বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আরও এক দিক থেকে ছিল অনন্য। এটি মুক্তিযুদ্ধের আগে বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভিডিও রেকর্ডেড ভাষণ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তার সেই ভাষণের ভিডিওচিত্র ধারণ করেছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের সাত বাঙালি কর্মকর্তা। শুধু ভিডিওচিত্র ধারণই নয়, এটি ডেভেলপের পাশাপাশি সংরক্ষণও তারা করেছিলেন।
২৫ মার্চ কালরাতের পর অবরুদ্ধ ঢাকা শহরের সরকারি দপ্তর থেকে তারা সেই ভিডিওটেপ গোপনে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যান। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই কাজ করেছেন তারা। সে সময় চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের ক্যামেরা সহকারী ছিলেন আমজাদ আলী খন্দকার। বঙ্গবন্ধুর ভাষণের ভিডিওটেপ সরিয়ে কীভাবে তারা দোহারের একটি বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিলেন, সে গল্প তিনি বলেছেন নিউজবাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আশিক হোসেনের কাছে।
একাত্তরে তো আপনারা পাকিস্তান সরকারের কর্মচারী। তারপরও ৭ মার্চের ভাষণ ধারণ করলেন কীভাবে? আর কোনো বিভাগ কি আপনাদের সঙ্গে ছিল?
৭ মার্চ কিন্তু একদিনে আসেনি। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ সংগ্রামের পথেই ৭ মার্চ এসেছে। এই ভাষণ ধারণ করার জন্য আমাদের পরিচালকের নেতৃত্বে দুই দিন আগে থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আমরা কে কী করব, সেগুলো আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। আমরা তখন মূলত ছিলাম পূর্ব পাকিস্তানের তথ্য মন্ত্রণালয়ের ফিল্ম ডিভিশনের স্টাফ। আমরাই এটা করেছি। তখন পাকিস্তানের আরও কিছু সংস্থা, যেমন ডিএফপি ছিল। তারা কিন্তু এ কাজ করেনি। তারা কিন্তু মাঠের ধারেকাছেও আসেনি। আমরা ফিল্ম ডিভিশন এ কাজটা করেছি। আমাদের ফিল্ম ডিভিশনের পরিচালক ছিলেন আবুল খায়ের (খ্যাতিমান অভিনেতা) সাহেব। ক্যামেরাম্যান ছিলেন জি জেড এম এ মবিন, এম এ রউফ। অ্যাসিস্ট্যান্ট ছিলাম আমি, এস এম তৌহিদ আর সৈয়দ মইনুল আহসান। দুইজন ছিল লাইটবয়; জুনায়েদ আহমেদ আর একজন হাবিব। লাইটবয়রা আমাদের সহযোগিতা করত। আর আমাদের পরিচালক জানত, কে কী কাজ করতে পারে।
মঞ্চে মূল কাজটা কীভাবে করলেন? কার কী দায়িত্ব ছিল? প্রস্তুতিই বা শুরু করলেন কীভাবে?
মবিন সাহেব ছিলেন ফিল্মের ক্যামেরাম্যান মূলত। আর আমি ছিলাম এফডিসির রাইজিং ক্যামেরাম্যান। পরিচালক মনে করলেন, এই দুজনকে যদি মঞ্চে দিই তাহলে তারা ভালো রেকর্ড করতে পারবে। আমাদের দুজনকে মঞ্চে দিলেন। রউফ সাহেব আর তৌহিদকে দায়িত্ব দিলেন, তারা ঘুরে ঘুরে ছবি নেবে। আর মইনুলকে দিলেন এই যে টেপ রেকর্ডার বসবে, সেইটা চালুর দায়িত্ব।
তখন কলরেডি ছিল। তারা আগের দিন পুরো মাঠে শত শত মাইক বসিয়েছে। তারা হাইভোল্টেজ লাইন এনেছিল। আমরা ক্যামেরা চালাব কারেন্ট দিয়ে, ব্যাটারি দিয়ে যদি চালাই, তাহলে সে ক্যামেরায় অনেক আওয়াজ হবে, কখন ব্যাটারি বসে যাবে আমরা বুঝতে পারব না।
সিংক মোটর বলে একটি জিনিস আছে। সেটা দিয়ে আমরা ক্যামেরা চালালাম, যাতে করে কোনো শব্দ না পায়। সাউন্ডপ্রুফ ক্যামেরা নিয়ে গেলাম। কারণ, আমাদের ক্যামেরায় যদি আওয়াজ হয়, একটা লোকও মাঠে থাকবে না। এত আওয়াজ হবে, সব মানুষ চলে যাবে। এর জন্য আগের দিন বিকেলে একটা কয়েল তার নিয়ে গেলাম কলরেডির কাছে। তখন যারা কাজ করছিল, তারা আমাকে আর লাইন দেবে না। পরে কলরেডির মালিক আসার পরে আমরা লাইন পেলাম। তো তখনই ভিডিওধারণের জন্য লাইন টেনে রাখা হলো।
পরের দিন ৭ মার্চ, সকাল ৭টায় ক্যামেরা নিয়ে মাঠে চলে গেলাম।
৭ মার্চ সকালে যখন রেসকোর্স ময়দানে গেলেন, তখন কী দেখলেন? আপনাদের ভয় করেনি?
