ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম কারও ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি করে না বলে দাবি করেছেন এ দুই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ‘মেটা’।
পাকিস্তানের ইসলামাবাদের সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে মেটার এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রাইভেসি ও পাবলিক পলিসি ব্যবস্থাপক আরিয়ান জিমেনেজ এ কথা জানান বলে জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ব্যবহারকারীদের তথ্য সংরক্ষণ ও নিরাপত্তার জন্য কর্মীদের প্রশংসা করেন আরিয়ান।
মেটার এই প্রতিনিধি জানান, কারও ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা দেয়াই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য। এ জন্য বেশ কিছু নীতিমালা মেনে চলা হয়।
তিনি বলেন, মেটা মানুষকে বিশেষ সরঞ্জাম এবং বৈশিষ্ট্যগুলোর মাধ্যমে তাদের গোপনীয়তা এবং সুরক্ষার ওপর আরও নিয়ন্ত্রণ দেয়।
আরিয়ান বলেন, আমাদের অংশীদার এবং তৃতীয় পক্ষ যারা নির্দিষ্ট তথ্য পেয়ে থাকেন, তারা কীভাবে তথ্য ব্যবহার করবেন এবং প্রকাশ করা যাবে কি না, সে সম্পর্কে নিয়ম অনুসরণ করতে হয়।
ব্যবহারকারীর স্বার্থে তাদের সামাজিক মাধ্যমে কেউ কোনো পোস্ট করলে তা সম্পাদনা কিংবা মুছে দেয়ার সুযোগ রয়েছে, যা নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে জানান তিনি।
এর আগেও বিভিন্ন সময় ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের তথ্য অন্য কারও কাছে না দেয়ার কথা জানান মেটার প্রতিনিধি আরিয়ান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার নামে প্রচুর ফেক আইডি খোলা হয়েছে জানিয়ে ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি লেখক তসলিমা নাসরিন বলেছেন, রিপোর্ট করেও এই সমস্যার সমধান পাচ্ছেন না।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া এক পোস্টে এ নিয়ে কথা বলেন তিনি।
তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, আমার নামে ফেক আইডি প্রচুর এই ফেসবুকে। ইদানিং এক ফেক আইডিকে আমার আইডি ভেবে আমার অনেক বন্ধুরাও বিশ্বাস করছে।
তিনি লিখেছেন, ফেক আইডিটি যে বানিয়েছে, সে এমন ধুরন্ধর যে, মানুষকে বোকা বানাবার জন্য আমার রিয়েল আইডির প্রোফাইল পিকচার তো ইউজ করেছেই, বিপুল পরিমাণ ফলোয়ার সংখ্যা বসিয়ে দিয়েছে ওয়ার্কের জায়গায়।
তসলিমা পোস্টে লিখেছেন, ফেসবুককে অনেকদিন রিপোর্ট করেও কাজ হচ্ছে না। তবে আমার রিয়েল আইডির বিরুদ্ধে ফেসবুকে রিপোর্ট করলে বেশ কাজ হয়। আমার আইডিতে রিমেম্বারিং স্টিকার জুড়ে দেয়া হয়, অর্থাৎ আমি মরে গেছি। অথবা আমার পোস্টের রিচ জিরো করে দেয়া হয়।
সুইডেনের পাসপোর্টধারী হিসেবে দিল্লিতে বসবাস করছেন তসলিমা। ১৯৯৪ সালে তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে তখন আন্দোলনের মুখে পড়তে হয় তাকে।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য শিখন ব্যবস্থাপনা অ্যাপ তৈরি করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে উপজেলা প্রশাসন।
কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সোহেল রানার উদ্ভাবিত মোবাইল অ্যাপ ‘শিক্ষায়তন’ ব্যবহার করে উপজেলা ও জেলার বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের শিখন ব্যবস্থাপনায় এনেছে অভাবনীয় পরিবর্তন। রুটিন থেকে শুরু করে লেসন প্ল্যান, শিক্ষা সহায়ক ডিজিটাল উপকরণসহ শিখন কার্যক্রমের পুরোটা এখন চলছে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে।
