দেশের প্রথম এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছে এক বছর হলো। ঢাকায় অস্থায়ী ক্যাম্পাসে স্বল্প পরিসরে কার্যক্রম শুরু হলেও এর স্থায়ী ক্যাম্পাস হবে উত্তরের জেলা লালমনিরাহাটে।
প্রায় ৬৪০ একর জমিতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের প্রাথমিক কাজ হিসেবে সমীক্ষা প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। ১০ কোটি টাকারও কম ব্যয়ের সমীক্ষা প্রকল্পে ২ কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি অর্থ চাওয়া হয়েছে গাড়ির পেছনে। এতে গাড়ি কেনা, নিবন্ধন, রক্ষণাবেক্ষণ ও তেলের পেছনেই যাবে ব্যয়ের ২১ শতাংশ অর্থ।
এক বছরে বাস্তবায়নযোগ্য ছোট এই প্রকল্পে বড় অঙ্কের গাড়ি কেনা ও তার ব্যয় এবং অন্যান্য খাতে অতিরিক্ত প্রাক্কলন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। আবার এভিয়েশন-সংশ্লিষ্ট প্রকল্প হলেও তাতে অ্যারোস্পেস-এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ পরামর্শকও রাখা হয়নি, যা নিয়েও আপত্তি রয়েছে কমিশনের।
আগামী ২ জুন অনুষ্ঠেয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভায় (পিইসি) আপত্তি বিষয়ে জানতে চাইবে কমিশন। পরিকল্পনা কমিশনের আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মোসাম্মৎ নাসিমা বেগমের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
পরিকল্পনা কমিশন বলছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার হাড়িভাঙা এলাকায় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’- বিএসএমআরএএইউর স্থায়ী ক্যাম্পাস হবে। এ জন্য ‘ফিজিবিলিটি স্টাডি ফর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটি ডিভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক একটি সমীক্ষা প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্যের আলোকেই হবে মূল কাজের ব্যয় প্রাক্কলন।
কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ছোট এই প্রকল্পতেও অনেক খাতেই অতিরিক্ত ব্যয় চাওয়া হয়েছে। এমন একটি প্রকল্পে যদি এক-চতুর্থাংশ গাড়িতেই ব্যয় হয়, সমীক্ষার অন্য কাজের কী হবে? ইচ্ছেমতো ব্যয় করতে চাইলে তো হবে না। পরিকল্পনা কমিশনসহ অন্যদের নিয়ে প্রকল্প ব্যয় যাচাই-বাছাইয়ে কমিটি আছে। এ কমিটির সভায় সব দিক বিবেচনা করে যা যৌক্তিক হবে, তাই দেয়ার সুপরিশ করা হবে। তবে অবাস্তব আবদার করাও উচিত নয়।’
জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশের প্রায় প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যয় নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। এগুলোতে প্রচুর অনিয়ম হয়, ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য প্রচুর ব্যয় করা হয়। এর অন্যতম হচ্ছে গাড়ি কেনা। এগুলো প্রকল্প পরিচালকসহ শীর্ষ ব্যক্তিরাই ব্যবহার করেন। যদিও সেগুলো তেমন প্রয়োজন হয় না। কারণ তারা প্রকল্প এলাকায় থাকেন না। তা ছাড়া প্রয়োজনে দু-একটি গাড়ি হায়ার (ভাড়া) করলেই হয়।’
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার লোকেরা এসে হোটেলে থেকে ভাড়া গাড়ি নিয়ে সমীক্ষার কাজ করেন। কিন্তু আমাদের লোকেরা তা পারেন না। তাদের গাড়ি কেনা লাগেই।
প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়, যা বাংলাদেশের এভিয়েশন এবং অ্যারোস্পেস (মহাকাশ) সম্পর্কিত প্রথম এবং একমাত্র উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিমানশিল্পে দক্ষ জনবলের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই দক্ষ বৈমানিক, বিমান প্রকৌশলী, বেসামরিক বিমান পরিবহনের সব স্তরের দক্ষ জনবল, বিমান তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়, মহাকাশ-সম্পর্কিত বিভিন্ন স্তরের উচ্চশিক্ষা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া হবে।
