দেশের প্রথম এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছে এক বছর হলো। ঢাকায় অস্থায়ী ক্যাম্পাসে স্বল্প পরিসরে কার্যক্রম শুরু হলেও এর স্থায়ী ক্যাম্পাস হবে উত্তরের জেলা লালমনিরাহাটে।
প্রায় ৬৪০ একর জমিতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের প্রাথমিক কাজ হিসেবে সমীক্ষা প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। ১০ কোটি টাকারও কম ব্যয়ের সমীক্ষা প্রকল্পে ২ কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি অর্থ চাওয়া হয়েছে গাড়ির পেছনে। এতে গাড়ি কেনা, নিবন্ধন, রক্ষণাবেক্ষণ ও তেলের পেছনেই যাবে ব্যয়ের ২১ শতাংশ অর্থ।
এক বছরে বাস্তবায়নযোগ্য ছোট এই প্রকল্পে বড় অঙ্কের গাড়ি কেনা ও তার ব্যয় এবং অন্যান্য খাতে অতিরিক্ত প্রাক্কলন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। আবার এভিয়েশন-সংশ্লিষ্ট প্রকল্প হলেও তাতে অ্যারোস্পেস-এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ পরামর্শকও রাখা হয়নি, যা নিয়েও আপত্তি রয়েছে কমিশনের।
আগামী ২ জুন অনুষ্ঠেয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভায় (পিইসি) আপত্তি বিষয়ে জানতে চাইবে কমিশন। পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগমের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
পরিকল্পনা কমিশন বলছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার হাড়িভাঙা এলাকায় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’- বিএসএমআরএএইউর স্থায়ী ক্যাম্পাস হবে। এ জন্য ‘ফিজিবিলিটি স্টাডি ফর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটি ডিভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক একটি সমীক্ষা প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্যের আলোকেই হবে মূল কাজের ব্যয় প্রাক্কলন।
কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ছোট এই প্রকল্পতেও অনেক খাতেই অতিরিক্ত ব্যয় চাওয়া হয়েছে। এমন একটি প্রকল্পে যদি এক-চতুর্থাংশ গাড়িতেই ব্যয় হয়, সমীক্ষার অন্য কাজের কী হবে? ইচ্ছেমতো ব্যয় করতে চাইলে তো হবে না। পরিকল্পনা কমিশনসহ অন্যদের নিয়ে প্রকল্প ব্যয় যাচাই-বাছাইয়ে কমিটি আছে। এ কমিটির সভায় সব দিক বিবেচনা করে যা যৌক্তিক হবে, তাই দেয়ার সুপরিশ করা হবে। তবে অবাস্তব আবদার করাও উচিত নয়।’
জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশের প্রায় প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যয় নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। এগুলোতে প্রচুর অনিয়ম হয়, ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য প্রচুর ব্যয় করা হয়। এর অন্যতম হচ্ছে গাড়ি কেনা। এগুলো প্রকল্প পরিচালকসহ শীর্ষ ব্যক্তিরাই ব্যবহার করেন। যদিও সেগুলো তেমন প্রয়োজন হয় না। কারণ তারা প্রকল্প এলাকায় থাকেন না। তা ছাড়া প্রয়োজনে দু-একটি গাড়ি হায়ার (ভাড়া) করলেই হয়।’
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার লোকেরা এসে হোটেলে থেকে ভাড়া গাড়ি নিয়ে সমীক্ষার কাজ করেন। কিন্তু আমাদের লোকেরা তা পারেন না। তাদের গাড়ি কেনা লাগেই।
প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়, যা বাংলাদেশের এভিয়েশন এবং অ্যারোস্পেস (মহাকাশ) সম্পর্কিত প্রথম এবং একমাত্র উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিমানশিল্পে দক্ষ জনবলের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই দক্ষ বৈমানিক, বিমান প্রকৌশলী, বেসামরিক বিমান পরিবহনের সব স্তরের দক্ষ জনবল, বিমান তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়, মহাকাশ-সম্পর্কিত বিভিন্ন স্তরের উচ্চশিক্ষা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া হবে।
