× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বিশেষ
এ যেনো অচেনা এক সুনামগঞ্জ
google_news print-icon

এ যেন অচেনা এক সুনামগঞ্জ

এ-যেন-অচেনা-এক-সুনামগঞ্জ
হেফাজত নেতা মামুনুলকে নিয়ে দেয়া ফেসবুক পোস্টের জেরে শাল্লায় হিন্দুদের বাড়িঘরে চলে হামলা। ছবি: নিউজবাংলা
হাসন রাজা, রাধারমন, দুর্বিন শাহ, শাহ আব্দুল করিম- সুনামগঞ্জের এমন অসংখ্য সাধক গানে-কথায় জীবনভর অসাম্প্রদায়িকতা ও মানবপ্রেমের কথা প্রচার করে গেছেন। আবার এই অঞ্চলে জন্ম নিয়ে বরুণ রায়, আবদুস সামাদ আজাদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতো নেতারা বাম ও আওয়ামী ধারার রাজনীতিতে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অথচ এই সুনামগঞ্জ থেকেই এখন ছড়াচ্ছে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প।

বিস্তৃর্ণ হাওর, হাওরজুড়ে শুষ্ক মৌসুমে ধান আর বর্ষায় মাছ, পাগল করা বাউল সুর আর প্রগতিশীল রাজনীতির জন্য খ্যাতি ছিল সুনামগঞ্জের। তবে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা সামনে নিয়ে এসেছে অচেনা এক সুনামগঞ্জকে।

হেফাজতে ইসলামের সমালোচনা করাই যেন অপরাধ এখানে। সমালোচনা করলেই গ্রেপ্তার, মারধর, হেনস্তা করা হচ্ছে। বাড়িঘরে হামলা-হুমকি তো রয়েছেই। সাম্প্রতিক এ রকম কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে সুনামগঞ্জে। এমনকি একজন সমালোচনা করার কারণে পুরো গ্রামে তাণ্ডবও চালানো হয়েছে। এসব ঘটনায় পুলিশ সব সময় সমালোচনাকারীর বিরুদ্ধে খড়গহস্ত করছে। তবে এতে করে তারা নিজেরাও রক্ষা পাচ্ছে না। থানাতেও ঘটেছে হামলার ঘটনা।

অসাম্প্রদায়িকতা ও সংস্কৃতিচর্চার জন্য বিখ্যাত সুনামগঞ্জে কেন একের পর এক এ রকম ঘটনা ঘটছে? কীভাবে উগ্রবাদী গোষ্ঠী শক্তিশালী হয়ে উঠল হাওরের এই সরল জনপদে?

স্থানীয় পর্যায়ের একাধিক রাজনীতিবিদ, সংগঠক, সংস্কৃতিকর্মী ও সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপ হয় এ নিয়ে। প্রত্যেকেই বলছেন, বামধারার রাজনীতি দুর্বল হয়ে যাওয়া, ভোটের লোভে আওয়ামী লীগ নেতারা আদর্শচ্যুত হওয়া ও ভিন্ন আদর্শের লোকদের দলে ভেড়ানো, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বাধা ও দুর্বল হয়ে পড়া এবং একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে ধর্মীয় উগ্রবাদী গোষ্ঠীর ব্যাপক কর্মকাণ্ড গত দুই দশকে বদলে দিয়েছে সুনামগঞ্জের চিত্র।

অথচ মুক্তিযুদ্ধের পরও এখানে ভোটের মূল লড়াই হতো আওয়ামী লীগ আর বাম দলগুলোর মধ্যে। প্রগতিশীল রাজনৈতিক চর্চার জন্য খ্যাতি ছিল এই অঞ্চলের। খ্যাতি ছিল বাউল ও সহজিয়া দর্শনের সাধকদের উর্বরভূমি হিসেবে।

হাসন রাজা, রাধারমন, দুর্বিন শাহ, শাহ আব্দুল করিম- সুনামগঞ্জের এমন অসংখ্য সাধক গানে-কথায় জীবনভর অসাম্প্রদায়িকতা ও মানবপ্রেমের কথা প্রচার করে গেছেন। আবার এই অঞ্চলে জন্ম নিয়ে বরুণ রায়, আবদুস সামাদ আজাদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতো নেতারা বাম ও আওয়ামী ধারার রাজনীতিতে জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

অথচ এই সুনামগঞ্জ থেকেই এখন ছড়াচ্ছে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প।

