আফগানিস্তানে ২০০১ সালের ৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর হামলার পর পতন হয় তালেবান সরকারের। ওই বছরের ১৩ নভেম্বর কাবুল থেকে পিছু হটে তালেবান বাহিনী। তবে এর পরের ২০ বছরেও দেশটি থেকে উৎখাত করা যায়নি কট্টোর এই গোষ্ঠীকে। বরং সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার পর ফের নতুন অঞ্চলের দখল নিচ্ছে তালেবানরা।
আফগানিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল এখন তালেবানের নিয়ন্ত্রণে। দেশটির ৪০৭টি ডিস্ট্রিক্টের মধ্যে ৭০টিতে চলছে এই গোষ্ঠীর শাসন।
সংবাদ ও কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সভিত্তিক সাইট ভাইস-এর সংবাদকর্মীদের একটি দল সম্প্রতি আফগানিস্তানের তালেবাননিয়ন্ত্রিত ওয়ারদাক রাজ্যে পাঁচ দিন কাটিয়েছে। তাদের এই সফরের অভিজ্ঞতা উঠে এসেছে অ্যাডাম ডেসিডারিওর প্রতিবেদনে। নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন রুবাইদ ইফতেখার।
ঘড়িতে ভোর ৫টার একটু বেশি। কোনো এক শুক্রবার এক পুরোনো টয়োটা করোলার পেছনের সিটে চেপে, লুকিয়ে আমরা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছি। গাড়ির সামনে বসা স্থানীয় গাইড আমাদের তিনজনের দলটিকে ঘাড় ঘুরিয়ে পরখ করে নেন যে, তালেবাননিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানে দুই দিনের ভ্রমণের জন্য আমাদের পোশাক ঠিক আছে কি না।
আমাদের গাড়িচালক স্থূল রসবোধসম্পন্ন, সাদা দাড়ির, বেঁটে ও গাট্টাগোট্টা শরীরের এক আফগান। রিয়ার ভিউ মিররে আমার দিকে তাকিয়ে তিনি জোরে বলে ওঠেন, ‘কান্দাহার’।
আমার পরনে ছিল একটা রোদে জ্বলে যাওয়া সালোয়ার-কামিজ, একটা সবুজ রঙের শাল আর তার সঙ্গে ম্যাচ করা টুপি, যাকে এখানে বলা হয় সিন্ধি। আর আমাদের দলের একমাত্র নারী সদস্য ভাইসের নিউজ করেসপনডেন্ট হিন্দ হাসানের পরনে ছিল তালেবানরা ঘরের বাইরে বের হওয়ার সময় নারীদের যেমন মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে রাখতে বলে, তেমনভাবে ঢাকা নীল রঙের আফগানি বোরকা।
আমাদের গন্তব্য ওয়ারদাক রাজ্য। এটি মধ্য আফগানিস্তানের একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, কারণ এটাই রাজধানী কাবুলে ঢোকার রাস্তা। ওয়ারদাকে যাওয়ার জন্য আমরা যুদ্ধবিধ্বস্ত ন্যাশনাল হাইওয়ে ওয়ান ধরে এগোচ্ছিলাম। কাবুলকে এটি তালেবানের জন্মস্থান কান্দাহারের সঙ্গে যুক্ত করে।
আমাদের সামনেই ধীরেসুস্থে এগোতে থাকা আফগান ন্যাশনাল আর্মির (এএনএ) বেশ কিছু হামভি জিপ। কাছের কোনো পোস্টে সাপ্লাই নিয়ে যাচ্ছিল ওগুলো। পরের এক ঘণ্টায় আমরা যুদ্ধ করছে না, কিন্তু যুদ্ধের মধ্যে আটকে যাওয়া আফগান বেসামরিক নাগরিকদের জীবন কেমন হয়, সেটার ভয়াবহ কিছু ঝলক দেখতে পেলাম।
জানতে পারলাম, তালেবানরা এএনএকে আক্রমণের চেষ্টা করছে। সৈন্যরা আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য রাস্তার বাস ও আমাদের মতো গাড়ির লম্বা সারির মধ্যে লুকিয়ে থাকে।
