নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে থাকা জাতীয় পরিচয়ত্রের (এনআইডি) দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সরিয়ে নেয়া নিয়ে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে হইচই। দায়িত্ব সরানোর সিদ্ধান্তের জন্য ইসির গাফিলতিজনিত জনদুর্ভোগকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা। অন্যদিকে ইসিসহ সুশীল সমাজ সরকারি এই সিদ্ধান্তকে দেখছে সাংবিধানিক সংকট ও ইসির স্বাধীনতার কফিনে সরকারের শেষ পেরেক হিসেবে।
ইসি এনআইডির নিয়ন্ত্রণের আশা না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে এ-সংক্রান্ত সেবার মান বাড়িয়ে নাগরিকের দুর্ভোগ কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
গত ১৭ এপ্রিল এনআইডি কার্যক্রম ইসির কাছ থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৪ মে এনআইডি কার্যক্রম ও লোকবল সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তর করায় ব্যবস্থা নিতে ইসিকে নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
আশা ছাড়ছে না ইসি
জাতীয় পরিচয়পত্রের দায়িত্ব কেড়ে নেওয়া সহজ হবে না বলে মনে করে ইসি। দায়িত্ব হস্তান্তরে সাংবিধানিক সংকটের বাইরেও নৈতিকতার বিষয় রয়েছে বলে মনে করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়েছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে স্বরাষ্ট্রের সুরক্ষা বিভাগকে এ দায়িত্ব স্থানান্তরের কথা বললেও ইসি তার কাজ অব্যাহত রেখেছে। ৩ জুন উপপরিচালক আরাফাত আরা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নাগরিকের দুর্ভোগ লাঘবে মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা দেয় ইসি।
এতে বলা হয়, ‘বর্তমান বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি প্রতিরোধ/মোকাবিলায় ভ্যাকসিন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। এ লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তাগণ বিশেষ করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র-শিক্ষক ও বিদেশগামী ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের জন্য ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম যথাসম্ভব দ্রুত সম্পন্ন করবেন।
‘এ ধরনের ব্যক্তিবর্গ যাতে হয়রানিমুক্তভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা পায়, সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ রাখা এবং সেবা কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য নির্দেশিত হয়ে অনুরোধ জানানো হলো।’
এনআইডি থেকে ইসির আয়
ইসি সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এনআইডি সেবা থেকে ইসি প্রায় ২৫০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় করেছে।
এনআইডির তথ্য-উপাত্ত যাচাই/সরবরাহ চার্জ, এককালীন, নবায়ন ও সাবইউজার চার্জ এবং হারানো এনআইডি তোলা বা সংশোধন থেকে এই টাকা আয় হয়েছে।
প্রায় ১৪০টি প্রতিষ্ঠান ইসির জাতীয় ভোটার তথ্যভান্ডার থেকে নাগরিকদের তথ্য যাচাই সেবা নিয়ে থাকে। তথ্য-উপাত্ত যাচাই/সরবরাহ চার্জ থেকে এখন পর্যন্ত ইসির রাজস্ব আয় হয়েছে ১৪৯ কোটি ১৭ লাখ ১৭ হাজার ১২৫ টাকা।
এই সেবা নিতে হলে কোনো প্রতিষ্ঠানকে এককালীন, নবায়ন ও সাব-ইউজার চার্জ দিতে হয়।
এ বাবদ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ১৫ কোটি ৩৪ লাখ ৬১ হাজার ৭৫০ টাকা এবং হারানো ও এনআইডি সংশোধন ফি থেকে আয় হয়েছে ৮২ কোটি ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার ৯৯৭ টাকা।
এখন পর্যন্ত এনআইডি সেবা থেকে মোট আয় হয়েছে ২৪৬ কোটি ৯৫ লাখ ১৬ হাজার ৮৭২ টাকা।
এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) মো. নুরুজ্জামান তালুকদার নিউজবাংলাকে বলেন, শুধু রাজস্ব আয় নয়, এনআইডি সেবার মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, জমি রেজিস্ট্রেশন, বিবাহ রেজিস্ট্রেশন, সিম নিবন্ধন, সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান, চাকরি প্রাপ্তিসহ সব ক্ষেত্রে পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। অসংখ্য বেওয়ারিশ লাশের পরিচয়ও নির্ণয় করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এনআইডি সেবার মাধ্যমে প্রায় ৮ লাখ ভুয়া টিআইএনধারী শনাক্তকরণ, ১২ কোটি মোবাইল সিম নিবন্ধন/পুনর্নিবন্ধন, সরকারি-বেসরকারি ১৪৭টি প্রতিষ্ঠানকে দিবা-রাত্রি পরিচিতি যাচাই সেবা প্রদান, তথ্যভান্ডারে ১০ আঙুলের ছাপ, আইরিস