‘আমরা কুমিল্লা থেকে আইলাম কষ্ট কইরা। ট্যাকা বাড়াইয়া নেন, তাও ঢুকতে দেন। আমাদের না দেন, বাচ্চা দুইটারে একটু ঢুকতে দেন।’
‘গেটটা একটু খুলে দেন, বেশি দূর যাব না, হরিণের খাঁচা পর্যন্ত যাইতে দেন। একটা ছবি তুলে চলে আসুক।’
‘সবই তো খোলা। এইটা খুলে না কেন? আপনাদের বড় স্যার কে আছে? ডাকেন কথা বলি। বন্ধ জানলে কি আইতাম টাকা, সময় খরচ কইরা? আসছি যখন একটু ঢুকতে দেন।’
এভাবেই রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানার সামনে দর্শনার্থীদের ভেতরে ঢোকার জন্য কর্তব্যরত গার্ডদের কাছে আকুতি করতে দেখা গেছে।
প্রতি বছর ঈদের সময়টাতে এখানে মানুষের ঢল নামে। প্রিয়জনদের নিয়ে ঢাকার বাইরে থেকেও ঘুরতে আসেন অনেকে। কিন্তু এবার সেখানে বাধা হয়েছে ‘লকডাউন’।
করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের মতো এই ঈদেও বন্ধ চিড়িয়াখানা। তবে বিষয়টি না জানার কারণে ঈদের দিন থেকে এখনও অনেক মানুষ এসে ভিড় করছেন। গেট বন্ধ পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন তারা।
রোববার বেলা ১১টার পর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দেখা যায়, চিড়িয়াখানায় এসে ঢুকতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন শত শত মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাইক, রিকশা, সিএনজি, প্রাইভেট কার ও বাসে করে চিড়িয়াখনায় আসছেন দর্শনার্থীরা। আগতদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা বেশি হলেও, তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সের মানুষকেও আসতে দেখা যায়।
গেট বন্ধ পেয়েও ফিরে যেতে চাইছিলেন না অনেকেই। টিকিট কাউন্টারের সামনে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন।
কর্তব্যরত গার্ডদের ভেতরে ঢুকতে দেয়ার জন্য কেউ কেউ অনুরোধ করেন। কেউ আবার তর্কে জড়ান।
একটু পরপর চিড়িয়াখানায় দায়িত্বশীল কর্মচারী, আনসার সদস্যরা বাঁশি ফুঁকিয়ে আগতদের সরানোর চেষ্টা চালিয়ে যান।
আগতরা বলছেন, সরকারের উচিত ছিল, চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকার বিষয়টি ভালোভাবে প্রচার করা। তাহলে ঘুরতে এসে টাকাও অপচয় হতো না। সময়ও নষ্ট হতো না।
এদিকে চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার চিড়িয়াখানা অনেক আগে থেকে বন্ধ রেখেছে। পত্রপত্রিকায়, টেলিভিশনে প্রচার হয়েছে। তারপরেও যারা না জেনে চলে আসছেন, তাদেরকে বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
চিড়িয়াখানার প্রধান ফটকে কর্তব্যরত গার্ড ইউছুফ আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আইজ তো তাও কম। ঈদের দিন তো মাইনষের জন্য হাঁটার রাস্তাও আছিল না।’
‘যখন শুনছে ঢোকা যাইবো না, মারামারি লাগাই দিছিল। আমগোর লগে কাইজ্জা শুরু করছে। আমগোর তো কিছু করার নাই। খারাপও লাগে বুঝছেন। ছোড ছোড পোলাপাইন আইয়া আইয়া ফেরত গেছে সব। সুযোগ থাকলে ঢুকবার দিতাম।’
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চিড়িয়াখানার টিকিট কাউন্টারের সামনে দুই মেয়ে এক ছেলেকে নিয়ে গার্ডদের সঙ্গে তর্ক করতে দেখা যায় আমিন হাসানকে।
নারায়নগঞ্জ থেকে ছেলে মেয়েদের নিয়ে চিড়িয়াখানা ঘুরতে আসেন আমিন। এসে গেট বন্ধ দেখায় গার্ডদের অনুরোধ করতে গিয়ে এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে যান তিনি।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি দোকান বন্ধ রাইখা আইছি পোলাপান নিয়া ঘুরতে। এখন ঢুকতে দিব না। মাইয়াডা বড় বইনের থেকে ফোন নিয়া আইছে ভালো ক্যামেরার। বাঘের লগে ছবি তুলব। এইডা ঠিক কইরা জানাইব না? তাইলে এই সময়টা কি নষ্ট হয়? টাকাও নষ্ট।’
আমিনের মতো এমন শত শত মানুষ হতাশা নিয়ে ফেরত গিয়েছেন।
দুপুরের পরপর স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চিড়িয়াখানা ঘুরতে আসেন সালাম মিজি।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেয়ে বর্ণমালা শেখার সময় বইয়ে হরিণ দেখে একদিন বলেছিল, ছবি তুলবে হরিণের সঙ্গে। সময় পাইনি, আনা হয়নি। ভাবছিলাম, আজকের বিকেল এখানেই কাটাব। বন্ধ তাতো আর জানতাম না। এখন কখন কী খুলছে, কখন কী বন্ধ হচ্ছে তা ঠিক আন্দাজ করা যায় না। জানা থাকলে হয়ত অন্য পরিকল্পনা করা যেত।’
এদিকে শুধু চিড়িয়াখানা নয়, পাশে বোটানিক্যাল গার্ডেনও বন্ধ রয়েছে। সেখানেও পাওয়া গেল দর্শনার্থীর ভিড়।
বিকেল ৩টার দিকে চারটি বাইক নিয়ে ঘুরতে আসেন রাফিদ হাসান ও তার বন্ধুরা। চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকায়, গেটের সামনে গ্রুপ সেলফি তুলে ফেরত গেছেন।
রাফিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভেবে আসলাম চিড়িয়াখানায় একটা ব্লগ করব। তারপরে বোটানিক্যাল গার্ডেনে গিয়ে ফটোশ্যুট করার ইচ্ছে ছিল। এসে দেখি বন্ধ। জানলে হয়ত, এদিকে না এসে ১০০ ফিট নতুন রাস্তায় যাওয়ার প্ল্যান করতাম।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. মো. আব্দুল লতীফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লকডাউনের জন্য সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত পাঁচ মাস ধরে চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। এর আগে সাত মাস বন্ধ ছিল।
‘তবে আমরা প্রস্তুত। যখনই সরকার দর্শনার্থী প্রবেশের অনুমোদন দিবে, তখনি আবার চিড়িয়াখানা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিব।’
আরও পড়ুন:
রাজধানীর লালবাগের শহীদনগর এলাকায় গণপিটুনিতে তৌফিকুল ইসলাম নামে এক যুবকের (২৬) মৃত্যু হয়েছে। তিনি স্থানীয়ভাবে ‘কিলার বাবু’ ওরফে ‘টেরা বাবু’ নামেও পরিচতি।
রোববার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় সেনা সদস্যরা ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লালবাগ থানার ওসি মোস্তফা কামাল খান সমকালকে বলেন, ‘নিহত বাবুর বিরুদ্ধে চুরি ও মাদকের ১০-১২টি মামলা রয়েছে। তিনি এলাকার চিহ্নিত চোর এবং মাদক চোরাকারবারী। শনিবার রাত ২টার পরে শহীদ নগর এলাকায় লোকজন তাকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তার মৃত্যু হয়।’
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে গত দুই দিনে ২ হাজার ২৪৬টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৯৯টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ঢাকা মহানগরীতে দরিদ্র ও অসচ্ছল মানুষের জন্য ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে আজ সকাল থেকে।
ঢাকার সচিবালয়ের সামনে থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, ধোলাইপাড়, ধোলাইখাল, রামপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন নির্বাচিত ডিলাররা।
প্রতিটি ট্রাক থেকে দরিদ্র একটি পরিবার ২ কেজি ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল ন্যায্য মূল্যে কিনতে পারছেন।
টিসিবির উপ পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) উদ্যোগে রোববার থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ভর্তুকি মূল্যে রাজধানীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। পণ্যগুলো হল ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল।
জানা যায়, ঢাকা মহানগরীতে আজ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন (শুক্রবার ছাড়া) টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৫টি, গাজীপুর মহানগরীতে ৬টি, কুমিল্লা মহানগরীতে ৩টি এবং ঢাকা জেলায় ৮টি, কুমিল্লা জেলায় ১২টি, ফরিদপুর জেলায় ৪টি, পটুয়াখালী জেলায় ৫টি ও বাগেরহাট জেলায় ৫টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে আজ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১৯ দিন (শুক্রবার ছাড়া) পণ্য বিক্রি করা হবে।
দৈনিক প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫শ’ জন সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। একজন ভোক্তা একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২ লিটার ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল কিনতে পারবেন। ভোজ্যতেল ২ লিটার ২৩০ টাকা, চিনি ১ কেজি ৮০ টাকা এবং মসুর ডাল ২ কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হবে। যে কোনো ভোক্তা ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে ধাক্কামারা চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জুথী আক্তার শ্রাবন্তী ওরফে যুথী আক্তার জ্যোতি ওরফে লিমা আক্তার (২২) এবং শাহনাজ বেগম (৪২)।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে তেজগাঁও থানাধীন বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আসামিরা বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের সপ্তম তলার লিফটের সামনে কৌশলে এক নারীকে ধাক্কা মেরে তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা চুরি করে। এ সময় সন্দেহ হলে তিনি তার ব্যাগ পরীক্ষা করে টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপর ভুক্তভোগী ও তার স্বামী চিৎকার দিলে শপিং মলের নিরাপত্তা প্রহরীরা এগিয়ে আসেন। তাদের সহায়তায় ওই দুই নারীকে আটক করা হয়। তবে তাদের সঙ্গে থাকা অপর দু’জন কৌশলে পালিয়ে যান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরও দুই নারী ভুক্তভোগী জানান, তাদের যথাক্রমে এক লাখ টাকা ও ৪.৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণের টিকলি (মূল্য আনুমানিক ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা) এবং ১০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা চুরির কথা স্বীকার করেছে।
