× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বিশেষ
প্রাণঘাতী ভেজাল মদ ছড়িয়ে পড়ছে যেভাবে
google_news print-icon

প্রাণঘাতী ভেজাল মদ ছড়িয়ে পড়ছে যেভাবে

প্রাণঘাতী-ভেজাল-মদ-ছড়িয়ে-পড়ছে-যেভাবে
‘খাবার অযোগ্য মিথানল শরীরে প্রবেশ করলে বিষক্রিয়ায় কোষে অক্সিজেন সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। শরীরে অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং কিডনি সেই অতিরিক্ত অ্যাসিড বের করে দিতে সক্ষম হয় না। এ কারণে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, প্রচণ্ড বমি হতে থাকে, দম বন্ধ হয়ে আসে। একপর্যায়ে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।’

রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আশফাকুর রহমান। ঢাকার বিভিন্ন বারে মদ পান করার সময় ওয়েটারদের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে ওয়েটারদের মাধ্যমে মদের বোতল কিনতে শুরু করেন আশফাক। কিছু লাভ রেখে বন্ধুদের কাছে সেই মদ বিক্রিতে নামেন তিনি।

ফেসবুকে একটি প্রাইভেট গ্রুপ খুলে তিনি শুরু করেন মদের হোম ডেলিভারি। এই ব্যবসা চালাতে আশফাককে মদ কোথাও সংরক্ষণ করতে হয়নি। অর্ডার পেলে বারের ওয়েটারদের মাধ্যমে বিদেশি মদ সংগ্রহ করে তিনি নিজে পৌঁছে দিতেন ক্রেতার কাছে।

তবে করোনার সময়ে বার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মদের চাহিদা যেমন বাড়ে, তেমনি সরবরাহেও তৈরি হয় ঘাটতি। এ সময় পরিচিত এক ওয়েটার তাকে টিউনিং করা মদের (বিদেশি বোতলে দেশীয় মদ বা ভেজাল মদ) বোতল বিক্রির পরামর্শ দেন।

এ ধরনের ভেজাল মদের দাম কম, লাভ বেশি। আশফাক কিছুদিন এ ধরনের মদ বিক্রি করেছেন।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অধিকাংশ সময় ক্রেতারা নিম্ন মানের এই মদের তফাত ধরতে পারতেন না। তবে অভিজ্ঞরা ধরে ফেলতেন। সে জন্য কয়েকবার ঝামেলায় পড়েছি। যারা বুঝতেন, তারা টাকা পরিশোধ করতেন না। এভাবে আমার বেশ কিছু টাকা খোয়া গেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার সরবরাহ করা মদ খেয়ে কেউ অসুস্থ বা মারা যাননি। তবে কয়েক দিন আগে ভাটারা এলাকা থেকে আমার সেই সোর্স ভেজাল মদ বানানোর অপরাধে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে বলে শুনেছি। এখন ওই গ্রুপের কারও সঙ্গে আমার যোগাযোগ নেই।’

প্রাণঘাতী ভেজাল মদ ছড়িয়ে পড়ছে যেভাবে
রাজধানীতে পুলিশের অভিযানে উদ্ধার করা ভেজাল মদ ও সরঞ্জাম

রাজধানীর শান্তিনগর এলাকার একজন ব্যবসায়ী নিয়মিত মদ পান করেন। তিনি জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর থেকে বাজারে বিদেশি মদের ব্যাপক সংকট তৈরি হয়েছে।

ওই ব্যবসায়ী বলেন, ‘আগের দামের তুলনায় এক-দেড় হাজার টাকা বেশি দিয়েও মদ কিনেছি। তবে তিন মাস ধরে কারও কাছেই মদ পাওয়া যাচ্ছে না, যাকে ফোন করি সে-ই বলে, নাই। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে বন্ধুদের একটা আড্ডার আয়োজন ছিল। তখন মদের জন্য একটা ফেসবুক পেজের নম্বরে ফোন দিয়েছিলাম। দুই বোতল অ্যাবসোলিউট ভদকা আনিয়েছিলাম ১১ হাজার টাকা দিয়ে। কিন্তু একটু মুখে দিয়েই বুঝেছি ঝামেলা আছে। মুখে দেয়ামাত্রই মনে হলো মুখ পুড়ে যাচ্ছে। এখন তো শুনি এসব খেয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে।’

বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিকের পিআর প্রতিষ্ঠান ফোরথটপিআরের ৪৩ জন কর্মী অবকাশ কাটাতে গত ২৮ জানুয়ারি যান গাজীপুরের সারাহ রিসোর্টে। সেখানে মদ পান করে ঢাকায় ফেরার পর মারা যান তিনজন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় আরও বেশ কয়েকজনকে।

রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ৩১ জানুয়ারি মারা যান। প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে পুলিশের দাবি, ওই ছাত্রী ২৮ জানুয়ারি উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয় মদ পান করেন। তাদের মধ্যে এক বন্ধু অসুস্থ হয়ে ৩০ জানুয়ারি সিটি হাসপাতালে মারা যান। এর পরদিন মারা যান ওই ছাত্রী। অবশ্য অসুস্থ অবস্থায় ছাত্রীটিকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরপরই তার বাবা বন্ধুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা করেছেন।

