একাত্তরে হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার ১১ বছর পেরিয়ে ১২ বছরে পদার্পণ করল বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ)। প্রায় এক যুগে ট্রাইব্যুনাল থেকে যুদ্ধাপরাধে ৪২টি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সাজাপ্রাপ্ত আসামির সংখ্যা ১০৩ জন; এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের সাজা হয়েছে ৭১ জনের।
ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশার জায়গা অনেকখানি পূরণ হয়েছে এমন দাবি করছে প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা। তবে হতাশার কথাও বলছেন বিচারপ্রার্থী, সাক্ষীসহ সংশ্লিষ্টরা।
ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার এক যুগে প্রত্যাশ-প্রাপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যে উদ্দেশ্য নিয়ে ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছিল তার অধিকাংশই বাস্তবায়িত হয়েছে। এখনও যেসব মামলায় বিচার চলছে সেগুলো শেষ হলে তবেই পূর্ণতা পাবে।’
আপিল বিভাগের সাবেক এই বিচারপতি বলছেন, দেশের মানুষ যে ধরনের আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ট্রাইব্যুনালের দাবি করেছিলেন, তার ফলাফল তারা পেয়েছেন। বিভিন্ন বাধাবিপত্তির পরও ট্রাইব্যুনাল থেকে সাফল্যজনক বিচারে অগগ্রতি হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
অপ্রতুল জনবল ও অবকাঠামোগত সংকট নিয়ে এত অল্প সময়ে এতগুলো মামলার রায়কে অবিস্মরণীয় সাফল্য হিসেবে দেখছেন তদন্ত সংস্থার প্রধান সানাউল হক। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ঘটনার ৪০ বছর পর বিচার শুরু করেও বিচারে যে অগগ্রতি হয়েছে, তা বিশ্বের মধ্যে একটি ইতিহাস হয়েছে বলে আমি মনে করি। এই বিচারের মাধ্যমে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর হয়েছে। আর এ জন্য আমরা মনে করি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি এবং সাক্ষীদের সাহসী ভূমিকার অবদান রয়েছে।’
আরও যেসব মামলা বিচারাধীন এবং তদন্তাধীন আছে সেগুলো দ্রুত সময়ে শেষ হবে বলে প্রত্যাশা করেন সানাউল হক। তবে সাক্ষী সুরক্ষা আইন না থাকায় ভবিষ্যতে সাক্ষীরক্ষায় বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে বলেও মনে করছেন তিনি।
তদন্ত সংস্থার প্রধান বলেন, ‘ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত শতভাগ সক্ষমতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে তদন্ত সংস্থা। আমাদের দেয়া প্রত্যেকটি মামলার প্রতিবেদন অনুযায়ী আসামিদের সাজা হয়েছে। শুধু তাই নয়, শতভাগ সাজা হয়েছে। এটাই আমাদের তদন্ত সংস্থার অর্জন।’
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিমের জ্যেষ্ঠ সদস্য প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একাত্তরে যারা অপরাধ করেছে তাদের বিচার হয়েছে। কিছু কার্যকর হয়েছে। এখনও চলছে। আমরা যে বিচার করতে পেরেছি, এটাই আমাদের সফলতা।
‘অনেক প্রতিকূলতা দূর করে আমরা বিচারকাজকে এগিয়ে নিয়েছি। এই বিচারের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে নিজেকে সার্থক বলেও মনে করছি। যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা অনেকটা এগিয়ে আছি। তাতে আমরা সন্তুষ্ট।’
হায়দার আলী জানান, এখনও যে পরিমাণ মামলা পেন্ডিং আছে সেগুলো শেষ করতে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল চালু করা দরকার। করোনার কারণে বিচারে কিছুটা দীর্ঘসূত্রতাও তৈরি হয়েছে।
তবে ট্রাইব্যুনালের অর্জন নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘প্রচুর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে, নাগরিক আন্দোলনের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা হয়েছে। সরকার প্রথম দিকে এর প্রতি আন্তরিক থাকলেও রহস্যজনকভাবে পরে কেন জানি ভাটা পড়েছে।
‘হঠাৎ করে দুটি ট্রাইব্যুনাল থেকে একটি ট্রাইব্যুনাল করে দেয়া হলো। এরপর বিভিন্ন সময় প্রসিকিউটরসহ জনবল এবং লজিস্টিক সংকট হলেও সেটি আর পূর্ণ করা হয়নি। এখন পুরো বিষয়টি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। ট্রাইব্যুনাল নিয়ে মানুষের মধ্যে হতাশারও সৃষ্টি হয়েছে।’
