× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

সোশ্যাল মিডিয়া
বাঙ্গি নিয়ে তুমুল যুদ্ধে উত্তপ্ত অনলাইন
google_news print-icon

বাঙ্গি নিয়ে তুমুল যুদ্ধে উত্তপ্ত অনলাইন

বাঙ্গি-নিয়ে-তুমুল-যুদ্ধে-উত্তপ্ত-অনলাইন
বাঙ্গির পক্ষে-বিপক্ষে রীতিমতো দুটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে ফেসবুকে। ১৫ এপ্রিল থেকে এই দুটি গ্রুপে সক্রিয় কয়েক হাজার সদস্য। বেলে দোআঁশ ও পলি মাটিতে জন্মানো গ্রীষ্মকালীন ফলটি নিয়ে তাদের মুখোমুখি অবস্থান। একটি পক্ষ বাঙ্গির গুণ বর্ণনায় মেতেছে, আর আরেক পক্ষ ফল হিসেবেই মানতে চাচ্ছে না।

দেশজুড়ে লকডাউনে রাজপথ যখন শান্ত, যুদ্ধ তখন জমে উঠেছে অনলাইনে। একটি দেশি ফল নিয়ে গত এক মাসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন নেটিজেনরা।

বেলে দোআঁশ ও পলি মাটিতে জন্মানো গ্রীষ্মকালীন ফল বাঙ্গি নিয়েই এই মুখোমুখি অবস্থান। বিতর্কের আশু সুরাহার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

একটি পক্ষ বাঙ্গির নানান গুণ বর্ণনায় মেতেছে, আর আরেক পক্ষ ফল হিসেবেই মানতে চাচ্ছেন না। বাঙ্গির পক্ষে-বিপক্ষে রীতিমতো দুটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে ফেসবুকে। ১৫ এপ্রিল থেকে এই দুটি গ্রুপে সক্রিয় কয়েক হাজার সদস্য।

বাঙ্গির গুণে মুগ্ধ যারা

বাঙ্গিকে অতি পছন্দ করেন, এমন কয়েক হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী যোগ দিয়েছেন ‘বাংলাদেশ বাঙ্গি জনপ্রিয়করণ সমিতি- BABA JOSH’ নামের গ্রুপে। এই ফেসবুক গ্রুপের সদস্য এখন ৪ হাজার তিন শ। গ্রুপের সদস্যরা বাঙ্গিকে জনপ্রিয় ফল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান।

বাঙ্গি নিয়ে তুমুল যুদ্ধে উত্তপ্ত অনলাইন
বাংলাদেশ বাঙ্গি জনপ্রিয়করণ সমিতি- BABA JOSH’ নামের ফেসবুক গ্রুপে সদস্য ৪ হাজারের বেশি

গ্রুপটি সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের বেশিরভাগই বৈচিত্র্য পছন্দ করে না। হাতে গোনা কয়েকটা বিদেশী ফল চিনে। তা নিয়েই সন্তুষ্ট। মূলত বাঙ্গি একটি রূপক, আন্দোলনটা আসলে আমাদের হারিয়ে যাওয়া দেশীয় ফলগুলোকে লাইমলাইটে ফিরিয়ে আনা নিয়ে। তাছাড়া দেশীয় ফল ও কৃষিপণ্যের উপর চলমান কুৎসা রটনা নিবারণ, আত্মপরিচয় সংকট নিরসন ও হীনমন্যতা দূরীকরণও আমাদের লক্ষ্য।’

বাংলাদেশ বাঙ্গি জনপ্রিয়করণ সমিতির অ্যাডমিন অপু নজরুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাঙ্গি যদি জনপ্রিয়ই না হবে তাহলে বাজারের এত বাঙ্গি কোথায় যায়। আসলে গ্রুপটা খোলা হয়েছে রূপক অর্থে। এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের বেশিরভাগই বৈচিত্র্য পছন্দ করে না। হাতে গোনা কয়েকটা বিদেশি ফল চেনে। তা নিয়েই সন্তুষ্ট। মূলত বাঙ্গি একটি রূপক, আন্দোলনটা আসলে আমাদের হারিয়ে যাওয়া দেশীয় ফলগুলোকে লাইমলাইটে ফিরিয়ে আনা নিয়ে।’

বাঙ্গি নিয়ে তুমুল যুদ্ধে উত্তপ্ত অনলাইন

অপু নজরুল আক্ষেপ করে বলেন, ‘একটা প্রজন্ম বাঙ্গি না খেয়েও বাঙ্গি নিয়ে ট্রল করে। আসলে সেই জায়গা থেকেও তারা জানতে পারবে বাঙ্গি নিয়ে। আমার এই গ্রুপ খোলার পর আরেকটি গ্রুপ খোলা হয়েছে। সেখানে ফলটি বিলুপ্তির কথা বলা হয়েছে। এতে কিন্তু আমি অনেক বেশি খুশি হয়েছি। ওখানেও অনেকে যোগ দিচ্ছে। তারাও বাঙ্গির পক্ষে কথা বলছে। নেতিবাচিক কোনো কিছু থেকে যদি ভালো কিছু হয় তবে সেটাই ভালো।’

এই গ্রুপের একজন সদস্য মন্তব্য করেছেন, ‘বাবাজোসের রাজনৈতিক সংগঠনের নাম হতে পারে হেফাজতে বাঙ্গি! আর এর মূলনীতি হবে, “বাঙ্গি লাভার জনগণ, বাঙ্গি হেফাজতে সারাজীবন!” আরও কিছু হয় কিনা জানান’

বাঙ্গি নিয়ে তুমুল যুদ্ধে উত্তপ্ত অনলাইন

আরেকজন কয়েক কৃষকের ছবি দিয়ে মন্তব্য করেছেন, ‘যারা বাঙ্গি নিয়ে নেতিবাচক গ্রুপ বানিয়েছে তারা কৃষকের শত্রু, দেশের শত্রু। বাঙ্গি খান কৃষক বাঁচান’

একজন লিখেছেন, ‘বাঙ্গীর ভূবনে আমি প্রেম উদাসী, যতই খাই ১মবার বাঙ্গী খাওয়ার সাধ ২য় বার হয়নি আর হবে না।

ঠিক ১ম প্রেমের মত—’

বাঙ্গি নিয়ে তুমুল যুদ্ধে উত্তপ্ত অনলাইন

বাঙ্গি বিলুপ্তির দাবিতেও শক্ত অবস্থান

বাংলাদেশ বাঙ্গি জনপ্রিয়করণ সমিতির ঠিক বিপরীত অবস্থান নিয়ে বাঙ্গি বিলুপ্তির দাবি তুলেছেন আরেকটি ফেসবুক গ্রুপের সদস্যরা। ‘বাংলাদেশ বাঙ্গি বিলুপ্তকরণ সমিতি– বাবাবিস’ নামের এই গ্রুপের সদস্য ৪ হাজার সাত শ। গ্রুপের অ্যাবাউট অংশে বলা হয়েছে, ‘বাঙ্গি নামের অখাদ্য, ফলরূপী ইম্পোস্টর দুর্গন্ধবোমা থেকে মানবসমাজকে উদ্ধার করতে আমাদের এই উদ্যোগ।’

বাঙ্গি নিয়ে তুমুল যুদ্ধে উত্তপ্ত অনলাইন
'বাংলাদেশ বাঙ্গি বিলুপ্তকরণ সমিতি– বাবাবিস’ নামের ফেসবুক গ্রুপে সদস্য প্রায় ৫ হাজার

বাবাবিসের অ্যাডমিন আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, বাঙ্গি তার এক বন্ধুর তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকেই এই গ্রুপের জন্ম।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রথমে বাঙ্গি জনপ্রিয়করণ গ্রুপটি করা হয়। সেটা দেখে আমাদের গ্রুপের আরেক এডিমিন ইসতিয়াক আকিবের ছোটবেলায় বাঙ্গি খাওয়ার কথা মনে পড়ে। বাঙ্গির যে গন্ধ তা নিয়ে বিরক্তি থেকেই আসলে এই গ্রুপের যাত্রা। তবে নেহাত মজা করার উদ্দেশ্যে এমন করা হয়েছে। এই যে একটা নেগেটিভ প্রচার চলছে তাতেও তো মানুষ বাঙ্গি কিনে দেখতে চাইছে এটা কেমন!’

