ফোনে আড়ি পাতার ভয়ংকর স্পাইওয়্যার পেগাসাস নিয়ে আলোচনার ঝড় চলছে বিশ্বজুড়ে। তোপের মুখে রয়েছে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইসরায়েলি সফটওয়্যার ফার্ম এনএসও। জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়্যাটসঅ্যাপের প্রধান নির্বাহী উইল ক্যাথকার্টও মুখ খুলেছেন এ বিষয়ে। একই সঙ্গে বেরিয়ে এসেছে, অ্যাপলের আইফোনের ব্যবহারকারীদের অভ্যাস কেমন, তারা কোন ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করেন ও কতটা সময় সেগুলোর পেছনে ব্যয় করেন সেটা জানতে এনএসওর সহায়তা চেয়েছিল ফেসবুক। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে দেয়া ক্যাথকার্টের সাক্ষাৎকার এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। নিউজবাংলার পাঠকের জন্য সেটি অনুবাদ করেছেন রুবাইদ ইফতেখার।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপের প্রধান চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলের এনএসও গ্রুপের প্রধানের বিবৃতিকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। বিশ্ব জুড়ে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তির জন্য কোম্পানিটির সামরিক পর্যায়ের সফটওয়্যার ব্যবহার করার খবর সংবাদ মাধ্যমে আসার পর এমন চ্যালেঞ্জ জানালেন হোয়াটসঅ্যাপ সিইও উইল ক্যাথকার্ট।
এনএসও-এর পেগাসাস সাম্প্রতিক সময়ে হোয়াটসঅ্যাপকেও হ্যাক করেছে। ওই ঘটনার পর ফেসবুকের মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ এনএসওর বিরুদ্ধে মামলা করেছে যেটি এখনও চলছে। তবে এনএসও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদক স্টেফানি কির্চগেজনারকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ক্যাথকার্ট বলেন, ‘সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোর সঙ্গে আমরা দুই বছর আগে যে আক্রমণটিকে পরাস্ত করেছিলাম সেটি মিলে যায়। পেগাসাসের মাধ্যমে এমন অনেককেই টার্গেট করা হয়েছে যাদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তির কোনো ধরনের প্রয়োজন বা কারণ নেই।’
ফ্রান্সের অলাভজনক সংবাদমাধ্যম ফরবিডেন স্টোরিজের উদ্যোগে বিশ্বের ১৬টি সংবাদমাধ্যম পেগাসাসের নজরদারির তথ্য উদ্ঘাটনের প্রজেক্টে জড়িত। এর মধ্যে দ্য গার্ডিয়ান এবং ওয়াশিংটন পোস্টও রয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় ৫০ হাজার ফোন নম্বর যাচাই করা হচ্ছে, যার মধ্যে অনেকগুলো ২০১৬ সালের। এই ফোন নম্বরগুলো এমন অনেক দেশের, যেখানকার সরকার এনএসওর ক্লায়েন্ট হিসেবে স্পাইওয়্যারটি ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর নজরদারি চালাচ্ছে।
ফরবিডেন স্টোরিজ ও এক সহযোগীরা প্রায় ১ হাজার নম্বর এরই মধ্যে শনাক্ত করেছে। এসব নম্বর আরব রাজ পরিবারের সদস্য, বিভিন্ন দেশের অন্তত ৬৫ জন ব্যবসায়ী, ৮৫ জন মানবাধিকার কর্মী, ১৮৯ জন সাংবাদিক ও ছয় শরও বেশি রাজনীতিক ও সরকারি কর্মকর্তা ব্যবহার করছেন।
তালিকায় বেশ কয়েকজন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের নম্বরও রয়েছে। এর মধ্যে ফ্রান্সের ইমানুয়েল মাঁখো, ইরাকের বারহাম সালিহ ও সাউথ আফ্রিকার সিরিল রামাফোসা আছেন। আছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, মিশরের মোস্তাফা মাদবুলি এবং মরক্কোর সাদ এদ্দিন এল ওথমানির মতো সরকার প্রধান।
পেগাসাস যে কোনো স্মার্টফোনে আক্রমণ করতে পারে, এটি ডিভাইসটির টেক্সট, ফটো, ভিডিও ও ইমেইল চুরি করতে পারে। ব্যবহারকারীর অজান্তে এর ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন চালু করে রিয়াল টাইম নজরদারি চালাতে পারে।
