করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বাবাকে পানি পান করাতে মায়ের সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়েছে ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের এক কিশোরীকে।
বাবাকে পানি দিতে গেলে চিৎকার করে কাঁদতে থাকা মেয়েটিকে পেছন থেকে টেনে আটকানোর চেষ্টা করছিলেন তার মা।
এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত ৫০ বছর বয়সী ব্যক্তিটি অন্ধ্র প্রদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বিজয়ওয়াড়ায় কাজ করতেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে তিনি নিজ গ্রাম শ্রীকাকুলামে ফিরে যান।
আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই ব্যক্তিকে প্রথমে গ্রামে ঢুকতে বাধা দেন স্থানীয় লোকজন। পরে নিজ বাড়ির লোকজনের বাধার মুখে পড়েন তিনি।
অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের বাধায় তিনি নিজ বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেননি। পরে বাধ্য হয়ে গ্রামের শেষ প্রান্তে এক কুঁড়েঘরে আশ্রয় নিতে হয় তাকে। কিন্তু ঘরটিতে ছিল না খাবার, পানিসহ প্রয়োজনীয় অন্য জিনিসপত্র।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, পানির জন্য একপর্যায়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ওই ব্যক্তি। তার ১৭ বছর বয়সী মেয়ে একটি বোতলে পানি নিয়ে বাবাকে পান করাতে যান। সে সময় তার মা পেছন থেকে টেনে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে থাকেন।
কাছে গেলেই করোনা আক্রান্ত হবে, এমন ভয়েই তার মা টেনে সরাচ্ছিলেন বলে বলতে শোনা যায় ভিডিওতে। তবে শেষ পর্যন্ত মেয়ে তার বাবাকে পানি পান করাতে সক্ষম হয়।
যে ব্যক্তি ভিডিওটি করেছেন তাকে বলতে শোনা যায়, কোনো হাসপাতালেই আর বেড খালি নেই।
ভিডিও ধারণকারীকে আরও বলতে শোনা যায়, পরিবারের সবাই পজিটিভ হওয়ার পরই ওই ব্যক্তির কাছে গেছেন।
ওই দৃশ্য ধারণ করার কিছু পরই করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিটির মৃত্যু হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, চারপাশে বেশ দূরত্ব রেখে অসংখ্য লোকজন মৃত্যুপথযাত্রীকে দেখছেন। দৃশ্য ধারণকারী কিংবা লোকটির পরিবারের সদস্যদের কেউই সহায়তায় এগিয়ে যায়নি।
অন্ধ্র প্রদেশে মঙ্গলবার ২০ হাজার মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭১ জনের।
রাজ্যটিতে এখন পর্যন্ত ১১ লাখ মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়।
আরও পড়ুন:মালয়েশিয়ায় একটি সামরিক মহড়ার সময় মাঝ আকাশে নৌবাহিনীর দুটি উড়োজাহাজের সংঘর্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলভার সাড়ে ৯টার দিকে মালয়েশিয়ার লুমু শহরে নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
প্রতিবেদন বলছে, রয়্যাল মালয়েশিয়ান নৌবাহিনীর কুচকাওয়াজের জন্য একটি সামরিক মহড়া চলাকালীন মাঝ আকাশে নৌবাহিনীর ওই দুই উড়োজাহাজের সংঘর্ষ হয়। পরে বিধ্বস্ত হয়ে মাটিতে পড়ে যায় বাহন দুটি। কেউই বেঁচে নেই।
নানা মাধ্যমে এর ফুটেজও প্রকাশিত হয়েছে।
রয়্যাল মালয়েশিয়ান নৌবাহিনী জানিয়েছে, ঘটনাস্থলেই ১০ জনকে মৃত বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। লুমুত সামরিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে মরদেহ শনাক্তের জন্য। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি কমিটি গঠন করা হবে।
যে দুটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে এর মধ্যে একটি হলো এইচওএম এম৫০৩-৩। এতে সাতজন আলোরী ছিলেন। চলমান ট্র্যাকে বিধ্বস্ত হয়েছে এই উড়োজাহাজটি। অন্যটি ফেনেক এম৫০২-৬। এতে ছিলেন তিনজন আরোহী। এটি বিধ্বস্ত হয় কাছাকাছি একটি সুইমিং পুলে।