সমীক্ষা প্রকল্প প্রস্তাবানায় দেখা যায়, সমীক্ষা প্রকল্পের জন্য ১ কোটি ৮০ লাখ ৭০ হাজার টাকায় দুটি বিলাসবহুল গাড়ি কেনার কথা বলা হয়েছে, যা মোট ব্যয়ের ১৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। তেলের জন্য ১৮ লাখ টাকা বা ১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং প্রায় ১২ লাখ টাকা বা দেড় শতাংশ অর্থ চাওয়া হয়েছে গাড়ির নিবন্ধন ও রক্ষণাবেক্ষণের পেছনে। সব মিলিয়ে গাড়ির পেছনেই খরচ হবে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা বা ২১ শতাংশ।
প্রস্তাবিত সমীক্ষা প্রকল্পে অন্য ব্যয়ের মধ্যে বিদেশ ভ্রমণের জন্যও ৫৮ লাখ টাকা রাখার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া এক বছরের জন্য নেয়া এই প্রকল্পে ৮ লাখ টাকার অফিস সরঞ্জাম, দেশে অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের পেছনে ৬ লাখ টাকা, ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকার প্রিন্টিং ও বাইন্ডিং ব্যয়, ২ লাখ টাকার বিজ্ঞাপন ব্যয় এবং ৪ লাখ টাকা বিনোদন ব্যয় ধরা হয়েছে।
এ ছাড়া পরামর্শক খাতে ৪ কোটি ২২ লাখ টাকা, জরিপকাজে ২ কোটি ৪১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ম্যানেজমেন্ট খাতে ২১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, সম্মানী ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ অন্যান্য ব্যয়ও রয়েছে।
সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন উঠেছে গাড়ির পেছনে খরচ নিয়ে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশন নিজেদের মতামতে বলেছে, প্রকল্পটি স্বল্প বাজেটের। তাই এতে এত বেশি টাকা গাড়ির পেছনে ব্যয় করা উচিত নয়। প্রকল্প ব্যয়ে গাড়ি কেনার পেছনে ১৮ শতাংশ এবং রক্ষণাবেক্ষণ ও তেলের পেছনে আরও ৩ শতাংশসহ মোট ২১ শতাংশ ব্যয় যৌক্তিক বা সমীচীন নয়। সরকারি অর্থ সাশ্রয়ের জন্য প্রকল্পের প্রয়োজনে এক বছর মেয়াদে গাড়ি ভাড়া করার প্রস্তাব করা ছিল যুক্তিযুক্ত। এ সম্পর্কে পিইসি সভায় সংস্থার প্রতিনিধির কাছে জানা যেতে পারে।
অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের এভিয়েশন-সংক্রান্ত পড়ালেখার প্রয়োজন আছে। তবে এত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে নতুন আরেকটি প্রয়োজন কি না, তা দেখা উচিত ছিল। বিদ্যমান প্রতিটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ-সম্পর্কিত আলাদা বিভাগ বা কোর্স খুলেও তা চালানো যেত। কারণ এসব বিষয়ে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ও গ্র্যাজুয়েটসহ বিভিন্ন পর্যায়ে জানাশোনা মানবসম্পদ অছে কি না, তা দেখতে হবে। সমীক্ষা প্রকল্পে গাড়ি কেনার প্রয়োজন নেই বলেও মনে করি আমি।’
সমীক্ষা কার্যক্রমে অধিক পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ প্রয়োজন বলে মির্জ্জা আজিজুল মন্তব্য করেন। আবার আকাশপথ ও মহাকাশ-সম্পর্কিত প্রকল্প হলেও তাতে একাধিক আরবান প্ল্যানার বা পরামর্শক রাখা হয়েছে, কিন্তু কোনো এভিয়েশন-অ্যারোস্পেস বিশেষজ্ঞ পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়নি। এতে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সমীক্ষা করার কথা বলা হলেও পৃথক পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব বিষয়ে যৌক্তিকতা সংস্থার প্রতিনিধির কাছে জানতে চাইবে কমিশন।
সমীক্ষা প্রকল্প শুরু করতেও বিলম্ব হয়েছে। প্রথমে প্রকল্পটি সেপ্টেম্বর ২০২০ থেকে আগস্ট ২০২১ পর্যন্ত এক বছর বাস্তবায়ন সময় ধরা হয়েছিল। এরই মধ্যে যা প্রায় পার হয়ে গেছে। অর্থাৎ সমীক্ষা শুরুর আগেই সময় বাড়বে। তা ছাড়া প্রস্তাবনায় মাত্র এক বছরে অনেক বিষয়ে তথ্য যাচাইয়ের কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পে দুটি বাস্তবায়নকারী সংস্থার কথা বলাও হয়েছে।