হোয়াটসঅ্যাপ জানায়, তাদের অ্যাপকে আক্রমণ করে ব্যবহারকারীর স্মার্টফোন দখল নেয়ার জন্য পেগাসাস ব্যবহার করা হয়েছে। কোম্পানিটি জানায়, তারা ১৪০০ স্মার্টফোনের হদিস পেয়েছে, যেগুলোকে দুই সপ্তাহের মধ্যে হ্যাক করা হয়।
ক্যাথকার্ট বলেন, ‘আমরা ওই অল্প সময়ের মধ্যে ১৪০০ জন ভুক্তভোগীকে খুঁজে পেয়েছি। এখান থেকে যেটা বোঝা যায়, আরও দীর্ঘ সময়ের মধ্যে আক্রান্ত হওয়া ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে।’
ব্যবহারকারীদের ডিভাইস ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত করার অভিযোগ এনে, হোয়াটসঅ্যাপ ২০১৯ সালে এনএসওর বিরুদ্ধে মামলা করে।
তবে আদালতে ‘সার্বভৌম দায়মুক্তি’ দাবি করে এনএসও। কোম্পানিটির যুক্তি ছিল, তাদের ক্লায়েন্টরা বিভিন্ন দেশের পরীক্ষিত সরকার, আর আইন অনুযায়ী কোনো সরকারের বিরুদ্ধে তাদের বৈধ কর্মকাণ্ডের জন্য মামলা করা যায় না।
আদালতে প্রদর্শিত এক নথিতে এনএসওর বলেছে, ‘সিস্টেম চালাতে, ব্যবস্থাপনা করতে, ঠিকঠাক মতো ব্যবহার করতে এবং সফটওয়্যারের টেকনিক্যাল ইস্যু সমাধানে ব্যবহারকারীদের সহায়তা দেবে কোম্পানি।’
আরেকটি নথিতে বলা হয়েছে, ‘নতুন কোনো আক্রমণের জন্য ইনস্টল করতে চাইলে পেগাসাস সিস্টেমের অপারেটরকে শুধু টার্গেটের ফোন নম্বরটি দিতে হবে। বাকি কাজ সিস্টেমই নিজে থেকে করে নেবে। এতে করে টার্গেট করা ডিভাইসে একটি ম্যালওয়্যার ইন্সটল হয়ে যাবে।’
ক্যালিফর্নিয়ার নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টের এক বিচারক পরে রুল জারি করে বলেন, এই মামলা চলতে পারে, কারণ বোঝা যাচ্ছে এনএসওর হাতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ ছিল। যদিও এনএসও জোর দিয়ে বলছে, তারা কেবল ক্লায়েন্টের অনুমতি পাওয়ার পরই ফোনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের নবম সার্কিটের কোর্ট অফ অ্যাপিলস আপিল গ্রহণ করে বিচারকের রুল শুনেছে, তবে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি।
এনএসও আদালতে এক পর্যায়ে এটাও জানায়, হোয়াটসঅ্যাপের মালিক ফেসবুক তাদের কাছে ব্যবসায়িক সহায়তা চেয়েছিল। দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, আইফোনের ব্যবহারকারীদের অভ্যাস কেমন, তারা কোন ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করেন ও কতটা সময় সেগুলোর পেছনে ব্যয় করেন সেটা জানতে এনএসওর সহায়তা চেয়েছিল ফেসবুক। এনএসও জানিয়েছে তারা ফেসবুকের সেই অনুরোধ উপেক্ষা করে, কারণ তারা শুধু সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করে।
পেগাসাস প্রজেক্টের জবাবে এনএসও জানায়, ৫০ হাজারের বেশি ফোন নম্বরের যে তালিকা ফাঁস হয়েছে তার সঙ্গে এনএসও বা পেগাসাস জড়িত নয়, কারণ এনএসওর ক্লায়েন্টের অনুপাতে সংখ্যাটি ‘অনেক বড়’। কোম্পানিটির অপারেশনসের সঙ্গে পরিচিত একজন জানান, একেকটি ক্লায়েন্ট বছরে সাধারণত সর্বোচ্চ ১১২টি ফোনকে টার্গেট করে। এনএসওর দাবি ৪০টি দেশে তাদের ৬০ জন ক্লায়েন্ট রয়েছে।
দ্য গার্ডিয়ানকে দেয়া সাক্ষাত্কারে ক্যাথকার্ট এনএসও সম্পর্কে একই বিষয়টি উত্থাপন করেন যেটা তার কোম্পানি আদালতে বলেছে। হোয়াটসঅ্যাপ ও ক্যাথকার্টের দাবি, এনএসও তার ক্লায়েন্টদেরকে লাইসেন্স দেয়া সফটওয়্যার পরিচালনা করে বা ক্লায়েন্ট কাকে টার্গেট করছে সেটি তারা জানে।
গার্ডিয়ানকে ক্যাথকার্ট বলেন, ‘সফটওয়্যারকে খুব সহজেই পরিবর্তন করা যায়। তারা কীভাবে নিশ্চিত হচ্ছে যে, তাদের সফটওয়্যারকে পরিবর্তন করা হচ্ছে না? বা তারা নিজেরাই এটিকে চালাচ্ছে না?’
তিনি আরও জানতে চান, এনএসও কীভাবে নিশ্চিত হয় যে, যুক্তরাষ্ট্রের কান্ট্রি কোড +১ যুক্ত নম্বরগুলোকে টার্গেট করা হয় না?