সকালে মাঠে গিয়ে দেখি, মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। একদিকে কালীমন্দির, এদিকে টিএসসি, একদিকে ঢাকা ক্লাব আর ওদিকে হাইকোর্ট। তখন তো কোনো গাছপালা ছিল না। পুরো মাঠ ছিল খালি। তো আমরা গিয়ে দেখলাম, পুরো মাঠ মানুষ দিয়ে ভরে গেছে। আমরা তখন ক্যামেরা-ট্যামেরা লাগিয়ে সব রেডি করে রেখেছি।
এর মধ্যে একটা গুজবও ছিল যে, বোমা মেরে সব উড়িয়ে দেবে। প্রস্তুতিও নাকি ছিল। আমরা তো তখন ভয় পেয়েছি। এই যে সাতজনের নাম বললাম, আমরাই প্রথম প্রকাশ্যে মাঠে এসেছি। আর কেউ কিন্তু আসেনি। তখন আমরা পাকিস্তান সরকারের কর্মচারী। গোয়েন্দা বাহিনীর লোকেরা উপস্থিত ছিল। তারা আমাদের দেখেছে যে আমরা কাজ করছি। ভয় ছিল, ধরে নিয়ে যাবে। তবে সাহস ছিল, বঙ্গবন্ধু আমাদের যেভাবেই হোক বের করে নিয়ে আসবে। আটকে রাখতে পারবে না। আর মরে গেলে তো মরেই গেলাম।
এভাবেই আমরা কাজ করলাম। ভয় আমাদের ছিল না। যখন একবার কাজের নেশায় চলে গিয়েছি, তখন আর ভয় নাই। তখন চিন্তা, কীভাবে ফোকাস থাকবে।
যারা ফিল্মের ক্যামেরাম্যান তারা বুঝবে কী কষ্ট করে আমরা এ কাজটা করেছি। ম্যাগাজিন, ফিল্ম চেঞ্জিং। ব্যাগ সব সাইডে রাখা আছে। অ্যাসিস্ট্যান্ট দুজন সাইডে আছে। আমাদের ৫০০ ফিট লোড করলে মাত্র ৫ মিনিট শ্যুট করা যায়। এক ঘণ্টা শ্যুট করা যায় এ পরিমাণ ফিল্ম আমাদের কাছে ছিল।
বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সেই মুহূর্তের কথা আপনার মুখে শুনতে চাই।
বঙ্গবন্ধু আসলেন। এত মানুষ হয়েছে, কিন্তু কারও মুখে কোনো কথা নেই। এই যে মাইকে বলে ডানে আসেন বামে আসেন, বসেন, এসব কোনো কথা বলতে হয়নি। সব একদম সাইলেন্ট। মানুষের চিন্তাটা এ রকম ছিল যে, এই যে এত দিনের এক আন্দোলন, এত সংগ্রাম হয়েছে, এটা তার ফসল। আজকে তিনি কী নির্দেশ দেন তা শুনে বাড়ি যাব। সবাই সেটা শুনতেই এসেছে। একটা কথাই মানুষ শুনতে এসেছে যে, বঙ্গবন্ধু কী বলেন। এ জন্যই সবাই চুপ করে বসে ছিল। বঙ্গবন্ধু আসলেন একদম বীরের মতো। মঞ্চে উঠলেন। আশেপাশে যারা ছিল, কারও সাথে কোনো কথা না বলে সরাসরি ডায়াসে এসে চশমা রেখে উনি ভাষণ শুরু করলেন। একটানা বলে গেলেন। কারও কোনো স্লিপও নিলেন না, কারও কোনো ইশারাও শুনলেন না। কী বলবেন, আগে থেকে কোনো কিছু ঠিকও করা ছিল না। থাকে না, মানুষের ভাষণ লেখা থাকে। এ রকম কিছুই ছিল না। উনি অনর্গল ওনার কথা বলে গেলেন। আর যা বললেন, তা তো রেকর্ডে আছেই, আপনারা শুনেছেন। তখন পাকিস্তান আমল। তার মধ্যেও তিনি বললেন স্বাধীনতার কথা।
রেকর্ড তো করলেন। তারপর এটা ডেভেলপ করলেন কীভাবে? কেউ সন্দেহ করেনি?
আমরা ভাষণ রেকর্ড করলাম। আমাদের অফিস ছিল সচিবালয়ের ২২ নম্বর শেডে। অর্ধেকটা আমাদের, আর বাকিটা অন্য ডিপার্টমেন্টের। এখন সমস্যা হলো এই যে, বঙ্গবন্ধুর নামে কীভাবে ফিল্মগুলো ডেভেলপ করে আনব। ক্যামেরাম্যানের দায়িত্ব হলো শ্যুট করে দেয়া। এখন ডেভেলপের দায়িত্ব তো আমাদের ওপরে। তখন ডেভেলপ করতে হতো এফডিসিতে। এফডিসিতে গেলাম। কিন্তু ফিল্মের উপরে লিখব কী? সে বছর একটা সাইক্লোন হয়েছিল। তো একটা ফিল্মের উপর লেখলাম, ‘সাইক্লোন’। অন্যগুলো কোনোটাতে ‘নির্বাচন’। এভাবে লিখে ‘এক’, ‘দুই’ দিয়ে আমরা ডেভেলপে দিতাম। তারপর সেগুলো রক্ষণও আমরাই করতাম। পরিচালকের একটা আলমারি ছিল। সেখানে সারিবদ্ধভাবে রাখা হতো। আমরা এভাবেই ফিল্ম প্রসেস করে নিয়ে আসলাম।
২৫ মার্চ অপারেশন সার্চ লাইটের সময় বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হলেন। দেশের নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নিল সেনাবাহিনী। তখন তো তারা অনেক নথি নষ্ট করে ফেলে। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ রক্ষা পেল কীভাবে?