বাঙ্গি নিয়ে তুমুল যুদ্ধে উত্তপ্ত অনলাইন

বাঙ্গি বিরোধী গ্রুপ করেও বাঙ্গির ‘অত্যাচার’ থেকে মুক্তি পাননি আবদুল্লাহ আল মাহমুদ। সেই করুণ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রুপ নিয়ে একটা পত্রিকায় প্রতিবেদন করা হয়েছিল, আর সেটা আমি বাবাকে জানানোর পর বাবা ওইদিন সন্ধ্যায় বাঙ্গি কিনে নিয়ে আসে।’

এই গ্রুপের এক সদস্য লিখেছেন, ‘বাসায় বাঙ্গি এনেছে।সবাই দোআ করবেন আমার জন্য। সেখানে একজন কমেন্ট করেছেন, না বাবা এত সহজে বাঙগি থেকে তোমাকে রেহাই দেয়া হবে না, খেতেই হবে।’

আরেক জন লিখেছেন, ‘আমি ছোট থেকে ভাবতাম, শুধু আমি ই বোধহয় বাঙ্গী পছন্দ করি না। এই গ্রুপে আইসা মনে হইতেছে, my whole life was a lie! বাংলাদেশ থেকে বাঙ্গি বিলুপ্তকরণের এই সমিতিতে যুক্ত হয়ে নিজেকে ধন্য বোধ করছি!প্রয়োজনে রাজপথে আন্দোলনে নামতে প্রস্তুত। আপনারা এগিয়ে চলুন।’

বাঙ্গি নিয়ে তুমুল যুদ্ধে উত্তপ্ত অনলাইন

একজন লিখেছেন, ‘বাঙ্গি খাওয়ার জন্য বাসা থেকে অনেক চাপাচাপি করতেছে। প্লিজ হেল্প মি।’

সেখানে একজন কমেন্ট করেছেন, ‘কল ৯১১’।

আরেকজন লিখেছেন, ‘ফালুদায় বাংগি দেওয়ার অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড রেস্টুরেন্ট মালিকের।’

বাঙ্গি সম্পর্কে জরুরি তথ্য

সরকারের কৃষি বাতায়নে বাঙ্গির গুণাগুণ ও চাষের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, বাঙ্গি এক রকমের শশা জাতীয় ফল যার অন্য নাম খরমুজ, কাঁকুড়, ফুটি। যার বৈজ্ঞানিক নাম Cucumis melo এবং ইংরেজি নাম Muskmelon. দেশের প্রায় সব এলাকাতেই গ্রীষ্মকালে বাঙ্গি জন্মে। তরমুজের পর এটিই অধিক প্রচলিত শসা গোত্রীয় ফল। বাঙ্গিগাছ দেখতে অনেকটা শসা গাছের মতো, লতানো।

কৃষি বাতায়নে বলা হয়েছে, ছোট এবং লম্বাটে জাতকে চিনাল বলা হয়। ফুটি বেশ বড় আকারের হয়, কাচা ফল সবুজ, পাকলে হলুদ রঙের হয় এবং ফেটে যায়। ফলের বাইরের দিকটা মিষ্টি কুমড়ার মতো হালকা ডোরা কাটা খাঁজযুক্ত। খেতে তেমন মিষ্টি নয়, অনেকটা বেলে বেলে ধরনের। এর ভেতরটা ফাঁপা থাকে। কাঁচা বাঙ্গি সবজি হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায়। বাঙ্গিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যআঁশ, যা হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এতে চিনির পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিস রোগীরাও খেতে পারেন।

বাঙ্গির বিভিন্ন জাত সম্পর্কে কৃষি বাতায়নে বলা হয়েছে, প্রধানত দুই জাতের বাঙ্গি দেখা যায়, বেলে ও এঁটেল বাঙ্গি। বেলে বাঙ্গির শাঁস নরম। খোসা খুব পাতলা, শাঁস খেতে বালি বালি লাগে, তেমন মিষ্টি নয়।

অন্যদিকে, এঁটেল বাঙ্গির শাঁস কচকচে, একটু শক্ত এবং তুলনামূলকভাবে বেশি মিষ্টি। বাঙ্গি লম্বাটে সাধারণত লম্বাটে হলেও গোলাকার মিষ্টি কুমড়ার মতো বাঙ্গিও রয়েছে। এ প্রজাতির বাঙ্গির অপর নাম চীনা বাঙ্গি।

আরও পড়ুন

সোশ্যাল মিডিয়া
K Crafts spring love day event

কে-ক্রাফটের বসন্ত-ভালোবাসা দিবসের আয়োজন

কে-ক্রাফটের বসন্ত-ভালোবাসা দিবসের আয়োজন
পোশাকগুলোর ডিজাইন, কম্পোজিশন ও রঙে থাকছে বসন্তের ছোঁয়া ও ভালোলাগার অনুভূতি। পোশাকের সঙ্গে থাকছে বিভিন্ন রকমের ফ্যাশন এক্সেসরিস। এ ছাড়া যুগল পোশাকের রয়েছে বিশেষ সম্ভার।

দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ফ্যাশন হাউস কে-ক্রাফট নিয়ে এলো বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসের কালেকশনে। এই কালেকশনে থাকছে নতুন নতুন ডিজাইনের শাড়ি, টপস, সালোয়ার-কামিজ, পুরুষদের ফতুয়া, শর্ট-পাঞ্জাবি ও শিশুদের পোশাক। রং হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছে বাসন্তি, হলুদ, কমলা, গোল্ডেন ইয়েলো, ম্যাজেন্টা ও নীল।

পোশাকগুলোর ডিজাইন, কম্পোজিশন ও রঙে থাকছে বসন্তের ছোঁয়া ও ভালোলাগার অনুভূতি। পোশাকের সঙ্গে থাকছে বিভিন্ন রকমের ফ্যাশন এক্সেসরিস। এ ছাড়া যুগল পোশাকের রয়েছে বিশেষ সম্ভার।

কে-ক্রাফটে শাড়ির দাম ৮৫০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা। এছাড়া টপস ৬৫০ টাকা থেকে ১২০০, সালোয়ার কামিজ ২১০০ টাকা থেকে ৩০০০, ফতুয়া ৫০০ থেকে ৮৫০, শর্ট-পাঞ্জাবি ৮৫০ থেকে ১৩০০ টাকা এবং শার্ট ৫৫০ থেকে ৮৫০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

মন্তব্য

সোশ্যাল মিডিয়া
Words you need to know to survive on social media

সোশ্যাল মিডিয়ায় টিকতে জানতে হবে যেসব শব্দার্থ

সোশ্যাল মিডিয়ায় টিকতে জানতে হবে যেসব শব্দার্থ সোশ্যাল মিডিয়ার বার্তা সংক্ষেপে চালু হয়েছে অনেক শব্দ ও বাক্যের সংক্ষিপ্ত রূপ। গ্রাফিকস: নিউজবাংলা
ফেসবুক-টুইটারে পোস্ট করা বাক্যের মাঝে অথবা চ্যাটিংয়ে IGP, DM, TTYL বা XOXO-এর মতো শব্দগুলো দেখলে ঘাবড়ে যাবেন না। এগুলোর প্রতিটির আছে বিশেষ অর্থ। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে টিকে থাকতে হলে এসব সংক্ষিপ্ত বার্তায় আপনাকে অভ্যস্ত হতেই হবে।

