টুইটার অধিগ্রহণের পর ইলন মাস্কের ধ্বংসযজ্ঞ আর ফেসবুকের ১০ বছর মেয়াদি মেটাভার্স তৈরির পরিকল্পনার পর বিনিয়োগকারীদের অসন্তুষ্টি নিয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলছে তুমুল আলোচনা। সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভবিষ্যৎ নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সভিত্তিক সাইট ভাইস-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন ভাষান্তর করা হয়েছে নিউজবাংলার পাঠকের জন্য।
অনেকেই শঙ্কায় ভুগছেন, মাস্ক হয়তো টুইটার ধ্বংস করে দেবেন। তবে এ নিয়ে এত চিন্তার কিছু নেই, কারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এরই মধ্যে মরে গেছে। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, গত এক দশক ধরে আমরা যে প্ল্যাটফর্মগুলোকে ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম’ হিসেবে জানি, সেই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারের সঙ্গে টাম্বলার বা আরও পেছনে গেলে মাইস্পেস- এগুলোর অধিকাংশকেই নতুন নতুন প্ল্যাটফর্ম নতুন ধরনের অনলাইন যোগাযোগের মডেল দিয়ে পেছনে ফেলে দিচ্ছে।
বহু বছরের বিতর্কের কারণে ফেসবুক নিজস্ব চাপেই ধসে পড়েছে। ইনস্টাগ্রাম অনেকে এখনও ব্যবহার করেন, তবে বন্ধুর চেয়ে অগণিত বিজ্ঞাপনের কারণে এর প্রতি মানুষের অপছন্দ বাড়ছে। আর মাস্ক টুইটার দখল করে নেয়ার পর প্ল্যাটফর্মটি থেকে অনেকেই বের হওয়ার চেষ্টায় আছেন। ফাঁস হওয়া রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এমন দাবিও করা হয়েছে, টুইটার আদতে এখন এক ‘মৃত্যুপুরী’। কারণ এর ৯০ শতাংশ ট্রাফিক আসে মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবহারকারীর কাছ থেকে, আর এসব ‘হেভি ইউজাররা’ এখন আর প্রতিদিন পোস্ট করছেন না।
মার্ক জাকারবার্গ চেয়েছিলেন ব্যবহারকারীরা এখন মেটাভার্স বা ওয়েব থ্রিতে চলে আসবেন, সেটাও হচ্ছে না। এ দুটোই বিকেন্দ্রীকৃত, টোকেন ও ক্রিপ্টোনির্ভর ইন্টারনেট। এটি নিয়ে বিনিয়োগকারী, ক্রিপ্টো মালিক ও পুঁজিপতিরা বেশ হইচই ও পিরামিড স্কিম তৈরি করেছিলেন। তাদের আশা ছিল, এ থেকে তারা আরও ধনী হবেন।
তবে এর বদলে সবাই এখন ইউটিউব, টিকটক, টুইচ ও অসংখ্য নতুন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের দিকে ঝুঁকছেন। তারা প্রচলিত বহুমুখী ও শাখা-প্রশাখা বিস্তৃত আলোচনার স্ট্রাকচারসমৃদ্ধ প্ল্যাটফর্মের বিকল্প হিসেবে একমুখী প্ল্যাটফর্ম বেছে নিচ্ছেন। তারা পছন্দ করছেন ‘সম্প্রচার’ মডেল, যেখানে পারস্পরিকতার চেয়ে একজন কন্টেন্ট নির্মাতা ও তার দর্শক রয়েছেন।
ইন্টারনেটে জনপ্রিয়তার শীর্ষে বা দুই নম্বরে থাকা টিকটকই এখন ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম’। যে কেউ টিকটক বানাতে পারেন, কিন্তু একে আদতে লঘু ব্যবহারের (passive consumption) জন্য তৈরি করা হয়েছে। টিকটকে ইনফ্লুয়েন্সার ও সেলিব্রিটি মডেল তৈরি হয়ে গেছে, যেখানে ব্যবহারকারীরা তাদের প্রিয় নির্মাতাদের ফলো করেন বা পরোক্ষভাবে তাদের তৈরি কন্টেন্ট ব্যবহারকারীদের ফর ইউ পেজে প্রদর্শিত হয়। ইনস্টাগ্রামও এদিকে যাওয়ার চেষ্টা করছে, যদিও ব্যবহারকারীরা একে অপছন্দ করেন।
আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিদায়ে শোকাহত হতে পারি বা এই পরিবর্তন কেন হচ্ছে তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। এর একটা কারণ হতে পারে, বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করার মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মগুলোর অর্থ উপার্জন করা উচিত নয় এবং লাভের আশায় তারা নানা পথ অবলম্বন করে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অথবা এ-ও বলা যেতে পারে এখন সত্যিকার অর্থে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বলে কিছু নেই, কখনও ছিল না।
আদতে যা আছে আর আমরা মাঝে মধ্যে যেটা উপভোগ করি সেটা হলো যোগাযোগের নেটওয়ার্কগুলোর একটি সিরিজ। মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ আমাদের আসলে ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নেই’, আদতে এগুলো ভোগনির্ভর এবং অনুমোদনের মুখাপেক্ষী নয় এমন বন্ধন ও গ্রুপের নেটওয়ার্ক।
এটাকে এমনভাবেই দেখা যেতে পারে যে একক কোনো ইন্টারনেট নেই। যা রয়েছে তা হলো জোড়া দেয়া ডিজিটাল ভুবন ও নেটওয়ার্ক, যাদের প্রত্যেকের আলাদা ইতিহাস, ভূরাজনীতি, রাজনৈতিক অর্থনীতি ও প্রণোদনা রয়েছে। এগুলোকে আমরা একসঙ্গে ইন্টারনেট বলি।
বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট যেভাবে ব্যবহৃত হয় সেটার এক ধরনের সাদৃশ্য রয়েছে। যেমন ব্রাউজ করা, কেনাকাটা করা, ভিডিও দেখা ইত্যাদি। কিন্তু এগুলো সাম্প্রতিক উন্নয়ন যেগুলো আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকার একেবারে ভিন্ন ধরনের অবকাঠামো, আইন, রাজনৈতিক অবস্থা, ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অর্থনৈতির সঙ্গে জুড়ে দেয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সৃষ্টির সময়ে ধারণা করা হচ্ছিল, ইন্টারনেটের শক্তি, বৈশ্বিক যোগাযোগের নেটওয়ার্ক ও অন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা একটা জায়গা তৈরি করতে পারব, যেখানে বিভিন্ন গোষ্ঠীর তৈরি হতে পারে ও বিস্তার লাভ করতে পারে।
এটি হবে এমন এক স্থান যেখানে আমরা পুরো বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারব, বন্ধুরা কী করছে জানতে পারব, নতুন বন্ধু বানাতে পারব, নতুন পরিচয় গ্রহণ করতে পারব ইত্যাদি ইত্যাদি। এটি আশ্চর্যজনক সরলমনা একটি চিত্র।