গ্রহণ ও সংরক্ষণ, করোনা দুর্যোগের সময় সফটওয়্যার আপগ্রেড করে অনলাইন সেবাদানের মাধ্যমে নাগরিকদের হাতের মুঠোয় সেবা পৌঁছে দেয়া ও অনলাইন এনআইডি কপি দেয়া ও সোয়া ৭ কোটি নাগরিককে স্মার্টকার্ড দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে প্রদত্ত নগদ টাকা সঠিক ব্যক্তির কাছে পৌঁছানো নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এনআইডি তথ্যভান্ডার থেকে প্রায় ৫০ লাখ নাগরিকের পরিচিতি যাচাই এবং দক্ষতার সাথে ৭ লাখ ৪৬ হাজার ভুয়া/দ্বৈত আইডি/ব্যক্তি শনাক্ত করে সঠিক নাগরিকদের কাছে ঈদ উপহার নিশ্চিতকরণ, বায়োমেট্রিক প্রযুক্তি সংবলিত ইভিএম প্রচলনের মাধ্যমে নির্বাচনি ব্যবস্থাপনা ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে।’
২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের জন্য প্রায় ৯ কোটি ৭৫ লাখ ভোটারের বায়োমেট্রিকসহ ডেমোগ্রাফিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
একটি জাতীয় তথ্যভান্ডার গড়ে তোলার মাধ্যমে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রস্তুত করে নিবন্ধিত সব ভোটারকে এনআইডি দেয়ার মাধ্যমে এই সেবার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ২০১০ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ একটি আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি লাভ করে।
ইসির নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে এনআইডি সেবা দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ৫১৯টি উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিস, ৬৪টি জেলা নির্বাচন অফিস, ১০টি আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস থেকেও নাগরিকদের এই সেবা দেওয়া হচ্ছে।
প্রথম দিকে এনআইডি সংক্রান্ত সেবা ফ্রি দেওয়া হলেও ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ফি নেওয়া শুরু করে কমিশন।
কেন স্বরাষ্ট্রে এনআইডি নেয়ার উদ্যোগ
গত ২৪ মে নির্বাচন কমিশনকে এনআইডি কার্যক্রম ও লোকবল সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তর করার জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব শফিউল আজিমের সই করা চিঠিতে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনের কাজটি সুরক্ষা সেবা বিভাগকে দিতে তিনটি নির্দেশনা দেয়া হয়।
প্রথমত নির্দেশনায় বলা হয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগের দায়িত্বের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করতে রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬-এর রুল ১০ অনুসরণ করতে হবে। পাশাপাশি মন্ত্রিপরিষদ থেকে ২০১৮ সালের ২ আগস্ট জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাতে হবে।
দ্বিতীয় নির্দেশনায় বলা হয়, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন, ২০১০-এ ‘নির্বাচন কমিশন’-এর পরিবর্তে ‘সরকার’ শব্দ অন্তর্ভুক্ত করাসহ প্রয়োজনীয় সংশোধনীর ব্যবস্থা নিতে হবে।
তৃতীয় ও শেষ নির্দেশনায় রয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদ্যমান অবকাঠামো ও জনবল নির্বাচন কমিশন থেকে সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এনআইডি নিয়ে প্রথম থেকেই নানা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নাগরিকরা। পরিচয়পত্রে তথ্য ভুল করা, জীবিতকে মৃত বানিয়ে দেয়াসহ নানা সমস্যা রয়েছে। ভুল সংশোধনেও লাগে দীর্ঘ সময়।
পাসপোর্ট ইস্যু, বিভিন্ন ব্যক্তির পরিচয় (বিশেষ করে অপরাধী, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী ও জঙ্গি) নিশ্চিত হওয়াসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডারের সহায়তা লাগে। বিদ্যমান ব্যবস্থায় নির্বাচন কমিশনের এনআইডি উইং থেকে তারা এ তথ্য সংগ্রহ করে। তবে অন্যের তথ্যভান্ডার থেকে সহায়তা পেতে বেশি সময় ব্যয়সহ আরও কিছু বিষয়ে তাদের বেগ পেতে হচ্ছিল।
‘স্বরাষ্ট্রের হাতেই থাকা উচিত’
জাতীয় পরিচয়পত্রের দায়িত্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতেই থাকা উচিত বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র আর ভোটার আইডি কার্ড এক বিষয় নয়। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাইকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয়। পৃথিবীর সব দেশে এই জাতীয় পরিচয়পত্র দেয় স্বরাষ্ট্র অথবা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এটি নির্বাচন কমিশন করে না। নির্বাচন কমিশন শুধু ভোটার তালিকা নিয়ে কাজ করে।’
