করোনাভাইরাস মহামারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিষণ্নতায় ভুগছে দিনাজপুরের অধিকাংশ শিক্ষার্থী। বিভিন্ন অপরাধ চক্রের তৎপরতায় তারা জড়িয়ে পড়ছে অপরাধ কার্যক্রমে। অপরদিকে যুবক ও কিশোররা নিজেরাই গড়ে তুলছে কিশোর গ্যাং। তাদের হাতে ঘটছে নানা ধরনের সহিংস ঘটনা।
দিনাজপুর জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত দিনাজপুরে মাদক, ছিনতাই, ডাকাতির বেশ কয়েকটি ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় গ্রেপ্তার অধিকাংশই কিশোর ও যুবক। এসব মামলায় আসামির তালিকায় বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নাম উঠে আসছে।
গত ১৯ মার্চ দিনাজপুর শহরের জিলা স্কুলের পেছনে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২০ কিশোর ও যুবককে আটক করে। এদের ১৩ জনই শিক্ষার্থী। এর মধ্যে দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাঁচজন, বিরল সরকারি কলেজের চারজন, দিনাজপুর টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের দুইজন, সরকারি সিটি কলেজের একজন ও মাউন্ট এভারেস্ট কলেজের একজন ছাত্র রয়েছে।
আটক অন্য সাত কিশোর ও যুবক হলেন দিনাজপুর শহরের স্টেশন রোডের ভাঙারি দোকানের কর্মচারী রতন হোসেন, শহরের বাহাদুর বাজারের মাছবিক্রেতা আবু বক্কর সিদ্দিক, বাহাদুর বাজারের কাপড় দোকানের কর্মচারী মনি হোসেন, বিশাল আহমেদ এবং শরিফ, কাচারী এলাকার কম্পিউটার দোকানের কর্মচারী রকি ইসলাম ও পাটোয়ারী বিজনেস হাউজের কর্মচারী শান্ত।
এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোমিনুল ইসলাম।
তিনি জানান, কিশোর ও যুবকরা নিয়মিত সেখানে বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবন করত। পাশাপাশি মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের জুয়া খেলত। পরে মানবিক বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
আটক অপর সাত কিশোর ও যুবকের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, লকডাউনের কারণে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় যুবকেরা নেশাগ্রস্ত হয়ে নানান ধরনের অপরাধ কাজে জড়িয়ে পড়ছে।
সবশেষ ২২ মে মধ্যরাতে ঘোড়াঘাটে ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে দেশীয় অস্ত্র ও ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামসহ চার যুবককে আটক করে পুলিশ। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ডাকাতির চেষ্টায় জড়িত মোট ১০ ব্যক্তির নামে পুলিশ মামলা করে।
ওই মামলায় ১০ আসামির ৮ জনের বয়স ২৫ বছরের নিচে। আবার ওই ৮ জনের ৩ জনই দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আর ২ জন করোনাভাইরাস আসার আগে রাজধানীর বিভিন্ন কলকারখানায় কাজ করত।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোমিনুল আরও তথ্য জানান, ছয় যুবকের নামে আগে কোনো অপরাধ সংগঠনের তথ্য নেই। তারা এই প্রথম ডাকাতির মতো বিপজ্জনক অপরাধে জড়িয়েছে। মামলার অপর চার আসামির বিরুদ্ধে বিগত সময়ে অপরাধ সংঘটনের একাধিক মামলা রয়েছে।
মামলা ও গ্রেপ্তারের বাইরে গত পাঁচ মাসে জেলাজুড়ে বেশ কয়েকটি কিশোর সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় রক্তাক্ত হয়েছে অনেক শিক্ষার্থী। ইভটিজিং ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কিশোর এবং স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা আলাদা আলাদা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করছে।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার নুরজাহানপুর অব. সামরিক কলোনি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দুটি গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে শিফাত ও আবির নামে নবম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়।
দিনাজপুর শহরের পুলহাট এলাকার বাসিন্দা সাবের হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকার করোনা মোকাবিলায় লকডাউন ঘোষণা করেছে। কিন্তু এই লকডাউনের সময় আমাদের সন্তানদের বাড়িতে রাখাই যায় না। তারা বাড়ি থেকে বের হয়ে এলাকার বিভিন্ন স্থানে আড্ডা দেয়। এতে করে আমরা জানতে পারি না যে, আমাদের সন্তানরা কোনো অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হলো কি না।’
অপরদিকে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কিশোর নিউজবাংলাকে জানায়, সারা দিন বাড়িতে থাকতে তার ভালো লাগে না। স্কুল যখন খোলা ছিল, তখন বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হতো। কিন্তু এখন সব বন্ধ। তাই এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয় সে।
কিশোরটি বলে, ‘কিছুদিন আগে দেখলাম আমার কিছু বন্ধু নেশার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। সেই সঙ্গে ইভটিজিংও করে। কাউকে ভয় পায় না।’
গত পাঁচ মাসের আগে কি চিত্র জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোমিনুল আরও জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত লকডাউনের কারণে যুবক কিশোরদের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা বেশি ঘটছে। এর আগে গত বছরের শেষ পাঁচ মাসে চুরি ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটেছে। তবে সেগুলোতে যুবক কিশোরদের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বাদল বলেন, ‘কিশোর ও যুবকরা অপরাধে জড়িয়ে যাওয়ার একমাত্র কারণ হতাশা। দীর্ঘসময় লকডাউনে তারা নানা রকম হতাশায় ভুগছে। তবে লকডাউনের পাশাপাশি জনগণকে সচেতন করতে হবে।