এই কৌশল সরাসরি তালেবানদের কাছ থেকেই ওদের শেখা। আমরা এগোতে শুরু করার পরই সৈন্যরা সবুজ ঝোপের দিকে রাইফেল তাক করে গুলি করতে শুরু করে। এ ধরনের ঝোপ তালেবানরা লুকানোর জন্য ব্যবহার করে।
তালেবানদের দেশে
আমাদের স্থানীয় গাইড জানালেন, ‘এই চেক পয়েন্টের পর থেকে সবকিছুই তালেবানদের অধীনে।’
এখান থেকে মোটরসাইকেলে চড়া একদল তালেবান যোদ্ধা আমাদের পথ দেখাবেন। কাবুলে তারা আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগের অনুমতি দেয়নি। আর যেকোনো ধরনের ট্র্যাকিং ডিভাইস ব্যবহারে ছিল কড়া নিষেধ।
মূল সড়ক থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের ওপর ছোট একটা গ্রাম আরব শাহ খেল। ওখানকার প্রায় পূর্ণ আর বিস্তৃত কবরস্থান খুব ভালোভাবে মনে করিয়ে দিচ্ছিল আমেরিকার দীর্ঘতম যুদ্ধের প্রকৃত মূল্য। ২০০১ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে এই যুদ্ধে ৭১ হাজার আফগান নাগরিক নিহত হয়েছেন।
নিজের বোন নাসিবাহর কবরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ২৫ বছরের আমরুল্লাহ ক্বানি বলেন, ‘এখানে প্রতিদিনই যুদ্ধ হয়। যখন ঘুমিয়ে থাকি, তখন বাড়িতে গুলি এসে পড়ে আর বিস্ফোরণ হয়।’
নিজ বাড়িতে মর্টারের আঘাতে নিহত হন নাসিবাহ। আমিরুল্লাহ বলেন, ‘আমার বোন খুবই হৃদয়বান ও বুদ্ধিমতী ছিলেন। দুর্ভাগ্যজনক যে এমনটা ওর সঙ্গে হয়েছে।’
কাছেরই আরেকটি গ্রাম মালি খেলের ২৮ বছরের বাসিন্দা সাফিউল্লাহ অশ্রুভরা চোখে স্থানীয় এক মসজিদ ধ্বংসের কথা আমাদের বলেন।
‘তারা (আমেরিকানরা) আমাদের কোরআনকে অপমান করেছে। মসজিদকে অপমান করেছে। এটা আমাদের কাছে মক্কার মতো ছিল।’
মসজিদের তৃতীয় তলায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। ধর্মীয় নেতারা শিশুদের ধ্বংসস্তূপে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কোরআন ও অন্যান্য ধর্মীয় বইয়ের টুকরাগুলো জড়ো করতে বিভিন্নভাবে নির্দেশনা দিচ্ছেন।
গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠদের একজন নেমাতুল্লাহ বলেন, ‘আমি সব মাফ করে দিতে পারব, কিন্তু এটা না। এখানেই আমার হৃদয় পড়ে আছে, আর এটাতেই আমি বিশ্বাস করি। এখানে কোনো তালেবান দেখছেন? আল-কায়েদা? নেই!’
গ্রামবাসী দিয়ে ঘিরে থাকা অবস্থায় সাফিউল্লাহ জানান, মাঝরাতে মাথার ওপরে ড্রোনের শব্দে তার ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। এর একটু পরই মসজিদে আঘাত হানা হয়। ‘এটা শান্তি নয়’, বোমা বিস্ফোরণের জায়গা থেকে পাওয়া একটা শার্পনেলের টুকরা দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা সন্ত্রাস।’
আমরা আগ্নেয়াস্ত্র বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বোমার অংশবিশেষের ছবি দেখাই। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ধাতব খণ্ডটি জিবিইউ টুয়েলভ মডেলের লেজার গাইডেড বোমার ডানার অংশ। এমকে এইটি টু নামেও পরিচিত বোমাটি আফগান ও আমেরিকান দুই দেশের যুদ্ধবিমানই ব্যবহার করে। এতে আঁকা চিহ্ন দেখে বোঝা যায়, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আগ্নেয়াস্ত্র নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান রেথিওন গত বছরের মার্চে বোমাটি বানিয়েছে। বানানো হয়েছে দোহায় তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তিচুক্তির এক মাস পর।
