সতেরো শতকের শুরুতেও আদি ঢাকার উত্তরে মিরপুর, কুর্মিটোলা, পল্টন এবং তেজগাঁও এলাকায় ছিল চারটি দুর্ভেদ্য জঙ্গল। বুড়িগঙ্গার দক্ষিণে কামরাঙ্গীরচর ছিল এক বিস্তৃত জলাবন। এসব বনে বিচরণ ছিল রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিতাবাঘ, হরিণ, শুয়োর, কুমির, ঘড়িয়াল, অজগরসহ নানা বিচিত্র প্রাণীর।
এখন একবিংশ শতাব্দীর প্রায় সিকিভাগ পার করে এসে এসব জায়গায় কংক্রিটের অট্টালিকা। পশুপাখিরা বিদায় নিয়েছে। তবে সকলে নয়। এখনও থেকে গেছে অনেক প্রাণী।
ঢাকার ৪০০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত ‘এনভায়রনমেন্ট অফ ক্যাপিটাল ঢাকা’ গ্রন্থে রাজধানীর গাছপালা, বন্যপ্রাণী, বাগান, পার্ক, উন্মুক্ত জায়গা ও জলাশয়সহ সার্বিক প্রাকৃতিক প্রতিবেশ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা রয়েছে। এর ‘ওয়াইল্ড লাইফ অফ ঢাকা’ শীর্ষক প্রবন্ধে লেখকেরা সরকারি নথির বরাত দিয়ে বলছেন, ১৮০৪ সালেও ঢাকায় শিকারিরা ২৭০টি বাঘের চামড়া জমা দিয়েছিলেন পুরস্কার ও স্বীকৃতির আশায়।
এই এলাকায় জনবসতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গলের পরিসর আশঙ্কাজনক হারে কমে আসা এবং তার পরিণতিতে মানুষ ও বন্যপ্রাণীর মধ্যে সংঘাতও ছিল নৈমিত্তিক একটা ব্যাপার।
১৮৩৭ সালে পুলিশের হিসাব অনুসারে, সে সময় প্রতি বছর অন্তত এক জন করে মানুষ বাঘের আক্রমণে মারা পড়ত।
এমনকি গত শতকের শুরুর দিকের সরকারি হিসাব অনুসারে, ১৯০৭ থেকে ১৯১০ সালের মধ্যে ঢাকায় ১৩টি বাঘ মারা পড়েছিল শিকারিদের হাতে।
এর ১০০ বছর পর একবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে ঢাকা পরিণত হয়েছে প্রায় দুই কোটি লোকের এক নগরে। সুউচ্চ ভবনসহ নানাবিধ স্থাপনা, কল-কারখানা আর সারি সারি গাড়ির যান্ত্রিক চিৎকার এই শহরকে পরিণত করেছে কংক্রিটের জঙ্গলে। তবু মাঠ-প্রান্তর-সবুজহীন এই রুক্ষ নগরে এখনও টিকে আছে অনেক বন্য প্রাণ। কোনোটি স্বল্প পরিসরে। আবার অবিশ্বাস্য হলেও কোনো কোনো প্রজাতি আছে লক্ষ-কোটিতে।
প্রায় ৪৫ পৃষ্ঠার ‘ওয়াইল্ড লাইফ অফ ঢাকা’ প্রবন্ধের তিন লেখক সৈয়দ মো. হুমায়ুন কবির, ইনাম আল হক ও মো. আনোয়ারুল ইসলাম প্রবন্ধের শেষাংশে ঢাকায় এখন পর্যন্ত টিকে থাকা প্রাণীদের একটা তালিকা সংযুক্ত করেছেন। এই তালিকা ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের বরাতে ঢাকায় যেসব প্রাণীর অস্তিত্ব জানা গেছে, তা যথেষ্ট চমক জাগানিয়া।
বনরুই
ঢাকার কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের আশপাশ, মিরপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন ও আশপাশের এলাকায় বিপন্ন তালিকাভুক্ত চায়নিজ প্যাঙ্গোলিনের দেখা পাওয়া যায়। এটা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি চোরাই পথে পাচার হওয়া স্তন্যপায়ী প্রাণী। এটা খাদ্য হিসেবে যেমন ব্যবহৃত হয়, তেমনি ব্যবহৃত হয় ঐতিহ্যবাহী ওষুধ তৈরির জন্য। এর গায়ের আঁশের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাদের মাংসও চীনে একটি উপাদেয় খাবার বলে গণ্য করা হয়।
রিসাস বানর
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় এদের মাঝেমধ্যেই দেখা যায় দল নিয়ে রাস্তা পার হতে। পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার সাধনা ঔষধালয় এদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। খাবার যতটা খায়, নষ্ট করে তার চেয়ে বেশি। ঢাকাবাসীর অপ্রিয় সঙ্গী এরা।
পাতিশেয়াল ও খ্যাঁকশেয়াল