একের পর এক ঘটনা

গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে হেফাজতে ইসলামের একটি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতা জুনায়েদ বাবুনগরী ও মামুনুল হক। পরদিন দিরাইয়ের পাশের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাস নামের এক যুবক ফেসবুকে মামুনুল হকের সমালোচনা করে স্ট্যাটাস দেন।

এ যেন অচেনা এক সুনামগঞ্জ
ঝুমন দাসের ফেসবুক স্ট্যাটাসের জেরে ভাঙচুর চালানো হয় ৮৭টি হিন্দুবাড়িতে

এ নিয়ে ওই দিনই শাল্লায় উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয় লোকদের উসকে দেয় উগ্রবাদীরা। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ওই রাতেই ঝুমন দাসকে পুলিশের হাতে তুলে দেন গ্রামবাসী।

পরদিন ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর সকালে ঝুমনের গ্রাম নোয়াগাঁওয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় কয়েক হাজার লোক। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে আশপাশের গ্রাম থেকে মিছিল নিয়ে এসে তারা ভাঙচুর ও লুটপাট করে গ্রামের অন্তত ৮০টি বাড়িতে।

এ ঘটনার রেশ না কাটতেই রিসোর্ট-কাণ্ডের পর ৪ এপ্রিল হেফাজত নেতা মামুনুল হক ও ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলাম মাদানীকে নিয়ে সমালোচনা করায় তোপের মুখে পড়েন দিরাইয়ের এক স্কুলশিক্ষক। ফেসবুকে নয়, স্থানীয় একটি বাজারে চায়ের আড্ডায় মামুনুল হক ও মাদানীর সমালোচনা করেছিলেন স্থানীয় একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসবি গোলাম মোস্তফা। এতেই ক্ষেপে যায় হেফাজত অনুসারীরা।

প্রথমে তর্কাতর্কি, পরে কয়েক শ লোক জড়ো করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিছিল করে তারা। যথারীতি অভিযোগ আনা হয় ধর্ম অবমাননার। পরে ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় প্রশাসন হাজির হয় ঘটনাস্থলে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে ক্ষমা চান স্কুলশিক্ষক।

তবে এতেও ক্ষান্ত হয়নি হেফাজত অনুসারীরা। তারা স্কুলশিক্ষকের পদচ্যুতির দাবি জানায়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গড়ায় যে, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসানকেও সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসককে ফোন করে ওই শিক্ষকের নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশ দিতে হয়।

মামুনুল হক যেদিন নারীসহ ধরা পড়লেন সোনারগাঁয়ে, সেদিনও সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে হেনস্তার শিকার হন যুবলীগের এক নেতা। মামুনুলের নারীসহ রিসোর্টে যাওয়ার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে বিপাকে পড়েন যুবলীগ নেতা এমাদ হোসেন জয়।

এই পোস্টকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আসে। পরদিন আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান তিনি। জয় ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা জজ মিয়ার ছেলে ও ইউনিয়ন যুবলীগের মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক।

এ যেন অচেনা এক সুনামগঞ্জ
যুবলীগের স্থানীয় নেতা এমাদ হোসেন জয়

সর্বশেষ হেফাজতের সমালোচনা করে পোস্ট দিয়ে হেনস্তার শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের নেতা আফজাল খান। তার বাড়ি সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায়। হেফাজতকে নিয়ে পোস্ট দেয়ার পর গত মঙ্গলবার তাকে ধর্মপাশার জয়শ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিসে আটকে রেখে লাঞ্ছিত করা হয়। তাৎক্ষণিক কয়েক শ মানুষ জড়ো হয়ে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে আসে ও উত্তেজিত জনতার কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে।

এদিকে, গত শনিবার রাতে মামুনুল হককে আটক করা হয়েছে এমন খবরে ছাতকে মিছিল বের করে হেফাজতে ইসলামের অনুসারীরা। এই মিছিল থেকে ছাতক থানায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়।

এ রকম একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলছে। ফেসবুকে হেফাজত ও তাদের নেতাদের সমালোচনা করে পোস্ট দিলেই হামলা, হেনস্তা, গ্রেপ্তার ছাড়াও ফেসবুকে গালাগালি ও হুমকির অভিযোগ রয়েছে অসংখ্য।