ভাইস নিউজকে দেয়া এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী মালি খেলে আক্রমণের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তবে বারবার অনুরোধের পরেও আফগান সেনাবাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সম্প্রতি সংঘর্ষের ঘটনা বেড়ে যাওয়া নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তালেবানের সিভিল ক্যাজুয়াল্টিস প্রিভেনশন অ্যান্ড কমপ্লেইন্টস কমিশনের প্রতিনিধি কমান্ডার খাদেম বলেন, “এগুলো সবই কাবুলের ‘পুতুল সরকার’-এর কাজ। কাবুল সরকার এলাকায় তালেবানের উপস্থিতি আছে কি না, তা না জেনেই আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে।’
খাদেম রাতের বেলা আমাদের নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখছিলেন। একটি বৈরী এলাকায় আমরা পাশ্চাত্য সাংবাদিক, আর তাই তালেবানের অন্য উগ্রবাদী সদস্যদের কাছে থেকে আমাদের দূরে রাখার নির্দেশনা ছিল তার ওপর।
আমরা এক এপিক যাত্রা শুরু করি। নদীর ওপর দিয়ে, পাহাড়ের কিনারা ধরে কর্দমাক্ত চার ঘণ্টার এক যাত্রা শেষে দুর্গম এক পাহাড়ের সেফহাউসে পৌঁছাই, যেখানে আমাদের রাতে থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল।
পরদিন সকালে বান্দ-ই-চাক জেলার সামরিক প্রধান কমান্ডার খাতাবের সঙ্গে দেখা হয়। কালো কাপড় পরা ও কালাশনিকভ হাতে চার যোদ্ধাকে পাশে নিয়ে থাকা খাতাব আমাদের উপস্থিতিতে বিরক্ত হচ্ছিলেন, আর সাক্ষাৎকারের বেশির ভাগ সময়ে চুপ করে ছিলেন।
জেলার এক সামরিক উপ-প্রধান নাউয়িদ বলেন, ‘আমরা আমেরিকান গণতন্ত্র চাই না। আমেরিকা এখানে গণতন্ত্রের যে নীতি প্রয়োগ করেছে এবং জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে তা কেবল আফগানিস্তানের জনগণের ক্ষতিই করবে, আর কিছু নয়।’
আমেরিকান সেনারা এক মাসের মধ্যে আফগানিস্তান ছাড়তে যাচ্ছে। অনেক আফগানের আশঙ্কা, তালেবান তার পুরোনো পথে ফিরে আসবে, ইসলামি শরিয়াহ আইনের উগ্র ব্যাখ্যায় নারীর অধিকার সীমাবদ্ধ করবে ও সমাজকে পরিচালনা করবে। এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে কমান্ডার খাতাব দ্রুত প্রশ্নটি এড়িয়ে যান।
‘শুটিং বন্ধ করুন। বন্ধ করুন,’ হাসতে হাসতে বলে ওঠেন খাতাব। মাঝপথে সাক্ষাৎকার বন্ধ করে দেন এবং আমাদের ক্যামেরা বন্ধ করে কাবুল ফিরে যেতে বলেন।
তালেবানের অধীনে জীবন
ছয় মাস পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অভিষেকের প্রাক্কালে তালেবানদের সঙ্গে তিন দিন কাটানোর জন্য আমাদের আবার ওয়ারদাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
এবার পরিষ্কার ছিল যে, নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জোর করে ক্ষমতা ফিরে পেতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী দেশজুড়ে বিস্তৃত অঞ্চল দখলের অভিযান আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। ধারণা অনুযায়ী, গোষ্ঠীটি দেশের ৫০ শতাংশেরও বেশি অংশে নিয়ন্ত্রণ করছে বা দখলের চেষ্টা করছে। ৭০টিরও বেশি জেলা তাদের কবজায়। প্রতি সপ্তাহে এই সংখ্যা বাড়ছে।