সমীক্ষা প্রকল্প প্রস্তাবানায় দেখা যায়, সমীক্ষা প্রকল্পের জন্য ১ কোটি ৮০ লাখ ৭০ হাজার টাকায় দুটি বিলাসবহুল গাড়ি কেনার কথা বলা হয়েছে, যা মোট ব্যয়ের ১৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। তেলের জন্য ১৮ লাখ টাকা বা ১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং প্রায় ১২ লাখ টাকা বা দেড় শতাংশ অর্থ চাওয়া হয়েছে গাড়ির নিবন্ধন ও রক্ষণাবেক্ষণের পেছনে। সব মিলিয়ে গাড়ির পেছনেই খরচ হবে ২ কোটি ১০ লাখ টাকা বা ২১ শতাংশ।
প্রস্তাবিত সমীক্ষা প্রকল্পে অন্য ব্যয়ের মধ্যে বিদেশ ভ্রমণের জন্যও ৫৮ লাখ টাকা রাখার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া এক বছরের জন্য নেয়া এই প্রকল্পে ৮ লাখ টাকার অফিস সরঞ্জাম, দেশে অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের পেছনে ৬ লাখ টাকা, ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকার প্রিন্টিং ও বাইন্ডিং ব্যয়, ২ লাখ টাকার বিজ্ঞাপন ব্যয় এবং ৪ লাখ টাকা বিনোদন ব্যয় ধরা হয়েছে।
এ ছাড়া পরামর্শক খাতে ৪ কোটি ২২ লাখ টাকা, জরিপকাজে ২ কোটি ৪১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ম্যানেজমেন্ট খাতে ২১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, সম্মানী ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ অন্যান্য ব্যয়ও রয়েছে।
সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন উঠেছে গাড়ির পেছনে খরচ নিয়ে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশন নিজেদের মতামতে বলেছে, প্রকল্পটি স্বল্প বাজেটের। তাই এতে এত বেশি টাকা গাড়ির পেছনে ব্যয় করা উচিত নয়। প্রকল্প ব্যয়ে গাড়ি কেনার পেছনে ১৮ শতাংশ এবং রক্ষণাবেক্ষণ ও তেলের পেছনে আরও ৩ শতাংশসহ মোট ২১ শতাংশ ব্যয় যৌক্তিক বা সমীচীন নয়। সরকারি অর্থ সাশ্রয়ের জন্য প্রকল্পের প্রয়োজনে এক বছর মেয়াদে গাড়ি ভাড়া করার প্রস্তাব করা ছিল যুক্তিযুক্ত। এ সম্পর্কে পিইসি সভায় সংস্থার প্রতিনিধির কাছে জানা যেতে পারে।
অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের এভিয়েশন-সংক্রান্ত পড়ালেখার প্রয়োজন আছে। তবে এত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে নতুন আরেকটি প্রয়োজন কি না, তা দেখা উচিত ছিল। বিদ্যমান প্রতিটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ-সম্পর্কিত আলাদা বিভাগ বা কোর্স খুলেও তা চালানো যেত। কারণ এসব বিষয়ে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ও গ্র্যাজুয়েটসহ বিভিন্ন পর্যায়ে জানাশোনা মানবসম্পদ অছে কি না, তা দেখতে হবে। সমীক্ষা প্রকল্পে গাড়ি কেনার প্রয়োজন নেই বলেও মনে করি আমি।’
সমীক্ষা কার্যক্রমে অধিক পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ প্রয়োজন বলে মির্জ্জা আজিজুল মন্তব্য করেন। আবার আকাশপথ ও মহাকাশ-সম্পর্কিত প্রকল্প হলেও তাতে একাধিক আরবান প্ল্যানার বা পরামর্শক রাখা হয়েছে, কিন্তু কোনো এভিয়েশন-অ্যারোস্পেস বিশেষজ্ঞ পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়নি। এতে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সমীক্ষা করার কথা বলা হলেও পৃথক পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব বিষয়ে যৌক্তিকতা সংস্থার প্রতিনিধির কাছে জানতে চাইবে কমিশন।
সমীক্ষা প্রকল্প শুরু করতেও বিলম্ব হয়েছে। প্রথমে প্রকল্পটি সেপ্টেম্বর ২০২০ থেকে আগস্ট ২০২১ পর্যন্ত এক বছর বাস্তবায়ন সময় ধরা হয়েছিল। এরই মধ্যে যা প্রায় পার হয়ে গেছে। অর্থাৎ সমীক্ষা শুরুর আগেই সময় বাড়বে। তা ছাড়া প্রস্তাবনায় মাত্র এক বছরে অনেক বিষয়ে তথ্য যাচাইয়ের কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পে দুটি বাস্তবায়নকারী সংস্থার কথা বলাও হয়েছে।
