× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বিশেষ
হেফাজত জড়ো মসজিদের মাইকে পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন
google_news print-icon
মামুনুলকে নিয়ে স্ট্যাটাসে শাল্লায় হামলা

হেফাজত জড়ো মসজিদের মাইকে, পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন

হেফাজত-জড়ো-মসজিদের-মাইকে-পুলিশের-ভূমিকায়-প্রশ্ন
কয়েক হাজার মানুষ দা-লাঠিসহ মিছিল নিয়ে এসে ভাঙচুর করে ৮৭টি হিন্দু বাড়ি। ছবি: নিউজবাংলা
‘হামলাকারীদের বেশির ভাগই এসেছে দিরাইয়ের নাচনি গ্রাম থেকে। সকালে গ্রামের মসজিদে মাইকিং করে এই মিছিলে অংশ নেয়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানানো হয়।’

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা করতে হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের সমর্থকদের জড়ো করা হয় মসজিদে মাইকিং করে।

হেফাজত নেতারা আশ্বাস দিয়েছিলেন, তারা কেবল মিছিল করে চলে আসবেন। আর এই কথায় বিশ্বাস করে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ সতর্কতামূলক কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি।

হামলার পর এখন এলাকার নিরাপত্তায় নানা ব্যবস্থার কথা বলা হলেও আগের নিষ্ক্রিয়তার জুতসই কোনো জবাবই নেই কারও কাছে।

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলা হিন্দু অধ্যুষিত। উপজেলার প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ সনাতন ধর্মাবলম্বী। এর মধ্যে হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের সবাই এই ধর্মের অনুসারী। গ্রামে ঘর আছে শ খানেক। কিন্তু একটিও পাকা বাড়ি নেই। এখানকার বাসিন্দাদের সবাই পেশায় কৃষি ও মৎস্যজীবী।

এই গ্রামের এক তরুণ মঙ্গলবার হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। তাতে মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানো ও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতার অভিযোগ আনা হয়।

গত ১৫ মার্চ শাল্লার পাশের দিরাইয়ে সমাবেশ করে হেফাজত। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা মামুনুল ওই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। পরদিনই নোয়াগাঁও গ্রামের ওই তরুণের স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে।

মঙ্গলবার রাত থেকেই এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকালে এলাকায় বিক্ষোভের ঘোষণা দেয় হেফাজত।

উত্তেজনা আঁচ করতে পেরে নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তারা ফেসবুকে পোস্ট দেয়া তরুণকে রাতেই পুলিশের হাতে তুলে দেন।

তবে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আর আতঙ্ক সত্ত্বেও ওই গ্রামের নিরাপত্তায় প্রশাসনের কোনো ‘উদ্যোগ’ ছিল না। ছিল না পুলিশের বাড়তি ‘নজরদারি’।

যে কারণে বুধবার সকালে নোয়াগাও গ্রামে হামলার সময় মামুনুল হকের অনুসারীদের কোনো রকম বাধার মুখেই পড়তে হয়নি। কয়েক হাজার মানুষ দা-লাঠিসহ মিছিল নিয়ে এসে ভাঙচুর করে ৮৭টি হিন্দু বাড়ি। এসব ঘর থেকে টাকাপয়সা-স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় তারা।

হামলাকারীরা ঘর তছনছ করে দিয়েছে অসীম চক্রবর্তীর। তার অভিযোগ, পুলিশ আগে থেকেই ব্যবস্থা নিলে এমন তাণ্ডব ঘটত না।

হেফাজত জড়ো মসজিদের মাইকে, পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন
হামলার পর ঘর ছাড়েন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা

স্থানীয় একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করেন, হামলার পরও হামলাকারীদের ধরতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি পুলিশ। বরং তাদের নির্বিঘ্নে চলে যেতে পুলিশ সহায়তা করে।

স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, হেফাজত নেতাদের আশ্বাসে বিশ্বাস রেখে এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তবে পুলিশ সব সময় সতর্ক ছিল।

শাল্লার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল-মুক্তাদির হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ফেসবুক স্ট্যাটাস ঘিরে মঙ্গলবার রাত থেকেই উত্তেজনা ছিল। উত্তেজনার খবর পেয়ে রাতেই আমরা হেফাজতে ইসলামের নেতাদের সঙ্গে বসি। তখন তারা মিছিল না করার আশ্বাস দিয়েছিলেন।

‘এমন আশ্বাসে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে। কিন্তু সকালে হঠাৎই মিছিল বের করে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় কারা জড়িত তা তদন্ত করে বের করা হবে।’

একই দাবি করে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, ‘আমরা রাতে হেফাজত নেতাদের সঙ্গে বসেছি। তারা মিছিল করবেন না কথা দিয়েছিলেন।