এখন আমরা স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সঙ্গে জড়িত প্রযুক্তি সব সময় আদর্শ কমিউনিটি তৈরির জন্য একে অপরের সঙ্গে একত্র হয় না। বরং এই নেটওয়ার্কগুলোর পক্ষে কোনো গণহত্যাকে উসকে দেয়া, মানসিক স্বাস্থ্যসংকট সৃষ্টি করা, মানুষকে উগ্রবাদী করা, কোনো দেশকে ব্ল্যাকআউট করা ও নির্দিষ্ট জনসংখ্যার ওপর নজরদারি করা তুলনামূলকভাবে সহজ।
এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে অনেকটা সময় ধরে। বছরের পর বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের বেছে নেয়া বন্ধু ও যাদের অনুসরণ করছি তাদের পোস্টের অবাধ প্রবাহ ছিল আমাদের ফিডে। আর এখন আমরা সবচেয়ে বেশি যা দেখতে পাচ্ছি, তা অ্যালগরিদম নির্বাচন করে দেয় ও বিজ্ঞাপনদাতারা তাদের পোস্টগুলোকে উৎসাহিত করতে বা প্রচার করতে অর্থ প্রদান করে। একে খুব কমই ‘সামাজিক’ বলা যেতে পারে- এখানে লক্ষ্য হলো ব্যস্ততা বাড়ানো ও পেজে ধরে রাখা।
এরপরেও আমরা প্রযুক্তির দিকে এভাবে তাকাই যেন এটি এমন এক হাতিয়ার যা দিয়ে শান্তিপূর্ণ, আদর্শ সমাধান সম্ভব। আমরা মনে করি সঠিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স–এআই) দেয়া নির্ভুল এলগরিদম কন্টেন্টের যথাযথতাকে নিশ্চিত করবে, বৈশিষ্ট্যকে যাচাই করবে ও নিখুঁতভাবে বাছাই করবে, ভুল তথ্যের প্রচারের বিরুদ্ধে লড়াই করবে, মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করবে না ও যোগাযোগের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর দিকে আমাদের মনোযোগ ফেরাতে সহায়তা করবে।
তার আগে আমাদের এ প্রশ্ন করতে হবে, আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বলতে কী বুঝি? একে রক্ষা করতে যে হাতিয়ারগুলো দরকার সেগুলোকে আরও গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।
গত ১০ বছর ধরে বড় বড় কোম্পানিগুলো যেভাবে ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম’ নামটিকে ব্যবহার করেছে তা হলো এটা এমন কিছু প্ল্যাটফর্ম যেখানে ব্যবহারকারী বৃদ্ধির সংখ্যাকে বিজ্ঞাপনদাতার আয়ের সঙ্গে যুক্ত করা হয়, নতুন পণ্য ও সার্ভিসের সঙ্গে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য বিজ্ঞাপনদাতার রাজস্বের জন্য সুবিধা দেয়া হয় এবং এমন আরও অনেক কিছু।
এই প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহারকারীদের একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত থাকার সুযোগ করে দেয়। একই সঙ্গে সমস্ত সংযোগ প্রক্রিয়ার ডেটা জমা রাখে। যা অন্য কোম্পানি কিনে নেয় যাতে তারা প্রাসঙ্গিক পণ্য ও সার্ভিস অফার করতে পারে।
এটাও আসলে প্রকৃত সত্য নয়। এ সমস্ত কিছুর পেছনে থাকা রাজনৈতিক অর্থনীতির দিকে তাকালে ভয়াবহ কিছু দৃশ্য চোখে পড়বে। সামাজিক মিডিয়ার প্রতিটি প্রধান বিষয় ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ও পরিচালিত।
আমরা যে ডেটা তৈরি করি, যে ডেটা সেন্টারগুলো এটি জমা রাখে, যে অ্যালগরিদমগুলো একে বিশ্লেষণ করে, যে সার্ভারগুলো একে হোস্ট করে, অ্যানালিস্টদের যে দল একে চিহ্নিত, বাছাই ও তার সঙ্গে ইন্টরঅ্যাক্ট করে, যে তার দিয়ে তথ্য ভ্রমণ করে, যে প্ল্যাটফর্ম আমরা ব্যবহার করি, তাদের অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান কোনোটিই আমাদের নয়।
এমনকি বিকল্প পদ্ধতি বিকাশের জন্য আমরা যে ডেটা ব্যবহার করতে পারি সেগুলোও এমন কোম্পানি জমা রাখে যারা নির্দিষ্ট ব্যবসায়িক মডেলে কাজ করে এবং সম্পূর্ণ বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চলে। সেই ডেটা নিয়ে পরীক্ষা করার জন্য আমরা যে কম্পিউটেশনাল রিসোর্সগুলো ব্যবহার করতে পারি সেগুলো ব্যক্তিগতভাবে টেক কোম্পানিগুলোর মালিকানাধীন। অথবা রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ট্রাস্টের মালিকানাধীন, যারা ইন্টারনেট অবকাঠামোকে বাণিজ্যযোগ্য আর্থিক সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করে।
আমাদের যে প্ল্যাটফর্মগুলো রয়েছে, যেগুলো মৃতপ্রায় বা মৃত্যুর দিকে যাচ্ছে সেগুলোকে ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম’ বা ‘সোশ্যাল নেটওয়ার্কস’ বললে ভুল হবে। কারণ এ থেকে মনে হয়ে যে, এগুলো হয়ত সামাজিকতার ওপর নির্ভরশীল কোনো প্ল্যাটফর্ম। আদতে আমরা এমন কিছু তৈরি করেছি যা আমাদের সম্পূর্ণ ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত সিস্টেম এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাহিদা, আগ্রহের কারণে সামাজিক সম্পর্কের প্রতিরূপ অফার করে।
যে প্ল্যাটফর্মগুলো শব্দটিকে সংজ্ঞায়িত করেছে তার বদলে সত্যিকার অর্থে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেটাই যারা একমুখী সম্প্রচার মডেলকে সহজভাবে গ্রহণ করতে, আবিষ্কার করতে ও সেটি নিয়ে জরুরি কাজ করতে পারবে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে যেসব দেশে অন্য অ্যাপগুলো জনপ্রিয় সেখান থেকে আমরা যেসব বিষয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত করা যায় বা বাতিল করা যায় তার আভাস পেতে পারি। উদাহরণ হিসেবে হোয়াটসঅ্যাপের মতো মেসেজিং অ্যাপের কথা বলা যায়। এটি ব্রাজিল বা ভারতের মতো দেশে দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ফেসবুক এখনও হোয়াসঅ্যাপের মালিক। হোয়্যাটসঅ্যাপ বিজ্ঞাপনদাতাদের আয়কে (বা অতিরিক্ত রাজস্বের পথ তৈরির চেষ্টা) সফলভাবে নগদীকরণ করেনি ও পুনর্গঠিত হয়নি। তবে এটিও বিভ্রান্তি, ভুল তথ্য ও জনতার সহিংসতা ছড়ানোর দোষে দুষ্ট।
বিকল্প অন্বেষণের অর্থ হতে পারে যে ম্যাস্টোডনের মতো কিছুর দিকে অগ্রসর হওয়া। মাস্কের টুইটার দখলের পর থেকে এই হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এটি এখনও ত্রুটিমুক্ত হওয়া থেকে অনেক দূরে। একটি বাস্তব বিকল্প খুঁজে বের করার জন্য মানবিক বিশৃঙ্খলা ও ছলচাতুরির ঝুঁকি ও ধাক্কা সামাল দিতে হবে। এমন নয় যে আমরা এখন তা করছি না।
আরও পড়ুন: টুইটার ছেড়ে এবার কি ম্যাস্টোডনে যাবেন?