এসব ঘটনায় ভেজাল মদের ভয়াবহতা নিয়ে তৈরি হয়েছে ব্যাপক উদ্বেগ। নিউজবাংলা টানা অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছে, ভেজাল মদের কারণে রাজধানীতে মারাত্মক অসুস্থতার পাশাপাশি মৃত্যুর বেশ কিছু ঘটনা সম্প্রতি ঘটেছে। সমালোচনা এড়াতে এসব ঘটনার বেশির ভাগই চেপে যাচ্ছে ভুক্তভোগী অথবা তাদের পরিবার।

প্রাণঘাতী ভেজাল মদ ছড়িয়ে পড়ছে যেভাবে

হাসপাতালের পরিসংখ্যান উদ্বেগজনক

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর ও গ্রিন রোড এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি বার। এই এলাকার আশাপাশের সরকারি-বেসরকারি বেশ কয়েকটি হাসপাতালের পরিসংখ্যান বলছে, সাম্প্রতিক কয়েক মাসে ভেজাল মদ খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েছে।

রাজধানীর আনোয়ার খান মডেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, গত ছয় মাসে তারা এ ধরনের অন্তত ১৩ জন রোগী পেয়েছেন। পান্থপথের বিআরবি হাসপাতাল এমন রোগী ভর্তি হয়েছেন ১০ জনের বেশি।

পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছেন ভেজাল মদে অসুস্থ বেশ কয়েকজন। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

বেসরকারি হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক নিউজবাংলাকে জানান, পুলিশসহ অন্য ঝামেলা এড়াতে মদ খেয়ে অসুস্থরা সাধারণত হাসপাতাল এড়িয়ে চলতে চান। পরিস্থিতি গুরুতর হলেই কেবল তারা হাসপাতালে আসেন। এ ক্ষেত্রেও বেশির ভাগই সরকারি হাসপাতাল বেছে নেন।

বিষয়টি নিয়ে নিউজবাংলা কথা বলেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মদ পান করে অসুস্থতার ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। তবে সঠিক পরিসংখ্যান আমরা দিতে পারব না।’

ডা. সোহেলের সঙ্গে গত ৪ জানুয়ারি কথা বলে নিউজবাংলা। সে সময় তিনি বলেন, ‘বিষাক্ত মদ পানে মারা গেছেন এমন তিন জনের দেহ এই মুহূর্তে ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে আছে।’

ভেজাল মদ কেন প্রাণঘাতী

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষাক্ত মদে কিডনি ও লিভারের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভেজাল মদে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। এছাড়া স্নায়ুতন্ত্রেও মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।’

বিষাক্ত মদপানের প্রাথমিক উপসর্গের বিবরণ দিয়ে ডা. সোহেল বলেন, ‘খাবার অযোগ্য মিথানল শরীরে প্রবেশ করলে বিষক্রিয়ায় কোষে অক্সিজেন সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। শরীরে অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং কিডনি সেই অতিরিক্ত অ্যাসিড বের করে দিতে সক্ষম হয় না। এ কারণে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, প্রচণ্ড বমি হতে থাকে, দম বন্ধ হয়ে আসে। একপর্যায়ে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।

‘মিথানল গ্রহণ করার পর যত সময় যায়, ততই তা শরীরের সঙ্গে মিশে যায়। ফলে শরীরের আরও বেশি ক্ষতি হয়।’

ভেজাল মদ নিয়ে নিউজবাংলাকে বিস্তারিত জানিয়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান রাসায়নিক কর্মকর্তা দুলাল কৃষ্ণ সাহা।

তিনি বলেন, ‘আগে আমরা ভেজাল মদ বলতে যা পেতাম তা ছিল দেশীয় মদের সঙ্গে পানি বা ঘুমের ওষুধের মিশ্রণ অথবা ইথাইল অ্যালকোহলের সঙ্গে পানি বা রঙ মিশিয়ে বানানো। তবে এখন যা পাচ্ছি তা হল মিথানল, যা পূর্নাঙ্গ টক্সিক বা বিষ। ’

দুলাল কৃষ্ণ জানান, ইথালন হলো রেকটিফাইড স্পিরিট, তবে এটি মিথানলের মতো অতটা প্রাণঘাতী নয়। মিথানল ব্যবহার করা হয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাজে, এই মিথানল দিয়ে কাঠের আসবাবও রং করা হয়। এটা পরিপূর্ণ বিষ, আর মানুষ এটা খেয়েই মারা যাচ্ছে। ’

তিনি জানান, দেশে প্রাকৃতিক উপায়েই ইথানল তৈরি হচ্ছে, আর শিল্প কারখানার জন্য আমদানি করা হচ্ছে মিথানল। সে হিসেবে ইথানল ও মিথানল দুটি রাসায়নিকই বাংলাদেশে সহজলভ্য।

পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার রকিবুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যালকোহলের ক্ষেত্রে মিথানল মিশিয়ে সেগুলো পানের অযোগ্য করে ফেলে হয়। তখন এটাকে বলে মিথিলেটেড স্পিরিট। এই স্পিরিট মূলত বার্নিশের দোকানসহ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্ষেত্রে কাজে লাগে।’

প্রাণঘাতী ভেজাল মদ ছড়িয়ে পড়ছে যেভাবে
এভাবেই তৈরি হচ্ছে ভেজাল বিদেশি মদ

ডা. রকিব জানান, ইথানল ও মিথানল আলাদা করা যায় রঙ দেখে। রেকটিফায়েড স্পিরিট বা ইথানল পানির মতো সাদা হয়, তবে মিথিলেটেড স্পিরিটে বেঞ্জিনসহ অন্য উপাদান মেশানোর ফলে রঙ খানিকটা বাদামি ও হালকা গন্ধ থাকে।

