× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বিশেষ
এ যেনো অচেনা এক সুনামগঞ্জ
google_news print-icon

এ যেন অচেনা এক সুনামগঞ্জ

এ-যেন-অচেনা-এক-সুনামগঞ্জ
হেফাজত নেতা মামুনুলকে নিয়ে দেয়া ফেসবুক পোস্টের জেরে শাল্লায় হিন্দুদের বাড়িঘরে চলে হামলা। ছবি: নিউজবাংলা
হাসন রাজা, রাধারমন, দুর্বিন শাহ, শাহ আব্দুল করিম- সুনামগঞ্জের এমন অসংখ্য সাধক গানে-কথায় জীবনভর অসাম্প্রদায়িকতা ও মানবপ্রেমের কথা প্রচার করে গেছেন। আবার এই অঞ্চলে জন্ম নিয়ে বরুণ রায়, আবদুস সামাদ আজাদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতো নেতারা বাম ও আওয়ামী ধারার রাজনীতিতে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অথচ এই সুনামগঞ্জ থেকেই এখন ছড়াচ্ছে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প।

বিস্তৃর্ণ হাওর, হাওরজুড়ে শুষ্ক মৌসুমে ধান আর বর্ষায় মাছ, পাগল করা বাউল সুর আর প্রগতিশীল রাজনীতির জন্য খ্যাতি ছিল সুনামগঞ্জের। তবে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা সামনে নিয়ে এসেছে অচেনা এক সুনামগঞ্জকে।

হেফাজতে ইসলামের সমালোচনা করাই যেন অপরাধ এখানে। সমালোচনা করলেই গ্রেপ্তার, মারধর, হেনস্তা করা হচ্ছে। বাড়িঘরে হামলা-হুমকি তো রয়েছেই। সাম্প্রতিক এ রকম কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে সুনামগঞ্জে। এমনকি একজন সমালোচনা করার কারণে পুরো গ্রামে তাণ্ডবও চালানো হয়েছে। এসব ঘটনায় পুলিশ সব সময় সমালোচনাকারীর বিরুদ্ধে খড়গহস্ত করছে। তবে এতে করে তারা নিজেরাও রক্ষা পাচ্ছে না। থানাতেও ঘটেছে হামলার ঘটনা।

অসাম্প্রদায়িকতা ও সংস্কৃতিচর্চার জন্য বিখ্যাত সুনামগঞ্জে কেন একের পর এক এ রকম ঘটনা ঘটছে? কীভাবে উগ্রবাদী গোষ্ঠী শক্তিশালী হয়ে উঠল হাওরের এই সরল জনপদে?

স্থানীয় পর্যায়ের একাধিক রাজনীতিবিদ, সংগঠক, সংস্কৃতিকর্মী ও সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপ হয় এ নিয়ে। প্রত্যেকেই বলছেন, বামধারার রাজনীতি দুর্বল হয়ে যাওয়া, ভোটের লোভে আওয়ামী লীগ নেতারা আদর্শচ্যুত হওয়া ও ভিন্ন আদর্শের লোকদের দলে ভেড়ানো, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বাধা ও দুর্বল হয়ে পড়া এবং একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে ধর্মীয় উগ্রবাদী গোষ্ঠীর ব্যাপক কর্মকাণ্ড গত দুই দশকে বদলে দিয়েছে সুনামগঞ্জের চিত্র।

অথচ মুক্তিযুদ্ধের পরও এখানে ভোটের মূল লড়াই হতো আওয়ামী লীগ আর বাম দলগুলোর মধ্যে। প্রগতিশীল রাজনৈতিক চর্চার জন্য খ্যাতি ছিল এই অঞ্চলের। খ্যাতি ছিল বাউল ও সহজিয়া দর্শনের সাধকদের উর্বরভূমি হিসেবে।

হাসন রাজা, রাধারমন, দুর্বিন শাহ, শাহ আব্দুল করিম- সুনামগঞ্জের এমন অসংখ্য সাধক গানে-কথায় জীবনভর অসাম্প্রদায়িকতা ও মানবপ্রেমের কথা প্রচার করে গেছেন। আবার এই অঞ্চলে জন্ম নিয়ে বরুণ রায়, আবদুস সামাদ আজাদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতো নেতারা বাম ও আওয়ামী ধারার রাজনীতিতে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

অথচ এই সুনামগঞ্জ থেকেই এখন ছড়াচ্ছে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প।

একের পর এক ঘটনা

গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হেফাজতে ইসলামের একটি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতা জুনায়েদ বাবুনগরী ও মামুনুল হক। পরদিন দিরাইয়ের পাশের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাস নামের এক যুবক ফেসবুকে মামুনুল হকের সমালোচনা করে স্ট্যাটাস দেন।

