জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন চলছে। তিনটি খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করছে একটি প্রতিষ্ঠান। এই বালু দিয়ে করা হচ্ছে একটি সরকারি প্রকল্পের ভূমি উন্নয়নের কাজ।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যদিও দাবি করা হয়েছে, তাদের বালু উত্তোলন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই প্রতিষ্ঠানটিকে শুধু সেতু এলাকা দিয়ে নৌযান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বালু তোলার নয়।
বালু তোলার কাজটি করছে মেসার্স খোকন কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০-এর ৪-এর খ ও গ ধারা অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, বাঁধ, সড়ক, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ।
বৃহস্পতিবার পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের পদ্মা নদী ঘুরে দেখা যায়, সেতুর ৩৯তম স্প্যানের নিচে খননযন্ত্র বসিয়ে তোলা হচ্ছে বালু। স্প্যানের গোড়ায় মেশিন বসিয়ে রাতদিন চলছে বালু তোলার কাজ। একের পর এক বাল্কহেড (বালুবাহী ট্রলার) সেই উত্তোলিত বালু বয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
খননযন্ত্রে দাঁড়িয়ে বাল্কহেডের সিরিয়াল করছিলেন খোকন কনস্ট্রাকশনের সুপারভাইজার মো. জসিম উদ্দিন। সাংবাদিকদের দেখে তিনি ছুটে আসেন। তিনি একটি কাগজ দেখিয়ে বলেন, ‘বালু তোলার আমাদের লিখিত অনুমতিপত্র আছে।’
দুই পৃষ্ঠার সেই অনুমতিপত্র পড়ে দেখা যায়, সেটিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে শুধু নৌযান চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। বালু তোলার অনুমতির কোনো উল্লেখ নেই।
সুপারভাইজার মো. জসিম উদ্দিনকে বিষয়টি বুঝিয়ে বললে তিনি বলেন, ‘এর বাইরে আমার কাছে আর কোনো কাগজ নাই। অফিসে থাকতে পারে।’
অপরিকল্পিত বালু তোলার ফলে পাশেই পাইনপাড়া চরে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। বালু উত্তোলনরোধে চরের ১১০ পরিবার জেলা প্রশাসক বরাবর করেছেন লিখিত আবেদন।
ওই চরের বাসিন্দা রহিমা বেগম বলেন, ‘ডেজার দিয়ে রাইত দিন কাটতাছে। এইয়া লইয়্যা অনেক কিছু অইয়া গ্যাছে। হ্যারা মানতেই আছে না। চুরি করইরা কাটলেও কাইট্যা নেয়। হ্যারা যদি আমাগো এমন ক্ষ্যাতি না করত, তাইলে আমাগো ক্ষ্যাতি অইত না। অহন পোলাহান লইয়া কোনো উপায় নাই। চরের মানুষ আমরা ধানি আলোডি করি। হেইয়া সব বাঙ্গোনে শ্যাষ।’
বাংলাদেশ নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রেজাউল করিমের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘যদি প্রকল্পের স্বার্থে বালু তোলার প্রয়োজন হতো, সে ক্ষেত্রে সমীক্ষা করে নকশা অনুযায়ী পরিকল্পিতভাবে খনন হতো। কিন্তু কোনোভাবেই সমীক্ষা এবং নকশা ছাড়া খননযন্ত্র বসিয়ে বালু তোলা যাবে না। এতে প্রকল্পের (পদ্মা সেতু) ক্ষতি বয়ে আনতে পারে।’
এ বিষয়ে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের বলেন, ‘সরকারি প্রকল্পের উন্নয়নকাজে পদ্মা সেতু এলাকার চ্যানেল ব্যবহারের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনুমতি চাইলে সরকারি ওই প্রকল্পের স্বার্থে নৌযান চলাচলের জন্য অনুমতি দেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্রিজ অথরিটি বালু উত্তোলনের কোনো অনুমতি দেয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুর কাছ থেকে বালু উত্তোলন করছে কি না, বিষয়টি আমার জানা নাই।’
শরীয়তপুর ও মাদারীপুর দুই জেলা নিয়ে ১২০ একর জমিতে নির্মাণ হচ্ছে শেখ হাসিনা তাঁতপল্লি। শুরু হয়েছে সেটির ভূমি উন্নয়নকাজ। প্রকল্প এলাকায় ফেলা হবে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ ঘনমিটার বালু। নির্মাণ করা হবে সীমানাপ্রাচীর। পদ্মা নদী থেকে উত্তোলিত বালু ফেলা হচ্ছে এ প্রকল্প এলাকায়।
এটির কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স খোকন কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। প্রকল্পে বালু ক্রয়ের মূল্য প্রায় ২৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা ধরা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে সেই বালু দিয়েই চালিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নকাজ।
এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজ করছেন মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সৈয়দ আবুল বাশার। তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই অঞ্চলে কোনো বালুমহাল না থাকায় কোনো রয়্যালিটি ছাড়া আমরা বালু উত্তোলন করে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। শরীয়তপুর এবং মাদারীপুরেও বালুমহাল না থাকায় সরকারকে রয়্যালিটি দেয়ার সুযোগ নেই। দেয়ার সুযোগ থাকলে জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করতাম এবং তার বরাবর আবেদন করতাম।’
জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসান জানান, নদী থেকে কাউকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘শরীয়তপুরে বালুমহাল নেই, তাই কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নদী থেকে বালু তুলে প্রকল্পের কাজে ব্যবহারের সুযোগ নেই। কেউ এ ধরনের কাজ করে থাকলে তা সম্পূর্ণ অবৈধ। ওই সব আইন ভঙ্গকারীদের ছাড় দেয়া হবে না।’
আরও পড়ুন:খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় সহিংসতার ঘটনায় তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। এসব মামলায় হাজারের বেশি অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে গুইমারা থানায় হত্যা মামলাসহ দুইটি এবং খাগড়ছড়ির সদর থানায় অপর মামলাটি করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদরের মহাজন পাড়া, স্বনির্ভর ও উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সংঘর্ষের ঘটনায় খাগড়াছড়ি সদর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। এ মামলায় ৬০০-৭০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে খাগড়াছড়ি সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহরিয়ার এ মামলা করেন।
এ দিকে গুইমারা থানার ওসি মো. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকালে ৪টা পর্যন্ত গুইমারায় প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়া অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং পরবর্তীতে ধানক্ষেত থেকে তিন ব্যক্তি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দুই থেকে আড়াই’শ জনকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, খাগড়াছড়িতে শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগে গত শনিবার ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা জনতা’র ডাকা অবরোধের সময় প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ, অগ্নি সংযোগ, দাঙ্গা ও হত্যার ঘটনা ঘটে।
পাবনার ঈশ্বরদীতে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে সবুজ প্রামানিক (৩৫) নামে এক ট্রাকচালক নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কের পৌর এলাকার অরণকোলা হারুখালির মাঠসংলগ্ন বটতলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সবুজ প্রামানিক পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের টেবুনিয়া বড়মাটিয়া গ্রামের খোকন প্রামানিকের ছেলে। আহতরা হলেন ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার চুকাই গ্রামের নাজমুল হোসেন (৩০), একই উপজেলার কৃষ্টপুর গ্রামের বাবু মিয়া (৩০) এবং মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার আশরাফুল ইসলাম (৩৫)।
সংবাদ পাওয়ার পর সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ঈশ্বরদী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন থেকে তিনটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে উদ্ধার কাজ শুরু হয় এবং প্রায় এক ঘণ্টা চলার পর সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হয়। উদ্ধার কাজে নেতৃত্ব দেন স্টেশনের ওয়্যারহাউজ ইনস্পেক্টর মীর আমিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, ঈশ্বরদী ট্রাকস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি খালি ট্রাক পাবনাগামী ছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ঢাকা থেকে আসা একটি পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীতমুখী ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে ট্রাকচালক সবুজ প্রামানিক ঘটনাস্থলে নিহত হন এবং অন্য ট্রাকের চালক-হেলপারসহ তিনজন আহত হন। আটকে পড়া সকলকে উদ্ধার করে আহতদের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয় এবং নিহত সবুজের মরদেহ ট্রাকের ভেতর থেকে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুন নূর বলেন, “দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক চালক নিহত হয়েছেন এবং তিনজন আহত হয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় সড়ক দুর্ঘটনা আইনে মামলা হয়েছে।”
