জ্যৈষ্ঠের শুরু থেকেই বাজারে আসতে শুরু করে নানান জাতের আম। জাতভেদে এসব আমের বাজারে আসার সময়ও ভিন্ন।
এরই মধ্যে রাজধানীর বাজারে উঠতে শুরু করেছে কয়েক জাতের সুমিষ্ট আম। খুচরা বাজারে এসব আম বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। দাম নির্ভর করছে আম কতটা তাজা তার ওপর।
তাজা আম কীভাবে চেনা যায় তা জানালেন ফার্মগেটের বিক্রেতা মো. রমজান। প্রতিবছর তারা আমের মৌসুমে অস্থায়ী ফলের মেলা বসান। তাদের ‘সাতক্ষীরা-রাজশাহীর ফলের মেলা’ দোকানে শুধু আমই থাকে।
গত শুক্রবার রমজানের দোকানে গিয়ে দেখা গেল, হিমসাগরের পাশাপাশি ল্যাংড়া আমও উঠেছে। জাতভেদে দামে তফাত তো আছেই। এমনকি একই জাতের আমেরও ভিন্ন দাম। হিমসাগর আমের দামের ট্যাগ লাগানো রয়েছে ১১০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। ল্যাংড়া ১২০ থেকে ১৪০ টাকা।
রমজান বলেন, ‘আম যত তাজা, দামও তত বেশি। রাজশাহী-সাতক্ষীরায় আমাগো চুক্তি করা বাগান আছে। বাগান থেকেই আম ঢাকায় আনি।
‘মনে করেন, গাছ থেইক্যা পাড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কস্টমারের সামনে আম রাখি। আইজকার তাজা আমের দাম বেশি, কাইল বা পরশুর আমের দাম একটু কম। গতকাইলেরটা ১৩০ টাকা, তার আগেরটা ১১০ টাকা।’
তিনি জানান, তাজা আমের বোঁটা তাজা ও সবুজ; আমও সবুজ। গাছ থেকে সবুজ আমই পাড়া হয়। ঢাকায় আসার পরও দুই থেকে তিন দিন সেগুলো সবুজ থাকে। তাজা আমের বোঁটা ছিঁড়লে সাদা কষ বের হয়। আর দুই দিন পর থেকেই বোঁটা শুকাতে শুরু করে বা বোঁটা ঝরে যায়। আমও একটু শুকাতে থাকে।
তিনি বলেন, বাজারে সবার আগে আসে গোপালভোগ আর হিমসাগর। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এই আম আসা শুরু হয়েছে। এখন হিমসাগরের পূর্ণ মৌসুম। তাই হিমসাগরের রাজত্ব চলছে বাজারে। এটি আরও কিছুদিন থাকবে। এরপর আসবে রাজশাহীর অন্যান্য জাতের আম।
আমের যত জাত
দেখতে প্রায় একই রকম হলেও আমের নানান জাত রয়েছে। দেশের আমের জাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, মোহনভোগ, লক্ষ্মণভোগ, হিমসাগর, খিরসাপাতি, ল্যাংড়া, ফজলি, গুটি, রানিপছন্দ, রুপালি বা আম্রপালি, ফজলি, আশ্বিনা, গৌরমতি, মল্লিকা, হাড়িভাঙা ইত্যাদি। এর বাইরে বৌ-ভোলানি, জামাইখুশি, বৃন্দাবন, লখনা, বোম্বাই, দাউদভোগ, সিন্দুরি, ব্যানানা, ক্ষুদি খিরসাপাতি, কালীভোগসহ সব মিলিয়ে শতাধিক জাতের আম রয়েছে।
হিমসাগর ও খিরসাপাতি দেখতে প্রায় একই রকম। তবে খিরসাপাতি বড় ও একটু কালচে সবুজ ধরনের। ফজলি ও আশ্বিনা দেখতে প্রায় একই রকম। তবে মিষ্টতায় পার্থক্য রয়েছে। ফজলি মিষ্টি বেশি। আশ্বিনা পরিপক্ব না হলে একটু টক ধরনের।
পাকা আশ্বিনা একটু বেশি সবুজ। আর পাকা ফজলি আম হলুদ হয়। আবার গোপালভোগ ও রানিপছন্দের চেহারায় মিল আছে। তবে গোপালভোগ আকারে বড়; রানিপছন্দ একটু ছোট।
আমের বিষয়ে রাজধানীর বাড্ডা লিংক রোডের বিক্রেতা এমারত হোসেন বলেন, ‘বাজারে সব আম এক লগে উঠে না। এক আমের এক সময়। কাস্টমার সময়-অসময় না দেইখা আম খোঁজে। এখন রুপালি (আম্রপালি) চাইলে কী হবে?