ফেসবুক-টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিনকে দিন বদলে যাচ্ছে যোগাযোগের ভাষা। দ্রুত বার্তা দিতে অনেকেই ব্যবহার করছেন প্রচলিত শব্দ বা বাক্যের সংক্ষিপ্ত রূপ।

এসব শব্দ অনেকের কাছে দুর্বোধ্য মনে হতে পারে, তবে দুরন্ত জীবনে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে টিকে থাকতে হলে এসব সংক্ষিপ্ত বার্তায় আপনাকে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হতেই হবে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা বেশ কিছু সংক্ষিপ্ত শব্দ ও বাক্য এবং এগুলোর পূর্ণাঙ্গ অর্থ তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।

FB: ফেসবুক (ব্লগিং, ছবি, ভিডিও, চ্যাটিংনির্ভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম)

IG: ইনস্টাগ্রাম (ছবি ও ভিডিওনির্ভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম)

IGP: ইনস্টাগ্রাম পোস্ট

LI: লিংকডইন (পেশাজীবীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম)

SC: স্ন্যাপচ্যাট (ছবিনির্ভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম)

TW: টুইটার (মাইক্রো ব্লগিং মাধ্যম)

YT: ইউটিউব (ভিডিওনির্ভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম)

DM: ডিরেক্ট মেসেজ (কারও সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনে ডিএম দেয়া হয়)

HT: হ্যাট টিপ বা হার্ড থ্রু (টুইটারে একে অপরকে কৃতজ্ঞতা জানাতে ব্যবহার করা হয়)

Latergram: এখন ছবি তুলে পরে ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করার নাম লেটারগ্রাম

MT: মডিফায়েড টুইট (টুইট করার পর যদি সেটি আবার কাঁটাছেড়া করা হয়)

NB: নট ব্যাড (সামাজিক যোগাযোগ মন্দ নয় বোঝাতে এনবি ব্যবহার করা হয়)

PM: প্রাইভেট মেসেজ (কারও সঙ্গে গোপন যোগাযোগ স্থাপনে পিএম ব্যবহৃত হয়)

RT বা PRT: পার্শিয়াল রিটুইট (আরটি বা রিটুইট আর পিআরটি প্রায় একই রকম। টুইটে কারও বক্তব্য উদ্ধৃত করতে এটি ব্যবহার করা হয়)

SS: স্ক্রিনশট (ডিভাইসের ডিসপ্লে ছবি)

ETA: এস্টিমেটেড টাইম অফ অ্যারাইভাল (গন্তব্যে পৌঁছাতে সম্ভাব্য সময়)

EOD: এন্ড অফ দ্য ডে (নির্ধারিত সময়সীমা শেষ)

IAM: ইন অ্যা মিটিং (কোনো ব্যক্তি যখন জরুরি কোনো সভায় ব্যস্ত থাকেন)

ISO: ইন সার্চ অফ (কোনো কিছু খোঁজা)

OOO: আউট অফ অফিস (অফিসে অনুপস্থিত, অফিসের বাইরে অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত বোঝাতে ব্যবহার করা হয়)

SRP: সোশ্যাল রিলেশনশিপ প্ল্যাটফর্ম

MSP: মাল্টি-সাইডেড প্ল্যাটফর্ম

VPN: ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক

BRB: বি রাইট ব্যাক (এক্ষুনি ফিরছি)

BTS: বিহাইন্ড দ্য সিন (দৃশ্যপটের পেছনে)

CMW: চেঞ্জ মাই ভিউ (মত পরিবর্তন)

WDYM: হোয়াট ডু ইউ মিন

HMM: হুমম

NGL: নট গনা লাই (মিথ্যা বলব না)

Wah: ওয়াও

DP: ডিসপ্লে পিকচার

CNG: চেঞ্জ (বদল)

YNB: ইউ নটি বয় (দুষ্টু ছেলে)

IMO: ইন মাই ওপিনিয়ন (আমার মতে)

CYA: সি ইউ (দেখা হবে)

ELI5: এক্সপ্লেইন ইট টু মি লাইক আ অ্যাম ফাইভ (পরিষ্কার করে বোঝানো)

FBF: ফ্ল্যাশব্ল্যাক ফ্রাইডে (ইন্সটাগ্রামে পুরোনো ছবি পোস্ট করার পর ক্যাপশন হিসেবে দেয়া হয়)

FTW: ফর দ্য উইন (জয়ের জন্য)

FUD: ফিয়ার, আনসার্টেইনিটি অ্যান্ড ডাউট (ভয়, অনিশ্চয়তা ও সংশয়)

DIY: ডু ইট ইওরসেলফ (নিজে করো)

OT: অফ টপিক (প্রসঙ্গবহির্ভূত)

BC: বিকজ (কারণ)

ATM: অ্যাট দ্য মোমেন্ট (এ মুহূর্তে)

BTW: বাই দ্য ওয়ে (যা হোক)

TTYL: টক টু ইউ লেটার (তোমার সঙ্গে পরে কথা হবে)

XOXO: হাগস অ্যান্ড কিসেস

IMHO: ইন মাই হাম্বল অপিনিয়ন (বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই)

LOL: লাফ আউট লাউড (উচ্চৈঃস্বরে হাসা)

ROFL: রোলিং অন ফ্লোর লাফিং (হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়া)

TBH: টু বি অনেস্ট (সত্যি বলতে কী)

TGIF: থ্যাঙ্ক গড ইটস শুক্রবার (পশ্চিমা দেশগুলোতে শুক্রবার বিকেলে সাপ্তাহিক ছুটি শুরু হওয়ার আগে স্বস্তি প্রকাশ করে এ কথা বলা হয়)

TFTF: থ্যাঙ্কস ফর ফলোয়িং (সোশ্যাল মিডিয়ার ফলোয়ার বা অনুসরণকারীর সংখ্যা বাড়লে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলা হয়)

WFH: ওয়ার্কিং ফ্রম হোম

WBW: ওয়েব্যাক ওয়েডনেস ডে (স্মৃতিকাতরতা বোঝাতে ব্যবহৃত)

IDC: আই ডোন্ট কেয়ার (পরোয়া করি না)

IDK: আই ডোন্ট নো (আমি জানি না)

IRL: ইন রিয়েল লাইফ (বাস্তব জীবনে)

JK: জাস্ট কিডিং (মজা করছি)

LMK: লেট মি নো (আমাকে জানাও)

NBD: নো বিগ ডিল (বড় কিছু নয়)

NM: নট মাচ (বেশি কিছু না)

NSFW: নট সেফ ফর ওয়ার্ক

JIC: জাস্ট ইন কেস (যদি কোনো কারণে)

WDYMBT: হোয়াট ডু ইউ মিন বাই দ্যাট? (এটি দিয়ে কী বোঝাচ্ছ?)

ABITHAD: অ্যানাদার ব্লিথারিং ইডিয়ট থিঙ্কস হি ইজ অ্যা ডক্টর (সবজান্তা দাবিদার ব্যক্তিদের বলা হয়)

DIET: ডু আই ইট টুডে? (আজ কি খেয়েছি?)

