তমাল রূপসী বাংলার নান্দনিক ছায়াতরুর অন্যতম। প্রকৃতির গুণমুগ্ধ কবি জীবনানন্দ দাশ তার কবিতায় অসংখ্যবার তমালতরুর কথা বলেছেন। আর রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, ‘কোন তমালের কাননতলে মধ্যদিনের তাপে; বনচ্ছায়ার শিরায় শিরায় তোমার সুর কাঁপে।’
এ ছাড়া বৈষ্ণব কবিতা, লোকগীতি, এমনকি সংস্কৃত কাব্যেও তমালগাছকে বেশ মর্যাদাসীন বৃক্ষ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমাদের সাহিত্যের একটি বিশেষ অংশজুড়ে তমালের প্রশস্তি থাকলেও বস্তুত গাছটি দুর্লভ।
মাগুরা সদর উপজেলার শত্রুজিৎপুর ইউনিয়নের বাজার এলাকায় রয়েছে শতবর্ষের সাক্ষী এক তমালগাছ। নবগঙ্গা নদীর পাড় ঘেঁষে এর অবস্থান। নদীর হিমেল বাতাসে ছুঁয়ে যাচ্ছে তমালগাছের ছায়া। সেই শীতল ছায়ায় বসে এই গরমে মন জুড়ান পথিকরা।
তবে স্থানীয় অনেকেই জানেন না এই মহিরুহের নাম। যারা জানেন তারা যত্নে আগলে রেখেছেন। পূর্বপুরুষের স্মৃতি হিসেবে অক্ষত রেখেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মোকারম বলেন, ‘আমার বয়স আশি হয়েছে। আমি ছোটবেলা থেকে গাছটি এভাবেই দেখছি। এমনকি আমার বাবাও গাছটি এভাবে দেখেছেন বলে শুনেছি। তারা নেই। কিন্তু গাছের নিচে তাদের বসে বিশ্রাম নেয়ার গল্প শুনেছি। এই গাছ সেই স্মৃতিকে জীবন্ত করে তোলে।’
গাছটির পাশেই কাপড়ের দোকানি হাফিজ। তিনি জানান, গাছটির ছায়া খুব ঠান্ডা। অনেক বছর ধরে এখানেই আছে। পুরান গাছ বলে জানি। কিন্তু নাম তমাল তা জানতাম না।’
তমালগাছটির নিচে রয়েছে প্রণব অধিকারীর চায়ের দোকান। বাবা নির্মল অধিকারীও এখানে ৩৫ বছর চা বিক্রি করে গেছেন। বাবার মৃত্যুর পর ছেলে প্রণব চায়ের দোকানটি ধরে রাখেন। বাবার স্মৃতিবিজড়িত এই তমালগাছের নিচে এলে তার মনে পড়ে যায় বাবার কথা, ঠাকুরদার কথা।
প্রণবের দোকানে চা খেতে খেতে একজন বলেন, ‘গাছটি বাতাসে দোল খায়। শীতল বাতাস গায়ে লাগে। গরম নেই সেই বাতাসে। খুব গরম পড়লি আমরা এই চায়ের দোকানে বসে গাছের ছায়ায় থাকি।’
মাগুরা জেলায় এ রকম বয়স্ক তমালগাছ দেখা যায় না। যা দু-একটি ছিল, তা এখন কাটা পড়ে গেছে পাকা দালান নির্মাণে। একমাত্র শত্রজিৎপুরে দেখা এই বয়স্ক গাছটিই মাগুরাতে পুরোনো তমালগাছ।
সেজন্য এটির যত্ন দরকার বলে মনে করেন শত্রজিৎপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সঞ্জিত কুমার বিশ্বাস।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামাণিক জানান, তমাল ‘Diospyros cordifolia’ মাঝারি আকৃতির গাছ। ঘন কালো গাঁটযুক্ত কাণ্ড। এই কাণ্ড কখনও কখনও কণ্টকিত, আঁকাবাঁকা ও ছড়ানো শাখা-প্রশাখাগুলো ছত্রাকৃতির। এর ছায়া খুব শীতল। শত্রজিৎপুর বাজার এলাকাতেই এ গাছটি দেখা যায়।
তিনি আরও জানান, অনেকে এই দুর্লভ গাছকে চেনেন না। এর পাতা লম্বা-আয়তাকার যা দেখতে অনেকটা পানপাতার মতো। ফুল আকারে বেশ ছোট ও সাদা রঙের। এদের পুরুষ ও স্ত্রী গাছ আলাদা আলাদা।
পুরুষ ফুল ৪ সেন্টিমিটার চওড়া, একসঙ্গে ছোট ছোট থোকায় কয়েকটি থাকে। স্ত্রী ফুল ১ সেন্টিমিটার চওড়া ও এককভাবে বিন্যস্ত থাকে।
এই গাছের ফল গোলাকার, হলুদ রঙের এবং গাবের মতোই বৃতিযুক্ত। কাঠের রং লালচে-হলুদ রঙের এবং দৃঢ় ও শক্ত। পাতা ও ফল মাছের বিষ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
আদি আবাস মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের উষ্ণ অঞ্চলে। বীজ থেকে খুব সহজেই চারা জন্মে। সুদর্শন ছায়াবৃক্ষ হিসেবে চারপাশে আরও প্রচুর পরিমাণে তমালতরু থাকা প্রয়োজন বলে পরামর্শ দেন কৃষি কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ জানিয়েছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর প্রায় দশ লাখ গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছে। এর ৪০ ভাগ কোনো না কোনো কাজে যুক্ত হতে পারছে, ২০ ভাগ স্ব-উদ্ভাবিত কর্মসংস্থান করেছে। আর অবশিষ্ট ৪০ ভাগ বেকার থাকছে।