ক্যাথকার্ট যোগ করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নম্বর টার্গেট করা হচ্ছে না- এই দাবিতে তারা (এনএসও) এতোটা আত্মবিশ্বাসী কী করে হয়? এর কারণ কি এই যে, তারাই এটা চালাচ্ছে এবং তাদের কাছেই তালিকা (টার্গেটের) আছে? সেটাই যদি আসল ঘটনা হয়, তাহলে যা ঘটছে ও অপব্যবহারের জন্য কেন তারা দায়ী হবে না?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমেরিকানরা দেশের বাইরে যান, তারা বিদেশি নম্বর ব্যবহার করেন। বিশ্বজুড়ে সব মানুষের বা রাষ্ট্রদূতদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা। ফোন নম্বরে কান্ট্রি কোড থাকল সেটা সুরক্ষিত হচ্ছে কী? ব্যাপারটা একটি আজগুবি না! ব্যাপারটা এমন যে, আপনি একটা মিসাইল ছুড়বেন যেটা পৃথিবীর নির্দিষ্ট একটা এলাকার বাইরে আর কিছুকে ধ্বংস করবে না। মিসাইল তো এভাবে কাজ করে না!।
ক্যাথকার্টের মন্তব্যের উত্তরের এনএসওর এক মুখপাত্র গার্ডিয়ানকে পাঠানো বিবৃতিতে বলেন, ‘এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন অ্যাপের আড়ালে লুকিয়ে কাজ করতে থাকা পিডোফিলিয়া ও সন্ত্রাসীচক্র এবং অপরাধমূলক কাজের তদন্ত ও প্রতিরোধ করতে গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলোকে সহায়তা করা পেগাসাস ও সমমানের প্রযুক্তিগুলোর জন্যই বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ লোক রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারছে এবং রাস্তার বেরোতে পারছে।’
‘আমরা আবারও বলতে চাই: এনএসও সফটওয়্যারটি চালায় না এবং প্রাপ্ত ডেটা আমাদের হাতে আসে না। আমাদের প্রযুক্তি পণ্য পরীক্ষিত সরকারগুলোর কাছে বিক্রি করা হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রে সাইবার নজরদারিতে ব্যবহার করা যায় না। আর যুক্তরাষ্ট্রের নম্বর ব্যবহারকারীর ডিভাইসকে আক্রান্ত করতে কখনওই কোনো বিদেশি গ্রাহককে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে দেয়া হয়নি। প্রযুক্তির দিক থেকে এটা অসম্ভব।
‘জনাব ক্যার্থকার্টের কাছে এমন কোনো বিকল্প ব্যবস্থা আছে কী যেটা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন ব্যবহার করা পিডোফাইল, সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের চিহ্নিত করতে গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে সহায়তা করে?...থাকলে আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে সেটা সম্পর্কে শুনব।’
হোয়্যাটসঅ্যাপের করা মামলায় বড় ইন্টারনেট ফার্মগুলো যোগ দিয়েছে এবং স্বেচ্ছায় তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছে। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল অ্যাপল। প্রজেক্টের করা ৩৭টি আইফোনের বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে তাদের ফোনগুলো পেগাসাস আক্রমণের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ।
তারপরও অ্যাপল জবাবে জানিয়েছে, তাদের অধিকাংশ ব্যবহারকারীর ফোন নিরাপদ।
ক্যাথকার্ট অন্যান্য ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোর মতো অ্যাপলকেও মামলায় যোগ দিতে ও জনগণের পক্ষে দাঁড়াতে অনুরোধ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ ব্যবহারকারীকে এটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না- এমনটা বলাই যথেষ্ট নয়। হাজার হাজার ভুক্তভোগী আছেন। একজনের ফোন অনিরাপদ থাকা মানে সবার ফোন অনিরাপদে থাকা।’
সরকারের প্রতি এনএসও মতো কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ বা নিষিদ্ধ করার দাবি জানান ক্যাথকার্ট।
তিনি বলেন, ‘আশা করছি আমরা এই মুহূর্তটা ভুলব না। আমরা যদি অনিরাপদ মোবাইল ফোন ও সফটওয়্যারের দিকে এগোতে থাকি থাকি তাহলে মানুষের নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তার পরিস্থিত কতটা খারাপ হয়ে যাবে সেটারই একটা ঝলক দেখা গেছে। আশা করছি, এই আলোচনাগুলো বদলাবে। আমার মতে এটা নির্ভর করছে, নিরাপত্তা হুমকি ও স্বাধীনতার প্রতি হুমকিগুলো নিয়ে সরকারের সচেতন হওয়ার ওপর।’
আরও পড়ুন:সারা দেশে গত পাঁচ দিন ধরে ইন্টারনেটে ধীরগতি পাচ্ছেন গ্রাহকরা। পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় স্থাপিত সাবমেরিন ক্যাবলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগে এই বিভ্রাট দেখা দিয়েছে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কাজ করছে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসি (বিএসসিপিএলসি)। তবে সহসাই ইন্টারনেটের স্বাভাবিক গতি ফিরছে না। ধীরগতির এই পরিস্থিতি চলতে পারে আরও এক মাস।
