মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের পর রাতে তেজগাঁও থানায় বিবস্ত্র করে বেদম মারধরের অভিযোগ করে ফেসবুক লাইভে এসেছেন যুক্তরাজ্যপ্রবাসী এক বিএনপি নেতা শামীম আহমেদ। তিনি বিএনপির বরগুনা কমিটিতেও আছেন।
তার দাবি, থানায় মারধরের এক পর্যায়ে হেফাজত নেতা রোজার মধ্যেই পানি খেতে চান।
তবে আদালতে তোলার পর মামুনুল বা তার আইনজীবীরা এমন কোনো অভিযোগ করেননি। বরং হেফাজত নেতা বলেছেন, তাকে যে পরিবেশে রাখা হয়েছে, সেটি ইবাদত করার জন্য উপযুক্ত নয়। তাকে যেন ইবাদত করার মতো পরিবেশে রাখা হয়।
গত কয়েক বছর ধরে ক্রমাগত উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে আইন ভঙ্গ করতে সমর্থকদের উদ্বুদ্ধ করা হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিবকে গত ১৮ এপ্রিল দুপুরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও এর উপকমিশনারের কার্যালয়ে নেয়া হলেও পরে রাখা হয় তেজগাঁও থানায়।
ওই রাতে থানা থেকে তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে নেয়া হয়। রাতে সেখানে অবস্থান করার পরদিন তোলা হয় আদালতে।
এর মধ্যে ফেসবুক লাইভে এসে মামুনুলকে থানায় বেদম মারধরের অভিযোগ করেন শামীম আহমেদ। তিনি দাবি করেন, সেখানে মোট পাঁচ জন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। এদের মধ্যে চার জন মামুনুলকে মারধর করেছেন। আর তাকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছেন অপর এক জন। এই ঘটনার প্রতিবাদে তিনি ঈদের পর চাকরি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আদালতে পুলিশের রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করা আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেসবাহ নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, মামুনুল হক তাদের কাছে নির্যাতনের কোনো অভিযোগ করেনি। তাই তারা আদালতেও এ নিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি।
হেফাজত নেতার আইনজীবী বলেন, ‘আমাদের কাছে এ রকম (নির্যাতন) কোনো অভিযোগ নাই! আর এ বিষয়ে আমরা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করি নাই। যদি নির্যাতন বিষয়ে তথ্য প্রমাণসহ কিছু পাই, সে বিষয়ে তখন দেখা যাবে।’
কে এই শামীম
তিনি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাড়িটানা গ্রামের আবদুল জব্বার মুন্সির ছেলে।
পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা এলাকার একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও আলিম পাস করার পর ভর্তি হন ঢাকার গেন্ডারিয়া নেছারিয়া মাদ্রাসায়। এখান থেকে পাস করেন ফাজিল।
আবদুল জব্বার মুন্সির তিন ছেলের মধ্যে শামীম দ্বিতীয়। বড় ভাই শাহ আলম শাহীন যুক্তরাজ্যে থাকেন, ছোটভাই শাহ জালাল সাইমুন এলাকা ইট বালু সিমেন্ট ব্যবসা করেন।
২০১০ সালের শুরুর দিকে পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নে বিয়ে করেন শামীম। ওই বছরই ব্যবসা পরিচলানার জন্য ২০১০ সালে শামিমকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যান বড় ভাই শাহীন। পরে দুই বছরের মধ্যে বড় ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্কেও অবনতি ঘটে আর আলাদা হয়ে যান তিনি।
বিদেশে যাওয়ার ১১ বছরেও এলাকায় ফেরেননি শামীম। ১০ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান নিয়ে চরদুয়ানী এলাকায় বাবার বাড়ি থাকেন তার স্ত্রী।
রাজনৈতিক পরিচয়
বিদেশে অবস্থান করলেও ২০১৭ সালে বরগুনা জেলা বিএনপির কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ দেয়া হয় শামীমকে। তিনি বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ওলামা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা। তিনি যুক্তরাজ্য ওলামা দলের সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন।
তিনি বিএনপি করলেও তার বাবা জব্বার মুন্সি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুসারী হিসেবে স্থানীয়ভাবে পরিচিত। তিনি নিউজবাংলাকে জানান, ১৯৬৩ সালে বরিশাল বিএম কলেজে পড়ার সময় তৎকালীন ছাত্র সংসদের সহ সভাপতি (ভিপি) আমির হোসেন আমুর অনুসারী ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত তিন মেয়াদে তিনি পাথরঘাটা সদর ইউয়িনের রিলিফ কমিটি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। একই সময়ে উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন।
২০০৮ সালে হজ পালনে যাওয়ার আগে দলীয় সকল পদ পদবী থেকে অব্যহতি নেন শামীমের বাবা। বর্তমানে তিনি পাথরঘাটা পৌরশহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডে বসবাস করেন।
ছেলে মওলানা শামীমের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে জব্বার মুন্সি বলেন, ‘গোবরে পদ্মফুল হয়, আর আমার হয়েছে পদ্মফুলে গোবর।’
মামুনুলকে নিয়ে ভিডিও সম্পর্কে জানেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি দেখিনি, তবে শুনেছি হেফাজত নেতা মামুনুল হকের রিমান্ড নিয়ে নগ্ন করে নির্যাতন ও কোরআন বাথরুমে ফেলে দেয়া হয়েছে- এ রকম কথাবার্তা বলেছে।