নতুন বছরের শুরুতে অ্যাপ ভিত্তিক শিখন শেখানো কার্যক্রম হাতের মুঠোয় পেয়ে খুশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নেও এ অ্যাপ হতে পারে দারুণ সহায়ক।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বর্তমানে কুমিল্লার ৫টি স্কুলে বাস্তবায়নাধীন আছে সফটওয়্যারটি। স্কুল ৫টি হলো কুমিল্লার কালেক্টরেট স্কুল, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলাধীন শিদলাই আশরাফ স্কুল, ভগবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ওশান হাই স্কুল এবং সদর দক্ষিণ উপজেলার শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল এন্ড কলেজ। মূলত এই প্ল্যাটফর্মে স্কুলের সব কার্যক্রম মোবাইল অ্যাপে করতে পারবেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
ইউএনও সোহেল রানা বলেন, ‘লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের ধারণাটি বেশ পুরনো। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্যানভাস, মুডল, স্কুলজি, ব্ল্যাকবোর্ড ইত্যাদি নানা ধরনের লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার আছে। এগুলো স্কুল ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার থেকে কিছুটা ভিন্ন ধাচের। তবে নানা ধরনের সফটওয়্যার এর ডিজাইন বিশ্লেষণ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন আঙ্গিকে সফটওয়্যারটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
‘সফটওয়্যার প্রস্তুত ও স্কুলে বাস্তবায়নের এই উদ্যোগের প্রধান পৃষ্ঠপোষক কুমিল্লার সাবেক ও বর্তমান জেলা প্রশাসক। আমাদের প্রণীত ডিজাইনে সফটওয়্যারটি প্রস্তুত করেছে বিজনেস একসিলারেট লিমিটেড নামে এক কোম্পানি। প্রথমে আমরা কুমিল্লার সব স্কুলে এটি বাস্তবায়ন করতে চাই ও পরবর্তীতে সরকার বড় পরিসরে পুরো বাংলাদেশে এটি ছড়িয়ে দিতে পারে। শিক্ষার মানোন্নয়নে ও সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নেও এটি সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এটি বাস্তবায়নের অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আছে যেগুলো মোকাবিলা করে সামনে এগুতে হবে।’
সাবেক জেলা প্রশাসক ও বর্তমানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব জনাব মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘আমি জেলা প্রশাসনে যোগ দেয়ার পর থেকেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করে আসছি। কাজ করতে গিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাপনাকে যুগোপযোগী করে তোলার কথা মাথায় আসে। ব্রাহ্মণপাড়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল রানা শিক্ষাক্ষেত্রে লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আধুনিকায়নের কথা বললে আমরা সেই অভাব পূরণের লক্ষ্যে লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তৈরি করার উদ্যোগ গ্রহণ করি এবং পরবর্তীতে তা প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেই। সেখান থেকেই মূলত শিক্ষায়তনের যাত্রা শুরু।’
শিক্ষায়তনের টেকনিক্যাল বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা বিজনেস একসিলারেটের সিইও কামরুল হাসান সুমন বলেন, ‘এ ধরনের সফটওয়্যারের ব্যবহার দেশে নেই। দেশে প্রচলিত সফটওয়্যারগুলোতে ক্লাসরুমে কী পড়ানো হচ্ছে সে বিষয়টি সংযোগ করার অপশন কম। শিক্ষায়তনের মাধ্যমে অভিভাবক, শিক্ষার্থীরা জানতে পারবেন তার বাচ্চারা কী পড়ছে। যেগুলো আছে (যেমন টেন মিনিট স্কুল) তাদের অধিকাংশ কনটেন্ট নির্ভর সেবা দেয়। আমাদের এই সফটওয়্যার কনটেন্ট নির্ভর নয়।