গতকাল শনিবার এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ বিষয়ক সেমিনারে তিনি এই তথ্য দেন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভের (ইআরআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ল্যাব, ডেমোনেস্ট্রেটর, শিক্ষক, অধ্যক্ষ সবই থাকা সত্ত্বেও ল্যাব প্রাকটিক্যাল হচ্ছে না। এটা শুধু নৈতিক অবক্ষয়ের অবনমন। এর উত্তরণ ঘটাতে হবে।
ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, বিদেশে অদক্ষ শ্রমিক প্রেরণ নিরুৎসাহিত করতে হবে, তাদের দক্ষ শ্রমিক করতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় সেরা শিক্ষক সম্মাননা ব্যক্তিগত যোগাযোগ রক্ষাকারীকে না দিয়ে প্রকৃতই সেরা শিক্ষককে দেওয়ার সুপারিশ করেন উপাচার্য।
ড. এ এস এম আমানুল্লাহ চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, আধুনিক শিক্ষা কমিশন গঠন এখন সময়ের দাবি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, বিগত ৫২ বছরে বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রের কোনো গুণগত উন্নতি হয়নি। আমরা বাংলাদেশে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতেও ব্যর্থ হয়েছি।
ভিসি বলেন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের অবস্থা এক সময় বাংলাদেশের মতোই ছিল। কিন্তু আজ সেই দেশগুলোর মাথাপিছু আয় বহুগুণে বেড়েছে। আর এর জন্য চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার একটি বড় অবদান রয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার জন্য সিলেবাস পরিবর্তনের কাজ হাতে নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
এদিকে একই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে ডিগ্রি পাস শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোট শিক্ষার্থীর ১১ শতাংশ। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক, অর্থাৎ ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেকার।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, গুণগত শিক্ষার অভাবই শিক্ষার সবচেয়ে বড় সমস্যা। প্রতি বছর এসএসসিতে ২.৫ লাখ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেলেও বাস্তব শিক্ষার উন্নতি হচ্ছে না। প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়, কিন্তু যারা জিপিএ-৫ পায় না, তারা কোথায় যাচ্ছে—এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।
প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে ডিগ্রি পাস শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ শতাংশ। এর মধ্যে ৪.৫ শতাংশ বেকার। তাই জব মার্কেটের চাহিদা অনুযায়ী নতুন প্রজন্মকে শিক্ষিত করতে হবে।
ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে সহায়ক ভূমিকা রাখলেও মূল দায়িত্ব পালন করেছে চীন, রাশিয়া ও জাপানের প্রকৌশলীরা। অথচ স্থানীয় প্রকৌশলীরা দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করেছে। মূল সমস্যা হলো চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার অভাব।
নোয়াখালীর হাতিয়ার মেঘনা নদীতে জেলের জালে ধরা পড়েছে প্রায় ২৮ কেজি ওজনের একটি কোরাল মাছ। গতকাল শনিবার সকালে উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের নামার বাজারে নিলামে ৪১ হাজার ৫৫০ টাকায় বিক্রি হয় মাছটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের জেলে মো. রাশেদ গত শুক্রবার রাতে মেঘনায় জাল ফেলেন। ভোরের দিকে তিনি লক্ষ্য করেন, জালে একটি বিশাল আকৃতির মাছ ধরা পড়েছে। জাল তুলে আনতেই দেখা যায়, একটি বিশাল কোরাল মাছ। বিশাল এই মাছ দেখে রাশেদ ও তার সঙ্গী জেলেরা বিস্মিত হয়ে পড়েন। পরে মাছটি সকালেই বাজারে নিয়ে যান।