‘করোনার প্রথম ধাপে সরকার জনগণকে সচেতন করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিল। তবে বর্তমানে তা আর দৃশ্যমান নেই। দীর্ঘ সময় পর সার্বিক দিক বিবেচনায় সরকার যানবাহন, লঞ্চ ও ট্রেন খুলে দিয়েছে। এবার স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া প্রয়োজন। তা না হলে আমাদের শিক্ষার্থীদের মনোবল একেবারে ভেঙে যাবে।’
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দিন বলেন, ‘গত পাঁচ মাসে ঘোড়াঘাট থানায় বিভিন্ন অপরাধের বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। আমাদের হাতে গ্রেপ্তার আসামিদের অনেকেই যুবক।
‘এমনও আসামি আমরা পেয়েছি, যারা আগে কোনো অপরাধ করেনি। এই প্রথম তারা বিভিন্ন অপরাধী ব্যক্তির সংস্পর্শে অপরাধে জড়িয়েছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘লকডাউনে সন্তানের ওপর বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন অভিভাবকদের। তাদের সন্তানরা কার সাথে মিশছে, কী কাজ করছে, তার ওপর নজর দিতে হবে। সচেতনতাই পারে সন্তানকে অপরাধ থেকে রক্ষা করতে।’
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে জানাগেছে।
সোমবার রাতে মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পরে তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।
মুন্নির পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীতে রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন তারাগুনিয়া ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বলেন, “রোগী কীভাবে মারা গেছে সেটা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, “রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “গতকাল রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক এলাকায় উত্তেজনা ও হট্টগোলের আশঙ্কায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠাই। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকা থেকে কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে।”
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক। ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে বলবো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
একই ক্লিনিকে এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখানের) সাবেক সংসদ সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিমের নামে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে সেলিম নামে এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকায় শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া স্বাক্ষাতকারে এ দাবি করেন হাফিজ ইব্রাহিম।
এর আগে দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, যায়যায়দিন সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকার ডিজিটাল প্লাট ফরমে একটি সংবাদে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তুলে সেলিম নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, সংবাদটি ডিজিটাল প্লাট ফরমে প্রকাশ হওয়ার পর আমার নজরে আসে। আমি মনোযোগ দিয়ে তার অভিযোগ শুনি। যে ব্যক্তি আমার নামে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা না। আমি খবর নিয়ে জেনেছি, তিনি ভোলা-১ সদর আসনের বাসিন্দা ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের বাড়ির পাশে তার বাড়ি। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেলিম নামে ওই ব্যক্তির সাথে তার আপন ভাতিজি জামাইয়ের দীর্ঘদিন ধরে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে তার ভাতিজি জামাই তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এমনকি ওই বিষয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা রয়েছে।
হাফিজ ইব্রাহিম আরও বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পতিত সরকারের পলাতক একটি কুচক্রী মহল বিএনপির নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা এই ঘটনার পেছনে যে আসল সত্য রয়েছে তা উদঘাটন করুন।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী মহানগরীর একটি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব-৫।
রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর টিকাপাড়া এলাকার একটি বালুর স্তূপের আনুমানিক ২ ফুট গভীর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
সোমবার সকালে র্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অভিযানে একটি ৭.৬২ মি.মি. বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৫; সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল জানতে পারে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন লুট হওয়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি দুষ্কৃতকারীরা বোয়ালিয়া থানাধীন টিকাপাড়া এলাকায় লুকিয়ে রেখেছে। পরে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে বালুর স্তূপের ভেতর থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র্যাবের গোয়েন্দা দল।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসস’কে জানান, এটি পুলিশের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। তবে কোন থানার অস্ত্র সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। কারণ পিস্তলের গায়ে বাট নম্বর ঘষা-মাজার চিহ্ন স্পষ্ট। উদ্ধারকৃত বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি বোয়ালিয়া থানায় জিডির পর হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য