রাজ্যের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ বিভাগ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার বিষয়য়ে সতর্ক করা হয়েছিল।
এর আগে গত মার্চ মাসে একটি মালয়েশিয়ান কোস্ট গার্ড উড়োজাহাজ প্রশিক্ষণ ফ্লাইটের সময় মালয়েশিয়ার আংসা দ্বীপের কাছে সাগরে বিধ্বস্ত হয়। ওই দুর্ঘটনার পর পাইলট, কো-পাইলট এবং এতে থাকা দুই যাত্রীকে জেলেরা উদ্ধার করেন।
এক রাতে ৮০ বারেরও বেশি ভূমিকম্পে দফায় দফায় কেঁপে উঠল তাইওয়ান। স্থানীয় সময় সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত এসব কম্পন অনুভূত হয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তীব্রতার ভূমিকম্পের উৎপত্তি পূর্বাঞ্চলীয় হুয়ালিয়েনে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬ দশিমক ৩।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া প্রশাসনের বরাত দিয়ে বাসস জানায়, স্থানীয় সময় সোমবার বিকেল ৫টা ৮ মিনিটে প্রথম যে ভূমিকম্প আঘাত হানে রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশিমক ৫। রাজধানী তাইপেতেও এ কম্পন অনুভূত হয়। এরপর দফায় দফায় কম্পন অনুভূত হতে থাকে। বিশেষ করে মঙ্গলবার সকালে আঘাত হানা দুটি ভূমিকম্প ছিল তীব্র।
রিখটার স্কেলে প্রথমটির তীব্রতা ছিল ৬.০ এবং দ্বিতীয়টির ৬.৩।
এর আগে গত ৩ এপ্রিল শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তাইওয়ানের পূর্ব উপকূল। এতে অন্তত ১৭ জন মারা গেছে। অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
তীব্র এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৪। ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল হুয়ালিয়েন শহরের ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে।
তাইওয়ানে গত ২৫ বছরের মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। এর আগে ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প তাইওয়ানে আঘাত আনে। তাতে প্রায় ২ হাজার ৪০০ মানুষ মারা যায়।
এদিকে নতুন এ ভূমিকম্পের পর ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে ঘটনাস্থলে অগ্নিনির্বাপক দলকে পাঠানো হয়েছে।
কেউ হতাহত হয়নি বলে তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
দুটি টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত বলে তাইওয়ানে ঘন ঘন ভূমিকম্প আঘাত হানে।
আরও পড়ুন:নথিপত্রবিহীন অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডা পাঠাতে আইন পাস করেছে যুক্তরাজ্য।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ হাউজ অফ লর্ডসের বিরোধিতা এবং নানা বিতর্কের পর পার্লামেন্টে মঙ্গলবার সকালে এ সংক্রান্ত বিলটি পাস করে আইনে পরিণত করা হয় বলে জানায় বিবিসি।
পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসে বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ৩১৭টি এবং বিপক্ষে ভোট পড়ে ২৩৭ টি। মোটামুটি বড় ব্যবধানেই বিলটি পাস হয়।
এ আইনে রুয়ান্ডাকে একটি নিরাপদ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সেখানে কিছু আশ্রয়প্রার্থী পাঠানো সরকারের পরিকল্পনার একটি মূল অংশ।
হাউস অব লর্ডস থেকে এই বিলের বিষয়ে দুটি আপত্তি জানানো হয়। সেই বিষয়ে হাউস অব কমনসে বিতর্ক শুরু হয় স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে। পরে দীর্ঘ বিতর্ক শেষে মঙ্গলবার প্রথম প্রহরে বিলটি পাস হয়।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক সোমবার জানান, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডা পাঠানোর ফ্লাইট ১০ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যেই শুরু করতে চান। প্রথম ফ্লাইট জুলাইয়ে রুয়ান্ডায় রওনা হবে।
এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার ঋষি বলেন, ‘আমরা বিমানঘাঁটি প্রস্তুত রেখেছি। বাণিজ্যিক বিমান ভাড়া করেছি এবং অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদেরকে পাহারা দিয়ে রুয়ান্ডায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ৫০০ স্টাফকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আর কোনো যদি এবং কিন্তু নেই। ফ্লাইটগুলো রুয়ান্ডায় যাচ্ছে। আমরা প্রস্তুত, ফ্লাইটগুলো পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।’
এর আগে নথিপত্রবিহীন অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডায় স্থানান্তরের জন্য দেশটির সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে যুক্তরাজ্য। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিনসেন্ট বাইরুতার সঙ্গে এ বিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি।
চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, নিজ দেশের অভিবাসী কেন্দ্রগুলো থেকে সব অভিবাসনপ্রত্যাশীকে রুয়ান্ডা পাঠাবে ব্রিটেন। সেই সঙ্গে ব্রিটেন থেকে যাওয়া অভিবাসীদের অন্য কোনো দেশে পাঠানো যাবে না বলে রুয়ান্ডারকে শর্ত দেয়া হয়েছে।
ওই সময় চুক্তিতে মতানৈক্য থাকায় যুক্তরাজ্যের অভিবাসনমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন রবার্ট জেনরিক।
আরও পড়ুন:কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর এবার ভারী বৃষ্টিপাতের কবলে পড়েছে আরেক মরুর দেশ সৌদি আরব। রাজধানী রিয়াদের কিছু অঞ্চলসহ দেশটির অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে রাস্তাঘাটও।
সৌদি আরবের আবহাওয়া বিভাগ সতর্কতা জারি করে বলেছে, আগামী কয়েকদিন বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে। সতর্কতার অংশ হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
দেশটির আবহাওয়া দপ্তর বলছে, শনিবার থেকে রাজধানী রিয়াদসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে তলিয়ে গেছে অনেক এলাকা। বৃষ্টিতে ভেসে গেছে বেশ কয়েকটি গাড়ি। ভারী বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে রাজধানী রিয়াদ ছাড়াও দিরিয়াহ, হুরায়মালা, ধুর্মা থেকে কুয়াইয়াহ পর্যন্ত।
আবহাওয়ার চলমান এ পরিস্থিতি মঙ্গলবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। এই সময়কালে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে সতর্কতার অংশ হিসেবে সৌদি আরবের বিভিন্ন জায়গায় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। বৃষ্টির সময় উপত্যকা ও জলাবদ্ধ এলাকা থেকে নাগরিকদের দূরে থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরেই প্রতিকূল আবহাওয়ার মুখোমুখি হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। সবশেষ গেল সপ্তাহে অতি বৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয় সংযুক্ত আরব আমিরাত। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি দেখা যায় দুবাই ও শারজাহতে।
আরও পড়ুন:ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফা শেষ হতে না হতেই প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতে দেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রথম দফায় ভোটের হার আশানুরূপ না হওয়ায় তিনি সরাসরি ধর্মীয় মেরুকরণের পথে হাঁটছেন বলে মত বিরোধীদের।
বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক জোট ‘ইন্ডিয়া’ভুক্ত দলগুলো বলছে, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোট টানতে ইচ্ছাকৃতভাবে সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দিচ্ছেন মোদি।