‘সকালে আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যখন পুষ্পস্তবক অর্পণ করছিলাম, তখনই মিছিলের খবর পাই। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মিছিলকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু কিছু লোক নদী সাঁতরে পার হয়ে বাড়িঘরে হামলা চালায়। তখন পুলিশের করার কিছু ছিল না।’

হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের স্থানীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘রাতেই উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। সকালে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কাও তৈরি হয়েছিল। তারপরও ওই গ্রামবাসীর নিরাপত্তায় পুলিশের আগাম ব্যবস্থা না নেয়া রহস্যজনক। পুলিশ তৎপর থাকলে এমন ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো।’

হামলায় দিরাইয়ের বাসিন্দারা, জড়ো করা হয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে

হামলার শিকার নোয়াগাঁও ও তার আশপাশের গ্রামবাসী এবং প্রশাসনের লোকজন জানিয়েছেন, বুধবার সকালের বিক্ষোভ মিছিল ও হামলায় পাশের দিরাই উপজেলার লোকজনই বেশি ছিল।

দিরাইয়ের নাচনি, চণ্ডীপুর, সরমঙ্গল, কাশিপুর, সন্তোষপুর এবং শাল্লা উপজেলার কালিমপুর, কাশিপুর গ্রাম থেকেই এসেছিল বেশিরভাগ মিছিলকারী। এই মিছিল থেকেই কিছু লোক নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।

হেফাজত জড়ো মসজিদের মাইকে, পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন
বাড়িঘর থেকে লুট করা হয় মালামাল

হামলাকারীরা ভাঙচুর করেছে পরিমল মজুমদারের বাড়ি। তিনি বলেন, ‘ঘর ভাঙার পাশাপাশি আমার ঘরে থাকা হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের টাকাগুলোও ছিনিয়ে নিয়েছে হামলাকারীরা।’

তিনি বলেন, ‘হামলাকারীদের আমি চিনতে পারিনি। আমাদের আশপাশের গ্রামের হলে চিনতে পারতাম।’

হামলার পর বিকেলে শাল্লায় যান সুনামগঞ্জের সাংবাদিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনের কর্মী শামস শামীম। তিনি বলেন, ‌‘হামলাকারীদের বেশির ভাগই এসেছে দিরাইয়ের নাচনি গ্রাম থেকে। সকালে গ্রামের মসজিদে মাইকিং করে এই মিছিলে অংশ নেয়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানানো হয়।’

ভাঙচুরকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদও। তিনি বলেন, ‘আমরা মঙ্গলবার রাতেই পরিস্থিতি শান্ত করি। তারা মিছিল করবে না বলে আমাদের আশ্বাস দেয়। কিন্তু সকালে কিছু ছেলেপেলে এই ঘটনা ঘটায়।

হেফাজত জড়ো মসজিদের মাইকে, পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন
১৫ মার্চ শাল্লার পাশের দিরাইয়ে সমাবেশ বক্তব্য রাখছেন হেফাজতের মামুনুল



‘মিছিলের খবর পেয়ে সকালেই আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে বিক্ষুব্ধ লোকদের উদ্দেশে বক্তব্যও রাখি। এমন সময় কিছু লোক হামলা চালায়।’

ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েও হামলা ঠেকাতে না পারা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তখন পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইর চলে গিয়েছিল।’

আশপাশের গ্রামগুলোতেও মহড়া

নোয়াগাঁওয়ে হামলার পরও থেমে থাকেনি হামলাকারীরা। মিছিল নিয়ে তারা এগিয়ে যায় উপজেলা সদরের দিকে। এ সময় আশপাশের হিন্দুপ্রধান গ্রামগুলোতেও মহড়া দেয় তারা। এতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।

স্থানীয় এক স্কুলশিক্ষক বলেন, উপজেলা সদরের ডুংরা গ্রামে প্রাচীন একটি মন্দির আছে। এই মন্দিরের দিকে এগিয়ে যায় মিছিলকারীরা। এ সময় হামলা প্রতিরোধে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনও মন্দির ঘিরে জড়ো হন। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের লোকজন এসে হামলাকারীদের ফিরিয়ে দেয়।

ঘরে ফিরেছেন, বিশ্বাস ফিরেনি

বুধবার সকালে আচমকা হাজারো মানুষের আক্রমণে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান নোয়াগাও গ্রামের বাসিন্দারা। ভয়ে পাশের হাওরে আশ্রয় নেন তারা।

দুপুরে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নোয়াগাও গ্রামে যান। তারা আক্রান্ত মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে তাদের অভয় দেন। ঘরছাড়া মানুষদের ঘরে ফিরিয়ে আনেন।

তবে ঘরে ফিরলেও এখনও ভয় কাটেনি গ্রামবাসীর। কেবল ওই গ্রাম নয়, পুরো উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যেই আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

