× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বিশেষ
মোহাম্মদপুরের মাদ্রাসা যেভাবে মামুনুলদের দখলে
google_news print-icon

মোহাম্মদপুরের মাদ্রাসা যেভাবে মামুনুলদের দখলে

মোহাম্মদপুরের-মাদ্রাসা-যেভাবে-মামুনুলদের-দখলে
মোহাম্মদপুরের জামি আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা। ছবি: সংগৃহীত
মাওলানা আজিজুল হকের পরিবার এই মাদ্রাসার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর সেটি ধর্মীয় উগ্রবাদীদের ঘাঁটিতে পরিণত হয়। নতুন পরিচালনা কমিটিতে আজিজুল হকের পরিবারের সদস্য ছাড়াও যুক্ত হন বিএনপির কয়েক নেতা, যাদের অনেকের বিরুদ্ধে জঙ্গি তৎপরতায় সরাসরি মদত দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

খেলাফত মজলিসের প্রতিষ্ঠাতা আজিজুল হকের দখল করা মাদ্রাসাকে ঘাঁটি বানিয়ে রাজনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছিলেন তার ছেলে মামুনুল হক। অস্ত্র নিয়ে মাদ্রাসাটি দখলের নেতৃত্বও দেন মামুনুল ও তার ভাই মাহফুজুল।

আজিজুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় একজন সাধারণ শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এরপর অধ্যক্ষ হয়েই জড়িয়ে পড়েন অনিয়মে, যে কারণে ১৯৯৯ সালে তিনি প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কৃত হন।

তবে এর দুই বছরের মধ্যে চারদলীয় জোট সরকারের আমলের শুরুতে পুলিশের উপস্থিতিতে মাদ্রাসায় হামলা করে বৈধ কমিটিকে উচ্ছেদ করে আজিজুল হকের পরিবার।

অভিযোগ রয়েছে, আজিজুল হকের পরিবার এই মাদ্রাসার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর সেটি ধর্মীয় উগ্রবাদীদের ঘাঁটিতে পরিণত হয়। নতুন পরিচালনা কমিটিতে আজিজুল হকের পরিবারের সদস্য ছাড়াও যুক্ত হন বিএনপির কয়েক নেতা, যাদের অনেকের বিরুদ্ধে জঙ্গি তৎপরতায় সরাসরি মদত দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

এই মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে আজিজুল হকের পরিবার কয়েক বছরের মধ্যে বিপুল ক্ষমতাধর হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগ সরকার এরপর ক্ষমতায় এলেও তারা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। এমনকি আওয়ামী লীগের স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে তৈরি হয় সুসম্পর্ক।

নিউজবাংলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, মামুনুল হক ও তার ভাই মাহফুজুল হক জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার ছাত্র থাকার সময়ে দুজনেই বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। মামুনুলকে উগ্রবাদী তৎপরতা এবং মাহফুজুলকে পরীক্ষায় নকলের অভিযোগে ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝিতে বহিষ্কার করা হয়। তবে আজিজুল হক প্রভাব খাটিয়ে দুই ছেলেকে আবার মাদ্রাসায় ফিরিয়ে আনেন। এখন এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের দায়িত্বে আছেন মাহফুজুল হক।

মোহাম্মদপুরের মাদ্রাসা যেভাবে মামুনুলদের দখলে
জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকেই ১৮ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয় হেফাজত নেতা মামুনুল হককে। ছবি: নিউজবাংলা

মাদ্রাসাটি যেভাবে গড়ে ওঠে

মোহাম্মদপুরে জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা নিয়ে অনুসন্ধানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি পেয়েছে নিউজবাংলা। মাদ্রাসাটির বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও কথা বলেছেন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ১৯৮৬ সালে স্থানীয় আবাসন ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী ও তার ভাই মোহাম্মদ নূর হোসেন মোহাম্মদপুরের সাতমসজিদের পশ্চিম পাশে ১৬ কাঠা জমির ওপর মাদ্রাসাটি গড়ে তোলেন। এরপর ১৯৮৮ সালের ৯ নভেম্বর ও ১৯৯২ সালের ৩ ডিসেম্বর তারা দুটি নিবন্ধিত দলিলে মাদ্রাসাটি ওয়াকফ করেন।