তালেবান যোদ্ধা ও বোমা কারিগর মজিবুল রাহমান বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে যত কনভয় আসুক না কেন, আমরা তাদের জন্য আইইডি পেতে রাখি।’ সোডার বোতলে বোমা ভরে আফগান সৈনিকদের হত্যা করে গর্বিত মজিবুল যোগ করেন, ‘আমি তাদের টুকররা করে উড়িয়ে দিয়েছি। একেবারে আকাশে উড়িয়েছি।’
তালেবান ও আফগান সরকারের মধ্যে শান্তি আলোচনার অচলাবস্থায় এবং আমেরিকান বাহিনী যুদ্ধক্ষেত্রগুলোকে দ্রুত ছেড়ে দিতে থাকায় তালেবানরা তাদের পূর্ববর্তী শাসনব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার একেবারে কাছাকাছি আছে। যে ব্যবস্থা আমেরিকান নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের মাধ্যমে ২০০১ সালে ক্ষমতা থেকে তাদের হটে যাওয়ার আগে ছিল।
‘আফগানিস্তান তাদের (আমেরিকানদের) তৈরি ব্যবস্থায় চলে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়’, বলছিলেন ২০ জন যোদ্ধা দিয়ে ঘিরে থাকা কমান্ডার হামাস। পাহাড়ের ওপর থেকে টাঙ্গি উপত্যকার দিকে তাকিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যখন তারা আমাদের বলবে, দেশে ইসলামিক শাসনব্যবস্থা কায়েম হচ্ছে, তখনই আমরা অস্ত্র জমা দিয়ে ইসলামিক শাসনব্যবস্থার অংশ হতে প্রস্তুত।’
তালেবানদের দাবি, তারা আগের মতো নারীদের অধিকার বঞ্চিত করা, মেয়েদের স্কুলে যেতে বাধা দেয়া, চোরদের হাত কেটে শাস্তি দেয়া, প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত করা ও ব্যভিচারের দায়ে নারীদের পাথর ছুড়ে হত্যা করার মতো নৃশংস গোষ্ঠী আর নেই।
কমান্ডার হামাসের দাবি, ‘সত্যি কথা হচ্ছে, আফগানিস্তানে বসবাসকারী মুসলিম পুরুষ ও নারীর ইসলামিক ব্যবস্থাকে ভয় পাওয়ার কারণ নেই, কারণ ইসলামিক শাসনব্যবস্থা শান্তি, একতা ও উন্নয়ন নিয়ে আসে। ইনশাল্লাহ সবার অধিকারই রক্ষা করা হবে এবং সবাই নিরাপদে থাকবেন।’
আমাদের তালেবান গাইড দেখাতে উদগ্রীব ছিলেন যে তারা কতটা বদলে গেছেন। তারা গ্রামের একটা বাজারে আমাদের নিয়ে যান যেখানে তরুণ যুবকরা প্রকাশ্যে ধূমপান করছিল, ভলিবল খেলছিল। এসব কর্মকাণ্ড আগে তালেবানরা নিষিদ্ধ করেছিল, কিন্তু এখন কিছু কিছু এলাকায় তারা এসবের অনুমতি দিয়েছে।
এটাই হয়তো তারা আমাদের দেখাতে চেয়েছিল। তবে এটি স্পষ্ট যে, প্রাত্যহিক জীবনের অনেক দিকেই কোনো বদল আসেনি। বাইরে খুব বেশি নারীর দেখা মেলে না; টেলিভিশন দেখা, গান শোনা ও খেলাধুলা করা এখনও নিষিদ্ধ; আর এই সামাজিক নিয়মকানুন গ্রামে ঘুরে ঘুরে কঠোরভাবে কার্যকর রাখে সশস্ত্র যোদ্ধারা, যারা ভয়, সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শনের ওপর নির্ভর করে শাসন করছে।
শরিয়াহ আইন
তালেবান আন্দোলনের মূল ভিত্তি এবং এর রাজনৈতিক লক্ষ্য সব সময় ছিল শরিয়াহ আইনের মৌলবাদী ব্যাখ্যার ভিত্তিতে একটি ইসলামি রাষ্ট্র গঠন করা। শরিয়াহ আইন অ্যাডহক আদালত প্রণীত এক ধরনের ইসলামিক আইন।