বিএসসিপিএলসি বলছে, ইন্দোনেশিয়ার জলসীমায় সমুদ্রের তলদেশে ফাইবার ক্যাবল কাটা পড়েছে। সেখানে মেরামতের কাজ চলছে। মেরামত শেষ হতে পাঁচ সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে মে মাসের শেষ নাগাদ সংযোগ স্বাভাবিক হতে পারে।
জানা গেছে, ১৯ এপ্রিল রাত ১২টা থেকে সারা দেশে ইন্টারনেটে ধীরগতি দেখা দেয়। বিএসসিপিএলসি জানতে পারে সিঙ্গাপুরে জলসীমায় কোথাও ফাইবার ক্যাবল কাটা পড়েছে।
পরে আরও অনুসন্ধানে জানা যায় সিঙ্গাপুর নয়, ইন্দোনেশিয়ার জলসীমায় সমুদ্রের তলদেশে ক্যাবল ‘ব্রেক’ করেছে। এতে দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের (সিমিউই-৫) সংযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
বিএসসিপিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা কামাল আহমেদ জানান, সিমিউই-৫ (দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল) দিয়ে বাংলাদেশে প্রায় ১ হাজার ৬০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথড সরবরাহ হয়। সেটা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক (চালনা ও রক্ষণ) সাইদুর রহমান জানান, মূলত ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র এলাকায় সিমিউই-৫ ক্যাবলটি ব্রেক করেছে। তারা এটা মেরামতে কাজ করছে। আগামী মাস অর্থাৎ, মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহের শেষ অথবা চতুর্থ সপ্তাহ নাগাদ কাজ শেষ হতে পারে।
ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) মহাসচিব নাজমুল করিম ভুঁইয়া চাহিদা অনযায়ী ব্যান্ডউইথড সরবরাহে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা যতদূর জেনেছি, এখনও কাজ শুরুই হয়নি। কনসোর্টিয়ামের কোনো জাহাজ না পাওয়ায় কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে। জাহাজ পাওয়ার পর হয়তো কাজ শুরু হবে। তার মানে আমরা একটা বড় সমস্যায় পড়তে যাচ্ছি।’
নাজমুল করিম আরও বলেন, ‘গত ৪-৫ দিন ধরে গ্রাহকরা আমাদের অনবরত ফোন করছেন, খোঁজ নিচ্ছেন। ইন্টারনেটের ধীরগতির কারণে সফটওয়্যার নিয়ে যারা কাজ করেন, তারা বিপাকে পড়েছেন। ফ্রিল্যান্সাররাও এ নিয়ে আতঙ্কিত। সরকার এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে প্রত্যাশা আমাদের।’
এক হাজার ৬০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথড সরবরাহ করা দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের সংযোগ এখন পুরোপুরি বন্ধ। শুধু প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলে ৮০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথড সরবরাহে রয়েছে। এত বিশালসংখ্যক গ্রাহকের ইন্টারনেট সেবা তাহলে কীভাবে চলছে- এমন প্রশ্ন অনেকের।
বিএসসিপিএলসি সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে মোট ব্যান্ডউইথডের ব্যবহার পাঁচ হাজার জিবিপিএসের বেশি। এর অর্ধেকেরও বেশি প্রায় ২ হাজার ৭০০ জিবিপিএস আন্তর্জাতিক টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল (আইটিসি) লাইসেন্সের মাধ্যমে আসে, যা ভারত থেকে স্থলপথে ব্যান্ডউইথড আমদানি করতে ব্যবহৃত হয়।
বাকি দু’হাজার ৪০০ জিবিপিএসের মতো ব্যান্ডউইথড সরবরাহ করে বিএসসিপিএলসি। দুটি সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে এই ব্যান্ডউইথড সরবরাহ করা হয়। বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া-মধ্যপ্রাচ্য-পশ্চিম ইউরোপ-৪ (সিমিউই-৪) কনসোর্টিয়ামের সদস্য। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হয়েছিল। এর ল্যান্ডিং স্টেশন কক্সবাজারে। এটি প্রায় ৮০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথড সরবরাহ করে থাকে।