কুর্মিটোলা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন ছাড়া মিরপুর সিরামিক ফ্যাক্টরি এলাকায় শেয়ালের দল দেখা যায়। এর ইংরেজি নাম গোল্ডেন জ্যাকেল। বাংলায় পরিচিত পাতিশেয়াল নামে। প্রাণী বিশেষজ্ঞদের অভিমত, পাতিশেয়াল ছাড়াও ঢাকায় এখনও দু-একটি খ্যাঁকশেয়াল থাকতে পারে। সুদর্শন এই প্রাণীটির মুখ সরু, খাড়া কান। স্বভাবে নিশাচর। ছয় থেকে আট বছর বাঁচে। কাঁকড়া, ইঁদুর, সাপখোপ, উইপোকা, পোকামাকড়, ফলপাকুড়, ছোট পাখি খায়।
কাঠবিড়ালি
ঢাকায় কাঠবিড়ালির বসবাস খুব বেশি দিনের না। যখন যশোর, ঝিনাইদহ থেকে ট্রাকে করে কলা আসতে শুরু করে, তখন কলার সঙ্গে এরাও এসে ঢাকায় বসতি গাড়ে। চিড়িয়াখানার খাঁচার বাইরে বোটানিক্যাল গার্ডেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়।
তিন ধরনের ইঁদুর
ঢাকায় রডেনসিয়া বর্গের এই প্রাণী সংখ্যায় হয়তো মানুষের চেয়ে বেশি আছে। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে এরাই সবচেয়ে বড় পরিবার, যা দখল করে আছে বন্যপ্রাণীর ৪০ শতাংশ। এর মধ্যে আকারে বড়সর ধেড়ে ইঁদুরের দেখা মিলবে পুরান ঢাকার বড় বড় গুদাম ও স্যাঁতসেঁতে ঘরগুলোতে, যা মেঠো ইঁদুর বা খেত ইঁদুর নামেও পরিচিত।
আবার ঢাকায় মাঝারি আকারের কালো রঙের ইঁদুরও আছে যথেষ্ট। এদের শরীরের চেয়ে লেজ বড়। পৃথিবীর সব মহাদেশে এদের অস্তিত্ব আছে। প্লেগ ছড়াতে ওস্তাদ। এদের খাদ্য শস্যদানা, ফল, গাছের নরম অংশ, বীজ, পাতা, ব্যাঙের ছাতাসহ নানা মেরুদণ্ডী-অমেরুদণ্ডী প্রাণী।
এদিকে সবচেয়ে ছোট আকারের নেংটি ইঁদুরের বৈজ্ঞানিক নাম mus musculus। লম্বায় এরা তিন থেকে সাড়ে তিন ইঞ্চি। মূলত শস্যভোজী। একবারে ছয় থেকে আটটি বাচ্চা জন্ম দেয়। তাও বছরে আট থেকে দশ বার।
বেজি
ঢাকার বেজি এশিয়ার সবচেয়ে ছোট। শরীর ৩০ সেন্টিমিটার, লেজ ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা। ওজন খুব বেশি হলে ৫০০ গ্রাম। লোমের রং লালচে হলদে, নয়তো বাদামি লাল। পুরান ঢাকা, ইস্কাটন, মগবাজার, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, মিরপুর এমনকি বনানী-গুলশানেও বেজি দেখা যায়।
বাদুড় ও চামচিকা
বড় বাদুড়ের দেখা মিলবে শহরের রমনা পার্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, চন্দ্রিমা উদ্যান ও বোটানিক্যাল গার্ডেনসহ বেশ কিছু এলাকায়। শেয়ালের সঙ্গে বিজ্ঞানীরা এর কিছু মিল নিশ্চয়ই খুঁজে পেয়েছেন। তাই বাদুড়কে বলা হয় উড়ন্ত শৃগাল বা ফ্লাইং ফক্স। এরা মূলত ফলভোগী। আর ছোট আকারের চামচিকা হচ্ছে উপকারী বাদুড়। মূলত পতঙ্গভুক।
চিকা
চিকা বা ছুচন্দর সাদাটে বাদামি বা হালকা বাদামি পশমে আবৃত। ইঁদুরের মতো দেখতে। সুচালো মুখের চিকার লেজে ও নাকের ওপর শক্ত লোম আছে। দুর্গন্ধের জন্য এরা কুখ্যাত। শরীরের দুই পাশে তরল গন্ধথলি আছে। এই গন্ধ এত বিকট যে বিড়াল সাধারণত এদের ধরতে চায় না। সাপ ভুল করে ধরলেও ছেড়ে দেয়।
কাছিম, সাপ
ঢাকায় এখনও যে অল্পসংখ্যক পুকুর বা জলাশয় টিকে আছে তার কোনো কোনোটিতে কাছিমের দেখা পাওয়া যাবে। সাপও আছে দুই-এক প্রজাতির।
সজারু
স্তরে স্তরে সাজানো লম্বা কাঁটায় আকীর্ণ শরীরের এই প্রাণীটি রাতে চলাফেরা করে। ষাটের দশকে মিরপুর, গুলশান, বাড্ডা এবং বর্তমান উত্তরা এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণে দেখা যেত। আজকাল মাঝেমধ্যে মিরপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের আশপাশে বিপন্ন অবস্থায় ধরা পড়ে। এরা পুরোপুরি নিরামিষাশী।
শতেক প্রজাতির পাখি
পাখি বিশেষজ্ঞদের হিসাবে বর্তমানে ঢাকা শহরে শতাধিক প্রজাতির পাখি আছে। বিশেষ করে বোটানিক্যাল গার্ডেনটি গড়ে ওঠায় পাখির সংখ্যা অনেক বেড়েছে।
আরও পড়ুন:নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।