যৌথ মূলধনী কোম্পানি থেকে নিবন্ধন হয় মাদ্রাসার নামে। জমির মালিক ও সাধারণ মানুষের আর্থিক সহযোগিতায় পাঁচতলা ভবনে রূপ নেয় মাদ্রাসাটি। গঠন করা হয় ২১ সদস্যের পরিচালনা কমিটি, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি কমিটির মেয়াদ তিন বছর।

শায়খুল হাদিস আজিজুল হক: শিক্ষক থেকে দখলদার

জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার শুরুতেই সেখানে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন আজিজুল হক। এরপর ১৯৯২ সালে মাওলানা আলী আজগরের জায়গায় নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান তিনি।

মূল গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, জামিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় রাজনীতি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও অধ্যক্ষ হওয়ার পর আজিজুল হক সেই নিয়ম ভাঙতে শুরু করেন। রাজনৈতিক সংগঠন খেলাফত মজলিসের আমির হওয়ার সুবাদে বিএনপি সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন। এরপর নানান অভিযোগে ১৯৯৯ সালে মাদ্রাসা থেকে তাকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হয়।

তবে ২০০১ সালের ৩ নভেম্বর স্থানীয় বিএনপি ও পুলিশের সহায়তায় আজিজুল হকের পরিবারের সদস্যরা মাদ্রাসাটি দখল করেন। হামলায় নেতৃত্ব দেন মামুনুল হক ও তার ভাই মাহফুজুল হক। চারদলীয় জোটের এমপি ও আজিজুল হকের এক মেয়ের ভাশুর মুফতি শহীদুল ইসলামও ছিলেন তাদের সঙ্গে।

মাদ্রাসা দখলের পর এর প্রতিষ্ঠাতা ও সরকার অনুমোদিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের বিতাড়িত করা হয়। অনুমোদনহীন পারিবারিক কমিটির মাধ্যমে শুরু হয় একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ। অন্যদিকে, প্রকৃত পরিচালনা কমিটির সদস্যরা বিতাড়িত হওয়ার পর মূল মাদ্রাসার কয়েক শ গজ দূরে একই নামে আরেকটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেন মূল জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে বিতাড়িত অধ্যক্ষ মাওলানা হিফজুর রহমান। নতুন ওই মাদ্রাসার কার্যক্রম এখনও চলমান।

বিষয়টি নিয়ে মাওলানা হিফজুর রহমানকে ফোন করা হলে তিনি অসুস্থ উল্লেখ করে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে মাদ্রাসা দখলের দিন সেখানে উপস্থিত থাকা সাবেক এক শিক্ষক কথা বলেছেন নিউজবাংলার সঙ্গে। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘তখন বাৎসরিক ছুটি চলছিল বলে মাদ্রাসা ছিল একেবারে ফাঁকা। শুধু আমি আর সিনিয়র শিক্ষক ও তৎকালীন কমিটির সদস্য মুফতি মনসুরুল হক এবং কিছু ছাত্র ছিলাম।

‘হঠাৎ করেই বিকেলে মামুনুল হক ও মাহফুজুল হকের নেতৃত্বে কয়েক শ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী হামলা করে। তারা মাদ্রাসাজুড়ে তাণ্ডব চালায়, মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে বোমা বিস্ফোরণ করে। আমি মাদ্রাসার তৃতীয় তলার বাথরুমে ও মনসুর হুজুর একটি কক্ষে আশ্রয় নেন। তারা মাদ্রাসা দখল নেবার পর পুলিশ এসে নিরাপত্তার কথা বলে আমাদের বের করে নিয়ে যায়। বের হবার পথে লক্ষ করি মাদ্রাসার চারপাশে পুলিশ আর দুটি মাইক্রোবাস ভর্তি নানা ধরনের অস্ত্র। এরপর থেকে আমরা আর মাদ্রাসায় ঢুকতে পারিনি।’