‘জেলা প্রশাসনের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে এরকম সফটওয়্যার এর ডিজাইন অভাবনীয়। আমরা এই উদ্যোগের অংশীদার হতে পেরে গর্বিত এবং ভবিষ্যতে এটিকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই।’
উপজেলার ভগবান সরকারি স্কুলে শিক্ষায়তন বাস্তবায়ন করছেন বিজ্ঞান শিক্ষক মহিউদ্দিন পলাশ। তিনি জানান, শিক্ষায়তন এমন একটি সফটওয়্যার যেখানে এক কথায় শ্রেণি কার্যক্রমের সবকিছু রয়েছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মোবাইলের মাধ্যমে উন্নতমানের শিক্ষা সেবা গ্রহণ করতে পারবে। অ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষকদের কাজ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। বিশেষ করে তাদের টিচিং প্ল্যান সাজানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের বাজারে জি-টাইড ব্র্যান্ডের ব্লুটুথ কলিং স্মার্ট ওয়াচ এনেছে ব্র্যান্ডটির বিপণন প্রতিষ্ঠান মোশন ভিউ লিমিটেড।
ফেসবুক লাইভে শনিবার বিকেলে ‘জি-টাইড এস-১ লাইট’ মডেলের স্মার্টওয়াচটি উন্মোচন করা হয়।
লাইভে মোশন ভিউয়ের পক্ষ থেকে স্মার্টওয়াচের ফিচার ও সুবিধাগুলো নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
উন্মোচনের ক্ষণে লাইভে যুক্ত হয়ে বেশ কয়েকজন জিতে নেন জি-টাইড এস-১ লাইট, আকর্ষণীয় গিফট ও অফিশিয়াল টি-শার্ট।
৩০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারির স্মার্টওয়াচটিতে থাকা বিভিন্ন ফিচারে ২৪ ঘণ্টা হার্ট রেট মনিটর, ঘুমের কোয়ালিটি পর্যবেক্ষণ, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা, দেহের তাপমাত্রা পরিমাপসহ আরও নানা সুবিধা রয়েছে। একবার ফুল চার্জে টানা ৭ দিন ব্যবহার করা যাবে ডিভাইসটি।
আয়াতাকার ওয়াচে ২.৫ডি কার্ভ শেপের ১ দশমিক ৮৫ ইঞ্চি আকারের ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে। ওয়াচটিকে জিটি ফিট প্রো অ্যাপের মাধ্যমে যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড কিংবা আইফোনের সঙ্গে ব্লুটুথের মাধ্যমে সংযুক্ত করা যাবে।
স্মার্ট ঘড়িটির অন্যতম বিশেষত্ব হলো এতে থাকা ব্লুটুথ কলিং ফিচার। মোবাইলে সংযুক্ত থাকা অবস্থায় সরাসরি এই ওয়াচ থেকেই কল রিসিভ বা কাউকে কল করা যাবে।
এ ছাড়া ফোনে আসা সব নোটিফিকেশন স্মার্টওয়াচ থেকেই দেখা যাবে। একই সঙ্গে প্রয়োজনে মেসেজের রিপ্লাইও দেয়া যাবে।
নানা ধরনের সেন্সরযুক্ত জি-টাইড ব্র্যান্ডের স্মার্টওয়াচে ১০০টির বেশি স্পোর্টস মোড যুক্ত রয়েছে। হার্ট রেট মনিটরের মতো আরও কিছু হেলথ ফিচার রয়েছে এতে।
স্মার্ট ওয়াচটিতে আইপি-৬৮ গ্রেডের ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স থাকায় এটি হাতে থাকা অবস্থায় সাঁতার কাটা যাবে।
মোশন ভিউ জানায়, শনিবার থেকেই দেশব্যাপী প্রতিষ্ঠানটির সব আউটলেট, অনুমোদিত রিটেইল পয়েন্ট ও অনলাইনে স্মার্টওয়াচটি পাওয়া যাবে।
১২ মাসের ওয়ারেন্টি সুবিধাসহ স্মার্টওয়াচটির কালো রঙের ভার্সনটির দাম ৩ হাজার ৪৯০ টাকা। ধূসর রঙের সংস্করণের দাম পড়বে ৩ হাজার ৬৯০ টাকা।
উভয় সংস্করণের সঙ্গে একটি অতিরিক্ত স্ট্র্যাপ ও একটি অফিশিয়াল ট-শার্ট বিনা মূল্যে পাওয়া যাবে।
জি-টাইড ব্র্যান্ডের আরেকটি মডেলের স্মার্টওয়াচ (আর-১) এবং লে-১ মডেলের ওয়্যারলেস ইয়ারফোনও বাজারে পাওয়া যায়।
দেশব্যাপী ৬৪ জেলায় মোশন ভিউয়ের বিপণন চালু আছে। নিজস্ব ২৭টি ব্র্যান্ড আউটলেট, ২ হাজারের বেশি রিটেইল ও অনলাইনে তাদের পণ্য পাওয়া যায়।
বিভিন্ন ধরনের ব্র্যান্ডের অরিজিনাল স্মার্ট গ্যাজেট (যেমন: স্মার্ট ওয়াচ, ইয়ারফোন, স্মার্ট টিভি, স্মার্ট হোম অ্যাপ্লায়েন্স ইত্যাদি) গ্রাহকের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি সেগুলোর ক্ষেত্রে পূর্ণ বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