অন্য খাতের ব্যয় নিয়ে কমিশন বলছে, বিভিন্ন অঙ্গের ব্যয় সুস্পষ্ট ও যৌক্তিক হওয়া প্রায়োজন। ম্যানেজমেন্ট চার্জ হিসেবে ফিজিবিলিটি কমিটির মিটিং, পিইসি/টিইসি মিটিং, ড্রইং অ্যাপ্রুভাল কমিটির মিটিংয়ের সম্মানী নিয়েও আলোচনা প্রয়োজন। ফরেন ট্যুর, এন্টারটেইনমেন্ট এক্সপেন্স, সেমিনার ও কনফারেন্স এক্সপেন্স, কনভেইয়েন্স, ট্যুর-ট্রাভেল (অভ্যন্তরীণ), প্রিন্টিং ও বাইন্ডিং, অনারিয়াম বা সম্মানী ইত্যাদি খাতের ব্যয় যৌক্তিক করা এবং এসব ব্যয়ের বিস্তাবিত বিবরণ সম্পর্কে সভায় আলোচনা হতে পারে।
২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সংসদে এ-সম্পর্কিত বিল পাসের পর দেশের প্রথম এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয়টি পরের বছরের (২০২০ সাল) জানুয়ারিতে যাত্রা শুরু করে। ওই বছরের ২৬ জানুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দর এলাকায় স্থাপিত অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন ও পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রথম ব্যাচে বিএসসি এন অ্যারোনিটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, এমএসসি ইন এভিয়েশন সেফটি অ্যান্ড অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন এবং এমবিএ ইন এভিয়েশন ম্যানেজমেন্ট– এই তিনটি বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যের দায়িত্বে রয়েছেন এয়ার ভাইস মার্শাল এ এইচ এম ফজলুল হক।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে লালমনিরহাটে বিএসএমআরএএইউর অস্থায়ী ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বিমানবাহিনী-প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত। লালমনিরহাটে মূল ক্যাম্পাসের পাশাপাশি ঢাকার আশকোনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শাখা থাকবে।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আন্তর্জাতিক মান দিতে আন্তর্জাতিক বহুজাতিক কোম্পানি, এভিয়েশন কোম্পানি ও এভিয়েশন অথরিটি, ইউরোপীয় বহুজাতিক কোম্পানি এয়ারবাসের সঙ্গে সহযোগিতার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এ ছাড়া শীর্ষ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় যেমন কভেন্ট্রি ইউনিভার্সিটি, সারে ইউনিভার্সিটি এবং জার্মান অ্যারোস্পেস সেন্টারসহ ইউরোপের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষা ও গবেষণায় সহযোগিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মান অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরের আদলে এই ক্যাম্পাস নির্মাণকাজ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ বিজনেস এক্সপো ২০২৫-এ যোগদানের জন্য ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) ৯ সদস্যের একটি বাণিজ্য প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছে।
এই এক্সপো ১ ও ২ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি মেসোনিক সেন্টারে (এসএমসি) অনুষ্ঠিত হবে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিসিসিআই বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সফরকালে অস্ট্রেলিয়ান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক সহযোগিতার সুযোগ অনুসন্ধান করবেন। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে পণ্য প্রদর্শনী, নেটওয়ার্কিং সেশন, বিটুবি মিটিং এবং বিষয়ভিত্তিক সেমিনারে অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। যেখানে বাংলাদেশের পণ্য ও সেবার প্রসার, আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব শক্তিশালী করা এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ পাবে।
এক্সপোতে তৈরি পোশাক, জুতা, পাটজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, মেডিকেল ডিভাইস, তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা, খাদ্য ও ফলমূল, পর্যটন, কৃষি, ফার্নিচার, হস্তশিল্প এবং রিয়েল এস্টেট প্রভৃতি বিষয়র ওপর প্রাধান্য দেওয়া হবে।