তেজগাঁও থানা পুলিশ ও নারী পুলিশের সহায়তায় আসামি যুথী আক্তারের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে চুরি হওয়া নগদ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং স্বর্ণের টিকলি উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, যুথী আক্তার আন্তঃজেলা পকেটমার চক্রের নেতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানানো হয়।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে ২ হাজার ১৭২টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ২৮৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৭৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বুধবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
রাজধানী ঢাকার বস্তির শিশুদের দেহে নীরব ঘাতক সিসার বিপজ্জনক মাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এসব শিশুদের ৯৮ শতাংশের দেহে প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসা শনাক্ত করা হয়েছে।
আইসিডিডিআরবির (আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ) এক গবেষণায় এ চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার আইসিডিডিআরবির সম্মেলনকক্ষে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) শিশুদের দেহে প্রতি লিটারে ৩৫ মাইক্রোগ্রামের উপস্থিতিকে উদ্বেগজনক মাত্রা বলে বিবেচনা করে। তবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সিসার কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই। সিসার যেকোনো মাত্রাই শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
আইসিডিডিআরবি ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে থাকা বস্তির শিশুদের ওপর গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। ওই গবেষণায় ২ থেকে ৪ বছর বয়সী ৫০০ শিশুর রক্তের নমুনা নেওয়া হয়।
আইসিডিডিআরবির অ্যাসিস্ট্যান্ট সায়েন্টিস্ট ডা. জেসমিন সুলতানা জানান, এসব শিশুর রক্তে প্রতি ডেসিলিটারে ৬৭ মাইক্রোগ্রাম সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তবে তাদের মধ্যে অর্ধেকের শরীরের এই মাত্রা ছিল ৬৭ মাইক্রোগ্রামের বেশি। গবেষণায় দেখা যায়, সিসা পোড়ানো, গলানো বা রিসাইক্লিংয়ের (পুনঃচক্র) মতো কাজগুলো যেখানে হয়, সেসব এলাকার শিশুদের মধ্যে সিসায় আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি।
উদাহরণ দিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, গবেষণায় চিহ্নিত সিসানির্ভর শিল্পস্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী শিশুদের রক্তে সিসার মাত্রা ছিল পাঁচ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে বসবাসকারী শিশুদের তুলনায় ৪৩% বেশি। সিসার অন্যান্য উৎসের মধ্যে রয়েছে ঘরের ভেতর ধূমপান, দূষিত ধূলিকণা, সিসাযুক্ত প্রসাধনসামগ্রী ও রান্নার পাত্র।
এই আলোচনা সভা থেকে লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি বানানো বা রিসাইক্লিং করার কারখানা বা স্থান, অথবা যেসব কারখানা বা স্থাপনায় সিসা গলানো বা পোড়ানো হয়, এমন সিসানির্ভর শিল্পস্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। কারণ, এসব প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নিলে বা দূষণ কমানোর ব্যবস্থা নিলে সেসব এলাকার শিশুদের সিসা দূষণ থেকে বাঁচানো সম্ভব।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আইসিডিডিআরবির রিসার্চ ট্রেইনি ডা. সানজিদা তাপসি আদিবা। স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিডিডিআরবির হেলথ সিস্টেম অ্যান্ড পপুলেশন স্টাডিজ ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ পরিচালক ড. সারাহ স্যালওয়ে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ১২ হাজার পিস ইয়াবা ও ইয়াবা পরিবহনে ব্যবহৃত বাসসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা-বিভাগ (ডিবি)। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মো. বাবু মিয়া (৩৬) ও মো. রাকিবুল হাসান (২৮)। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার ডিবি-মতিঝিল বিভাগ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কতিপয় মাদক কারবারি একটি যাত্রীবাহী বাসে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ যাত্রাবাড়ীর আসমা আলী সিএনজি রিওয়েলিং অ্যান্ড ওয়ার্কশপ লি. এর পূর্ব পাশে হামজা বডিবিল্ডারের সামনে অবস্থান করছে বলে জানতে পারে।
পরে দুপুর পৌনে ৩ টার দিকে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা পরিবহনে ব্যবহৃত একটি বাসসহ বাবু ও রাকিবুলকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ১২ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দীর্ঘদিন যাবৎ কক্সবাজার সীমান্ত এলাকা থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন মাদক কারবারিদের কাছে বিক্রি করত বলে স্বীকার করে।
মন্তব্য