সত্যিকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তৈরির পথে সবচেয়ে বড় অন্তরায় প্রভাবশালী যোগাযোগ নেটওয়ার্কগুলোর পেছনে থাকা সমস্ত জটিল সিস্টেম।
এত কিছুর পরেও এটা ঠিক, আমরা যে যোগাযোগ নেটওয়ার্কগুলোকে বলি ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম’, সেটা আজ আধিপত্য বিস্তার করছে। আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করছি যেখানে শীতল যুদ্ধের ভূরাজনীতি সিলিকন ভ্যালির জন্ম দিয়েছে।
আমরা যাকে ইন্টারনেট বলি তার পেছনেও রয়েছে সামরিক সহযোগিতা। এটি এমন এক বিশ্ব যেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী অর্থনীতি একটি নজরদারি ব্যবস্থার জন্ম দিয়েছে, যেন উৎপাদন ও ভোগ পুঁজিবাদের একটি স্বর্ণযুগ বজায় থাকে। আমাদের এই বিশ্ব এমন যেখানে একক নেতৃত্বের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সুবিধা বা প্রাধান্য পায় মুনাফাখোর, একচেটিয়া ব্যবসায়ী ও সম্পদ ব্যবস্থাপকের স্বার্থ।
এগুলোর কারণে আমরা সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখতে পারব সে রকম একটা নেটওয়ার্ক তৈরি হবে বিষয়টি তেমন নয়। সেটার বদলে আমরা অন্যদেরকে কী পরিমাণে দেখি ও আমাদেরকে দেখে আরও সক্রিয়ভাবে বৃহত্তর, বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলি কীভাবে লাভ করতে হয় তা খুঁজে বের করতে আগ্রহী (পাশাপাশি সরকারগুলো তাদের নাগরিকদের পর্যবেক্ষণ বা নিয়ন্ত্রণে আগ্রহী)। মৌলিক কোনো পরিবর্তন হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা সত্যিকার অর্থে কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পাব না।
আরও পড়ুন:৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে নির্দেশনা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে মঙ্গলবার এক বার্তায় এমন তথ্য জানানো হয়।
বার্তায় বলা হয়, পরীক্ষামূলক সম্প্রচারে স্টারলিংক তার বিদেশি স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে ব্যবহার করলেও বাংলাদেশে বাণিজ্যিক সেবাদানকালে এনজিএসও নীতিমালা মেনে কোম্পানিটি স্থানীয় ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে বা আইআইজি ব্যবহার করবে।
এর আগে গেল ৮ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার ডাক টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, বাংলাদেশে গ্রাউন্ড আর্থ স্টেশন স্থাপনে সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের টেলিকম জায়ান্ট স্টারলিংকের অংশীদার হয়ে কাজ করছে কয়েকটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান।
স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধি দল তখন বাংলাদেশ সফর করে। ওই সফরে বাংলাদেশে স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা চালু করতে সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।
তিনি জানান, ভূমি বরাদ্দ, নির্মাণ সহায়তা ও অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের মতো কার্যক্রম পরিচালনায় এসব সহযোগিতা চুক্তি হয়েছে। স্টারলিংক টিম এ কাজের জন্য কিছু নির্দিষ্ট স্থান চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে কয়েকটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব সম্পত্তি এবং কিছুক্ষেত্রে হাইটেক পার্কের জমি ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনা করছে স্টারলিংক।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘স্টারলিংক বাংলাদেশের শহরে কিংবা প্রান্তিক অঞ্চলে, উত্তর অঞ্চল কিংবা উপকূলে লোডশেডিং কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝামেলামুক্ত রিলায়েবল এবং হাইস্পিড ইন্টারনেটের নিশ্চয়তা দেবে। এটি নিরবচ্ছিন্ন সেবা এবং উচ্চমান কোয়ালিটি সার্ভিসের নিশ্চয়তা দেবে।
‘যেহেতু বাংলাদেশে টেলিকম গ্রেড ফাইবার নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি সীমিত এবং প্রান্তিক অঞ্চলগুলোতে এখনও লোডশেডিংয়ের সমস্যা রয়েছে, তাই স্টারলিংক আমাদের উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার, এনজিও এবং এসএমই ব্যবসায়ীদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড এবং ডিজিটাল ইকোনমিক ইনিশিয়েটিভগুলোকে বেগবান করবে। আমরা আগামী ৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংকের সাথে একটা বোধগম্য মডেল বাস্তবায়নের চেষ্টা অব্যাহত রাখব।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত ১৯ ফেব্রুয়ারি স্টারলিংকের প্রতিষ্ঠাতা ও স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ককে স্টারলিংক স্যাটেলাইট সেবা চালুর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমে অংশ নিতে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা মাস্ককে জানান, এই সফরে মাস্ক বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন, যারা এই প্রযুক্তির প্রধান সুবিধাভোগী হতে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন:বাজারে নতুন আসা স্মার্টফোন ‘অপো এ৫ প্রো’ রেকর্ড গড়া পারফরম্যান্স করেছে বলে জানিয়েছে বৈশ্বিক প্রযুক্তি কোম্পানি অপো।