বাংলাদেশে শুধু ভোটার তালিকা প্রণয়নের প্রকল্প যৌক্তিকভাবেই নির্বাচন কমিশনের হাতে ছিল জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এখন যখন ভোটার তালিকা নয়, জাতীয় পরিচয়পত্র করা হচ্ছে, তখন পৃথিবীর সব দেশের মতো এটি সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকাই যুক্তিযুক্ত।’
নিজের বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি দেখিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার জন্য সকল তথ্য-উপাত্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংগ্রহ করে; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাসপোর্ট দেয়। বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদেরকেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাসপোর্ট দেয়। তাদেরকেও জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হবে। সুতরাং এ ক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতোই সিদ্ধান্ত।’
সাংবিধানিক সংকট দেখছে ইসি
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম ইসির কাছ থেকে অন্য কোনো সংস্থার অধীনে নেয়া হলে সাংবিধানিক সংকটের সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। তাই সংকট এড়াতে এটি ইসির অধীনেই থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সংক্রান্ত চিঠি চালাচালির মধ্যে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে সিইসির সঙ্গে দুই দফা সাক্ষাৎ করেন।
তাদের যুক্তি, এনআইডি কার্যক্রম অন্যত্র সরিয়ে নিলে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে ভোটাদানে জটিলতা সৃষ্টি হবে। ভোটার সার্ভার নিয়ে সংকটের সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া রাষ্ট্রের অর্থের বিরাট অপচয় হবে।
সিইসি বলেন, ‘এনআইডি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। ভোটার তালিকা ও এনআইডি কার্যক্রম আলাদাভাবে করা যাবে না। এনআইডি কার্যক্রম অন্য কোনো সংস্থার হাতে গেলে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি হবে।
‘তাই এটি ইসির অধীনেই থাকা উচিত। আমরা বিষয়টি নিয়ে কেবিনেটের কাছে লিখিত যুক্তি তুলে ধরব। এ জন্য এনআইডি মহাপরিচালককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।’
এদিকে জনবলসহ জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অনুবিভাগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্থানান্তরের নির্দেশনাকে ইসির কফিনে শেষ পেরেক বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘কী উদ্দেশ্যে এই আত্মঘাতী ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তা বোধগম্য নয়।’
বিষয়টিকে সংবিধান পরিপন্থি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আমি তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। মন্ত্রিপরিষদের যুগ্ম সচিব স্বাক্ষরিত ২৪ মের পত্রে এনআইডি হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় ‘নির্বাচন কমিশন’-এর বদলে ‘সরকার’ শব্দটি প্রতিস্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অপরদিকে এনআইডির বিদ্যমান অবকাঠামো ও জনবল সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তর করার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
তিনি বলেন, ‘একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে এ ধরনের নির্দেশ দেয়া কতটা যৌক্তিক, তা বিবেচ্য। ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এর ফলে নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেজনির্ভর ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণে জটিলতা সৃষ্টি হবে।’
মাহবুব তালুকদার বলেন, দায়িত্ব হস্তান্তরে নির্বাচন ব্যবস্থা ও কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত হবে।
‘এটি করা হলে সংবিধানের ১১৯ ধারা অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালন সম্ভব হবে না বলে মনে করি। নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে এনআইডি স্থানান্তরের নির্দেশ কমিশনের অঙ্গচ্ছেদের নামান্তর। বিষয়টি কমিশনকে না জানানো নির্বাচন কমিশনের প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশের শামিল।’
আরও পড়ুন:শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে দেশ গঠনে জুলাই পদযাত্রার কার্যক্রম শুরু করলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)’র নেতারা।