ডিসিসিআই থেকে অংশগ্রহণকারী ৯টি প্রতিষ্ঠান হলো: টেক্সট্রেড করপোরেশন, ফিঙ্গারটাচ সার্ভিসেস, ফারইস্ট হোল্ডিংস লিমিটেড, পেন্টাগন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, চৌধুরী শাজ্জাদ মনোয়ার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস, নায়িশা এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড, টোরি ক্রেডিট রিপোর্টস অ্যান্ড কালেকশনস লিমিটেড, টেকফিনা বিপিও অ্যান্ড করপোরেট অ্যাডভাইজারি লিমিটেড এবং আল-আরাফাহ পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির আওতায় প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানি এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক সম্প্রসারণ সংক্রান্ত প্রস্তাবসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করেছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয় ও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ কর্তৃক উত্থাপিত প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করা হয়।
কমিটি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের লক্ষে ডিএপি ও টিএসপি সার আমদানির পাঁচটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চীনের ব্যানিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং লিমিটেড থেকে ৩৭৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার (৩য় লট) আমদানি করা হবে। যার প্রতি মেট্রিক টনের দাম ধরা হয়েছে ৭৭২ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।
এছাড়া, মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস থেকে ২১৫ কোটি ২৮ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৫৮৫.৩৩ ডলার) ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার (৬ষ্ঠ লট), ২১৫ কোটি ২৮ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৫৮৫.৩৩ ডলার) ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার (৭ম লট), ৩৭২ কোটি ৮৬ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৭৬০.৩৩ ডলার) ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার (৫ম লট) এবং ৩৭২ কোটি ২৫ লাখ টাকায় (প্রতি টন ৭৬০.৩৩ ডলার) ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার (৬ষ্ঠ-ঐচ্ছিক ১ম লট) আমদানি করা হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কৃষকদের জন্য সারের সরবরাহ নির্বিঘ্ন রাখতে চীন ও মরক্কোর সঙ্গে সরকারের নিয়মিত রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির অংশ হিসেবে এই আমদানি করা হবে।
এছাড়াও আজকের ক্রয় কমিটি সভা সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ককে ৪-লেন জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের প্যাকেজ নং ডব্লিউপি-০১ (পার্র্ট-১) এর আওতায় আশুগঞ্জ গোলচত্ত্বর থেকে সরাইল গোলচত্ত্বর পর্যন্ত (১১.৫৬ কিলোমিটার) সড়ক নির্মাণ কাজের ভেরিয়েশন অর্ডার-১ (ভিও-১) এর প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করেছে।
মূল চুক্তিমূল্য ছিল ৫৫৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা যেখানে ভেরিয়েশন অর্ডারে ১৬৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা যোগ করা হয়েছে এবং সংশোধিত মোট চুক্তি মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭১৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা।
কাজটি ভারতের মুম্বাই-ভিত্তিক আফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড কর্তৃক সম্পন্ন হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নকশা ও কাজের পরিধি পরিবর্তনের কারণে অতিরিক্ত ব্যয় যোগ হয়েছে, যা প্রকল্পের মান উন্নয়ন ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করার জন্য জরুরি।
এর পাশাপাশি, আজ অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ এর ধারা ৬৮ (১) ও পিপিআর, ২০০৮ এর বিধি ৭৬(২) অনুসারে জিটুজি ভিত্তিতে চাল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়।
