বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি ছায়েদুর রহমান মনে করছেন, প্রাথমিক গণপ্রস্তাব–আইপিওতে যত বেশি কোম্পানি আসবে বিনিয়োগকারীদের তত বেশি অংশগ্রহণ বাড়বে পুঁজিবাজারে। বাড়বে বাজারের গভীরতা।
তার মতে, আইপিও-ই হচ্ছে পুঁজিবাজারের প্রাণ, তবে মানসম্মত কোম্পানির আসতে হবে।
ছায়েদুর রহমান বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী সিদ্ধান্তের কারণেই গতিশীলতা ফিরেছে পুঁজিবাজারে। কমিশন পুনর্গঠন হওয়ার পর বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেটে যে সুবিধা দিয়েছেন তার কারণেও তারল্য বেড়েছে পুঁজিবাজারে।
করোনা সংকটের মধ্যেও ঘুরে দাঁড়ানো পুঁজিবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে নিউজবাংলার সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন বিএমবিএ সভাপতি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন সুমন।
পুঁজিবাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কোন বিষয়গুলোতে প্রাধান্য দেয়া উচিত?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন–বিএসইসি পুনর্গঠনে দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন। পুঁজিবাজারে নেতৃত্ব যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বিএসইসির এই পুনর্গঠিত কমিশনই প্রমাণ করেছে।
চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন পুঁজিবাজারের ভালো করার জন্য ধারাবাহিক যে চেষ্টা চালাচ্ছে- তার সুফল আমরা পাচ্ছি।
বিদায়ী বছরের শেষ দিনে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এ ধারাবাহিকতা চলমান থাকবে এবং ২০২১ সালে ২ হাজার কোটি টাকার নিয়মিত লেনদেন হবে বলে আশা করছি।
বাজার চাঙা করতে উল্লেখযোগ্য কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বিএসইসি। যেখানে অনিয়ম হয়েছে সেখানে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
বাজার সম্প্রসারণে অনেক সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। ব্রোকারেজ হাউজের শাখা চালু বহুদিন বন্ধ ছিল, সেগুলো ফের চালু করা হয়েছে। দেশের বাইরেসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে বুথ স্থাপনের সুযোগ দেয়া হয়েছে।
এগুলো বাজারের জন্য উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এখন ইচ্ছা করলে আমরা বিদেশে গিয়ে পুঁজিবাজারে অপারেট করতে পারব। এরই মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান দুবাইতে ডিজিটাল আউটলেট চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। পরবর্তীতে বড় বড় হাউজগুলো এগিয়ে আসবে। এতে করে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেশের পুঁজিবাজার সম্পর্কে আগ্রহী হবেন।
বন্ড মার্কেট অবহেলিত। এর উন্নয়নে আপনার পরামর্শ কী?
বন্ড মার্কেটের উন্নয়নে আগে কিছু উদ্যোগ নেয়া হলেও সমন্বয় না থাকায় সুফল পাওয়া যায়নি। বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান আসার পর এটি নিয়ে আলাদাভাবে কাজ চলছে। বাজারে নতুন আসা ইসলামী শরিয়া বন্ড ‘সুকুর’ নিয়ে কাজ চলছে। ভালো সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে। এখন সমন্বয় করা হচ্ছে। ফলে আশা করছি, এই বাজার আরও সক্রিয় হবে।
মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী?
অনেকেরই ধারণা, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর কাজ শুধু পুঁজিবাজারে নতুন ইস্যু নিয়ে আসা। এটা ঠিক নয়। আমাদের অনেক কাজের মধ্যে অন্যতম কাজ হচ্ছে বিনিয়োগ সুরক্ষা দেয়া।
নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেক মার্চেন্ট ব্যাংককে প্রতি দুই বছর অন্তর একটি কোম্পানিকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব-আইপিওতে আনতে হবে, কিন্তু বর্তমানে আমরা তা পারছি না।
কারণ, অতীত রেকর্ড বিশ্লেষণে দেখা যায়, বছরে ১০ থেকে ১২টা নতুন কোম্পানি আইপিওতে আসে। অথচ মার্চেন্ট ব্যাংকের সংখ্যা ৬৩টি। এ হিসাবে বর্তমানের চেয়ে আরও অনেক কোম্পানির পুঁজিবাজারে আসার কথা। আমরা সন্ধান করলেও আগ্রহী নয় কোম্পানিগুলো। ফলে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো শেয়ার ইস্যুর কোটা পূরণ করতে পারছে না।
নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত না হওয়ায় পেছনে কারণ কী বলে আপনি মনে করেন?