এর ব্যাখ্যায় তালেবান কমান্ডার তাওয়াকুল বলেন, ‘সামরিক দায়িত্বের সঙ্গে আমাদের নাগরিক দায়িত্বও আছে। যখন আমরা কোনো অপরাধের ব্যাপারে জানতে পারি, সেই অপরাধী বা চোরকে ধরার পর কোনো জোরজবরদস্তি ছাড়া আমরা তাদের বক্তব্য শুনি, যাতে করে সে তার অপরাধ স্বীকার করতে পারে।’
এখানে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে। কিছু ক্ষেত্রে তালেবান কমান্ডারদের তাদের পছন্দমতো শাস্তি কার্যকর করার পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।
তাওয়াকুল যোগ করেন, ‘তার স্বীকারোক্তির পর বিচারকাজ শুরু হয়। আমাদের আদালত একটা পঞ্চায়েতের মতো। সেখানে বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকেন মুফতি ও প্রশাসনিক পর্যায়ের মতো বিজ্ঞ ব্যক্তিরা। তারা একসঙ্গে আলোচনায় বসেন। তাদের নীতিগত রায় গ্রন্থের ওপর ভিত্তি করে করা হয় এবং কোরআন অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হয়।’
এদিন স্থানীয় এক ভেড়া পালকের কাছ থেকে ভেড়া চুরি ও অন্যান্য অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত এক ব্যক্তির প্রাথমিক শুনানি দেখার জন্য আমাদের নজিরবিহীন ছাড় দেয়া হয়। অভিযুক্তকে কয়েক দিন আগে গ্রেপ্তার করে কোনো আইনি প্রতিনিধি ছাড়াই তালেবানদের কারাগারে রাখা হয়েছে।
মামলার শুনানিতে নেতৃত্ব দেন ২৭ বছরের এক তালেবান কমান্ডার। অভিযুক্তকে ঘিরেছিলেন একাধিক তালেবান যোদ্ধা। তাকে কমান্ডারের মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়।
তাওয়াকুলের চড়ে মাথার টুপি পড়ে যায় অভিযুক্ত ব্যক্তিটির। তাওয়াকুল তাকে বলেন, ‘আসল ঘটনা স্বীকার করো। নাহলে আমরা তোমাকে পেটাব! কোন ভেড়াটি নিয়েছ? কোথায় নিয়েছ? তুমি চুরি করেছ?... ওভাবে বলার দরকার নেই, বল যে তুমি চুরি করেছ।’
অভিযুক্ত স্বীকার করে, ‘আমি চুরি করেছি।’
লোকটির মুখের ওপরে মোবাইল ফোন ধরে তাওয়াকুল জিজ্ঞাস করেন, ‘এটা ছাড়া আর কী কী চুরি করেছ?’
‘আর কিছু করিনি’, অনুনয়ের সুরে বলে ওঠে লোকটি। ‘যদি প্রমাণিত হয়, আমার হাত কেটে ফেলেন।’
প্রাথমিক শুনানি শেষে লোকটির ক্যামেরায় দেয়া জবানবন্দি নিশ্চিতভাবেই তার ভাগ্য নির্ধারণ করে ফেলবে। এখন ভ্রাম্যমাণ তালেবান বিচারক ওয়ারদাকে আসবেন চূড়ান্ত রায়ের জন্য। এ ক্ষেত্রে সেটা হতে পারে জনসমক্ষে চাবুক মারা বা হাত কেটে ফেলা।
তাওয়াকুল বলেন, ‘আমরা যা কিছু শিখেছি, আমাদের সব পদক্ষেপ, আচরণ শরিয়াহ মোতাবেক এবং এর সঙ্গে একমত। এর বাইরে আর কিছু নেই।’
বিচারকে নিষ্ঠুর মনে হলেও স্থানীয়দের মধ্যে এ ধরনের দ্রুত বিচারের প্রতি এক রকম আস্থা রয়েছে। কারণ তারা একে আফগান সরকারের বিচারব্যবস্থার চেয়ে কম কলুষিত মনে করে।
এটি পরিষ্কার যে বিচারের এই ধারার বাস্তবায়ন তালেবানরা কাবুলসহ পুরো আফগানিস্তানে দেখতে চায়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, তালেবানরা আফগান সরকার ও পুরো দেশকে তা অনুসরণ করতে বাধ্য করতে পারে কি না?