অন্যদিকে দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সিমিউই-৫ ঢুকেছে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা হয়ে। দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয় হাজার ৬০০ জিবিপিএস। বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ব্যান্ডউইথড প্রথম সাবমেরিন ক্যাবলে শিফটিং হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বিএসসিপিএলসির মহাব্যবস্থাপক সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের বিকল্প অনেক উপায় রয়েছে। সেগুলো কার্যকর করা হচ্ছে। যদিও সব বিকল্প উপায় পুরোপুরি এখনও কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। এমনকি প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল যেটি সিমিউই-৪ নামে পরিচিত, সেটির পুরো ব্যান্ডউইথড বহনের সক্ষমতা রয়েছে। তবে এজন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে বাড়তি খরচ দিতে হবে। এটা ছাড়া আরও কিছু বিকল্প রয়েছে। সেগুলো নিয়েও কাজ চলছে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের বাজারে গত বছর প্রথমবারের মতো ল্যাপটপ নিয়ে আসে ট্রেন্ডি প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স। ইনবুক ওয়াইটু প্লাস নামের ল্যাপটপটি দিচ্ছে চমৎকার ডিজাইন, শক্তিশালী পারফরম্যান্স ও সাশ্রয়ী দামের প্রতিশ্রুতি। অল্প সময়ের মধ্যেই প্রযুক্তিপ্রেমী শিক্ষার্থী ও এক্সিকিউটিভদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে এ ল্যাপটপ।
দেখে নেওয়া যাক কী আছে ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাস ল্যাপটপটিতে। এর ফিচার, পারফরম্যান্স ও ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাই বা কেমন।
ডিজাইন ও গঠন
স্লিক ও হালকা ডিজাইনের ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাস সহজেই সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। শিক্ষার্থী ও ব্যস্ত এক্সিকিউটিভদের জন্য এ ল্যাপটপ যথার্থ। এর পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক মেটালিক ডিজাইন স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে দেয় প্রিমিয়াম অনুভূতি। স্লিক প্রোফাইল ও প্রাণবন্ত ডিসপ্লের সঙ্গে যুক্ত সরু বেজেল ল্যাপটপটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। ফলে বাজারের একই ধরনের দামি ল্যাপটপের সমকক্ষ হয়ে ওঠে ওয়াইটু প্লাস।
তা ছাড়া এর মসৃণ এজি গ্লাস টাচ প্যানেলের কারণে সিল্কি-স্মুথ ও স্থায়ী টাচের অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। ১.৫ মিলিমিটার কি ট্র্যাভেল এবং ব্যাকলাইটিংযুক্ত রেসপনসিভ কি-বোর্ড টাইপিংকে করে তোলে সহজ ও আরামদায়ক। তাই কম আলোতেও টাইপ করতে কোনো সমস্যা হয় না।
পারফরম্যান্স ও প্রোডাক্টিভিটি
১১তম প্রজন্মের কোর আই৫ প্রসেসর ও ৮ জিবি র্যাম রয়েছে ইনফিনিক্স ওয়াইটু প্লাসে। স্টোরেজের প্রয়োজন মেটাতে এতে আছে ৫১২ জিবি এনভিএমই পিসিআইই এসএসডি। প্রোডাক্টিভিটি সফটওয়্যার, ওয়েব ব্রাউজ করা কিংবা কনটেন্ট স্ট্রিম করাসহ সব ধরনের উচ্চ চাহিদাসম্পন্ন অ্যাপ্লিকেশন চালানো যায় খুব সহজেই। এর ইন্টিগ্রেটেড ইন্টেল ইউএইচডি গ্রাফিকস সাধারণ গেমিং ও মাল্টিমিডিয়া এডিটিংয়ের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যময় গ্রাফিকস পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। উইন্ডোজ ১১ পরিচালিত ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাসের অপারেটিং সিস্টেম সবার পরিচিত ও ব্যবহার করা সহজ।
ডিসপ্লে ও মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতা
উজ্জ্বল রং ও ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের সঙ্গে স্পষ্ট ও পরিষ্কার ভিজ্যুয়াল দেয় ১৫.৬ ইঞ্চি ফুল এইচডি আইপিএস ডিসপ্লেযুক্ত ইনবুক ওয়াইটু প্লাস। ৮৫ শতাংশ স্ক্রিন-টু-বডি রেশিওর সঙ্গে চমৎকার মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতার জন্য ডিসপ্লেটি দারুণ। কাজেই আপনার প্রিয় নেটফ্লিক্স সিরিজ দেখা কিংবা ফটো এডিট করা— সবই হবে স্বাচ্ছন্দ্যে।
ল্যাপটপটিতে আছে ডুয়েল এলইডি ফ্ল্যাশ ও এআই নয়েজ ক্যান্সেলেশন প্রযুক্তিযুক্ত ১ হাজার ৮০ পিক্সেলের ফুল এইচডি+ ক্যামেরা। এর ফলে ভিডিও কলের অভিজ্ঞতা হবে আরও উন্নত।
ব্যাটারি লাইফ ও চার্জিং
ইনবুক ওয়াইটু প্লাসের ৫০ ওয়াট-আওয়ার ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কোনো চার্জ ছাড়াই প্রতিদিনের কাজে আট ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাকআপ দিতে সক্ষম। পাশাপাশি এর ৪৫ ওয়াট টাইপ-সি পোর্টযুক্ত চার্জারে ডিভাইসটি দ্রুত ও সহজেই চার্জ করা যায়। ফলে ভারী চার্জার বহনের প্রয়োজন হয় না।
দাম
ল্যাপটপটির বর্তমান বাজারমূল্য ৫৮ হাজার ৯৯০ টাকা। অনুমোদিত ইনফিনিক্স রিটেইলার থেকে ল্যাপটপটি কেনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:শীর্ষস্থানীয় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ উবারের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ইনডেক্স-এর অষ্টম সংস্করণ প্রকাশ হয়েছে রোববার।
