স্থানীয় স্টার্টআপ ও তরুণদের আইসিটি দক্ষতা বিকাশে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে বুধবার তিনটি নতুন প্রতিযোগিতা চালু করেছে।
প্রোগ্রামগুলো হলো আইসিটি ইনকিউবেটর, অ্যাপ ডেভেলপার ও টেক উইমেন।
রাজধানীর লেকশোর হোটেলে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়।
তিনটি প্রোগ্রামই নতুন স্টার্টআপের সূচনা এবং মোবাইল অ্যাপ তৈরির ধারণা বাস্তবায়নে ডিজাইন করা হয়েছে। এর মধ্যে, আইসিটি ইনকিউবেটর প্রতিযোগিতাটি স্টার্টআপের ওপর আলোকপাত করবে।
প্রতিযোগিতাটি দুটি ভাগে বিভক্ত। একটি আইডিয়া পর্যায়, অন্যটি সূচনা পর্যায় (আর্লি স্টেজ)।
হুয়াওয়ে আয়োজিত আইসিটি ইনকিউবেটর প্রতিযোগিতায় স্ট্রাটেজিক পার্টনার হিসেবে রয়েছে আইডিইএ এবং স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড।
আইসিটি ইনকিউবেশন প্রতিযোগিতার আইডিয়া স্টেজ এবং আর্লি স্টেজ, উভয় ক্ষেত্রে বিজয়ীরা ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রাইজ মানি পাবেন। স্টার্টআপের প্রধান নির্বাহীরা বিদেশে সফল স্টার্টআপের কার্যক্রম পরিদর্শনের সুযোগ পাবেন এবং সর্বোচ্চ এক লাখ ২৫ হাজার ডলার সমমূল্যের হুয়াওয়ে ক্লাউড ক্রেডিট পাবেন।
প্রথম এবং দ্বিতীয় রানার আপ পাবেন যথাক্রমে সর্বোচ্চ তিন লাখ ও এক লাখ টাকা পর্যন্ত প্রাইজ মানি। প্রথম এবং দ্বিতীয় রানার আপ স্টার্টআপগুলোর প্রধান নির্বাহীরাও বিদেশে সফল স্টার্টআপের কার্যক্রম পরিদর্শনের সুযোগ পাবেন,সঙ্গে পাবেন ৮০ হাজার ডলার মূল্যের হুয়াওয়ে ক্লাউড ক্রেডিট।
অন্য দুটি প্রতিযোগিতা হুয়াওয়ে এককভাবে আয়োজন করছে। হুয়াওয়ে অ্যাপ ডেভেলপার ও হুয়াওয়ে টেক উইমেন প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
একটি দলে সর্বোচ্চ দুজন সদস্য থাকতে পারবে। প্রতিযোগিতায় ৩.০ এর ওপরে সিজিপিএসহ যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বা চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীরা আবেদন করার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। হুয়াওয়ে টেক উইমেন প্রোগ্রামটিতে শুধু নারীরা অংশ নিতে পারবেন। অন্যদিকে, হুয়াওয়ে অ্যাপ ডেভেলপার প্রোগ্রামে নারী-পুরুষ উভয়ই অংশ নিতে পারবেন।
অ্যাপ ডেভেলপার ও হুয়াওয়ে টেক উইমেন প্রতিযোগিতার বিজয়ী পাবেন ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রাইজ মানি। পাশাপশি, তারা বিশ্বব্যাপী সফল অ্যাপ ডেভেলপারদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন এবং ৫ হাজার ডলার পর্যন্ত হুয়াওয়ে ক্লাউড রিসোর্স পাবেন। প্রথম এবং দ্বিতীয় রানার আপ পাবেন যথাক্রমে সর্বোচ্চ দুই ও এক লাখ টাকা প্রাইজমানি এবং তিন হাজার ও দুই হাজার ডলারের ক্লাউড রিসোর্স।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এবং হুয়াওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) প্যান জুনফেং।
তার বক্তব্যের মাধ্যমে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে পলক বলেন, ডিজিটাল সমাজ, জ্ঞনাভিত্তিক অর্থনীতি এবং উদ্ভাবনী বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমাদের একটা স্টার্টআপ কমিউনিটি তৈরি করতে হবে। সেই বিষয়টাকে এগিয়ে দিতে এই প্রতিযোগিতা গুলোর মাধ্যমে চমৎকার একটা পার্টনারশিপ মডেল হুয়াওয়ে গড়ে তুলেছে। মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপারদের জন্য, আইসিটি ক্ষেত্রে নারীদের জন্য যে বিশেষ এই আয়োজন হুয়াওয়ে তৈরি করেছে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আছেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত স্টার্টআপরা আছেন, মেন্ট্রররা আছেন, বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় প্রযুক্তি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে হুয়াওয়ে নিজেই আছে এবং সর্বপোরি আমি বাংলাদেশ সরকার থেকে প্রতিনিধিত্ব করছি।