FF: ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লাইয়ার (যিনি বিদেশে প্রচুর ঘোরাঘুরি করেন)

GOAT: গ্রেটেস্ট অফ অল টাইম (সর্বকালের সেরা)

GOOGLE: গ্র্যান্ড অনলাইন ওরাকল জেনারেশন লেজিটিমেইট এক্সপ্লেনেশনস

MAID: মাদার অ্যাকচুয়েলি ইন ডিজগাইজ (মায়ের মতো)

TEAM: টুগেদার এভরিওয়ান অ্যাচিভস মোর (একতাই বল)

YOLO: ইউ অনলি লিভ ওয়ানস (জীবন একটাই)

SALT: সেইম অ্যাজ লাস্ট টাইম (আগেরবারের মতোই)

AFK: অ্যাওয়ে ফ্রম দ্য কিবোর্ড (কিবোর্ড থেকে দূরে)

BAE: বিফোর এনিওয়ান এলস (সর্বাগ্রে তুমি)

CU: সি ইউ (দেখা হবে)

FOMO: ফিয়ার অফ মিসিং আউট (বাদ পড়ার ভয়)

JOMO: জয় অফ মিসিং আউট (বাদ পড়ার আনন্দ)

KK: কুল, ওকে

NVM: নেভার মাইন্ড (কিছু মনে করবেন না)

SMH: শেকিং মাই হেড (মাথা ঝাঁকাচ্ছি)

ADIH: অ্যানাদার ডে ইন হেল (আরও একটি ভয়ংকর দিন)

AFAIK: অ্যাজ ফার অ্যাজ আই নো (যতদূর জানি)

AFAIR: অ্যাজ ফার অ্যাজ আই রিমেম্বার (যত দূর মনে পড়ে)

AFAIC: অ্যাজ ফার অ্যাজ আই অ্যাম কনসার্নড (যত দূর আমার জানা আছে)

AFAICT: অ্যাজ ফার অ্যাজ আই ক্যান টেল (আমি যতটা বলতে পারি)

ASL: এজ, সেক্স, লোকেশন (বয়স, লিঙ্গ, অবস্থান)

AAMOF: অ্যাজ অ্যা ম্যাটার অফ ফ্যাক্ট (আদতে)

FTL: ফর দ্য লস (হারানোর কারণে)

GMTA: গ্রেট মাইন্ড থিঙ্ক অ্যালাইক (মহান ব্যক্তিদের একই চিন্তা)

IIRC: ইফ আই রিমেম্বার কারেক্টলি (যদি আমি সঠিক মনে করতে পারি)

IFYP: আই ফিল ইউর পেইন (তোমার কষ্টটা বুঝি)

IYKWIM: ইফ ইউ নো হোয়াট আই মিন (বুঝতে পারছ তো কী বলতে চাইছি)

MFW: মাই ফেস হোয়েন (আমার চেহারা তখন যেমন)

MRW: মাই রিঅ্যাকশন হোয়েন (আমার প্রতিক্রিয়া তখন যেমন)

SRSLY: সিরিয়াসলি (সত্যি বলছ!)

TIME: টিয়ারস ইন মাই আইজ (আমার চোখ ভিজে আসছে)

TNTL: ট্রায়িং নট টু লাফ (হাসি থামাতে চেষ্টা করছি)

TL: টু লং (অনেক দীর্ঘ)

DR: ডিডন্ট রিড (পড়তে পারিনি)

WYWH: উইশ ইউ ওয়্যার হিয়ার (যদি তুমি এখানে থাকতে)

YGTR: ইউ গট দ্যাট রাইট (ঠিক ধরেছ)

YMMV: ইওর মাইলেজ মে ভেরি (তোমার ভূমিকা কমবেশি হতে পারে)

YNK: ইউ নেভার নো (তুমি জানো না এটা হতেও পারে)

ZZZ: স্লিপিং, বোরড, টায়ার্ড

আরও পড়ুন:
মাস্কের সমালোচনাকারী সাংবাদিকদের টুইটার অ্যাকাউন্ট স্থগিত
সৌদির হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি: টুইটারের সাবেক কর্মীর জেল
মাস্ককে ছাড়িয়ে শীর্ষ ধনী আর্নল্ট
নীল, সোনালি ও ধূসর রঙে পাওয়া যাচ্ছে টুইটারের ভেরিফিকেশন ব্যাজ
টুইটারের তথ্য ফাঁস ঠেকাতে অঙ্গীকারনামায় সই চান মাস্ক

মন্তব্য

সোশ্যাল মিডিয়া
Inactive Men Without Womens Consent on Bumble App

বাম্বল অ্যাপে নারীর সম্মতি ছাড়া ‘নিষ্ক্রিয়’ পুরুষ

বাম্বল অ্যাপে নারীর সম্মতি ছাড়া ‘নিষ্ক্রিয়’ পুরুষ ছবি: সংগৃহীত
বাম্বল বাজারে আসে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। অ্যাপটিতে বাড়তি কয়েকটি ফিচার যোগ করেন এর নির্মাতা সাবেক টিন্ডারকর্মী হুইটনি উলফ। অ্যাপের ‘সোয়াইপ’ বাটনের কারণে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পায় বাম্বল। 

অনলাইন ডেটিং এর জগতে দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছে বাম্বল। ৮ বছরে টিন্ডার, ওকে কিউপিড ও ই-হারমনির মতো প্রতিষ্ঠিত অ্যাপগুলোকে টক্কর দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে পরিচালিত অ্যাপটি।

বাম্বল বাজারে আসে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। অ্যাপটিতে বাড়তি কয়েকটি ফিচার যোগ করেন এর নির্মাতা সাবেক টিন্ডারকর্মী হুইটনি উলফ। অ্যাপের ‘সোয়াইপ’ বাটনের কারণে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পায় বাম্বল।

বাম্বল হলো মর্যাদা, সমতা ও অন্তর্ভুক্তির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত বিনামূল্যের ডেটিং অ্যাপ। ২০২১ সালের হিসাবে বিশ্বজুড়ে বাম্বল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪ কোটি ৫০ লাখ।

অ্যাপটিতে নারী ব্যবহারকারীদের বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। একজন নারী ব্যবহারকারী কাকে তার সঙ্গে যুক্ত করবেন, সে সিদ্ধান্ত কেবল তিনিই নিয়ে থাকেন।

কোনো নারী ব্যবহারকারী যদি কাউকে পছন্দ না করেন তবে বাঁয়ে সোয়াইপ করে ওই ব্যক্তিকে তিনি প্রত্যাখ্যান করতে পারবেন। আর ডানে সোয়াইপ করে তাকে গ্রহণ করতে পারবেন।

এ সিদ্ধান্ত নিতে একজন নারী ২৪ ঘণ্টা সময় পান। এ সময়ের মধ্যে কোনো সিদ্ধান্ত না নিলে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে যায় রিকোয়েস্টটি।

বিষমকামী ম্যাচগুলোতে নারী ব্যবহারকারীরা প্রথমে পুরুষ ব্যবহারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আর যখন সমলিঙ্গের ম্যাচে যে কোনো ব্যক্তি প্রথমে একটি বার্তা (মেসেজ) পাঠাতে পারেন।

বাম্বলের নির্মাতা হুইটনি উলফ ২০১৫ সালে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘২০১৪ সাল ছিল নারীবাদের বছর। তবে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে এর ছাপ পাইনি। অথচ আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহার্য জিনিসগুলোর মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া অন্যতম।

‘আমাদের মূলমন্ত্র ‘নারীর হাতে নিয়ন্ত্রণ উঠুক’। এর মানে এই নয় যে পুরুষের ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হবে। আসলে আমরা ভূমিকাগুলো ওলট-পালট করেছি।

‘সবকিছু নিজেকেই শুরু করতে হবে, এমন একটা চাপ সবসময় অনুভব করেন পুরুষরা। এ করে সম্ভবত তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েন।

‘বাম্বলের লক্ষ্য হলো, সম্পর্ক বা সংযোগ শুরু করতে নারীদের উৎসাহিত করা। আমি বিশ্বাস করি সংযোগটি যদি বাস্তব জীবনকে সম্পর্কের দিকে নিয়ে যায়, তবে তা দারুণ হয়ে উঠবে।’

বাম্বল অ্যাপে নারীর সম্মতি ছাড়া ‘নিষ্ক্রিয়’ পুরুষ
বাম্বলের নির্মাতা হুইটনি উলফ

বাম্বলের দুই বছর আগে ২০১৪ সালে ডেটিং অ্যাপ টিন্ডার বাজারে আসে। তবে অ্যাপটিতে ব্যাপক যৌন হয়রানির অভিযোগ করে থাকেন নারী ব্যবহারকারীরা। বিষয়টি নিয়ে ভাবতেন হুইটনি উলফ। সে সময় টিন্ডারের মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ পদে ছিলেন উলফ। এর দুই বছর পর নারীদের ব্যাপক সুবিধা দিয়ে তার প্রতিষ্ঠান বাজারে আনে ডেটিং অ্যাপ বাম্বল।