ভেজাল মদের বিষক্রিয়া কীভাবে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে তা ব্যাখ্যা করে ডা. রকিব বলেন, ‘যে ক্যামিক্যাল বডিতে যাচ্ছে তা প্রথমে রক্তে যাবে। শরীর এটাকে মেটাবোলাইজ (পরিপাক) করে। লিভার টক্সিক পাওয়ারটা নষ্ট করে। তারপর কিডনি এটাকে প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়। তাই এই ধরনের কেমিক্যাল ঢুকলে প্রথমে লিভার ও কিডনিকে আক্রান্ত করে। বেশি পরিমাণ খেলে লিভার ফেইল করে। পড়ে সেটা ব্রেইনে অ্যাটাক করে। ’

ইথানলের পরিবর্তে অতি বিষাক্ত মিথানল কেন

দেশে ইথানল ও মিথানল দুটি রাসায়নিকই সহজলভ্য। তবে মদে ভেজালকারীরা সম্প্রতি অত্যন্ত বিষাক্ত মিথানল ব্যবহার কেন বাড়িয়েছে, সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজেছে নিউজবাংলা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, দামের পার্থক্যই মূলত এর কারণ। এক লিটার ইথানল কিনতে খরচ হয় ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। অন্যদিকে, এক লিটার মিথানলের খুচরা দাম মাত্র ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ চোখে ইথানল আর মিথানলের পার্থক্য করা কঠিন। এ কারণে ভেজালকারিরা অনেক সময় না বুঝেই ইথানলের বদলে মিথানল দিয়ে মদ বানাচ্ছেন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান রাসায়নিক কর্মকর্তা দুলাল কৃষ্ণ সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মাত্র ১২ মিলি লিটার মিথানল মানুষের পেটে গেলেই অন্ধত্বসহ মৃত্যু হতে পারে। ৬০ মিলি লিটার (এক পেগ) মদে অ্যালকোহল থাকে সর্বোচ্চ ৩০ মিলি লিটার। সেই সূত্র মেনেই ভেজালকারিরা মিথানল দিয়ে মদ তৈরি করছে।’

ভেজাল মদ চেনার জানতে চাইলে দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, ‘এটা পরীক্ষা করা ছাড়া বোঝার উপায় নেই। ল্যাবে পরীক্ষা করে তবেই নিশ্চিত হওয়া যায়। ’

তবে ঢাকার একটি বারের একজন ওয়েটার জানান, মদে আগুন ধরিয়ে আসল-ভেজাল পরীক্ষা করা সম্ভব। ভেজাল মদে পানির মিশ্রণ থাকে বলে তাতে আগুন জ্বলে না।

রাজধানীর ভাটারা এলাকায় গত ১ জানুয়ারি অভিযান চালিয়ে ভেজাল মদ তৈরির একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গুলশান গোয়েন্দা বিভাগ।

এই বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘চক্রটির ভেজাল মদ তৈরি করতে খরচ পড়ত সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা। মুনাফার জন্য তাদের মানুষ মারতেও দ্বিধা নেই। ভাটারার এই চক্রটিই মূলত উৎপাদনের কাজ করত, তারপর ছড়িয়ে দিত রাজধানী ও আশপাশের এলাকায়। এই ভেজাল মদই গাজীপুর, মোহাম্মদপুরসহ অন্যান্য জায়গায় মানুষের মৃত্যুর কারণ।’

বেড়েছে মদের খালি বোতলের বিক্রি

ভেজাল মদকে নতুন হিসেবে চালিয়ে দেয়া হয় পুরোন বোতলে ভরে। নিউজবাংলার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে গত কয়েক মাসে পুরান ঢাকায় এ ধরনের বোতল বিক্রি বেড়েছে।

মদের পুরোন বোতল বিক্রিতে জড়িতরা নিউজবাংলাকে জানান, ফেলে দেয়া খালি বোতলগুলো সংগ্রহ করে টোকাই বা ভাঙারির লোকজন। তাদের কাছ থেকে একেকটি বোতল পাঁচ থেকে ১০ টাকায় কেনেন ভাঙারির দোকানিরা। এরপর সেগুলো পরিষ্কার করে ২৫ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি করা হয়।

প্রাণঘাতী ভেজাল মদ ছড়িয়ে পড়ছে যেভাবে
পুরান ঢাকায় বিক্রি হচ্ছে মদের খালি বোতল

মদের খালি বোতল পাইকারি দামে পাওয়া যায় পুরান ঢাকার নিমতলি এলাকায়। এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সম্প্রতি পুলিশের ভেজাল মদবিরোধী অভিযান শুরুর পর এখন আর প্রকাশ্যে মদের খালি বোতল বিক্রি হচ্ছে না। ব্যাবসায়ীরা জানান, এখন শুধু পরিচিত এবং বিশ্বস্তদের কাছেই বোতল বিক্রি করা হচ্ছে।

নিমতলীতে খালি মদের বোতল বিক্রেতাদের অন্যতম সাব্বির। নিমতলী মসজিদের ঠিক বিপরীত পাশে তার দোকানে সাজানো আছে কিছু কাঁচের কৌটা। তবে আড়ালে তার সংগ্রহে রয়েছে নানা ব্র্যান্ডের মদের খালি বোতল।