কোম্পানিটি শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, আগের জেনারেশনের ডিভাইসের তুলনায় নতুন স্মার্টফোনটি ৪৫০ শতাংশ বেশি বিক্রয় প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা বাংলাদেশের বাজারে অপোর ধারাবাহিক সফলতার নির্দেশক। তাৎপর্যপূর্ণ এ প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের বাজারে অপোর ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি এবং ব্রান্ডটির প্রতি গ্রাহকদের গভীর আস্থা ও আনুগত্যের প্রতিফলন।
অপো প্রতিনিয়ত স্মার্টফোন প্রযুক্তির অভিনব উদ্ভাবনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোম্পানিটির ‘অপো এ৫ প্রো’ ডিভাইসের ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। ফোনটি নিত্যদিনের বৈচিত্র্যময় চাহিদা পূরণে ভোক্তাদের আধুনিক ও উন্নত সব ফিচার ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে।
কোম্পানির কর্মকর্তা ও গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া
বিজ্ঞপ্তিতে অপো এ৫ প্রোর বিক্রয় নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা ও একাধিক গ্রাহকের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেছে অপো।
ডিভাইসটির প্রথম দিনের বিক্রয়ের বিষয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে অপো বাংলাদেশ অথরাইজ এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেমন ইয়াং বলেন, ‘এ সফলতা অপোর প্রতি বাংলাদেশি গ্রাহকদের আস্থা ও আগ্রহের বিষয়টিই সফলভাবে চিত্রিত করছে। তাদের প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো অভিনব পণ্য উদ্ভাবন ও সেবা প্রদানে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
একটি বেসরকারি প্রকৌশল কোম্পানিতে চাকরিরত তারেক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ অপোর নতুন ডিভাইস নিয়ে তার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, ‘অপো এ৫ প্রোর ওয়াটারপ্রুফ, ডাস্টপ্রুফ এবং শকপ্রুফ ফিচার আমার সবচেয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
‘আমি এ রকম একটি টেকসই ও সহনশীল স্মার্টফোনের জন্য দীর্ঘদিন অপেক্ষা করছিলাম এবং আমার অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। স্মার্টফোনটি কিনতে পেরে আমি সত্যিই আনন্দিত।’
আরেক গ্রাহক শারমিন আক্তার বলেন, “ঈদের আগে আমি একটি মোবাইল কেনার কথা ভাবছিলাম। এ ক্ষেত্রে স্মার্টফোনের দারুণ ডিজাইন ও উন্নত ফিচারগুলো আমার অগ্রাধিকারে ছিল।
“আমার মতে, বাজারের একই ঘরনার ফোনগুলোর মধ্যে এ বিষয়গুলোতে ‘অপো এ৫ প্রো’ই সেরা। ফোনটি পছন্দ করতে পেরে মনে হচ্ছে আমি সঠিক মোবাইলটিই বেছে নিয়েছি।”
নতুন ডিভাইসের ফিচার
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘অপো এ৫ প্রো’ বিশ্বের প্রথম স্মার্টফোন, যেটি আইপি৬৬, আইপি৬৮ এবং আইপি৬৯ রেটিং অর্জন করেছে। ডিভাইসটি পানি, ধুলা ও যেকোনো ধরনের শক থেকে সুরক্ষিত। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মোবাইলটির অনন্য স্থায়িত্ব।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, মোবাইলটিতে সংযুক্ত আছে মিলিটারি গ্রেডের ইমপ্যাক্ট রেজিস্ট্যান্স প্রযুক্তি। পাশাপাশি ডিভাইসের মাদারবোর্ড থার্মাল কনডাকটিভিটি বৃদ্ধি করে এবং আগের জেনারেশনের স্মার্টফোনের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি সক্ষমতা প্রদান করে। মোবাইলটি এক হাজার বেন্ডিং টেস্টও উতরে গেছে। অর্থাৎ প্রতিদিনের যেকোনো পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে এটি ব্যবহার উপযোগী।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, স্মার্টফোনটি নান্দনিক ফটোগ্রাফির জন্য অনন্য। এতে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তথা এআই সংবলিত উন্নত ফিচার। ডিভাইসটিতে এআই ইরেজার ২.০ ব্যবহার করে সহজেই ছবিতে থেকে অপ্রয়োজনীয় বস্তু মুছে ফেলা যায়। এআই রিফ্লেকশন রিমুভার ব্যবহার করে অযাচিত রিফ্লেকশন সরিয়ে দেওয়া যায়।
এ ছাড়া এআই আনব্লার ফিচার ব্লারি বা অস্পষ্ট ছবিকে আরও স্পষ্ট করে তুলতে সাহায্য করে।
দাম
অপো জানায়, দেশজুড়ে রিটেইল স্টোর এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে স্মার্টফোনটি ২৩ হাজার ৯৯০ টাকায় ৮জিবি+২৫৬ জিবি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে।
বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে অপোর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলোতে।
আরও পড়ুন:জনপ্রিয় বৈশ্বিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘অপো’ পবিত্র রমজান মাসে গ্রাহকদের জন্য বিশেষ ‘ঈদ মেগা গিফট ক্যাম্পেইন’ ঘোষণা করেছে।
১৩ মার্চ থেকে শুরু হয়ে সারা দেশে অপোর আউটলেটগুলোতে বিশেষ এ ক্যাম্পেইন চলবে ঈদের দিন পর্যন্ত।
ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ক্রেতারা তাদের চাহিদা উপযোগী দারুণ সব ডিল ও অফার উপভোগ করতে পারবেন।
এ বছর অপো ভোক্তাদের জন্য ‘মেগা’ লটারি অফার ঘোষণা করেছে। এতে অংশ নিয়ে ক্রেতারা ১ লাখ টাকা সমমূল্যের গৃহস্থালি উপকরণ (হোম অ্যাপ্লায়েন্স), অপো প্যাড, অপো ওয়াচ অথবা ‘বাই ১, গেট ওয়ান ১’, ডিল উপভোগ করতে পারবেন।