প্যান জুনফেং বলেন, “আইসিটি ইনকিউবেটর প্রাথমিক পর্যায়ের স্টার্টআপ এবং আইডিযয়া-স্টেজে থাকা স্টার্টআপগুলোকে সহায়তা করে প্রত্যেকের জন্য একটি কার্যকরী এবং টেকসই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তুলবে। উদ্যোগটি নতুন দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে ইইই, ইসিই ও সিএসই বিভাগের তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের বিদ্যমান দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করবে। প্রোগ্রামটি দেশের নারীদের (যারা প্রযুক্তি-বিষয়ক খাতে কর্মরত আছেন কিংবা প্রযুক্তি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছেন) প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার ওপরও আলোকপাত করবে। এ প্রোগ্রামগুলোর মাধ্যমে সবাই সুবিধা লাভ করবে বলে আমি প্রত্যাশা করছি।”
চুয়েটের ইসিই বিভাগের ডিন এবং আইইইই বাংলাদেশ সেকশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. এম. মশিউল হক বলেন, “আমাদের তরুণ প্রজন্ম ও মেধাবীদের জন্য একটি উদ্ভাবনী প্ল্যাটফর্মের বিকাশে হুয়াওয়ে অ্যাপ ডেভেপলার, টেক উইমেন ও আইসিটি ইনকিউবেটর প্রোগ্রামগুলো অত্যন্ত সময়োপযোগী সব উদ্যোগ। আমার বিশ্বাস, তরুণদের মেধার বিকাশে উদ্ভাবনী এসব উদ্যোগ সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখবে এবং তাদের দক্ষতা অর্জনে ও স্বীকৃতিদানের মাধ্যমে সৃষ্টিশীলতা বিকাশের সুযোগ তৈরি করবে।”
ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, “কয়েক বছর ধরে হুয়াওয়ে তরুণদের বিকাশে বেশ কিছু ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে আমি দেখতে পেয়েছি। যেমন: হুয়াওয়ের আইকনিক সিডস ফর দ্য ফিউচার প্রোগ্রামটিতে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিভিন্ন জ্ঞান আহরণ ও এর মাধ্যমে তাদের জীবনে যে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে তা আমি দেখতে পেয়েছি। এ তিনটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নতুন দক্ষতা রপ্ত করতে পারবেন; একইসঙ্গে তারা তাদের অর্জিত দক্ষতা প্রদর্শনেরও সুযোগ পাবেন।”
সেবা প্ল্যাটফর্ম লিমিটেডের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিওও ইলমুল হক সজীব বলেন, “গত দুই বছরে আমরা দেখেছি আইসিটি খাত কীভাবে জিডিপিতে অবদান রেখেছে এবং সঙ্কটের সময়েও প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে ভূমিকা রেখে চলেছে। আমাদের এ খাত নিয়ে আরও কাজ করতে হবে। আমি মনে করি, এ উদ্যোগ আইসিটি খাতের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে এবং এ খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।”
আগ্রহী প্রার্থীরা এই প্রোগ্রামগুলোতে অংশ নিতে ১৫ জুন থেকে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করতে ভিজিট করুন: https://hibator.com/
আরও পড়ুন:স্বপ্ন জয়ের আনন্দে পুরো দেশ। জলে ভাসতে থাকা স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে পদ্মা সেতু হয়ে। শনিবার সেতুটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সেতু নির্মাণের মাধ্যমে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের স্বপ্নই যে শুধু পূরণ হয়েছে তা নয়। পদ্মা সেতু দেশের সক্ষমতার প্রতীক।