সাব্বিরের দোকানের কাছেই আরেক ব্যবসায়ী মামুনের দোকান। রাস্তার মাথায় তার ছোট ভাঙারির দোকানে অন্য পণ্যের পাশাপাশি কিছু কাঁচের বোতলও রাখা আছে। তবে পাশের আরেকটি ঘরে তার মূল গুদামে রয়েছে মদের অসংখ্য খালি বোতল।

মামুন নিউজবাংলাকে জানান, দামি ব্র্যান্ডের বোতলের দাম একটু বেশি। আর সাধারণ আকার, বিশেষ করে গোলাকৃতির বোতল ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী বলেন, গত তিন-চার মাসে দামি ব্র্যান্ডের বোতল বিক্রি বেড়েছে। পানি খাওয়া বা শোপিস হিসেবে ব্যবহারের জন্য এসব বোতলের তেমন চাহিদা নেই। এগুলো মূলত ভেজাল মদ প্রস্তুতকারকেরা নিয়ে যান।

বৈধ মদের সংকট কেন

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হিসেবে সারাদেশে বৈধ বার ও ক্লাবের সংখ্যা ১৮৬টি। এদের কোনো কোনোটি বিদেশ থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ সরাসরি আমদানি করছে, বাকিরা আমদানিকারকদের কাছ থেকে সরবরাহ নিচ্ছে।

এর বাইরে দেশে ২০৩টি মদ বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে, যার মধ্যে ১৪টি বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য শুল্কমুক্ত ওয়্যারহাউজ।

দেশে বেশ কিছু শর্ত ও অতিরিক্ত কর আরোপ করে মদ্যপানকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে সরকার। বার সংশ্লিষ্টদের দাবি, ওয়্যার হাউজ থেকে কূটনৈতিক পাসপোর্টের বিপরীতে প্রতি মাসে ২০০ ডলারের মদ সরবরাহের বিধান রয়েছে। তবে সিন্ডিকেট তৈরি করে এসব ওয়্যার হাউজ থেকে মদ নিয়ে বিক্রি করছিল বিভিন্ন বার। এটি বন্ধে সম্প্রতি শুল্ক বিভাগ প্রতিটি ওয়্যার হাউজে অডিট শুরু করে। এর পর থেকে ‍দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিদেশি মদের সংকট।

প্রাণঘাতী ভেজাল মদ ছড়িয়ে পড়ছে যেভাবে
রাজধানীর একটি বার। ছবি সংগৃহিত

ঢাকার একটি ওয়্যার হাউজের সুপারভাইজার নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগে আমাদের এখান থেকে বিভিন্ন বারে মদ যেত। শুল্ক গোয়েন্দাদের ম্যানেজ করেই সব চলছিল। তবে এবার আর তাদের ম্যানেজ করা যাচ্ছে না বলেই ঝামেলা হচ্ছে।’

মদের দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা একটা ব্ল্যাক লেভেল এখান থেকে দেই তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়, সেটা বারে বিক্রি হয় আট থেকে নয় হাজার টাকায়। একটা ভ্যাট সিক্সটিনাইন আমরা দেই দেড় হাজার টাকায়, সেটা বাইরে বিক্রি হয় সাড়ে তিন হাজার টাকায়। ক্রেতারা ঠিকই বেশি দাম দিয়ে কিনে খান, কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত লাভের টাকা যায় সিন্ডিকেটের কাছে।’

পরিচয় গোপন রেখে নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানীর একটি বারের ব্যবস্থাপক। তিনি বলেন, ‘আমাদের বারের মদ আমদানির লাইসেন্স আছে। আমরা একটি নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ আমদানি করি। তবে আমদানি করে বিক্রি করা পর্যন্ত আমাদের যা খরচ, তা ওয়্যার হাউজ থেকে আনা মদের দামের চেয়ে ৬০০ গুণ বেশি। আমরা আমদানি করতে গেলে হাজারে ৩০০ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। এখানেই শেষ না, বিক্রি করতে গেলে প্রতি হাজারে ৩৫০ টাকা সরকার নিয়ে যায়, তার উপর আবার আছে ২০ শতাংশ ভ্যাট। তাহলে বৈধ পথে ব্যবসা করব কী করে?’

ভ্যাট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, বার বা বিভিন্ন অনুমোদিত রেস্তরাঁয় বিক্রি হওয়া মদের বেশিরভাগ আসছে অবৈধ পথে। ওয়্যার হাউজ থেকে সংগ্রহ ছাড়াও স্থলসীমান্ত দিয়ে চোরাচালান ও বিদেশিদের লাগেজে আনা হয় অবৈধ মদ। এতে সরকার বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে বলেই কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

নিউজবাংলার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, করোনায় বিমান যোগাযোগ সীমিত হয়ে যাওয়া, সীমান্তে কড়াকড়ি ও ওয়্যার হাউজ থেকে বারে মদ বিক্রির সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ায় বারে অবৈধ মদ কেনা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এই সংকটের মাঝে বেড়েছে ভেজাল মদ তৈরির প্রবণতা।