মন্তব্য

সোশ্যাল মিডিয়া
K Craft new clothes for kids in new year

নতুন বছরে শিশুদের জন্য কে-ক্র্যাফটের আকর্ষণীয় পোশাক

নতুন বছরে শিশুদের জন্য কে-ক্র্যাফটের আকর্ষণীয় পোশাক
মেয়েদের পোশাকে নজর কাড়বে ভিন্ন স্টাইলের টপসের সঙ্গে প্যান্ট অথবা পালাজো, টপসের সঙ্গে স্কার্ট, এ লাইন পালাজোর সঙ্গে কটি, কাফতানের সঙ্গে প্যান্ট অথবা পালাজো, পাফি ফ্রক, সালোয়ার কামিজ, কুর্তি, লং ফ্রক, লেহেঙ্গা। ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবি, পলো শার্ট, ক্যাজুয়াল শার্ট, টি-শার্ট, কটি। এ ছাড়া থাকছে বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানদের ম্যাচিং পোশাক।

শীতে থাকে উৎসব আর ছুটির আমেজ। এ সময় শিশুদের স্কুল যেমন বন্ধ থাকে, আবহাওয়াও থাকে আরামদায়ক। তাই শীতকালকেই বেছে নিতে হয় ভ্রমণের জন্য। তা ছাড়া নানা রকম সামাজিক ও পারিবারিক অনুষ্ঠানও থাকে এ সময়ে। উপলক্ষ যাই হোক, নতুন পোশাক পরে বেড়ানোর মধ্যে আনন্দে মাতবে শিশুরাই।

এ সময়ে তাই নানা উপলক্ষ ও প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে কে-ক্র্যাফট এনেছে শিশুদের জন্য নতুন পোশাক। ইতোমধ্যে এসব আয়োজন কে-ক্র্যাফটের সব স্টোরে পৌঁছে গেছে।

মেয়েদের পোশাকে নজর কাড়বে ভিন্ন স্টাইলের টপসের সঙ্গে প্যান্ট অথবা পালাজো, টপসের সঙ্গে স্কার্ট, এ লাইন পালাজোর সঙ্গে কটি, কাফটানের সঙ্গে প্যান্ট অথবা পালাজো, পাফি ফ্রক, সালোয়ার কামিজ, কুর্তি, লং ফ্রক ও লেহেঙ্গা। ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবি, পলো শার্ট, ক্যাজুয়াল শার্ট, টি-শার্ট ও কটি। এ ছাড়া থাকছে বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানদের ম্যাচিং পোশাক।

রঙের ক্ষেত্রে নীলের মধ্যে রয়্যাল, টিল, স্কাই থেকে শুরু করে মেরুন, ম্যাজেন্টা, হট পিঙ্ক, অরেঞ্জ, ব্রিক রেড, সাদা, গোল্ডেন, ইয়েলো, অ্যাশ- কোনোটাই বাদ পড়েনি।

এ সময়ে যেহেতু শীত, তাই ফ্যাব্রিক নির্বাচনে ইনডোর ও আউটডোর উপযোগী উষ্ণতার পাশাপাশি স্বস্তিদায়ক হতে হবে। সেই ভাবনায় মম সিল্ক, লিনেন, রেইনবো সিল্ক, জর্জেট, টু-টোন, ডিজাইনড কটন, স্যাটিন ও অরগাঞ্জার মতো ফ্যাব্রিকের বৈচিত্র্যময় ব্যবহার।

প্যাটার্নে ভিন্নতা, কুচি ও লেইসের ব্যবহার ছাড়াও কাপড়ের নকশায় দেখা যাবে হ্যান্ড ও মেশিন এমব্রয়ডারি, স্ক্রিন প্রিন্ট, ট্যাসেল ও কারচুপি।

কে-ক্র্যাফটের ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, খুলনাসহ সব আউটলেট ছাড়াও অনলাইন শপ থেকে শিশুদের জন্য এসব পোশাক কিনতে পারেন বিশেষ সাশ্রয়ী মূল্যে। এ ছাড়া ফেসবুক পেজ থেকেও কেনাকাটা করার সুবিধা আছে।

আরও পড়ুন:
ঈদ ফ্যাশনে চলতিধারা
ঈদে বাহারি জুতা
ঈদের পাঞ্জাবি
সোনামনিরও চাই ঈদের নতুন জামা
বাহারি পোশাকে আনন্দের ঈদ

মন্তব্য

সোশ্যাল মিডিয়া
28 years of painting time

সময় রাঙানোর ২৮ বছর

সময় রাঙানোর ২৮ বছর
নব্বই দশকের শুরুতেই চার বন্ধু মিলে টুকটাক কাজ করতে করতেই পরিকল্পনা। সেই ভাবনার সোপান ধরেই ফ্যাশন হাউস রঙ-এর শুরু ১৯৯৪ সালে। নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ার সান্ত্বনা মার্কেটের ছোট্ট পরিসরে। বয়ে যাওয়া সময়ে চার থেকে হয়ে যায় দুই। বাকি দুজন এগিয়ে নিতে থাকে রঙ-কে।

২০ ডিসেম্বর ছিল বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘রঙ বাংলাদেশ’ এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। আমরা সময়কে রাঙিয়ে তুলি- স্লোগানে স্বপ্নময় এই উদ্যোগের সূচনা ১৯৯৪ সালের নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ার সান্ত্বনা মার্কেটের ছোট্ট পরিসরে। এরপর সময়ের প্রবাহে অতিবাহিত ২৮ বছর। বাংলাদেশের ফ্যাশন অনুরাগীদের ভালোবাসায় ছড়িয়েছে দেশ-বিদেশের নানা প্রান্তে।

ফিরে দেখা

নব্বই দশকের শুরুতেই চার বন্ধু মিলে টুকটাক কাজ করতে করতেই পরিকল্পনা। সেই ভাবনার সোপান ধরেই ফ্যাশন হাউস রঙ-এর শুরু ১৯৯৪ সালে। নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ার সান্ত্বনা মার্কেটের ছোট্ট পরিসরে। বয়ে যাওয়া সময়ে চার থেকে হয়ে যায় দুই। বাকি দুজন এগিয়ে নিতে থাকে রঙ-কে।

দেশের ফ্যাশনপ্রিয় মানুষের ভালোবাসায় নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের অন্যত্রও শাখা বিস্তার হয়। এই জয়যাত্রায় ধীরে ধীরে অনন্য ব্যান্ড হিসেবে পরিচিতি পায় রঙ । ফ্যাশনশিল্পে দেশি উৎসবগুলোর গুরুত্ব নাগরিক জীবনে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত করতে যে প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ্য ভূমিকা রেখেছে, তার অন্যতম পথিকৃৎ রঙ।

নিয়মিত বিষয়ভিত্তিক সামগ্রীর নানা প্রদর্শনী আয়োজনের পাশাপাশি ২০১০ সালে রঙধনু শিরোনামে অনন্য প্রদর্শনীর আয়োজন করে বিপুল সুনাম করেছিল রঙ।

রঙ থেকে রঙ বাংলাদেশ

পরিস্থিতিকে মেনে নিতেই একসময় ‘রঙ’ হয়েছে ‘রঙ বাংলাদেশ’। ঠিক সাত বছর আগে। ২০১৫ সালে। ছন্দঃপতনের বিহ্বলতা কাটিয়ে উঠে, সূচনা দিনের প্রত্যয়েই রঙ বাংলাদেশ এগিয়েছে। অবশ্য সেটা সম্ভব হয়েছে দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা রঙ অনুরাগীদের সমর্থন আর ভালোবাসার জন্য।