‘এখন হিমসাগরের সময়। কোন আম কোন সময় পাকব, একটু মাথায় রাখন লাগব। হিসাব বুঝে কিনা লাগব। তাতে ঠকার সুযোগ কম।’
তিনি জানান, তার দোকানে হিমসাগর আম বিক্রি করছেন ৮০ টাকা কেজিতে। ল্যাংড়া ৭০ টাকায়। বাদামতলী পাইকারি ফলের বাজার থেকে আম আনেন। যেমন দামে কেনা পড়ে, তেমন দামে বিক্রি করেন।
মধ্য বাড্ডার ফল বিক্রেতা শ্যামল দাসও হিমসাগর ৯০ টাকা এবং ল্যাংড়া ৮০ টাকায় এবং লক্ষ্মণভোগ ৬০ টাকায় বিক্রি করছেন।
তিনি বলেন, ‘আম বড় হওনের সময় বাগানে বৃষ্টির পানি লাগে। এবার বৃষ্টি কম। তাই আমও ছোট ছোট। পাবলিক খালি বড় আম খোঁজে। তবে ঝড়-তুফান না হওয়ায় আম নষ্টও হইছে কম।’
কোন আম কখন বাজারে আসবে
জাতভেদে বাজারে আম আসার সময় ভিন্ন ভিন্ন হয়। আবার একই জাতের আম এলাকাভেদেও ভিন্ন ভিন্ন সময় পাকে। তাই বাজারে নিরাপদ ও পরিপক্ব আম আসা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন জেলায় গাছ থেকে আম নামানোর সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।
রাজশাহী জেলায় গুটি জাতের আম ১৫ মে থেকে এবং গোপালভোগ ২০ মে থেকে নামানো শুরু হয়েছে। লক্ষ্মণভোগ ও রানিপছন্দ ২৫ মে, হিমসাগর ও খিরসাপাতি ২৮ মে থেকে বাজারে আসবে। এ ছাড়া ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে ফজলি ও আম্রপালি এবং ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪ নামানো যাবে।
তবে সেদিক দিয়ে আগেই বাজারে আসে সাতক্ষীরার আম। প্রশাসনের নির্দেশনামতো ১ মে থেকে গোবিন্দভোগ ও গোপালভোগ আম গাছ থেকে পাড়া শুরু হয়েছে। ২১ মে থেকে পুরোদমে বাজারে আসা শুরু করেছে এ জেলার হিমসাগর আম।
২৭ মে থেকে ল্যাংড়া আম ও ৪ জুন থেকে আম্রপালি আম বাজারে আসবে। তবে কারও বাগানে নির্ধারিত সময়ের আগেই আম পাকলে তা স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করে বাজারে ছাড়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। এ হিসাবে নির্দিষ্ট সময়ের এক সপ্তাহ আগেই বাজারে পাওয়া যায় আম।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম গাছে পাকলেই পাড়া হবে। এ জেলার আম জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে বাজারে আসতে শুরু করবে। শুরুতে গাছ থেকে নামবে গুটি আম; পরে অন্যান্য আম।
নাটোর ও নওগাঁয় ১০ মে থেকে গুটি আম এবং ২০ মে থেকে গোপালভোগ পাড়া শুরু হয়েছে। অন্যান্য আমের মধ্যে লক্ষ্মণভোগ ২৫ মে, খিরসাপাতি ২৮ মে, ল্যাংড়া ৫ জুন, ফজলি ২০ জুন, আম্রপালি ২০ জুন, মল্লিকা ৩০ জুন, আশ্বিনা ১৫ জুলাই, রানিপছন্দ ২৫ মে, মোহনভোগ ১৫ জুন, বারি আম-৪ ১০ জুলাই, হাড়িভাঙা ২০ জুন এবং গৌরমতি আম ১৫ আগস্ট থেকে পাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বিক্রেতারা জানান, সাধারণত বাজারে যে জাতের আম সবার আগে ওঠে, তা হলো সাতক্ষীরার গোপালভোগ। এটির নিচের দিকটা একটু সরু। পাকলে হলুদ ভাব আসে। বৈশাখের শেষ সপ্তাহ বা মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এটি বাজারে পাওয়া যায়।
রাজশাহীর গোপালভোগ বাজারে আসে মে মাসের মাঝামাঝিতে। মে মাসের শেষদিকে আসে হিমসাগর। তার পরেই খিরসাপাতি জুনের প্রথম সপ্তাহে বাজারে আসে। দুটি খুবই মিষ্টি আম। প্রায় একই সময় আসে ল্যাংড়া আমও। দেখতে কিছুটা গোপালভোগের মতো হলেও ল্যাংড়া তত মিষ্টি হয় না।
জুন মাসজুড়ে বাজারে থাকে নানান জাতের আম। এ সময় আসে লক্ষ্মণভোগও। এ আমের মিষ্টতা অনেক কম। লক্ষ্মণভোগে চেনার উপায় হলো এটির পেটের মাঝামাঝি স্থানে ‘নাক’ আছে।
বাজারে এর একটু পরেই আসে ফজলি। জুনের শেষ দিকে থাকে এ আমের রাজত্ব। বাজারে তখন অন্যান্য আম কমতে থাকে। এ সময় ফজলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় থাকে সবচেয়ে মিষ্টি আম আম্রপালি।
নিচের দিকে একটু সুচাল, ওপরে একটু গোল। এই আম মিষ্টি বেশি, স্বাদে অন্য রকম। জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে আসে আশ্বিনা ও বারি আম-৪। তবে এরপর যেসব আম আসে সেগুলোর পরিমাণ খুবই কম।
বাগান ও পাইকারিতে দাম