তাই সেতু চালু হওয়াকে কেন্দ্র করে আনন্দে মেতেছে পুরো দেশ। গানে গানে সেই আনন্দকে আরও বাড়িয়ে দেয়ার প্রয়াস করেছেন দেশসেরা কয়েকজন শিল্পী।
পদ্মা সেতুর অফিশিয়াল থিম সংয়ের কথা এমন- ‘তুমি অবিচল দৃঢ় প্রতিজ্ঞ তুমি ধুমকেতু/বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন দেশ তুমি দিলে পদ্মা সেতু/পেরিয়ে সকল অপশক্তি শত সহস্র বাধা/পদ্মা সেতু মাথা উঁচু করা আত্মমর্যাদা/মাথা নোয়াবার নয় বাঙালি যেহেতু/বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন দেশ তুমি দিলে মর্যাদা পদ্মা সেতু’।
কবীর বকুলের কথায় গানটির সুর-সংগীত করেছেন কিশোর দাস। গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন, রফিকুল আলম, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, কুমার বিশ্বজিৎ, বাপ্পা মজুমদার, মমতাজ বেগম, দিলশাদ নাহার কনা, ইমরান মাহমুদুল, নিশিতা বড়ুয়া ও কিশোর দাশ।
গানটি নিয়ে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘স্রষ্টার কাছে অনেক বেশি কৃতজ্ঞ। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছেও কৃতজ্ঞ, আমাদের এমন একটি গৌরব ও মর্যাদা এনে দেয়ার জন্য।’
বাপ্পা মজুমদার বলেন, ‘স্বপ্নটাকে চোখের সামনে দেখে এক আনন্দ লাগল, কী বলব! এ এক বিস্ময়। আমরা সবাই খুব খুশি।’
কনা বলেন, ‘শুটিং করতে গিয়ে যখন সেতুটি কাছ থেকে দেখলাম, তখন মনটা ভরে গেছে। এর আগে টিভিতে বা অনেক দূর থেকে দেখেছি। খুবই ভালো লাগছে।’
গান নিয়ে ইমরান বলেন, ‘পদ্মা সেতু আমাদের স্বপ্নের সেতু। এতটা বছর আমরা অপেক্ষা করেছি সেতুটির জন্য, যাতে আমাদের জীবনযাত্রার মান অনেক সহজ হয়। সেই সময়টা চলে এসেছে, আমরা সবাই খুব খুশি।’
আরও পড়ুন:সিলেটের বানভাসী মানুষের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে গোপালগঞ্জের এক কিশোরী। ঈদের পোশাক কেনার টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিয়েছে সে।
মেয়েটির নাম তাহাজীব হাসান। সে এবার গোপালগঞ্জ সরকারি বীণাপাণি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেবে।
ঈদের পোশাক না কিনে ১০ হাজার টাকা সে বুধবার দুপুরে তুলে দিয়েছে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) হাতে।
নিউজবাংলাকে তাহাজীব বলেছে, ‘আমার ঈদের ড্রেস কেনার টাকা সিলেটের বন্যার্তদের জন্য দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। প্রতি বছর ঈদের সময় নতুন ড্রেস কিনে থাকি। কিন্তু এবার সিলেটে যে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে তা টিভি ও পত্রিকায় দেখে আমার মনে হয়েছে যে আমার ড্রেস কেনার চেয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানো বেশী জরুরি।’
তার এই চিন্তার প্রশংসা করেছেন ডিসি শাহিদা সুলতানা।
তিনি বলেন, ‘আমি খুব খুশী হয়েছি যে একজন শিক্ষার্থী তার আনন্দের টাকা সিলেটের বন্যার্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য দিয়েছে। আমি বিত্তবানসহ সবস্তরের মানুষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি যে আসুন আমার যার যার অবস্থান অনুযায়ী বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াই।’
আরও পড়ুন:বেকার যুবকদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নয়নের মূল ধারা যুক্ত করতে কাজ করছে বাগেরহাট যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর।