নেপালে চলমান বিক্ষোভ পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের দেশে প্রত্যাবর্তন সাময়িকভাবে বিলম্বিত হয়েছে। আজ স্থানীয় সময় দুপুর ৩টায় ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দলের দেশে ফেরার কথা থাকলেও পরিস্থিতির অবনতির কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সব ফ্লাইট বাতিল করে। ফলে দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাবৃন্দ বর্তমানে টিম হোটেলে অবস্থান করছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বার্তায় জানিয়েছে, দলের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দলের দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। এ বিষয়ে নেপালস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, নেপালের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের প্রেক্ষাপটে দলের নির্বিঘ্ন প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে নেপালের সেনাবাহিনীর সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
এছাড়া যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া এবং টিম ম্যানেজার আমের খানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে দলের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন এবং দেশে দ্রুত প্রত্যাবর্তনে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন।
ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। হত্যার মূল আসামি মো. মোবারক হোসেনকে (২৯) গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঢাকায় পালিয়ে যাবার সময় কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মোবারক হোসেন জেলার দেবিদ্বার উপজেলার কাবিলপুর গ্রামের মৃত. আবদুল জলিলের ছেলে।
পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ঝাড়-ফুক করার সুবাদে মোবারক হোসেন সুমাইয়া আফরিনদের বাসায় যাতায়াত করতেন। গত রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় সুমাইয়াদের ভাড়া বাসা নগরীর কালিয়াজুরি এলাকায় নেলি কটেজ নামক বাসায় প্রবেশ করেন মোবারক। এরই মধ্যে মোবারক তাদের বাসায় ঝাড়ফুঁক করে পানি ছিটিয়ে বেরিয়ে যান। আবার বেলা সাড়ে ১১ টায় ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন। যা সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়।
পুলিশ সুপার বলেন, মোবারক তাদের বাসায় থাকাকালীন সময়ে এক পর্যায়ে সুমাইয়া আফরিনকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় সুমাইয়ার মা বাধা দেন। এতে মোবারক ক্ষুব্ধ হয়ে সুমাইয়াকে এক ঘরে আটকে মা তাহমিনা বেগমকে অন্য একটি রুমে নিয়ে বালিশ চাপায় হত্যা করেন। এরপর সুমাইয়াকে তার রুমে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় সুমাইয়া প্রতিরোধ করলে তাকে গলা টিপে হত্যা করেন। হত্যার পর মোবারক সুমাইয়াদের ঘর থেকে ৪টি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে পালিয়ে যান। তিনি আরো বলেন, ধর্ষণ হয়েছে কিনা বিষয়টি ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
নিহত সুমাইয়া আরফিন (২৩) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি কুমিল্লা নগরীর সুজানগর এলাকার বাসিন্দা ও কুমিল্লা আদালতের সাবেক হিসাবরক্ষক মৃত নুরুল ইসলামের মেয়ে। গত সোমবার সকালে ওই বাসা থেকে সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
বর্ষা মৌসুমে টইটম্বুর পানির সঙ্গে উজান থেকে ভেসে আসা দেশীয় মাছ—বজুরী, টেংরা, ঢেলা, দারখিলা, কটকটি, বাইলা, পুটি, সেলবেলা, চান্দা, বৈইচা, পাবদা, শিং, কৈ, টাকি, চেধূরী, এলকোনা, খৈইলশা, ভাংলা, কাটাইড়া, বাতাইয়া, চিংড়ি, বাইম, গুতুমসহ নানান প্রজাতির মাছ একসময় খাল-বিল-জমিতে ডিম ছাড়ার জন্য ছুটে আসত। সেই সময়ে গ্রামের ছেলেরা মাছ ধরার জন্য নানান ফাঁদ পাতত। এর মধ্যে অন্যতম ছিল আনতা, বেউর ও চাই, আনতা। যা আজ বিলুপ্তির পথে।