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বৈধ পথে মদ আমদানি বন্ধ নেই। তবে অবৈধ পথগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এতে করে সরকারের রাজস্ব বেড়েছে। আমাদের এ অবস্থান অব্যাহত থাকবে। তবে একটি পক্ষ আমদানি বন্ধ বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহম্মদ আহসানুল জব্বার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভেজাল মদ তৈরি করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। কোনো বার ভেজাল মদ বিক্রির সাহস করবে না। তবুও আমরা বারগুলোতে নজরদারি বাড়িয়েছি। বৈধ বারে মানুষ মদ পান করবে, এটা নিয়মের মধ্যেই আছে, কিন্তু অবৈধ মদ পেলে তো আমরা জব্দ করবই।’

মদ আমদানিতে বিপুল করের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কিছুদিন ধরে শুনছি বার মালিকেরা অতিরিক্ত শুল্কের কথা বলছেন, কিন্তু এতদিন পর শুল্ক নিয়ে কথা কেন? সরকারি শর্ত মেনেই তো তারা এই ব্যবসায় এসেছেন। এখন চুরি করতে পারছেন না বলে শুল্ক নিয়ে মাথাব্যথা। আমার স্পষ্ট কথা তারা বৈধ ব্যবসা করতে চাইলে সবসময় আমাদের সহযোগিতা পাবেন।’

প্রতি জেলায় বৈধ বারের পক্ষে পর্যটন করপোরেশন

দেশের প্রতিটি জেলায় সরকার অনুমোদিত বার চালুর প্রস্তাব করেছে পর্যটন করপোরেশন। সংস্থার ব্যবস্থাপক জিয়াউল হক হাওলাদার (জনসংযোগ) নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রতিটি জেলায় বার করা হবে। ডমেস্টিক ওয়েতে বারগুলো উন্নত করতে পারলে ট্যুরিস্টদের মধ্যে আস্থা বাড়বে। ট্যুরিস্টদের সঙ্গে লোকাল মানুষের কানেকটিভিটি বাড়লে স্বাচ্ছন্দ্যে টুরিস্টরা বারে প্রবেশ করতে পারবে। ’

বারে শুল্ক কমানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণভাবে সরকার ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এ ব্যাপারে চাইলেও আমরা কিছু করতে পারব না।’

আরও পড়ুন:
রেকটিফাইড স্পিরিট পানের পর মৃত্যু
সেই রিসোর্টে মদ সরবরাহকারী জাহিদ গ্রেপ্তার
রেকটিফাইড স্পিরিটসহ মাদককারবারি গ্রেপ্তার
বগুড়ায় ‘বিষাক্ত মদ্যপানে’ মৃত বেড়ে ১৬
বগুড়ায় ‘বিষাক্ত মদ’ পানে মৃত্যু বেড়ে ১০

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বিশেষ
Live to appeal hearing next Sunday in the August 28 grenade attack case

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় লিভ টু আপিল শুনানি আগামী রোববার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় লিভ টু আপিল শুনানি আগামী রোববার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল আগামী রোববার শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে।

আসামি পক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, আজ জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানির জন্য আপিলটি ছিলো। কিন্তু এই মামলায় হাইকোর্টের অথর জাজ বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান আজ আপিল বিভাগের বেঞ্চে ছিলেন।

নিয়ম অনুযায়ী হাইকোর্টে রায় দানকারী বিচারপতি একই মামলা আপিল বেঞ্চে শুনানি গ্রহণ করতে পারেন না।

এজন্য আগামী রোববার পুনর্গঠিত বেঞ্চে আপিলটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসবে। আদালত বিষয়টিতে আজ নট টুডে আদেশ দিয়েছেন।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন। ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সিআইডি এই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দিলে শুরু হয় বিচার।

তবে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই মামলায় অধিকতর তদন্তে আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে।

দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন আলোচিত মামলার রায় দেন।

আলোচিত ওই রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- আব্দুস সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন, হুজি’র সাবেক আমির ও ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, কাশ্মীরি জঙ্গি আব্দুল মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক ওরফে গোলাম মোস্তফা, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. উজ্জল, এনএসআই-এর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম ও হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ।

বিচারিক আদালতের রায়ে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। সে রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামীরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, হুজি সদস্য হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, মাওলানা সাব্বির আহমেদ, আরিফ হাসান ওরফে সুমন, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম মাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, মো. খলিল ওরফে খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল ওরফে ইকবাল হোসেন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও রাতুল আহমেদ ওরফে রাতুল বাবু।

এছাড়া, বিচারিক আদালতের রায়ে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও শহিদুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ডিজিএফআই-এর মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ডিএমপি’র সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, আরেক সাবেক উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, সিআইডি’র সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ ও সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এই মামলার আরেকটি ধারায় খোদা বক্স চৌধুরী, রুহুল আমিন, আবদুর রশিদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

বিচারিক আদালতে এই রায়ের দেড় মাসের মাথায় ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সসহ মামলার নথি হাইকোর্টে আসে। ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল শুনানি শুরু হয়। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি চলছিল।

তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ পুনর্গঠন হলে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি হয়। শুনানি শেষে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট এই মামলার সব আসামীকে খালাস দিয়ে রায় দেন। সে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

মন্তব্য

বিশেষ
Earthquake

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প প্রতীকী ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।

ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

ভূমিকম্পটি শুক্রবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে অনুভূত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের ডেটা অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইংয়ের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।