মে মাসের শুরুতে সাতক্ষীরায় গোবিন্দভোগ ও গোপালভোগ বাগানে প্রতি মণ পাইকারিতে বিক্রি হয়েছিল ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। শুক্রবার গোপালভোগ আমের মণ ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং হিমসাগর ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এদিকে বাদামতলী ফলের আড়তে শুক্রবার প্রতি কেজি হিমসাগর আম মানভেদে পাাইকারিতে বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। তবে এ আড়তে এক ক্যারেটের কম আম বিক্রি হয় না।
প্রতি ক্যারেটে ২০ থেকে ২৬ কেজি আম থাকে। এখানে গোপালভোগ ও ল্যাংড়া আম বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে। গুটি আম বিক্রি হয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়।
আরও পড়ুন:চলতি অর্থবছরের শুরুতে দেশের বিভিন্ন গুদামে চাল ও গমের মজুদ রয়েছে ১৭.৬৪ লাখ মেট্রিক টন, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় তিন লাখ টন বেশি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
সরকারি মজুদ, সংগ্রহ ও বিতরণ পরিস্থিতি সম্পর্কে খাদ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত বছরের ১ জুলাই দেশে চাল ও গমের মোট মজুদ ছিল ১৪.৭৩ লাখ টন। এর মধ্যে চালের মজুদ ছিল ১০.৬০ লাখ টন এবং গমের মজুদ ছিল ৪.১৩ লাখ টন।
নতুন অর্থবছরের শুরুতে চালের মজুদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫.৪১ লাখ টনে।
অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগৃহীত ও আমদানিকৃত গমের মোট সংগ্রহের তুলনায় বিতরণ বেশি হওয়ায় গমের মজুদ কমে দাঁড়িয়েছে ২.২৩ লাখ মেট্রিক টনে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে গুলি করে ছয় জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আসামি পক্ষে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চাওয়ার শুনানি শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় গ্রেফতার চার আসামি হাজির রয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন সংক্রান্ত প্রথম কোন শুনানি শুরু হওয়ায়, সে দিনটিকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন চিফ প্রসিকিউটর।
এর আগে, এই মামলার পলাতক চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে গত ৩ জুন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দেয়া হয়।
তবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরেও পলাতক আসামীরা হাজির না হওয়ায়, তাদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. কুতুবউদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এই মামলার অভিযোগে বলা হয়, রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় আসামিগণ কর্তৃক নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয় এবং শহীদ শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, শহীদ মো ইয়াকুব, শহীদ মো রাকিব হাওলাদার, শহীদ মো ইসমামুল হক ও শহীদ মানিক মিয়াকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে।
জাজ্বল্যমান এ সব অপরাধের বিচার এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
আনুপাতিক ভোট পদ্ধতি দেশকে আবার স্বৈরতন্ত্রের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। তিনি বলেন, সেই রক্তপিপাসুরা যাতে আবার ফিরে না আসে, সে জন্য গণতান্ত্রিক ঐক্য দরকার।
এ সময়ে আনুপাতিক ভোটের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় রংপুর নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়স্থ দলীয় কার্যালয়ে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচির প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আনুপাতিক ভোট পদ্ধতির তীব্র সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘আনুপাতিক ভোটের প্রয়োজন কী? এই ব্যবস্থায় স্থানীয় পর্যায়ে কোনো নেতা তৈরি হবে না, নেতৃত্বের বিকাশও হবে না। আমরা চিরায়ত গণতন্ত্রের পক্ষে, যেখানে বৈধ ভোটাররা ভোট দিয়ে নিজের এলাকার জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবে।’
‘একজন মানুষ দীর্ঘদিন মানুষের পাশে থেকে নেতা হয়েছেন, অথচ আনুপাতিক ভোটে তাকে নয়; দলকে ভোট দিতে হবে। এরপর দল থেকে বাছাই করে এমপি ঘোষণা করা হবে—এটি আরও বেশি স্বৈরতন্ত্রের দিকে ঠেলে দেবে।’