মাছটি দেখতে বাজারে সাধারণ মানুষের ভিড় জমে যায়। বাজারের আড়তজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। অনেকে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে ভিড় করেন। পরে ইব্রাহিম মৎস্য আড়তে নিলামের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রতি কেজি ১ হাজার ৫০০ টাকা দরে মোট ৪১ হাজার ৫৫০ টাকায় মাছটি কিনে নেন স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম।
ইব্রাহিম মৎস্য আড়তের ম্যানেজার মো. সোহেল বলেন, রাশেদ জীবনে এই প্রথম এত বড় আকারের কোরাল মাছ ধরতে পেরেছেন। এর ওজন ছিল ২৭ কেজি ৭০০ গ্রাম। আমাদের আড়তে মাঝেমধ্যে ১৫ থেকে ২০ কেজির কোরাল আসে, কিন্তু এ বছর এত বড় কোরাল প্রথম ধরা পড়ল।
ক্রেতা মো. ইব্রাহিম বলেন, আমরা খুব কম সময় এত বড় কোরাল মাছ পাই। সচরাচর ছোট কোরাল বাজারে আসে, তবে বড় মাছের চাহিদা সবসময়ই বেশি থাকে। আশা করছি, কোরালটি ভালো দামে বিক্রি করতে পারব।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মেঘনা নদীতে মাঝে মাঝে বড় কোরাল ধরা পড়ে। তবে ২৫ কেজির ওপরে কোরাল সাধারণত খুব কম ধরা পড়ে। তাই এ ধরনের মাছ জালে উঠলেই বাজারে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়।
জেলে রাশেদ বলেন, এত বড় কোরাল মাছ জীবনে কখনো ধরিনি। আল্লাহর রহমতে জালে এমন মাছ পেয়েছি। বিক্রি করে ভালো দামও পেয়েছি। এতে পরিবারে অনেকটা স্বস্তি আসবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীদের একটি নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করতে হবে। এতে দিতে হবে ১৪ ধরনের তথ্য।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের জন্য নতুন নীতিমালা জারি করা হয়েছে। এখন থেকেই বিদেশিরা আবেদন করতে পারবেন। ইতোমধ্যে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
কর্মকর্তারা বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। এতে ১৪ ধরনের তথ্য দিতে হবে।
আবেদনকারীর অবশ্যই নিজের নাম, জন্ম তারিখ, সংস্থা বা দেশের নাম, পেশা, অভিজ্ঞতা থাকলে দেশ ও বিদেশের অভিজ্ঞতা, পাসপোর্ট নম্বর, পাসপোর্টের মেয়াদ, জাতীয়তা, বাংলাদেশে অবস্থানকালীন ঠিকানা, ইমেইল, ফোন নম্বর, আবেদন তারিখ ও স্বাক্ষর দিতে হবে।
এছাড়া আবেদনের সঙ্গে সদ্য তোলা একটি ছবি, মেয়াদ থাকা পাসপোর্টের কপি ও সিভি সংযুক্ত করতে হবে।
এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আনফ্রেল ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভোট পর্যবেক্ষণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এবারের নীতিমালায় বিদেশিদের অনুমতিদানে পুরো ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নিজের কাছে রাখা হয়েছে। আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর ব্যবস্থা নেওয়া হতো। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, ইসির সুপারিশের ভিত্তিতে ভিসা ব্যবস্থা করবে মন্ত্রণালয়।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তফসিল ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের অনুমতি পাওয়া ৩৩টি ব্যাংকের তালিকা প্রকাশ করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এসব ব্যাংক হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধন ফির অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে।
ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ-২ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত তালিকা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেছেন উপসচিব মো. রফিকুল ইসলাম।