এ যেন অচেনা এক সুনামগঞ্জ
ঝুমন দাসের ফেসবুক স্ট্যাটাসের জেরে ভাঙচুর চালানো হয় ৮৭টি হিন্দুবাড়িতে

এ নিয়ে ওই দিনই শাল্লায় উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয় লোকদের উসকে দেয় উগ্রবাদীরা। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ওই রাতেই ঝুমন দাসকে পুলিশের হাতে তুলে দেন গ্রামবাসী।

পরদিন ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর সকালে ঝুমনের গ্রাম নোয়াগাঁওয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় কয়েক হাজার লোক। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে আশপাশের গ্রাম থেকে মিছিল নিয়ে এসে তারা ভাঙচুর ও লুটপাট করে গ্রামের অন্তত ৮০টি বাড়িতে।

এ ঘটনার রেশ না কাটতেই রিসোর্ট-কাণ্ডের পর ৪ এপ্রিল হেফাজত নেতা মামুনুল হক ও ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীকে নিয়ে সমালোচনা করায় তোপের মুখে পড়েন দিরাইয়ের এক স্কুলশিক্ষক। ফেসবুকে নয়, স্থানীয় একটি বাজারে চায়ের আড্ডায় মামুনুল হক ও মাদানীর সমালোচনা করেছিলেন স্থানীয় একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসবি গোলাম মোস্তফা। এতেই ক্ষেপে যায় হেফাজত অনুসারীরা।

প্রথমে তর্কাতর্কি, পরে কয়েক শ লোক জড়ো করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিছিল করে তারা। যথারীতি অভিযোগ আনা হয় ধর্ম অবমাননার। পরে ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় প্রশাসন হাজির হয় ঘটনাস্থলে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে ক্ষমা চান স্কুলশিক্ষক।

তবে এতেও ক্ষান্ত হয়নি হেফাজত অনুসারীরা। তারা স্কুলশিক্ষকের পদচ্যুতির দাবি জানায়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গড়ায় যে, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসানকেও সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসককে ফোন করে ওই শিক্ষকের নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশ দিতে হয়।

মামুনুল হক যেদিন নারীসহ ধরা পড়লেন সোনারগাঁয়ে, সেদিনও সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে হেনস্তার শিকার হন যুবলীগের এক নেতা। মামুনুলের নারীসহ রিসোর্টে যাওয়ার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে বিপাকে পড়েন যুবলীগ নেতা এমাদ হোসেন জয়।

এই পোস্টকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আসে। পরদিন আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান তিনি। জয় ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা জজ মিয়ার ছেলে ও ইউনিয়ন যুবলীগের মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক।

এ যেন অচেনা এক সুনামগঞ্জ
যুবলীগের স্থানীয় নেতা এমাদ হোসেন জয়

সর্বশেষ হেফাজতের সমালোচনা করে পোস্ট দিয়ে হেনস্তার শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের নেতা আফজাল খান। তার বাড়ি সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায়। হেফাজতকে নিয়ে পোস্ট দেয়ার পর গত মঙ্গলবার তাকে ধর্মপাশার জয়শ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিসে আটকে রেখে লাঞ্ছিত করা হয়। তাৎক্ষণিক কয়েক শ মানুষ জড়ো হয়ে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে আসে ও উত্তেজিত জনতার কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে।

এদিকে, গত শনিবার রাতে মামুনুল হককে আটক করা হয়েছে এমন খবরে ছাতকে মিছিল বের করে হেফাজতে ইসলামের অনুসারীরা। এই মিছিল থেকে ছাতক থানায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়।

এ রকম একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলছে। ফেসবুকে হেফাজত ও তাদের নেতাদের সমালোচনা করে পোস্ট দিলেই হামলা, হেনস্তা, গ্রেপ্তার ছাড়াও ফেসবুকে গালাগালি ও হুমকির অভিযোগ রয়েছে অসংখ্য।

প্রশাসনের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা

শাল্লার তাণ্ডবের পরই প্রশ্ন ওঠে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। আগের দিন উত্তেজনা জানার পরও নোয়াগাঁওয়ে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি; সেই সুযোগে তাণ্ডব চালানো হয় পুরো গ্রামে।

পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্তে এই অভিযোগের প্রমাণও মিলেছে। এই হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে গত মঙ্গলবার শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হককে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া দিরাই থানার ওসি আশরাফুল ইসলামকে মৌলভীবাজারে বদলি করা হয়েছে।

শাল্লায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে সমালোচনা করায় আটক ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে পুলিশ। এই মামলায় পুলিশের বাদী হওয়া আইনবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন আইনজীবীরা।