প্রশাসনের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা

শাল্লার তাণ্ডবের পরই প্রশ্ন ওঠে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। আগের দিন উত্তেজনা জানার পরও নোয়াগাঁওয়ে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি; সেই সুযোগে তাণ্ডব চালানো হয় পুরো গ্রামে।

পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্তে এই অভিযোগের প্রমাণও মিলেছে। এই হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে গত মঙ্গলবার শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হককে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া দিরাই থানার ওসি আশরাফুল ইসলামকে মৌলভীবাজারে বদলি করা হয়েছে।

শাল্লায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে সমালোচনা করায় আটক ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে পুলিশ। এই মামলায় পুলিশের বাদী হওয়া আইনবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন আইনজীবীরা।

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তাহিরপুর, ধর্মপাশা ও দিরাইয়ের ঘটনায়ও। হেফাজতের সমালোচনা করায় তাহিরপুরে যুবলীগ নেতাকে কেন গ্রেপ্তার করা হলো, ধর্মপাশায় ছাত্রলীগ নেতাকে কেন হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে আসা ও ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হলো, এসব প্রশ্ন তুলে তার সমালোচনা করছেন অনেকেই।

এ যেন অচেনা এক সুনামগঞ্জ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপসম্পাদক আফজাল খান

ধর্মপাশায় ছাত্রলীগ নেতাকে হেনস্তার ঘটনায় থানার ওসি দেলোয়ার হোসেনসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে বুধবার বদলি করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা মনে করেন, হেফাজত ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে একটা ভীতির পরিবেশ তৈরি করে। প্রশাসনও এতে ভয় পায়। ফলে তাদের ব্যাপারে নমনীয় থাকে। এই নমনীয়তাকে কাজে লাগায় হেফাজত। এ ছাড়া মাঠ প্রশাসনে অনেকে তাদের অনুসারীও থাকতে পারে।

হেফাজতের সমালোচনা করলেই কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, এমন প্রশ্ন করা হয় সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমানকে। তিনি অযথা কাউকে আটক বা হেনস্তা করা হচ্ছে না জানিয়ে বলেন, অনেক সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে অনেক ভূমিকা নিতে হয়। তবে যা কিছু হচ্ছে আইন মোতাবেকই হচ্ছে।

তিনি বলেন, কাউকে ধরে আনা মানেই সে অপরাধী নয়। পুলিশের কাজ বিচার করা নয়। পুলিশ আটকের পর আদালতে পাঠায়। আদালত যদি মনে করে সে অপরাধী নয় তাহলে ছেড়ে দেয়।

তবে সাম্প্রতিক সুনামগঞ্জের ঘটনাগুলো প্রসঙ্গে পুলিশের সিলেট রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, যেসব ঘটনার ব্যাপারে অভিযোগ উঠেছে সেগুলোর বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। কারও কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, পুলিশ, আইনের বাইরে কেউ কিছু করতে পারবে না। করলে বিপদে পড়বে। এ ব্যাপারে সবাইকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া আছে।

আওয়ামী লীগ-হেফাজত একাকার

১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে যে সমাবেশটি করে হেফাজতে ইসলাম, সরাসরি এর সহযোগিতায় ছিলেন অনেক আওয়ামী লীগ নেতা। আওয়ামী লীগ দলীয় দিরাই পৌরসভার মেয়র বিশ্বজিত রায় ওই সমাবেশে মঞ্চে উঠে বক্তৃতাও করেছেন।

কেবল এই সভায়ই নয়, সম্প্রতি সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ধর্মীয় সভার নামে বেশ কয়েকটি জমায়েত করে হেফাজতে ইসলাম। এতে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন। তার সবগুলোতেই অর্থ, জনবল, স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে এবং অতিথি হয়ে সহযোগিতা করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

সুনামগঞ্জের তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও হেফাজত অনেকটা একাকার হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ দলটির অনেক নেতার। তারা নিজেদের গ্রুপ ভারী করতে জামায়াত-হেফাজতকে দলে ভেড়াচ্ছেন। আবার অনেক নেতা নিজেই হেফাজতের প্রতি ঝুঁকছেন বলে অভিযোগ আছে। এ

ছাড়া দলীয় গ্রুপিং ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে অনেকে হেফাজতকে ব্যবহার করে সুবিধা নেয়ার অভিযোগও আছে।