শাহরিয়ারের মতে, ব্যক্তি পর্যায়ে কিছু বিচার হলেও সংগঠন হিসেবে পাকিস্তান হাইকমিশন এবং জামায়াতের বিচার অধরাই রয়ে গেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কারণেই শেখ হাসিনা ইতিহাসে বেঁচে থাকবেন। দ্রুত এ বিচার শেষ করতে বিভাগীয় পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা দরকার।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে ২০১০ সালের ২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার। প্রথমে একটি ট্রাইব্যুনাল থাকলেও বিচারকাজে গতি আনতে ২০১২ সালের ২২ মার্চ আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। এরপর দুজন বিচারপতির নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১ ও ট্রাইব্যুনাল ২ নাম নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে। এরপর ট্রাইব্যুনালে মামলার সংখ্যা কমে এলে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুটি ট্রাইব্যুনালকে একীভূত করে পুনরায় একটি করা হয়। এরপর থেকে একটি ট্রাইব্যুনালে বিচারকাজ চলছে।
বর্তমানে বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে একটি ট্রাইব্যুনাল চলমান আছে।
প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর এখন পর্যন্ত ৪২টি মামলায় ১০৩ জনের বিরুদ্ধে রায় হয়েছে। বিচারাধীন আছে ৩৮টি মামলা, যার আসামিসংখ্যা ২৩২ জন। এ ছাড়া আপিলে নিষ্পত্তি হয়েছে ১০টি মামলা। যার মধ্যে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।
ফাঁসি কার্যকর ছয়জনের
ফাঁসি কার্যকর হয়েছে জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা, মুহম্মদ কামারুজ্জামান, সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, জামায়াতের সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামী ও জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর।
এর মধ্যে কাদের মোল্লাকে ট্রাইব্যুনাল যাবজ্জীবন সাজা দিয়ে রায় দেয়। এ রায়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ। আন্দোলনের মুখে আইন সংশোধন করে সাজা বাড়াতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। ওই আপিলের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ কাদের মোল্লাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
জামায়াতের আরেক নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকেও ট্রাইব্যুনাল ফাঁসির রায় দিয়েছিল। পরে আপিল বিভাগ তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়। এরপর থেকে জামায়াতের এই নেতা কারাবাস করছেন।
কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর হয় ২০১৫ সালের ১১ এপ্রিল। একই বছরের ২২ নভেম্বর ফাঁসিতে ঝোলানো হয় আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন কাদেরকে। পরের বছরের ১০ মে ফাঁসি দেয়া হয় মতিউর রহমান নিজামীকে। ২০১৬ সালে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় মীর কাসেম আলীর।
ট্রাইব্যুনাল থেকে মৃত্যুদণ্ড হয়েছে ৭১ জনের। আমৃত্যু কারাবাস দেয়া হয়েছে ২২ জনকে, যাবজ্জীবন সাজা হয় চারজনের। এ ছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয় ছয়জনের এবং খালাস পান একজন।
সালভিত্তিক রায়
২০১০ সালের ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা হলেও রায় ঘোষণা শুরু হয়েছে ২০১৩ সাল থেকে। এর আগে মামলার তদন্ত শুরু হয়ে অভিযোগ গঠন, তারপর সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ। এরপর উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি পলাতক আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির রায়ের মধ্য দিয়ে রায় শুরু হয়। ওই বছরে দুটি ট্রাইব্যুনাল থেকে মোট ৯টি রায় ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০১৪ সালে ছয়টি, ২০১৫ সালে ছয়টি, ২০১৬ সালে ছয়টি, ২০১৭ সালে দুইটি, ২০১৮ সালে ছয়টি, ২০১৯ সালের ছয়টি এবং ২০২১ সালে (২৩ মার্চ পর্যন্ত) একটি। করোনার কারণে ২০২০ সালে ট্রাইব্যুনাল থেকে কোনো মামলার রায় আসেনি।
ট্রাইব্যুনালের রায়ে মৃত্যুদণ্ড পেয়ে বর্তমানে আপিলে বিচারের অপেক্ষায় আছেন ৩০ জন। তারা হলেন জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম (ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে), জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ মো. কায়সার, মোবারক হোসেন (আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা), আব্দুল জব্বার, মাহিদুর রহমান, সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাস্টার, খান মো. আকরাম হোসেন, ফোরকান মল্লিক, ওবায়দুল হক (তাহের), আতাউর রহমান ননী, মজিবুর রহমান (আঙ্গুর মিয়া), মহিবুর রহমান ওরফে বড় মিয়া, সামসুদ্দিন আহম্মেদ, শামসুল হক, এস এম ইউসুফ আলী, মো. সাখাওয়াত হোসেন, বিল্লাল হোসেন, মো. মোসলেম প্রধান, মো. আব্দুল লতিফ, ইউনুছ আহমেদ, আমীর আহম্মেদ ওরফে আমীর আলী, মো. জয়নুল আবেীদন, মো. আব্দুল কুদ্দুস, হামিদুর রহমান আজাদ, এ গনি ওরফে এ গনি হাওলাদার, মো. রিয়াজ উদ্দিন ফকির, মো. আকমল আলী তালুকদার, মো. ইসহাক সিকদার, মো. আব্দুল কুদ্দুস ও মো. মাহবুবুর রহমান।