বিজেপির পক্ষ থেকে অবশ্য এখন পর্যন্ত এ অভিযোগের কোনো প্রতিবাদ জানানো হয়নি।
রোববার রাজস্থানের একটি জনসভায় গিয়ে মোদি বলেন, ‘সরকারে থাকাকালীন কংগ্রেস বলেছিল, দেশের সম্পদের ওপর মুসলিমদের অধিকার সবার আগে। অর্থাৎ দেশের সম্পদ বণ্টন করা হবে তাদের মধ্যে, যাদের পরিবারে বেশি সন্তান রয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের হাতে তুলে দেয়া হবে দেশের সম্পদ।’
তিনি বলেন, ‘কংগ্রেসের ইশতেহারেই বলা হয়েছে, মা-বোনদের সোনার গহনার হিসাব করে সেই সম্পদ বিতরণ করা হবে। মনমোহন সিংয়ের সরকার তো বলেই দিয়েছে, দেশের সম্পদে অধিকার মুসলিমদেরই। আপনাদের মঙ্গলসূত্রটাও বাদ দেবে না।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনার ঝড় বইছে ভারতজুড়ে।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী লিখেছেন, ‘প্রথম দফার ভোট শেষ হতেই হতাশ হয়ে পড়েছেন মোদি। তার মিথ্যাচারের মাত্রা এতটাই নিচে নেমেছে যে এখন মানুষের নজর ঘোরাতে চাইছেন।’
রাহুল লিখেছেন, ‘কংগ্রেসের এবারের ইশতেহার বৈপ্লবিক। এ বিপ্লবের প্রতি বিপুল জনসমর্থন উঠতে শুরু করেছে। এবার মানুষ তার পরিবার, কর্মসংস্থান, ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভোট দেবে। অন্য ভাবনায় বিচ্যুত হবে না ভারতের জনগণ।’
আরেকটি পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘স্বৈরশাসকের আসল চেহারা আবারও উন্মোচিত হয়েছে। এটি জনগণের নেতৃত্ব নির্বাচনের অধিকার কেড়ে নেয়া বাবা সাহেব আম্বেদকারের সংবিধানকে ধ্বংস করার আরেকটি পদক্ষেপ। আমি আবারও বলছি- এটা শুধু সরকার গঠনের নির্বাচন নয়, এটা দেশ বাঁচানোর নির্বাচন, সংবিধান রক্ষার নির্বাচন।’
মোদিকে তোপ দেগেছেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসিও।
তার কথায়, ‘প্রধানমন্ত্রী সরাসরি মুসলিমদের অনুপ্রবেশকারী বলেছেন। আসলে ২০০২ সাল থেকে মুসলিমদের নির্যাতন করেই ভোট পেয়ে আসছেন মোদি। আমরা যদি দেশের সম্পদের কথা বলি, তাহলে মোদি সরকারের আমলে দেশের সম্পদের ওপর প্রথম অধিকার তার ধনকুবের বন্ধুদের।
‘ভারতের এক শতাংশ মানুষ আজ দেশের সম্পদের ৪০ শতাংশ খেয়ে ফেলছে। সাধারণ হিন্দুদের মুসলমানদের ভয় দেখানো হচ্ছে, অথচ সত্য এই যে, আপনার টাকায় অন্য কেউ ধনী হচ্ছে।’
এদিকে বিরোধীদের সমালোচনার জবাব দিতে ২০০৬ সালে মনমোহন সিংয়ের বক্তব্যের একটি ভিডিওর ২২ সেকেন্ডের একটি ক্লিপ ছড়িয়ে দেয় বিজেপি। এর জবাবে পরে ওই ভাষণের ১ মিনিট ১২ সেকেন্ডের একটি ক্লিপ প্রচার করে কংগ্রেস।
কংগ্রেসের প্রকাশিত ওই ভিডিওতে দেখা যায়, মনমোহন বলেছিলেন ক্ষমতায়নের কথা, অথচ মোদি বলেছেন মানুষের সম্পদ কেড়ে নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বাঁটোয়ারা করে দেয়ার কথা।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান পদত্যাগ করেছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলা ঠেকানোর ব্যর্থতার দায়ভার মেনে নিয়ে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে সোমবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে এএফপি।
সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হিসেবে ৭ অক্টোবরের ঘটনার দায়ভার মাথায় নিয়ে মেজর জেনারেল আহারন হালিভা তাকে অব্যাহতি দেয়ার অনুরোধ করেছেন।’
তিনি চিফ অফ জেনারেল স্টাফের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সুশৃঙ্খল ও পেশাদার প্রক্রিয়ায় মেজর জেনারেল আহারন হালিভার উত্তরসূরী নিয়োগ দেয়া হলে তিনি পদত্যাগ করবেন এবং আইডিএফ (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) থেকে অবসর নেবেন।’
গত বছর হালিভা জানান, তিনি অক্টোবর ৭ এই হামাসের নজিরবিহীন হামলা সম্পর্কে আগে থেকে তথ্য না পাওয়া ও গোয়েন্দা বিভাগের অন্যান্য ব্যর্থতার দায়ভার স্বীকার করে নিয়েছেন।