‘সে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে সরকারবিরোধী আপত্তিকর নানা ধরনের কথা বলেছে, যা আমি লোকমুখে শুনেছি। শামীমের কর্মকাণ্ডে আমি বাবা হিসেবে লজ্জিত, আমার পরিবার বিব্রত।’
জেলা বিএনপির সভাপতি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা যা বলছেন
মওলানা শামীমের বিষয়ে কথা হয় জেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লার সঙ্গে। লাইভে এসব বক্তব্য ছড়ানোর অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে ফেসবুক লাইভে বিতর্কিত কথাবার্তা বলেছে শামীম, যা আমরা শুনেছি। গ্রেপ্তার হেফাজত নেতা মামুনুল হককে নিয়ে সম্প্রতি শামীমের ফেসবুক লাইভটি আমি দেখিনি। যেহেতু সে লন্ডন প্রবাসে, তার ব্যবারে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’
পাথরঘাটা উপেজলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাবির হোসেন বলেন, ‘২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনা নিয়ে গুজব ছড়ানোর পর আমি জানতে পারি সেই শামীম বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। সেখানে থেকে শামীম প্রায়ই বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে লাইভ বক্তব্য দিয়ে আসছেন।
‘সম্প্রতি মামুনুল হক ইস্যুতে সে বেশ কয়েকবার লাইভে সরকারবিরোধী উসকানিমূলক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে গুজব ছড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। লন্ডনে থাকায় আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারিনি।’
অনলাইনে সক্রিয়
ফেসবুকে Mowlana Shamim নামে অ্যাকাউন্ট আছে বিএনপি নেতার। সেখানে যুক্ত আছেন আড়াই হাজারের বেশি ফ্রেন্ড।
নিজের পরিচিতিতে তিনি দলীয় পরিচয় লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দল যুগ্ম আহবায়ক কেন্দ্রীয় কমিটি’ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বরগুনা জেলা বিএনপি।’
Junayet Ahmed নামের একটি ফেসবুক পেইজ পেইজ থেকে সোমবার ১১.৫৫ মিনিটে ৩২ মিনিট ৫১ সেকেন্ড লাইভ করেন মওলানা শামীম।
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মামনুল হককে উলঙ্গ করে নির্যাতন করছে ও পবিত্র কোরআন টয়লেটে ফেলে দিয়েছে।
লাইভটি হেফাজত ও বিএনপি সমর্থিত বিভিন্ন পেইজে শেয়ার দেয়া রয়েছে। একইসাথে ইউটিউবের bd sk media নামের একটি চ্যানলে লাইভ প্রচার হয়।
এর আগে ১৮ এপ্রিল তিনি নিজের ফেসবুক প্রফাইল থেকে লাইভে সরকার পতনের হুমকি দেন। ২৮ মার্চ মওলানা শামীম প্রোফাইল থেকে আপলোড করা একটি ভিডিওতে ‘শেখ মুজিবের বাপের নাম’ হরে কৃষ্ণ হরে রাম, শেখ হাসিনার বাপের নাম হরে কৃষ্ণ হরে রাম’ এ রকম স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এর বাইরেও তিনি একাধিকবার লাইভে সরকার, আওয়ামী লীগ, ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিরুদ্ধে নানা রকম উসকানিমূলক কথাবার্তা ছড়িয়েছেন।
মওলানা শামীমের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বরটি তার বাবা জব্বার মুন্সি দিতে পারেননি। ফেসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠালেও তিনি গ্রহণ করেননি। কমেন্টে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।
আরও পড়ুন:দীর্ঘ ২৩ বছর পর ২ জুলাই বুধবার সকাল ১০ টায় পটুয়াখালী ব্যায়ামাগার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি পটুয়াখালী জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। এ সম্মেলন সফল করতে জোরে সোরে চলছে সকল ধরনের প্রচার- প্রচারণা ও প্রস্তুতি।
উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান, সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নু, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন, সহ- প্রচার সম্পাদক মোঃ আসাদুল কবির শাহীন, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাসান মামুন, সদস্য মাওলানা শাহ নেছারুল হক, সদস্য ইঞ্জিঃ একেএম ফারুক আহমেদ তালুকদার, সদস্য মোঃ দুলাল হোসেন। সভাপতিত্ব করবেন পটুয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়া ও সঞ্চালনা করবেন সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি।
এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নসহ তৃণমূল বিএনপির নেতা- কর্মীদের মাঝে এক ধরনের চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হচ্ছে। এ সম্মেলনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৩০ জনসহ ৮টি উপজেলা ও ৫টি পৌরসভার প্রায় ১৪০০ জন কাউন্সিলর উপস্থিত থাকার কথা বলেছেন জেলা বিএনপির সদস্য মোঃ সিদ্দিকুর রহমান। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন (কমিটি নির্বাচন) বিকেলে পটুয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয়েছে বলে জেলা বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এ তিনটি শীর্ষ পদে এক ডজন প্রার্থীর নাম নেতা-কর্মীদের মুখে চাউর হচ্ছে। এ তিনটি পদের মধ্যে সভাপতি পদে যাদের নাম উঠেছে, তারা হলেন বর্তমান জেলা বিএনপি কমিটির আহবায়ক আলহাজ্ব আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়া, সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি ও অন্যতম সদস্য মাকসুদ আহমেদ বায়জীদ পান্না মিয়া।
সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পিপি এ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান টোটন, সদস্য মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান নান্নু, জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ্যাডঃ মোহসীন উদ্দীন, জেলা বিএনপির সদস্য জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি বশির আহমেদ মৃধা, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোঃ মনিরুল ইসলাম লিটন ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ তৌফিক আলী খান কবির।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জেলা বিএনপির সদস্য জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার ইমাম হোসেন নাসির, সাবেক জিএস আলমগীর হোসেন বাচ্চু, জেলা মৎস্য দলের সভাপতি ভিপি শাহীন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মশিউর রহমান মিলন ও জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক এ্যাডঃ মাকসুদুর রহমান মাকসুদ।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। এ সম্মেলনে এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) আলতাফ হোসেন চৌধুরী সভাপতি ও স্নেহাংশু সরকার কুট্টি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তীতে মেয়াদউত্তীর্ন হওয়ায় কমিটি বিলুপ্ত করে ২০২০ সালের ২ নভেম্বর আলহাজ্ব আব্দুর রশিদ চুন্নু মিয়াকে আহ্বায়ক এবং স্নেহাংশু সরকার কুট্টিকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এন নাসির উদ্দীনের বৈঠকের পর বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময়সূচি ঘোষণার প্রত্যাশা করছে বলে জানিয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচনের দিন নির্ধারণ ও সময়সূচি ঘোষণায় জনগণের প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হবে।’
শনিবার (২৮ জুন) চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন রিজভী।
প্রধান উপদেষ্টা ও সিইসির বৈঠকের পর বিএনপি কি নির্দিষ্ট নির্বাচনের তারিখ প্রত্যাশা করে—এমন প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, ‘আমরা নিশ্চয়ই তা আশা করি।’
এর আগে বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সিইসি নাসির উদ্দীন। বৈঠকটি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত হয়।
রিজভী বলেন, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে জনগণের প্রত্যাশা ও আলোচনার বিষয়টি বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলো বিশ্বাস করে, অধ্যাপক ইউনূস ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের কল্যাণ ও গণতন্ত্রের স্বার্থেই কাজ করবেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, তারাও বিশ্বাস করেন যে, প্রধান উপদেষ্টা একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, যাতে জনগণ তাদের জবাবদিহিমূলক প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে।
বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি ও সামাজিক সংকট রয়েছে। মব কালচার আছে। এসব থেকে মুক্ত হতে হবে। গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে হবে। গত বছরেও আমাদের প্রবৃদ্ধি ছিল ৪.২। এবার সেটি হয়েছে ৩.৯। আমরা সরকারকে সেটি দেখার জন্য বলব। আমরা তো সমালোচনা করবই। অবশ্যই যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। আমরা প্রত্যাশা করি— নির্বাচন কমিশন দ্রুত একটি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত অগণতান্ত্রিক সরকার দেশের অর্থ লোপাট করেছে। দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে— যার অন্যতম নির্বাচন কমিশন ও মিডিয়া। তারা কখনও প্রকৃত গণতন্ত্র চায়নি। জনগণ মনে করে, ড. ইউনূস দেশবাসীর মনের প্রত্যাশা মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন।’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অপরাধী যত বড়ই হোক, ‘মব জাস্টিস’ বা জনতার উচ্ছৃঙ্খল বিচার সমর্থনযোগ্য নয়।
তিনি বলেছেন, ‘গত তিনটি নির্বাচন ছিল শেখ হাসিনার একক নাটকীয় নির্বাচন। এসব নির্বাচনের সময়কার সকল নির্বাচন কমিশনারই ফ্যাসিবাদের অংশ। তবে তারা যত বড় অপরাধীই হোক, বিচার হতে হবে আইনের মাধ্যমেই, মব জাস্টিসের মাধ্যমে নয়। মব জাস্টিস সমর্থনযোগ্য নয়।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হচ্ছে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা এবং মব জাস্টিসের মতো অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করা।
মব জাস্টিসের সাথে দলের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি প্রশ্ন রাখেন, আদালতে পুলিশের উপস্থিতিতে কীভাবে আসামিরা হেনস্তা হন?