আগে যে স্কুলশিক্ষকের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তিনি বলেন, ‘এমনটি একাত্তর সালেও আমাদের এখানে ঘটেনি। একাত্তরে আমাদের বাড়িঘরে হামলা হয়নি। অথচ আজ স্বাধীতার ৫০ বছর পর আমরা হামলার শিকার হলাম।’

ধর্মে হিন্দু ওই স্কুলশিক্ষক নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সকালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎই শুনি চারদিকে চিৎকার। এরপর এমন ঘটনার কথা শুনি।’

নোয়াগাঁও গ্রামের বৃদ্ধা প্রতিমা মজুমদার বলেন, এ রকম ঘটনার কথা কেবল মানুষের মুখে শুনতাম। কিন্তু আমার জীবনে কখনো এ রকম ঘটনা দেখিনি। কেউ কখনো আমাদের হামলা বা হেয়প্রতিপন্ন করেনি। অথচ আজ একেবারে বাড়িঘর ভেঙে দেয়া হলো।

‘ঘরের পাশে আমাদের ছোট্ট একটা মন্দির ছিল, সেটিও গুঁড়িয়ে দিয়েছে হামলাকারীরা।’

প্রতিমা বলেন, ‘আমাদের কেউ হামলা করবে না। এতদিন এই বিশ্বাস ছিল। আজ সে বিশ্বাস ভেঙে গেল।’

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আক্রান্ত লোকদের আমরা বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছি। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করে তাদের সহায়তা করবে জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া তাদের নিরাপত্তায়ও পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’

পুলিশের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে গেছে। তাদের তৎপরতার জন্য হামলাকারীরা আরও বড় ধরনের তাণ্ডব চালাতে পারেনি। প্রশাসন হামলাকারীদের নিবৃত্ত করতে সব ধরনের চেষ্টা করেছে।

হেফাজত জড়ো মসজিদের মাইকে, পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন


মামলা নেই, গ্রেপ্তারও নেই

নোয়াগাঁওয়ের ওই যুবকের ফেসবুকে স্ট্যাটাসের বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। এরপর ওই রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর বুধবার সকালে পুলিশসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ‘উপস্থিতি’তে হামলা চালানো হয়। তছনছ করে দেয়া হয় পুরো একটি গ্রাম। কিন্তু এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। কোনো মামলাও হয়নি।

স্থানীয় এক বাসিন্দার অভিযোগ, পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করার বদলে তাদের বুঝিয়ে শান্ত করাতেই অধিক মনোযোগী ছিল। ফলে প্রকাশ্যে হামলা-ভাঙচুর করা হলেও তাদের আটকের চেষ্টাই করেনি পুলিশ।

তবে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, তারা যেখানে জড়ো হয়েছিল পুলিশ সেখানে অবস্থান নিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ কিছু লোক নদী পার হয়ে বাড়িঘরে হামলা চালায়।

তিনি বলেন, ‘কারা এই ঘটনার পেছনে রয়েছে তা আমরা খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল-মুক্তাদির হোসেন বলেন, পুলিশ হামলাকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, যে জায়গায় ঘটনা ঘটেছে তা একেবারে প্রত্যন্ত এলাকা। থানা থেকে মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থলে যেতেও ৮০ মিনিট লাগে। ফলে পুলিশের পক্ষে তাৎক্ষণিক কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত করছে। তাছাড়া এখন পর্যন্ত কেউ এ ঘটনায় মামলাও করেনি।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার, ভুল বোঝাবুঝির কথা জানাল পরিবার

নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার, ভুল বোঝাবুঝির কথা জানাল পরিবার বিল্লাল শাহপরীর দ্বীপ বিজিবি সীমান্ত চৌকির অধীনে সিপাহী ছিলেন। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কাজিরতলা গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে। ছবি: নিউজবাংলা
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘নিখোঁজ থাকার দুই দিন পর সাগর থেকে বিজিবি সদস্যের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। এর আগে সমুদ্রে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টাকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম পাড়ায় বহনকারী নৌকায় উদ্ধার অভিযানে যায় বিজিবি সদস্য। ওই সময় নৌকাডুবির ঘটনায় সমুদ্রে নিখোঁজ হন তিনি। অবশেষে তার মৃতদেহ পাওয়া গেছে।’

কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবির পর উদ্ধারে গিয়ে নিখোঁজ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সিপাহী মো. বিল্লাল হাসানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়ায় বঙ্গোপসাগর থেকে রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

বিল্লাল শাহপরীর দ্বীপ বিজিবি সীমান্ত চৌকির অধীনে সিপাহী ছিলেন। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কাজিরতলা গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে।

