা স্বীকৃতি পাবে, আর এমন কেউ নেই যাকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। আজ যদি কেউ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করে, আমরা মাটিতেই তার জবাব দেব।’

ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পরিকল্পনাকে ‘গণহত্যা, বাস্তুচ্যুতি এবং দখলদারিত্বের সম্প্রসারণ’ হিসেবে নিন্দা করেছে। তাদের মতে, এটি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ সম্পর্কিত বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই বসতিগুলো কার্যকর হলে ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে বড় বাধা তৈরি হবে। পরিকল্পিত এলাকা অধিকৃত পশ্চিম তীরকে উত্তর ও দক্ষিণে ভাগ করে দেবে, ফলে পূর্ব জেরুজালেমকে বেথলেহেম ও রামাল্লার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরের সঙ্গে সংযুক্ত করে সংলগ্ন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গঠন অসম্ভব হয়ে পড়বে।

উল্লেখ্য, এর আগেও ইসরায়েল ওই এলাকায় বসতি স্থাপনের চেষ্টা করেছিল। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের চাপে পরিকল্পনা স্থগিত হয়। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে নেতানিয়াহুর কট্টর ডানপন্থি সরকার সেখানে রাস্তা প্রশস্তকরণ প্রকল্প অনুমোদন করেছে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রবেশাধিকার সীমিত করেছে।

মা’আলে আদুমিমের মেয়র গাই ইফ্রাচ নতুন বসতি পরিকল্পনার প্রশংসা করে বলেছেন, এটি জেরুজালেমের সঙ্গে মা’আলে আদুমিমের সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে। তার অভিযোগ, ফিলিস্তিনিরা ওই এলাকায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা করেছিল, যা এই প্রকল্প ব্যর্থ করে দেবে।

গাজায় তীব্র গরম, চর্মরোগে ভুগছে শিশুরা

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ফিলিস্তিনিরা। তীব্র গরমে এখন চর্মরোগে ভুগছে শিশুরা।তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

আল শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেন, গাজার আশ্রয়শিবিরে থাকা অনেক শিশুই বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাদের কাছে চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত সরঞ্জামও নেই। আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াফা নামের এক মায়ের ছেলে সারা রাত চুলকানির কারণে ঘুমাতে পারছে না। তার ছেলের শরীরে সাদা-লাল ফুসকুড়ি দেখা গেছে।

ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) এর গাজার মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ আবু মুগাইসিব বলেন, শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে, কারণ তারা শিশু এবং সেখানকার পরিবেশ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ঠিকমতো গোসলের জন্য পর্যাপ্ত পানিও নেই তাদের।

গাজায় একদিনে ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত

যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা আবারও ভয়াবহ হামলার মুখে পড়েছে। লাগাতার বোমাবর্ষণ ও বিমান হামলায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, বাজার—এবং প্রতিদিন বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। স্থানীয়রা বলছেন, গাজার উত্তরাংশ এখন প্রায় ‘নিষ্প্রাণ ধ্বংসস্তূপ’। আন্তর্জাতিক মহল এই হামলা ও দখল পরিকল্পনার বিরুদ্ধে নিন্দা জানালেও পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল হয়ে উঠছে।

গতকাল শুক্রবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, ইসরায়েলি বিমান হামলায় একদিনে অন্তত ৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৩ জন ছিলেন ত্রাণের সন্ধানে। একই দিনে খাদ্য সংকট ও অপুষ্টিতে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এই হত্যাযজ্ঞ এমন সময় ঘটছে যখন ইসরায়েল গাজা সিটিতে হামলা আরও তীব্র করেছে এবং সম্প্রতি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা শহরটি দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে লাখো ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণ গাজায় গাদাগাদি করে বসবাসে বাধ্য করা হতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা সিটির একটি আবাসিক ভবনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আটজন নিহত হন এবং তুফাহ এলাকায় অন্য এক হামলায় আরও দুজন প্রাণ হারান। কয়েকটি চিকিৎসা সূত্রও এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। এদিকে উত্তর গাজার বড় অংশ এখন সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শহরের বাসিন্দারা নতুন করে বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় আতঙ্কিত, কারণ ইসরায়েল শহর ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে তাদের আরও দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