মোনাজাত শেষে আবু সাঈদের বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তারা।
আজ (১ জুলাই) দুপুরে কেন্দ্রীয় নেতারা আবু সাঈদের বাড়িতে যান।
পরে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শুধু স্বৈরাচারী সরকার পতনের আন্দোলন ছিল না, নতুন বন্দোবস্তের জন্য ছাত্র আন্দোলন ছিল। এই আন্দোলনে যারা সংহতি প্রকাশ করেছেন, তাদের চেতনাকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ গড়তে বিচার ব্যবস্থা, নতুন সংবিধান, জুলাই সনদসহ তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এনসিপি মাঠে থাকবে।
যৌক্তিক সংস্কারে প্রয়োজনে আবারো সংগঠিত হয়ে ছাত্র-জনতাকে নিয়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন নাহিদ ইসলাম। এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, জুলাই সনদ নিয়ে কোনো টালবাহানা সহ্য করা হবে না। দরকার হলে আবারো রাজপথে নামবো। প্রয়োজনীয় সংস্কারের পরেই নির্বাচন দিতে হবে, অন্যথায় সেই নির্বাচন মেনে নেওয়া হবে না।
দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ন্যায়সঙ্গগত সংস্কার ও মানুষের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত এক পা পিছিয়ে আসবে না এনসিপি।
নেতারা জানান, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে এই কর্মসূচি চালু হয়েছে। তারা বলেন, জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংলাপে যেতে চায় এনসিপি, কারণ গণ-অভ্যুত্থানের স্বপ্ন এখনো অপূর্ণ। এই পদযাত্রার মাধ্যমে তারা সাধারণ মানুষের মতামত ও প্রত্যাশা সরাসরি জানার সুযোগ তৈরি করতে চায়।
বিকালে শহীদ আবু সাঈদ হত্যার ঘটনাস্থলসহ রংপুর নগরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন করবেন তারা।
শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিকতা ও পদযাত্রার সূচনা করেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতারা। ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শীর্ষক কর্মসূচি চলবে ১ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত।
কবর জিয়ারতে অংশ নেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তর অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শুরু হবে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর শহীদ মিনার থেকে। পরে রংপুরে পার্কের মোড় থেকে বিকেল ৩টায় পদযাত্রা শুরু হয়ে লালবাগ-শাপলা-জাহাজ কোম্পানির মোড় হয়ে টাউন হল মাঠে পথসভা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ডিসির মোড় হয়ে ধাপ হয়ে মেডিকেল মোড় হয়ে চেকপোস্টে সমাপনী হবে।
জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছর ১৬ জুলাই দুপুর আড়াইটা থেকে তিনটার দিকে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। ছাত্রদের সবাই সরে গেলেও আবু সাঈদ হাতে একটি লাঠি নিয়ে দু’হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে যান।
এই অবস্থায় পুলিশ আনুমানিক ৫০-৬০ ফুট দূর থেকে তার ওপর ছররা গুলি ছোড়ে। পুলিশের অবস্থানে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে। তারপরও অবস্থান থেকে একচুল সরেননি আবু সাঈদ, সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে গুলিতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা আবু সাঈদকে মৃত ঘোষণা করেন।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে, বিএনপির বিশেষ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
আজ বিকালে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এই আলোচনা সভা শুরু হবে। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি পালন কমিটির আহ্বায়ক রুহুল কবির রিজভী এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা থেকে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিখি হিসেবে থাকবেন বলে আশা করছি।’
লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিকাল তিনটায় এই অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হবে। সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।’
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ৩৬ দিনের কর্মসূচির প্রথম ধাপ এটি। এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও পেশাজীবীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আলোচনা সভার ব্যানারে লেখা আছে, ‘গণঅভ্যুত্থান-২০২৪ : জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও শহীদ পরিবারের সম্মানে বিশেষ অনুষ্ঠান।