এর আগে গত শুক্রবার গভীর রাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় কক্সবাজারের টেকনাফে সমুদ্রে রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনায় নারী-শিশুসহ ২৫ জন রোহিঙ্গাকে জীবত উদ্ধার করে। সে সময় বিজিবির সদস্যের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা নিখোঁজ হন।

ঘটনার পরের দিন শনিবার পর্যন্ত পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘নিখোঁজ থাকার দুই দিন পর সাগর থেকে বিজিবি সদস্যের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। এর আগে সমুদ্রে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টাকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম পাড়ায় বহনকারী নৌকায় উদ্ধার অভিযানে যায় বিজিবি সদস্য। ওই সময় নৌকাডুবির ঘটনায় সমুদ্রে নিখোঁজ হন তিনি। অবশেষে তার মৃতদেহ পাওয়া গেছে।’

তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া ঘটনার দিন খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় উদ্ধার অভিযানে যান এবং শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। আমাদের উদ্ধার অভিযান চলছে।’

এদিকে নিহত বিজিবি সদস্যের ভাই আবু বকর বলেন, ‘ভাইকে খোঁজার জন্য টেকনাফের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলাম। এর মধ্য খবর আসে সাগরে চরের মধ্য ভাইয়ের মৃতদেহ পাওয়া গেছে।

‘গত শুক্রবার সাগরে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকা উদ্ধার অভিযানে গেলে নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ছিল ভাই। ওই সময় আমাদের জানানো হয়েছিল তিনিসহ ৩৩ জন নিখোঁজ ছিল। এ নিয়ে আমাদের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল।’

নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘এর আগে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনায় শিশুসহ চার রোহিঙ্গার মৃতদেহ ভাসমান পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আরও বেশ কিছু রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছে। তাদের বিষয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।’

স্থানীয়রা জানান, গত ২২ মার্চ রাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাবাহী একটি নৌকা টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া এলাকায় সাগরে ভাসতে দেখেন বিজিবির সদস্যরা। তারা স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আমিনের মালিকাধীন মাছ ধরার নৌকায় শাকের মাঝির নেতৃত্বে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকাটি থামানোর সংকেত দেন সমুদ্রে। পরে ওই নৌকাতে ওঠেন বিজিবি সদস্য।

ওই সময় উত্তাল সাগরের ঢেউয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। সেখানে চিৎকারে নারী-শিশুসহ ২৫ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে স্থানীয় জেলে ও বিজিবি। পরে নিখোঁজ বিজিবি সদস্যসহ রোহিঙ্গাদের সন্ধানে সাগরে তল্লাশি চালানো হয়।

ডুবে যাওয়া নৌকায় অর্ধশতাধিক লোকজন ছিল বলে জানিয়েছেন উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা।

মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য ঈমান হোসাইন ও আবুল মনছুর মিলে মিয়ানমারের থেকে রোহিঙ্গা পারাপার করছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

আরও পড়ুন:
নাফ নদে ৩৩ বিজিবি সদস্য নিখোঁজের খবরটি গুজবনির্ভর অপপ্রচার: বিজিবি
রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: উদ্ধার ২৫, বিজিবি সদস্যসহ নিখোঁজ অনেকে
যৌন নিপীড়ন: টেকনাফের সেই শিক্ষকের নামে বিভাগীয় মামলা
আরাকান আর্মির হাতে আটক ২৯ জেলেকে ফিরিয়ে আনল বিজিবি
টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ধর্মঘট টেকনাফ স্থলবন্দরের শ্রমিকদের

মন্তব্য

বিশেষ
The bodies of the Bangladeshi youth killed in the Indian Khasias were shot dead

ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর

ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্তের ওপারে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে নিহত শাহেদ আহমদ। ফাইল ছবি
পুলিশ জানায়, বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী বড়ছড়া এলাকায় বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর ভারতের মেঘালয় রাজ্য পুলিশের হেফাজতে থাকা গুলিবিদ্ধ শাহেদ আহমদের মরদেহ বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ।

সিলেটের কানাইঘাট সীমান্তের ওপারে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে নিহত শাহেদ আহমদের মরদেহ ফেরত দিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

পতাকা বৈঠকের পর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের কাছে শনিবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে মরদেহ হস্তান্তর করে তারা।

পুলিশ জানায়, বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী বড়ছড়া এলাকায় বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর ভারতের মেঘালয় রাজ্য পুলিশের হেফাজতে থাকা গুলিবিদ্ধ শাহেদ আহমদের মরদেহ বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ।

পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন জকিগঞ্জ বিজিবি ১৯ ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ডার গোলাম কবির, কানাইঘাট থানার ওসি (তদন্ত) মো. আবু সায়েম এবং ভারতের পক্ষে বিএসএফ ও সেখানকার পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।