সড়কের এই অংশটি (পাবনা-লালপুর হাইওয়ে) দুর্ঘটনাপ্রবণ বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। যানবাহনের অতিরিক্ত গতি ও ঢিলেঢালা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দুর্ঘটনা বাড়াচ্ছে বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
পাশাপাশি সারাদেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপ উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘন হয়ে প্রথমে নিম্নচাপে এবং পরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
আজ ভোরে এটি পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে এবং আরও পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
সকালে ঢাকায় ঢাকায় বাতাসের গতি ছিল দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিমি। বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ।
গতকাল (বুধবার) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নরসিংদীতে ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫টা ৪৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ৫১ মিনিটে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ব্রিজে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ট্রাক চালক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
শিমরাইল হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ জুলহাস উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তারা দুজন একই মালিকের দুটি ট্রাক চালান। ঢাকামুখী দুটি ট্রাকের একটি মহাসড়কের উপর বিকল হয়ে পড়লে অপর ট্রাক সেটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে ট্রাকটি সেতুর ওপর ঢাকামুখী লেনের সড়ক বিভাজকে আটকে যায়। ধারণা করা হচ্ছে তখন দুই ট্রাকের চালক সড়কে নেমে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তখনই অজ্ঞাত কোনো গাড়ি তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, ভোর ৪টা থেকে পৌনে ৬টার মধ্যে যেকোনো সময় ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ জানায়, নিহতদের বয়স ২৪ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। এদের একজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি হলেন ময়মনসিংহের রহমতপুর এলাকার রাকিব, যিনি সচল ট্রাকটির চালক ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর ট্রাক মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে আসছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিলোনিয়া বাজারে যাত্রীবাহী বাস উল্টে তিনজন নিহত হয়েছেন। এতে অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে দশটার দিকে ফেনী-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- দাগনভূঞা উপজেলার জায়ালস্কর ইউনিয়নের দক্ষিণ জায়ালস্কর গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে মো. শ্রাবণ (২০), একই ইউনিয়নের খুশিপুর গ্রামের মো. শহীদুল্লাহর স্ত্রী শামীম আরা বেগম (৫০) ও অজ্ঞাত যুবক (৩০) পরিচয় জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সুগন্ধা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ফেনী থেকে নোয়াখালীর দিকে যাচ্ছিল। সিলোনিয়া বাজারে পৌঁছালে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ধাক্কা দিয়ে উল্টে যায়। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই স্থানীয়রা বাস থেকে আহতদের উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