এই আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সভাপতিত্ব করবেন জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি পালন কমিটির আহ্বায়ক রুহুল কবির রিজভী।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান ও বিভিন্ন সময় সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিহত ও নিখোঁজ হওয়া বিএনপির নেতাকর্মীদের পরিবার-পরিজন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন এবং স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য দেবেন। এছাড়া বিএনপির জাতীয় পর্যায়ের নেতারাও এতে বক্তব্য রাখবেন।
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিএনপি ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসূচির মধ্যে আছে, বিজয় মিছিল, মৌন মিছিল, ছাত্র সমাবেশ, আলোচনা সভা, সেমিনার, রক্তদান, গ্রাফিতি অঙ্কন, পথনাটক, ফুটবল টুর্নামেন্ট, শিশু অধিকার বিষয়ক অনুষ্ঠান, ডেঙ্গু ও করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ অন্তত ২২টি ভিন্নধর্মী আয়োজন।
মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ‘আলোর আলোয় স্মৃতি সমুজ্জ্বল’ শীর্ষক মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি পালিত হয়। এ কর্মসূচির মাধ্যমে জুলাই-আগস্টে বিএনপির কর্মযজ্ঞের সূচনা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব, সদস্য ও সমর্থকরা যতক্ষণ না জুলাই বিপ্লবে নিহত ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো শুরু করে, দুঃখ প্রকাশ না করে-ততক্ষণ পর্যন্ত তারা শান্তি পাবে না।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ শফিকুল আলম আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, “আমরা মাটি থেকে আপনাদের কুৎসিত প্রভাবের দাগ মুছে ফেলব এবং তা রক্ত দিয়ে ধুয়ে ফেলব। আপনারা কখনও শান্তি পাবেন না—যতক্ষণ না শহীদ ও আহতদের প্রতি সম্মান দেখান। যতক্ষণ না আপনি ‘দুঃখিত’ বলেন।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা অপেক্ষা করেছি প্রায় দশ মাস—যাতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব, সদস্যবৃন্দ এবং তাদের সমর্থকরা দুঃখ প্রকাশ করে এবং একটি বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টায় আমাদের পাশে দাঁড়ায়। কিন্তু গত বছরের জুলাই থেকে আপনারা যা করেছেন তা হল শহীদদের নিয়ে উপহাস, আমাদের সংগ্রামকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য এবং ১৭ কোটি মানুষকে ‘জঙ্গি’ বলে কলঙ্কিত করেছেন—এই আশায় যে, আপনার ঔপনিবেশিক প্রভুরা এসে আবারো আপনাদের হাতে দেশ তুলে দেবে, যেন লুণ্ঠন ও বিশৃঙ্খলার আরেকটি অধ্যায় শুরু করতে পারেন’।
‘দুঃখিত, এবার আর তা হবে না। জুলাই আমাদের সাহসী করেছে। জুলাই আমাদের শিখিয়েছে প্রতিকূলতার মুখেও মাথা তুলে দাঁড়াতে। জুলাই আমাদের ডিএনএ-তে স্থায়ীভাবে এক বিরল সাহসের জিন প্রবেশ করিয়েছে। আমরা আর আগের মতো নই,’ তিনি বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, জুলাই আমাদের শিখিয়েছে হাল না ছেড়ে ঝড়ের মতো গুলির মধ্যেও দাঁড়িয়ে থাকার দৃঢ়তা। জুলাই আমাদের ভুলতে দেয় না আমাদের শহীদদের, যাদের আপনারা নির্মমভাবে হত্যা করেছেন; যাদের চোখ উপড়ে নিয়েছেন, যাদের আত্মাকে ছিন্নভিন্ন করেছেন।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আপনাদের সঙ্গে কখনও শান্তি হবে না—যতক্ষণ না আপনি ‘দুঃখিত’ বলেন, যতক্ষণ না আপনি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আপনার হাতে রক্ত দেখতে পান।’
মানবতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সাথে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে লড়ব—আমাদের জমিতে, নদীতে, পাহাড়ে। আমরা লড়ব ভার্চুয়াল জগতেও। আপনারা গণহত্যার সহযোগী ও মানবাধিকারের ডাকাত, আমরা আপনাদের মুখোশ খুলে ফেলব।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পুনরুত্থান কর্মসূচির উদ্বোধন করে বলেছেন, যে লক্ষ্য নিয়ে তরুণ ছাত্র, জনতা, রিকশাচালক, শ্রমিকরা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন-সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে জুলাই-আগস্ট মাসজুড়ে আমরা গত বছরের প্রতিটি দিনকে আবারও পুনরুজ্জীবিত করব। এই অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে আবার নতুন করে শপথ নেব এবং এটা আমরা প্রতি বছর করব, যাতে স্বৈরাচার আর যেন মাথাচাড়া দিতে না পারে।
আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ ইতিহাসের এক গৌরবময় ক্ষণ। এক বছর আগে, এই জুলাই মাসে শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন শুরু করেছিল তা এক অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থান রচনা করে আমাদের মুক্তির স্বাদ দিয়েছিল। জুলাই ছিল দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে এক অমোঘ ডাক, জনতার এক জাগরণ। সেই আন্দোলনের মর্মবাণী ছিল— “ফ্যাসিবাদের বিলোপ করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ, রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থাণের স্বপ্ন ছিল নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ এই মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, আমরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে স্মরণ করার যে অনুষ্ঠানমালা নিয়েছি, এটা শুধু ভাবাবেগের বিষয় নয়, ক্ষোভ প্রকাশের বিষয় নয়। আমরা ১৬ বছর পরে বিরাট বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলাম অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এবং যে কারণে অভ্যুত্থান হয়েছিল, তাৎক্ষণিক তাঁর যে লক্ষ্য ছিল সেটা আমরা পূরণ করতে পেরেছি। কিন্তু তাঁর পেছনে ছিল একটা বিরাট স্বপ্ন- নতুনভাবে রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণ, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ।
স্বৈরাচার যেন আর কখনও ফিরে আসতে না পারে সে বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমরা প্রতি বছর এই সময়টা উদযাপন করব যাতে পরবর্তীতে আবার এই অভ্যুত্থান করার জন্য ১৬ বছর আমাদের অপেক্ষা করতে না হয়। আমরা প্রতি বছর এটা করব, যাতে স্বৈরাচারের কোনো চিহ্ন দেখা গেলেই তাৎক্ষণিক ভাবে আমরা তার বিনাশ করতে পারি।
সেটার জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থান পুনরুত্থান কর্মসূচি পালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বৈরাচারের প্রথম পাতা মেলার আগেই যেন আমরা তাকে ধরে ফেলতে পারি। ১৬ বছর যেন আমাদের অপেক্ষা করতে না হয়।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে জুলাই গণঅভ্যুত্থাণে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে গভীর গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি, সেই সব তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ, কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক, রিকশাচালকদের—যারা রাস্তায় নেমে গণতন্ত্রের পতাকা উঁচিয়ে ধরেছিলেন; সাহস, ত্যাগ আর দৃঢ়তার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন’।
জুলাইকে ঐক্যের মাসে পরিনত করার আহ্বান জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে সরকার প্রধান বলেন, আমরা আজ মাসব্যাপী যে কর্মসূচির সূচনা করছি, তা শুধুই স্মরণ নয় বরং একটি নতুন শপথ। গত বছরের জুলাইয়ে এ দেশের সকল শ্রেণি-পেশা-বয়সের মানুষের মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছিল, আমরা চাই, এই জুলাইয়ে সেই ঐক্য আবার সুসংহত হোক।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য— জনগণকে গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা, রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার দাবি জানানো এবং রক্তের বিনিময়ে পাওয়া সংস্কারের এই সুযোগকে হারিয়ে না ফেলা। আমাদের সামনের পথ অনেক কঠিন, কিন্তু মস্ত বড় সম্ভাবনাও আছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, জনগণ যখন জেগে ওঠে, তখন কোনো শক্তিই তাদের রুখে দিতে পারে না। সেই বিশ্বাস নিয়েই আমি আপনাদের আহ্বান জানাই—আসুন, এই জুলাই মাসকে পরিণত করি গণজাগরণের মাসে; ঐক্যের মাসে’।
জুলাই-আগস্টের পুনরুত্থান কর্মসূচির সাফল্য কামনা করে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের স্বপ্ন আবার নতুন করে জেগে উঠুক। আমাদের ঐক্য সর্বমুখী হোক, অটুট হোক আমাদের এই অনুষ্ঠানমালার লক্ষ্য।