এ ছাড়াও অপো সব ক্রেতার জন্যই বিশেষ ও নিশ্চিত উপহারের ঘোষণা দিয়েছে, যাতে করে সবাই এ আনন্দের ভাগিদার হতে পারেন। নির্দিষ্ট কিছু মডেলের স্মার্টেফোন কিনেও গ্রাহকরা উপহারের ভাগিদার হতে পারবেন। যেমন- ‘রেনো১২এফ’-এর সঙ্গে বিশেষ হুডি, ‘রেনো১৩এফ’-এর সঙ্গে বিশেষ ব্যাগ এবং নতুন বাজারে আসা ‘এ৫ প্রো’র সঙ্গে ‘অপো সুপার শিল্ড কার্ড’ পাবেন তারা।
অপো বাংলাদেশ, অথরাইজ এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেমন ইয়াং বলেন, “আমাদের গ্রাহকদের সেরা সেবা দিতে অর্থাৎ কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স বৃদ্ধিতে অপো প্রতিনিয়ত অভিনবভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির স্মার্টফোন উপভোগের মাধ্যমে এই ঈদে তারা অসাধারণ সব পুরস্কার জিতে নিতে পারবেন। ‘এ৫ প্রো’র উন্মোচন এবং মেগা গিফট ক্যাম্পেইনের এই ঘোষণা ভোক্তাদের রমজান উদযাপনে বাড়তি মাত্রা যোগ করবে। অপোভক্তদের সঙ্গে এই বিশেষ উপলক্ষ যুক্ত করতে পেরে আমরা আনন্দিত।”
একটি অনলাইন লটারির মাধ্যমে মেগা গিফট লটারির বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে এবং তা অপো এ৩এক্স, এ৬০, রেনো সিরিজ এবং নতুন লঞ্চ হওয়া অপো এ৫ প্রোসহ বিভিন্ন ডিভাইসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এ ক্যাম্পেইন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ক্রেতাদের নিকটস্থ অপো আউটলেট পরিদর্শনের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
আকর্ষণীয় ঈদ অফার ও অন্যান্য তথ্য পাওয়া যাবে অপো বাংলাদেশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/OPPOBangladesh এবং ওয়েবসাইটে website https://www.oppo.com/bd/।
আরও পড়ুন:অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজধানী ঢাকায় এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের বাজারে এসেছে বৈশ্বিক প্রযুক্তি ব্র্যান্ড অপোর নতুন স্মার্টফোন ‘অপো এ৫ প্রো’।
‘প্রোডাক্ট অ্যাম্বাসেডর’ হিসেবে এ ডিভাইসের সঙ্গে রয়েছেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ।
অপোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘অপো এ৫ প্রো’ বাংলাদেশের প্রথম স্মার্টফোন যেটি আন্তর্জাতিকভাবে সার্টিফিকেশনের পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ‘টপ-রেটেড ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স এবং ড্রপ টেস্টে সফলতা দেখিয়েছে।
এ স্মার্টফোনে আছে ‘আইপি৬৯’, ‘আইপি৬৮’ এবং ‘আইপি৬৬’ রেটিংস, যা পানি ও ধুলা থেকে মোবাইলকে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়। এ ছাড়া ডিভাইসটির ফাইবার গ্লাস লেদার ডিজাইন যেমন দেখতে দৃষ্টিনন্দন, তেমনই এটি যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশ, যেমন- পানি, উচ্চ-চাপ এবং ধুলাবালি থেকে স্মার্টফোনকে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়।
ফ্ল্যাগশিপ-লেভেল ওয়াটারপ্রুফিং এবং মিলিটারি গ্রেডের শক রেজিস্ট্যান্স
অপো জানায়, স্মার্টফোনের টেকসইতা বা স্থায়িত্বে ‘অপো এ৫ প্রো’ নতুন মানদণ্ড দাঁড় করিয়েছে। এ মোবাইলে আছে, ‘আইপি৬৯’, ‘আইপি৬৮’ এবং ‘আইপি৬৬’ এর তিন লেয়ারের নিরাপত্তা, যা ডিভাইসে পানি প্রবেশ, ধুলো জমা হওয়া এবং ‘হাই প্রেশার স্প্রে’র মতো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ফোনকে নিরাপত্তা দেয়।
অপোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘অপো এ৫ প্রো’র ওয়াটারপ্রুফিং সিস্টেমে আছে সিলিকন রিংস এবং অ্যাডহেসিভ ম্যাটেরিয়াল। এটি সাইড অপেনিং রুদ্ধ করে এবং এয়ার টাইট ব্যারিয়ার তৈরি করে। এ ছাড়া স্মার্টফোনের ডুয়েল-লেয়ার সিলিং সিস্টেম মোবাইলের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের সুরক্ষা দেয়। পাশাপাশি মাইক্রোপোরাস ‘পেট সল্যুশন’ পানি থেকে মাইক্রোফোনকে নিরাপদ রাখে।
‘অপো এ৫ প্রো’তে আরও রয়েছে মিলিটারি গ্রেডের শক রেজিস্ট্যান্স। এটি ১৪টি মিলিটারি-স্ট্যান্ডার্ড টেস্টে সফল হয়েছে অর্থ্যাৎ বৈরি পরিবেশেও স্মার্টফোনটি খাপ-খাইয়ে নিতে পারে।
এই ফোনে রয়েছে ডাবল-টেম্পার্ড গ্লাস, যা ১৬০ শতাংশ বেশি ড্রপ প্রটেকশন দিয়ে থাকে। এ ছাড়া অ্যালুমিনিয়াম অ্যালোয় ফ্রেম নিশ্চিত করে অধিকতর স্থায়িত্ব। একই সঙ্গে স্মার্টফোনের বাইনিক কুশনিং ক্যামেরা, মোটর এবং ব্যাটারিসহ অন্যান্য উপকরণের সুরক্ষা দেয়।
এআই প্রযুক্তি সংবলিত ফটোগ্রাফি এবং অধিকতর উন্নত প্রযুক্তির ক্যামেরা সিস্টেম
অপোর ভাষ্য, ‘এ৫ প্রো’ টেকসই ডিজাইনের পাশাপাশি ফটোগ্রাফির জন্য আদর্শ ডিভাইস। এতে রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এআই ফিচারগুলো যা কিনা ছবির গুণগত মান বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। ডিভাইসের ‘এআই ইরেজার ২.০’ ছবি থেকে অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলো মুছে ফেলে, ‘এআই রিফ্লেকশন রিমুভার’ প্রতিফলন দূর করে এবং ‘এআই আনব্লার’ ফিচার অস্পষ্ট ছবিকে আরও স্পষ্ট করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি ‘এআই ক্লিয়ারিটি এনহেন্সার’ ছবির স্বচ্ছতা বাড়িয়ে দেয় এবং ‘এআই স্টুডিও’ ছবিকে সৃজনশীল করতে ব্যবহারকারীদের সাহায্য করে। এ ছাড়া ‘এআই স্মার্ট ইমেজ মেটিং ২.০’ অ্যালবামের ডিজিটাল কনটেন্টগুলো সিঙ্গেল ট্যাপে শেয়ার ও কাস্টমাইজ করার সুযোগ দেয়।