অন্যদিকে তদন্ত সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, তদন্তাধীন আছে ২৮টি মামলা। যার আসামিসংখ্যা ৪০ জন। তদন্ত সংস্থার কাছে অভিযোগ জমা রয়েছে ৬৯০টি।
আরও পড়ুন:দেশের চারটি বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, অন্য অঞ্চলগুলোতে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
বৃষ্টিপাত নিয়ে বলা হয়, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আজকের তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আরও পড়ুন:স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে ২০২৬ সালে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে কৌশল প্রণয়ন করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সূত্র: বাসস
রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিৎ কর্মকার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, ‘এলডিসি থেকে উত্তরণে সম্ভাবনার পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে সমন্বয়ের কোনো সমস্যা নেই। এটি কোনো নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়, বরং এটি একটি সার্বিক সমস্যা।’
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) মো. আব্দুস সালাম ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার বক্তব্য দেন। এ সময় পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বৈঠকে মোট ৮ হাজার ৪২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়সাপেক্ষ মোট ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে ৭ হাজার ৯৩৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা সরকার দেবে এবং বাকি ৪৮৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে আসবে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কিছু নির্দেশনা প্রকাশ করে পরিকল্পনা সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী মিসরের কায়রোতে বাংলাদেশ চ্যান্সারি কমপ্লেক্স ও আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য ১৬৬ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দেয়ার সময় প্রয়োজনীয় বিশ্রাম কক্ষ রাখা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেন স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে পরিষেবা পান সেজন্য পর্যাপ্তসংখ্যক বুথ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের জেলাগুলোতে গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়নে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রামে নদীভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং রাস্তা ও সেতু নির্মাণের সময় বন্যার বিষয়টি বিবেচনা করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স (তৃতীয় পর্যায়) নির্মাণের জন্য ৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকার প্রকল্প সম্পর্কে সত্যজিৎ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে বাকি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সগুলোর নির্মাণ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে তিনি উপকূলীয় এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের পাশাপাশি সোলার সিস্টেম রাখার জন্য একটি ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন।
পরিকল্পনা সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্প সমাপ্তির পথে সেগুলোর সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসেছেন।
প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা কমিশনকে এসব প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করতে বলেন, যাতে করে এগুলো দ্রুত সম্পন্ন করা যায়।
মিরপুরে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার জন্য ১১৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সেখানে নারীদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব করতে না চাইলেও মাঝে মাঝে জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতা ও ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে বিলম্ব হয়।
তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেয়া হচ্ছে।
সভায় অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্পগুলো হল- অতিরিক্ত ২৮৮ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০টি মিটার গেজ ডিজেল ইলেক্ট্রিক লোকোমোটিভ এবং ১৫০টি মিটার গেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ সংগ্রহ (প্রথম সংশোধিত); ৪৮১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে কাশিনাথপুর-দাশুরিয়া-নাটোর-রাজশাহী-নবাবগঞ্জ-কানসাট-সোনামসজিদ-বালিয়াদিঘি সীমান্ত জাতীয় মহাসড়কের যথাযথ মান উন্নয়ন; ৩৭১ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে সরকারি মৎস্য খামারের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প (প্রথম পর্যায়); ২৩২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার জেলায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টারের উন্নয়ন; অতিরিক্ত ১৬৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো, উন্নত দক্ষতা ও তথ্যের প্রবেশাধিকারের মাধ্যমে দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য টিকে থাকার সামর্থ বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত ১ হাজার ৪৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে আটটি বিভাগীয় শহরে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার, হার্ট ও কিডনি রোগের চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা (প্রথম সংশোধিত)।
আরও পড়ুন:কোনো ধরনের দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ।
তিনি বলেছেন, ‘আমি কোনো দুর্নীতি করব না। কোনো দুর্নীতি প্রশ্রয়ও দেব না। আমি মানুষ হিসেবে ভুল করতেই পারি, তবে ভুল হলে ধরিয়ে দেবেন। আমার কাজের গতি যেন ত্বরান্বিত হয়, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নতুন উপাচার্য।
দায়িত্ব নিয়েই সবার প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আমি আপনাদেরই লোক, আমি বঙ্গবন্ধুর লোক, আমি প্রধানমন্ত্রীর লোক। আমাকে সবাই সহযোগিতা করবেন, ভুল হয়ে ধরিয়ে দেবেন। তবে কেউ আমাকে পিছু টানবেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমি কারও অন্যায় আবদার শুনব না। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চাই। প্রশাসনিক ক্ষমতা দেখাতে নয়, আমি আপনাদের বন্ধু হয়ে কাজ করতে চাই। আমি আপনাদের পাশে থেকে সব সমস্যা সমাধান করব।’
চিকিৎসকদের উদ্দেশে নতুন উপাচার্য বলেন, ‘আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করলেই আমি সবচেয়ে খুশি হব। অন্যকিছু দিয়ে আমাকে খুশি করা যাবে না। কেউ দায়িত্ব পালন করতে না পারলে দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে। যিনি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে পারবেন, তিনিই দায়িত্ব নেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ আমার বন্ধু। তিনি আমাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বিদায় নিয়েছেন। আমি শারফুদ্দিন আহমেদকে শুভেচ্ছা জানাই।’
ডা. দীন মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি সুনির্দিষ্ট কোনো গ্রুপের লোক নই। আমি কোনো ধরনের গ্রুপে যেতে চাই না। এ বয়সে আমার কোনো গ্রুপিংয়ের প্রয়োজন নেই। আমাকে যে আস্থা এবং বিশ্বাস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানে পাঠিয়েছেন, আমি সেটাকে মূল্যায়ন করতে চাই।’
উদ্বোধনের দীর্ঘদিন পরও সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু না হওয়া প্রসঙ্গে নতুন উপাচার্য বলেন, ‘সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালু করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ।’ এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।