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী এবং শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকায় বনায়ন ও সবুজায়নের লক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ও বন অধিদপ্তরের মধ্যে সমঝোতা স্মারক আজ মঙ্গলবার নগর ভবনে স্বাক্ষরিত হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়ার উপস্থিতিতে কর্পোরেশনের পক্ষে কর্পোরেশনের সচিব জনাব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এবং বন অধিদপ্তরের পক্ষে ঢাকা সামাজিক বন সার্কেলের বন সংরক্ষক জনাব হোসাইন মুহম্মদ নিশাদ এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এলাকার বায়ুদূষণ, পানিদূষণ, মাটিদূষণ, শব্দদূষণ ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ তথা পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ল্যান্ডস্কেপ উন্নয়ন ও জলাবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত প্রশমণে বনায়ন ও সবুজায়নসহ সৌন্দর্য বর্ধনের মাধ্যমে সার্বিক পরিবেশের উন্নয়নে ৫ বছর মেয়াদি এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তির আওতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত জায়গায় কর্পোরেশনের অর্থায়নে নগর বনায়ন কার্যক্রমে বন অধিদপ্তর কারিগরী পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে। এছাড়া, বন অধিদপ্তর বনায়ন পরিচালনা ও তদারকি ম্যানুয়াল প্রস্তুত করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে সরবরাহ করবে। চুক্তি আনুযায়ী বনায়ন পরবর্তী পরিচর্যা ও সুরক্ষায় স্থানীয় কমিঊনিটির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।
চুক্তির প্রথম পর্যায়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ৮১.১০ কি.মি. দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট ৩৫ টি মিডিয়ানের মধ্যে প্রায় ১৬. কি.মি. দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট ০৬ টি মিডিয়ানে ঘাস ও গাছ রোপণ করা হবে।
স্মারক স্বাক্ষর আনুস্থানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক বলেন, “১৯১৭ সালের পরিকল্পনায় বলা হয়েছিল, ঢাকা হবে একটি বাগানের শহর। কিন্তু অপরিকল্পিত নগরায়ন, আবাসন ও জনসংখ্যার চাপে আজ ঢাকা শহর থেকে সবুজ ও জলাশয় হারিয়ে গিয়েছে। আমরা যদি এখনই কার্যকর ববস্থা গ্রহণ না করা হয় তাহলে এটি পরিত্যক্ত নগরীতে পরিণত হবে।” ঢাকা শহরকে বাঁচাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিকল্পিত বনায়ন ও সবুজায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করছে উল্লেখ করে প্রশাসক বলেন আগামী অর্থবছরে বৃক্ষরোপন খাতে ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া, আজকের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য তিনি বন অধিদপ্তরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব জনাব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এবং বন অধিদপ্তরের সামাজিক বনায়ন শাখার উপ-প্রধান বন সংরক্ষক ড. মোঃ জগলুল হোসেনসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় পুলিশের ওসি সেজে ইলেকট্রনিক্স শো-রুম থেকে পণ্য আত্মসাতের ঘটনায় এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রতারক চক্রটি হোয়াটসঅ্যাপে আনোয়ারা থানার ওসির পোশাক পরা ছবি ব্যবহার করে নিজেকে থানার ওসি পরিচয় দিয়ে উপজেলার বটতলী ও বন্দর সেন্টার মহালখাঁন বাজারের দুটি ইলেকট্রনিক্স দোকানের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা দুটি স্মার্ট টিভি, একটি ফ্রিজ ও দুটি ফ্যান কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে এবং টাকা বিকাশে পাঠানো হবে অথবা লোক মারফত পরিশোধ করা হবে বলে জানায়।
এরপর গত ২৭ জুন মালামাল পিকআপে তুলে নেওয়ার পর চক্রটি টাকা না দিয়ে গা ঢাকা দেয়। প্রতারণার শিকার ব্যবসায়ীরা তখন আনোয়ারা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নামে এবং সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালী থানাধীন বলুয়ার দিঘীর পাড় এলাকার একটি কলোনিতে অভিযান চালিয়ে মো. সুমন (৩৫) নামের একজনকে আটক করে। তিনি মৃত মো. করিমের ছেলে।
আটকের সময় সুমনের বাসা থেকে একটি ফ্রিজ ও একটি ফ্যান উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া পটিয়া এলাকা থেকে একটি স্মার্ট টিভিও উদ্ধার করে পুলিশ।
আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, "ওসি সেজে প্রতারণার ঘটনায় একজনকে আটক এবং তিনটি মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। পলাতক অন্য প্রতারককে ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে।"
বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ৮ হাজার জন নিয়োগের লক্ষ্যে আজ থেকে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
