বহুল আলোচিত রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলার আপিল শুনানির জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক তৈরি হয়েছে। তবে সাত বছরেও শেষ হয়নি এ মামলার আপিল।
সাক্ষ্যপ্রমাণ শুনানি শেষে মামলাটি একসময় যুক্তিতর্কের পর্যায়ে গেলেও শেষ পরিণতি পায়নি। ফলে মামলাটি এখনও হাইকোর্টে শুনানির পর্যায়ে রয়ে গেছে।
কয়েক দফা বেঞ্চ পরিবর্তন এবং মামলাটি শেষ করতে উভয়পক্ষের আইনজীবীদের আগ্রহের অভাবকেই দায়ী করছেন মামলার সংশ্লিষ্টরা। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দাবি করেছেন, চলতি বছরের মধ্যেই হাইকোর্টে আপিল শুনানি শেষ হবে। এ জন্য আগামী ৩০ মে মামলার শুনানির জন্য দিন ঠিক করা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েক দফা আদালত পরিবর্তন। এরপর আবার নতুন করে আদালত নির্ধারণ। আইনজীবীদের প্রস্তুতির জন্য সময় লাগছে।
‘করোনা সংক্রমণ কমে এলে এবং নিয়মিত আদালত চালু হলে আশা করি চলতি বছরের মধ্যে মামলাটি শেষ হবে। আগামী ৩০ মে মামলার শুনানির জন্য দিন ঠিক রয়েছে। আশা করছি সব ঠিক থাকলে ওই দিন বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চে মামলাটি শুনানি শুরু হবে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আমাদের সম্পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে। আশা করছি চলতি বছরের মধ্যেই মামলাটি শেষ হবে। রায়ে সর্বোচ্চ সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের দণ্ড বহাল থাকবে।’
২০১৭ সালের ৮ জানুয়ারি বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চে মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়। এরপর ওই বছরের ১৪ মার্চ চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ঠিক করা হয়। কিন্তু এরপর আর এগোয়নি মামলাটি।
পরে আদালত মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেয়। এরপর দীর্ঘদিন পর প্রধান বিচারপতির নির্দেশে আলাদা আরেকটি বেঞ্চে দেওয়া হয়। ওই বেঞ্চের বিচারক পরিবর্তন হওয়ায় সেখানেও শুনানি হয়নি।
এভাবে কয়েক দফা আদালতের বেঞ্চ পরিবর্তন, বিচারক পরিবর্তন হয়ে অবশেষে বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়।
রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার রায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঘোষণা করেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমিন।
রায়ে নিষিদ্ধঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, বিএনপি নেতা ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনসহ আট জনের ফাঁসি ও ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেয় আদালত।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়। অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেয় আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামিরা।
মুফতি হান্নান ছাড়াও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন মাওলানা তাজউদ্দিন, মওলানা আকবর হোসেন, মুফতি আব্দুল হাই, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মওলানা আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মুফতি শফিকুর রহমান ও মাওলানা আরিফ হাসান সুমন।
এর মধ্যে অন্য একটি মামলায় মুফতি আবদুল হান্নানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির ওরফে আব্দুল হান্নান সাব্বির, হাফেজ মওলানা ইয়াহিয়া, মওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মওলানা আব্দুর রউফ ও শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েল।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে নিষিদ্ধঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) জঙ্গিদের বোমা হামলায় ১০ জন নিহত ও অনেকে আহত হন। এ ঘটনায় থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়।
২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে সিআইডি হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে দীর্ঘ শুনানি নিয়ে হত্যা মামলাটি বিচারিক আদালতে শেষ হয়।
“এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে মাগুরায় ৫ দিনব্যাপী জাতীয় বি দাবা প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের আয়োজনে এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থা, মাগুরা’র সহযোগিতা বৃহস্পতিবার জেলা ইনডোর স্টেডিয়ামে ৩৬ জুলাই, জাতীয় ‘বি’ দাবা প্রতিযোগিতা ২০২৫ (অঞ্চল-৩: খুলনা ও বরিশাল) আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হয়।
বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী সদস্য আরিফুজ্জামান আরিফের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ শামীম কবির, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য সচিব মো. ইলিয়াসুর রহমান, মাগুরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক ও ডা: জুলি চৌধুরী। এ সময় বিভিন্ন জেলা থেকে অংশ নিতে আসা দাবাড়ু, ক্রীড়া কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
এই প্রতিযোগিতা পাঁচ দিনব্যাপী ২১ থেকে আগামী ২৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। এতে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের মোট ১৮ জেলার ৫০ জন দাবাড়ু অংশগ্রহণ করবেন।
প্রতিযোগিতাটি ঘিরে মাগুরায় ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়।
পিআর পদ্ধতি, বিচার ও সংস্কারের দোহায় দিয়ে নির্বাচনকে বিলম্ব করতে এক চক্র উঠে পড়ে লেগেছে। তারা চাই না এদেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ দেশে যোগ্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করুক। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতেই দেশ থেকে স্বৈরাচারকে বিতারিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ভৈরব শহরের পৌর আ. আজিজ মাতৃ সদন চত্বরে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম।
তিনি আরো বলেন, ৭১ কে বাদ দিয়ে শুধু ২৪ কে মূল্যায়ন করলে চলবে না। তিনি সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আহ্বায়ক নিয়াজ মোর্শেদ আঙ্গুর। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী মো. শাহিন ও সাধারণ সম্পাদক ভিপি মো. মুজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম সুজন। আলোচনা সভা শেষে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে ভৈরব বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাপ্ত হয়।
মাগুরা সহ সারাদেশে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগায় মৃৎশিল্প প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। রান্না বান্নাই আধুনিক জিনিসপত্র তৈরি হওয়াতে এখন আর সচরাচর দেখা যায় না মাটির কলস, হাড়ি, বাসন ইত্যাদি। ফলে পাল বংশের পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে তারা হিমশিম খাচ্ছে। সীমিত কিছু মাটির জিনিসপত্র তৈরি করে সংসার চালানো তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
একটা সময় পাল বংশ স্থাপত্য ও শিল্পকলার জন্য অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। আনুমানিক ৭৮১ থেকে ১১৮০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পাল বংশ বাংলায় প্রায় ৪০০ বছর রাজত্ব করেছে। পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন গোপাল। পরবর্তীতে ধর্মপাল ও দেবপাল এসে এই বংশের প্রসার ঘটান। দ্বাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় পাল বংশের রাজত্বের অবসান ঘটে। পাল বংশের সেই রাজত্ব এখন আর না থাকলেও তাদের উত্তরশূরিরা এখনো অনেক জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তাদের হাতের নিপুন কারু কাজের মাধ্যমে তারা বংশের নাম অক্ষুন্ন রেখেছেন।
মাগুরার বিভিন্ন এলাকায় পাল বংশের বসবাস থাকলেও অভাবের তাড়নায় তারা এ কাজ ছেড়ে অন্য পেশায় নিযুক্ত হচ্ছেন। সদর উপজেলার শ্রীকুন্ডি গ্রামে পাল বংশের হাতের তৈরি মৃৎশিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে। এক সময় এই গ্রামে ৩০-৪০ ঘর পাল বংশের লোকজন বাস করত। কিন্তু প্রয়োজনের তাগিদে অনেকে গ্রাম ছেড়ে শহরে পাড়ি জমিয়েছে। একটা সময় এই গ্রামের পালদের হাতে তৈরি মাটির জিনিসপত্রের খুব কদর ছিল। তাদের বাপ-দাদার আমলের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে তারা এখনো এই কাজ করে যাচ্ছে। এমনকি তাদের ছেলে মেয়ে ও ঘরের বউদেরকেউ এই কাজ শেখানো হয়। তারা মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খেলনা, হাড়ি, কলস, মাটির ব্যাংক, ফুলের টব, বাসন, ফুলদানি, দইয়ের হাড়ি, ল্যাট্রিন এর চারি ইত্যাদি জিনিসপত্র বানাতো। শুধু তাই নয় এগুলো তৈরি করার পর হাতে সুন্দর করে নকশা কেটে রোদে শুকিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে সেগুলিকে রং করে বাজারে বিক্রি করতো। নিজেদের জেলার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এগুলো তারা বড় বড় শহরে বিক্রি করতো। আগে সবকিছুর দাম কম থাকায় তাদের সংসার ভালোভাবেই চলে যেত।
আগের দিনে দাদি নানীরা মাটির চুলায় মাটির হাঁড়িতে ভাত রান্না করত মাটির কলসে পানি রাখতো বাসনে ভাত খেত। কিন্তু বর্তমানে শহরের পাশাপাশি অনেক গ্রামেও আধুনিকতার ছোঁয়া লাগাই এসব হাড়ি, কলস, বাসন এখন আর কেউ ব্যবহার করে না। এখন শুধুমাত্র মাটির চারি দইয়ের হাড়ি আর ব্যাংক তৈরি করেই তারা জীবিকা নির্বাহ করছেন।
সবকিছুতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেও ছোঁয়া লাগেনি মাটির জিনিসপত্র তৈরি করার ক্ষেত্রে। সেই মান্ধাতার আমলের মাটির চুল্লি, কাঠের জালানী ও মাটির ছাঁচ দিয়েই কাজ সারতে হয় তাদের।
বর্তমানে জ্বালানি এবং রঙের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকেই অভাবের তাড়নায় এ কাজ ছেড়ে দিয়ে অন্য কাজ করছে। বর্তমানে এই গ্রামে ১৪-১৫ ঘর পাল বাস করে।
মাগুরা শ্রীকুন্ডি গ্রামে সরেজমিনে গেলে সঞ্জয় কুমার পাল দৈনিক বাংলাকে জানান, আমাগের বাপ-দাদার আমলের ব্যবসা আমরা ছাড়তে পারবো না। সরকার যদি আমাগের একটু সাহায্য করতেন তাহলে আমরা এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতি পারতাম । আমরা এ ব্যাপারে সরকারের কাছ থেকে কোনদিন কোন অনুদান পায়নি।
সঞ্জয় কুমার পালের মত একই এলাকার দিলিপ পাল, সুভাষ পাল, নির্মলপাল, হিমপাল, নিমাই পাল, সোনাপাল এরকম আরো অনেকেই এই একই কথা বলেছেন।
একই এলাকার রানী পাল বলেন, আমার স্বামী অসুস্থ এখন আমি মাটির জিনিসপত্র বানায়ে সংসার চালাই। কিন্ত খরি আর রঙের দাম অনেক বেশি সেই সাথে এগুলো বাজারে আনানিয়ার খরচও অনেক হওয়ায় আমাগের অনেক কষ্ট হয়ে যায়। তাই সংসার চালাতি কষ্ট হয়। টাকার জন্যি আমরা ঠিক মত ওষুধ কিনতি পারিনি।
সঠিক তদারকির অভাবে একদিন হয়তো পাল বংশের এই ঐতিহ্য ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে যাবে। গ্রামবাসীরা এ ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
রাঙামাটি শহরের শিশু পার্কে কাপ্তাই লেকের মাঝখানে নির্মিত আধুনিক ওয়াচ টাওয়ার ইতিমধ্যেই পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরিচালিত এই শিশু পার্কে টাওয়ারটি ঘিরে এখন বাড়ছে পর্যটকের ভিড়। স্থানীয়রা এবং দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ভ্রমণপিপাসুরা বলছেন, ওয়াচ টাওয়ার রাঙামাটির পর্যটনে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২০২৬ অর্থবছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় তিনতলা বিশিষ্ট ওয়াচ টাওয়ার ও ওয়াকওয়ে। এর দৈর্ঘ্যে ২৭৮ ফুট ও প্রস্থে ৮ ফুটের এই টাওয়ারে উঠে চোখ মেলে দেখা যায় এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদ ও আশপাশের পাহাড়ি সৌন্দর্য।
শিশু পার্কে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা মো. জাকির হোসেন বলেন, “সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে পরিবার ও বাচ্চাদের নিয়ে শিশু পার্কে আসি। কিন্তু আজ ওয়াচ টাওয়ারে উঠে কাপ্তাই লেকের অপার সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হয়ে গেলাম। এটি রাঙামাটির পর্যটনের জন্য এক নতুন সংযোজন।”
স্থানীয় পর্যটক রিয়া সেন বলেন, “আমি আগে অনেকবার কাপ্তাই লেকে ঘুরেছি, কিন্তু এত সুন্দর ভিউ একসাথে কখনো দেখিনি। এখানে দাঁড়িয়ে মনে হয় পুরো রাঙামাটিই চোখের সামনে।”
চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা শাহেদুল ইসলাম জানান, “ওয়াচ টাওয়ারে দাঁড়িয়ে কাপ্তাই লেকের দৃশ্য ক্যামেরায় বন্দি করেছি। এটি শুধু পর্যটকদের নয়, পুরো রাঙামাটির জন্যই এক নতুন সংযোজন।”
এদিকে, পাহাড়ের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিএইচটি ট্যুরিজম অ্যান্ড কালচার রিসার্চ সেন্টার-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, “ওয়াচ টাওয়ারটি শুধু রাঙামাটির নয়, পুরো পাহাড়ি অঞ্চলের পর্যটন খাতকে আরও এগিয়ে নেবে। এতে দেশি-বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ বাড়বে।”
রাজশাহী থেকে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মোহনা আক্তার বলেন, “রাঙামাটির পাহাড়-নদী-লেকের সমন্বয় সবসময় আমাকে টানে। ওয়াচ টাওয়ারে উঠে মনে হলো আমি যেন আকাশের আরও কাছে চলে এসেছি।”
এ প্রসঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা বলেন, “শিশু পার্কে ওয়াকওয়ে ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে পর্যটন শিল্পকে আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে। এখানে দাঁড়িয়ে পর্যটকেরা কাপ্তাই লেক ও পাহাড়ের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন, যা রাঙামাটির পর্যটন বিকাশে বড় ভূমিকা রাখবে।”
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, শিশু পার্কের ভেতরে লেকের মাঝখানে নির্মিত এই ওয়াচ টাওয়ার রাঙামাটিকে নতুনভাবে পরিচিত করবে দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিপাসুদের কাছে।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে ডিম বিক্রির অপরাধে দুই ডিম ব্যবসায়ীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা পৌর শহরের পুরাতন কাঁচা বাজারে এই অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হোসেন।