সাম্প্রতিক সময়ে অনেকগুলো নতুন কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এখন আলোচনা চলছে ঘন ঘন আইপিওর অনুমোদন দিলে বিনিয়োগকারীদের অর্থ আটকে থাকবে। গত বছর যখন বাজার মন্দা চলছিল তখন আইপিও বন্ধ করে দেয়া হয়।
এখন আইপিও দ্রুত অনুমোদন পাচ্ছে। ফলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। বাজার বড় হলে আইপিও কোনো বিষয় না। আইপিও হচ্ছে বাজারের প্রাণ। আইপিও বাড়লে নতুন বিনিয়োগকারী আসবে, নতুন ফান্ড তৈরি হবে। বাজারের গতিশীলতা বাড়াবে।
মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো সবসময় নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত করার জন্য বিভিন্ন কোম্পানির সন্ধান করে। কোনো কোম্পানি আসতে না চাইলে জোর করে নিয়ে আসা ঠিক হবে না।
আমরা চাই, পুঁজিবাজারে বেশি কোম্পানি তালিকাভুক্তির চেয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো আসুক। ভালো ও মানসম্পন্ন কোম্পানি আসলে বাজারে গভীরতা ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে। দেশের অর্থনীতির উন্নতি হবে।
পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়নে ১৫ হাজার কোটি টাকার দুটি আলাদা তহবিল গঠনের প্রস্তাব করেছে বিএসইসি। এ তহবিলের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বলুন।
এর উদ্দেশ্য হচ্ছে বাজারে তারল্য বাড়ানো। দীর্ঘসময় পুঁজিবাজার নেতিবাচক থাকার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের সক্ষমতা কমে গেছে। এটা বাড়ানোর সহজ পন্থা হচ্ছে তহবিল গঠন। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বিএসইসি সেটা নিয়ে কাজ করছে।
মাননীয় অর্থমন্ত্রী এবারের বাজেটে পুঁজিবাজারে কালো টাকা (অপ্রদর্শিত অর্থ) বিনিয়োগের সুযোগ রেখেছেন। এতে করে অর্থের জোগান বাড়বে। এছাড়া ব্যাংকগুলোকে ২০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বিনিয়োগের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দিক থেকেও তহবিল আসবে।
অনেকেই বলেন স্থিতিশীল পুঁজিবাজার দেখতে চাই। বাস্তবে সেটা কখনও সম্ভব নয়। কারণ, পুঁজিবাজার সব সময় গতিশীল। পুঁজিবাজার যদি স্থিতিশীল হয় তাহলে কেউ এখানে বিনিয়োগ করবে না। পুঁজিবাজারে শেয়ারের দাম কমবে, না হয় বাড়বে। দাম কমলে আপনি কিনবেন, আর বাড়লে বিক্রি করবেন। এটাই স্বাভাবিক প্রবণতা বাজারের। আমরা চাই গতিশীল পুঁজিবাজার।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে পুঁজিবাজারের ক্ষতি সম্পর্কে বলুন।
সাড়ে তিনশর মতো ব্রোকারেজ হাউজ। ৬৩টি মার্চেন্ট ব্যাংক। ৪০টির মতো অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি রয়েছে। করোনা মহামারির প্রভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোর হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। লেনদেনে কমে যাওয়ায় সরকারের রাজস্ব আহরণ কমে গেছে।
শেয়ারের সমবণ্টন, ডিজিটাল বুথ পরিচালনাসহ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। বাজার চাঙা করতে এসব পদক্ষেপ কতটুকু কার্যকর ভূমিকা রাখবে?