তিনি বলেন, ‘যেখানে প্রায় ১২ কোটি ভোটার রয়েছে, সেই ১৮ কোটি মানুষের দেশে কেন এমন ভোট পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে? যে গণতন্ত্রের জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে, রক্ত দিয়েছে, বছরের পর বছর কারাবরণ করেছে, সেই গণতন্ত্র আজ প্রশ্নবিদ্ধ।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৬ বছর ধরে দেশের কোনো তরুণ শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি। কখন কাকে ধরে নিয়ে যাবে, আর কার রক্তাক্ত লাশ তিস্তা, গঙ্গা কিংবা শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে পাওয়া যাবে—এটাই ছিল নিত্যদিনের চিত্র। এই ভয়াবহ সময় পার করতে হয়েছে আমাদের। শেখ হাসিনার দমন-পীড়নের হাত থেকে কেউ রেহাই পায়নি। সেই রক্তপিপাসুরা যাতে আবার ফিরে না আসতে পারে, তার জন্য গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য প্রয়োজন।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজি, দখলবাজির সঙ্গে বিএনপির কোনো অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের জড়ানো চলবে না। বিএনপির নেতাকর্মীদের আচরণে যেন সাধারণ মানুষ কষ্ট না পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। মানুষ যেন বিএনপির কাছ থেকে ন্যায়বিচার পায়, সেই বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। কেউ যদি এসব অপকর্মে জড়িত থাকে, দল সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে—এ বিষয়ে কোনো ছাড় নেই।’
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ও ‘বিজয়ের বর্ষপূর্তি’ উপলক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচির আয়োজন করেছে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন রংপুর (ড্যাব)।
রাষ্ট্র সংস্কারের বিভিন্ন বিষয়ে একমত হয়ে জুলাই সনদ তৈরির লক্ষ্যে আজ দ্বিতীয় দফার নবম দিনের মত দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল এগারোটায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এ আলোচনার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
এছাড়া, কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন-বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় অংশ গ্রহণ করছে- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আজকের আলোচনায় পূর্বের অমীমাংসিত বিষয়ে অধিকতর আলোচনা হওয়ার পাশাপাশি বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা- এই তিনটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
আজ আলোচনার শুরুতে সূচনা বক্তব্য দেওয়ার সময় কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন, আমরা কি পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে, অন্যদের কি পরিমাণ আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আজকের এ পর্যায়ে এসেছি সেটা আমাদের প্রত্যেকেরই স্মরণ রাখতে হবে। হাজারো মানুষের আত্মত্যাগই যেন হয় আমাদের দিক নির্দেশক।
তিনি আরো বলেন, ৫৩ বছরে রাষ্ট্র গঠনের এমন সুযোগ আর আসেনি। অনেক অন্যায় অত্যাচার ও নিপীড়নের মধ্য দিয়ে এ সুযোগটা আমরা পেয়েছি, এ সুযোগ হেলায় হারানো যাবে না।
এর আগে, গতকাল (বুধবার) কমিশনের অষ্টম বৈঠক শুরুর প্রথমে প্রারম্ভিক বক্তব্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আলোচনা ইতিবাচকভাবে অগ্রসর হচ্ছে এবং এভাবে আলোচনা অগ্রসর হলে এ মাসের মাঝামাঝি বা ৩য় সপ্তাহের মধ্যেই জুলাই সনদ ঘোষণা করা সম্ভব হবে।
কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
মুসলিম বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ ও মরক্কোর নেতৃত্বমূলক ভূমিকা জোরদারে পারস্পরিক ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে এ কথা বলা হয়েছে।
পোস্টে আরও বলা হয়েছে, 'মরক্কো সফররত বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মরক্কোর জাতীয় শিক্ষা, প্রাক-প্রাথমিক ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ সাদ বেরাদা-র মধ্যে গতকাল মরক্কোর রাজধানী রাবাতে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।'