অর্থদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সাইফুল ইসলাম ও জাকির হোসেন। এ দুজনকেই ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হোসেন বলেন, নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে ডিম বিক্রি করায় দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়। এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দীর্ঘদিন ধরে র্যাগিং একটি নিন্দনীয় প্রথা হিসেবে বিদ্যমান। নতুন শিক্ষার্থীদের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে হয়রানি করার এ ধরনের কার্যক্রম শুধু পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট করছে না, বরং অনেক সময় তা ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশজুড়ে বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যাগিংয়ের কারণে শিক্ষার্থীদের বিপর্যস্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, যা অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে র্যাগিং প্রতিরোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোবিপ্রবি) প্রশাসন। শুধু নিয়মকানুন প্রণয়ন নয়, প্রয়োজনে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও আশ্বাস দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। র্যাগিংকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধে কমিটি গঠন, সচেতনতামূলক কার্যক্রম ও নিয়মিত টহলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলরুমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজীব বলেন, “র্যাগিং বন্ধ করার জন্য আমাদের একটি কমিটি আছে। অতি দ্রুতই আমরা উক্ত কমিটির পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেবো। ইউজিসি থেকে মাদক এবং শৃঙ্খলাবিষয়ক একটি সেমিনার আয়োজনের নির্দেশনা আছে। আমরা উক্ত সেমিনারে র্যাগিংয়ের বিষয়টি সংযুক্ত করবো যেহেতু এটি আইনশৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে।”
সহকারী প্রক্টর আরিফুল ইসলাম বলেন, “ক্লাস টাইমে আমরা প্রক্টরিয়াল বডি নিয়মিত টহল দিচ্ছি এবং শিক্ষার্থীদের র্যাগিং ও মাদকের অপকারিতা সম্পর্কে কাউন্সেলিং করছি। যদি কোনও শিক্ষার্থী র্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িত অবস্থায় ধরা পড়ে তাহলে আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবো। এই শাস্তির মধ্য দিয়ে যাতে অন্য শিক্ষার্থীরা সচেতন হয় আমরা সেই ব্যবস্থাও গ্রহণ করবো।”
তিনি আরও বলেন, “র্যাগিংয়ের ভুক্তভোগী কোনও শিক্ষার্থী যদি যথাযথ প্রমাণসহ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাহলে আমরা অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন কঠোর অবস্থান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন অনেকেই। অভিভাবকরাও আশা করছেন, এসব পদক্ষেপ র্যাগিংয়ের মতো নিন্দনীয় প্রথা বন্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বাগেরহাট জেলা থেকে সংসদীয় ৪ টি আসনকে কেটে ৩ টি আসন করার প্রতিবাদে জেলার সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি জেলায় সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচী ঘোষনার প্রথম দিনে খুলনা-মংলা ও মাওয়া-খুলনা মহাসড়কের কাটাখালী ও নওয়াপাড়ায় অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সকাল নয়টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ব্যানারে এই কর্মসূচিতে দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে।এতে বিভিন্ন রুটের হাজার হাজার যানবাহন আটকা পড়ে।
এর আগে ১৯ আগস্ট সকালে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে জেলা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার এটিএম আকরাম হোসেন তালিম সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচী ঘোষনা করেন। অবরোধ পালনকালে সর্বদলীয় কমিটির সদস্য সচিব শেখ মুহাম্মদ ইউনুস, জেলা বিএনপির সমন্বয়ক এম এ সালাম, জেলা জামায়াতের আমির মাও. রেজাউল করিম, জামায়াতের নায়েবে আমির এ্যাড. আব্দুল ওয়াদুদ, বিএনপি নেতা ফকির তারিকুল ইসলাম, ওয়াজিয়ার রহমান, সাহেদ আলী রবি প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। আগামী ২৫ আগষ্ট নির্বাচন কমিশনের শুনানীতে যদি বাগেরহাটের ৪ আসন পূনঃবহাল করা না হলে বাগেরহাট অচল কর্মসূচী গ্রহন করার ঘোষনা দেওয়া হয়।
মন্তব্য