যে কোনো বিষয় শুরুর আগে আমরা নেতিবাচক চিন্তা করি। তা না করে ইতিবাচক কাজ করা উচিত।
ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের কাজ হচ্ছে বিনিয়োগকারীর অ্যাকাউন্ট করে বিনিয়োগের সুযোগ করে দেয়া। পাশাপাশি পুঁজিবাজার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা।
১৯৯৬ সালের কেলঙ্কারি ও পরবর্তী ২০১০ সালে বাজারে মহাধসের জন্য যে সব ভুল-ত্রুটি ছিল, তা থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তাহলে সমস্যাগুলো আর সামনে আসবে না। ঝুঁকি থাকবে, তবে সেই ঝুঁকি হবে বাস্তবসম্মত ও গঠনমূলক।
সবার জন্য শেয়ারের সমবণ্টনের নতুন ব্যবস্থা বাস্তবসম্মত হবে না। এটি কার্যকর হলে শেয়ারের চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্যে কিছুটা হেরফের হবে। যদি শেয়ারের চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্য রক্ষা করতে হয় তাহলে লটারির মাধ্যমে বরাদ্দ দেয়াই উত্তম।
অনেক উদ্যোগ নিয়েও কারসাজি বন্ধ করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়?
পুঁজিবাজারে একটা শ্রেণি আছে যারা ট্রেডিংয়ের (লেনদেনের) সঙ্গে সম্পৃক্ত। যারা ট্রেড করে তাদের আচরণ আর যারা বিনিয়োগ করে তাদের আচরণ এক হবে না। বুঝতে হবে কোনটা কারসাজি, আর কোনটা কারসাজি না।
বিনিয়োগের জন্য কারো মাধ্যমে প্রভাবিত হওয়া যাবে না। কারসাজি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে জানানোর সুযোগ আছে।
বিএসইসি এসব বিষয়ে অনেক সচেতন। সংস্থাটি সফটওয়ারে আধুনিকায়ন করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ- ডিএসই তাদের ওয়েবসাইটে আলাদা একটি জায়গা রেখেছেন যেখানে অভিযোগ দেয়া যায় এবং সেগুলো প্রতিদিনই মনিটরিং করা হয়।
বিনিয়োগকারীদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
জেনেশুনে, বুঝে, যাচাই-বাছাই করে বিনিয়োগ করতে হবে। কারো দ্বারা প্রভাবিত হওয়া যাবে না। দ্রুত লাভবান না হয়ে সুচিন্তিতভাবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিনিয়োগ করা উচিত। তা হলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। দ্রুত লাভবান হতে গিয়ে ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাবে না। তাহলে কারসাজির ফাঁদে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নতুন বছরে পুঁজিবাজার থেকে প্রত্যাশা অনেক। এখন আমাদের বাজারের যে পরিধি, যে পরিমাণ বিনিয়োগকারী আছেন, যে পরিমাণ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ আছে, তাতে প্রতিদিন লেনদেন
দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। দেশে নিবন্ধিত কোম্পানির সংখ্যা দেড় লাখের বেশি। কিন্তু পুঁজিবাজারে তিনশ কোম্পানি তালিকাভুক্ত। আরও বিপুল সংখ্যক কোম্পানির তালিকাভুক্ত হওয়ার সুযোগ আছে। এতে করে পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়বে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়বে।
সার্বিকভাবে পুঁজিবাজার সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
বিদায়ী ২০২০ সালের শেষ দিকে বাজার তুলনামূলকভাবে ভালো ছিল। এক বছরের ব্যবধানে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১ শতাংশ। বাজার মূলধন বর্তমানে ৪ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। দৈনিক লেনদেনের ক্ষেত্রেও অনেক উন্নতি হয়েছে। আইপিওতে অগ্রগতি হয়েছে। শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম (ফ্লোর প্রাইস) বেঁধে দেয়ায় কোভিড-পরবর্তী শেয়ার বাজার পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে গত ০২ জুন, সোমবার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতি।
জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গোলাম মরতুজা, মোঃ ফয়েজ আলম ও মোঃ আশরাফুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সংগঠনের সভাপতি সাইফুল আবেদিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভা সঞ্চালনায় ছিলেন কার্যকরী সভাপতি শাহ জাহান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এস. এফ. এম. মুনির হোসেন, সহসভাপতি মজিবুর রাহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ছানোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনায় আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। আবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার সময় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। ট্রেড লাইসেন্স নিতেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দাখিলের বাধ্যবাধকতায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্রের বাধ্যবাধকতায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে। এত দিন ৪৬টি সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা ছিল।