প্রার্থীদের অবশ্যই এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ২.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। আগ্রহীরা আগামী ২৪ জুলাই রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
গত ২৭ জুন বাংলাদেশ পুলিশ নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আবেদন করতে হবে পুলিশের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে https://pcc.police.gov.bd ।
আবেদনের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। অবিবাহিত হতে হবে এবং প্রার্থীর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।
শারীরিক যোগ্যতা: মেধা কোটার ক্ষেত্রে পুরুষ প্রার্থীর উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি হতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তান এবং ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটার ক্ষেত্রে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি।
শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের কোটার ক্ষেত্রে বিধি অনুসৃত হবে। নারী প্রার্থীর উচ্চতা মেধা কোটার ক্ষেত্রে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি হতে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তান এবং ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি। শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের কোটার ক্ষেত্রে বিধি অনুসৃত হবে।
মেধা ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটার ক্ষেত্রে বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি ও সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩৩ ইঞ্চি। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের কোটার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি ও সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩১ ইঞ্চি। দৃষ্টিশক্তি ৬/৬।
আবেদন ফি: ফরম পূরণ করার পর যোগ্য প্রার্থী একটি ইউজার আইডি পাবেন। সেই আইডিতে আবেদন ফরম পূরণের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যেকোনো টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল নম্বর থেকে ৪০ টাকা জমা করতে হবে।
আবেদন করার সময়কাল ১ জুলাই সকাল ১০টা থেকে ২৪ জুলাই রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।
নিম্নোক্ত সময়সূচি অনুযায়ী জেলাগুলো হতে কনস্টেবল পদে প্রার্থী বাছাই চূড়ান্ত করা হবে।
মাগুরা, কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঝিনাইদহ, নাটোর, নীলফামারী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গাইবান্ধা, নরসিংদী, মেহেরপুর, ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও খুলনা জেলায় শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও ফিজিক্যাল এন্ডিউরেন্স টেস্ট যথাক্রমে ১০, ১১ ও ১২ আগস্ট সকাল ৮টায়; লিখিত পরীক্ষা ২৩ আগস্ট সকাল ১০টায় এবং মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা ৩১ আগস্ট সকাল ১০টায় নেওয়া হবে ।
সাচিপুর, নওগাঁ, পঞ্চগড়, পটুয়াখালী, নরসিংদী, নেত্রকোণা, ঢাকা, লক্ষ্মীপুর, গোপালগঞ্জ, কক্সবাজার, দিনাজপুর, সিরাজগঞ্জ ও সিলেট শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও ফিজিক্যাল এন্ডিউরেন্স টেস্ট যথাক্রমে ১৩, ১৪ ও ১৭ আগস্ট সকাল ৮টায়; লিখিত পরীক্ষা ২৫ আগস্ট সকাল ১০টায় এবং মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা ৩১ আগস্ট সকাল ১০টায় হবে।
রাজবাড়ী, কুড়িগ্রাম, মাদারীপুর, মেহেরপুর, মাটিরাঙ্গা, মানিকগঞ্জ, গাইবান্ধা, শেরপুর, ভোলা, বগুড়া, ময়মনসিংহ, ঝালকাঠি, বান্দরবান, নড়াইল, পাবনা ও বরগুনা শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও ফিজিক্যাল এন্ডিউরেন্স টেস্ট যথাক্রমে ১৭, ১৮ ও ১৯ আগস্ট সকাল ৮টায়; লিখিত পরীক্ষা ৩০ আগস্ট সকাল ১০টায় এবং মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা হবে ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায়।
শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, চাঁদপুর, ঠাকুরগাঁও, পাবনা, সুনামগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, নওগাঁ, পিরোজপুর ও চুয়াডাঙ্গা শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাই ও ফিজিক্যাল এন্ডিউরেন্স টেস্ট যথাক্রমে ২০, ২১ ও ২২ আগস্ট, সকাল ৮টায়; লিখিত পরীক্ষা ৩১ আগস্ট সকাল ১০টায়; এবং মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা ৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হবে।
মন্তব্য