তবে দক্ষ প্রশিক্ষক ও জনবল সংকটে ভুগতে থাকা এ প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
প্রশিক্ষণ নেয়া অনেকেরই অভিযোগ, চাহিদা অনুযায়ী তারা ভালো প্রশিক্ষণ পাননি। গড়ে ওঠেনি প্রয়োজনীয় দক্ষতা। তারা আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে উন্নত প্রশিক্ষণের দাবি জানিয়েছেন।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বলছে, জনবল সংকট থাকলেও সাধ্য অনুযায়ী কাজ করছে সংস্থাটি।
শিক্ষার্থীদের দাবি ও অভিযোগ
বাগেরহাট যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে গত ২০২০-২১ অর্থবছর ও ২০২১-২২ অর্থবছরে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেয়া শিক্ষার্থীরা জানান, প্রশিক্ষণ কর্মক্ষেত্রে তাদের কোনো কাজে আসছে না। তাদের মতে, প্রশিক্ষক দক্ষ ছিলেন না, যে কারণে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ তারা পাননি।
বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদ আলিমুজ্জামান বলেন, 'গত বছর আমি বাগেরহাট যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে কম্পিউটারের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। শুধু কম্পিউটার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পেয়েছি। প্রতিযোগিতার এ যুগে এসে প্রাথমিক ধারণা নিয়ে কর্মক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ কম।
'যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের দক্ষ প্রশিক্ষকের অভাব রয়েছে। শুধু একজন দক্ষ প্রশিক্ষকের অভাবে যুব উন্নয়ন থেকে কাঙ্ক্ষিত প্রশিক্ষণ পাচ্ছি না আমরা।'
বাগেরহাট সদর উপজেলার ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের স্নিগ্ধা ফাতেমা বলেন, 'আমি এ বছরের জানুয়ারিতে যুব উন্নয়ন থেকে মাছ চাষের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছি, যা আমার কোনো কাজেই আসেনি। তাদের যিনি প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি যথেষ্ট দক্ষ ছিলেন না। তিনি মুখে বলেই নাম মাত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। প্রাকটিক্যালভাবে শেখার কোনো সুযোগ ছিল না সেখানে।
'এ ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মক্ষেত্রে দক্ষতার প্রমাণ দেয়া সম্ভব নয়। এ ছাড়া অনেক শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ নিয়েছে শুধু সার্টিফিকেট ও আর্থিক সুবিধার জন্য।'
একই ইউনিয়নের ইমরান শেখ বলেন, 'আমি যুব উন্নয়ন থেকে কম্পিউটারের প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আমার কাছে এ প্রশিক্ষণ কম্পিউটার সম্পর্কে বেসিক ধারণা ছাড়া কিছুই মনে হয় না। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমি যা পেয়েছি সেটা শুধু একটি সার্টিফিকেট। এর বাইরে যা শিখেছি, সেটা ইউটিউব দেখে শেখা যায়।'
করোনাকালে অনলাইনভিত্তিক কাজের সুযোগ বেড়েছে জানিয়ে সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের তানজিম আহমেদ বলেন, 'আমাদের মতো যুবকদের কাছে পছন্দের পেশা হয়ে উঠছে আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিং। ভালো প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ সুযোগটি কাজে লাগাতে হবে আমাদের। এসব করতে হলে যুব উন্নয়নে দক্ষ প্রশিক্ষক দিয়ে আউটসোর্সিং, ফ্রিল্যান্সিং ও মোবাইল সার্ভিসিংয়ের মতো বিষয়গুলোর ওপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলেই প্রতিটি পরিবারে একজন করে উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে। '