মোহাম্মদপুরের মাদ্রাসা যেভাবে মামুনুলদের দখলে
জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় একচ্ছত্র আধিপত্য মামুনুল হক পরিবারের। ছবি: নিউজবাংলা

মাদ্রাসায় পারিবারিক পুনর্বাসন

আজিজুল হক জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষক থেকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পাওয়ার পর নিজের কর্তৃত্ব বাড়াতে বিভিন্ন অনিয়ম শুরু করেন। তখনকার সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রভাব খাটাতে শুরু করেন মাদ্রাসায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার সাবেক তিন শিক্ষক নিউজবাংলাকে জানান, আজিজুল হক অধ্যক্ষের দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই তার ছেলে মাহফুজুল হক পরীক্ষায় নকল করতে গিয়ে ধরা পড়ে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কৃত হন। পরে আবার আজিজুলের চাপেই তাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।

শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের পর মাহফুজুলের বিরুদ্ধে চারিত্রিক স্খলনের অভিযোগও ওঠে। মাদ্রাসারই আরেক শিক্ষক মাওলানা মোস্তাক আহমদ শরিয়তপুরী তার বিরুদ্ধে সমকামিতার লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। তবে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো সেই শিক্ষককেই চাকরি থেকে অব্যাহতি দেন আজিজুল হক।

আজিজুল হকের আরেক ছেলে মামুনুল হক উগ্র রাজনীতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ছাত্র থাকার সময় মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কৃত হন। সে সময় মামুনুল খেলাফত মজলিসের ঢাকা মহানগর সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। মাদ্রাসায় রাজনীতি তখনও নিষিদ্ধ থাকায় পরিচালনা কমিটির চাপে আজিজুল হক নিজেই মামুনুলসহ পাঁচ ছাত্রকে বহিষ্কারে বাধ্য হন। তবে কিছুদিন পর অন্যদের বাদ দিয়ে শুধু নিজের ছেলেকে তিনি মাদ্রাসায় ফিরিয়ে আনেন।

মাদ্রাসার সাবেক কয়েক শিক্ষক নিউজবাংলাকে জানান, আজিজুল হক কোনো নিয়ম না মেনে নিজের ছেলে ও নাতিদের নিয়োগ দিয়েছেন। এ ছাড়া, মাদ্রাসার পাঠ্যবই কেনায় অনিয়মসহ বেশ কিছু গুরুতর আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।

আদালতের নির্দেশনাও উপেক্ষিত

২০০১ সালের অক্টোবরে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার এক মাসের মধ্যে আজিজুল হক মোহাম্মদপুরের মাদ্রাসা দখলের পর মাওলানা আবদুল মালেককে প্রধান করে ৯ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি করেন।

সেই কমিটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে মামলা করে বিতাড়িত পরিচালনা কমিটি। ঢাকা জেলা জজ আদালতের সেই মামলার (নম্বর ৪১০/২০০১) রায় বিতাড়িত কমিটির বিপক্ষে যায়। আজিজুল হকের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে গেলে ২০১২ সালে হাইকোর্টও বিতাড়িত কমিটির পক্ষে রায় দেয়। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল ২০১৪ সালে আপিল বিভাগেও খারিজ হয়।

এর মধ্যে ২০১২ সালের আগস্টে আজিজুল হক মারা যান। তবে তার মৃত্যুর পর ছেলেদের নিয়ন্ত্রণেই চলছে মোহাম্মদপুরের মাদ্রাসাটি।

আদালতে মামলার মধ্যেই ২০০৩ সালে ওয়াকফ প্রশাসন থেকে নিবন্ধন পেয়ে ২০০৬ সালে ২১ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করে মাদ্রাসার বিতাড়িত কমিটি। নতুন কমিটির সভাপতি আহমদ ফজলুর রহমান জমির বৈধ কাগজের ভিত্তিতে আজিজুল হকের অবৈধ কমিটিকে উচ্ছেদ করে তাদের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে ওয়াকফ প্রশাসনে আবেদন করেন।

এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৭ সালে মাদ্রাসার অবৈধ কমিটিকে উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দেয় ওয়াকফ প্রশাসন। পরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০০৮ ও ২০০৯ সালে দুইবার জেলা প্রশাসন থেকে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হলেও তারা উচ্ছেদের কোনো পদক্ষেপ নেননি। ওয়াকফ কমিশনের এই আদেশের বিরুদ্ধেও উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছিলেন আজিজুল হক, তবে সেটিও খারিজ হয়।

আইনি এসব লড়াইয়ের বেশ কিছু নথি পেয়েছে নিউজবাংলা। ২০০৮ ও ২০০৯ সালে মাদ্রাসাটি দখলমুক্ত করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মকবুল হোসেন ও মো. কামরুজ্জামানকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তাদের বর্তমান অবস্থান চিহ্নিত করতে পারেনি নিউজবাংলা, ফলে এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

তবে মাদ্রাসার কয়েকজন সাবেক শিক্ষকের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে তখন আজিজুল হক পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সে জন্য মাদ্রাসা থেকে তাদের উচ্ছেদ করা যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর কবির নানক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো নির্দিষ্ট আলেম সমাজ নয়, সকল আলেমদের সঙ্গেই আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। আর জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসার দুই পক্ষকেই আমি সম্মান করতাম। তাদের দুই পক্ষই নানা সময়ে আমার কাছে মাদ্রাসার বিষয়টা নিয়ে এসেছিল, কিন্তু বিষয়টা নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকায় তখন আমার এ নিয়ে কথা বলার কোনো সুযোগ ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘আমার কারণে মাদ্রাসার অবৈধ কমিটির উচ্ছেদ হয়নি এ অভিযোগ ঠিক নয়। সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল ঠিকই, কিন্তু কোনো পক্ষই আমার কাছ থেকে বাড়তি সুযোগ নিতে পারেনি।’

উচ্চ আদালতে মামলার নিষ্পত্তি হওয়ার পরেও কেন বিষয়টির সুরাহা করা হয়নি, জানতে চাইলে নানক বলেন, ‘মামলার রায় হয়েছে সেটাই আমি জানতাম না, আজকেই জানলাম।’

আজিজুল হক মাদ্রাসাটি দখল করেছিলেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ করেছিলেন।’

আজিজুলের কমিটিতে বিএনপি নেতারাও

মাদ্রাসার দখল বৈধ করতে ওয়াকফ প্রশাসন থেকে নিবন্ধন নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন আজিজুল হক। এ জন্য মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য ১৯ সদস্যের একটি কমিটি করে ওয়াকফ প্রশাসনে জমা দেয়া হয়। তবে উচ্চ আদালতে রিট করে সেই কমিটিতে স্থগিতাদেশ পায় মাদ্রাসার বৈধ কমিটি।

আজিজুল হকের করা ১৯ সদস্যের কমিটির প্রথমেই ছিল তার নিজের নাম। এ ছাড়া, আজিজুল হকের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন তার মেয়ের জামাই মাওলানা গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, দুই ছেলে মাহফুজুল হক ও মামুনুল হক, নাতি দেলোয়ার হোসেন ও আরও তিন আত্মীয়।

নড়াইল-২ আসন থেকে ২০০২ সালের উপ-নির্বাচনে বিজয়ী খেলাফত মজলিসের এমপি মুফতি শহীদুল ইসলাম ও তার প্রতিষ্ঠিত মারকাজুল ইসলামের প্রধান কর্মকর্তা মাওলানা সাঈদ নূর ছিলেন এই কমিটির সদস্য।

এই শহীদুল ইসলাম আল্লামা আজিজুল হকের এক মেয়ের ভাশুর। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে দুবাই থেকে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদকে সংগঠিত করার অভিযোগ রয়েছে।