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তাহিরপুর, ধর্মপাশা ও দিরাইয়ের ঘটনায়ও। হেফাজতের সমালোচনা করায় তাহিরপুরে যুবলীগ নেতাকে কেন গ্রেপ্তার করা হলো, ধর্মপাশায় ছাত্রলীগ নেতাকে কেন হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে আসা ও ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হলো, এসব প্রশ্ন তুলে তার সমালোচনা করছেন অনেকেই।

এ যেন অচেনা এক সুনামগঞ্জ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপসম্পাদক আফজাল খান

ধর্মপাশায় ছাত্রলীগ নেতাকে হেনস্তার ঘটনায় থানার ওসি দেলোয়ার হোসেনসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে বুধবার বদলি করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা মনে করেন, হেফাজত ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে একটা ভীতির পরিবেশ তৈরি করে। প্রশাসনও এতে ভয় পায়। ফলে তাদের ব্যাপারে নমনীয় থাকে। এই নমনীয়তাকে কাজে লাগায় হেফাজত। এ ছাড়া মাঠ প্রশাসনে অনেকে তাদের অনুসারীও থাকতে পারে।

হেফাজতের সমালোচনা করলেই কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, এমন প্রশ্ন করা হয় সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমানকে। তিনি অযথা কাউকে আটক বা হেনস্তা করা হচ্ছে না জানিয়ে বলেন, অনেক সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে অনেক ভূমিকা নিতে হয়। তবে যা কিছু হচ্ছে আইন মোতাবেকই হচ্ছে।

তিনি বলেন, কাউকে ধরে আনা মানেই সে অপরাধী নয়। পুলিশের কাজ বিচার করা নয়। পুলিশ আটকের পর আদালতে পাঠায়। আদালত যদি মনে করে সে অপরাধী নয় তাহলে ছেড়ে দেয়।

তবে সাম্প্রতিক সুনামগঞ্জের ঘটনাগুলো প্রসঙ্গে পুলিশের সিলেট রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, যেসব ঘটনার ব্যাপারে অভিযোগ উঠেছে সেগুলোর বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। কারও কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, পুলিশ, আইনের বাইরে কেউ কিছু করতে পারবে না। করলে বিপদে পড়বে। এ ব্যাপারে সবাইকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া আছে।

আওয়ামী লীগ-হেফাজত একাকার

১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে যে সমাবেশটি করে হেফাজতে ইসলাম, সরাসরি এর সহযোগিতায় ছিলেন অনেক আওয়ামী লীগ নেতা। আওয়ামী লীগ দলীয় দিরাই পৌরসভার মেয়র বিশ্বজিত রায় ওই সমাবেশে মঞ্চে উঠে বক্তৃতাও করেছেন।

কেবল এই সভায়ই নয়, সম্প্রতি সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ধর্মীয় সভার নামে বেশ কয়েকটি জমায়েত করে হেফাজতে ইসলাম। এতে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন। তার সবগুলোতেই অর্থ, জনবল, স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে এবং অতিথি হয়ে সহযোগিতা করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

সুনামগঞ্জের তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও হেফাজত অনেকটা একাকার হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ দলটির অনেক নেতার। তারা নিজেদের গ্রুপ ভারী করতে জামায়াত-হেফাজতকে দলে ভেড়াচ্ছেন। আবার অনেক নেতা নিজেই হেফাজতের প্রতি ঝুঁকছেন বলে অভিযোগ আছে। এ

ছাড়া দলীয় গ্রুপিং ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে অনেকে হেফাজতকে ব্যবহার করে সুবিধা নেয়ার অভিযোগও আছে।

দিরাইয়ে সমাবেশের পর শাল্লায় হিন্দুপল্লিতে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে, তাতে প্রধান আসামি করা হয়েছে স্থানীয় ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলাম স্বাধীনকে। তিনি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে এলাকায় চাউর আছে।

এ ছাড়া ধর্মপাশায় ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ নেতা আফজাল খানকে হেনস্তার ঘটনায় করা মামলার আসামি জয়শ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের (সদ্য বহিষ্কৃত) সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম আলম ও তার ছেলে আল মুজাহিদ।

এ যেন অচেনা এক সুনামগঞ্জ
হেফাজতের সমাবেশ মঞ্চে দিরাই পৌরসভার মেয়র বিশ্বজিৎ রায় (বাম থেকে চতুর্থ)

মুজাহিদের নেতৃত্বেই স্থানীয়দের উসকে দিয়ে এই হেনস্তার ঘটনা ঘটে বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন আফজাল। এ ঘটনায় আবুল হাশেম আলমকে বুধবার বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। একই দিনে তাকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।

সুনামগঞ্জে সাম্প্রতিক এ রকম সবগুলো ঘটনায়ই দেখা গেছে আওয়ামী লীগ ও হেফাজত নেতারা একাকার। সমাবেশ কিংবা হামলা- সবই মিলেমিশে করছেন তারা।

সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি এম রশিদ আহমদের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে। জেলার আওয়ামী রাজনীতির এই অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ভোটের রাজনীতি করি। আদর্শ রাজনীতি থেকে সরে এসেছি। এতে প্রতিক্রিয়াশীলরা শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। একসময় সুনামগঞ্জের প্রগতিশীল নেতারা সারা দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখন সেদিন বদলে গেছে। আমরাই দলে প্রতিক্রিয়াশীলদের জায়গা করে দিচ্ছি।’

একই ধরনের মন্তব্য করেছেন জগন্নাথপুর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদির আহমদ মুক্তাও। তিনি বলেন, ‘রাজনীতির অদূরদরদর্শিতার কারণে এমনটি হচ্ছে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা মূল আদর্শ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। দলে আদর্শবিরোধী অনেকে ঢুকছে। অনেক নেতার মাধ্যমে তারা ঢুকছে। দলীয় আদর্শ প্রচারের চেয়ে নেতারা গড্ডালিকায় গা ভাসান। আবার মুখে ধর্মের বুলি আওড়ে হেফাজতিরা আওয়ামী লীগ নেতা ও স্থানীয়দের সহজেই দলে ভিড়িয়ে নিতে পারে।’

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খাইরুল কবির রুমেন বলেন, ‘সুনামগঞ্জ শান্তির শহর। সংস্কৃতির শহর। কিন্তু কিছু মৌলবাদী এ শহরের শান্তি নষ্ট করতে নানা রকম পাঁয়তারা করছে। এদের মধ্যে আমাদের দলের কিছু লোক তাদের সহযোগিতা করছে। ইতোমধ্যে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ থেকে কয়েকজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং আমাদের মনিটরিং সেল এসব বিষয়ে নজরদারি রাখছে। এমন যাদেরই পাওয়া যাবে, তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’

আছে উসকানি, গুজব

সুনামগঞ্জে সাম্প্রতিক সবগুলো ঘটনার পেছনেই উসকানি দিয়ে ও গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করার অভিযোগ রয়েছে।

এ যেন অচেনা এক সুনামগঞ্জ
শাল্লার ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সুনামগঞ্জের এসপি দাবি করেন, পুলিশ সেদিন নিষ্ক্রিয় ছিল না

শাল্লা, দিরাই, তাহিরপুর কিংবা ধর্মপাশায় ঘটা সাম্প্রতিক সবগুলো ঘটনায় দেখা গেছে, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার পর দ্রুততম সময়ে তা পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তে জড়ো হয়ে যায় হাজারও মানুষ। হেফাজতে ইসলামের সমালোচনাকে ইসলাম ধর্মের সমালোচনা বলেও অপপ্রচার চালানো হয় এবং সমালোচনাকারীকে কোণঠাসা করে ফেলা হয়।

সুনামগঞ্জের একটি থানার ওসি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হেফাজতের নেতারা উসকানি দিয়ে ও গুজব ছড়িয়ে এমন পরিস্থিতির তৈরি করে তাতে এলাকায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। ফলে অনেকের জানমাল রক্ষায় পুলিশ বাধ্য হয়ে সমালোচনাকারীকে ধরে নিয়ে আসে।

সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বাধা

সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য খ্যাতি রয়েছে সুনামগঞ্জের। অসংখ্য বাউল ও লোকশিল্পীর জন্ম এ অঞ্চলে। বছরজুড়েই লেগে থাকত গান-নাচ-নাটকের উৎসব। তবে সাম্প্রতিক একদিকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বাধা দেয়া হচ্ছে, অন্যদিকে হেফাজত ইসলামের বিভিন্ন কর্মসূচিকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জের সাংবাদিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনের কর্মী শামস শামীম বলেন, ‘সুনামগঞ্জে আগে বছরজুড়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলা হতো। ছোটবেলা পথেঘাটে মেলা, বাউল গানের আসর, ওরস দেখেছি। এগুলোতে সব ধর্মের মানুষ যেত। সব মানুষের সম্মেলনের কথা বলা হতো। এখন এগুলো বন্ধ। এখন এসব আয়োজন করতে গেলেই বাধা আসে। ধর্মান্ধরা বাধা দেয়। প্রশাসন বাধা দেয়। এখন সব বন্ধ করে কেবল ওয়াজ মাহফিল হয়। আর এসব মাহফিলে ধর্মচর্চার চেয়ে উগ্রতা ও উসকানিমূলক কথাই বেশি হয়। এ জন্য প্রশাসন ও সরকার দায়ী।’

সুনামগঞ্জের বাউলশিল্পী লাল শাহ। শাল্লার তাণ্ডবের পর সেখানে ছুটে গিয়েছেন তিনি। লাল শাহ বলেন, ‘আমি যদি মানুষই হতে পারি না, তাহলে মুসলমান হব কীভাবে?’