২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুকে ধরে নিয়ে গেল পাকিস্তানিরা। এরপর আর্মিরা প্রায় সব অফিসের দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছিল। সচিবালয়ে আর্মির আনাগোনা বেড়ে গেল। একদিন আমাদের পরিচালক (আবুল খায়ের) ডেকে বললেন, ‘আমজাদ, তোমাকে একটা দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং সেটা এই মুহূর্তে এবং আজই।’ আমি বললাম, ‘কী করতে হবে স্যার।’ তিনি আমাকে নানা কারণে অনেক বিশ্বাস করতেন। যা হোক, আমাকে বললেন, ‘তুমি এখনই সদরঘাট যাও।’ তখন সবকিছু কিনতে হলে সদরঘাট যেতে হতো। আমাকে তিনি বললেন, ‘সদরঘাট থেকে একটা ট্রাংক নিয়ে এসো।’ টাকা দিয়ে দিলেন, আমি ৪২ ইঞ্চির একটি বড় কালো ট্রাংক নিয়ে আসলাম। উনাকে দেয়ার পরে এটাতে ভরলেন বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, যেটা আমরা ৭ মার্চ রেকর্ড করেছিলাম, সেটা। এর সাথে কাজী নজরুল ইসলামের উপরে একটা ডকুমেন্টারি আমরা করেছিলাম গোপনে, সেটা। সাথে বঙ্গবন্ধুর আরও কিছু ছবি ট্রাংকে ভরলেন। এরপর আমাকে বললেন, ‘তোমাকে আজই বের হয় যেতে হবে।’ আমি বললাম, ‘কোথায় যাব?’ বললেন, ‘জয়পাড়া যাবা।’ কোথায় যেতে হবে ঠিকানা দিয়ে দিলেন। আমি বললাম, ‘স্যার আমার বাবার সাথে একটু দেখা করে আসি।’ উনি আমাকে পয়সা দিয়ে বললেন, ‘যাও।’ আমি বাবাকে বললাম, ‘বাবা, আমার আসতে দুই দিন দেরি হবে, চিন্তা করবেন না।’ ফিরে আসার পর আমাকে তিনি (আবুল খায়ের) রুমের ভেতর নিয়ে গেলেন। আমার হাতটা ধরে ঝাঁকি দিয়ে বললেন, ‘আমজাদ! আল্লাহ হাফেজ!’ তার চোখগুলো এত বড়বড় হয়ে গেল। উনি জানতেন, এই ছেলে যদি বের হয়ে যায়, আর ধরা পড়ে, তাহলে এখনই শেষ হয়ে যাবে। আর ফিরে আসবে না।
সারা শহরে তখন আর্মির প্রহরা। এর মধ্যে বের হলেনই বা কীভাবে?
প্রথম যে সংকটটা হলো: সচিবালয় থেকে বের হব কীভাবে? সব জায়গায় তো পাঞ্জাবিরা আছে, বিহারিরা আছে। গেট পাস দিবে কে? যে গেট পাস দেবে, সেই তো পরে ধরা পড়বে। এখন তাহলে গেট পাস ছাড়াই আমাকে বের হতে হবে। কিন্তু কীভাবে? তখন ২ নম্বর গেটে একজন সার্জেন্ট ছিলেন ফরিদ, বাঙালি। তার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। তাকে আমি বললাম, বের হতে চাই, এই হচ্ছে ব্যাপার। সে যেহেতু বাঙালি, আমাদের বিষয়ে সব সে জানত আর কী। তো আমাকে বলল, ‘ঠিক আছে অসুবিধা নাই, তুমি বেবি নিয়ে আসো, আমি তোমাকে বের করে দেব।’ দ্বিতীয় গেট দিয়ে তখন শুধু ঢোকা যায়, বের হওয়া যায় না। ফরিদ করল কী, পল্টন থেকে যে গাড়িগুলো আসছিল ওগুলোকে আটকে দিয়ে আমাকেসহ বেবিটা বের করে দিল। আমার সাথে যারা চাকরি করত, অনেককেই বললাম, ‘আমাকে একটু এগিয়ে দিয়ে আয়।’ কিন্তু কেউ আসল না। আমি একাই আল্লাহর নাম নিয়ে বের হয়ে গেলাম। বেবিওয়ালাও বুঝল, এটা মনে হয় বিশেষ ব্যবস্থা। সে-ও কোনো দিকে না তাকিয়ে দিল এক টান।
প্রেস ক্লাবের সামনে আর্মি একটা বড় ট্রাকের উপরে বসে আছে। তার নিচ দিয়েই বেবিটা চলে গেল। ওরা আমাকে ডাকলও না, আমিও তাকালাম না। ‘আল্লাহ, আল্লাহ’ করতে করতে চলে গেলাম।
কার্জন হল, চানখাঁর পুলের সামনে দিয়ে গেলাম চকবাজার। চকবাজার গিয়ে একটু স্বস্তি পেলাম। কিছু লোকজন দেখা যায়। আর সব রাস্তা ফাঁকা। আর্মি টহল দিচ্ছে। এখান থেকে সোয়ারি ঘাটে যাওয়ার পর দুটো ছেলে এগিয়ে এলো ট্রাংক নিতে। আমি তাদের বললাম, ‘তোমরা পারবা না। বড় কাউকে ডাকো।’ পরে একজন এলো। ট্রাংক নিয়েই বলে উঠল, ‘ইসমে কেয়া হ্যায় ইতনা ওজন।’ আমি বললাম, ‘নিয়ে যা, কোনো কথা কইস না। আমাকে পার করে দে আগে।’ এখান থেকে এভাবে জিঞ্জিরা পর্যন্ত গেলাম। সেখানে দেখি, শয়ে শয়ে লোক জীবন নিয়ে পালাচ্ছে। বোঝেন না, জীবনের ভয়ে ওরা পালায়, আর আমি ছুটছি বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাঁচাতে।
দেখলাম একটা বাস ছেড়ে দিচ্ছে। আমি সেটার পেছনে জোরে এক থাপ্পড় দিলাম। তখন তরুণ ছিলাম, চেহারার মধ্যে একটা অন্য রকম ইয়ে ছিল। ড্রাইভার তখন পেছনে তাকিয়ে আমাকে দেখল, কী বুঝল জানি না। বাস থামিয়ে দিল। আমাকে ইঙ্গিত দিল উপরে তুলে দেন। আমি বাসের ছাদে উঠে পড়লাম। তারপরেও কিন্তু শান্তি পেলাম না। ভয় হলো (আর্মি) যদি আমার পিছু নেয়, যদি দেখে ফেলে তাহলে কী হবে?