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা আরও বলেন, ভোটারবিহীন নির্বাচনের জন্য সাবেক তিন সিইসি দায়ী থাকলেও আইনসম্মতভাবেই তাদের অপরাধের বিচার চায় বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অভিযোগ করেন, দেশে আবারও করোনার ভয়াবহতা বাড়ছে, কিন্তু সরকার কোনে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। একইভাবে ডেঙ্গু পরিস্থিতিও অবনতির দিকে যাচ্ছে। তিনি দ্রুত স্বাস্থ্য খাতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এসময় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া,নির্বাহী কমিটির সদস্য তকদির হোসেন মোহাম্মদ জসিম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি খালেদ মাহমুদ হোসেন শ্যামল,সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ,সহ-সভাপতি কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ, যুগ্ম-সাধারণ বেলাল উদ্দীন সরকার তুহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সুবিধাজনক সময়ে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে দেশটির কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)।
সোমবার (২৩ জুন) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক বৈঠকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির পলিটব্যুরো সদস্য ও জাতীয় গণকংগ্রেস স্থায়ী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান লি হংঝং।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
লি হংঝং ও অন্যান্য সিনিয়র সিপিসি নেতাদের সঙ্গে বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে এই বৈঠক হয়। বৈঠকের শুরুতে সিপিসি নেতারা বিএনপি প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান।
শায়রুল কবির খান বলেন, ‘বৈঠককালে লি হংঝং আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ভবিষ্যতে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।’
তিনি বলেন, সিপিসি নেতারা আশা করেন যে, এই বৈঠক চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
তারা সিপিসি ও বিএনপির মধ্যে নিয়মিত আলোচনা এবং অব্যাহত সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দিয়েছেন বলে জানান শায়রুল কবির।
তিনি বলেন, আঞ্চলিক রাজনীতিতে চীনের নেতৃত্বের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। চীন বৃহত্তর বহুপক্ষীয় সহযোগিতার মাধ্যমে তার ইতিবাচক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব।
এর আগে, দিনের শুরুতে বিএনপির প্রতিনিধিদল চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন এবং তারা অবকাঠামো উন্নয়নে চীনের কাজ সম্পর্কে জানতে পারেন।
এই সফরকে বিএনপি ও সিপিসির মধ্যে শক্তিশালী রাজনৈতিক সম্পর্কের লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে, উভয় দল ভবিষ্যতে আরও সহযোগিতার আশা করছে।
এর আগে রবিবার রাতে সিপিসির আমন্ত্রণে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের বিএনপির প্রতিনিধিদল পাঁচ দিনের সফরে চীনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করে।
তারা বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (বেইজিং সময়) ভোর ৫টা ২৫ মিনিটে পৌঁছান।
বিএনপির প্রতিনিধি দলের অন্য আট সদস্য হলেন—স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরউদ্দিন স্বপন, ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, দলের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ড. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তাদের দল গণপিটুনির সংস্কৃতিকে সমর্থন করে না। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার গণপিটুটির ঘটনায় তাদের কোনো কর্মী জড়িত থাকলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার (২৩ জুন) তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা গণপিটুনির সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করি না, আমরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলসভাবে সংগ্রাম করে আসছি। আমরা চাই দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক।’
সালাহউদ্দিন বলেন, বিএনপি চায় স্বচ্ছতার সঙ্গে আদালতের রায় বাস্তবায়ন হোক। নূরুল হুদার গ্রেপ্তার ও বিচারের ক্ষেত্রে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া আশাও করে তার দল।