আজিজুল হকের করা মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিতে ছিলেন কিশোরগঞ্জের বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী হাজি সিদ্দিক মিয়া। এ ছাড়া, টুঙ্গিপাড়া থেকে ২০০১ সালে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপি নেতা মাওলানা মো. ওমরসহ মাওলানা মো. মহিউদ্দিন মোল্লা নামে আরও একজন নেতা ছিলেন সেই কমিটিতে।

মাদ্রাসার আড়ালে উগ্রবাদী কার্যক্রম

মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় আজিজুল হকের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পর সেটি উগ্রবাদী গোষ্ঠীর সংগঠিত হওয়ার অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হয় বলে প্রমাণ পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশিদ ডিসি হারুন রোববার সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামুনুল হকের আপন ভগ্নিপতি মুফতি নিয়ামতউল্লাহ ১৫-২০ বছর পাকিস্তানে ছিলেন। সেখান থেকে এসে জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরুর পর তার সঙ্গে মামুনুলের বোনের বিয়ে হয়। এই নিয়ামতউল্লার সঙ্গে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অন্যতম আসামি মাওলানা তাজউদ্দিনের বন্ধুত্ব ছিল।’

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার পর নিয়ামতউল্লাহকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার করে। কিন্তু আজিজুল হক তখন সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে ছাড়িয়ে আনেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রধান আসমি হুজি নেতা মুফতি হান্নানেরও যাতায়াত ছিল ওই মাদ্রাসায়।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ২০০৫ সালের দিকে নিয়ামতউল্লার সঙ্গে মামুনুলও ৪০ দিন পাকিস্তানে ছিলেন। সেখানকার একটি ধর্মীয় সংগঠনকে তারা মডেল হিসেবে গ্রহণ করে তা বাংলাদেশের ছড়িয়ে দেয়ার কাজ শুরু করেন। আর এসব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র ছিল মোহাম্মদপুরের দখল করা মাদ্রাসাটি।

মাদ্রাসাটি দখলের পরই যে মাওলানা আবদুল মালেককে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক বানানো হয়েছিল, তার ছেলে হাফেজ মাওলানা আবু তাহের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম আসামি।

মাদ্রাসা দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার বর্তমান অধ্যক্ষ মাহফুজুল হকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছে নিউজবাংলা। তবে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি, ক্ষুদেবার্তারও সাড়া দেননি।

ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আদালতের রায় পাওয়ার পরও আজিজুল হকের পরিবার মাদ্রাসাটি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। আমরা মূল কমিটির কাছ থেকে অভিযোগ পেলে তাদের উচ্ছেদে অবশ্যই সাহায্য করব।’

আরও পড়ুন:
ডিআইজির ফোনে বায়তুল মোকাররমে যাই: মামুনুল
দ্বিতীয় দফায় রিমান্ডে মামুনুল
মামুনুলকে আবার রিমান্ডে চায় পুলিশ
পাকিস্তানি জঙ্গিদের সঙ্গে মামুনুলের যোগাযোগ: পুলিশ  
মামুনুলের রিসোর্ট-কাণ্ড: ঝর্ণার বাবা ডিবির হাতে

আরও পড়ুন

বিশেষ
The Fisheries Departments premises held a meeting meeting to keep hundreds of tobacco free

মৎস্য অধিদপ্তরের প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

মৎস্য অধিদপ্তরের প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

অধূমপায়ীদের সুরক্ষা এবং তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় মৎস্য অধিদপ্তরের অফিস প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে তামাক বিরোধী সংগঠন তাবিনাজ (তামাক বিরোধী নারী জোট)। সভাটি আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আব্দুর রউফ। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (প্রশাসন), পরিচালক (অভ্যন্তরীণ মৎস্য), প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, উপপরিচালক, সিনিয়র সহকারী পরিচালক, সহকারী পরিচালক ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাসহ প্রায় ৪০ জন কর্মকর্তা।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আতাউর রহমান মাসুদ। তিনি তামাকজাত দ্রব্যের ভয়াবহ ক্ষতিকর দিক এবং এর বহুমুখী প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তাবিনাজের পরিচালক সীমা দাস সীমু তার বক্তব্যে ধোঁয়ামুক্ত ও ধোঁয়াযুক্ত তামাকজাত দ্রব্য এবং গবেষণালব্ধ তথ্য তুলে ধরেন। তাবিনাজ কর্মী শারমিন কবীর বীণা গ্রামীণ তামাক চাষ ও এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোকপাত করেন।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা অফিস প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ও কর্মপরিকল্পনা দেন।