এখন ১১ ধরনের সেবা নিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) সিস্টেম জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্র দাখিল করলেই হবে। ওই ১১টি সেবা হলো সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে; সমবায় সমিতির নিবন্ধন প্রাপ্তিতে; সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ারের নতুন লাইসেন্স গ্রহণে; ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও নবায়নে; চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, অ্যাকচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণে; পাঁচ লাখ টাকার অধিক পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়; এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মচারীর কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্ট্যাম্প, কোর্ট ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তিতে; ত্রি-চক্র মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নে; ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
আজ সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও দেশের ইতিহাসে ৫৪তম বাজেট।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ১২.৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।
তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, ২০১৫ সালের পর এখন পর্যন্ত বেতন কাঠামো প্রণীত না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।
ঘরে বসে যেসব ক্রেতারা কেনাকাটা করতে চান, তাদের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনাকাটা আগামী অর্থবছর থেকে খানিকটা ব্যয়বহুল হতে পারে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ই-প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় থেকে কমিশনের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্যের দাম বেশি হতে পারে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ভ্যাটের হার ছিল ৫ শতাংশ।
জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশে ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে ভিন্ন আঙ্গিকে পেশ হলো বাজেট। এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বাজেট উপস্থাপন করার পর ৩০ জুন তা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর করা হবে।
তবে অতীতের রেওয়াজ মেনে বাজেট ঘোষণার পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বাজেট নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া পুরো জুন মাসজুড়ে অংশীজনদের মতামত নেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে সরকারের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করায় এবং সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাওয়ায় মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তার এ বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে আমাদের সরকার যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে তখন আমাদের সামনে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরে মানুষকে স্বস্তি দেয়া।
তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছি। এর ফলে নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে সহায়তা করতে সংকোচনমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনায় সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০.৮৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। আশার কথা হলো এবারের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্মরণকালের মধ্যে সবচাইতে স্থিতিশীল ছিল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সাথে এ লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।’
মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকা জরুরি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকা অত্যাবশ্যক। প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হওয়ায় এবং রপ্তানি স্থিতিশীল থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে আমরা বিগত ১৪ মে তারিখে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করেছি।
১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী আর্থিক অস্থিরতা সামাল দিতে গঠিত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। এর মূল লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক মুদ্রানীতি সমন্বয় সাধন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উৎসাহ দেওয়া এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। বহু দেশ সংকটে পড়ে এই সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে- কেউ সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে, কেউ আবার দীর্ঘমেয়াদি ঋণনির্ভরতার ফাঁদে পড়ে গেছে।
আজ, যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য ক্রমশ পশ্চিমকেন্দ্রীকতা থেকে সরে পূর্ব ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন আইএমএফ তার প্রাসঙ্গিকতা ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে এক নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন।
ঋণ সহায়তা, নাকি ঋণের ফাঁদ?