আরও পড়ুন:ডিজিটাল কানেকটিভিটি তথা ইন্টারনেট সংযুক্তিকে স্মার্ট বাংলাদেশের চাবিকাঠি আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এর ভিত্তিতেই বিনির্মাণ হবে স্মার্ট সমাজ।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার সকালে ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলার উদ্বোধন উপলক্ষে ডিডিওবার্তায় তিনি এ কথা বলেন। খবর বাসসের।
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নানা পণ্য ও সেবা তুলে ধরতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় তিন দিনের এ মেলার আয়োজন করে।
এ উপলক্ষে দেয়া ভিডিওবার্তায় স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য ডিজিটাল কানেকটিভিটির গুরুত্ব তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চাবিকাঠি হবে ডিজিটাল কানেকটিভিটি। এর ভিত্তিতেই স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ তৈরি হবে।
বক্তব্যে ডিজিটাল পণ্য বাংলাদেশে বিনিয়োগ সহায়ক হওয়ার পাশাপাশি রপ্তানি বৃদ্ধিতে অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তবতা। পরবর্তী প্রজন্মের হাত ধরে গড়ে উঠবে স্মার্ট বাংলাদেশ ও স্মার্ট জাতি। সে লক্ষ্য পূরণে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই।
সরকারের লক্ষ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অফ থিংস, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটি, রোবোটিকস ও বিগ ডেটার মতো ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে সরকার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে চায়। তিনি বলেন, সরকার শিল্পাঞ্চলগুলোতে ফাইভজি সেবা নিশ্চিত করতে চায়।
ডিজিটালাইজেশনে বাংলাদেশে বিপ্লব ঘটে গেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরুণ প্রজন্ম এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন রাঙ্গামাটি জেলার বেতবুনিয়ায় দেশের প্রথম স্যাটেলাইট আর্থ স্টেশন স্থাপন করেন, যার মাধ্যমে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচনী অঙ্গীকারে রূপকল্প-২০২১ ঘোষণা করেছিল, যার মূল লক্ষ্য ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশি জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা। সরকার ২০১৮ সালে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ কক্ষপথে উৎক্ষেপণ করেছে, যা সম্প্রচার ও টেলিযোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।
দেশে মোবাইল ব্যবহার পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে ১৮ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহার করা হচ্ছে, যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি।’
তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলের মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ডিজিটাল বৈষম্য এবং দামের পার্থক্য দূর করা হয়েছে।’
প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “সারা দেশে ‘এক দেশ এক দরের’ একটি সাধারণ শুল্ক চালু করা হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে টেলিযোগাযোগ খাতে প্রশংসনীয় কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ১৪ ক্যাটাগরিতে ২২ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে নতুন প্রবর্তিত পোস্ট অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:বড় পরিসরে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছে একের পর এক টেক জায়ান্ট। মেটা, অ্যামাজনসহ আরও কিছু কোম্পানির হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণার পর একই পথে হেঁটেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কভিত্তিক বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল বিজনসে মেশিন (আইবিএম) করপোরেশন।