তবে এখনো কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রামচন্দ্রপুর আনতা হাট সেই পুরনো স্মৃতি ধরে রেখেছে। রামচন্দ্রপুর, দক্ষিণ বাঙ্গরা ও মালাই বাঙ্গরা বাজার, হাটখোলা, ইলিয়াটগঞ্জ, চান্দিনার নোয়াবপুর, বর্ষা মৌসুমে বাঁশের তৈরি আনতা বিক্রির ধুম পড়ে যেত কিন্তু পূর্বে ন্যায় দেশীয় মাছ না থাকায় আস্তে আস্তে এসব মাছ ধরার ফাঁদ তৈরিতে কৃষক, জেলে আগ্রাহ হাচ্ছে। শুধুই মাছ ধরার ফাঁদ নয়, আনতা হয়ে উঠেছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ, যা এ সময় স্থানীয়দের মধ্যে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে দেয়।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ও মানভেদে প্রতিটি আনত ৩০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বর্ষার শেষ দিকে এ ফাঁদের চাহিদা আরও বেড়ে যেত। ব্যবসায়ীরাও মৌসুমে ভালো লাভের আশা করত। এন তেমন একটা চোখে পড়ে না, রামচন্দ্রপুরের আনতা ব্যবসায়ী কবির হোসেন বলেন, ‘প্রতি হাটে আমি ৬০ থেকে ৭০টি আনতা বিক্রি করি কিন্তু যখন মাছের ভরা মৌসুম ছিল তখন সারাবছর লোক নিয়োগ করে বিভিন্ন বাড়িতে আনতা তৈরি করতাম। দূর-দূরান্ত থেকেও ক্রেতারা আসত। আর তেমন বিক্রি না থাকায় ব্যাবসা অনেক কমে গেছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে মাছ জমির আইল ধরে নামতে শুরু করে, তখন আইলে আনতা পুঁতে রাখলেই সহজে মাছ ধরা পড়ে। বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় আমরা খুশি হতাম, আমাদের দাবি আনতা, বেউর, চাই, উছা, পেলুন।এই ফাঁদ তৈরিতে সরকার ভর্তুকি দিয়ে অল্প আয়ের মানুষ দের বাচিয়ে রাখা উচিত। পাশাপাশি বাঁশ শিল্প বেচে থাকবে।
স্থানীয় মাছ বিক্রেতা মতিন মিয়া জানান, তিনি প্রতি মৌসুমে ৫-৬টি আনতা কেনেন। আনতা দিয়ে প্রতিদিন ২-৩ কেজি মাছ ধরা পড়ে। নিজেদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাজারে বিক্রি করে তিনি ৩০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত আয় করেন।
শুধু মাছ ধরার ফাঁদ নয়, আনতা হয়ে উঠেছে অনেকের জীবিকার উৎস। আনতা তৈরি ও বিক্রি করে বহু পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছে। আবার এর সাহায্যে ধরা মাছ বিক্রি করে অনেকেই বাড়তি আয় করছে। ছোট-বড় সবাইকে মাছ ধরার আনন্দে মাতিয়ে তোলে এই দেশীয় কৌশল, যা আজও মুরাদনগরের গ্রামীণ জীবনের অনন্য ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।
‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ধারাবাহিকের ৫ নম্বর সিজন চলছে। ভক্তদের মুখে মুখে কাজল আরেফিন অমি পরিচালিত এ সিরিজটি। নাটকটির শুরু থেকেই সিজন ১, ২, ৩ এবং ৪ দিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচিত হন নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি ও তার টিম। ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ সিজনগুলোর ব্যাপক সাফল্যের পর এবার ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এর ফাইভ সিজন প্রচার হচ্ছে।
এই সিরিজে কাবিলা, শুভ, জাকির, শিমুল, পাশা, আরেফিন, হাবু ভাই নামের চরিত্রগুলোর মতো নেহাল চরিত্রটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ সর্বদা তুঙ্গে। যেই নেহাল চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তৌসিফ মাহবুব। এত দিন ব্যক্তিগত কিছু কারণে এ সিরিজ থেকে দূরে ছিলেন। তবে এ সিজনে ফিরছেন তিনি নেহাল হয়েই, যেটা তিনি নিজেই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