অন্য খাতের ব্যয় নিয়ে কমিশন বলছে, বিভিন্ন অঙ্গের ব্যয় সুস্পষ্ট ও যৌক্তিক হওয়া প্রায়োজন। ম্যানেজমেন্ট চার্জ হিসেবে ফিজিবিলিটি কমিটির মিটিং, পিইসি/টিইসি মিটিং, ড্রইং অ্যাপ্রুভাল কমিটির মিটিংয়ের সম্মানী নিয়েও আলোচনা প্রয়োজন। ফরেন ট্যুর, এন্টারটেইনমেন্ট এক্সপেন্স, সেমিনার ও কনফারেন্স এক্সপেন্স, কনভেইয়েন্স, ট্যুর-ট্রাভেল (অভ্যন্তরীণ), প্রিন্টিং ও বাইন্ডিং, অনারিয়াম বা সম্মানী ইত্যাদি খাতের ব্যয় যৌক্তিক করা এবং এসব ব্যয়ের বিস্তাবিত বিবরণ সম্পর্কে সভায় আলোচনা হতে পারে।
২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সংসদে এ-সম্পর্কিত বিল পাসের পর দেশের প্রথম এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয়টি পরের বছরের (২০২০ সাল) জানুয়ারিতে যাত্রা শুরু করে। ওই বছরের ২৬ জানুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দর এলাকায় স্থাপিত অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন ও পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রথম ব্যাচে বিএসসি এন অ্যারোনিটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, এমএসসি ইন এভিয়েশন সেফটি অ্যান্ড অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন এবং এমবিএ ইন এভিয়েশন ম্যানেজমেন্ট– এই তিনটি বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যের দায়িত্বে রয়েছেন এয়ার ভাইস মার্শাল এ এইচ এম ফজলুল হক।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে লালমনিরহাটে বিএসএমআরএএইউর অস্থায়ী ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বিমানবাহিনী-প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত। লালমনিরহাটে মূল ক্যাম্পাসের পাশাপাশি ঢাকার আশকোনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শাখা থাকবে।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আন্তর্জাতিক মান দিতে আন্তর্জাতিক বহুজাতিক কোম্পানি, এভিয়েশন কোম্পানি ও এভিয়েশন অথরিটি, ইউরোপীয় বহুজাতিক কোম্পানি এয়ারবাসের সঙ্গে সহযোগিতার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এ ছাড়া শীর্ষ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় যেমন কভেন্ট্রি ইউনিভার্সিটি, সারে ইউনিভার্সিটি এবং জার্মান অ্যারোস্পেস সেন্টারসহ ইউরোপের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শিক্ষা ও গবেষণায় সহযোগিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মান অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরের আদলে এই ক্যাম্পাস নির্মাণকাজ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:দৃঢ় নেতৃত্বের মাধ্যমে বিগত বছরগুলোর প্রতিকূলতা কাটিয়ে রেকর্ড ও টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চলেছে পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি। চলতি বছর ওয়ালটন পণ্যের বিক্রয় বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। যার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি হিসাব বছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই’২০২৩-মার্চ’২০২৪) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ওয়ালটন হাই-টেকের মুনাফা বেড়েছে ৫১২.৪২ কোটি টাকা বা ২০৫ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা ব্যাপক বৃদ্ধিসহ আর্থিক প্রায় সব সূচকেই উন্নতি হয়েছে।
ওয়ালটন হাই-টেকের চলতি হিসাব বছরের জুলাই-২০২৩ থেকে মার্চ-২০২৪ পর্যন্ত সময়ের প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