টাইমস অফ ইসরায়েল জানিয়েছে, বর্তমানে সেনাবাহিনী হালিভার বিরুদ্ধে হামাসের হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জুনের শুরুতে তদন্তের ফল আইডিএফ প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হেরজি হালেভির কাছে জমা দেয়া হবে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় স্কুলে শিক্ষক এবং কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতির ঘটনায় একটি বড় নিয়োগ বাতিল হচ্ছে।
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের দেয়া এ রায়ের ফলে সবমিলিয়ে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি হারাচ্ছেন বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেছে। ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে রায় দেয় এ বেঞ্চ। শুধু একজনকে বিশেষ কারণে চাকরিচ্যুত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদালত।
প্রতিবেদন বলছে, গত তিন বছরে সবচেয়ে আলোড়ন তোলা বিষয় নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলা। স্কুলে শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে বহু অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। টেট (প্রাথমিক স্কুল) এবং এসএসসির (মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক) দুই ক্ষেত্রেই রয়েছে অভিযোগ। টেট মামলা আপাতত সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। সোমবার এসএসসির চাকরি বাতিলের মামলার রায় ঘোষণা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।
রায় অনুযায়ী, এসএসসি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও যারা চাকরি পেয়েছেন, তাদের সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে হবে। সুদের হার হবে বছরে ১২ শতাংশ। চার সপ্তাহের মধ্যে বেতন ফেরত দিতে বলেছে আদালত।
লোকসভা ভোটের মাঝে এসএসসি মামলার এই রায় রাজ্য সরকারের কাছে বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে।
আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়ার অনেক ওএমআর শিট বা উত্তরপত্র স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে ইতোমধ্যে আপলোড করা হয়েছে। যেগুলো এখনও আপলোড করা হয়নি, সেগুলো দ্রুত আপলোড করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
উত্তরপত্র জনগণ যাতে দেখতে পান, সেই ব্যবস্থাও করতে হবে কমিশনকে। একই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, এই মামলার তদন্ত চালিয়ে যাবে সিবিআই। অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির জন্য চাইলে সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারবে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
সবার চাকরি বাতিল করা হলেও একজনের চাকরি থাকছে। সোমা দাস নামের একজন ক্যানসারে আক্রান্ত। মানবিক কারণে তার চাকরি বাতিল করেনি হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ।
গত কয়েক বছরে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে এসএসসি নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলা। এই মামলায় প্রথমে হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ডিভিশন বেঞ্চেও সেই নির্দেশ বহাল থাকে।
এর পর মামলা গিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেখান থেকে মামলাগুলি হাইকোর্টে আবার ফেরত পাঠানো হয়। মে মাসের মধ্যে হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চকে শুনানি শেষ করে রায় ঘোষণা করতে বলেছিল শীর্ষ আদালত।
সাড়ে তিন মাসের মধ্যে শুনানি শেষ হয়ে যায়। সোমবার রায় ঘোষণা করল আদালত। ২৮১ পৃষ্ঠার রায় আদালতে পড়ে শোনান বিচারপতি বসাক।
মন্তব্য