যা বলছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর
চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ প্রশিক্ষক ও জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে বাগেরহাট যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মাসুদুল হাসান মালিক জানান, সাধ্যানুযায়ী আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন তারা।
তিনি বলেন, 'আমাদের অফিসসহ উপজেলা অফিসগুলোতেও জনবল সংকট রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংকটে রয়েছে রামপাল উপজেলায়। সেখানে ক্রেডিট সুপারভাইজার, অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক ক্যাশিয়ার, অফিস সহায়ক ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাসহ কর্মরত পদের ৭ জনের বিপরীতে ৫টি পদই শূন্য।
'এ ছাড়া শরণখোলা উপজেলায় কর্মরত পদের ৭ জনের বিপরীতে ৩টি, মোড়েলগঞ্জে ৪টি, মোল্লাহাটে ২টি, মোংলায় ২টি, সদরে ২টি ও ফকিরহাট, চিতলমারী ও কচুয়া উপজেলায় ১টি করে পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে জেলা কার্যালয়েও একজন সহকারী পরিচালক ও একজন উচ্চমান সহকারীর পদ শূন্য রয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'যে অভিযোগ করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সেগুলো অযৌক্তিক বা ভুল বলা যাবে না। এগুলো এখন সময়ের দাবি। তবে আমাদের যারা প্রশিক্ষক রয়েছেন তারা যে দক্ষ নয়, সেটাও বলা যায় না। কারণ দীর্ঘদিন ধরে তারা যুব উন্নয়নে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
'এখানে সমস্যা হচ্ছে বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। এখানে যুব উন্নয়নের প্রশিক্ষকদের দক্ষতার অভাব থাকলে তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে। এ ছাড়া আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিংয়ের ওপর যে প্রশিক্ষণের দাবি করছে তরুণরা, আমি নিজেও তাদের সঙ্গে সহমত। এটি এখন সময়ের দাবি।'
উপপরিচালক জানান, আগামী অর্থবছরে তিনি আউটসোর্সিং ও ফ্রিল্যান্সিংয়ের ওপর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবেন। বিষয়ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
আরও পড়ুন:বয়স মাত্র ১৪। এই বয়সেই জটিল সব গাণিতিক সমস্যার সমাধান করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে রুশো। সমাধান করছে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের সব অঙ্ক ও বিজ্ঞানের নানা সূত্র। এই কিশোরের পুরো নাম মাহির আলি রুশো।
বিশ্বের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে এখন পর্যন্ত ৫০টিরও বেশি কোর্স করে সনদ অর্জন করেছে রুশো। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গ ও যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটি অন্যতম।
রাজধানীর মনিপুর হাইস্কুলের নবম গ্রেডের শিক্ষার্থী রুশো। রুশোর এমন সব আগ্রহ দেখে উচ্ছ্বসিত তার বাবা-মা, স্কুলের শিক্ষকরা। তারা চান, রুশোর প্রতিভার আরও বিকাশ হোক দেশ থেকে সারা বিশ্বে।
রুশোর বাবা-মা দুজনেই চিকিৎসক। ছেলের ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞান আর গণিতের প্রতি ঝোঁক দেখে কিছুটা অবাক হয়েছেন। প্রথম দিকে নিজেরাও বিশ্বাস করতে চাননি। কিন্তু যখন দেখলেন, একের পর এক জটিল এবং উচ্চপর্যায়ের গাণিতিক সমস্যার সমাধান করছেন, তখন তারা ছেলের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে তার হাতে তুলে দিতে থাকেন বইপত্র। তারা চান, ছেলে যা করছে, সেটা করুক একদম জেনে-বুঝে, মানে জানাশোনায় যেন কোনো ফাঁকফোকর না থাকে।