রোববার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ৩৮তম সভায় আলোচ্য সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২০২৪ হিসাব বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময়ে অর্থাৎ প্রথম নয় মাসে কোম্পানিটির মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৬২.৩৪ কোটি টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ২৪৯.৯১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা বেড়েছে ৫১২.৪২ কোটি টাকা। শতকরা হিসেবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২০৫ শতাংশ।
এদিকে চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ’২০২৪) ওয়ালটনের মুনাফা হয়েছে ৪২১.৯৮ কোটি টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ২৩৫.৫৫ কোটি টাকা।
বিক্রয় বৃদ্ধির পাশাপাশি কস্ট অব গুড্স সোল্ড উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাওয়ায় কোম্পানিটির মোট মুনাফার শতকরা হার পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য আর্থিক সূচকেও ব্যাপক উন্নতি হয়েছে ওয়ালটন হাই-টেকের। তাছাড়া মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ব্যাপক হারে হ্রাস পাওয়ায় কোম্পানিটির কর পরবর্তী নিট মুনাফার পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস), শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস)।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমাপ্ত সময়ে (জুলাই’২০২৩-মার্চ’২০২৪) প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি মুনাফা (ইপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫.১৭ টাকা; যা আগের অর্থ বছরের একই সময়ে ছিলো ৮.২৫ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির এনএভিপিএস পুনর্মূল্যায়ন ব্যতীত দাঁড়িয়েছে ২৫৮.২২ টাকা এবং পুনর্মূল্যায়নসহ ৩৫৯.৬৮ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ২২.৮৮ টাকা।
চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে কোম্পানির আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ ও শতকরা হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। প্রথম নয় মাসে বিক্রয়ের বিপরীতে আর্থিক ব্যয়ের শতকরা হার দাঁড়িয়েছে ৬.১৪ শতাংশ। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিলো ১৪.৭৯ শতাংশ।
এ ছাড়াও মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান কমে যাওয়ায় গত অর্থ বছরের প্রথম নয় মাসে কোম্পানিটি ৩৯২.৭৩ কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলো। সেই ক্ষতি চলতি বছরের আলোচ্য সময়ে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়ে মাত্র ৪১.৬০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
এদিকে জুলাই-২০২৩ থেকে মার্চ-২০২৪ পর্যন্ত সময়ে কোম্পানির মোট আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৬৩.০৭ কোটি টাকা, যা পূর্বের অর্থ বছরের একই সময়ে ছিল ৬০৪.৭৯ কোটি টাকা।
এছাড়া, শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন’২০২৪) কোম্পানির মুনাফা আরো দৃঢ় অবস্থানে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ওয়ালটন ম্যানেজমেন্ট। প্রেস রিলিজ
শীর্ষস্থানীয় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ উবারের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ইনডেক্স-এর অষ্টম সংস্করণ প্রকাশ হয়েছে রোববার।
উবার ব্যবহারকারীরা কোন জিনিসগুলো গাড়িতে সবচেয়ে বেশি ফেলে রেখে গেছেন এবং দিনের কোন সময়ে, সপ্তাহের কোন দিনে ও বছরের কোন সময়ে হারানো জিনিস রিপোর্ট করেছেন, এসব তথ্যের একটি স্ন্যাপশট হলো এ ইনডেক্স।
গত এক বছরের মে ও জুন মাসে বাংলাদেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি জিনিসপত্র ভুলে ফেলে রেখে গেছেন। বেশির ভাগ জিনিসপত্র ফেলে রেখে আসার ঘটনাটি ঘটেছে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে।