তাওয়াকুল বলেন, ‘(আফগান সরকারের সঙ্গে) সমঝোতার আগ পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিচার চলাকালে আদালতের বাইরে নিজ গায়ে আগুন দিয়েছেন এক যুবক।
নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যে আদালতে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার চলছে, তার বাইরে নিজের গায়ে আগুন দিয়েছেন এক ব্যক্তি। আদালতের বাইরে স্থাপিত টেলিভিশন ক্যামেরায় ওই ব্যক্তিকে কয়েক মিনিট ধরে পুড়তে দেখা যায়।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, ৩০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির নাম ম্যাক্সওয়েল অ্যাজারেলো। তাকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হলে তিনি বেঁচে ফেরেন।
সম্পর্ক গোপন রাখতে পর্নো তারকাকে দেয়া ঘুষের মামলায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিচারিক কার্যক্রম চলছিল এ আদালতে। ওই ব্যক্তি যখন নিজ শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন, ট্রাম্প তখন ভেরতেই ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মনে করছেন, তিনি ট্রাম্পকে লক্ষ্যবস্তু করে এমনটা করেননি।
প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ব্যক্তি প্রথমে নিজের শরীরে তরল জ্বালানি ঢালেন, এর পর আগুন ধরিয়ে দেন সবার সামনেই।
ট্রাম্পই হচ্ছেন প্রথম কোনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের মধ্যেই এ মামলায় ট্রাম্পের বিচার চলবে।
আরও পড়ুন:মিয়ানমারে রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নৃশংসতার ঘটনায় ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন সাত দেশের জোট জি-৭-এর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
তারা এক যৌথ বিবৃতিতে এ অবস্থান ব্যক্ত করেন বলে শনিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউএনবি।
বার্তা সংস্থাটির খবরে বলা হয়, যৌথ বিবৃতিতে তারা মিয়ানমারে অস্ত্র ও জেট ফুয়েলসহ অন্যান্য উপকরণের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য সব দেশের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
জোটভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সব রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিয়ে কথা বলেছেন। তারা একটি অর্থবহ ও টেকসই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে অবিলম্বে যেকোনো সহিংসতা বন্ধ, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতাদের থেকে শুরু করে নির্বিচারে আটক সব বন্দিদের মুক্তি এবং সব অংশীজনের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপ প্রতিষ্ঠার জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি শুক্রবার বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রতি মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে, যেকোনো ধরনের জোরপূর্বক শ্রম থেকে বিরত থাকতে এবং সব বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি ও অভাবী মানুষের কাছে দ্রুত, নিরাপদ ও অবাধ মানবিক প্রবেশাধিকার দেয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছি।’
মিয়ানমারে সংঘটিত গুরুতর অপরাধের জন্য জবাবদিহি অপরিহার্য উল্লেখ করে জি-৭ দেশগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমরা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২৬৬৯ নম্বর প্রস্তাবের (২০২২) ব্যাপক বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেছি। মিয়ানমার বিষয়ক নবনিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূতের নেতৃত্ব এবং দেশটিতে আবাসিক সমন্বয়কারী নিয়োগের মাধ্যমে এ সংকটে জাতিসংঘের আরও সম্পৃক্ততা সমর্থন করি।’
আরও পড়ুন:ইরানের ইস্পাহানে শুক্রবার ‘ইসরায়েলের’ হামলার তাৎক্ষণিক জবাব দেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘ঘটনার বিদেশি উৎসের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আমরা বাইরের কোনো হামলার শিকার হইনি এবং আলোচনা হামলার চেয়ে বেশি হচ্ছে অনুপ্রবেশ নিয়ে।’
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, ইস্পাহানের কাছে বিস্ফোরণের পর কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়। সেখানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়নি।
ইস্পাহান শহরের কাছে ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক ক্ষেত্র রয়েছে, যেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে দাবি করেছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম।
আরও পড়ুন:ইরানের ইস্পাহানে বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলের হামলার খবরে শুক্রবার পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে উল্লেখ করে রয়টার্স জানিয়েছে, এশিয়ার শেয়ার ও বন্ডে ধস নামে, যেখানে উল্লম্ফন দেখা যায় স্বর্ণ ও অশোধিত জ্বালানি তেলের দামে।
বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি হামলার বিষয়টি জানার পর পুঁজিবাজার ও তেলের বাজারে শুরুতে যে প্রভাব পড়ে, সেটি কমে এসেছে। হামলার পরিসর ছোট এবং কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়নি বলে ইরানের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এমন বাস্তবতা সৃষ্টি হয়।
শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটিভিত্তিক এমএসসিআইয়ের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় সূচকের পতন হয় দুই দশমিক ছয় শতাংশ, যেটি পরবর্তী সময়ে কমে দাঁড়ায় দুই শতাংশে।
অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরবরাহে বিঘ্ন ঘটার শঙ্কায় ব্রেন্টের অশোধিত জ্বালানি তেলের দাম শুরুতে চার দশমিক দুই শতাংশ বাড়লেও পরবর্তী সময়ে তা কমে বৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়ায় দুই দশমিক চার শতাংশ। মূল্যবৃদ্ধি কমার পর ব্যারেলপ্রতি ব্রেন্টের অশোধিত তেলের দাম দাঁড়ায় ৮৯ দশমিক ২২ ডলারে।
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, ইস্পাহানের কাছে বিস্ফোরণের পর কয়েকটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়। সেখানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়নি।
ইস্পাহান শহরের কাছে ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক ক্ষেত্র রয়েছে, যেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে দাবি করেছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম।
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের তিনটি ড্রোন ইরান ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করেছে দেশটির মহাকাশ সংস্থা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শুক্রবার কোয়াডকপ্টারের ছবি সংযুক্ত করে দেয়া পোস্টে ইরানের মহাকাশ সংস্থার মুখপাত্র হোসেইন দালিরিয়ান লিখেন, ‘তারা (ইসরায়েল) বলেছে যে, আমরা ৫০০ সুইসাইড ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছি...এখন তারা জবাব দিয়েছে এই তিন কোয়াডকপ্টার (ড্রোনসদৃশ আকাশযান) দিয়ে, যার সবগুলোকে ভূপাতিত করা হয়েছে।’
হাসির ইমোজি দিয়ে ওই পোস্টে দালিরিয়ান আরও লিখেন, ‘তারা শুধু বলেছে যে, তারা (হামলার) আগে আমেরিকাকে জানায়নি।’
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
আরও পড়ুন:ইসরায়েলের হামলার খবরের মধ্যে ইরানের স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম শুক্রবার বলেছে, দেশটির পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদে আছে।
সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় নগর ইস্পাহানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।
‘নির্ভরযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়, ‘ইস্পাহান প্রদেশের পরমাণু ক্ষেত্রগুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ।’
এদিকে ইরানের মহাকাশ সংস্থার মুখপাত্র হোসেইন দালিরিয়ান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেয়া পোস্টে লিখেন, দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সফলভাবে কিছু ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। এ মুহূর্তে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কোনো খবর নেই।
ইস্পাহানের কাছে শেকারি সেনা বিমানঘাঁটিতে তিনটি বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ।
আরও পড়ুন:ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) হ্যাটট্রিক তথা টানা তৃতীয় জয়ের সম্ভাবনার মধ্যে শুক্রবার দেশটিতে লোকসভা নির্বাচনের ভোট শুরু হয়েছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভারতের ২১ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ১০২টি আসনে আজ ভোট হচ্ছে।
সাত ধাপের এ নির্বাচনের প্রথম ধাপে সব আসনে ভোট হচ্ছে তামিলনাড়ু (৩৯), রাজস্থান (১২), উত্তর প্রদেশ (৮), উত্তরাখণ্ড (৫), অরুণাচল প্রদেশ (২), মেঘালয় (২), আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ (১), মিজোরাম (১), নাগাল্যান্ড (১), পুদুচেরি (১), সিকিম (১) ও লাক্ষাদ্বীপে (১)। এর বাইরে আসাম ও মহারাষ্ট্রের পাঁচটি করে আসনে, বিহারের চারটি, পশ্চিমবঙ্গের তিনটি, মণিপুরের দুটি এবং ত্রিপুরা, জম্মু-কাশ্মীর ও ছত্রিশগড়ের একটি করে আসনে ভোট হচ্ছে।
লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই চার রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশ, ওড়িশা, সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশ বিধানসভার ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিমে আজ ভোট।
ভারতে কংগ্রেসসহ বিরোধীদের জন্য বড় পরীক্ষার এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিজেপি লোকসভার ৫৪৩ আসনের মধ্যে এককভাবে ৩৭০টিতে জয়ী হওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে। আর বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স তথা এনডিএ ৪০০টি আসনে জয়ী হোক, এমনটি চান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এর আগে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লোকসভায় ৩৫৩টি আসন পায় এনডিএ, যেখানে বিজেপির একক আসনের সংখ্যা ৩০৩টি।
লোকসভা নির্বাচনের শেষ ধাপের ভোট ১ জুন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য