এ ভূমিকম্পে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন:
জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
চীনে ভূমিকম্পে নিহত ৫৩, আহত ৬২
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
বছরের শুরুতেই ভূমিকম্পে কাঁপল সিলেট

মন্তব্য

বিশেষ
The United States will pay and 1 million for the Rohingya

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র

রোহিঙ্গাদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ছবি: বাসস
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত বৃহত্তম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের সাহায্য কমে যাওয়ার ফলে সংকট আরও গভীর হওয়ার উদ্বেগের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ৭৩ মিলিয়ন (সাত কোটি ৩০ লাখ) ডলার নতুন আর্থিক সহায়তা দেবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক্সে একটি পোস্টে বলেন, ‘বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিওইএফ) মাধ্যমে এ খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা প্রদান করবে।

‘এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদাররা এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী সহায়তার মাধ্যমে বোঝা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে যুক্ত।’

সিনহুয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডার অংশ হিসেবে বিদেশি সহায়তায় ব্যাপক কাটছাঁট এবং ফেডারেল ব্যয় ব্যাপকভাবে হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কিছু অংশ ভেঙে ফেলার বিস্তৃত প্রচেষ্টার মধ্যেই এ অনুদান দেওয়া হলো।

জাতিসংঘের দুটি সংস্থা সতর্ক করে দিয়েছিল যে, তহবিলের ঘাটতি গত আট বছর ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে পালিয়ে আসা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য রেশনের পরিমাণ কমিয়ে দেবে।

রোহিঙ্গারা আশঙ্কা করছেন, তহবিল হ্রাসের ফলে ক্ষুধা পরিস্থিতির অবনতি হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা এবং জ্বালানি হ্রাস পাবে।

পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সবচেয়ে বড় সহায়তা প্রদানকারী দেশ ছিল। প্রায় ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে আসছে দেশটি। কিন্তু জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর সাম্প্রতিক তহবিল স্থগিত করার ফলে কমপক্ষে পাঁচটি হাসপাতাল তাদের সেবা কমিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে।

ট্রাম্প ও বিলিয়নেয়ার মিত্র ইলন মাস্ক প্রধান মার্কিন বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি বন্ধ করে দিয়েছেন এবং এর অবশিষ্টাংশগুলোকে পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে একীভূত করেছেন। শত শত কর্মী এবং ঠিকাদারকে বরখাস্ত করেছেন এবং কোটি কোটি ডলারের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন, যার ওপর বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ নির্ভরশীল।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফেব্রুয়ারিতে সমস্ত জীবন রক্ষাকারী সহায়তা এবং এ ধরনের সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় যুক্তিসঙ্গত প্রশাসনিক খরচ মওকুফ করেছিলেন।

ওয়াশিংটন টাইমস জানায়, এ মাসের শুরুতে ইউএসএআইডি ভেঙে দেওয়ার তত্ত্বাবধানকারী ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যায়ক্রমে সাহায্য বন্ধের প্রস্তাব করেছিলেন।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা হ্রাস করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে।

কক্সবাজার উপকূলের বিভিন্ন শিবিরের বাসিন্দারা এখন জনপ্রতি মাসিক ১২ ডলার করে খাদ্য বরাদ্দ পাবেন, যা আগের ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কম।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ডব্লিউএফপি একটি চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানিয়েছে, যা ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।’

তিনি আরও বলেন, ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা জনপ্রতি ১৩ ডলার করে পাবে, যা কক্সবাজারের তুলনায় এক ডলার বেশি।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমানোর পরিকল্পনা ডব্লিউএফপি পূর্বে জানানোর পর এ পরিবর্তন এসেছে।

গত ৫ মার্চ বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশন ডব্লিউএফপি থেকে একটি চিঠি পায়, যেখানে বলা হয়, তহবিল সংকটের কারণে এপ্রিল থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাদ্য বরাদ্দ জনপ্রতি ১২ দশমিক ৫০ ডলার থেকে কমিয়ে ৬ ডলার করা হবে।

চিঠিতে শরণার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

গত ১৪ মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন।

তার সফরের সময় তাকে ছয় ডলারে রোহিঙ্গারা কী খাবার পাবে তার বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করা হয়েছিল। সে সময় অপর্যাপ্ত পরিমাণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল।

আরও পড়ুন:
ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে ৯ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
ঋণের সুদহার কমাতে ইতিবাচক সাড়া চীনের, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার আশ্বাস
২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ
রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: উদ্ধার ২৫, বিজিবি সদস্যসহ নিখোঁজ অনেকে
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সতর্কতা যুক্তরাজ্য ও জার্মানির

মন্তব্য

বিশেষ
The government is working to implement the demands of the workers Home Ministry

শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগো। ফাইল ছবি
বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’

গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার আন্তরিক ও একমত বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‌‘গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানার শ্রমিকদের পাওনা বেতন-ভাতাদিসহ যৌক্তিক দাবির ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক ও একমত। শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও বিজিএমইএকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ড মনিটর করা হচ্ছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক দাবির নামে গার্মেন্টস শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি, অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ, নৈরাজ্য ও সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং তা কখনোই মেনে নেয়া হবে না।

‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় সরকার তা কঠোরভাবে প্রতিহত করবে। গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন শিল্প কলকারখানায় সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখা এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে সরকার এ বিষয়ে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষ উভয়ের সহযোগিতা কামনা করছে।’