গত বছর বাংলাদেশজুড়ে যাত্রীদের ভুলে যাওয়া জিনিসের তালিকায় প্রথম দুটি স্থানে ছিল পোশাক ও ছাতা। তালিকায় এর পরেই ছিল ওয়ালেট, বালিশ ও হেডফোন।
বাংলাদেশিরা উবারে এ রকম সাধারণ জিনিসপত্র যেমন ভুলে ফেলে রেখে গেছেন, স্পিকারের মতো অপ্রত্যাশিত জিনিসও তেমনি ভুলে রেখে গেছেন।
উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড নাশিদ ফেরদৌস কামাল লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ইনডেক্স সম্পর্কে বলেন, ‘যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য উবারের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ট্রিপের সময় যাত্রীদের ফেলে যাওয়া জিনিস নিরাপদে তাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়াও এর অন্তর্ভুক্ত। হারানো জিনিস খুঁজে পেতে উবারের কিছু ইন-অ্যাপ অপশন আছে।
‘এ ব্যাপারে যাত্রীদের জানানোর জন্য লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ইনডেক্স একটি চমৎকার শিক্ষণীয় উপায়। যাত্রীদের আমরা জানাতে চাই যে, রাইডের সময় তারা কিছু ভুলে ফেলে গেলে তাদের সাহায্য করার জন্য আমরা প্রস্তুত।’
ফেলে যাওয়া জিনিস উদ্ধারের উপায়
গাড়িতে ফেলে যাওয়া কোনো জিনিস উদ্ধারের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো চালককে কল করা। কীভাবে করবেন জেনে নিন।
১. ‘ইয়োর ট্রিপস’ অপশনে ট্যাপ করুন এবং যে ট্রিপে আপনার জিনিসটি হারিয়ে গেছে, তা সিলেক্ট করুন
২. নিচে স্ক্রল করে ‘ফাইন্ড লস্ট আইটেম’ অপশনে ট্যাপ করুন
৩. ‘কনটাক্ট ড্রাইভার অ্যাবাউট আ লস্ট আইটেম’ অপশনে ট্যাপ করুন
৪. স্ক্রল করে নিচে নামুন এবং আপনার সঙ্গে যোগযোগ করা যাবে এমন একটি ফোন নম্বর লিখুন। সাবমিট অপশনে ট্যাপ করুন
৫. যদি নিজের ফোন হারিয়ে যায়, তাহলে আপনার বন্ধুর ফোন নম্বর ব্যবহার করুন (এর জন্য আপনাকে কম্পিউটার বা বন্ধুর ফোন থেকে নিজের অ্যাকাউন্টে লগ ইন করতে হবে)
৬. আপনার ফোন বেজে উঠবে এবং আপনার চালকের মোবাইল নম্বরের সঙ্গে আপনাকে সরাসরি যুক্ত করে দেয়া হবে
৭. যদি চালক ফোন ধরেন এবং নিশ্চিত করেন যে আপনার জিনিসটি পাওয়া গেছে, সেটি ফিরিয়ে নিতে উভয়ের জন্য সুবিধাজনক একটি সময় ও স্থান নির্বাচন করুন
৮. যদি চালকের সাথে যোগাযোগ করতে না পারেন, আপনার হারানো জিনিসটির বিস্তারিত বর্ণনা এবং আপনার সঙ্গে যোগাযোগের উপায় জানিয়ে চালককে একটি ভয়ে সমেইল পাঠিয়ে রাখুন
উবারে কিছু হারিয়ে ফেললে সহজে কীভাবে তা ফিরে পেতে পারেন, এই ভিডিও থেকে তা দেখে নিন।
উবার যাত্রীরা যেসব জিনিস সবচেয়ে বেশি ভুলে ফেলে রেখে গেছেন, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে পোশাক। এরপরই রয়েছে ছাতা, ওয়ালেট, নেক-পিলো, হেডফোন ও স্পিকার।
যে শহরগুলোতে যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি জিনিস হারিয়েছেন, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ঢাকা। এরপরের স্থানগুলো যথাক্রমে চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল।
বছরের যে দিনগুলোতে যাত্রীরা সবচেয়ে বেশিসংখ্যক জিনিস ভুলে রেখে গেছেন তার মধ্যে রয়েছে ১৩ মে, ২০২৩। এ ছাড়া ৯ জুন এবং ১৬ জুন, ২০২৩ বেশি ভুল করেছেন যাত্রীরা।
সপ্তাহের শুক্র, শনি ও রোববার সবচেয়ে বেশি জিনিস হারিয়েছে।
দিনের যে সময়ে যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি জিনিস ফেলে রেখে যান, তার সময় রাত আটটা। এরপরই সন্ধ্যা সাতটা ও রাত ৯টায় বেশি জিনিস ফেলে রেখে গেছেন।
আরও পড়ুন:কমানোর পরের দিনই বাড়ল স্বর্ণের দাম। ভালো মান বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৬২৯ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৪২৭ টাকা।