নগদ অর্থের বার্ষিক রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় স্থানীয় সময় বুধবার ৩ হাজার ৯০০ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
আইবিএমের চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার (সিএফও) জেমস কাভানাহ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, বড় ধরনের ছাঁটাইয়ের পরও গ্রাহকমুখী গবেষণার জন্য এখনও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কোম্পানিটি।
ছাঁটাইয়ের ঘোষণার পর পুঁজিবাজারে আইবিএমের শেয়ারের ২ শতাংশ দরপতন হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শেয়ারদরের পতনের নেপথ্যে রয়েছে চাকরিচ্যুতি এবং তারল্যের রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার খবর।
অর্থবাজারবিষয়ক সাইট ইনভেস্টিং ডটকমের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক জেসে কোহেন বলেন, দৃশ্যত মনে হচ্ছে, আইবিএমের ঘোষিত ছাঁটাই নিয়ে অর্থবাজার সংশ্লিষ্টরা হতাশ। কোম্পানিটি তাদের মোট জনবলের দেড় শতাংশ ছাঁটাই করেছে।
তার ভাষ্য, আইবিএমের কাছে ব্যয় সংকোচনের আরও কড়া পদক্ষেপ আশা করেছিলেন বিনিয়োগকারীরা।
গত বছরের জন্য তারল্যের বার্ষিক রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার কোটি ডলার নির্ধারণ করেছিল আইবিএম, তবে কোম্পানিটি ৯৩০ কোটি ডলার রিজার্ভ রাখতে সক্ষম হয়েছিল।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত বাস চলাচলের সময় বা কখন কোন রুটে কোন বাস চলছে তা জানাতে একটি ফেসবুক চ্যাটবট আছে। ‘ডিইউ মামাবট’ নামে মেসেঞ্জারভিত্তিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন এ চ্যাটবট তৈরি করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের দুই ছাত্র মেহেদি হাসান ও আজিজুল হাকিম।
শুধু কি বাসের সময় বা এসব তথ্য? না, এর বাইরেও ওই চ্যাটবটে প্রশ্ন করলে উত্তর মেলে। এই যেমন, যদি জিজ্ঞেস করেন, মামা কেমন আছেন? চ্যাটবটটি মুহূর্তেই উত্তর দেয়- ‘মামা সেই ভাল আছি!! আপনে কেমন আছেন মামা?’
আসলে প্রযুক্তি এখন এগোতে এগোতে এমন এক জায়গায় পৌঁছেছে, অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে মানুষকে তেমন একটা মাথা খাটাতে হচ্ছে না। এতদিন ধরে গুগল বা এমন কিছু সার্চ ইঞ্জিনে এসব সুবিধা মিলতো। তবে এবার এই কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তায় নতুন করে যোগ দিয়েছে ‘চ্যাট জিপিটি।’
চ্যাট জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফরমার বা চ্যাট জিপিটি হলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স রিসার্চ কোম্পানি ওপেন এআইয়ের একটি চ্যাটবট। মানুষের কথা বলার ভাষা বুঝতে পারে এই এআই চ্যাটবটটি।
সহজ ভাষায় বলতে গেলে গুগলে যেমন অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলে খুব সহজেই, সেই সহজ ব্যবস্থাটি আরও সহজ ও উন্নত হয়ে এসেছে চ্যাটবট চ্যাট জিপিটিতে।
বিশ্বের প্রচুর ডেটা সংগ্রহ করে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে টেক্সট ফরম্যাটে জানাবে এই প্রযুক্তি। গত নভেম্বরে চালু হওয়া এই চ্যাটবট ব্যবহার করতে ওয়েবসাইটে ঢুকে নিবন্ধন করতে হবে। এরপর সহজেই ব্যবহার করে এর মাধ্যমে সেবা পাওয়া যাবে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, চ্যাট জিপিটিকে প্রশ্ন করা হলে মানুষের মতোই উত্তর দিতে পারে। এমনকি এই চ্যাটবটকে যদি কেউ কবিতা লিখতেও বলেন, তাও লেখে দেবে। সার্চ টুল দিয়ে দেবে পরীক্ষাও।