উপাচার্য বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমার দায়বদ্ধতা আছে। আমি বিদেশ থেকে অভিজ্ঞ চিকিৎসক-ট্রেইনারদের নিয়ে এসে আমাদের চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। আশা করি, সেবায় প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের অন্যতম জায়গায় অবস্থান করবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়টিকে বিশ্বের অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা উপাচার্য হিসেবে তার একমাত্র অ্যাজেন্ডা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার প্রদান করেনি বলে শিক্ষামন্ত্রীর দাবির একদিন পর এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইউনূস সেন্টার।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে ইউনূস সেন্টার জানিয়েছে, ২০২৪ সালের ১৪-১৬ মার্চ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত বাকু ফোরাম একাদশে বিশিষ্ট বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিজামি গানজাভি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার থেকে অধ্যাপক ইউনূসকে পাঠানো বাকু ফোরামের অফিশিয়াল অনুষ্ঠানসূচিতেও অধ্যাপক ইউনূস ইউনেস্কোর পুরস্কার গ্রহণ করবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। অধ্যাপক ইউনূসকে বাকু ফোরামের সমাপনী নৈশভোজে যোগদানের বিষয়টি বিশেষভাবে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, যাতে তিনি ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কারটি গ্রহণের জন্য মঞ্চে সশরীর উপস্থিত থাকেন।
ইউনূস সেন্টার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনেস্কোর পুরস্কারের বিষয়টি উল্লেখ করে। অধ্যাপক ইউনূসকে প্রদত্ত ‘ট্রি অফ পিস’ ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীকে প্রদত্ত পদকের একই ভাস্করের একই ভাস্কর্য।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এর আগে ২০২৩ সালের জুনে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইউনেস্কোর প্রধান কার্যালয় পরিদর্শনের সময় ইউনেস্কো এবং অধ্যাপক ইউনূস প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সংগঠন ইউনূস স্পোর্টস হাবের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল ইউনেস্কোর ফিট ফর লাইফ ফ্ল্যাগশিপের অধীন টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে উভয় প্রতিষ্ঠানের একসঙ্গে কাজ করে যাওয়া।
এর আগে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ইউনেস্কো কমিশনের চেয়ারম্যান মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, “নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে ইউনেস্কো ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার দেয়নি।”
তিনি বলেন, “আজারবাইজানের গঞ্জাভি ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ড. ইউনূসকে ইসরাইলের একজন ভাস্কর ‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কারে ভূষিত করেন।”
ইউনেস্কো থেকে পুরস্কার পেয়েছেন বলে ড. ইউনূস যে দাবি করেছেন তা অসত্য বলে দাবি করেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন:শান্তিতে নোবেলজয়ী হয়েও ড. ইউনূস ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, হত্যাযজ্ঞে নিশ্চুপ থেকে এবং একজন ইসরায়েলির দেয়া পুরস্কার নিয়ে ড. ইউনূস প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন। আর ইউনূস সেন্টার এটিকে ইউনেস্কোর পুরস্কার উল্লেখ করে মিথ্যাচার করছে, যা খুবই দুঃখজনক।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ইউনূস সেন্টারের মিথ্যাচারে আমি বিষ্মিত, হতবাক। সম্প্রতি আজারবাইজানের বাকুতে একটি সম্মেলনে মিজ হেদভা সের নামে একজন ইসরায়েলি ভাস্বর ড. ইউনুসকে একটি পুরস্কার দিয়েছেন। এ সম্মেলনে ইউনেস্কো কোনোভাবে জড়িত ছিল না।
‘এই পুরস্কার ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে তো নয়ই, একজন ব্যক্তির পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। আর ইউনূস সেন্টার সেটিকে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে বলে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করেছে। তবে এটিই প্রথম নয়, এর আগেও এ ধরনের মিথ্যাচার ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ড. ইউনূস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। ওদিকে গাজায় আজ নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চলছে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। এ নিয়ে তিনি একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি, প্রতিবাদ করেননি।
‘বরং এই সময়ে তিনি একজন ইসরায়েলির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। এর অর্থ কি এটাই নয় যে ড. ইউনূস প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন? এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’