তখন এক বাঙালি অন্য বাঙালিকে খুব সহযোগিতা করত। জিঞ্জিরা থেকে গেলাম বক্সনগর নামে একটা জায়গা আছে, সেখানে। এই পর্যন্তই বাস যেত, তারপরে আর যেত না। রাস্তা ছিল দুই পাশে ইট বিছানো, সেটা দিয়েই বাস যেত। সেখানে নামার পরে ট্রাংক নামালাম। এখন যদি নৌকায় উঠি, তাহলে আমাকে যদি চেক করে, তাহলে তো দৌড়াতে পারব না। আমি করলাম কী, একটা ঘোড়াওয়ালা ঠিক করলাম। সেখান থেকে গেলাম জয়পাড়া মজিদ দারোগার বাড়ি, দোহার থানায়। সেখানে গিয়ে উঠি।
এদিকে (আবুল খায়ের) খায়ের সাহেব তো আমাকে বিদায়ের সাথে সাথে বের হয়ে আমাকে পায়নি। এত জলদি যে আমি বের হয়ে যাব, এটা উনি চিন্তা করেননি। আমাকে না পেয়ে আবার তিনি গেছেন পাগল হয়ে। তিনি মনে করেছেন, আমাকে মনে হয় ধরে নিয়ে গেছে, মেরে ফেলেছে। আমার যেই বাড়িতে যাওয়ার কথা তিনিও সেই বাড়িতে গিয়ে উঠেছেন। এদিকে আমিও পৌঁছেছি। আমি তো ওখানে গিয়ে বলিনি, বলেছি অফিসের কাগজপত্র। এটার মধ্যে কী আছে, এত কিছু বলিনি।
এটা কার বাড়ি ছিল?
এটা ছিল জয়পাড়া মজিদ দারোগার বাড়ি। আমি বলেছি, স্যার পাঠিয়েছেন, কিছু কাগজপত্র আছে। এদিকে খায়ের সাহেব চলে এসেছেন। আমাকে দেখে বলেন, ‘ও এসেছ তুমি?’ বললেন, বসো। আমরা ওখানে খাওয়াদাওয়া করলাম। পরের দিন সকালে সেখান থেকে চলে এলাম।
ট্রাংকটা কি তাহলে মজিদ দারোগার বাসাতেই ছিল শেষ পর্যন্ত?
কিছুদিন ছিল মজিদ দারোগার বাসায়। তারপর খায়ের সাহেবের ফ্যামিলির কেউ তো আর তখন ঢাকায় নেই। দোহারের চরকোশায়ই নামে একটা গ্রাম আছে, জয়পাড়ার পাশেই। আমাকে (তিনি) বললেন, ‘তুমি আমার ফ্যামিলি নিয়ে আসো। চরকোশায়ই দানেশ খাঁর বাড়িতে চলে এসো।’
দানেশ খাঁর ভাই উমেদ খাঁ আমার পরিচিত ছিলেন। দানেশ খাঁ যে তারই ভাই, এটা তখনও আমি জানতাম না। একদিন পর তার ফ্যামিলি নিয়ে ফিরলাম। তিনি যে পরের দিনই কলকাতা চলে যাবেন, এই কথাটা আবার আমার থেকে গোপন করে গেছেন। আমাকে শুধু বলেছে, ‘যা ঘটবে, শুধু ছবি তুলে রাখবা।’ এই দায়িত্বটা দিয়ে গিয়েছিলেন।
আমাদের মধ্যে কিছু নন-বেঙ্গলি ছিল। তারা বলত যে, ‘আমজাদ, তুমি বঙ্গবন্ধুর ভাষণও সরালা, আবার পরিচালককেও সরায় দিলা।’
আমি ভয় পেলাম। যদি এসব প্রকাশ করে দেয়, আমি তো মরে যাব। তখন আমি আত্মগোপনে এক আত্মীয়ের বাড়ি চলে গেলাম। পরে অবশ্য ফিরে আসি।
তাহলে ভাষণের ভিডিওটা কোথায় ছিল? চরকোশাই?