বাসিন্দা ওয়ালা সুবহ জানান, যুদ্ধ শুরুর পর তিনি উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়া থেকে গাজা সিটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এখন আর কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই, আয়ও নেই—তিনি একজন বিধবা। তার ভাষায়, ‘যদি আমাদের বের করে দিতে চায়, তবে অন্তত আমাদের থাকার জায়গা দিক, তাঁবু দিক, বিশেষ করে বিধবা, শিশু আর অসুস্থদের জন্য। এখানে কয়েকজন নয়, লাখো মানুষকে বাস্তুচ্যুত করা হবে, যাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।’

উম সাজেদ হামদান নামে আরেক নারী বলেন, তিনি পাঁচ সন্তানের মা, স্বামী বন্দি—তাই সন্তানদের নিয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পালানো সম্ভব নয়। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, ‘আল-মাওয়াসিতে যাওয়ার চেয়ে আমি গাজা সিটিতেই মৃত্যুর মুখোমুখি হতে রাজি।’

মন্তব্য

বিশেষ
20 people died in heavy rains in Pakistan

পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টিপাতে ২৩ জনের মৃত্যু

পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টিপাতে ২৩ জনের মৃত্যু

ভারী মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে ২৩ জনের মৃত্যু আরও অনেকে আটকা পড়েছেন।

দেশটির দুর্যোগ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে শুক্রবার পেশোয়ার থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

আঞ্চলিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগটিতে পাহাড়ি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে কমপক্ষে ১৬ জন এবং পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে সাত জন প্রাণ হারিয়েছেন।

মন্তব্য

বিশেষ
The Prime Minister of the United Kingdom hosted Jensky in London before the Trump Putin meeting

ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের আগে লন্ডনে জেলেনস্কিকে আতিথ্য দিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী

ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের আগে লন্ডনে জেলেনস্কিকে আতিথ্য দিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী

ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্রদেরকে বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে বৈঠকের প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার লন্ডনে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

লন্ডন থেকে এএফপি জানিয়েছে, স্টারমার ইউক্রেনের নেতা জেলেনস্কিকে তার ডাউনিং স্ট্রিট বাসভবনে উষ্ণ আলিঙ্গন ও হাত মেলানোর মাধ্যমে স্বাগত জানান।

এর কয়েক ঘণ্টা পরেই জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল ফোনালাপে অংশ নেন।

শুক্রবার আলাস্কার একটি বিমান ঘাঁটিতে ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে প্রথমবারের মতো সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছে। এতে করে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর পুতিন পশ্চিমা মাটিতে প্রবেশ করার সুযোগ পাচ্ছেন।

তবে ইউক্রেনে অব্যাহত রুশ হামলা ও জেলেনস্কিকে এই বৈঠকে আমন্ত্রণ না করায় উদ্বেগ বেড়েছে। কারণ ট্রাম্প ও পুতিন এমন একটি চুক্তি করতে পারেন, যার ফলে ইউক্রেনকে বড় কিছু ছাড় দেওয়া লাগতে পারে।

তবে স্টারমার বুধবার বলেন, ইউক্রেনে তিন বছরের বেশি যুদ্ধের পর এখন ‘একটি সম্ভাব্য’ যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে।

এদিকে শুক্রবার ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করা হলেও এরই মধ্যে ইউক্রেন রাশিয়ায় ডজনখানেক ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এতে তিন জন আহত হয় এবং ভোলগোগ্রাদ শহরের একটি তেল শোধনাগারে আগুন লেগে যায়।

কিয়েভ দাবি করেছে, এই হামলাগুলো মস্কোর নিত্যদিনের মিসাইল ও ড্রোন হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ন্যায্য।

জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়াকে কোনো ভূখণ্ড ছেড়ে দেবেন না। ইউরোপীয় নেতারা আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন, ইউক্রেনের জন্য কোনো ছাড় দেওয়া ছাড়াই মার্কিন প্রেসিডেন্ট যুদ্ধবিরতির দিকে নজর দেবেন।

মন্তব্য

বিশেষ
Indias export sector in deep crisis
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধি

গভীর সংকটে ভারতের রপ্তানি খাত

গভীর সংকটে ভারতের রপ্তানি খাত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করার হুমকি দেওয়ার পর বিপাকে পড়েছেন ভারতীয় রপ্তানিকারকরা। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ না করলে ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। ফলে ব্যাপক কর্মসংস্থান হ্রাস এবং রপ্তানি শিল্পে বিশাল ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এলারা সিকিউরিটিজের অর্থনীতিবিদ গরিমা কাপুর বলেন, ‘৫০ শতাংশ শুল্কে ভারতের কোনো পণ্যই প্রতিযোগিতামূলক থাকতে পারবে না।’

বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জ্বালানি আমদানিকারক ভারতকে আগামী ২৭ আগস্টের মধ্যে তেল আমদানির এক-তৃতীয়াংশ রাশিয়া বাদ দিয়ে অন্য উৎস থেকে জোগাড় করতে হবে। ২০২৪ সালে ভারত যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল। নতুন এই শুল্কের ফলে রত্ন ও গহনা, বস্ত্রশিল্প ও সামুদ্রিক খাদ্যসহ কম মুনাফার ও শ্রমনির্ভর খাতগুলো বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ জানিয়েছে, ২০২৫ সালে পোশাক খাতসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

মুম্বাইয়ের ‘ক্রিয়েটিভ গ্রুপয়ের’ চেয়ারম্যান বিজয় কুমার আগরওয়াল বলেন, ‘আমরা যতটা পারি, ২৭ আগস্টের আগেই পণ্য পাঠিয়ে দিচ্ছি।’ তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এটা সমস্যার সাময়িক সমাধান মাত্র, আসল সমস্যার সমাধান নয়।’

আগরওয়াল বলেন, ‘যদি দ্রুত এই বিষয়টির সমাধান না হয়, তাহলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। আমার প্রতিষ্ঠানে কাজ করা ১৫ হাজার থেকে ১৬ হাজার কর্মীর ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।’

এই সমস্যা ব্যবসার আওতার বাইরে, কারণ এটি নির্ভর করছে ভূরাজনীতির ওপর। ট্রাম্প গত শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন, যা ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ।

মস্কোর সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক থাকায় দিল্লি এখন এক জটিল অবস্থানে রয়েছে। ট্রাম্পের হুমকির পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন, এবং ‘শান্তিপূর্ণ সমাধানের’ আহ্বান জানিয়েছেন।

ইতোমধ্যেই কিছু মার্কিন ক্রেতা ভারত থেকে নতুন অর্ডার বন্ধ করে দিয়েছেন, যা কয়েক মিলিয়ন ডলারের ভবিষ্যৎ ব্যবসা এবং হাজার হাজার কর্মসংস্থান হুমকির মুখে ফেলেছে।

ভারতের বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারকদের অনেকে এখন যুক্তরাষ্ট্রের অর্ডার অন্য দেশে স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন। পার্ল গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিজ জানিয়েছে, কিছু মার্কিন ক্রেতা অর্ডার ভিয়েতনাম বা বাংলাদেশে তৈরি করার অনুরোধ করেছেন, যেখানেও তাদের কারখানা রয়েছে।

অপরদিকে, গোকলদাস এক্সপোর্টস জানিয়েছে, তারা ইথিওপিয়া ও কেনিয়াতে উৎপাদন বাড়ানোর কথা ভাবছে, যেখানে মাত্র ১০ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। মুডিজ সম্প্রতি সতর্ক করে বলেছে, ভারতের জন্য এই বিশাল শুল্ক ব্যবধান ‘গত কয়েক বছরে আকৃষ্ট হওয়া বিনিয়োগের অনেকটাই উল্টো পথে নিতে পারে।’

গত বছর ভারত ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রত্ন ও গহনা রপ্তানি করেছে, যেখানে কয়েক লাখ মানুষ কর্মরত। এখন এই শিল্প কার্যত স্থবির। ডি. নভিনচন্দ্র এক্সপোর্টসের অজেশ মেহতা বলেন, ‘এখন কিছুই হচ্ছে না, সব অর্ডার স্থগিত। আমরা আশঙ্কা করছি ১.৫ থেকে ২ লাখ শ্রমিক প্রভাবিত হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘১০ শতাংশ শুল্ক মানিয়ে নেওয়া যায়, ২৫ শতাংশ কঠিন- আর ৫০ শতাংশ একেবারে অগ্রহণযোগ্য। আমরা বিলাসবহুল পণ্যে কাজ করি, দাম অতিরিক্ত বেড়ে গেলে ক্রেতারা পিছিয়ে যাবে।’

সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানিকারকরাও বলছেন, কিছু মার্কিন ক্রেতা চালান আটকে রাখতে বলছেন। তারা এখন নতুন বাজারের খোঁজ করছেন। ‘বেবি মেরিন গ্রুপের পার্টনার’ অ্যালেক্স নিনান বলেন, ‘আমরা বাজার বৈচিত্র্যের চেষ্টা করছি। যুক্তরাষ্ট্র একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা এখন চীন, জাপান এবং রাশিয়ার মতো বাজারে নজর দিচ্ছি।’ তবে নিনান বলেন, ‘এটা সহজ নয়। হঠাৎ করেই কোনো বাজার তৈরি করা যায় না।’

মন্তব্য

বিশেষ
Irans Safety Head of Irans commitment to continue assistance to Lebanon

লেবাননের প্রতি ‘সহায়তা’ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ইরানের নিরাপত্তা প্রধানের

লেবাননের প্রতি ‘সহায়তা’ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ইরানের নিরাপত্তা প্রধানের

ইরানের নিরাপত্তা প্রধান লেবাননের প্রতি ‘সহায়তা’ অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছেন। লেবাননের সরকার তেহরান-সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার পরিকল্পনা তৈরির জন্য সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেওয়ার পর বুধবার লেবাননে ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা প্রধান এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ইরানের নিরাপত্তা প্রধান বলেন, তার সরকার লেবাননের প্রতি সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে।

বৈরুত থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

গত বছর ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধের আগে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার সরকারি পরিকল্পনার বিরোধিতা প্রকাশ করার পর আলী লারিজানির লেবানন সফর। হিজবুল্লাহ গত বছর ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধের আগে লেবাননের সেনাবাহিনীর চেয়ে ভালো অস্ত্রে সজ্জিত বলে মনে করা হত।

জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান লারিজানি বৈরুতে অবতরণের পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘যদি লেবাননের জনগণ কষ্ট ভোগ করে, তাহলে আমরা ইরানেও এই যন্ত্রণা অনুভব করব এবং আমরা সকল পরিস্থিতিতে লেবাননের প্রিয় জনগণের পাশে থাকব’।

লারিজানিকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দর সড়কে বহু হিজবুল্লাহ সমর্থক জড়ো হয়েছিল। লারিজানি যখন সমর্থনের স্লোগান দিচ্ছিলেন, তখন তিনি তাদের স্বাগত জানাতে গাড়ি থেকে নেমে আসেন।

লেবাননে, লারিজানি প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন ও প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালামের পাশাপাশি হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ সংসদ স্পিকার নাবিহ বেরির সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে।

ইসরাইলের সাথে দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইরান একাধিক আঘাতের সম্মুখীন হয়েছে। যার মধ্যে গত জুন মাসে দুই দেশের মধ্যে ১২ দিনের প্রকাশ্য যুদ্ধও অন্তর্ভুক্ত।

২০২৪ সালের নভেম্বরে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে ইসরাইলের সাথে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থিত নতুন লেবানন সরকার গোষ্ঠীটিকে আরো নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে।

হিজবুল্লাহ ইরানের তথাকথিত ‘প্রতিরোধের অক্ষ’ গাজার হামাস ও ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীসহ এই অঞ্চলের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর একটি নেটওয়ার্কের অংশ, যারা ইসরাইলের বিরোধিতায় একত্রিত হয়েছিল।

ডিসেম্বরে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর, লেবাননের অস্ত্র সরবরাহের পথ বন্ধ করে দেয়। এটি দীর্ঘকাল ধরে ইরান ও হিজবুল্লাহর মধ্যে অস্ত্র সরবরাহের পথ হিসেবে কাজ করেছিল।

মন্তব্য

বিশেষ
Planning to test Putin is OTol Europe in support of Trumps Youkren

পুতিনকে পরীক্ষা করার পরিকল্পনা ট্রাম্পের, ই্উক্রেনের সমর্থনে অটল ইউরোপ

পুতিনকে পরীক্ষা করার পরিকল্পনা ট্রাম্পের, ই্উক্রেনের সমর্থনে অটল ইউরোপ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার আসন্ন বৈঠককে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে তার ধারণাগুলো মূল্যায়নের একটি ‘অনুভূতিশীল বৈঠক’ বলে অভিহিত করেছেন। এদিকে ইউরোপীয় নেতারা কিয়েভের স্বার্থের প্রতি অটল রয়েছেন।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

ট্রাম্প শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে আলাস্কায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুতিন ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে দুই দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে এটিই প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আঞ্চলিক ছাড় প্রত্যাখ্যান করার সমালোচনা করেছেন।