সুপারিশসমূহ:
১. অফিস প্রাঙ্গণে ধূমপানের জন্য কোনো স্মোকিং জোন থাকবে না।
২. ক্যান্টিনে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হবে।
৩. দেশব্যাপী মৎস্য অধিদপ্তরের সকল অফিস প্রাঙ্গণকে শতভাগ তামাকমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
৪. সকল অফিস প্রাঙ্গণে ‘তামাকমুক্ত এলাকা’ লেখা সম্বলিত সাইনেজ প্রতিস্থাপন করা হবে।
সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা তামাকমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার প্রয়াসে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন।

মন্তব্য

বিশেষ
National University Vice Chancellor is working to build skilled human resources to address challenges

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ গড়তে কাজ করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়: উপাচার্য

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ গড়তে কাজ করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়: উপাচার্য

অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে স্নাতকে (অনার্স) তথ্য প্রযুক্তি ও ইংরেজি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

আধুনিক পাঠ্যক্রম প্রণয়নের পাশাপাশি তা বাস্তবায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজে গতকাল বুধবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের এটুআই প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ এসব কথা বলেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষাক্রমের আইসিটি বিষয়ের ‘টিচিং, লার্নিং অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট স্ট্র্যাটেজি’ শীর্ষক এ কর্মশালার প্রথম সেশনে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক মো. রশিদুল মান্নাফ কবীর।

উপাচার্য বলেন, কলেজগুলোতে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষাদানে শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যা রয়েছে। এ বিষয়ে সহায়তার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সব টেকনিক্যাল কলেজ ও কম্পিউটার কাউন্সিলের সাথে আলোচনা করছে।

তিনি আরও বলেন, দেশের কলেজ শিক্ষার্থীদের মেধার ঘাটতি নেই। সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে তারা সহজেই তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে উঠবে।

শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক, সময়োপযোগী ও কর্মমুখী তথ্য প্রযুক্তি পাঠ্যক্রম প্রণয়নে সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম ও শিক্ষাবিদদের প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ।

কর্মশালার দ্বিতীয় সেশনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম।

দিনব্যাপী এ কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন কলেজের ৮টি বিভাগের ৪০ জন তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ড. নাজমা তারা এবং মির্জা মোহাম্মদ দিদারুল আনাম।

এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বিশেষ
The Meeting of the Advisory Council held

উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত

উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মন্তব্য

বিশেষ
Courtesy of the Director General of the Pakistan Civil Aviation Authority with the Baby Chairman

বেবিচক চেয়ারম্যানের সাথে পাকিস্তান সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ

বেবিচক চেয়ারম্যানের সাথে পাকিস্তান সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ

আজ ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ দুপুর ১২টায় বেবিচক সদরদপ্তরে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক, বিএসপি, জিইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, এসিএসসি, পিএসসি (Air Vice Marshal Md Mostafa Mahmood Siddiq, BSP, GUP, ndc, afwc, acsc, psc) এর সাথে পাকিস্তান সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মহাপরিচালক জনাব নাদির শাফি দার (Mr. Nadir Shafi Dar) এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল পুনঃস্থাপন বিষয়ে ফলপ্রসূ মতবিনিময় হয় এবং উভয় পক্ষই এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বৈঠকে ভবিষ্যতে বিমান চলাচল খাতে প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো আরও সুদৃঢ় করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