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড্যান গিলমোর চ্যাট জিপিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে একটি অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে দিয়েছিলেন। ছাত্রদেরও একই অ্যাসাইনমেন্ট দিয়েছিলেন তিনি। বেশ ভালো ফল দিয়েছে চ্যাট জিপিটি। অ্যাসাইনমেন্ট দেখে গিলমোর বলেন, ‘আমি এই চ্যাটবটকে অবশ্যই ভালো নম্বর দেব।’
ওপেন এআই নতুন সংস্করণের চ্যাটবট প্রকাশের ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছে, সংলাপের ধরন বুঝে ফলোআপ প্রশ্নের উত্তর দেয়া, ভুল স্বীকার করা, ভুল বা ত্রুটিপূর্ণ বিষয়কে চ্যালেঞ্জ করা এবং অনুপযুক্ত অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করার মতো কাজ করতে দক্ষ হয়ে উঠেছে চ্যাটবটটি।
ইন্টারনেটে থাকা ওয়েব পেজ, ওয়েব টেক্সট, বই, উইকিপিডিয়া, আর্টিকেলসহ বিভিন্ন উৎস থেকে প্রায় ৫৭০ জিবির বেশি ডাটা সমৃদ্ধ চ্যাট জিপিটি। শুধু তাই নয় এই চ্যাটবটে রয়েছে ৩০০ বিলিয়ন শব্দের ভান্ডার। পাশাপাশি একটি বাক্যের পরবর্তী শব্দটি কী হওয়া উচিত তা অনুমান করতেও সক্ষম চ্যাট জিপিটি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আপনি যদি চ্যাট জিপিটিতে গিয়ে সার্চ করেন মূল্যস্ফীতি কি? চ্যাট জিপিটি তার যথোপযুক্ত নির্ভুল উত্তর দেবে। উত্তরটি যদি কোনও কারণে ভুলও হয় তাহলে এর কর্মীরা প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি সিস্টেমে ইনপুট করে দেন। ফলে চ্যাট জিপিটির জ্ঞানের ভান্ডার ক্রমশ বাড়তে থাকে।
তবে অনেক সুবিধা থাকলেও চ্যাট জিপিটির মাধ্যমে মূলত টেক্সট রেজাল্ট পাওয়া যায়। ভিডিও বা ভিজ্যুয়াল রেজাল্ট আসে না। এসব বিষয়ে আরও কাজ চলছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সার্বিক পরিস্থিতিতে চ্যাট জিপিটি মাথা ব্যথা বাড়িয়েছে সার্চ ইঞ্জিন সংস্থাগুলোর মধ্যে মোট আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ পাওয়া সার্চ ইঞ্জিন গুগলের। প্রতিযোগিতায় টিকতে গুগলও অবশ্য এবার চ্যাটবট তৈরির পথে এগোচ্ছে।
আরও পড়ুন:অ্যান্ড্রয়েড ফোনে বিজয় কি-বোর্ড ব্যবহার বাধ্যতামূলক নয় বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বুধবার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের তৃতীয় অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘এটা আইনের বিষয়, এ নিয়ে আমার মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’
ওই বক্তব্যের পরও সাংবাদিকরা একই বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিজয় কি-বোর্ডের উদ্ভাবক বলেন, “আমি একটি ব্যাখ্যা দেব, সেটি হচ্ছে বিটিআরসি (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) একটি শব্দ ব্যবহার করেছে ‘বাধ্যতামূলক’। এই শব্দটি বিভ্রান্তিকর।
“অ্যান্ড্রয়েড ফোনে আপনি চাইলে যেকোনো সফটওয়্যার রাখতে পারেন, আনস্টল করতে পারেন, ফেলে দিতে পারেন, নতুন করে ইনস্টল করতে পারেন। অতএব বাধ্যতামূলক শব্দ প্রয়োগ করার কিছু নেই; এটি বাধ্যতামূলক নয়।”
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘কার জন্য বাধ্যতামূলক বলা হয়েছে? যিনি উৎপাদক অথবা আমদারিকারক, তিনি বাংলা লেখার সুবিধা তৈরি করে দেয়ার জন্য একটি সফওয়্যার দিয়ে দেবেন। ব্যবহারকারী সেই সফটওয়্যার ব্যবহার করবে কী করবে না, সেটি সম্পূর্ণ তার এখতিয়ার।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য