আইএমএফ সাধারণত এমন শর্তে ঋণ দেয়, যার মধ্যে থাকে কঠোর ব্যয়সংযম, ভর্তুকি হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারমুখী সংস্কার; কিন্তু এই শর্তগুলো অনেক সময় জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। স্থানীয় শিল্প ধসে পড়ে, বৈষম্য বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে। আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞতা এর এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ২০১৮ সালে আইএমএফ ইতিহাসের বৃহত্তম ঋণ প্যাকেজ ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করে। ফল ছিল বিপরীত- মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, দারিদ্র্য আরও বেড়ে যায় এবং দেশটি আবার মন্দার মুখে পড়ে।
এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে শুধু অর্থনৈতিক সমীকরণ দিয়ে কোনো দেশের সামাজিক বাস্তবতা নির্ধারণ চলে না।
আইএমএফের নীতিনির্ধারণ কাঠামো এখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শক্তির ভারসাম্যের প্রতিচ্ছবি। উন্নত দেশগুলো (বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন) সংগঠনের ভোটের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অংশগ্রহণ প্রায় অনুপস্থিত। এই গণতান্ত্রিক ঘাটতি আজ দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গভীর অসন্তোষ ও অবিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছে।
বিকল্প প্রতিষ্ঠানের উত্থান
এই প্রেক্ষাপটে বিকল্প আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন- নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (NDB), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB) এবং ল্যাটিন আমেরিকান রিজার্ভ ফান্ড (FLAR) নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে। (NDB) এর সহায়তা তুলনামূলকভাবে শর্তমুক্ত এবং অংশগ্রহণমূলক। এখানে প্রতিটি দেশের ভোটের ও প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ আছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলো আরও আগ্রহী করে তুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন শুধু আর্থিক বিকল্প নয়- এরা এক নতুন উন্নয়ন দর্শনের বাহক। সেই দর্শনে উন্নয়ন নির্ধারিত হয় স্থানীয় বাস্তবতা ও প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে, বাইরের চাপ বা রূঢ় শর্ত নয়।
বিশ্ব আজ বহুমেরু। অর্থনৈতিক শক্তি ছড়িয়ে পড়ছে নানা অঞ্চলে। এই বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে আইএমএফকে নিজস্ব কাঠামো ও দর্শনে রূপান্তর আনতে হবে। প্রয়োজন গভর্ন্যান্সের সংস্কার, নীতিনির্ধারণে সমান অংশগ্রহণ, এবং সর্বোপরি সহানুভূতিশীল ঋণ নীতিমালা।
আইএমএফ যদি সত্যিই বৈশ্বিক আর্থিক স্থিতিশীলতার অভিভাবক হতে চায়, তাহলে তাকে হতে হবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক, এবং আঞ্চলিক বাস্তবতাসম্মত এটি শুধু আইএমএফের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন নয়; এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্ন।
জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচার হওয়া অর্থ জব্দ কর তা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার পরমর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময়ে এবারের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর এফডিসিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচারকৃত অর্থ জব্দের মাধ্যমে বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করলে তা হতে পারে এবারের বাজেটের একটি অভিনব উৎস।’
‘গত সরকারের রেখে যাওয়া বিদেশি ঋণের চাপ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এই সরকারের এই সময়ে অন্যতম সাফল্য ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধ করে বিদেশি ঋণের চাপ কমিয়ে আনা,’ যোগ করেন তিনি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ঋণ বিলিয়ন ডলার করে বছর বছর বাড়ছিল। সামগ্রিকভাবে এই সরকারের সাফল্যের জায়গাটা হলো বহির্খাত, রেমিট্যান্স, রপ্তানি, দায়-দেনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, মজুদ বাড়ানো ও টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল রাখা।’
তবে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এবং করের আওতা বাড়ানোর মতো নতুন কোনো কিছু না থাকায় এবারের বাজেটে কোনো চমক থাকছে না।’
‘যে প্রকল্পগুলো সরকারের কাছে আছে, তা অতিমূল্যায়িত ও তার ৪০ শতাংশ ব্যয়ই ভুয়া। আগের যে প্রকল্পগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হতো, সেগুলো অব্যাহত আছে,’ বলেন তিনি।
সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘রাজস্ব ব্যয় সঠিকভাবে না করলে করদাতাদের উৎসাহ থাকে না। আমাদের কর কাঠামো বৈষম্যনির্ভর। আমাদের বৈদেশিক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা অর্জিত হলেও ব্যক্তি খাতে স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ এখনো আশানুরূপ অর্জিত হয়নি।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি নামের একটি বিতর্ক সংগঠন এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
‘রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা আসন্ন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজকে পরাজিত করে ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।
মন্তব্য