লাল শাহ বলেন, ‘আমরা এখন মনে করছি নামাজ পড়লে, রোজা রাখলেই বেহেশতে চলে যাব। কিন্তু মানুষ চিনলাম না। বিভিন্ন জনকে ফতোয়া দিলাম। এসব করে তো হবে না। আগে মানুষ হতে হবে। মানুষ চিনতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ কেবল ভুল চিন্তা করছে। আমাকে বেহেশতে নেবে আমার সৎকর্ম। আমার দেহের ভেতরে যে প্রকৃত মানুষ আছে সে-ই মানুষ।’

আরও পড়ুন:
ক্ষমতা থেকে নামানো হেফাজতের কাজ নয়: বাবুনগরী
হেফাজতের হাটহাজারী তাণ্ডব: ১৩ দিন পর গ্রেপ্তার ৪
নারায়ণগঞ্জে তাণ্ডব: গ্রেপ্তার আরও ৪ হেফাজত কর্মী
জাসদকে হেফাজতের সতর্কতা
মুন্সিগঞ্জে হেফাজতের কর্মসূচি ঘিরে ১৪৪ ধারা

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বিশেষ
3 bank officials in jail on charges of irregularities of Tk 10 crores

দশ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

দশ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে ছবি: নিউজবাংলা
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে ওই শাখার তিন কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ সেদিন রাতেই তাদের তিনজনকে আটক করে।

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ ৩ কর্মকর্তাকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ (শুক্রবার) দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দুদক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

আরও পড়ুন:
পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

মন্তব্য

বিশেষ
We must work for the development of the country and people Prime Minister

দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ফাইল ছবি
গত ১৫ বছরে দেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ও উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে ক্ষমতায় থাকায় এ অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করার পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ছেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি দেশ ও জনগণের উন্নয়নে আপনাদেরকে কাজ করতে হবে।

থাইল্যান্ড আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার অবস্থানকালীন আবাসস্থলে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। খবর বাসসের

প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক মো. নজরুল ইসলাম সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

বঙ্গবন্ধু তার অনুপ্রেরণার উৎস উল্লেখ করে শেখ হাসিনা নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, জাতির পিতাকে অসময়ে হত্যা করা হলেও ‘তার আদর্শ আমাদের মধ্যে রয়ে গেছে এবং সে কারণেই আমি তার (বঙ্গবন্ধু) আদর্শ বাস্তবায়ন করতে কাজ করছি। বঙ্গবন্ধু দেশের গরিব-দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন।

গত ১৫ বছরে দেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ও উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে ক্ষমতায় থাকায় এ অগ্রগতি অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।

নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, অনেক বাংলাদেশি থাইল্যান্ডের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। তবে তারা দ্বৈত নাগরিকত্ব বজায় রাখতে চান। এই দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে থাই সরকারের সাথে কথা বলবেন।

মন্তব্য

বিশেষ
BNP expelled 73 leaders who went to the polls
উপজেলা নির্বাচন

ভোটে যাওয়া ৭৩ নেতাকে দলছাড়া করল বিএনপি

ভোটে যাওয়া ৭৩ নেতাকে দলছাড়া করল বিএনপি
চেয়ারম্যান পদে ২৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের প্রত্যেককেই বহিষ্কার করা হয়েছে।

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে অংশ অংশ নিচ্ছেন, এমন ৭৩ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

শুক্রবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিএনপির যে সমস্ত নেতা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ ও মহিলা) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদেরকে দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চেয়ারম্যান পদে ২৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের প্রত্যেককেই বহিষ্কার করা হয়েছে।

তফসিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে দেশের ১৫২টি উপজেলায় ভোট হবে আগামী ৮ মে। দ্বিতীয় ধাপে ২৩ মে, তৃতীয় ধাপে ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচনে যায়নি বিএনপি। এর আগে-পরে সব নির্বাচনই বয়কট করে নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে দলটি।


বহিষ্কার হলেন যারা

চট্টগ্রাম বিভাগ

মোসা. শিরীন আক্তার সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক, বান্দরবান জেলা মহিলা দল বান্দরবান জেলা। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান

মো. রিটন মো. রিটন, সাবেক দপ্তর সম্পাদক, আলীকদম উপজেলা বিএনপি বান্দরবান জেলা। ভাইস চেয়ারম্যান

মোসা. জাহানারা জাহাঙ্গীর সভাপতি, মহেশখালী উপজেলা মহিলা দল। জেলা কক্সবাজার। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান

জাহাদুল হুদা সভাপতি, মহেশখালী উপজেলা যুবদল। জেলা কক্সবাজার। ভাইস চেয়ারম্যান রাজশাহী বিভাগ