'বৈঠকের শুরুতে মরক্কোর মন্ত্রী মোহাম্মদ সাদ বেরাদা দেশটির সমন্বিত শিক্ষা ও ক্রীড়া কাঠামো তুলে ধরেন।
তিনি বিশেষভাবে মরক্কোর "স্টাডি অ্যান্ড স্পোর্টস" মডেলের উল্লেখ করেন, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঝরে পড়ার হার কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। এছাড়া প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার বিস্তারে নেওয়া নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগের বিষয়েও তিনি আলোকপাত করেন।'
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা মরক্কোর বাদশাহ মোহাম্মেদ ষষ্ঠ-এর দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং মরক্কোর শিক্ষা ও ক্রীড়াক্ষেত্রে অর্জিত অগ্রগতির জন্য অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “মরক্কোর শিক্ষা ও ক্রীড়ার সমন্বিত মডেল একটি রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।”
উপদেষ্টা প্রযুক্তিগত সহায়তা, প্রশিক্ষণ এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ভিত্তিক ক্রীড়া সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন এবং মুসলিম বিশ্বের মধ্যে দুই দেশের নেতৃত্বমূলক ভূমিকা জোরদারে পারস্পরিক ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বাংলাদেশ ও মরক্কোর জাতীয় ফুটবল দলের মধ্যে একটি প্রীতি ম্যাচ আয়োজনের প্রস্তাব করেন এবং ২০২৫ সালে অনুষ্ঠেয় "গ্লোবাল ইয়ুথ সামিট"-এ মোহাম্মদ সাদ বেরাদাকে আমন্ত্রণ জানান।
মরক্কোর মন্ত্রী বাংলাদেশের শিক্ষা ও যুব উন্নয়নে সাম্প্রতিক অর্জনের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, মরক্কো প্রি-স্কুল কার্যক্রমে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় ক্লাসরুমকে আরও আনন্দদায়ক ও শিক্ষণ উপযোগী করে তুলতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক তথ্য একটি ডেটাবেইজে সংরক্ষিত হচ্ছে, যা দেশটির নীতিনির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
উভয়পক্ষই আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই বৈঠক শিক্ষা ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাংলাদেশ-মরক্কো সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর ও ফলপ্রসূ হবে।
বৃষ্টির মৌসুম শুরু হতেই ঢাকার বায়ুমানে উন্নতি লক্ষ করা যাচ্ছে। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। গত কয়েকদিনের মতো আজও ঢাকার বাতাস যেকোনো প্রকার অস্বাস্থ্যকর শ্রেণি থেকে বেশ দূরে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল দশটার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৭৯, একিউআই সূচকে যা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ।
সাধারণত বায়ুদূষণের সূচক (এইকিআই) শূন্য থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। তারপর থেকে ১০০ পর্যন্ত একিউআই স্কোর ‘মাঝারি’।
এই সময়ে ভারতের রাজধানী দিল্লির বায়ুমানও ‘মাঝারি’ শ্রেণিতে ছিল, তবে তা ঢাকার চেয়ে কিছুটা খারাপ ছিল। দিল্লির বাতাসের সূচক ছিল তখন ৯০ এবং দূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় অবস্থান ছিল ১৭তম।
তবে অবশেষে আজ দূষিত বাতাসের শহরগুলোর তালিকার শীর্ষ পাঁচ থেকে বের হতে সক্ষম হয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। একই সময়ে ১২৪ স্কোর নিয়ে তালিকার অষ্টম স্থানে অবস্থান করছিল শহরটি। বেশ কিছুদিন পর আজ সকালে লাহোরের বায়ুমানে এত উন্নতি হয়েছে। সাধারণত ১৫০-এর নিচে নামে না লাহোরের একিউআই স্কোর।
আজ সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল চিলির সান্তিয়াগো। শহরটির সূচক ছিল ১৬২। ১৬০, ১৫৬ ও ১৫৪ স্কোর নিয়ে তার পরের তিন শহর ছিল উগান্ডার কাম্পালা, বাহরাইনের মানামা ও কঙ্গোর কিনশাসা। শীর্ষ চার শহরের বায়ুমানই ছিল ‘অস্বাস্থ্যকর’। পঞ্চম স্থানে থাকা মিসরের কায়রোর বাতাসের স্কোর ছিল এই সময় ১৩২, অর্থাৎ ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’।
কণা দূষণের এই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আর ১৫১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
মন্তব্য