অগ্রহণযোগ্য আপস জোরদার করার লক্ষ্যে পুতিন ট্রাম্পের সাথে জোট বাঁধবেন এই আশঙ্কায়, ইউরোপীয় নেতারা বুধবার জেলেনস্কি ও ট্রাম্প উভয়ের সাথেই আলাদাভাবে কথা বলার পরিকল্পনা করছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম মাসগুলোয় ২৪ ঘন্টার মধ্যে সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারবেন বলে মন্তব্য করার পর, ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। কিন্তু কয়েক দফা আলোচনা, ফোন কল ও কূটনৈতিক সফরের পরও কোনো প্রকার সাফল্য আসেনি।

ট্রাম্প সাধারণত তার চুক্তি সম্পন্ন করার দক্ষতা নিয়ে গর্ব করতে পছন্দ করেন। আলাস্কায় সাফল্যের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে পুতিনের সঙ্গে ‘গঠনমূলক আলোচনা’ আশা করছেন।

ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি সত্যিই কিছুটা অনুভূতিপ্রবণ বৈঠক।’

ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা দেখব তার মনে কী আছে এবং যদি এটি একটি ন্যায্য চুক্তি হয়, তাহলে আমি এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের, ন্যাটো নেতাদের এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির কাছেও প্রকাশ করব।’

তিনি বলেন, ‘আমি বলতে পারি- অনেক ভাগ্য, লড়াই চালিয়ে যাও, অথবা আমি এও বলতে পারি, আমরা একটি চুক্তি সম্পাদন করতে পারি।’

জেলেনস্কি বলপ্রয়োগ করে দখল করা অঞ্চল ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে ট্রাম্প ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসের এক সভায় প্রকাশ্যে জেলেনস্কির সমালোচনা করে বলেছিলেন তিনি জেলেনস্কির অবস্থান নিয়ে কিছুটা বিরক্ত এবং অঞ্চল বিনিময়ের ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, ‘কিছু বিনিময় হবে, জমির কিছু পরিবর্তন হবে।’

তবে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি পুতিনকে এই যুদ্ধ শেষ করতে বলবেন।

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎজ বুধবার ফরাসি, ব্রিটিশ ও অন্যান্য ইউরোপীয় নেতাদের এবং ইইউ ও ন্যাটো প্রধানদের ভার্চুয়াল আলোচনায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

সোমবার মের্ৎজের কার্যালয় জানিয়েছে, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন দফা আলোচনায় রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগের আরও বিকল্প, সম্ভাব্য শান্তি আলোচনার প্রস্তুতি এবং আঞ্চলিক দাবি ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে।

সোমবার ব্রাসেলসে ইইউ’র পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহার সঙ্গে দেখা করেন এবং আক্রমণের পর থেকে রাশিয়ার ওপর ১৯তম নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টিও নিয়েও আলোচনা করেন।

আলোচনার পরে ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা কালাস বলেন, রাশিয়া ‘পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হওয়া পর্যন্ত, আমাদের কোনও ছাড় নিয়ে আলোচনা করা উচিত নয়।’ ‘এটি অতীতে কখনও রাশিয়ার সাথে কাজ করেনি এবং আজও পুতিনের সাথে কাজ করবে না।’

এদিকে পুতিনের দাবির কাছে আত্মসমর্পণের বিরুদ্ধে আবারও সতর্ক করেছেন জেলেনস্কি ।

জেলেনস্কি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘রাশিয়া হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে অস্বীকার করে, তাই কোনও পুরষ্কার বা সুবিধা গ্রহণ করা উচিত নয়। এটি কেবল একটি নৈতিক অবস্থান নয়, এটি একটি যুক্তিসঙ্গত অবস্থান।’

মন্তব্য

বিশেষ
Balochistans militant attacks killed 3 Pakistani troops

বেলুচিস্তানে জঙ্গি হামলায় ৯ পাকিস্তানি সেনা নিহত

বেলুচিস্তানে জঙ্গি হামলায় ৯ পাকিস্তানি সেনা নিহত

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে জঙ্গি হামলায় অন্তত নয়জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন বলে মঙ্গলবার এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

ওয়াশুক জেলার একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, বহু সংখ্যক জঙ্গি একটি পুলিশ স্টেশন এবং সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ঘাঁটিতে হামলা চালায়।

গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পথে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়। সন্ত্রাসীরা নয়জন সেনাকে হত্যা করে।’

মন্তব্য

p
উপরে