উবার ব্যবহারকারীরা কোন জিনিসগুলো গাড়িতে সবচেয়ে বেশি ফেলে রেখে গেছেন এবং দিনের কোন সময়ে, সপ্তাহের কোন দিনে ও বছরের কোন সময়ে হারানো জিনিস রিপোর্ট করেছেন, এসব তথ্যের একটি স্ন্যাপশট হলো এ ইনডেক্স।
গত এক বছরের মে ও জুন মাসে বাংলাদেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি জিনিসপত্র ভুলে ফেলে রেখে গেছেন। বেশির ভাগ জিনিসপত্র ফেলে রেখে আসার ঘটনাটি ঘটেছে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে।
গত বছর বাংলাদেশজুড়ে যাত্রীদের ভুলে যাওয়া জিনিসের তালিকায় প্রথম দুটি স্থানে ছিল পোশাক ও ছাতা। তালিকায় এর পরেই ছিল ওয়ালেট, বালিশ ও হেডফোন।
বাংলাদেশিরা উবারে এ রকম সাধারণ জিনিসপত্র যেমন ভুলে ফেলে রেখে গেছেন, স্পিকারের মতো অপ্রত্যাশিত জিনিসও তেমনি ভুলে রেখে গেছেন।
উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড নাশিদ ফেরদৌস কামাল লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ইনডেক্স সম্পর্কে বলেন, ‘যাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্য উবারের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ট্রিপের সময় যাত্রীদের ফেলে যাওয়া জিনিস নিরাপদে তাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়াও এর অন্তর্ভুক্ত। হারানো জিনিস খুঁজে পেতে উবারের কিছু ইন-অ্যাপ অপশন আছে।
‘এ ব্যাপারে যাত্রীদের জানানোর জন্য লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড ইনডেক্স একটি চমৎকার শিক্ষণীয় উপায়। যাত্রীদের আমরা জানাতে চাই যে, রাইডের সময় তারা কিছু ভুলে ফেলে গেলে তাদের সাহায্য করার জন্য আমরা প্রস্তুত।’
ফেলে যাওয়া জিনিস উদ্ধারের উপায়
গাড়িতে ফেলে যাওয়া কোনো জিনিস উদ্ধারের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো চালককে কল করা। কীভাবে করবেন জেনে নিন।
১. ‘ইয়োর ট্রিপস’ অপশনে ট্যাপ করুন এবং যে ট্রিপে আপনার জিনিসটি হারিয়ে গেছে, তা সিলেক্ট করুন
২. নিচে স্ক্রল করে ‘ফাইন্ড লস্ট আইটেম’ অপশনে ট্যাপ করুন
৩. ‘কনটাক্ট ড্রাইভার অ্যাবাউট আ লস্ট আইটেম’ অপশনে ট্যাপ করুন
৪. স্ক্রল করে নিচে নামুন এবং আপনার সঙ্গে যোগযোগ করা যাবে এমন একটি ফোন নম্বর লিখুন। সাবমিট অপশনে ট্যাপ করুন
৫. যদি নিজের ফোন হারিয়ে যায়, তাহলে আপনার বন্ধুর ফোন নম্বর ব্যবহার করুন (এর জন্য আপনাকে কম্পিউটার বা বন্ধুর ফোন থেকে নিজের অ্যাকাউন্টে লগ ইন করতে হবে)
৬. আপনার ফোন বেজে উঠবে এবং আপনার চালকের মোবাইল নম্বরের সঙ্গে আপনাকে সরাসরি যুক্ত করে দেয়া হবে
৭. যদি চালক ফোন ধরেন এবং নিশ্চিত করেন যে আপনার জিনিসটি পাওয়া গেছে, সেটি ফিরিয়ে নিতে উভয়ের জন্য সুবিধাজনক একটি সময় ও স্থান নির্বাচন করুন
৮. যদি চালকের সাথে যোগাযোগ করতে না পারেন, আপনার হারানো জিনিসটির বিস্তারিত বর্ণনা এবং আপনার সঙ্গে যোগাযোগের উপায় জানিয়ে চালককে একটি ভয়ে সমেইল পাঠিয়ে রাখুন
উবারে কিছু হারিয়ে ফেললে সহজে কীভাবে তা ফিরে পেতে পারেন, এই ভিডিও থেকে তা দেখে নিন।
উবার যাত্রীরা যেসব জিনিস সবচেয়ে বেশি ভুলে ফেলে রেখে গেছেন, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে পোশাক। এরপরই রয়েছে ছাতা, ওয়ালেট, নেক-পিলো, হেডফোন ও স্পিকার।
যে শহরগুলোতে যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি জিনিস হারিয়েছেন, তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ঢাকা। এরপরের স্থানগুলো যথাক্রমে চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল।
বছরের যে দিনগুলোতে যাত্রীরা সবচেয়ে বেশিসংখ্যক জিনিস ভুলে রেখে গেছেন তার মধ্যে রয়েছে ১৩ মে, ২০২৩। এ ছাড়া ৯ জুন এবং ১৬ জুন, ২০২৩ বেশি ভুল করেছেন যাত্রীরা।
সপ্তাহের শুক্র, শনি ও রোববার সবচেয়ে বেশি জিনিস হারিয়েছে।
দিনের যে সময়ে যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি জিনিস ফেলে রেখে যান, তার সময় রাত আটটা। এরপরই সন্ধ্যা সাতটা ও রাত ৯টায় বেশি জিনিস ফেলে রেখে গেছেন।
আরও পড়ুন:দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবলের (সিমিউই-৫) সংযোগ সরবরাহ বন্ধ থাকার কারণে সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
শুক্রবার রাত ১২টার পর এই সমস্যা শুরু হয়েছে। এর ফলে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানসহ গ্রাহকেরা ইন্টারনেটে ধীরগতি পাচ্ছেন।