কানাইঘাট থানার ওসি (তদন্ত) মো. আবু সায়েম জানান, পতাকা বৈঠক শেষে শাহেদ আহমদের মরদেহ বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়। মরদেহ থানায় নিয়ে আসার পর আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে ভারতীয় খাসিয়ার গুলিতে নিহত হন শাহেদ আহমদ। তিনি লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মঙ্গলপুর আলুবাড়ি গ্রামের মশাহিদ আলীর পুত্র।

তার মরদেহ উদ্ধার করে সেখানকার পুলিশ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে। খবর পেয়ে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও থানা পুলিশকে অবহিত করে পরিবার। পরে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে মরদেহ আনার উদ্যোগ নেয় বিজিবি।

আরও পড়ুন:
ভারতের অভ্যন্তরে ‌খাসিয়াদের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
সিলেটে চাঁদাবাজির অভিযোগে হকারদের সড়ক অবরোধ, যুবদল নেতা বহিষ্কার
ঝিনাইদহে দুর্বৃত্তদের গুলিতে চরমপন্থি নেতাসহ তিনজন নিহত
টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দৃষ্টান্ত সিলেট সিটি করপোরেশন
১০ ঘণ্টা পর সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ চালু

মন্তব্য

বিশেষ
After three days the new motor was installed and the water shortage was solved
কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল

তিন দিন পর বসানো হলো নতুন মোটর, কেটেছে পানির সংকট

তিন দিন পর বসানো হলো নতুন মোটর, কেটেছে পানির সংকট কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল। ছবি: নিউজবাংলা
কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) তত্ত্বাবধায়ক ডা. নূর মোহাম্মদ শামসুল আলম বলেন, ‌‘বিগত তিন দিনে রোগীদের অনেক ভোগান্তি হয়েছে, এটা সত্য। তবে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু করেছি। গতকাল রাতে একটি নতুন মোটর লাগানোর পর পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।’

টানা তিন দিন ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পানির সংকটে ছিল কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল। তবে সোমবার রাতে নতুন মোটর লাগানোর পর পানির সংকট কেটেছে।

গত তিন দিন পানি না থাকায় ভোগান্তিতে ছিলেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে ভর্তি থাকেন হাসপাতালে। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে রোগী ও স্বজনসহ সহস্রাধিক মানুষ অবস্থান করেন।

প্রতিদিন এখানে ২০ হাজার লিটার পানি প্রয়োজন। হাসপাতালে পানির সংকটের কারণে অন্তত ৩০ জন রোগী অন্যত্র চলে গেছে বলেও খবর পাওয়া যায়।

পানির মোটর বিকল হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালটিতে শনিবার বেলা ১১টা থেকে শৌচাগারসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পানি সংকটে শৌচাগার থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে।

টানা দুই দিন বিকল হয়ে যাওয়া মোটরটি সচল করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয় কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে পানি সরবরাহের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে প্রয়োজন মেটেনি।

কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) তত্ত্বাবধায়ক ডা. নূর মোহাম্মদ শামসুল আলম বলেন, ‌‘বিগত তিন দিনে রোগীদের অনেক ভোগান্তি হয়েছে, এটা সত্য। তবে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু করেছি।

‘গতকাল রাতে একটি নতুন মোটর লাগানোর পর পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
তাড়াইলে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত: পুলিশ
গজারিয়ায় হাসপাতালের সামনে ভ্যানে সন্তান প্রসব
বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও জমিতে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ বীর মুক্তিযোদ্ধার
প্যারোলে মেলেনি মুক্তি, বাবার জানাজায় অংশ নিতে পারেননি স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান
সিলেট জেলা হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ, দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউ

মন্তব্য

বিশেষ
Death toll rises to 4 in trawler speedboat collision in Ghazaria

গজারিয়ায় ট্রলার-স্পিডবোট সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৪

গজারিয়ায় ট্রলার-স্পিডবোট সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৪ মেঘনা নদীর কালীপুরা ঘাট সংলগ্ন এলাকায় শুক্রবার রাত ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ছবি: নিউজবাংলা
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‌‌‘ঘন কুয়াশার কারণে নদীতে একটি ট্রলারের সঙ্গে দ্রুতগতির স্পিডবোটের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছে। বিস্তারিত পরে বলতে পারব।’

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলাধীন মেঘনা নদীতে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারের সঙ্গে স্পিডবোটের সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ছয়জনকে।

হতাহত সবাই নৌ ডাকাত নয়ন বাহিনীর সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

প্রাণ হারানো চারজন হলেন গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী বেপারীর ছেলে ওদুদ বেপারী (৩৬), মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা চরঝাপ্টা রমজানবেগ গ্রামের বাচ্চু সরকারের ছেলে বাবুল সরকার (৪৮), চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সাকিব (২৬) ও একই এলাকার নয়াকান্দি বড়ইচর গ্রামের মোহন ভান্ডারের ছেলে নাঈম (২৫)।