কায়সার আহমেদ সাবেক সহ—সভাপতি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ছাত্রদল চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। ভাইস চেয়ারম্যান

মো. কামাল উদ্দীন সদস্য, ভোলাহাট উপজেলা বিএনপি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। ভাইস চেয়ারম্যান

মোসা. রেশমাতুল আরস রেখা মহিলাদল নেত্রী, ভোলাহাট উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান

মোহা. আনোয়ারুল ইসলাম সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান

বাবর আলী বিশ্বাস সদস্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান

আতাউর রহমান খসরু আহ্বায়ক, মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপি কালাই উপজেলা, জয়পুরহাট জেলা। ভাইস চেয়ারম্যান ১১. শামীমা আক্তার (বেদেনা) সদস্য, জয়পুরহাট জেলা মহিলাদল ও সহ-সভাপতি, ক্ষেতলাল উপজেলা মহিলাদল।
জয়পুরহাট জেলা। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান

ইমতিয়াজ আহমেদ হীরা সাবেক ভিপি, নাটোর সদর উপজেলা। নাটোর জেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান

আফজাল হোসেন সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি নলডাঙ্গা উপজেলা বিএনপি, নাটোর জেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান

মোসা. মহুয়া পারভিন সভাপতি নলডাঙ্গা উপজেলা মহিলাদল নাটোর জেলা। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান

ময়মনসিংহ বিভাগ

এ বি এম কাজল সরকার সাবেক ছাত্রনেতা হালুয়াঘাট উপজেলা বিএনপি ময়মনসিংহ উত্তর জেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান

মোসা. সুমি বেগম সহ-কুটির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক ময়মনসিংহ উত্তর জেলা মহিলাদল মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান

মোসা. মনোয়ারা বেগম সহ-সভাপতি ময়মনসিংহ উত্তর জেলা মহিলাদল মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান

হাসনাত তারেক সদস্য, আইনজীবী ফোরাম হালুয়াঘাট উপজেলা ময়মনসিংহ উত্তর জেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান

জাহাঙ্গীর আলম খান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ময়মনসিংহ উত্তর জেলা যুবদল, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা। ভাইস চেয়ারম্যান

শামসুর রশিদ মজনু সাবেক সহ-সভাপতি ধোবাউড়া উপজেলা বিএনপি, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান

ইমরান হাসান পল্লব সাবেক সাধারণ সম্পাদকফুলপুর পৌর বিএনপি, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান

কামাল উদ্দীন যুগ্ম আহ্বায়ক পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপি, কিশোরগঞ্জ জেলা। ভাইস চেয়ারম্যান
(প্রত্যাহার করেছেন)

নাজমুল আলম সাংগঠনিক সম্পাদক কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি ও ১ম যুগ্ম আহ্বায়ক, সদর উপজেলা, কিশোরগঞ্জ জেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান

নাজমুল আলম সদস্য, হোসেনপুর উপজেলা বিএনপি, কিশোরগঞ্জ জেলা। ভাইস চেয়ারম্যান

ফরিদ আল-রাজি সাবেক সদস্য, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদল। কুমিল্লা বিভাগ

সাজ্জাদ মোর্শেদ সহ—প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল, নাসিরনগর উপজেল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা। ভাইস চেয়ারম্যান

ওমরাহ খান সাবেক সহ-সভাপতি নাসিরনগর উপজেলা বিএনপি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান

শামীম ইস্কান্দার সাধারণ সম্পাদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জিয়া পরিষদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা। ভাইস চেয়ারম্যান

হানিফ আহমেদ সবুজ সাবেক যুগ্ম সম্পাদক, সরাইল উপজেলা যুবদল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা।
রৌমারী উপজেলা মহিলাদল, কুড়িগ্রাম জেলা। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান

শাহ মো. ফরহাদ হোসেন অনু যুগ্ম আহ্বায়ক, পীরগাছা উপজেলা বিএনপি, রংপুর জেলা। ভাইস চেয়ারম্যান
ফরিদপুর বিভাগ

জানে আলম সদস্য সচিব, চরভদ্রাসন উপজেলা কৃষকদল, ফরিদপুর জেলা। ভাইস চেয়ারম্যান

ফারুক মৃধা প্রাথমিক সদস্য, চরভদ্রাসন উপজেলা বিএনপি, ফরিদপুর জেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান

শাহিদ আল-ফারুক যুগ্ম আহ্বায়ক, ফরিদপুর জেলা কৃষকদল, সদর উপজেলা, ফরিদপুর জেলা। ভাইস চেয়ারম্যান

এ কে এম নাজমুল হাসান সাবেক সদস্য কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল ও সদর উপজেলা, ফরিদপুর জেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান

রউফ উন-নবী সাবেক সভাপতি, সদর উপজেলা বিএনপি, ফরিদপুর জেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান

শারমিন আক্তার টুকটুকি সহ-সভাপতি, রাজবাড়ী জেলা মহিলা দল, সদর, রাজবাড়ী জেলা। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান

মন্তব্য

বিশেষ
Gas will not be available for 12 hours on Saturday

শনিবার ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

শনিবার ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় ফাইল ছবি
যেসব এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী।

গ্যাস পাইপলাইনে জরুরি কাজের জন্য শনিবার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।

গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে। খবর ইএনবির

তিতাস জানায়, যেসব এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী।

এ সময় আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে তিতাস। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে কোম্পানি।

মন্তব্য

বিশেষ
After an age buses are running again on Patrakhola road

এক যুগ পর পাত্রখোলা সড়কে ফের চলছে বাস

এক যুগ পর পাত্রখোলা সড়কে ফের চলছে বাস ছবি: নিউজবাংলা
সিএনজি থেকে ভাড়া কম করে বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় যাত্রীসহ স্কুল কলেজ শিক্ষার্থীরা বেজায় খুশি।

দীর্ঘ এক যুগ বন্ধ থাকার পর পুনরায় শ্রীমঙ্গল-পাত্রখোলা সড়কে বাস পরিষেবা চালু করেছে শ্রীমঙ্গল-শমশেরনগর-কুলাউড়া বাস মালিক সমিতি।

বৃহস্পতিবার সকালে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসিদ আলী ও ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোলেমান মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে বাস সার্ভিস উদ্বোধন করেন শ্রীমঙ্গল বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।

প্রাথমিক পর্যায়ে এই রুটে ৫০ মিনিট পরপর ২৪টি বাস চলাচল করবে বলে সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল থেকে ভানুগাছ মাধবপুর সড়ক দিয়ে ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা চা বাগান পর্যন্ত এ বাস চলাচল করবে।

কুরমা থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত বাসভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ টাকা। এছাড়া পাত্রখোলা থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ৫০ টাকা, মাধবপুর থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ৪০ টাকা, কুরমা থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ৪০ টাকা, পাত্রখোলা থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ২৫ টাকা, মাধবপুর থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ১৫ টাকা এবং ভানুগাছ থেকে শ্রীমঙ্গল ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ টাকা।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় কুরমা নতুন বাস স্ট্যান্ডে বাস চলাচলের উদ্বোধন শেষে মতবিনিময় সভায় শ্রীমঙ্গল-শমসেরনগর-কুলাউড়া বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. তসলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রকৌশলী যোগেশ্বর চন্দ্র সিংহের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান সোলেমান মিয়া, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান শাওন, ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ, নুরুল হক, বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, গ্রুপ সভাপতি কাসেম মিয়া ও আব্দুস সালাম প্রমুখ।

এর আগে মাধবপুর বাজারে বাস প্রবেশ করলে এলাকাবাসী বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় যাত্রীদের মানসম্পন্ন সেবা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।

এদিকে সিএনজি থেকে ভাড়া কম করে বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় যাত্রীসহ স্কুল কলেজ শিক্ষার্থীরা বেজায় খুশি।

মন্তব্য

বিশেষ
Two children drowned in Chawai river

চাওয়াই নদীতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

চাওয়াই নদীতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু ফাইল ছবি
পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘দুই শিশুর মধ্যে একজন সাঁতার জানত, আরেকজন জানত না। একজন আরেকজনকে বাঁচাতে গিয়ে দুজনেই একসঙ্গে ডুবে মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্থনীয়রা।’

পঞ্চগড় সদর উপজেলায় চাওয়াই নদীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে আলমি আক্তার ও ইসরাত জাহান সিফাত নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে জেলার সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের চাওয়াই নদীর চৈতন্যপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

১২ বছরের আলমি ওই এলাকার আব্দুল আজিজের মেয়ে এবং ৯ বছরের সিফাত সাইফুল ইসলামের মেয়ে। তারা দুজনে সম্পর্কে ফুফু-ভাতিজি।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুরে আলমি ও সিফাত বাড়ির পাশে চাওয়াই নদীতে গোসল করতে যায়৷ গোসল করতে গিয়ে সিফাত পানিতে ডুবে যেতে থাকলে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যায় আলমি৷ পরে দুজনেই পানিতে ডুবে যায়। এ সময় নদীর পাড়ে থাকা অন্য আরেক শিশু ঘটনাটি দেখে দৌড়ে তাদের পরিবারের লোকজনকে খবর দিলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে মৃত অবস্থায় নদী থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে।