উভয় পক্ষ আশা প্রকাশ করেন যে, বিমান চলাচল পুনঃস্থাপন হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, পর্যটন ও জনগণের পারস্পরিক যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বেবিচক এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং PIA এর CEO ।

মন্তব্য

বিশেষ
Meeting seven political parties with the chief adviser

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাত রাজনৈতিক দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাত রাজনৈতিক দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বিকেল ৫টায় সাতটি রাজনৈতিক দল ও একটি সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বৈঠকে অংশ নেন- এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় গণফ্রন্ট এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

এরআগে গত রোববার প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি’র সঙ্গে বৈঠক করেন।

ধারাবাহিক এই বৈঠক আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মন্তব্য

বিশেষ
International Crimes Tribunal 1 may be formed Law Advisor

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-৩ গঠন করা হতে পারে: আইন উপদেষ্টা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-৩ গঠন করা হতে পারে: আইন উপদেষ্টা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-৩ গঠন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

আজ সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ভবন ও সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

এ সময় আইন উপদেষ্টা বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। বিগত সরকারের হত্যা, গুম, নির্যাতনসহ সব ধরনের অপরাধের বিচারের বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন সংলগ্ন টিনশেড ভবন খালি হয়ে গেলে আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-৩ গঠন করতে পারি। এটি করা গেলে গুমসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার কাজ দ্রুত করা যাবে।

তিনি আরো বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে বেশ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন আমাদের বিচারকসহ প্রসিকিউশন ও তদন্ত টিম।

আইন উপদেষ্টা বলেন, দেশের ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে আমাদের যে ন্যায়বিচার আছে, আইনের শাসন আছে ও মানবাধিকার আছে এটাকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বার্থে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এক হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতাকে হত্যা এবং হাজারও মানুষকে পঙ্গু করার ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার অপরিহার্য-অনিবার্য। সেই বিচারকার্যের প্রথম থেকেই আমরা অবিচল আছি। বিচারের যে গতি আছে সেটা নিয়েও আমরা সন্তুষ্ট আছি।

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন আজ পরিদর্শন করেন। এসময় তাদের সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অপর প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।

মন্তব্য

বিশেষ
People will play a key role in the free and fair and participatory elections Home Advisor

অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণই মুখ্য ভূমিকা রাখবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণই মুখ্য ভূমিকা রাখবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণই মুখ্য ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

উপদেষ্টা আজ সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।

মতবিনিময় সভায় সিলেট বিভাগের সকল জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), আনসার-ভিডিপি, কারা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সিলেট জেলার বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

উপদেষ্টা বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শুধু নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়, মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণ যেন নির্ভয়ে নির্বাচন কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করতে পারে সেরকম পরিবেশ তৈরি করতে প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে একযোগে কাজ করতে হবে। সকলের সহযোগিতায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভবপর হবে।

পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োগ ও পদায়ন সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, এবার বিভিন্ন বাহিনীর নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পদায়ন অনেক স্বচ্ছ হয়েছে। তাই সবাইকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মাদককে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য অন্যতম হুমকি উল্লেখ করে তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতি জিরো টলারেন্স দেখানোর নির্দেশনা দেন। এছাড়া পরিবেশ রক্ষায় সিলেটের পাথরখেকোদের বিরুদ্ধে সবসময় সজাগ থাকার কথা বলেন।

দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব তুলে ধরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, কৃষকরাই এদেশের খাদ্য নিরাপত্তার মূল কারিগর। তাই উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষকেরা যেন তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। উপদেষ্টা এসময় পতিত কৃষিজমিগুলো আবাদের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।

সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাবৃন্দ সিলেটের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও এর চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বিভিন্ন মতামত প্রদান করেন। উপদেষ্টা সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌক্তিক পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। মতবিনিময় সভা শেষে উপদেষ্টা উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।

উপদেষ্টা এর আগে বিজিবি'র সিলেট সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স এবং সিলেট পুলিশ লাইন পরিদর্শন করেন।

মন্তব্য

p
উপরে