মেঘনা নদীর কালীপুরা ঘাট সংলগ্ন এলাকায় শুক্রবার রাত ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, হতাহত সবাই নৌ ডাকাত নয়ন বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। তারা সবাই অবৈধ বালুমহাল পরিচালনার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। নিহত ওদুদ বেপারি নৌ ডাকাত নয়ন বাহিনীর সেকেন্ড ইন কামান্ড পিয়াসের বড় ভাই।

স্থানীয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামসংলগ্ন মেঘনা নদীতে অবৈধ একটি বালুমহাল পরিচালনা করতেন নৌ ডাকাত নয়ন বাহিনীর লোকজন। দিনের আলোতে নদীর ওই অংশে বালুমহালের অস্তিত্ব না থাকলেও সন্ধ্যা হলেই সেখানে চালু করা হতো বালুমহাল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অসংখ্যবার অভিযান চালিয়েও অবৈধ বালুমহালটি বন্ধ করতে পারেনি।

সন্ধ্যায় অবৈধ বালুমহাল চালুর পর আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তিন থেকে চারটি স্পিডবোট ও ট্রলার নিয়ে নদীতে মহড়া দেয় নয়ন বাহিনীর লোকজন। এ বাহিনীর সাথে বিগত কয়েক মাসে কয়েকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রতিপক্ষের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়দের দাবি, শুক্রবার রাতে অবৈধ বালুমহালের জন্য বাল্কহেড আটক করতে একটি স্পিডবোট ও ইঞ্জিনচালিত একটি ট্রলার নিয়ে যাচ্ছিল নয়ন বাহিনীর লোকজন। ওই সময় নৌযান দুটিতে ১০ থেকে ১১ জন আরোহী ছিল। রাতে ঘন কুয়াশার কারণে দ্রুতগতির স্পিডবোটটি দিক ভুলে ট্রলারে ধাক্কা দিলে ট্রলারটি তলিয়ে যায় এবং স্পিডবোটটি দুমড়েমুচড়ে যায়।

এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে তিনজনের লাশ উদ্ধার হলেও নাঈম (২৫) নামে একজন নিখোঁজ হন।

তার সন্ধানে উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস, কোস্ট গার্ড ও বিআইডব্লিউটিএ। পরবর্তী সময়ে শনিবার দুপুর দুইটার দিকে নাঈমের লাশ উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার ইউনিট প্রত্যয় নারায়ণগঞ্জের কমান্ডার ও বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক ওবায়দুল করিম খান বলেন, ‘শুক্রবার রাতে আমরা শুনেছিলাম বাল্কহেডের সাথে স্পিডবোটের সংঘর্ষ হয়েছে। তবে ঘটনাস্থলে আসার পরে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, স্পিডবোটের সাথে একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলারের সংঘর্ষ হয়েছে। দুর্ঘটনায় ট্রলারটি তলিয়ে যায় এবং স্পিডবোটটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমার ধারণা, যারা মারা গেছে, তারা সবাই ট্রলারের যাত্রী ছিল।

‘এ ঘটনায় একজন নিখোঁজ ছিল। উদ্ধার অভিযানের একপর্যায়ে শনিবার দুপুর দুইটার দিকে দুর্ঘটনাস্থলের অদূরে ঝোঁপ থেকে নিখোঁজ নাঈমের লাশ উদ্ধার করি আমরা।’

নিহত ওদুদ বেপারীর স্ত্রী ফেরদৌসীর দাবি, অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা নয়, পার্শ্ববর্তী মতলব উত্তর উপজেলার একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন তারা। এ ঘটনায় চারজন নিহত হন। আহত হন পাঁচ থেকে ছয়জন।

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ‌‌‘ঘন কুয়াশার কারণে নদীতে একটি ট্রলারের সঙ্গে দ্রুতগতির স্পিডবোটের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছে। বিস্তারিত পরে বলতে পারব।’

আরও পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জে দুই স্পিডবোটের সংঘর্ষে তিনজন নিহত, একজন আহত
গজারিয়ায় হাসপাতালের সামনে ভ্যানে সন্তান প্রসব
বাগেরহাটে মার্চ ফর ইউনিটির গাড়িবহরে হামলা, সংঘর্ষে আহত ২০
ইজতেমা মাঠে নিহত ৪, খুনিদের ছাড় নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
নরসিংদীতে সংঘর্ষে দুই ইউপি সদস্য নিহত

মন্তব্য

বিশেষ
Murder of businessman in Jhalkathi Anger over not arresting those involved

ঝালকাঠিতে ব্যবসায়ী হত্যা: জড়িতরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ

ঝালকাঠিতে ব্যবসায়ী হত্যা: জড়িতরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ ঝালকাঠির বাউকাঠি বাজারের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে প্রতিবাদ জানান ব্যবসায়ীরা। ছবি: নিউজবাংলা
বক্তাদের একজন বলেন, ‌‘দ্রুত সময়ের মধ্যে সুদেব হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় লাগাতার কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

ঝালকাঠি সদর উপজেলার রামপুর জোড়াপোল এলাকায় ৬ জানুয়ারি সুদেব হালদার (২৮) নামের ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় জড়িতরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বজন ও স্থানীয়রা।

সুদের হত্যার দিনই ঝালকাঠি সদর থানায় একটি মামলা করেন তার বাবা সুব্রত হালদার। কিন্তু ঘটনার তৃতীয় দিনেও হত্যায় জড়িত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

এমন বাস্তবতায় ক্ষোভ জানিয়েছে নিহতের পরিবার, স্বজন ও এলকাবাসী। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করতে বৃহস্পতিবার দোকান বন্ধ রেখে রাস্তায় নামেন।

সকালে ঝালকাঠির বাউকাঠি বাজারের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে প্রতিবাদ জানান ব্যবসায়ীরা।

সকাল ১০টার দিকে সুদেব হালদারের বাউকাঠি বাজারের মোবাইল ফোনের দোকানের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন ব্যবসায়ীরা।

মানববন্ধন চলাকালে বক্তৃতা করেন নবগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী সরদার মো. শহিদুল্লাহ, বাউকাঠি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. রুহুল আমিন ফকির, সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম, ব্যবসায়ী রাহুল রাড়ী, রফিকুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন মোল্লা, আলী হায়দার রাড়ী, মো. আবু বক্কর, সৈয়দ রুহুল আমিন, মো. বেল্লাল খান, মো. আনিস সিকদার এবং নিহতের সহোদর সাগর হালদার সুকেশসহ অনেকে।

বক্তাদের একজন বলেন, ‌‘দ্রুত সময়ের মধ্যে সুদেব হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় লাগাতার কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে শতাধিক ব্যবসায়ী অংশ নেন।

গত ৬ জানুয়ারি রাতে সুদেব হালদার দোকান বন্ধ করে বাড়ির পথে রওনা হলে দুর্বৃত্তরা তার গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। সকালে স্থানীয়রা মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।

আরও পড়ুন:
সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন
ঝালকাঠিতে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, ধারণা পুলিশের
সড়কের পাশে মাঠে পড়ে ছিল যুবদল নেতার গলা কাটা মরদেহ
জুলাই গণহত্যার বিচার শেষ আগামী ১৬ ডিসেম্বরের আগে: আইন উপদেষ্টা 
বেগমগঞ্জে বিএনপি কর্মীকে গুলি ও গলাকেটে হত্যা

মন্তব্য

বিশেষ
Fire in Secretariat due to electrical disturbance Home Secretary

বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড: স্বরাষ্ট্র সচিব

বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড: স্বরাষ্ট্র সচিব সচিবালয়ে আগুনে পুড়ে যাওয়া ভবন। ফাইল ছবি
নাসিমুল গণি বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক তদন্তে যেটা উঠে এসেছে, এটা বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণেই আগুন লেগেছে। প্রাথমিক তদন্তে কোনো ধরনের নাশকতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’

বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে সচিবালয়ে আগুন ধরেছিল বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে মঙ্গলবার প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তর শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

নাসিমুল গণি বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক তদন্তে যেটা উঠে এসেছে, এটা বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণেই আগুন লেগেছে। প্রাথমিক তদন্তে কোনো ধরনের নাশকতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’

গত ২৬ ডিসেম্বর সচিবালয়ের একটি ভবনের চারটি ফ্লোর পুড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ৭ নম্বর ভবনের এসব ফ্লোরে পাঁচটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের আংশিক কার্যালয় এবং একটি বিভাগের পুরো কার্যালয়ের অবকাঠামোর সঙ্গে সব নথিপত্রও পুড়ে যায়।

তদন্ত কমিটির অন্যতম সদস্য বুয়েটের অধ্যাপক ড. মাকসুদ হেলালী জানান, প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাখিল করা হয়েছে। তার সঙ্গে প্রাথমিক তদন্ত কমিটির রিপোর্ট নিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা বিশেষজ্ঞ দলের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে খুঁটিনাটি জেনে নিয়ে ভবিষ্যতে করণীয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ বলেন, কোনো বিস্ফোরক ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দেয়া নমুনাতেও কোনো বিস্ফোরক ব্যবহারের আলামত পাওয়া যায়নি। ডগ স্কোয়াডের সার্চেও মেলেনি বিস্ফোরকের আলামত।