যেসব ব্যাংক আগামী হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের অনুমতি পেয়েছে– সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক প্রিমিয়ার ব্যাংক ও শাহাজালাল ইসলামী ব্যাংক।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। প্রাক-নিবন্ধনের অর্থ প্রতি ৩০ দিবসের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের নির্ধারিত হিসাবে স্থানান্তর করতে হবে। হজযাত্রীর বিপরীতে কোনো হজ এজেন্সিকে ঋণ দেওয়া যাবে না। হজযাত্রীর প্রাথমিক নিবন্ধন বা নিবন্ধনের অর্থ এজেন্সির নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে জমা থাকবে। এ অর্থ ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত নির্ধারিত খাত ছাড়া অন্য খাতে ব্যবহার বা স্থানান্তর করা যাবে না। ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২২ (সংশোধিত)’ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান বলেছেন, সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে হজ ও ওমরাহ পালনকে সহজ এবং সুন্দর করতে আমাদের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী জাতীয় পর্যায়ে হজ ও ওমরাহ মেলা ২০২৫ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, গত বছরের হজ ব্যবস্থাপনা চমৎকার ছিল। হজের ব্যয় কমিয়ে আনতে ত্রিশ হাজার টাকা বিমান ভাড়া কমানো হয়েছিল। এবছর হজ যাত্রী পরিবহনে যুক্ত থাকা অন্যান্য এয়ার লাইন্সের সাথে আলোচনার মাধ্যমে আরো সাশ্রয়ী ভাড়া নির্ধারণের চেষ্টা করবো।
শুধু বিমান ভাড়া কমানো হলে হজের খরচ খুব কমে যাবে বিষয়টি এমন নয় উল্লেখ করে বিমান সচিব বলেন, হজের যে আরো চার পাঁচটি খরচের খাত রয়েছে সেটি বিবেচনায় নিতে হবে। এসময় তিনি হজ ও ওমরাহ পালনকারীদের সর্বোত্তম সেবাদানের জন্য হজ এজেন্সিগুলোর মনোযোগ আকর্ষণ করেন।
হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) তিন দিন ব্যাপী এই হজ ও ওমরাহ মেলার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মু: আ: আউয়াল হাওলাদার, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (হজ) ড. মো: মঞ্জুরুল হক,বিমান বাংলাদেশ এর পরিচালক (বিপনন) আশরাফুল আলম, হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার এবং শাহজালাল ইসলামি ব্যাংক এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হজ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ার।
পরে প্রধান অতিথি হজ ও ওমরাহ মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষ বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কী বলা হচ্ছে, তা জানার জন্য ইউক্রেনের খারকিভ শহরে মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকেন স্থানীয় বাসিন্দা পাভলো নেব্রোয়েভ।
খারকিভ থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
তিন বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে চলা রাশিয়ার হামলার ব্যাপারে আলোচনার জন্য ট্রাম্প ও পুতিন আলাস্কায় বৈঠকে বসেন।
তবে, বৈঠকে ইউক্রেন ইস্যুতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। উল্টো এই সময়ে ইউক্রেনের খারকিভে শক্তিশালী আক্রমণ চালিয়েছে রাশিয়া। অবশ্য বৈঠকের আগে থেকেই এই আয়োজনকে পুতিনের জন্য চূড়ান্ত বিজয় হিসেবে বিবেচনা করছিলেন অনেকে।
৩৮ বছর বয়সী থিয়েটার ম্যানেজার পাভলো বলেন, ‘আমি দেখলাম, প্রত্যাশা অনুযায়ীই (বৈঠকের) ফলাফল এসেছে। আমি মনে করি, এটা পুতিনের জন্য কূটনৈতিকভাবে বড় ধরনের বিজয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘তিনি (পুতিন) নিজের বৈধতা সম্পূর্ণরূপে আদায় করেছেন।’
২০২২ সালে হামলা চালানো শুরুর পর থেকে রুশ নেতাকে পশ্চিমা বিশ্বে এড়িয়ে চলার যে প্রবণতা ছিল, ট্রাম্প এবার পুতিনকে যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে সেটির অবসান হলো।
শীর্ষ বৈঠকে আমন্ত্রণ না পাওয়া ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এটাকে পুতিনের একার বিজয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
বৈঠকে ইউক্রেনকে না রাখায় নেব্রোয়েভ শুধু ক্ষুব্ধই হননি, বরং এই বৈঠককে সময়ের অপচয় মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এটা অর্থহীন একটি বৈঠক ছিল। ইউক্রেন সম্পর্কিত সমস্যাগুলো ইউক্রেনের সঙ্গে, ইউক্রেনীয়দের অংশগ্রহণে এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে সমাধান করা উচিত।’