বিশ্ব রেটিনা দিবস ২০২৫ উপলক্ষে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইওএইচ) এবং রোশ বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে ‘ব্রিজিং পলিসি, টাস্ক শিফটিং অ্যান্ড ইনোভেশন: ট্যাকলিং ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করেছে। খাত সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অংশগ্রহণে এ আলোচনা অনুষ্ঠান সম্প্রতি (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।
অংশীজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নীতি-নির্ধারক, স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞ, আন্তর্জাতিক এনজিও ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিগণ। এ সময় তারা বাংলাদেশে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি (ডিআর) মোকাবিলায় কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
ডায়াবেটিস রোগের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি রোগটি বাংলাদেশের মানুষের অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। রোগটি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এটি বর্তমান সময়ে একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যায় রূপ নিয়েছে। এ রোগ নিয়ে জনসচেতনতা, রোগ নির্ণয় কর্মসূচি, স্বাস্থ্যখাতের প্রস্তুতি ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে রোগ শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা সেবার পরিসর সীমিত রয়ে গেছে। এ প্রেক্ষাপটে, গোলটেবিল বৈঠকে স্ক্রিনিং, রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিদ্যমান যে দূর্বলতাগুলো রয়েছে, তা চিহ্নিত করা এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে একটি সমন্বিত জাতীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও নীতিনির্ধারকগণ; স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) সদস্যবৃন্দ, এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক, জ্যেষ্ঠ চক্ষু বিশেষজ্ঞবৃন্দ, রেটিনা বিশেষজ্ঞ, অপথালমোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ভিট্রিও-রেটিনা সোসাইটি, বারডেম ও বিএডিএস -এর প্রতিনিধিগণ এ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. জানে আলম মৃধা তার উপস্থাপনায় বলেন, “ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির সফল ও কার্যকর স্ক্রিনিং প্রোগ্রামের জন্য বিভিন্ন খাতের অংশগ্রহণে একটি কার্যকর ওয়ার্কিং কমিটি গঠন অত্যন্ত জরুরি।”
বেসরকারি খাত, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং এনজিও: অর্বিস ইন্টারন্যাশনাল, হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল, দ্য ফ্রেড হলোস ফাউন্ডেশন, সাইটসেভার্স বাংলাদেশ, গুড পিপল ইন্টারন্যাশনাল এবং রোশ বাংলাদেশের নিজস্ব বাণিজ্যিক, মার্কেট অ্যাকসেস ও নীতিনির্ধারণী দলও আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দেশের বাজারে নিজেদের নতুন স্মার্টফোন অনার এক্স৭ডি উন্মোচনের ঘোষণা দিয়েছে গ্লোবাল এআই ডিভাইস ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠান অনার। জনপ্রিয় এক্স সিরিজের সর্বশেষ সংযোজন এ ফোনটি শক্তিশালী বাজেট স্মার্টফোন হিসেবে স্মার্টফোন বাজারে নতুন মানদণ্ড স্থাপন করবে। আগামী অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে বাজারে আসবে নতুন এ স্মার্টফোন।
আগ্রহী ক্রেতারা আগামী ৪ অক্টোবর থেকে অনারের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে স্মার্টফোনটি অগ্রিম বুকিং দিতে পারবেন। অগ্রিম বুকিং দেয়া যাবে আগামী ১১ অক্টোবর পর্যন্ত। যারা শুরুতেই অগ্রিম বুকিং করবেন, তারা উপহার হিসেবে পাবেন অনারের ইয়ারবাডস।
দামের ক্যাটাগরিতে প্রথমবারের মত অনার এক্স৭ডি -তে বিশেষ ‘ইনস্ট্যান্ট এআই বাটন।’ ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে তৈরি এই বাটন দু’টি মোডে কাজ করবে। এ বাটনে একবার ক্লিক করেই নির্দিষ্ট অ্যাপ চালু করা যাবে কিংবা ব্যাকগ্রাউন্ড ক্লিনিং মত কাজও সহজে করা যাবে। আবার একটু বেশিক্ষণ ধরে এ বাটনে ক্লিক করে রিয়েল-টাইম অনুবাদ ও কনটেন্ট তৈরির মত অত্যাধুনিক এআই ফিচার ব্যবহার করা যাবে।