আরও পড়ুন:
গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, ছুটির পর চালু বিভিন্ন কারখানা
বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস, রেলের অস্থায়ী শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
ঐতিহ্য ও আভিজাত্যে মোড়া লা রিভের ঈদ কালেকশন
টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ধর্মঘট টেকনাফ স্থলবন্দরের শ্রমিকদের

মন্তব্য

বিশেষ
Environment adviser

আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: ইউএনবি
তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।

পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আন্তসীমান্ত বায়ুদূষণ মোকাবিলায় কার্যকর আঞ্চলিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশের বায়ুদূষণের ৩০-৩৫ শতাংশ আসে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে। তাই এ সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক আলোচনার গণ্ডি পেরিয়ে বাস্তব পদক্ষেপ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা জরুরি।

তিনি দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর কাঠমান্ডু রোডম্যাপ ও অন্যান্য সমঝোতার কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন।

কলম্বিয়ার কার্টাগেনায় অনুষ্ঠিত ডব্লিউএইচওর দ্বিতীয় বৈশ্বিক সম্মেলনের বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া সাইড ইভেন্টে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

ঢাকাস্থ বাসভবন থেকে সংযুক্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশের বায়ুদূষণ সমস্যা, বিশেষ করে ঢাকার ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন।

উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশের বহুমাত্রিক বায়ুদূষণ সমস্যা মোকাবিলায় বায়ুমান নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা ডব্লিউএইচওর অন্তর্বর্তীকালীন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ আইনি বিধিমালায় দূষণকারী খাতগুলোর জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

তিনি জানান, ২০২৪ সালে চূড়ান্ত হওয়া জাতীয় বায়ুমান ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার বাস্তবায়ন রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পিছিয়ে ছিল, তবে এখন তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো মানুষের দূষণজনিত ঝুঁকি কমানো ও পরিষ্কার বায়ুর দিন বৃদ্ধির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

পরিবেশ উপদেষ্টা আরও জানান, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রকল্প চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে শিগগিরই বাস্তবায়ন শুরু হবে। এ প্রকল্প নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করা, আইন প্রয়োগ জোরদার করা, শিল্প কারখানায় দূষণ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ এবং গণপরিবহন খাত আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব দেবে।

তিনি ঢাকার আশেপাশের এলাকাগুলোকে ইটভাটামুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনার কথা জানান, যেখানে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ থাকবে।

এ ছাড়া ২০২৫ সালের মে থেকে পুরনো বাস ধাপে ধাপে তুলে দেওয়া হবে, যা পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে।

তিনি বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ ধুলাবালি দূষণ রোধে ঢাকা শহরের খোলা সড়কগুলোতে সবুজায়নের উদ্যোগ এবং রাস্তা পরিস্কারে আরও শ্রমিক নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানান।

উপদেষ্টা জানান, অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযানের ফলে এরই মধ্যে বায়ুমানের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এ অগ্রগতি ধরে রাখতে কঠোর নজরদারি ও খাতগুলোর আধুনিকায়ন জরুরি।

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ মানুষ বায়ুদূষণের কারণে মারা যায় এবং ঢাকার মতো দূষিত শহরগুলোতে মানুষের গড় আয়ু ৫-৭ বছর কমে যাচ্ছে। এই সংকট আমাদের সবার জন্য, আমাদের শিশু, বাবা-মা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হুমকি। নিষ্ক্রিয়তার মূল্য অনেক বেশি। আমাদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী। কারণ আমি বিশ্বাস করি, এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। প্রযুক্তি ও বিকল্প ব্যবস্থা আমাদের হাতে রয়েছে, শুধু প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়ন দরকার।

‘বায়ুদূষণ শুধুই পরিবেশগত ইস্যু নয়, এটি মানবিক সংকট।’

সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধি, পরিবেশ ও জ্বালানি খাতের নীতিনির্ধারক, আন্তর্জাতিক ও উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, গবেষক, স্থানীয় প্রশাসন, পরিবহন ও শিল্প খাতের বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

তারা দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ রোধে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

আরও পড়ুন:
‘অস্বাস্থ্যকর বাতাস’ নিয়ে বিশ্বে পঞ্চম দূষিত শহর ঢাকা
বায়ুদূষণে বিশ্বে প্রতিদিন ২ হাজার শিশুর মৃত্যু: প্রতিবেদন
ছুটির দিনে বাতাসের নিম্ন মানে সপ্তম ঢাকা
সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ঢাকার বাতাস
ছুটির দিনে মানে উন্নতি, তবু ‘অস্বাস্থ্যকর’ ঢাকার বাতাস

মন্তব্য

বিশেষ
Holy Lilatul Kadar today

পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ আজ

পবিত্র ‘লাইলাতুল কদর’ আজ প্রতীকী ছবি
মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।

পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর বৃহস্পতিবার। এর অর্থ ‘অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত’ বা ‘পবিত্র রজনী’।

আজ সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হবে কদরের রজনী।

যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সারা দেশে রাতটি পালন করা হবে।

মহান আল্লাহ লাইলাতুল কদরের রাতকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছেন। হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও এ রাতের ইবাদত উত্তম।