দিরাইয়ে সমাবেশের পর শাল্লায় হিন্দুপল্লিতে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে, তাতে প্রধান আসামি করা হয়েছে স্থানীয় ইউপি সদস্য শহীদুল ইসলাম স্বাধীনকে। তিনি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে এলাকায় চাউর আছে।

এ ছাড়া ধর্মপাশায় ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ নেতা আফজাল খানকে হেনস্তার ঘটনায় করা মামলার আসামি জয়শ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের (সদ্য বহিষ্কৃত) সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম আলম ও তার ছেলে আল মুজাহিদ।

এ যেন অচেনা এক সুনামগঞ্জ
হেফাজতের সমাবেশ মঞ্চে দিরাই পৌরসভার মেয়র বিশ্বজিৎ রায় (বাম থেকে চতুর্থ)

মুজাহিদের নেতৃত্বেই স্থানীয়দের উসকে দিয়ে এই হেনস্তার ঘটনা ঘটে বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন আফজাল। এ ঘটনায় আবুল হাশেম আলমকে বুধবার বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ। একই দিনে তাকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ।

সুনামগঞ্জে সাম্প্রতিক এ রকম সবগুলো ঘটনায়ই দেখা গেছে আওয়ামী লীগ ও হেফাজত নেতারা একাকার। সমাবেশ কিংবা হামলা- সবই মিলেমিশে করছেন তারা।

সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি এম রশিদ আহমদের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকে। জেলার আওয়ামী রাজনীতির এই অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ভোটের রাজনীতি করি। আদর্শ রাজনীতি থেকে সরে এসেছি। এতে প্রতিক্রিয়াশীলরা শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। একসময় সুনামগঞ্জের প্রগতিশীল নেতারা সারা দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখন সেদিন বদলে গেছে। আমরাই দলে প্রতিক্রিয়াশীলদের জায়গা করে দিচ্ছি।’

একই ধরনের মন্তব্য করেছেন জগন্নাথপুর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মুক্তাদির আহমদ মুক্তাও। তিনি বলেন, ‘রাজনীতির অদূরদরদর্শিতার কারণে এমনটি হচ্ছে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা মূল আদর্শ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। দলে আদর্শবিরোধী অনেকে ঢুকছে। অনেক নেতার মাধ্যমে তারা ঢুকছে। দলীয় আদর্শ প্রচারের চেয়ে নেতারা গড্ডালিকায় গা ভাসান। আবার মুখে ধর্মের বুলি আওড়ে হেফাজতিরা আওয়ামী লীগ নেতা ও স্থানীয়দের সহজেই দলে ভিড়িয়ে নিতে পারে।’

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খাইরুল কবির রুমেন বলেন, ‘সুনামগঞ্জ শান্তির শহর। সংস্কৃতির শহর। কিন্তু কিছু মৌলবাদী এ শহরের শান্তি নষ্ট করতে নানা রকম পাঁয়তারা করছে। এদের মধ্যে আমাদের দলের কিছু লোক তাদের সহযোগিতা করছে। ইতোমধ্যে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ থেকে কয়েকজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং আমাদের মনিটরিং সেল এসব বিষয়ে নজরদারি রাখছে। এমন যাদেরই পাওয়া যাবে, তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’

আছে উসকানি, গুজব

সুনামগঞ্জে সাম্প্রতিক সবগুলো ঘটনার পেছনেই উসকানি দিয়ে ও গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করার অভিযোগ রয়েছে।

এ যেন অচেনা এক সুনামগঞ্জ
শাল্লার ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সুনামগঞ্জের এসপি দাবি করেন, পুলিশ সেদিন নিষ্ক্রিয় ছিল না

শাল্লা, দিরাই, তাহিরপুর কিংবা ধর্মপাশায় ঘটা সাম্প্রতিক সবগুলো ঘটনায় দেখা গেছে, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার পর দ্রুততম সময়ে তা পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তে জড়ো হয়ে যায় হাজারও মানুষ। হেফাজতে ইসলামের সমালোচনাকে ইসলাম ধর্মের সমালোচনা বলেও অপপ্রচার চালানো হয় এবং সমালোচনাকারীকে কোণঠাসা করে ফেলা হয়।

সুনামগঞ্জের একটি থানার ওসি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হেফাজতের নেতারা উসকানি দিয়ে ও গুজব ছড়িয়ে এমন পরিস্থিতির তৈরি করে তাতে এলাকায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। ফলে অনেকের জানমাল রক্ষায় পুলিশ বাধ্য হয়ে সমালোচনাকারীকে ধরে নিয়ে আসে।

সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বাধা

সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য খ্যাতি রয়েছে সুনামগঞ্জের। অসংখ্য বাউল ও লোকশিল্পীর জন্ম এ অঞ্চলে। বছরজুড়েই লেগে থাকত গান-নাচ-নাটকের উৎসব। তবে সাম্প্রতিক একদিকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বাধা দেয়া হচ্ছে, অন্যদিকে হেফাজত ইসলামের বিভিন্ন কর্মসূচিকে উৎসাহিত করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জের সাংবাদিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনের কর্মী শামস শামীম বলেন, ‘সুনামগঞ্জে আগে বছরজুড়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলা হতো। ছোটবেলা পথেঘাটে মেলা, বাউল গানের আসর, ওরস দেখেছি। এগুলোতে সব ধর্মের মানুষ যেত। সব মানুষের সম্মেলনের কথা বলা হতো। এখন এগুলো বন্ধ। এখন এসব আয়োজন করতে গেলেই বাধা আসে। ধর্মান্ধরা বাধা দেয়। প্রশাসন বাধা দেয়। এখন সব বন্ধ করে কেবল ওয়াজ মাহফিল হয়। আর এসব মাহফিলে ধর্মচর্চার চেয়ে উগ্রতা ও উসকানিমূলক কথাই বেশি হয়। এ জন্য প্রশাসন ও সরকার দায়ী।’

সুনামগঞ্জের বাউলশিল্পী লাল শাহ। শাল্লার তাণ্ডবের পর সেখানে ছুটে গিয়েছেন তিনি। লাল শাহ বলেন, ‘আমি যদি মানুষই হতে পারি না, তাহলে মুসলমান হব কীভাবে?’

লাল শাহ বলেন, ‘আমরা এখন মনে করছি নামাজ পড়লে, রোজা রাখলেই বেহেশতে চলে যাব। কিন্তু মানুষ চিনলাম না। বিভিন্ন জনকে ফতোয়া দিলাম। এসব করে তো হবে না। আগে মানুষ হতে হবে। মানুষ চিনতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘মানুষ কেবল ভুল চিন্তা করছে। আমাকে বেহেশতে নেবে আমার সৎকর্ম। আমার দেহের ভেতরে যে প্রকৃত মানুষ আছে সে-ই মানুষ।’

আরও পড়ুন:
ক্ষমতা থেকে নামানো হেফাজতের কাজ নয়: বাবুনগরী
হেফাজতের হাটহাজারী তাণ্ডব: ১৩ দিন পর গ্রেপ্তার ৪
নারায়ণগঞ্জে তাণ্ডব: গ্রেপ্তার আরও ৪ হেফাজত কর্মী
জাসদকে হেফাজতের সতর্কতা
মুন্সিগঞ্জে হেফাজতের কর্মসূচি ঘিরে ১৪৪ ধারা

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বিশেষ
Half day road blockade is underway in Khagrachari

খাগড়াছড়িতে আধা বেলা সড়ক অবরোধ চলছে

খাগড়াছড়িতে আধা বেলা সড়ক অবরোধ চলছে

খাগড়াছড়ির তিন সড়কে আজ বুধবার আধা বেলা সড়ক অবরোধ চলছে। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খাগড়াছড়ি-ঢাকা, খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কে এই অবরোধ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

জানা গেছে, জেলার মানিকছড়ির তবলা পাড়ায় অপ্রীতিকর ঘটনার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও নারী আত্মরক্ষা কমিটি; এই তিনটি পাহাড়ি সংগঠন এই অবরোধের ডাক দিয়েছে। মঙ্গলবার রাতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক স্বপন চাকমার পাঠানো বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।

অবরোধের কারণে তিন সড়কে দুরপাল্লার সব যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে, অবরোধকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলার কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

খাগড়াছড়ি সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, রাস্তায় দুই একটা আগুন দেওয়া ছাড়া এখনও পর্যন্ত কোথাও কোনো ধরনে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ সর্তক স্থানে রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ সেপ্টেম্বর সকালে মানিকছড়ির তবলা পাড়ায় সন্দেহভাজন কয়েকজন ব্যক্তিকে গ্রামবাসী আটক করে। তাদেরকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে প্রতিরোধের মুখে পড়েন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তখন লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ।