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নে গোয়ালখালি এলাকায় বিসিকের অধিগ্রহণকৃত ৪০ একর জমির উপর নির্মিত হবে 'ভ্যাকসিন প্লান্ট'। যেখানে ঔষধের পাশাপাশি তৈরি হবে অ্যান্টিভেনম।
প্রকল্পটি গোপালগঞ্জে বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।
শনিবার সকালে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে এসে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
এসময় তিনি জমি রেজিষ্ট্রেশন সংক্রান্ত কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
উপদেষ্টা বলেন, গোপালগঞ্জে ভ্যাকসিন প্লান্ট একদম একপাশে হয়ে গেছে। ভ্যাকসিনটা যখন তৈরি হবে তখন এটা ফ্রিজিং করে সারা বাংলাদেশে পাঠাতে হবে। সেজন্য আমার এমন একটা জায়গা দরকার যেখান থেকে সহজে যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে আমরা পাঠাতে পারবো। সেক্ষেত্রে গোপালগঞ্জটা সেজন্য আমাদের জন্য উপযুক্ত হয় না।
আর এখানে যে সমস্ত টেকনোলজিস্ট, বিশেষজ্ঞ লাগবে এটা সবসময় সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। তাই এটা আমরা এখানে করার চেষ্টা করছি। এবং এখানে ৪০ একর জমি বিসিকের কাছ থেকে নিয়েছি। সে অনুযায়ী আমাদের একটা প্ল্যান্ট- এটা এখানেই হবে যাতে করে আমাদের সমস্ত ঔষধ তৈরি করতে পারি, ভ্যাকসিন আমরা এখানে তৈরি করতে পারি এবং একইসাথে আমরা চিন্তা করছি- অ্যান্টিভেনম যেটা হয়, যেটা আমাদেরকে পাশের দেশগুলো থেকে আনতে হয়। অনেক সময় সাপের ভ্যারাইটি একরকম না, কোন কোন সময় সাপের কারণে যে ভ্যাকসিনটা দেয়া হয় ওটা কখনো কাজ করে, কখনো করে না। কাজেই আমরা এখন চেষ্টা করছি- আমাদের যেহেতু অনেক সাপ আছে, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাপের বিষ এনে এখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এন্টিভেনম তৈরি করা হবে। আমাদের দেশের সাপ দিয়ে দেশেই ভ্যাকসিন-অ্যান্টিভেনম তৈরি হবে।
ভ্যাকসিন প্লান্ট নির্মাণে সময় প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এটা সিস্টেমের ব্যাপার। বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে দেশের মধ্যে উৎপাদিত প্রায় ৭০ শতাংশ ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে। কোয়ালিটিতে দেশের বাইরের তুলনায় এটি কোন অংশেই কম না। এটাকে ১০০ শতাংশে উন্নিত করতে হলে আমাদের আরও কিছু মেশিনারিজ আনতে হবে। মেশিনারিজগুলো আমরা চেষ্টা করবো যত দ্রুত আনা যায়। সবকিছু মিলিয়ে এগুলো আনতে প্রায় ৬ মাসের মত লেগে যাবে।
তিনি বলেন, জমি আমাদের নামে রেজিষ্ট্রি করে দেয়া হবে, পাশের নদী শাসন করতে হবে। এরপরে মেশিনারিজ, প্ল্যান এগুলো পাশ করাতে হবে। ধরে নেন আগামী আড়াই থেকে তিন বছর লাগতে পারে। পরে উপদেষ্টা ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ইডিসিল এর গোপালগঞ্জ প্লান্টের ভ্যাকসিন ইউনিট এবং মানিকগঞ্জ প্ল্যান্ট স্থানান্তর করে এখানে আনা হবে। এজন্য ৪০ একর জায়গার সংস্থান করা হয়েছে। এসময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা চট্টগ্রামে প্রক্রিয়াধীন এন্টি ভেনম প্ল্যান্টও এখানে স্থানান্তরের নির্দেশনা প্রদান করেন। এটি সামগ্রিক বিবেচনায় লাভজনক হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
এসময় ইডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সামাদ মৃধাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনা কমিশন থেকে জানা গেছে, ৩ হাজার ১২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ভ্যাকসিন প্লান্টটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কারখানায় ১৫ ধরনের টিকা উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্লান্টটিতে ২০২৮ সালের মধ্যে ছয় ধরনের ও ২০২৯ সালে আরও ৯ ধরনের টিকা উৎপাদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ২০৩০ সালে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
মন্তব্য