তিনি বলে, ‘কিন্তু আমরা তার উপর যে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে—তা সমর্থন করি না। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। যদি বিএনপির কোনো নেতা বা কর্মী এতে জড়িত থাকে—তাহলে আমরা তদন্তের পর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব...এটি আমাদের স্পষ্ট অবস্থান।’
সালাহউদ্দিন বলেন, বিএনপি চায় প্রতিটি ব্যক্তি, সে যত গুরুতর অপরাধীই হোক না কেন, তিনি তার আইনি ও সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করুক। ‘সে যত বড় অপরাধীই হোক না কেন, তার আইনি ও সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করা উচিত নয়।’
রবিবার(২৩ জুন) রাতে সাবেক সিইসি নুরুল হুদাকে রাজধানীর উত্তরার বাসভবনে একদল জনতা তাকে আক্রমণ করার পর গ্রেপ্তার করা হয়। নুরুল হুদার কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, হুদা সাদা টি-শার্ট এবং লুঙ্গি পরে ছিলেন এবং তার গলায় জুতার মালা ছিল। এক পর্যায়ে একজন ব্যক্তি জুতা দিয়ে হুদার মুখে আঘাত করেন। ভিডিওটি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে দুর্বল করার জন্য হুদার ভূমিকার সমালোচনা করে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘নুরুল হুদা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস এবং নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করার জন্য দায়ী কয়েকজন ব্যক্তির মধ্যে তিনি একজন।’
সালাহউদ্দীন বলেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনকে দীর্ঘায়িত করার জন্য তিনিসহ আরও বেশ কয়েকজন ব্যক্তি রাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে সম্পূর্ণরূপে দুর্নীতিগ্রস্ত এবং ধ্বংসের জন্য দায়ী।
তিনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের মতো আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্নীতিগ্রস্ত এবং ভেঙে ফেলার জন্যও দায়ী। ‘কিন্তু আমরা এই ধরনের বিষাক্ত সংস্কৃতি বা জনতার বিচারে বিশ্বাস করি না,’ বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে আয়োজিত এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ চৌধুরী টুকু।
গণতন্ত্র মঞ্চ লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের ফেইসবুক পেইজে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
কোনো এক ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় সর্বোচ্চ দশ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা উচিত না বলে মনে করে জামায়াতে ইসলামী। রবিবার (২২জুন) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে এমন কথা বলেন দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
তিনি বলেন, ‘বার ও মেয়াদ নিয়ে ঝামেলার মধ্যে প্রস্তাব করেছিলাম—একজন ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় সর্বোচ্চ দশ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রীর দায়্ত্বি পালন করতে পারবেন না।’
এ বিষয়ে সবাইকে একমত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বার ও মেয়াদের ব্যাখ্যায় যাওয়ার দরকার নেই। তিনটি দল ছাড়া সবাই এই প্রশ্নে এক জায়গায় এসেছি।’
‘অর্থাৎ একজন ব্যক্তি তার জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, সেটা যত বারই হোক। এটা জাতির আকাঙ্ক্ষা, আমি মনে করি। এটিই আমাদের সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে, বলেন জামায়াতের এই নায়েবে আমির।
তিনি বলেন, ‘এমন নজির বহুদেশে আছে। এটা বাংলাদেশেও জরুরি বলে আমরা মনে করি। এ নিয়ে আমরা প্রায় ঐকমত্যে এসেছি। বিকালে আরও দুটো পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা হবে।’
বৈঠকে আলী রীয়াজ ছাড়াও আরও উপস্থিত রয়েছেন, ঐকমত্য কমিশনের সদস্য জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান।
এরআগে গেল ১৭ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের অসমাপ্ত আলোচনায় অংশ নেয়নি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগের পর পরেরদিন অবশ্য অংশ নিয়েছিল তারা।
এদিকে সংসদের উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো এখনো কাছাকাছি আসতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতেই এনসিসি গঠনের কথা বলা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি এবং সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন নিয়েও দলগুলোর ঐকমত্য হয়নি গত সপ্তাহে হওয়া চার দিনের সংলাপে। এ পর্যায়ে ঐকমত্যের সংজ্ঞা নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতানৈক্য প্রকাশ পেয়েছে। কমিশন এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার কথাও ভাবছে।
মন্তব্য