মন্তব্য

বিশেষ
Chhatra Shibir Sadiq VP Farhad GS and Mohiuddin AGS elected

ছাত্রশিবিরের সাদিক ভিপি, ফরহাদ জিএস ও মহিউদ্দীন এজিএস নির্বাচিত

ছাত্রশিবিরের সাদিক ভিপি, ফরহাদ জিএস ও মহিউদ্দীন এজিএস নির্বাচিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ভূমিধ্স জয় হয়েছে ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের। নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে সাদিক কায়েম, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে এস এম ফরহাদ এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে মহিউদ্দীন খান বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন থেকে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করেন চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

ফলাফলে দেখা যায়, ছাত্রশিবিরের সাদিক কায়েম ১৪ হাজার ৪২ ভোট পেয়ে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট।

স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থী উমামা ফাতেমা পেয়েছেন ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৮৪ ভোট।

জিএস পদে ছাত্রশিবিরের নেতা এস এম ফরহাদ ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল নেতা তানভীর বারী হামীম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৩ ভোট। এ ছাড়া প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ সমর্থিত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের আবু বাকের মজুমদার ২ হাজার ১৩১ ভোট, আশিকুর ৫২৬ ভোট ও স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের আল সাদী ভূঁইয়া ৪৬ ভোট পেয়েছেন।

এজিএস পদে ছাত্রশিবিরের নেতা মুহা. মহিউদ্দীন খান ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৪ ভোট।

সোমবার বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হলেও সারারাত ধরে ভোটগণনা চলে। রাতেই বিভিন্ন হল থেকে ভোটের ফলাফল আসতে শুরু করে। এর মধ্যেই কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান ও স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্যের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা।

বিশেষ
The government is then a safe return of the national football team trapped in Nepal

নেপালে আটকে পড়া জাতীয় ফুটবল দলের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে তৎপর সরকার

নেপালে আটকে পড়া জাতীয় ফুটবল দলের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে তৎপর সরকার

নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।

নেপালে চলমান বিক্ষোভ পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের দেশে প্রত্যাবর্তন সাময়িকভাবে বিলম্বিত হয়েছে। আজ স্থানীয় সময় দুপুর ৩টায় ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দলের দেশে ফেরার কথা থাকলেও পরিস্থিতির অবনতির কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সব ফ্লাইট বাতিল করে। ফলে দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাবৃন্দ বর্তমানে টিম হোটেলে অবস্থান করছেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বার্তায় জানিয়েছে, দলের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।

বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দলের দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। এ বিষয়ে নেপালস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের প্রেক্ষাপটে দলের নির্বিঘ্ন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নেপালের সেনাবাহিনীর সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

এছাড়া যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া এবং টিম ম্যানেজার আমের খানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে দলের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন এবং দেশে দ্রুত প্রত্যাবর্তনে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন।

মন্তব্য

বিশেষ
Comilla University student Sumaiya and his mother were killed after failing to rape

ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সুমাইয়া ও তার মাকে হত্যা

ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সুমাইয়া ও তার মাকে হত্যা

ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। হত্যার মূল আসামি মো. মোবারক হোসেনকে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঢাকায় পালিয়ে যাবার সময় কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মোবারক হোসেন জেলার দেবিদ্বার উপজেলার কাবিলপুর গ্রামের মৃত. আবদুল জলিলের ছেলে।

পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ঝাড়-ফুক করার সুবাদে মোবারক হোসেন সুমাইয়া আফরিনদের বাসায় যাতায়াত করতেন। গত রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় সুমাইয়াদের ভাড়া বাসা নগরীর কালিয়াজুরি এলাকায় নেলি কটেজ নামক বাসায় প্রবেশ করেন মোবারক। এরই মধ্যে মোবারক তাদের বাসায় ঝাড়ফুঁক করে পানি ছিটিয়ে বেরিয়ে যান। আবার বেলা সাড়ে ১১ টায় ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন। যা সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়।