আরও পড়ুন:
আগুন: সাংবাদিকদের প্রবেশ সীমিত করা হয়েছে সচিবালয়ে 
সাংবাদিকদের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড পর্যালোচনা  শিগগিরই: প্রেস উইং
সচিবালয়ে আগুন: নাশকতার সন্দেহ নানাজনের
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড: তদন্ত কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদনের নির্দেশ
সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি 

মন্তব্য

বিশেষ
Sylhet Jakiganj road closed bus traffic for the second day

সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ বাস চলাচল, দুর্ভোগ

সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ বাস চলাচল, দুর্ভোগ বাস বন্ধের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারগামী যাত্রীরা। ছবি: নিউজবাংলা
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, ‘বাস ভাঙচুরের দাবি করে রোববার রাতে হেলাল মিয়া নামের একজন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেটি আমরা তদন্ত করে দেখছি। সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে এখন বাস, মিনিবাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।’

পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা কর্মবিরতির কারণে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনায় এক কিশোরের মৃত্যুর জেরে একাধিক বাস ভাঙচুরের প্রতিবাদে সোমবার থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখেন শ্রমিকরা। মঙ্গলবারও ওই সড়কটিতে বাস চলাচল করেনি।

বাস বন্ধের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারগামী যাত্রীরা।

জকিগঞ্জের কামালগঞ্জ এলাকায় বাসের ধাক্কায় এক স্কুলছাত্রের নিহতের ঘটনার জেরে বাস ভাঙচুরের ঘটনায় সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন অনির্দিষ্টকালের এ কর্মবিরতির ডাক দেয়। এর আগে সোমবার বিকেলে মঙ্গলবার থেকে সিলেটজুড়ে কর্মবিরতির ডাক দিলে রাতে ওই অবস্থান থেকে সরে আসেন শ্রমিকরা। কেবল সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তারা।

কদমতলী বাস টার্মিনালে মঙ্গলবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, টার্মিনাল থেকে কোনো বাস জকিগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি। একইভাবে জকিগঞ্জ থেকেও সিলেটের উদ্দেশে কোনো বাস ছেড়ে আসেনি। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা পড়েন মারাত্মক দুর্ভোগে।

টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, অনেক যাত্রী সেখানে বসে আছেন বাসের অপেক্ষায়। বাস ছেড়ে যাবে না জানার পরও তারা অপেক্ষা করছেন ধর্মঘট প্রত্যাহারের।

জকিগঞ্জ যাওয়ার জন্য টার্মিনালে অপেক্ষা করছিলেন কালিগঞ্জের যাত্রী বদরুল ইসলাম। তিনি জানান, পরিবার নিয়ে তিনি সকালে কদমতলী টার্মিনালে এসেছেন, কিন্তু কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। তাই মারাত্মক বিপাকে পড়েছেন।

তিনি আরও জানান, বিকেল নাগাদ ধর্মঘট প্রত্যাহার না হলে মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে তাকে বাড়ি ফিরতে হবে।

গত রোববার সকালে জকিগঞ্জের কামালগঞ্জ আব্দুল মতিন কমিউনিটি সেন্টারের নিকটে সড়কের পাশে শিশু-কিশোররা ফুটবল খেলছিল। হঠাৎ বল সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে চলে গেলে সেটি আনতে আবির আহমদ (১৪) নামের এক কিশোর দৌড় দেয়। সে সময় দ্রুতগামী একটি গেটলক বাসের ধাক্কায় সে গুরুতর আহত হয়।

পরে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা বাসটি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।

পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, অন্তত তিনটি বাস ভাঙচুর করা হয় ওই সময়। এর প্রতিবাদে সোমবার পরিবহন শ্রমিকরা সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। মঙ্গলবারও এ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন তারা।

জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুহিত বলেন, ‘আমাদের বাসের চালক অন্যায় করলে আইন অনুযায়ী তার শাস্তি হবে, কিন্তু আইন হাতে তুলে নিয়ে বাস ভাঙচুর করা ও পোড়ানো সন্ত্রাসী কাজ।

‘আমরা এর বিচার চাই। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বাসের চালক বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের আবেদন করেছেন।’

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, ‘বাস ভাঙচুরের দাবি করে রোববার রাতে হেলাল মিয়া নামের একজন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেটি আমরা তদন্ত করে দেখছি। সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে এখন বাস, মিনিবাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।’

আরও পড়ুন:
সিলেটে কর্মবিরতির ডাক পরিবহন শ্রমিকদের
ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় নিহত ৬: বাসচালক গ্রেপ্তার
সিলেট সীমান্ত: দুই দিনে ভারতীয় খা‌সিয়াদের গু‌লিতে ২ বাংলাদেশি নিহত
সিলেট জেলা হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ, দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউ
‘গ্রামে বিজয় দিবসের এমন উৎসব জীবনেও দেহি নাই’

মন্তব্য

p
উপরে