চলমানতায় আঙ্গিক পরিবর্তন সত্ত্বেও লক্ষ্যে অবিচল থেকে প্রধান নির্বাহী সৌমিক দাসের সঙ্গে এক ঝাঁক নিবেদিত প্রাণ কর্মীর নিরলস প্রচেষ্টায় নতুন করে বিকশিত হয়েছে রঙ বাংলাদেশ। অপরিসীম উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ছড়িয়ে দেয়ার ইচ্ছা নিয়ে এগিয়েছে রঙ বাংলাদেশ।

সময় রাঙানোর ২৮ বছর

সময়ের সঙ্গে আরো বড় হয়েছে রঙ বাংলাদেশ পরিবার। ফ্যাশন অনুরাগীদের ভালোবাসায় শাখা ছড়িয়েছে দেশের নানা প্রান্তে। রঙ বাংলাদেশ-এর একটি শক্তিশালী টিম, ফ্যাশনের এই কর্মযজ্ঞকে এগিয়ে নিচ্ছে। দেশীয় ফ্যাশনশিল্পের অন্যতম এই ব্র্যান্ড ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে গেছে। ফলে রঙ বাংলাদেশ-এর অনুরাগীরা হাতের নাগালেই পাচ্ছেন প্রিয় ব্র্যান্ডের পোশাক ও উপহারসামগ্রী।

সমান্তরালে ডিজিটাল উৎকর্ষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গড়ে উঠেছে রঙ বাংলাদেশের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, নিজস্ব ই-কর্মাস সাইট, ফেসবুকসহ নানা সামাজিক মাধ্যম। ফলে দেশ-বিদেশের ক্রেতারা বাসায় বসেই পাচ্ছেন সব সামগ্রী।

রঙ বাংলাদেশের সাব-ব্র্যান্ড

রঙ বাংলাদেশ বিভিন্ন বয়সের জন্য সমান সচেতন। সে জন্যই মূল ব্র্যান্ডের অধীনেই রয়েছে ৪টি পৃথক সাব-ব্র্যান্ড। জ্যেষ্ঠদের জন্য ‘শ্রদ্ধাঞ্জলি’, তরুণদের জন্য ‘ওয়েস্টরঙ’, ছোটদের জন্য ‘রঙ জুনিয়র’ আর বাংলাদেশকে দেশ এবং দেশের বাইরে পরিচিত করাতে আছে ‘আমার বাংলাদেশ’। শেষের এই ব্র্যান্ডটি মূল উপহার সামগ্রী বা স্মারক উপহারের; যাতে করে এর মাঝে খুঁজে পাওয়া যায় এক টুকরা বাংলাদেশ।

সৃজনে থিমনির্ভরতা

সব দেশীয় উৎসবে থিমভিত্তিক সামগ্রী তৈরির অনন্য ধারণা প্রচলনে পথপ্রদর্শক এই প্রতিষ্ঠান। রঙ বাংলাদেশ বরবারই থিমনির্ভর কাজ করে থাকে; তা সে উৎসবই হোক বা উপলক্ষ।

সেই ধারা অব্যাহত রেখেই এগিয়ে চলেছে। ২০১৫ থেকে ইতোমধ্যে হায়া সোফিয়া মসজিদ, ইন্দোনেশিয়ান বাটিক, কাঠখোদাই নকশা, বাংলার ঐতিহ্যবাহী গয়না, শিল্পী যামিনী রায়ের চিত্রকলা, নকশিকাঁথা, ইবান টেক্সটাইল, আফ্রিকান মাড হাউস, ইসলামিক নকশা, শিল্পী কামরুল হাসানের চিত্রকলা, সন্দেশের ছাঁচ, জ্যামিতিক নকশা, ইসলামিক নকশা, ফ্লোরাল মোটিফ, শীতল পাটি, সাঁওতালদের দেয়ালচিত্র, মঙ্গল শোভাযাত্রা, ইন্ডিয়ান টেক্সটাইল, চাকমা সম্প্রদায়ের আলাম, শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী’র রেখাচিত্র, মান্ডালা, ইন্ডিয়ান টেক্সটাইল, রাজস্থানী ডিজাইন, মোগল আর্ট, কাতান, টাইলস, শতরঞ্জি, মধুবনী, সুজনী সেলাই, মান্ডালা, আলপনা, কলমকারী, কার্পেট, ট্রাক আর্ট, অরিয়েন্টাল রাগ, পূজার ফুল থিম নিয়ে প্রোডাক্ট লাইন তৈরি করেছে রঙ বাংলাদেশ।

ভবিষ্যতের ভাবনা

২৮ বছরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতাকে সমুন্নত রেখে বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে রঙ বাংলাদেশ সুদৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। ইতোমধ্যে রঙ বাংলাদেশ দুর্দান্ত টিমওয়ার্কে সৃজনশীল ব্র্যান্ডে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি জয় করেছে শুভানুধ্যায়ীদের আস্থা।

ভবিষ্যতেও দেশজ উপকরণ, উজ্জ্বল রঙ আর বিষয়ভিত্তিক নকশা বিন্যাসের সঙ্গে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে পোশাকে ধরে রাখায় চেষ্টার ত্রুটি থাকবে না; বরং রঙ বাংলাদেশের পণ্যকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পাশাপাশি টেকসই ফ্যাশন ও পুনর্ব্যবহারকে গুরুত্ব দিয়েই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়াসী।

সময় আমরা রাঙিয়ে চলেছি সুচনা-প্রতিশ্রুতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে। রঙ বাংলাদেশ একান্তভাবে বিশ্বাস করে, যাদের নিয়ে এবং যাদের জন্য এই সৃষ্টিযজ্ঞ, তারা সব সময়ের মতোই সাথী হবেন। সব সময়ে তাদের যে সমর্থন মিলেছে তাতে রঙ বাংলাদেশ অভিভূত ও কৃতজ্ঞ। অতএব, সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই টিকে থাকবে রঙ বাংলাদেশ-এর লেগাসি।

আরও পড়ুন:
ঈদে বাহারি জুতা
ঈদের পাঞ্জাবি
সোনামনিরও চাই ঈদের নতুন জামা
বাহারি পোশাকে আনন্দের ঈদ
ঈদে এলিট লাইফের ব্যতিক্রম অফার

মন্তব্য

সোশ্যাল মিডিয়া
Language and the sound of silence

ভাষা আর নৈঃশব্দ্যের শব্দ

ভাষা আর নৈঃশব্দ্যের শব্দ
আমরা কিন্তু সব শব্দ শুনি না। যেসব শব্দ আমাদের কানে আসে অর্থাৎ যা আমরা শুনতে পাই, তা নিশ্চয় কোথাও ধ্বনিত হয়। কোনো একটি আঘাত বা স্পন্দন থেকে উদ্ভব বলে এদের নাম ‘আহত শব্দ’। অন্যদিকে যে শব্দ আমরা শুনি না, কোনো দৃশ্যমান আঘাত থেকে যার উদ্ভব হয়নি, হয়েছে অন্তরস্থ প্রজ্ঞা থেকে, যা সাধনা করে শুনতে হয়, সেই সব শব্দের নাম ‘অনাহত শব্দ’। কোনো এক বায়ুহীন অন্তরীক্ষে পৌঁছাতে পারলেই কেবল তা শুনতে পাওয়া যায়।

শব্দের কী শক্তি! একটা মাত্র শব্দ মানুষকে সুখী করে দিতে পারে। পারে দুঃখ দিতেও। প্রেমিকা যখন ‘উম্মম’ বলে সাড়া দেয়, প্রেমিকের আকাশে জ্বলে ওঠে আলো, পুবে-পশ্চিমে। আবার যখন নৈঃশব্দের আড়ালে সে নিজেকে লুকায়, প্রেমিকের গগন থেকে মধ্যাহ্নেই ডুবে যায় সূর্য।

শব্দের কত জাদু! এই যেমন ‘দ্রাক্ষা’র সঙ্গে বাগান মেলে না। দ্রাক্ষার সঙ্গে কুঞ্জ মিলে হয়ে ওঠে ‘দ্রাক্ষাকুঞ্জ’। আবার দ্রাক্ষা না হয়ে যদি কেবল আঙুর হয়, তাহলে হতে হয় ‘আঙুরবাগান’। ‘গলিত’ শুনলেই কেমন গা গুলিয়ে ওঠে, কিন্তু কেউ ‘বিগলিত’ হলে মন খুশি হয়।

এই যে ব্রহ্মাণ্ড, যাকে নিখিল ভুবন বা প্লানেট আর্থ যা-ই বলি, এখানে প্রথম এসেছিল শব্দ, তারপর আলো। ‘কুন’ শব্দ দিয়ে জন্ম হলো দুনিয়া। কুন মানে ‘হও’, ফা ইয়াকুন মানে ‘হলো’ …be and it is.