পুলিশ সুপার বলেন, মোবারক তাদের বাসায় থাকাকালীন সময়ে এক পর্যায়ে সুমাইয়া আফরিনকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় সুমাইয়ার মা বাধা দেন। এতে মোবারক ক্ষুব্ধ হয়ে সুমাইয়াকে এক ঘরে আটকে মা তাহমিনা বেগমকে অন্য একটি রুমে নিয়ে বালিশ চাপায় হত্যা করেন। এরপর সুমাইয়াকে তার রুমে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় সুমাইয়া প্রতিরোধ করলে তাকে গলা টিপে হত্যা করেন। হত্যার পর মোবারক সুমাইয়াদের ঘর থেকে ৪টি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে পালিয়ে যান। তিনি আরো বলেন, ধর্ষণ হয়েছে কিনা বিষয়টি ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

নিহত সুমাইয়া আরফিন (২৩) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকার বাসিন্দা ও কুমিল্লা আদালতের সাবেক হিসাবরক্ষক মৃত নুরুল ইসলামের মেয়ে। গত সোমবার সকালে ওই বাসা থেকে সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

মন্তব্য

বিশেষ
Missing the traditional trap of fishing is getting lost in Comilla

কুমিল্লায় হারিয়ে যাচ্ছে মাছ ধরার ঐতিহ্যবাহী ফাঁদ চাই

কুমিল্লায় হারিয়ে যাচ্ছে মাছ ধরার ঐতিহ্যবাহী ফাঁদ চাই

বর্ষা মৌসুমে টইটম্বুর পানির সঙ্গে উজান থেকে ভেসে আসা দেশীয় মাছ—বজুরী, টেংরা, ঢেলা, দারখিলা, কটকটি, বাইলা, পুটি, সেলবেলা, চান্দা, বৈইচা, পাবদা, শিং, কৈ, টাকি, চেধূরী, এলকোনা, খৈইলশা, ভাংলা, কাটাইড়া, বাতাইয়া, চিংড়ি, বাইম, গুতুমসহ নানান প্রজাতির মাছ একসময় খাল-বিল-জমিতে ডিম ছাড়ার জন্য ছুটে আসত। সেই সময়ে গ্রামের ছেলেরা মাছ ধরার জন্য নানান ফাঁদ পাতত। এর মধ্যে অন্যতম ছিল আনতা, বেউর ও চাই, আনতা। যা আজ বিলুপ্তির পথে।

তবে এখনো কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রামচন্দ্রপুর আনতা হাট সেই পুরনো স্মৃতি ধরে রেখেছে। রামচন্দ্রপুর, দক্ষিণ বাঙ্গরা ও মালাই বাঙ্গরা বাজার, হাটখোলা, ইলিয়াটগঞ্জ, চান্দিনার নোয়াবপুর, বর্ষা মৌসুমে বাঁশের তৈরি আনতা বিক্রির ধুম পড়ে যেত কিন্তু পূর্বে ন্যায় দেশীয় মাছ না থাকায় আস্তে আস্তে এসব মাছ ধরার ফাঁদ তৈরিতে কৃষক, জেলে আগ্রাহ হাচ্ছে। শুধুই মাছ ধরার ফাঁদ নয়, আনতা হয়ে উঠেছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ, যা এ সময় স্থানীয়দের মধ্যে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দেয়।

বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ও মানভেদে প্রতিটি আনত ৩০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বর্ষার শেষ দিকে এ ফাঁদের চাহিদা আরও বেড়ে যেত। ব্যবসায়ীরাও মৌসুমে ভালো লাভের আশা করত। এন তেমন একটা চোখে পড়ে না, রামচন্দ্রপুরের আনতা ব্যবসায়ী কবির হোসেন বলেন, ‘প্রতি হাটে আমি ৬০ থেকে ৭০টি আনতা বিক্রি করি কিন্তু যখন মাছের ভরা মৌসুম ছিল তখন সারাবছর লোক নিয়োগ করে বিভিন্ন বাড়িতে আনতা তৈরি করতাম। দূর-দূরান্ত থেকেও ক্রেতারা আসত। আর তেমন বিক্রি না থাকায় ব্যাবসা অনেক কমে গেছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে মাছ জমির আইল ধরে নামতে শুরু করে, তখন আইলে আনতা পুঁতে রাখলেই সহজে মাছ ধরা পড়ে। বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় আমরা খুশি হতাম, আমাদের দাবি আনতা, বেউর, চাই, উছা, পেলুন।এই ফাঁদ তৈরিতে সরকার ভর্তুকি দিয়ে অল্প আয়ের মানুষ দের বাচিয়ে রাখা উচিত। পাশাপাশি বাঁশ শিল্প বেচে থাকবে।