২৫০ শয্যা ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শোয়েব ইমতিয়াজ নিলয় সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মহিপাল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন উর রশিদ জানান, মৃত্যু ও গুরুতর আহতের খবর পেয়েছি, তবে এর সংখ্যা এখনো জানতে পারিনি। আমাদের পুলিশ কাজ করছে। কী কারণে এমন দুর্ঘটনা হতে পারে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌর শহরে যৌথ বাহিনীর মোবাইল কোর্টের অভিযানে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
বুধবার ( ০১ অক্টোবর) কুলাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: আনিসুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলাকালে হেলমেট ও কাগজপত্র বিহীন অবস্থায় মটর সাইকেল চালানোর অপরাধে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর আওতায় ১২ টি মামলায় মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং ভবিষ্যতে সকল নিয়ম কানুন মেনে রাস্তায় চলাচল করার জন্য সতর্ক করে দেয়া হয়। মোবাইল কোর্টের অভিযানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা অংশ গ্রহণ করেন।
দুর্গাপূজা এবং সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা চার দিনের ছুটিতে ঢাকা যেন জনমানবশূন্য। ব্যস্ত নগরী হয়ে পড়েছে অনেকটা শান্ত-নিরিবিলি। নেই যানজটের চিরচেনা রূপ, সড়কগুলো রয়েছে প্রায় যানবাহনশূন্য।
সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে দুর্গাপূজার ছুটি মিলিয়ে বুধবার (১ অক্টোবর) থেকে শনিবার (৪ অক্টোবর) পর্যন্ত ছুটি রয়েছে সরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
স্বাভাবিক দিনের তুলনায় আজ সড়কে গণপরিবহনসহ অন্যান্য গাড়ির সংখ্যা অনেক কম। জরুরি প্রয়োজনে যারা বের হয়েছেন গণপরিবহন কম থাকায় কিছুটা দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। তবে সড়কগুলো অনেকটা ফাঁকা থাকলেও মেট্রোরেলে রয়েছে যাত্রীদের চাপ।
সড়কে রিকশা ও অটোরিকশার আনাগোনাও চোখে পড়ার মতো। স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের জন্য মানুষ এ বাহনগুলোকেই বেছে নিচ্ছেন। তবে যাত্রী কম থাকায় অনেক চালকই অলস সময় পার করছেন। আবার কোথাও কোথাও বিনা অজুহাতে অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, রামপুরা, বনানী, খিলক্ষেত ও উত্তরাসহ রাজধানীর অধিকাংশ সড়কে সকালের দৃশ্য এমনই।
রাস্তাঘাটে তেমন দেখা মিলছে না যানবাহনের। ছুটির দিন হওয়ায় বাসে যাত্রীদের সংখ্যা কম। বাসের হেল্পাররা স্টপেজগুলোতে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে যাত্রীদের ডাকছেন। যেখানে অন্যদিনগুলোতে সাধারণ যাত্রীরা জোর করেও কোনো কোনো পরিবহনের দরজা খুলতে পারেন না।
গুলিস্তান থেকে মিরপুরে আসা যাত্রী শাহরিয়ার হাসানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি মিরপুরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চাকরি করেন। শাহরিয়ার বলেন, প্রতিদিনের মতো আজও মিরপুরে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হই। কিন্তু ছুটির দিন হওয়ায় অন্যান্য দিনের মতো তেমন চোখে পড়ছে না যানবাহন। মানুষের ভিড়ের কারণে যেখানে যাতায়াতে ভোগান্তি হতো সেখানে আজ বাসের সিটগুলো প্রায় লোকশূন্য। মোড়ে হাঁকডাক করেও যাত্রী পাচ্ছেন না হেল্পাররা।
শ্যামলী থেকে শাহবাগ আসেন আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কাজে শাহবাগের উদ্দেশ্যে বের হই। শ্যামলী থেকে শাহবাগ যেতে যেখানে সময় লাগতো প্রায় এক ঘণ্টা; সেখানে আজ ছুটির দিন হওয়ায় ২০ মিনিটে পৌঁছে যাই। বাসেও তেমন কোনো ভিড় নেই। বেশিরভাগ সিটই ফাঁকা।
দুর্গাপূজা এবং সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে চারদিনের ছুটি পাওয়ায় অনেকেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য ঢাকা ছেড়েছেন। অনেকে বিনোদনের জন্য পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণে গেছেন। এতে ব্যস্ত নগরী ঢাকা যেন শূন্য হয়ে পড়েছে।
শাহবাগ মোড়ে ট্রাফিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য মো. আব্দুস ছামাদ জানান, শাহবাগ অত্যন্ত ব্যস্ততম মোড়। কিন্তু আজ দুদিন যেন ফাঁকা হয়ে গেছে। কিছু অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া অন্য যানবাহন অনেক কম।
তবে আজ দুর্গাপূজার বিসর্জন উপলক্ষে দুপুরের পর থেকে মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে তিনি জানান।
মন্তব্য