এ রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষণ করা হয়। নির্ধারণ করা হয় মানবজাতির ভাগ্য।

৬১০ সালে কদরের রাতেই মক্কার নূর পর্বতের হেরা গুহায় ধ্যানরত মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) কাছে সর্বপ্রথম সুরা আলাকের পাঁচ আয়াত নাজিল হয়। এরপর আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)-এর বহনকৃত ওহির মাধ্যমে পরবর্তী ২৩ বছর ধরে মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে বিভিন্ন প্রয়োজনীয়তা এবং ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট আয়াত আকারে বিভিন্ন সুরা নাজিল করা হয়।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তা (কোরআন) অবতীর্ণ করেছি কদরের রাতে। আর কদরের রাত সম্বন্ধে তুমি কি জানো? কদরের রাত হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। সে রাতে ফেরেশতারা ও রুহ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে।

‘শান্তিই শান্তি, বিরাজ করে ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত। (সূরা আল- কদর, আয়াত ১-৫)।’

হাদিসে বর্ণিত আছে, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতেন এবং বলতেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ ১০ রাতে লাইলাতুল কদর সন্ধান করো (বুখারি ও মুসলিম)।’

মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় পবিত্র রাতটি ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে কাটিয়ে দেন। কামনা করেন মহান রবের অসীম রহমত, নাজাত, বরকত ও মাগফিরাত।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ রাত থেকে পরের দিন ভোররাত পর্যন্ত মসজিদসহ বাসা-বাড়িতে এবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকার, দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও আখেরি মোনাজাত করবেন তারা।

এই উপলক্ষে শুক্রবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ উপলক্ষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে রাতব্যাপী ওয়াজ মাহফিল, ধর্মীয় বয়ান ও আখেরি মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।

এ ছাড়া দেশের সব মসজিদেই তারাবির নামাজের পর থেকে ওয়াজ মাহফিল, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন থাকবে।

পবিত্র লাইলাতুল কদর/শবে কদর উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি রেডিওগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।

এ ছাড়া সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করা হবে।

মন্তব্য

বিশেষ
The chief adviser to create a clear roadmap to build a prosperous Asia

সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার চীনের হাইনানে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে বৃহস্পতিবার বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’

এশীয় দেশগুলোকে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও যৌথ সমৃদ্ধির জন্য সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চীনের হাইনানে বৃহস্পতিবার বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘পরিবর্তনশীল এ বিশ্বে এশীয় দেশগুলোর ভাগ্য পরস্পরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে যা অভিন্ন ভবিষ্যৎ এবং যৌথ সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাবে।’

আর্থিক সহযোগিতা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এশিয়াকে অবশ্যই একটি টেকসই অর্থায়ন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবি) ও অনুরূপ প্রতিষ্ঠানগুলোর এ প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, ‘আমাদের এমন নির্ভরযোগ্য তহবিল দরকার যা আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করবে।’

বাণিজ্য সহযোগিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এশিয়া এখনও বিশ্বের অন্যতম কম সংযুক্ত অঞ্চল।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এ দুর্বল সংযুক্তি বিনিয়োগ ও বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত করছে। আমাদের অবশ্যই বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য দ্রুত কাজ করতে হবে।’

খাদ্য ও কৃষি সহযোগিতা বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এশীয় দেশগুলোকে অবশ্যই সম্পদ-সাশ্রয়ী কৃষিকে উৎসাহিত এবং খাদ্য নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আমদানির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। স্বনির্ভরতা অর্জন করতে হবে। টেকসই প্রযুক্তিভিত্তিক কৃষি সমাধান ও জলবায়ুবান্ধব চাষাবাদের ক্ষেত্রে উদ্ভাবন বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‌এশিয়াকে অবশ্যই একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে, যা পুনর্গঠনমূলক, সমবণ্টনমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।

তিনি বলেন,‘আমাদের জ্ঞান, তথ্য ভাগ করে নিতে হবে এবং প্রযুক্তি ইনকিউবেশন ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করতে হবে। ডিজিটাল সমাধানে সহযোগিতা আমাদের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘পরিশেষে বলব আমাদের সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে মেধা সম্পদ ও যুবশক্তিকে রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই একটি নতুন সভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করতে হবে—একটি আত্মরক্ষা ও আত্মস্থায়ী সমাজ। আমাদের শূন্য-বর্জ্যের জীবনধারার ওপর ভিত্তি করে একটি পাল্টা সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। ভোগ সীমিত রাখতে হবে মৌলিক প্রয়োজনের মধ্যে।

‘আমাদের অর্থনীতিকে সামাজিক ব্যবসার ওপর ভিত্তি করে গড়ে তুলতে হবে, যা ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক কাঠামো হিসেবে উদ্ভাসিত হবে, যেখানে উদ্ভাবন, লক্ষ্য ও দায়িত্ববোধ একীভূত থাকবে।’

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, বোয়াও ফোরাম ও অন্যান্য অনুরূপ উদ্যোগগুলোকে যুবসমাজ ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে হবে, যেন আগামী প্রজন্মের জন্য এশিয়াকে আরও উন্নত করা যায়।

আরও পড়ুন:
চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা প্রধান উপদেষ্টার
স্টারলিংকের ইন্টারনেট বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
দেশবিরোধী আন্দোলনে উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা

মন্তব্য

p
উপরে