খবর পেয়ে পুলিশ দুই শিশুর মরদেহের সুরতহাল করে।

পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘দুই শিশুর মধ্যে একজন সাঁতার জানত, আরেকজন জানত না। একজন আরেকজনকে বাঁচাতে গিয়ে দুজনেই একসঙ্গে ডুবে মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্থনীয়রা।’

মরদেহের সুরতহাল শেষে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন:
পরিত্যক্ত নলকূপের পাইপে পড়ে যাওয়া যুবকের মরদেহ উদ্ধার

মন্তব্য

বিশেষ
Sixth and seventh wives quarrel with their husbands

স্বামীকে নিয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম স্ত্রীর কাড়াকাড়ি

স্বামীকে নিয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম স্ত্রীর কাড়াকাড়ি কোলাজ: নিউজবাংলা
সাথী জানান, ঢাকায় বদলি হওয়ার পর থেকে তার ও তাদের সন্তানের কোনো খরচ পাঠাতেন না তরিকুল। এরই মধ্যে সেঁজুতির সঙ্গে তার ইমোতে পরিচয় হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে সেঁজুতিকে বিয়ে করেন তিনি।

আনসার সদস্য তরিকুল ইসলাম। বাড়ি তার বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর গ্রামে। বর্তমানে ঢাকার সুত্রাপুর থানায় কর্মরত।

৩৮ বছর বয়সী এ যুবকের নেশা বিয়ে করা। যেখানেই যান সেখানেই তিনি বিয়ে করেন। এ পর্যন্ত ৭টি বিয়ে করেছেন।

সর্বশেষ তিনি বিয়ে করেন ঝিনাইদহ শহরের পবহাটি এলাকার। ঢাকায় থাকাকালে সেঁজুতি নামের পবহাটির একটি মেয়ের সঙ্গে সপ্তমবারের মতো সংসার শুরু করেন তিনি।

তবে এর মানে এই নয় যে, তার আগের সব স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। বর্তমানে তৃতীয় স্ত্রী পারভীন তার গ্রামের বাড়িতে এবং ষষ্ঠ স্ত্রী রয়েছেন যশোরের বেনাপোলে। ২ স্ত্রীর ঘরে ২টি সন্তানও রয়েছে তরিকুলের।

সম্প্রতি সংসার জীবন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এই যুবক। স্বামীকে ফিরে পেতে আড়াই বছরের মেয়েকে নিয়ে ঝিনাইদহের পবহাটিতে আসেন ষষ্ঠ স্ত্রী হোসনে আরা আক্তার সাথী। তরিকুলকে স্বামী দাবি করলে সেখানে বেঁধে যায় রণক্ষেত্র। স্বামীকে নিয়ে সেঁজুতির সঙ্গে শুরু হয় তার কাড়াকাড়ি। কোনো উপায় না পেয়ে পালিয়ে যান আনসার সদস্য তরিকুল ইসলাম।

নিউজবাংলাকে সাথী জানান, বেনাপোল বন্দরে কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজেকে এতিম পরিচয় দিয়ে তাকে বিয়ে করেন তরিকুল। ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের বিয়ের পর থেকে একসঙ্গেই ছিলেন দুজন। তবে ২০২২ সালে বদলি হয়ে ঢাকায় চলে যান তরিকুল। তার কিছুদিন পর থেকে সাথীর সঙ্গে তার সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ।

তিনি জানান, ঢাকায় বদলি হওয়ার পর থেকে তার ও তাদের সন্তানের কোনো খরচ পাঠাতেন না তরিকুল। এরই মধ্যে সেঁজুতির সঙ্গে তার ইমোতে পরিচয় হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে সেঁজুতিকে বিয়ে করেন তিনি।

সাথী বলেন, ‘গত ঈদে আমার কাছে গিয়ে ৬ দিন ছিল। সেখানে আমাকে ভুলিয়ে আমার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে চলে আসে। তারপর আবার সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। আমার আড়াই বছরের মেয়েটি বাবার জন্য সব সময় কান্নাকাটি করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী ঝিনাইদহ আছে- এমন খবর পেয়ে আমরা ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আর এর মধ্যে আবার পালিয়েছে সে (তরিকুল)। আমি তরিকুল ও সেঁজুতির বিচার চাই।’

এ ব্যাপারে জানতে আনসার সদস্য তরিকুলের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন:
বর এলো ঘোড়ায় চড়ে, কনে গেল পালকিতে করে
মায়ের অন্যত্র বিয়ে, শিশুপুত্রকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা বাবার
দ্বিতীয় বিয়ে, অশান্তিতে ছোট বউকে নিয়ে স্বামীর আত্মহত্যা
দ্বিতীয় বিয়েতে কর ৫ হাজার, চতুর্থ বিয়ে করলে ৫০ হাজার
বিয়ের দিন বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে কনের মৃত্যু

মন্তব্য

p
উপরে