‘অপো এ৫ প্রো’তে আরও রয়েছে ৫০ মেগাপিক্সেল সক্ষমতার আল্ট্রা ক্লিয়ার মূল ক্যামেরার পাশাপাশি ২ মেগাপিক্সেল পোর্ট্রেট ক্যামেরা ও ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। এসব সব ক্যামেরা গ্রাহকদের স্বচ্ছ, নিখুঁত, অকৃত্রিম ছবি তুলতে সাহায্য করে।
এ ছাড়া ডিভাইসটিতে ইন-বিল্ট ইমেজ অ্যালগরিদম ও পোর্ট্রেট মোড রয়েছে। ‘এআই পোট্রেট’ ডিটেইলড ও ব্যালেন্সড ছবি উপহার দেয়।
‘অপো এ৫ প্রো’ আন্ডারওয়াটার ফটোগাফিও সাপোর্ট করে। ফলে ফটোগ্রাফিপ্রেমীরা পানির নিচে প্রাণবন্ত ও স্পষ্ট ছবি তুলতে পারবেন।
‘আউটডোর মোড’
‘অপো এ৫ প্রো’ ঘরের বাইরে পেশাজীবীদের কথা ভেবে বিশেষভাবে ডিজাইন করা। ডিভাইসের ‘আউটডোর মোড’ দ্রুত নেটওয়ার্ক এক্সেসের জন্য নেটওয়ার্ক সেটিংস অপটিমাইজ করে এবং জরুরি কাজের অ্যাপগুলোর জন্য বাড়তি জায়গা বরাদ্দ করে এবং স্ক্রিন টাইমআউট বৃদ্ধি করে।
এ ছাড়া স্মার্টফোনটির ইন্টারফেস ওয়াটারপ্রুফ গ্লাভসসহ বিভিন্ন গ্লাভসের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। ফলে প্রতিকূল পরিবেশে নির্বিঘ্নে মোবাইলটি ব্যবহার করা যাবে।
ব্যাটারি সক্ষমতা
এ স্মার্টফোন রয়েছে ৪৫ ওয়াট সুপারভোগ স্মার্ট চার্জিং সমন্বয়ে ৫ হাজার ৮০০ এমএএইচ সক্ষমতার ব্যাটারি। ফলে ৭৬ মিনিটে ফোনটি পুরোপুরি চার্জ হয়। আগের মডেলের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি ব্যাটারি সক্ষমতা থাকায় এটি ৩৬ ঘণ্টা কল টাইম, ১৭ ঘণ্টা ইউটিউব প্লেব্যাক ও ২৮ ঘণ্টা অডিও প্লেব্যাক নিশ্চিত করে।
ডিভাইসটির মাধ্যমে একবার চার্জেই ৭ দশমিক ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত একটানা ‘মোবাইল লিজেন্ডস: ব্যাং ব্যাং’ গেমিং উপভোগ করা যায়। পাশাপাশি ‘চার বছরের বেশি টেকসই ব্যাটারি’ ফিচার সময়ের পরিক্রমায়ও ৮০ শতাংশের বেশি অরিজিনাল ব্যাটারি সক্ষমতা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
স্টোরেজ
‘অপো এ৫ প্রো’তে রয়েছে ৮ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজ সক্ষমতা। অপোর র্যাম এক্সপ্যানশন ফিচারের সমন্বয়ে এ সেটআপ র্যামের দ্বিগুণ পারফরম্যান্স ও নির্বিঘ্ন মাল্টিটাস্কিং নিশ্চিত করে। এ ছাড়া অপোর ট্রিনিটি ইঞ্জিন ব্যবহার করা ‘কালারওএস ১৫ লাইট’ সিস্টেমের স্ট্যাবিলিটি বা দৃঢ়তায় ভূমিকা রাখে।
ডিভাইসটি অপোর ‘৪৮ মাসের ফ্লুয়েন্সি প্রটেকশন সার্টিফিকেশন’ পেয়েছে, যা কিনা ৪ বছর পরও ডিভাইসের স্মুথ পারফরম্যান্সের নিশ্চয়তা দেয়।
ডিসপ্লের ক্ষেত্রে ১ হাজার নিটের আল্ট্রা ব্রাইট ডিসপ্লে সরাসরি সূর্যের আলোতেও পরিস্কার ভিজ্যুয়াল পেতে সাহায্য করে এবং ডুয়েল স্টেরিও স্পিকার এবং আল্ট্রা ভলিউম মোড ৩০০ শতাংশের বেশি প্রাণবন্ত অডিও-ভিজ্যুয়াল এক্সপেরিয়েন্স নিশ্চিত করে।
প্রি-অর্ডার অফার ও মূল্য
‘অপো এ৫ প্রো’ (৮জিবি + ১২৮ জিবি) অলিভ গ্রিন ও মোকা ব্রাউন রঙে পাওয়া যাচ্ছে এবং এটির প্রি-অর্ডার মূল্য ২৩ হাজার ৯৯০ টাকা। যেসব ক্রেতা প্রি-অর্ডার করবেন তারা একটি পোর্টেবল মিনি স্পিকারের সঙ্গে অপো সুপার শিল্ড কার্ড পাবেন, যেটি কি না ২ বছরের অফিশিয়াল ওয়ারেন্টি এবং ১ বছরের লিকুইড এবং দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিবিষয়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
এ বিষয়ে অপো বাংলাদেশ অথরাইজড এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেমন ইয়াং বলেন, “আমরা গ্রাহকদের কাছে অলরাউন্ড ‘অপো এ৫ প্রো’ পৌঁছে দিতে পেরে আনন্দিত। এটি ব্যবহারকারীদের একই সঙ্গে স্থায়িত্ব ও প্রিমিয়াম ফিচার দেবে।
“আমি মনে করি ডিভাইসটি উন্নত প্রযুক্তি ও টেকসইতার সমন্বয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে পারফরম্যান্সের একটি নতুন মানদণ্ড দাঁড় করাতে সক্ষম।”
আরও পড়ুন:বৈশ্বিক প্রযুক্তি কোম্পানি অপো। ব্র্যান্ডটির নতুন ডিভাইস ‘অপো এ৫ প্রো’র প্রোডাক্ট এক্সপেরিয়েন্স অ্যাম্বাসেডর হিসেবে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ক্রিকেট তারকা ও অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
এ তারকাকে সঙ্গে নিয়ে অপো ব্র্যান্ডটির প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের প্রতিশ্রুতিকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।
অপোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, মিরাজ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ব্যতিক্রমী ও বৈচিত্র্যময় খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত, যিনি অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দেখিয়ে থাকে। ঠিক তেমনই ‘অপো এ৫ প্রো’ও গ্রাহকদের অলরাউন্ড স্থায়িত্ব ও অলরাউন্ড এআই ক্যাপাবিলিটি দেবে। অর্থাৎ জীবনের বহুমুখী ক্ষেত্রে যারা অলরাউন্ড পারফরম্যান্স চান, ডিভাইসটি তাদের জন্য সর্বোত্তম সঙ্গী।