দীর্ঘস্থায়িত্ব বিবেচনায় নিয়ে ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশাল ৬৫০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার আওয়ার ব্যাটারি। টানা পাঁচ বছর পর্যন্ত সুপার-ডিউরেবল পারফরমেন্স নিশ্চিত করবে এ স্মার্টফোন। ডাবল-সেল ব্যাটারি কাঠামো থাকায় ব্যবহারকারীরা স্মার্টফোনটি দ্রুত চার্জ করতে পারবেন; পাশাপাশি, উপভোগ করবেন ফোন ব্যবহারে অধিক সুরক্ষা ও দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব।
এছাড়া, স্মার্টফোনটিতে আইপি৬৫ রেটিং পাওয়া, অর্থাৎ পানি ও ধুলো প্রতিরোধী। পাশাপাশি, এসজিএস প্রিমিয়াম পারফরমেন্সও সার্টিফিকেশনও রয়েছে ফোনটির। ফলে, হাত থেকেও পরে গেলেও স্মার্টফোনটি অনার এক্স৯সি -এর মত সুরক্ষিত থাকবে।
উদ্ভাবনের মাধ্যমে ক্রেতাদের স্মার্টফোনে দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য এআই প্রযুক্তির অভিজ্ঞতা নিশ্চিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অনার। ক্রেতারা এই ফোনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে আরও বিশেষায়িত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা উপভোগ করবেন।
নতুন অনার এক্স৭ডি -এর বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২২,৯৯৯ টাকা। ফোনটিতে রয়েছে ৮+৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি রম।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ এখন থেকে ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেড-এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় এলপিজি ব্র্যান্ড আইগ্যাস, যার রয়েছে ৬৫ বছরের বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা, এবং বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী ইউনাইটেড গ্রুপ-এর যৌথ উদ্যোগেই গঠিত ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেড।
সম্প্রতি রাজধানীর ইউনাইটেড গ্রুপ হেড অফিসে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড গ্রুপের পরিচালক জনাব খন্দকার জায়েদ আহসান, ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেড-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জনাব হারুন ওর্তাজসহ কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এই চুক্তির অধীনে সিয়াম আহমেদ আইগ্যাস ইউনাইটেড-এর ব্র্যান্ড প্রচারণায় অংশ নেবেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সিয়াম আহমেদ বলেন:
“প্রতিটি পরিবারের জন্য নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতা সবসময়ই অগ্রাধিকার পায়, আমার পরিবারও এর ব্যতিক্রম নয়। আইগ্যাস ইউনাইটেড মানে কোয়ালিটিসম্পন্ন একটি এলপিজি কোম্পানি যাদের আছে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশের লাখো পরিবারের জন্য নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য জ্বালানির সমাধান নিশ্চিত করতে কাজ করছে এমন একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি গর্বিত।”
অনুষ্ঠানে ইউনাইটেড আইগ্যাস এলপিজি লিমিটেডের সিইও জনাব হারুন ওর্তাজ বলেন:
“আমরা আনন্দিত যে সিয়াম আহমেদকে আইগ্যাস ইউনাইটেড ব্র্যান্ডের সাথে যুক্ত করতে পেরে। তরুণ প্রজন্ম ও পরিবারগুলোর কাছে তার জনপ্রিয়তা ও ইতিবাচক প্রভাব আমাদের ব্র্যান্ডের সাথে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ। সিয়াম আহমেদ-এর সঙ্গে আমাদের ব্র্যান্ডের এই অংশীদারিত্ব ভোক্তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে।”
সারাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)-এর সহযোগিতায় নরসিংদীর নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ডিজিটাল সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মশালার আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