বললেন, ‘দর্শক সর্বদা চান নেহাল চরিত্রটি ফিরে আসুক। তাই ফের এ চরিত্রটির মাধ্যমে ব্যাচেলর পয়েন্টে দর্শক আমাকে দেখতে পাবেন।’ এর আগে নির্মাতা অমি বলেছিলেন, বাস্তব জীবনের মতোই হয়তো ভবিষ্যতে কোনো একসময় দেখা যাবে তাদের আবার একসঙ্গে। তাই সেই অপেক্ষার পালা মনে হয় শেষ হলো তৌসিফের ফেরার মাধ্যমে।
ময়মনসিংহর গফরগাঁওয়ে পূবালী ব্যাংক (পিএল সি) এর স্কুল ব্যাংকিং কর্মশালার আওতায় ঐতিহ্যবাহি বিদ্যাপীঠ গফরগাঁও মহিলা কলেজে বৃক্ষরোপণ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার ( ৯সেপ্টন্বর) ১১টায় মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে পূবালী ব্যাংকের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়।
বৃক্ষরোপণ শেষে মহিলা কলেজ হল রুমে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন গফরগাঁও মহিলা কলেজ অধ্যক্ষ মো. আব্দুল খালেক,পূবালী ব্যাংক (পিএলসি) গফরগাঁও উপশাখা ব্যবস্থাপক মো. আসাদুজ্জামানসহ কলেজের শিক্ষক- শিক্ষার্থী ও পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তাগণ। কলেজ অধ্যক্ষ আবদুল খালেক ব্যাংক কতৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গাছ আমাদের জীবনের অংশ,গাছ ছাড়া আমাদের জীবন ও পরিবেশের কথা চিন্তাও করতে পারিনা,অধিক পরিমানে গাছ লাগান প্রাকৃতিক বিপর্যয় হতে দেশকে বাচাঁন।
আলোচনা শেষে কলেজ শিক্ষার্থীদে মাঝে কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ।
মঙ্গলবার ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ সকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ সোমবার চাঁদপুর উত্তর মতলব থানাধীন মোহনপুর লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকায় একটি ডাকাত দল ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১ টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন চাঁদপুর কর্তৃক উক্ত এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকা হতে পরিত্যক্ত অবস্থায় ১টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ২টি রাম দা ও ২টি চাইনিজ কুড়াল জব্দ করা হয়। এসময় কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
জব্দকৃত অস্ত্রের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের মাঝে অ্যাসিসটিভ ডিভাইস বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব উপকরণ বিতরণ করা হয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ের উদ্যোগে স্পেশাল অ্যাডুকেশন নিডস অ্যান্ড ডিজাবিলিটিস (সেন্ডর) কার্যক্রম বাস্তবায়নের আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের মাঝে অ্যাসিসটিভ ডিভাইস বিতরণ করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ডা. তামান্না তাসনীম।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার রমিতা ইসলামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে শিশুদের মাঝে ৪ জনকে হুইল চেয়ার, ২ জনকে শ্রবণ যন্ত্র, ১০ জনকে চশমা ও একজনকে জুতা জোড়া প্রদান করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার রমজান আলী, লুৎফুন্নেছা, মনিরা খাতুন, আরিফুল ইসলাম, কাপাসিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহেলী নাসরিন, একডালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন ভূঁইয়া, ধরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আতিকুল ইসলামসহ শিশুদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য