কোম্পানিটির ভাষ্য, নিজের ব্যক্তিগত স্মার্টফোনের কাছ থেকে যারা সবসময়ই বাড়তি পারফরম্যান্স আশা করেন, ‘অপো এ৫ প্রো’ ডিভাইসটি ঠিক তাদের জন্যই। মিরাজ যেভাবে খেলার মাঠের সর্বত্র অবদান রাখেন, তেমনি ‘অপো এ৫ প্রো’ স্টাইলিশ ডিজাইন ও সর্বত্রই পারফরম্যান্সের স্থায়িত্বের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের মন জয় করে নিতে সক্ষম। এই স্মার্টফোনের ওয়াটারপ্রুফিং ফিচার, শক্ত গড়ন, আস্থাযোগ্য পারফরম্যান্স দৈনন্দিন সব পরিবেশের চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।
অপো জানায়, ডিভাইসটির এআই-সক্ষমতার ক্যামেরা ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আশেপাশের সবকিছুর সঙ্গে খাপখাইয়ে নেয় এবং নিশ্চিত করে যে প্রতিটি শটই হোক নিখুঁত। এই ফোন এমনভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে, যাতে এটি দ্রুতগতির লাইফস্টাইলের সঙ্গে সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে পারে।
মেহেদী হাসান মিরাজ এ পার্টনারশিপ নিয়ে নিজের আগ্রহ ব্যক্ত করে বলেন, “আমি প্রযুক্তি ব্র্যান্ড অপো এবং তাদের অসাধারণ ডিভাইস ‘এ৫ প্রো’র প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আনন্দিত। আমি মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে যেখানেই থাকি না কেন, আমার পারফরম্যান্স এবং মনোবলের সঙ্গে এই ফোনের ভাবনাটা পুরোপুরি মিলে যায়।
“ক্রিকেটে যেমন পারফরম্যান্সের বৈচিত্র্যই মুখ্য, তেমনই ‘এ৫ প্রো’র অলরাউন্ড এআই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং স্থায়িত্ব এটিকে নানান প্রয়োজনে ব্যবহার উপযোগী করে আমার জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উদযাপনের সুযোগ করে দিচ্ছে।”
অপো বাংলাদেশ অথরাইজড এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডেমন ইয়াং বলেন, “‘অপো এ৫ প্রো’র প্রোডাক্ট এক্সপেরিয়েন্স অ্যাম্বাসেডর হিসেবে অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে পেয়ে আমরা আনন্দিত। অলরাউন্ডার হিসেবে তার প্রচেষ্টা ও মনোবল, ঠিক যেন ‘অপো এ৫ প্রো’রই স্থায়িত্ব, এআই সক্ষমতাসহ অলরাউন্ডার পারফরম্যান্সেরই প্রতিফলন। আমরা বিশ্বাস করি যে, ‘অপো এ৫ প্রো’ পারফরম্যান্স এবং স্টাইলের মিশেলে ‘গেমচেঞ্জার’ হিসেবে মার্কেটে জায়গা করে নেবে।”
ডিভাইসটি নিয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য অপোর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (https://www.oppo.com/en/) ভিজিট অথবা অথোরাইজড অপো রিটেইল শপ ঘুরে আসতে পারেন।
আরও পড়ুন:আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে হুয়াওয়ে নারী কর্মীদের জন্য একটি স্বাস্থ্য সচেতনতাবিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করেছে।
ঢাকায় হুয়াওয়ের সাউথ এশিয়া রিপ্রেজেনটেটিভ অফিসে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
এ বিশেষ উদ্যোগ কর্মীদের সুস্থতা ও একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে হুয়াওয়ের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।
হুয়াওয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই কর্মশালার লক্ষ্য ছিলো নারী কর্মীদের ইউরিনারি হেলথের ওপর কাউন্সেলিং প্রদান করা। কাউন্সেলিংয়ে বিশেষভাবে গুরুত্ব পায় ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই), যা নারীদের একটি সাধারণ সমস্যা।
ইউনাইটেড হসপিটালের চিকিৎসক সরকার কামরুন জাহান ঝিনুক এ সমস্যার ঝুঁকি, লক্ষণ, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও চিকিৎসার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘ইউরিনারি ট্র্যাক্টের ইনফেকশন জীবনযাপনের কিছু সাধারণ অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। প্রচুর পরিমাণে পানি পান, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, আটসাট পোশাক পরিহারের মাধ্যমে আর্দ্রতা ও ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে ইউটিআই হওয়ার সম্ভাবনা কমানো সম্ভব।’
হুয়াওয়ের এইচআর ডিরেক্টর লিনজিয়াও এ কর্মশালার সূচনা করেন। হুয়াওয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
লিনজিয়াও বলেন, “হুয়াওয়েতে আমরা কর্মদক্ষতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। একজন কর্মী পুরুষ বা নারী যাই হোক না কেন, আমরা তাকে তার দায়িত্বশীলতা ও কর্মদক্ষতার মানদণ্ড দিয়েই বিচার করি। আমরা দেখেছি যে, পুরুষ এবং নারী উভয়ই দক্ষতার সাথে কাজ করতে সক্ষম। হুয়াওয়ের কর্মীদের সুস্থতার দিকেও আমরা মনোযোগ দিয়ে থাকি।
‘তাই আমাদের কর্মীদের জন্য ওপিডি ও আইপিডি বিমার সুবিধা রয়েছে। আমরা কর্মীদের জন্য নিয়মিত স্বাস্থ্য সচেতনতাবিষয়ক কর্মশালারও আয়োজন করি। আজকের কর্মশালা নারী কর্মীদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে।’
হুয়াওয়ের ভাষ্য, প্রতিষ্ঠানটি অন্তর্ভুক্তি ও ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি মাসে কর্মক্ষেত্রে বায়ু, পানি ও খাবারের গুণমান পরীক্ষা করার মতো উদ্যোগের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করে। এ ছাড়া হুয়াওয়ের পরিবেশ, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাবিয়ষক নীতি অনুযায়ী নিয়মিত ফায়ার ড্রিলসেরও আয়োজন করা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন:বিকাশ ও হুয়াওয়ে ডিজিটাল লোন সেবা চালুর স্বীকৃতি হিসেবে জিএসএমএ গ্লোমো ‘বেস্ট ফিনটেক ইনোভেশন’ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে।