ভাষণটা তো চরকোশাই নিয়ে গেল। উমেদ খাঁর ধানের গোলায় চলে গেল ওটা। খায়ের সাহেব যখন কলকাতায় চলে গেলেন, সেখানে বাংলাদেশ হাই কমিশনে যোগাযোগ করে মুক্তিবাহিনী পাঠিয়ে ওটাকে নিয়ে যান ভারতে। যুদ্ধ চলাকালে পুরো সময় ওটা ভারতেই ছিল। অনেকে জানে না কোথায়। দেশ যখন স্বাধীন হলো, তখন উনি ওটা নিয়ে দেশে ফিরলেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশসহ মুসলিমবিশ্বে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। দিবসটি পালনে সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল মহানবী (সা.)-এর ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মহফিল। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মানবজাতির রহমত স্বরূপ প্রেরিত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আরবের মক্কা নগরীর সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে মা আমিনার কোলে জন্ম নেন।
তাঁর পিতার নাম আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব। রিসালাতের দায়িত্ব পালন শেষে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের ঠিক একই তারিখে ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন তিনি।
পবিত্র দিনটি উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানসহ সারা দেশে ব্যাপক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। গত শুক্রবার বাদ মাগরিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ (আ.) আউয়াল হাওলাদার প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন।
বিশ্বনবীর জন্মদিন উপলক্ষে গত শুক্রবার বাদ মাগরিব থেকে শুরু হওয়া ওয়াজ মহফিল আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর শেষ হবে। ১৫ দিনব্যাপী বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ পূর্ব সাহানে এতে বয়ান করবেন দেশবরেণ্য আলেম-ওলামারা।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে জাতীয় মসজিদের পূর্ব ও দক্ষিণ সাহানে মাসব্যাপী ইসলামী বইমেলারও আয়োজন করা হয়েছে।
১৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে এ মেলা। চলবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। মেলায় মিসর, তুরস্ক, পাকিস্তান ও লেবাননের পুস্তক প্রকাশনা সংস্থাসহ দেশ-বিদেশের প্রায় ২০০ স্টল স্থান পাবে মেলায়।
এছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫৬টি ইসলামিক মিশন ও ৮টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.)-এর জীবন ও কর্ম সম্পর্কিত ওয়াজ-মাহফিল এবং ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন।
একই সঙ্গে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৭ হিজরি উদযাপন উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫৪টি ইসলামিক মিশন ও ৮টি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। দৈনিক বাংলার জেলা-উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত;
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষ্যে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় ‘ইয়া নবী সালাম আলাইকা, ইয়া রাসুল সালাম আলাইকা’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো নগরী। গত শনিবার সকাল সোয়া ১০টায় নগরীর ষোলশহর আলমগীর খানকাহ থেকে এই জুলুস শুরু হয়।
জুলুসের নেতৃত্বে ছিলেন সিরিকোট দরবারে আলীয়া কাদেরিয়ার সাজ্জাদনশীন পীর সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ। তাঁর সাথে আরও উপস্থিত ছিলেন- শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ ও সৈয়্যদ মুহাম্মদ মেহমুদ আহমদ শাহ্।
মাদরাসা শিক্ষার্থীদের বেস্টনির মধ্য দিয়ে সাবির শাহকে বহনকারী গাড়ি অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে থাকে নবীপ্রেমীদের মহামিছিল। নগরীর বিবিরহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড় হয়ে পুনরায় একই রুটে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া ময়দানে গিয়ে মিলিত হন মুসল্লিরা। এ সময় মাইক ও সাউন্ডবক্সে হামদ, না’ত, গজলসহ নানা ধরনের ইসলামী গানে বন্দরনগরী জুড়ে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়। ‘ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ এল রে দুনিয়ায়, এয়া নবী সালাম আলাইকা, তুমি সৃষ্টির সেরা নবী কামলিওয়ালাসহ নানা গানে মাতোয়ারা হন অংশগ্রহণকারীরা। জুলুসে অন্যান্যবারের মতো এবারও শরিয়ত সম্মত পরিবেশ বজায় রাখতে ড্রাম সেট বাজানো, নারীর অংশগ্রহণ ও খাবার নিক্ষেপ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ছিল। এর আগে, গত শনিবার ভোর থেকে নগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসল্লিরা মুরাদপুর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে আসতে থাকেন। জুলুস শুরুর আগেই লাখ, লাখ মানুষের জমায়েতে লোকারণ্য হয়ে ওঠে মাদরাসার আশপাশের এলাকা।
মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) জন্ম ও ওফাত দিবস উপলক্ষ্যে চট্টগ্রামে প্রতি বছর এদিনে আয়োজিত হয় জশনে জুলুস, যার আয়োজন করে আঞ্জুমানে আহমদিয়া রহমানিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট। এবারের ৫৪তম আয়োজনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘শান্তি ও সমৃদ্ধির বাংলাদেশ’।
তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে নৌকা যোগে জশনে জুলুছ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টায় আলা হযরত সুন্নি সংঘের সার্বিক সহযোগিতায় ও তাহিরপুর ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে এ জশনে জুলুছের আয়োজন করা হয়। প্রায় ১৫টি নৌকা নিয়ে একতা বাজার থেকে জুলুছ শুরু হয়ে হলহলিয়া, মাটিকাটা, হাফানিয়া, লেদারবন্দ, বিন্দাবন্দ, নতুন বাজার ব্রিজ, কাউকান্দি বাজার, বোরকারা ও চরগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। পরে হলহলিয়া পশ্চিমপাড়া হাফেজ শামসুল হক বোগদাদি সুন্নিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সমাবেশে মিলিত হয়।
আলা হযরত সুন্নি সংঘের কো-অর্ডিনেটর রমজান আলী রবিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তারা হযরত মুহাম্মদ এর আগমনের তাৎপর্য তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ৩নং বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাছির মিয়া, আবু বকর সিদ্দিক আল ক্বাদেরী, হাফেজ মোশাররফ হোসেন, ক্বারী মাওলানা রাহুল আমিন, মাওলানা আশরাফুল ইসলাম, আলা হযরত সুন্নি সংঘের সভাপতি জলিল আহমেদ তামিম, অর্থ সম্পাদক নূরুল হক, সহ-সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।
জামালপুর প্রতিনিধি: ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামানিক বলেছেন, মহানবী (সা.) জীবনাদর্শ মানুষের মুক্তির দিশারি। তিনি বিশ্ব মানবতার জন্য অনুপম শিক্ষা ও আদর্শ রেখে গেছেন। তার জীবনাদর্শ আলোকবর্তিকা হিসেবে প্রতিটি যুগ ও শতাব্দীর মানুষকে মুক্তির পথ দেখাবে। গত শনিবার সকালে জামালপুরে জেলা মডেল মসজিদ মিলনায়তনে পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) ১৪৪৭ হিজরি উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামালপুর জেলা প্রশাসন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উন্নয়নে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এস এম তরিকুল ইসলাম। মূখ্য আলোচক হিসেবে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা করেন কামালখান হাট কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আখতারুজ্জামান সিদ্দিকী।
অন্যান্যের মধ্যে সিভিল সার্জন ডা. মো. আজিজুল হক, জামালপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াহিয়া আল মামুন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ প্রমূখ বক্তৃতা করেন। এ অনুষ্ঠানে ধর্ম সচিবের একান্ত সচিব মো. কামরুল ইসলাম, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দীক, জেলা তথ্য অফিসের সিনিয়র তথ্য অফিসার মোঃ জালাল উদ্দিনসহ জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও আলেম-ওলামারা উপস্থিত ছিলেন।
রূপগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে র্যালি ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ দোয়া মাহফিল, র্যালী ও অসহায় ও দুস্তদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। শাহবাজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ হোসাইন শাহবাজী'র নির্দেশনায় ও শাহবাজ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ র্যালিটিতে উপস্থিত ছিলেন, শাহবাজ ফাউন্ডেশনের রিয়াদ হোসেন , হাসান মীর,ইয়ামিন মিয়া , মো. ফেরদৌস,মারফত আলী, মকবুল হোসেন, মো. কিরনসহ সর্বস্তরের মুসলিম জনতা। নগর পাড়া মাদ্রাসায এ উপলক্ষ্যে বিএনপি নেতা মামুন মিয়ার নেতৃত্বে মুসল্লিদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়। সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মার শুভকামনায় মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান দোয়া করেন। গত শনিবার ভোর থেকেই এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসল্লিরা জমায়েত হতে শুরু করেন। পরে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অংশগ্রহণে এক বিশাল র্যালি বের হয়, যা ভূলতার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে ইসলামিক পতাকা, ব্যানার, স্লোগান এবং মিলাদুন্নবী (সা.)-এর মাহাত্ম্য তুলে ধরা হয়।
মইনুল হক মৃধা, রাজবাড়ী: জশনে জুলুস পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) উপলক্ষ্যে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার আঞ্জমানে-ই-কাদেরীয়া দৌলতদিয়া খানকা শরীফ ও কেন্দ্রীয় ইমাম বাড়া শরীফের আয়োজনে পৃথক মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রথমে দৌলতদিয়া খানকা শরীফ থেকে একটি বিশাল মিছিল বের হয়ে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকা প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে সকাল ১০টা ১১ মিনিটে কেন্দ্রীয় ইমাম বাড়া শরীফ থেকে একটি বিশাল মিছিল বের হয়ে মহাসড়কের পাশ দিয়ে গোয়ালন্দ বাজার প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
দৌলতদিয়া খানকা শরীফের মিছিলে এসময় উপস্থিত ছিলেন, আঞ্জুমান-ই কাদেরীয়া দৌলতদিয়া খানকা শরীফের সভাপতি মুক্তার হোসেন বেপারী, সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুল হক ও কেন্দ্রীয় ইমাম বাড়া শরীফে এসময় উপস্থিত ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহাবুব, কোষাধ্যক্ষ সুমন মোল্লা সহ বিপুল সংখ্যক ভক্ত ও মুরিদান মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।
মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর: ফরিদপুরে যথাযথ মর্যাদার মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী(সা:) পালিত হয়েছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর জন্মদিন উপলক্ষে শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) উদযাপন কমিটির উদ্যোগ একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
জশনে জুলুশে ঈদে মিলাদুন্নবীর শোভাযাত্রা টি জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে আলিপুর গোরস্থান জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয় ।