রোববার বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, রোববার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৫১৩ টাকা বাড়িয়ে ৯৭ হাজার ৭০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৪২০ টাকা বাড়িয়ে ৭৮ হাজার ৬৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল দেশের বাজারে রেকর্ড স্বর্ণের দাম বাড়ায় বাজুস। ওই সময় ভরিতে ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়। তাতে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা। এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিল। পরে শনিবার ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম কমে ৮৪০ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছিল ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনে বৈধপথে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১২৮ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ হাজার ৯৬ কোটি টাকা।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তথ্যমতে, এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনে বৈধপথে ১২৮ কোটি ১৫ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১১ কোটি ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১০৮ কোটি ৮১ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৩৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার এসেছে।
এর আগে মার্চ মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে এসেছে ২১০ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে আসে ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
দেশের স্বর্ণের বাজারে চলতি এপ্রিল মাসেই ২২ ক্যারেটের ভরিতে তিন দফায় ৪ হাজার ৫৬০ টাকা দাম বাড়ানো হয়েছে। এবার প্রতি ভরিতে দাম কমানো হয়েছে ৮৪০ টাকা। নামমাত্র এই কমানোর পর ভালো মানের (২২ ক্যারেট) এক ভরি স্বর্ণের দাম দাড়িয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) শনিবার এই দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। সংগঠনটির মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের দাম কিছুটা কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে।
বাজুস এর চলতি মাসে তিন দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ৬ এপ্রিল ১৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের স্বর্ণ ১ লাখ ১৮ হাজার ৭৯৮ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৯৭ হাজার ১৯৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা ভরি বিক্রি হবে।
এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়নো হলেও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে রুপার দাম। বর্তমানে ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি রুপা ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপা ১ হাজার ২৮৩ টাকা ভরি বিক্রি হচ্ছে।
রমজানের মধ্যে শসার বাজার চড়া দাম থাকলেও বর্তমানে শসাচাষিরা দাম পাওয়া নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছেন।
এমন দুঃসময়ে শসাচাষিদের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের অন্যতম রিটেইল চেইন সুপারশপ ‘স্বপ্ন’।
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়, ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার শসাচাষিরা। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে চার টাকায়। ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না চাষিরা।
এমন সময় সেই শসাচাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্যটি কেনে ‘স্বপ্ন’ কর্তৃপক্ষ। সেই শসা এখন খোলাবাজারের চেয়ে কম দামে স্বপ্ন আউটলেটে পাওয়া যাচ্ছে।