বার্সেলোনায় আয়োজিত মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে (এমডব্লিউসি) প্রতিষ্ঠান দুটিকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
গ্লোমো ‘বেস্ট ফিনটেক ইনোভেশন’ অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে আর্থিক প্রযুক্তি খাতের সেই সব যুগান্তকারী স্বীকৃতি দেওয়া হয় যেগুলো জনসাধারণ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সেবার পরিচালনা ও ব্যবহারের প্রক্রিয়াকে রূপান্তরিত করে।
বিকাশ ও হুয়াওয়ে বাংলাদেশে ‘পে লেটার’ সেবা প্রদানে অগ্রগামী ভূমিকা রেখেছে। এ উদ্যোগ ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীকে স্বল্পমেয়াদি ক্ষুদ্র ঋণের সুবিধা দিয়ে তাদের দৈনন্দিন খরচের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করেছে।
২০১৮ সালে যাত্রা শুরুর পর থেকে বিকাশ বাংলাদেশের ৬১ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির কাছে আর্থিক সেবা পৌঁছে দিয়েছে। তবে এখনও ৩৭ শতাংশ নাগরিক জরুরি প্রয়োজনের জন্য উচ্চ সুদের ঋণদাতাদের ওপর নির্ভরশীল। এ ছাড়া মাত্র ৯ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করে থাকে।
বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিকাশ হুয়াওয়ের সহযোগিতায় ‘পে লেটার’ সেবা চালু করে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশকে তাৎক্ষণিকভাবে ও কাগজের ব্যবহার ছাড়াই ক্ষুদ্র ঋণ ও ডিজিটাল পেমেন্টের সুবিধা দেওয়া সম্ভব হয়।
এ সেবা বিশেষভাবে গ্রামাঞ্চলের নারী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক উদ্যোক্তাদের সাহায্য করেছে। এটি তাদের মূলধন সংগ্রহ ও দারিদ্র্য হ্রাসে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি স্থানীয় ই-কমার্সকে প্রসারিত করেছে।
বিকাশের চিফ প্রোডাক্ট অ্যান্ড টেকনোলজি অফিসার (সিপিটিও) মোহাম্মদ আজমল হুদা বলেন, “হুয়াওয়ের মোবাইল মানি প্ল্যাটফর্মের সুবিধাগুলোকে কাজে লাগিয়ে আমরা ২০টিরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ পেমেন্ট সেবা দ্রুত প্রসারিত করার পাশাপাশি ‘পে লেটার’ মাইক্রো ফিন্যান্সিয়াল সেবা চালু করেছি। এই উদ্যোগ লক্ষ লক্ষ মানুষের আর্থিক স্বাবলম্বিতা অর্জনে ভূমিকা রেখেছে ও বাংলাদেশে সর্বজনীন আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে আরও ত্বরান্বিত করেছে।”
হুয়াওয়ের সফটওয়্যার বিজনেস ইউনিটের প্রেসিডেন্ট মরিস মা বলেন, “বিকাশের সাথে যৌথভাবে
গ্লোমো বেস্ট ফিনটেক ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড অর্জন করতে পেরে আমরা সম্মানিত বোধ করছি। সেবা ও পণ্য উদ্ভাবনে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার মাধ্যমে আমরা আমাদের গ্রাহকদের সক্ষমতাকে বৃদ্ধির চেষ্টা চালিয়ে যাব যাতে আমাদের গ্রাহক আরও বেশি ব্যবসায়িক সাফল্য খুঁজে পায় ও সামাজিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে পারে।”
গত এক দশকে হুয়াওয়ের মোবাইল মানি সল্যুশন ৪০টিরও বেশি দেশে ৪৮ কোটিরও বেশি ব্যবহারকারীকে আর্থিক সুবিধা দিয়েছে। এতে রয়েছে বিশেষ ক্লাউড-নেটিভ ডিস্ট্রিবিউটেড আর্কিটেকচার, যা প্ল্যাটফর্মের ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ নির্ভরযোগ্যতা ও সীমাহীন সম্প্রসারণ সক্ষমতা নিশ্চিত করে ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিরবচ্ছিন্ন থাকে।
শক্তিশালী ডেটা ও এআই ইঞ্জিনের সাহায্যে হুয়াওয়ে মোবাইল মানি দ্রুত ও কার্যকরভাবে আর্থিক ঝুঁকি বিশ্লেষণের পাশাপাশি আয়ের প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করে। এ প্ল্যাটফর্মের উন্মুক্ত অবকাঠামো যেমন নতুন ব্যবসায়িক উদ্ভাবনকে বিকশিত করে, তেমন এটি ডিজিটাল লাইফস্টাইলকে ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীদের জন্য আরও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ ও উন্নত আর্থিক সেবা নিশ্চিত করে।
স্পেনের বার্সেলোনায় ৩ মার্চ থেকে ৬ মার্চ পর্যন্ত মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস (এমডব্লিউসি) অনুষ্ঠিত হয়। হুয়াওয়ে এ ইভেন্টে ফিরা গ্রান ভিয়া হল ১-এ স্ট্যান্ড ওয়ান এইচ ফিফটিতে প্রতিষ্ঠানটির সর্বাধুনিক পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করে। ২০২৫ সালে বাণিজ্যিকভাবে ফাইভজি-এডভান্সড প্রযুক্তির ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি পাবে এবং এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) টেলিকম অপারেটরদের ব্যবসা, অবকাঠামো, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ পদ্ধতিকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
একটি বুদ্ধিবৃত্তিক/ইনটেলিজেন্ট বিশ্ব গঠনের লক্ষ্যে দ্রুত অগ্রসর হওয়ার জন্য হুয়াওয়ে বিভিন্ন টেলিকম অপারেটর ও সহযোগীদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য