স্থানীয় মাছ বিক্রেতা মতিন মিয়া জানান, তিনি প্রতি মৌসুমে ৫-৬টি আনতা কেনেন। আনতা দিয়ে প্রতিদিন ২-৩ কেজি মাছ ধরা পড়ে। নিজেদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে তিনি ৩০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন।

শুধু মাছ ধরার ফাঁদ নয়, আনতা হয়ে উঠেছে অনেকের জীবিকার উৎস। আনতা তৈরি ও বিক্রি করে বহু পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছে। আবার এর সাহায্যে ধরা মাছ বিক্রি করে অনেকেই বাড়তি আয় করছে। ছোট-বড় সবাইকে মাছ ধরার আনন্দে মাতিয়ে তোলে এই দেশীয় কৌশল, যা আজও মুরাদনগরের গ্রামীণ জীবনের অনন্য ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।

মন্তব্য

বিশেষ
Tausif returns to the Bachelor Point series

‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিকে ফিরছেন তৌসিফ!

‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিকে ফিরছেন তৌসিফ!

‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিকের ৫ নম্বর সিজন চলছে। ভক্তদের মুখে মুখে কাজল আরেফিন অমি পরিচালিত এ সিরিজটি। নাটকটির শুরু থেকেই সিজন ১, ২, ৩ এবং ৪ দিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত হন নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি ও তার টিম। ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ সিজনগুলোর ব্যাপক সাফল্যের পর এবার ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এর ফাইভ সিজন প্রচার হচ্ছে।

এই সিরিজে কাবিলা, শুভ, জাকির, শিমুল, পাশা, আরেফিন, হাবু ভাই নামের চরিত্রগুলোর মতো নেহাল চরিত্রটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ সর্বদা তুঙ্গে। যেই নেহাল চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তৌসিফ মাহবুব। এত দিন ব্যক্তিগত কিছু কারণে এ সিরিজ থেকে দূরে ছিলেন। তবে এ সিজনে ফিরছেন তিনি নেহাল হয়েই, যেটা তিনি নিজেই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

বললেন, ‘দর্শক সর্বদা চান নেহাল চরিত্রটি ফিরে আসুক। তাই ফের এ চরিত্রটির মাধ্যমে ব্যাচেলর পয়েন্টে দর্শক আমাকে দেখতে পাবেন।’ এর আগে নির্মাতা অমি বলেছিলেন, বাস্তব জীবনের মতোই হয়তো ভবিষ্যতে কোনো একসময় দেখা যাবে তাদের আবার একসঙ্গে। তাই সেই অপেক্ষার পালা মনে হয় শেষ হলো তৌসিফের ফেরার মাধ্যমে।

মন্তব্য

বিশেষ
Gopargaon

গফরগাঁওয়ে পূবালী ব্যাংকের বৃক্ষরোপণ ও কুইজ প্রতিযোগিতা

গফরগাঁওয়ে পূবালী ব্যাংকের বৃক্ষরোপণ ও কুইজ প্রতিযোগিতা

ময়মনসিংহর গফরগাঁওয়ে পূবালী ব্যাংক (পিএল সি) এর স্কুল ব্যাংকিং কর্মশালার আওতায় ঐতিহ্যবাহি বিদ্যাপীঠ গফরগাঁও মহিলা কলেজে বৃক্ষরোপণ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার ( ৯সেপ্টন্বর) ১১টায় মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে পূবালী ব্যাংকের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়।
বৃক্ষরোপণ শেষে মহিলা কলেজ হল রুমে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন গফরগাঁও মহিলা কলেজ অধ্যক্ষ মো. আব্দুল খালেক,পূবালী ব্যাংক (পিএলসি) গফরগাঁও উপশাখা ব্যবস্থাপক মো. আসাদুজ্জামানসহ কলেজের শিক্ষক- শিক্ষার্থী ও পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ। কলেজ অধ্যক্ষ আবদুল খালেক ব্যাংক কতৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গাছ আমাদের জীবনের অংশ,গাছ ছাড়া আমাদের জীবন ও পরিবেশের কথা চিন্তাও করতে পারিনা,অধিক পরিমানে গাছ লাগান প্রাকৃতিক বিপর্যয় হতে দেশকে বাচাঁন।
আলোচনা শেষে কলেজ শিক্ষার্থীদে মাঝে কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ।

মন্তব্য

p
উপরে