খোলা বাজারে বৃহস্পতিবার ৪০ টাকা কেজিতে শসা বিক্রি করতে দেখা গেলেও স্বপ্ন আউটলেটে তা ১২ টাকা কেজিতে গ্রাহকরা কিনতে পেরেছেন। এরই মধ্যে দিনাজপুরের খানসামার ওই এলাকা থেকে দুই টন এবং ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট এলাকা থেকে ছয় টন শসা কিনেছে স্বপ্ন প্রতিনিধি।
বর্তমানে তাদের উৎপাদিত শসা পৌঁছে গেছে স্বপ্নর আউটলেটে। স্টক থাকা অবধি এ অফার গ্রাহকরা পাবেন।
স্বপ্নর নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, ‘আমরা শসাচাষিদের দুর্ভোগের কথা জানতে পেরেছি নিউজের মাধ্যমে। আমরা দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ বেশ কিছু এলাকার কৃষকের দুর্ভোগের কথা জানার পর তাদের কাছ থেকে শসা কিনেছি ন্যায্য মূল্যে।
‘অন্যান্য ব্যবসায়ীদেরও কৃষকদের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান থাকবে। মধ্যস্বত্বভোগীদের লাভবান না করে কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি সেতুবন্ধের চেষ্টা করে আসছে স্বপ্ন। এ চেষ্টা সবসময় অব্যাহত থাকবে।’
এ প্রসঙ্গে স্বপ্নর হেড অফ পার্চেজ সাজ্জাদুল হক বলেন, “বিভিন্ন গণমাধ্যমে শসাচাষিদের সংকটের খবর দেখার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে, কৃষকদের পাশে আমরা দাঁড়াব। দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে এরই মধ্যে ৮ টন শসা আমরা কিনেছি।
“দুঃসময়ে কষ্টে থাকা অনেক কৃষকদের পাশে ‘স্বপ্ন’ এর আগেও দাঁড়িয়েছে। সামনেও পাশে থাকবে।”
দিনাজপুরের খানসামা এলাকার কৃষক সাকিব হোসেন বলেন, ‘প্রায় এক বিঘা জমিতে শসা চাষ করেছিলাম এবার। শসার বীজ, সারসহ নানা কাজে লাখ টাকা খরচ হয় আমার, কিন্তু ১০ রমজান অবধি কিছু শসা বিক্রি করার পর বাজারে শসার দাম কমে যায়। প্রতি কেজি ১০ টাকা, এরপর পাঁচ টাকা এবং সবশেষে আরও কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। অনেক শসা নষ্ট হয়ে যায়। অনেক লোকসান হচ্ছিল।’
তিনি আরও বলেন, “আমার এলাকার এক সাংবাদিক নিউজ করার পর এসিআই কোম্পানির ‘স্বপ্ন’ থেকে যোগাযোগ করে আমার অনেকগুলো শসা কিনে নিয়েছেন উনারা। এতে করে লোকসানের অনেক ঘাটতি পূরণ হয়েছে আমার। তাদের অশেষ ধন্যবাদ।”
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে রেকর্ড ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের সাড়ে তিন মাসে অষ্টমবারের মতো স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হলো।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৃহস্পতিবার বৈঠক করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। নতুন নির্ধারিত এই দাম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী- ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেট প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৬৫৬ টাকা বেড়ে ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৩৮৮ টাকা কমে ৭৮ হাজার ৮০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সবশেষ দশ দিন আগে ৮ এপ্রিল বাজুস ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৪৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা নির্ধারণ করে। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও দাম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দেশের স্বর্ণের বাজারে উচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হলো।
অবশ্য স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের আরও বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সেসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ১ লাখ ২৯ হাজার ১১৯ টাকা।
এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য