এর মাঝে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত পথ সভায় বক্তব্য রাখেন তুলাগ্রাম দরবার শরীফের পীর সাহেব শাহ সূফী আলহাজ্ব হযরত কোরবান আলী আল- চিশতী নিজামী, ডোমরাকান্দি সাবেরিয়া দরবার শরীফের পীর সাহেব সাজ্জাদ হোসেন রনী আল-চিশতী সাবেরী ও ফরিদপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আমির হোসেন মাসুদ।
এসময় ভাটি লক্ষিপুর খানকায়ে চিশতীয়া রশীদিয়া দরবার শরীফের গদীনশীন পীর হযরত খাজা শাহ্ সুফী মো. আব্দুস সামাদ আল চিশতী নিজামী, পীরজাদা মো: সাহিদ মোল্লা আল চিশতী নিজামী, পীরজাদা মো: নুরুল ইসলাম আল চিশতী নিজামীসহ ধর্র্মপ্রাণ মুসলমারা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।
মাগুরা প্রতিনিধি: সারা দেশের ন্যায় মাগুরাতেও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে ঈদে মিলাদুন্নবী। এ উপলক্ষে বিশাল এক আনন্দ রেলি বের করা হয়। বাংলাদেশের মুসলিমরা প্রতিবছর এই দিনটিকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন । গত শনিবার মাগুরা সদর উপজেলার আবালপুর গ্রামে স্থানীয় গ্রামবাসী এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বিশাল এক আনন্দ রেলি বের করা হয়। রেলিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে । পরে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এ সময় ছোট বড় হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। নবীজির উদ্দেশ্যে বিশেষ মোনাজাত শেষে গ্রামবাসীদের মধ্যে খিচুড়ি বিতরণ করা হয়।
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেছেন, রোগীদের অসন্তুষ্টি দূর করা ও রোগীদের কষ্ট অনুধাবন করার প্রথম দায়িত্ব নার্সদের। অনেক ঝুঁকি ও সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও, নানা প্রতিকূলতার মধ্যে নার্সদের সেবা দিয়ে রোগীদের সন্তুষ্ট করতে হবে।
রোববার গ্র্যাজুয়েট নার্সিং বিভাগের ১৪ম ব্যাচের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্যাপিং সেরিমনির অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, সিঙ্গাপুর সার্ভিস দিয়ে উন্নত দেশ হয়েছে। বাংলাদেশ নার্সিং সার্ভিস দিয়ে বিশ্বে পরিচিত হওয়া সুযোগ রয়েছে। নার্সিং এমন একটি মহান পেশা যার গুরুত্ব শুধু সমাজে নয়, ধর্মেও রয়েছে। উন্নত নার্সিং সেবার মাধ্যমেই চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারে। তাই চিকিৎসাসেবার উন্নয়নে ও রোগীদের মন জয় করার লক্ষ্যে নার্সদের সেবার মহান পেশা নার্সিং এ সম্পূর্ণভাবে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইসলাম ধর্ম ও ইসলামের ইতিহাসে নার্সিং সেবার গুরুত্ব বিশেষভাবে স্বীকৃত। মানবসেবায় আত্মনিয়োগের মাধ্যমে নার্সিং পেশার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে।
উপউপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন নার্সিং পেশার গুরুত্ব অনুধাবন করেই নার্সদের গবেষণার জন্য অনুদান দেওয়া শুরু করেছে। চিকিৎসাসেবায় নার্সিং সেবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নার্সিংসেবা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা আমি যখন অসুস্থ হয়েছি, যখন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলাম তা গভীরভাবে উপলব্ধি করেছি। বিএমইউ নার্স, নার্সিং শিক্ষার্থীরা মানবসেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপণ করবে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বিএমইউর নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. মনির হোসেন খানের সভাপতিত্বে ক্যাপিং সেরিমনি অনুষ্ঠানে শপথ পরিচালনা করেন গ্র্যাজুয়েট নার্সিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুপুর ডি কস্তা।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পরিবহন পুলে শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্ত হয়েছে নতুন চারটি ভাড়াকৃত ডাবল ডেকার বাস। পাবনা বাস ডিপো থেকে ভাড়া করা হয়েছে এসব বাস। তবে এসব বাস ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার অভিযোগ এসেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে। তবে ১ মাসের মধ্যে নতুন সংযোজন হবে বলে আশ্বাস দেন পরিবহন প্রশাসক ও বিআরটিসি পাবনা ডিপোর ডিজিএম মনিরুজ্জামান বাবু। রবিবার এসব বাস উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। এসময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. মনজুরুল হক, পরিবহণ প্রশাসন অধ্যাপক ড. আব্দুর রউফ, পাবনা বাস ডিপোর ডেপুটি জেনারের ম্যানেজার (ডিজিএম) মনিরুজ্জামান বাবু সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন শেষে সবাই বাসে চড়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। তবে জানা গেছে, এই বাসগুলো ঢাকার বিভিন্ন রুটে চলেছিলেন। যার ফলে দুর্ঘটনা-সহ বিভিন্ন কারণে বাসগুলোতে ত্রুটি রয়েছে।
জানা গেছে, পরিবহন পুলে মোট বাস রয়েছে ৫৬টি। নতুন ডাবল ডেকার চারটি ভাড়া বাস যুক্ত হয়ে এই সংখ্যা দাঁড়ালো ৬০টি। তার মধ্যে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ৮টি এসি বাসসহ নিজস্ব বাস ২৪টি এবং ভাড়াকৃত ৩৬টি। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ ৬টি বাস। বাকি নিজস্ব বাসগুলো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। এদিকে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য নিজস্ব ডাবল ডেকার বাস আছে একটি এবং সর্বশেষ সংযোজনসহ ভাড়াকৃত ডাবল ডেকারের সংখ্যা ১৩টি। বাকিসবই ভাড়া বাসে যাতায়াত করেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে লোকেশনগত সমস্যার কারণে যানবাহনের উপর নির্ভর করতে হয়। আজকের এই চারটি দ্বিতল বাস শিক্ষার্থীদের জন্য নিবেদিত। বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণমাত্রায় আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত আমরা উত্তরোত্তর যানবাহন ব্যবস্থা উন্নত করে যাবো। বিআরটিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা হয়েছে। তারা নতুন সংযোজন আসলে আমাদের বাসগুলো পরিবর্তন করে দিবে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে গত তিন দিনে ৫ হাজার ৭১৯ টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৮৬৬টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৩২০টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