গত ৯ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ নরসিংদীর কো-অপারেটিভ জোনাল ইনস্টিটিউটে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন ৩০ জন সম্ভাবনাময় নারী উদ্যোক্তা। এই আয়োজনে নারী উদ্যোক্তাদের নিবিড় প্রশিক্ষণ, পরামর্শদান ও নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে তাঁদের ব্যবসা সম্প্রসারণ ও বাজারে প্রবেশের সুযোগ দানের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য নারীদের ‘উদ্যোক্তা স্বপ্ন’ পূরণেও উদ্বুদ্ধ করা হয়।
গেটস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় পরিচালিত ব্র্যাক ব্যাংকের সিগনেচার উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচি ‘আমরাই তারা’-এর অংশ হিসেবে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এই ডিজিটাল সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো নারীদের জন্য অর্থায়ন, পরামর্শ ও দক্ষতা উন্নয়ন সুবিধা সহজলভ্য করার মাধ্যমে তাঁদের ব্যবসায়িক জ্ঞান বৃদ্ধি ও ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা শক্তিশালী করা।
আয়োজনে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক টিমের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকরা অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তাদের ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভিত্তিক ব্যবসায়ে সফল হওয়ার অন্যতম কৌশল হিসেবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের কার্যকর ব্যবহারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিডিওএসএন-এর সভাপতি মুনীর হাসান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের এসএমই ব্যাংকিংয়ের হেড অব কটেজ অ্যান্ড মাইক্রো বিজনেস কাজী দিলরুবা আক্তার।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমন উদ্যোগ নিয়ে ব্যাংকটির অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব এসএমই ব্যাংকিং সৈয়দ আব্দুল মোমেন বলেন, “নারী উদ্যোক্তারা দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। ‘আমরাই তারা’ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা তাঁদের অর্থায়ন সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি ডিজিটাল জ্ঞানও সমৃদ্ধ করছি, যাতে তাঁরা এই দ্রুত পরিবর্তনশীল সেক্টরে সফল হতে পারেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, নারী উদ্যোক্তারা সফল হলে সমাজ সমৃদ্ধ হয় এবং জাতীয় অর্থনীতিও শক্তিশালী হয়।”
এ পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংক দেশের ২০টি জেলায় ৩,০০০-এরও বেশি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে। ভবিষ্যতে এ কর্মসূচি দেশের প্রতিটি জেলায় সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে ব্যাংকটির।
দেশের এসএমই এবং নারী উদ্যোক্তাদের পূর্ণাঙ্গ আর্থিক অংশীদার হিসেবে তাঁদের জন্য সহজ অর্থায়ন, সক্ষমতা উন্নয়ন এবং ডিজিটাল টুলসের ব্যবহার শেখানোর মাধ্যমে তাঁদের সফল ব্যবসায় গড়ে তুলতে সহায়তা করছে ব্র্যাক ব্যাংক। এভাবে ব্র্যাক ব্যাংক জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ১৯১টি শাখা, ৯৭টি উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী কমিটির ২৫তম সভা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, গুলশান-১, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নির্বাহী কমিটির সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমদ। সভায় নির্বাহী কমিটির সদস্য ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোঃ হুমায়ুন কবীর ও ড. শহিদুল ইসলাম জাহীদ এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব মোঃ হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ ইকবাল এবং জনাব মিজানুর রহমান কার্যপোলক্ষ্যে সভায় যোগদান করেন।
মন্তব্য