এর আগে রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বাংলাদেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল এক ঘণ্টা বন্ধ থাকার কথা বলেছিল বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল পিএলসি।
বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, শুক্রবার রাত ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত কুয়াকাটায় দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল (সিমিউই-৫) রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলবে। এ সময় দেশের ইন্টারসেবায় বিঘ্ন ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যান্ডউইডথ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস পিএলসি (বিএসসিপিএলসি) জানিয়েছে, সিঙ্গাপুরে ফাইবার কেবল ‘ব্রেক’ করায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা কামাল আহমেদ বলেন, সিমিউই-৫ দিয়ে দেশে ১ হাজার ৬০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ হয়। কিন্তু এর পুরোটাই এখন বন্ধ আছে। আমরা চেষ্টা করছি, সিমিউই-৪ (প্রথম সাবমেরিন কেবল) দিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করতে। সিঙ্গাপুরে ফাইবার কেবল ব্রেক করায় বাংলাদেশের পাশাপাশি আরও কয়েকটি দেশে একই অবস্থা তৈরি হয়েছে।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ‘গ্রাহকেরা ফোন করে ইন্টারনেট সেবায় ধীরগতির অভিযোগ করছেন।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) সেবার বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউতে বিএসসিএলের প্রধান কার্যালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে সঙ্গে নিয়ে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রতিমন্ত্রী আরাফাত।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন, বিএসসিএলের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহজাহান মাহমুদ, একাত্তর মিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু এবং বিএসসিসিএলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, টিআরপি সেবার বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধনের মাধ্যমে চমৎকার একটি কাজের সূচনা হয়েছে। সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে, যা অত্যন্ত গর্বের। প্রযুক্তিটি আরও উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। এ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে সরকার বেসরকারি খাত বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে প্রযুক্তিপণ্য তৈরি করতে পারে, যেটি বাণিজ্যিকভাবে লাভবান করা সম্ভব।
সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের উদ্যোগ ও সহযোগিতা ছাড়া বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সহযোগিতা ছাড়া এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন সম্ভব হতো না।’
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে সম্প্রতি নতুন স্মার্টফোন সিরিজ নোট ৪০ নিয়ে এসেছে তরুণদের প্রিয় প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স।
এ সিরিজের দুটি স্মার্টফোন নোট ৪০ ও নোট ৪০ প্রো এখন দেশজুড়ে পাওয়া যাচ্ছে।
আধুনিক চার্জিং প্রযুক্তি, আশাব্যাঞ্জক পারফরম্যান্স ও শক্তিশালী গড়নের স্মার্টফোনগুলোতে আছে সফটওয়্যার আপডেটের প্রতিশ্রুতি। নোট ৪০ সিরিজের ফোনগুলোতে অ্যান্ড্রয়েড ১৪ অপারেটিং সিস্টেম থাকছে. তবে আপগ্রেড পাওয়া যাবে অ্যান্ড্রয়েড ১৬ পর্যন্ত।
নোট ৪০ সিরিজের এ প্রতিশ্রুতি মিড-রেঞ্জের বাজারে চমক নিয়ে এসেছে। দুই বছরের অ্যান্ড্রয়েড আপডেটসহ ৩৬ মাসের সিকিউরিটি প্যাচ পাবেন গ্রাহকরা। ফলে ব্যবহারকারীরা সমস্যা ছাড়াই আপডেটগুলো পাবেন যথাসময়ে।
ইনফিনিক্সের ভাষ্য, অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের বাজারে যুগান্তকারী ফিচার নিয়ে এসেছে ইনফিনিক্স নোট ৪০ সিরিজ। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো অ্যান্ড্রয়েড ফোনে যুক্ত হয়েছে ওয়্যারলেস ম্যাগনেটিক চার্জিং প্রযুক্তি ‘ম্যাগচার্জ’। একই সঙ্গে আরও আছে অল-রাউন্ড ফাস্টচার্জ ২.০। উদ্ভাবনটি সব পরিস্থিতিতে চার্জিংকে সুবিধাজনক করে তুলবে।
সিরিজের দুটি ফোনেই আছে ২০ ওয়াটের ওয়্যারলেস ম্যাগচার্জ ও রিভার্স চার্জিংয়ের সুবিধা। ফলে ব্যবহারকারীরা ঘরে ও বাইরে যেকোনো সময় ফোনে চার্জ দিতে পারবেন।
ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা উন্নত করতে নোট ৪০ সিরিজে যুক্ত করা হয়েছে ম্যাগনেটিক ফোন কেস (ম্যাগকেস), ম্যাগনেটিক চার্জিং প্যাড (ম্যাগপ্যাড) এবং ম্যাগনেটিক পাওয়ার ব্যাংকের (ম্যাগপাওয়ার) মতো অ্যাক্সেসরিজ।
দুর্দান্ত ব্যাটারি পারফরম্যান্সের জন্য সিরিজটিতে পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট চিপ-চিতা এক্স১ যুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে ইনফিনিক্স বলেছে, সঙ্গে রয়েছে মিডিয়াটেক হেলিও জি৯৯ আল্টিমেট প্রসেসর। ফলে ফোনের কার্যকারিতা আরও বাড়বে। দিনজুড়ে ব্যাকআপ দিতে রয়েছে শক্তিশালী ৫০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি।
দ্রুত চার্জিংয়ের জন্য নোট ৪০ প্রো-তে আছে ৭০ ওয়াটের মাল্টি-স্পিড ফাস্ট চার্জার এবং নোট ৪০-তে আছে ৪৫ ওয়াটের ফাস্ট চার্জার। ডিভাইসগুলোতে আরও রয়েছে ৬.৭৮ ইঞ্চির ফুল এইচডি প্লাস ১২০ হার্টজের অ্যামোলেড ডিসপ্লে।
প্রধান ক্যামেরা হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে ১০৮ মেগাপিক্সেলের সুপার-জুম ক্যামেরা এবং আছে ৩২ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা। জেবিএলের টিউন করা ডুয়েল স্পিকার আছে নোট ৪০ সিরিজে।
নোট ৪০ প্রো-এর ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি ধারণক্ষমতা এবং ১২ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি ধারণক্ষমতার সংস্করণ দুটির বাজারমূল্য যথাক্রমে ৩০ হাজার ৯৯৯ এবং ৩৪ হাজার ৯৯৯ টাকা। ভিনটেজ গ্রিন ও টাইটান গোল্ড রঙে পাওয়া যাচ্ছে ফোনটি।
অন্যাদিকে ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি ধারণক্ষমতার নোট ৪০ ফোনটির বাজারমূল্য ২৬ হাজার ৯৯৯ টাকা। পাওয়া যাচ্ছে টাইটান গোল্ড ও অবসিডিয়ান ব্ল্যাক রঙে।
সিরিজটির সঙ্গে ক্রেতারা পাবেন একটি ম্যাগকেস। নোট ৪০-এর সঙ্গে ম্যাগপ্যাড এবং নোট ৪০ প্রো-এর সাথে ২ হাজার ৯৯৯ টাকা সমমূল্যের একটি ম্যাগপাওয়ার মিলবে।
আরও পড়ুন:সরকার অনুমোদিত দেশি ও বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলের ফিড কেবলমাত্র বৈধ ক্যাবল ও ডিটিএইচ অপারেটররা গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে পারবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। এতে করে কপাল পুড়তে চলেছে অবৈধ ক্যাবল ও ডিটিএইচ অপারেটরদের।
মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দেশি-বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলের অবৈধ সম্প্রচার বন্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ-সংক্রান্ত এক সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার অনুমোদিত দেশি ও বিদেশি টিভি চ্যানেলের ফিড কেবলমাত্র বৈধ ক্যাবল ও ডিটিএইচ অপারেটররা গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে পারবে। তাদের বাইরে অন্য কেউ এ কাজ করলে তা বেআইনি ও অবৈধ। এ বেআইনি কাজ বন্ধে সরকার আইনগত ব্যবস্থা নেবে। এ বেআইনি কাজের কারণে সরকার রাজস্ব হারায় এবং বিভিন্নভাবে বিদেশে অর্থ পাচার হয়। একইসঙ্গে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশি চ্যানেলের অবৈধ সম্প্রচারের মাধ্যমে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধে যে ক্লিনফিডের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তার বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে এ-সংক্রান্ত আইনের বাস্তবায়ন করা হবে।
‘যারা অবৈধ সেট টপ বক্সের মাধ্যমে অবৈধভাবে চ্যানেলগুলো দেখাচ্ছে, ক্লিনফিডের ব্যবস্থা না করে ইচ্ছেমতো বিজ্ঞাপনসহ চ্যানেল দেখাচ্ছে, তাদের কারণে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘অবৈধ সেট টপ বক্স যেগুলো বাজারজাত ও আমদানি করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন অভিযান আরও জোরদার করবে। আমরা একটা কঠোর বার্তা দিতে চাই- কেউ যেন কোনোভাবে সেট টপ বক্স অবৈধভাবে আমদানি না করে এবং সেটা বাজারজাত না করে।
‘বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির স্বার্থে, বিদেশে অর্থ পাচার রোধে এবং আমাদের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে আমরা এ অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে যাচ্ছি।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় একসঙ্গে মিলে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করছে বলে তিনি জানান।
মন্তব্য