রোববার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিকশৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
শিল্প ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, সকল বাধা অতিক্রম করে, বিচার ও সংস্কারের ধারাবাহিকতায় এ সরকার আগামী নির্বাচন সম্পন্ন করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেসব কাজ শুরু করেছে, জনগণের নির্বাচিত সরকার সেসব কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মেঘনাঘাট এলাকায় অবস্থিত আনন্দ শিপইয়ার্ড এন্ড শ্লিপওয়েজ লিমিটেড তুরস্কের মালিকানাধীন নির্মিত কার্গো জাহাজ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। দেশের মানুষ উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন উদযাপন করার অপেক্ষায় আছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জাহাজ শিল্পের ঐতিহ্য রয়েছে। গার্মেন্টস শিল্পের পর গুরুত্বপূণ শিল্প জাহাঝ শিল্প। আমরা স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশের তৈরি জাহাজ বাংলাদেশের প্রতিক্ষায় ব্যবহৃত হবে। বর্তমানে দেশে জাহাজ শিল্প আরো উপরের দিকে উঠছে। আনন্দ শিপইয়ার্ডে নির্মিত জাহাজ গুলো বিভিন্ন দেশে রপ্তানির মাধ্যমে জাহাজ শিল্পকে আরো এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, তুরস্কের বাণিজ্যিক কাউন্সিলর বেলাল বেলিয়েট, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নুরুজ্জামান এনডিসি, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা, আনন্দ শিপইয়ার্ড এন্ড শ্লিপওয়েজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ড.আব্দুল্লাহ হেল বারি, এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সৈয়দ মিজানুর রহমান, আনন্দ শিপইয়ার্ড এন্ড শ্লিপওয়েজ লিমিটেডের পরিচালক ড. আব্দুল্লাহ নাজমা নওরজ প্রমুখ।
পরে জাহাজ রপ্তানীমুখী প্রতিষ্ঠান আনন্দ শিপইয়ার্ড এন্ড শ্লিপওয়েজ লিমিটেডের তৈরিকৃত ওয়েজ ওয়্যার নামে ৫৫০০ ডেড ওয়েট ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন মাল্টিপারপাস কার্গো জাহাজটি তুরস্কের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নওপ্যাক শিপিং এন্ড ট্রেডিং লিমিটেডের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ধর্ম নিয়ে প্রতিযোগিতা মানবজাতির ধ্বংস ডেকে আনতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। গত শনিবার দিনব্যাপী ‘রিলিজিয়নস ফর পিস বাংলাদেশের (আরএফপি)’ আয়োজনে ‘চট্টগ্রাম পিস সামিটে’ মেয়র এ মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই পৃথিবীতে সকল ধর্মের আবির্ভাব হয়েছে। তাই প্রতিটি বড় বড় জনগোষ্ঠির চর্চিত ধর্মে শান্তির বাণীই প্রচার করা হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্ত:ধর্মীয় সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিকল্প কোনো পন্থা নেই। তাই ধর্ম নিয়ে কোনো প্রতিযোগিতা হতে পারে না, এতে মানুষে-মানুষে ভেদাভেদ তৈরি হয়। এই প্রতিযোগিতা মানবজাতির শুধুই ধ্বংসই ডেকে আনতে পারে।
‘এশিয়ান কনফারেন্স অব রিলিজিয়নস ফর পিস’র সহযোগিতায় চিটাগং ক্লাবের তেরেস হলে অনুষ্ঠিত এই পিস সামিট। আরএফপি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. সুকান্ত ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পিস সামিটে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও আরএফপির নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, আরএফপি এশিয়ার সেক্রেটারি জেনারেল রেভারেন্ট প্রফেসর ড. ইয়োশিনরি সিনোহরা, বিশেষ উপদেষ্টা রেভারেন্ট ড. নবোহিরো নেমতো, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইম্যানের ডিন প্রফেসর ড. জন ম্যাথিও, আরএফপি চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ড. মাছুম আহমেদ, ঢাকার প্রেসিডেন্ট সুকোমল বড়ুয়া এবং সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম। সামিটের দ্বিতীয় অধিবেশনে মতামত তুলে ধরেন আমন্ত্রিত বিশিষ্ট জনেরা
“মার্কেটিং ওয়েল বিং” প্রতিপাদ্য নিয়ে আসন্ন ৮ম বাংলাদেশ মার্কেটিং ডে ২০২৫-এর লোগো উন্মোচন করা হয়েছে। ১৬ ও ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য এই দুইদিনব্যাপী আয়োজনে দেশব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কর্পোরেট হাউস এবং কেন্দ্রীয়ভাবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে।
১৬ অক্টোবর সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্পোরেট হাউসসমূহে দিবসটি উদযাপিত হবে। ১৭ অক্টোবর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান হবে, যেখানে দেশসেরা বিপণন ও বিক্রয় পেশাজীবীরা অংশ নেবেন।
দেশের বৃহত্তম সেলস ও মার্কেটিং পেশাজীবী কমিউনিটির কল্যাণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবারও এ আয়োজন করছে মার্কেটারস' ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (MIB)।
মন্তব্য