সীমান্ত হত্যায় বিজিবি’র মাধ্যমে প্রতিবাদ
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২৫ মার্চ মধ্যরাতে লালমনিরহাট ও ২৬ মার্চ ভোরে নওগাঁ সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় বিজিবি’র মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো এবং সীমান্তে পতাকা বৈঠকও হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেকদিন ধরেই ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে আসছি। সম্প্রতি ভারত সফরেও এ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে গুরুত্বসহ আলোচনা করেছি। সেই প্রেক্ষিতে সীমান্তে এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নন-লেথাল বা প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। রাবার বুলেটে অনেকে আহত হন; কিন্তু প্রাণহানি কমে এসেছে। তবে আমাদের লক্ষ্য প্রাণহানিকে শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা।’
নাবিক ও জাহাজ উদ্ধারে নানামুখী তৎপরতা চলছে
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের নিরাপদে উদ্ধার ও জাহাজটিকে মুক্ত করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’
তিনি বলেন, ‘জাহাজ সম্পর্কে শুধু এটুকু বলতে চাই, নাবিকদের মুক্ত করার জন্য আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগে আছি। আমরা নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছি। আমরা অনেকদূর এগিয়েছি।’
জাহাজে খাদ্য সংকট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, জাহাজটিতে খাদ্য সংকট নেই। এর আগে তিন মাস ধরে জলদস্যুদের কবলে থাকা অন্য জাহাজেও খাদ্য সংকট ছিল না।
আরও পড়ুন:ঈদের পর সমাধান করা হবে- স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন আশ্বাসে এক মাসের জন্য আন্দোলন থামালেন বেতন-ভাতা বাড়ানো ও বকেয়া ভাতা পরিশোধসহ চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালনকারী পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসকরা যে দাবিগুলো করেছেন সেগুলো যৌক্তিক। চিকিৎসকরা হাসপাতালকে বাঁচিয়ে রাখে। তাদের বেতন বাড়ানোর বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, চিকিৎসকদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন হবে। তারা কাজে যোগদান করুক।’
বিষয়টি কতদিনে বাস্তবায়িত হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কিছুদিন তো লাগবেই। তবে ঈদের পর হয়তো বলতে পারব, কতদিনের মধ্যে বেতন বাড়বে।’
এর আগে গত শনিবার (২৩ মার্চ) চার দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
আগামী মাসে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির বাংলাদেশ সফরে কিছু বিষয়ে গুরুত্ব পাবে বলে ইউএনবিকে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।
ওই সূত্র বার্তা সংস্থাটিকে জানায়, শেখ তামিমের সফরে জনশক্তি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৃহত্তর সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায় উভয় দেশ।
কাতারের আমিরের সফরে দুই দেশের মধ্যে প্রায় ডজনখানেক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে জানিয়ে সূত্রটি বলেছে, সফরকালে এসব এমওইউ ও চুক্তি সই করা হবে।
ইউএনবির প্রতিবেদনে বলা হয়, কাতারের আমিরের দুই দিনের সফরটি হতে পারে আগামী ২১ থেকে ২২ এপ্রিল।
বার্তা সংস্থাটি জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমিরের বৈঠকের পর যেসব এমওইউ ও চুক্তি সই হবে, সেগুলো নিয়ে দুই পক্ষ এখন কাজ করছে। সফরের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে আন্তমন্ত্রণালয় সভা করেছে।
গত বছরের মার্চে কাতারের রাজধানী দোহায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বিষয়ে জাতিসংঘের সম্মেলন এলডিসি-৫-এর পার্শ্ববৈঠকে কাতারের আমির শেখ তামিমের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ওই বৈঠকে কাতারের কাছে বিশেষ করে এলএনজি সরবরাহে সহযোগিতার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের পর একই বছরের ৪ মার্চ বাংলাদেশকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় কাতার।
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দোহায় বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক মিশন চালু করে। ১৯৮২ সালে ঢাকায় কূটনৈতিক মিশন খোলে কাতার।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য