পদার্থবিদ্যার আদিতেও সেই শব্দ, the big bang, অতঃপর বিপুল নিনাদে বহুধা বিভাজিত হলো জগতের তাবৎ উপকরণ। উপনিষদ বলছে শব্দই ব্রহ্ম, ‘অহম ব্রহ্মাস্মি’ অর্থাৎ ‘আমিই ব্রহ্ম’ … I am the supreme being.

উপনিষদের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে যেন মিলে যায় মনসুর হাল্লাজের ‘আইন্যাল হক’! ওদিকে ‘ওঁ’ ধ্বনিতে হলো পরম শিবের প্রথম প্রকাশ; আদি ধ্বনি ‘ওঙ্কার’ সব ধ্বনির মূল, আদি মন্ত্রবীজ- সেও এক মানসিক তরঙ্গ।

আমরা কিন্তু সব শব্দ শুনি না। যেসব শব্দ আমাদের কানে আসে অর্থাৎ যা আমরা শুনতে পাই, তা নিশ্চয় কোথাও ধ্বনিত হয়। নিশ্চয় কোনো একটা আঘাত বা স্পন্দন থেকে তার উদ্ভব হয়। আঘাত থেকে উদ্ভব বলে এদের নাম ‘আহত শব্দ’।

অন্যদিকে যে শব্দ আমরা শুনি না, কোনো দৃশ্যমান আঘাত থেকে যার উদ্ভব হয়নি, হয়েছে অন্তরস্থ প্রজ্ঞা থেকে, রবীন্দ্রনাথের ভাষায় ‘হৃদয় দিয়ে হৃদি অনুভব’এর মতো, যা সাধনা করে শুনতে হয়, সেই সব শব্দের নাম ‘অনাহত শব্দ’। কোনো এক বায়ুহীন অন্তরীক্ষে পৌঁছাতে পারলেই কেবল তা শুনতে পাওয়া যায়।

কেবল তান্ত্রিক সাধনা নয়; সত্যিকার প্রেমে পড়লেও অনাহত শব্দ শোনা যায়। যে প্রেমে কোনো আবরণ নেই, যে মগ্ন মুহূর্তে জীব বা জগতের আর কিছু টের পাওয়া যায় না, তখন অনাহত শব্দেরা অন্তরে রসক্রীড়া করে। যেমন প্রেমিকার অন্তর যখন বলে ‘কই তুমি?’ প্রেমিক তা স্পষ্ট শুনতে পায়।

আবার সে যখন ডাকে না মোটেই, সেই সাউন্ড অব সাইলেন্সও প্রেমিকের কানে বিষাদ বেদনা বাজায় (কৌশিক গাঙ্গুলির ‘শব্দ’ সিনেমায় এর সামান্য ইঙ্গিত আছে)।

কোনো বিশেষ সাংস্কৃতিক বা সামাজিক কারণে কিছু কিছু শব্দের প্রতি কারও অহেতুক অনুরাগ বা বিরাগ থাকতে পারে। ব্যক্তি ও সমাজ ভেদে একই শব্দের ভিন্ন ভিন্ন অর্থ থাকতে পারে। শব্দটা শোনা, দেখা, পড়া বা ভাবামাত্রই মনে একটা নিজস্ব অর্থ বা দৃশ্য ভেসে ওঠে। আমরা সহ্য করতে পারি না। ওই নিরীহ শব্দটাই তখন যেন প্রবল প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায়। এমন প্রথাবদ্ধ শব্দপ্রেম বা শব্দঘৃণা অহরহ দেখা যায়।

আমাদের মনে আছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ঘটনাটি। একজন ভর্তিচ্ছু ছাত্রের টি-শার্টে ‘Fuck the System’ লেখা দেখে একজন শিক্ষক কেমন রেগে গিয়ে ছাত্রটিকে শার্ট খুলে উল্টো করে পরতে বাধ্য করেছিলেন এবং নিজের ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘এই নির্মল ক্যাম্পাসে এই ধরনের অসভ্যতা কখনও মেনে নেয়া যায় না।’

‘ফাক’ শব্দটা দেখার পর এখানে শিক্ষকটির মনে যা ভেসে উঠেছে তা তার বিবেচনায় নিশ্চয় অশ্লীল, তিনি মনে করেছেন সামান্য এই শব্দটি হয়তো তার বা তার প্রতিষ্ঠানের কৌলিন্য হরণে সক্ষম, তিনি শব্দটি ঢেকে দিয়েছেন।

অথচ ‘ফাক’ শব্দের এমন অর্থও হতে পারে যা কেবল দুটি প্রত্যঙ্গ সংশ্লিষ্ট নয়, যা ‘মানি না’, বা ‘বদলাতে চাই’ বা ‘বস্তাপচা’ ইত্যাদি নানা অর্থ বহন করতে পারে। যেমন কবি এলেন গিন্সবার্গ লিখেছিলেন, ‘America when will we end the human war? Go fuck yourself with your atom bomb’. তিনি নিশ্চয় এটম বম্ব কোথাও ‘ঢোকানো’ বোঝাননি।

‘সতী’ শব্দটি বাঙালির নিজস্ব। এটা নারীর একটা বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ধারণাকে ইঙ্গিত করে। মজার ব্যাপার, বাংলা ভাষায় এই শব্দের বিপরীতার্থক পুরুষলিঙ্গবাচক কোনো শব্দ নেই।

কেউ হয়তো বলবেন ‘সৎ’, কিন্তু তখন প্রশ্ন করাই চলে, নারী কি সৎ হতে পারেন না? যে অর্থে নারী ‘সতী’ সেই অর্থে পুরুষের জন্যে কোনো শব্দ নেই। যে অর্থে নারী ‘অসতী’ সে অর্থে একজন পুরুষ কী?

‘বেশ্যা’ বলতে আমরা শাব্দিকভাবে ‘অর্থের বা অন্যবিধ প্রাপ্তির বিনিময়ে যৌনসংগমে সম্মত’ নারী বুঝলেও সাংস্কৃতিক বা ঐতিহাসিকভাবে যা বুঝি তার সঙ্গে অপমান, ঘৃণা, তাচ্ছিল্য জড়িয়ে আছে।

তাই শব্দ ব্যবহারে বিদ্বজ্জনেরা সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। কারণ শব্দ কেবল বাক্যস্থ পদ নয়, একটি বার্তা, একটি শক্তি এবং কখনও শব্দ একটি অটোসাজেশনও।

শব্দের একাধিক অর্থ, ব্যাপ্তি ও ব্যঞ্জনা থাকে। শাব্দিক অর্থের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অর্থ বা প্রেক্ষাপটও শব্দের সঙ্গে যুক্ত থাকে। ভিন্ন ইতিহাস ও সংস্কৃতির দুজন মানুষ একই শব্দের দুই রকম অর্থ বুঝতে পারেন। আবার কোনো কোনো শব্দ একেবারেই একটি ভাষাভাষী গোষ্ঠীর নিজস্ব ধারণা ছাড়া আর কিছু বহন করে না- যেমন অভিমান, যেমন ভাত, যেমন নদী।

ভাতের সঙ্গে বাঙালির আত্মার সম্পর্ক। যে ‘স্বামী’কে দেবতা বলা হতো, সেই স্বামীকে ‘ভাতার’ও বলা হতো। ভাত দিত, তাই সে ভাতার। ‘ভাত দেয়ার মুরোদ নেই, কিল মারার গোঁসাই’ বলে মুখ ঝামটা দিয়েছেন নারীরা। অভিমান করে কেউ কেউ এখনও স্বামীদের বলেন, ‘তোমার ভাত আর খাবো না।’ মানে তোমাকে ছেড়ে চলে যাব।

এক ফসলি জমি ছিল। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে ছিল প্রচণ্ড অভাব। দিনের পর দিন ভাত থাকত না। ভাতের হাঁড়িতে কেবল কাঁঠাল সেদ্ধ খেতে দেখেছি। ভিখারিদের ভাত চাওয়ার সাহস ছিল না। ক্ষীণ কণ্ঠে ‘একটু ফ্যান দ্যাও গো’ বলে দুয়ারে দাঁড়াত। বিভূতিভূষণের ‘পথের পাঁচালি’ বা হুমায়ূন আহমেদের ‘মধ্যাহ্ন’তে এই ভাত-ফ্যান-দুঃখ-বেদনার গল্প আছে। সত্যি গল্প।

সেই দেশে কৃষিতে অনেক উন্নতি হয়েছে। কৃষিবিদরা ইরি, বিরি ধান আবিষ্কার করেছেন আর কৃষক মাটির গায়ে হাত বুলিয়ে বুলিয়ে সেই ধান চাষ করেছেন। এবং সেই ভরসায় এ দেশের রাজনৈতিক নেতারা কম দামে ভাত খাওয়াবেন বলে ভোট নিয়েছেন।

তাই ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে, আমাদের কাছে বলগ ওঠা ভাতের হাঁড়ির গুড়গুড় শব্দ মালহারের চেয়েও মধুর, ভাপ ওঠা গরম ভাতের গন্ধ শ্যানেল পারফিউমের চেয়েও সুগন্ধি।

থালাভরা শিউলিফুল ভাতের সঙ্গে সামান্য তরকারি আর একটু নিশ্চিন্তে ঘুমাবার ব্যবস্থা করে দিলেই যে বাঙালিকে অনায়াসে শাসন করা যায়। তাই বাঙালির কাছে ‘ভাত’ একটা মাটিগন্ধি হৃদয়ঘটিত ব্যাপার, ‘রাইস’ এর সঙ্গে এর বিন্দুমাত্র মিল নেই। অভিমান, নদী ইত্যাদি আমাদের এমন অনেক নিজস্ব শব্দেরও নিজস্ব অর্থ আছে যা অন্য কারও সঙ্গে মিলবে না।

ভাষাকে উন্নত করা যায়। ভাষায় প্রতিদিন যোগ-বিয়োগ ঘটে। নতুন শব্দ যুক্ত হয়, পুরোনো শব্দ হারিয়ে যায়। যেমন ‘মহকুমা’ হারিয়ে গেছে।

এই নিরন্তর পরিবর্তনের যাত্রাপথে আমাদের দায়িত্ব হলো, কারও জন্য অবমাননাকর ও বৈষম্যসৃষ্টিকারী শব্দ (যেমন বেশ্যা, মহিলা, মুচি, মেথর ইত্যাদি) পরিহার করা। আর যে শব্দের সঙ্গে আমাদের নিজস্ব ইতিহাস আর মায়ার বাঁধন আছে, তা বেশি ব্যবহার করা। তবে এ-ও সত্যি সময়ের পরিবর্তনে প্রয়োগের স্থান সংকুচিত হয়ে এলে আমাদের ইচ্ছা থাকলেও এ ধরনের অনেক শব্দ হারিয়ে যাবে।

লেখক: মানবাধিকারকর্মী

আরও পড়ুন:
আমেরিকার গৃহহীনরা কেন বারবার জেলে যেতে চান
ভাষা শেখার বই পেল ত্রিপুরা পল্লীর শিশুরা
রুশ আর বাংলা ভাষার ‘নতুন হাট’
রক্তভেজা ১৯ মে: বাংলা ভাষার জন্য আত্মদান
মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার দায় সবার

মন্তব্য

সোশ্যাল মিডিয়া
Stylish clothes by K Craft in winter

শীতে কে-ক্র্যাফটের স্টাইলিশ পোশাক

শীতে কে-ক্র্যাফটের স্টাইলিশ পোশাক ছবি: কে ক্রাফট
মেয়েদের ভিন্ন স্টাইলের ব্লেজার, ওপেন ফ্রন্ট ওভার কোট, জ্যাকেট, রিভারসেবল জ্যাকেট, ফুল লেংথ কটি, যা মিলিয়ে পরতে পারেন জিন্স বা পছন্দের স্টাইলের প্যান্টের সঙ্গে। রয়েছে ছেলেদের জন্য ফুল স্লিভ শার্ট, পলো, সোয়েট শার্ট, ক্যাজুয়াল শার্ট, কটিসহ অন্যান্য শীতের পোশাক।

বাতাসে শীতের হিম হিম পরশ। এ সময় চাই মানানসই পোশাক। শীতে উষ্ণতার পাশাপাশি থাকতে হবে অভিজাত ও স্টাইলিশ লুক। কে-ক্র্যাফটের ভিন্নধর্মী চমৎকার সব স্টাইলিশ পোশাক হতে পারে আপনার এ সময়ের সঙ্গী।

মেয়েদের ভিন্ন স্টাইলের ব্লেজার, ওপেন ফ্রন্ট ওভার কোট, জ্যাকেট, রিভারসেবল জ্যাকেট, ফুল লেংথ কটি, যা মিলিয়ে পরতে পারেন জিন্স বা পছন্দের স্টাইলের প্যান্টের সঙ্গে।

রয়েছে ছেলেদের জন্য ফুল স্লিভ শার্ট, পলো, সোয়েট শার্ট, ক্যাজুয়াল শার্ট, কটিসহ অন্যান্য আরও শীতের পোশাক। এরই সঙ্গে ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্যই রয়েছে শীতের উপযোগী ক্যাজুয়াল পোশাক ও এক্সেসরিজ।

নিয়মিত আয়োজন সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি, টপস, টিউনিক, কাফটান ও শাড়ি তো থাকছেই। এসব পোশাকের কাট ও স্টিচে রয়েছে নতুনত্ব। অর্নামেন্টেশন ও প্রেজেন্টেশনেও রয়েছে বৈচিত্র্য।

বিভিন্ন রঙের প্রিন্ট ও উইভিং ডিজাইনে তৈরি করা হয়েছে শাল, যা এই শীতের জন্য বেশ উপযোগী। শুধু শীতের পোশাক বলেই নয়, ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবে পছন্দের নানা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে পরতে শালের রয়েছে আলাদা কদর।

কে-ক্র্যাফটের ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, খুলনাসহ সব আউটলেট ছাড়াও অনলাইন থেকে শীতের পোশাক কিনতে পারেন বিশেষ সাশ্রয়ী মূল্যে। এ ছাড়া ফেসবুক পেজ থেকেও কেনাকাটা করার সুবিধা আছে।

আরও পড়ুন:
ঈদের পাঞ্জাবি
সোনামনিরও চাই ঈদের নতুন জামা
বাহারি পোশাকে আনন্দের ঈদ
ঈদে এলিট লাইফের ব্যতিক্রম অফার
মাতৃত্ব আর দৃঢ়তার গল্প শুনুন নাওমি ক্যাম্পবেলের কাছে

মন্তব্য

p
উপরে