তার বাবা সেন্ট্রাল মেডিক্যাল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান প্রফেসর মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সে যখন ক্লাস ফাইভে পড়ে, তখন থেকেই তার বিজ্ঞানের প্রতি প্রচণ্ড ঝোঁক ছিল। সে সময় আমার একটা ল্যাপটপ ছিল, সেটাও খুব বেশি ভালো ছিল না। কিন্তু একটা পর্যায়ে আমি খেয়াল করি, সে আমার ল্যাটপটে ভিডিও দেখছে। এসব ভিডিও ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ম্যাথের ভিডিও। আর সবগুলোই তার চেয়ে অনেক আপার লেভেলের।’
তিনি বলেন, ‘এরপর আমি একদিন তাকে ডেকে নিয়ে বলি, বাবা তুমি যেসব ভিডিও দেখো সেসব কি তুমি বুঝো, নাকি শুধু দেখো? তার উত্তর ছিল- বাবা আমি এসবই বুঝি।
‘তারপর তার সঙ্গে কয়েকদিন আমি নিয়মিত কথা বলি। দেখলাম আসলেই সে বোঝে।’
সে সময় রুশো তার বাবা-মায়ের কাছে একটি আবদার করে বসে। সে প্রতিদিন অন্তত দুই ঘণ্টা ইউটিউবে ভিডিও দেখতে চায়। প্রথমে বাবা-মা এতো সময় ভিডিও দেখায় কিছুটা আপত্তি করলেও পরে শর্ত দেয় যে, প্রতিদিনের পড়াটুকু ঠিকভাবে সেরে সকালে এক ঘণ্টা এবং রাতে এক ঘণ্টা করে ইউটিউব দেখতে পারবে।
তাতেই রাজি হয় রুশো। মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘তার বয়স যখন ১১ বছর, তখন সে ক্যালকুলাস এবং জ্যামিতিক বিভিন্ন সমাধান রপ্ত করে ফেলে। ১২ বছর বয়সে কলেজ পর্যায়ের গণিত ও ফিজিক্স অনায়াসে করতে পারতো।’
এই জানাশোনার বিষয়টা আরও বেড়ে যায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময় স্কুল বন্ধ হলে। তখন অনেক বেশি সময় রুশো বিজ্ঞানের এসব বিষয়ে জানতে ব্যয় করতে থাকে। ২০২০ সালের মার্চ থেকে সে অনলাইনে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত, ক্যালকুলাস, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি বিষয়ে অসংখ্য অনলাইন কোর্সে অংশ নেয়।
তার মধ্যেই অনলাইনে ‘সেন্ট জোসেফ ন্যাশনাল পাই অলিম্পিয়াড’ সম্পর্কে জানতে পেরে এতে অংশ নেয় রুশো এবং হয়ে যায় চ্যাম্পিয়ন।
পর্যায়ক্রমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনলাইন কোর্সে অংশ নিতে থাকে। বিশ্বের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে এখন পর্যন্ত ৫০টিরও বেশি অনলাইন কোর্স সম্পন্ন করেছে রুশো। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গ অন্যতম।
রুশোর মা চিকিৎসক রুমা আক্তার বলেন, ‘তাকে অনেক ছোটবেলা থেকেই দেখেছি পড়ালেখার প্রতি ভীষণ ঝোঁক। আমার জন্য যখন কোনো বই কিনেছি, তখন তার জন্যও আমি কিনেছি বই। আসলে সন্তানকে বুঝতে হবে। সে কি চায় সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অনেক সময় তার চাওয়ার থেকে আমাদের চাওয়াকে বেশি গুরুত্ব দিই, যা তাদের বিকাশকে বাধা দেয়।’
কিশোর মাহির আলি রুশো তার অর্জনে গর্বিত। তার কাছে মনে হয়, সায়েন্স আসলে ভয়েস অফ গড, যার নেতৃত্বে থাকে ফিজিক্স। আর এর মূলে রয়েছে ম্যাথ। যা জানার কোনো বিকল্প নেই।
রুশো জানায়, সে আসলে কোনো কিছু কীভাবে, কেমন করে হচ্ছে সেটা জানতে চেয়েছে। আর এর জন্য অবশ্য পড়োশোনা করা এবং জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
রুশো বলে, ‘কেউ কাউকে শেখাতে পারে না। নিজে থেকে শিখতে হয়। আমাদের সবসময় অ্যাকাডেমিক বইয়ের বাইরে পড়ার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। কেননা আমরা নিজের বই তো পড়বোই, তার বাইরে সেটা কেন হচ্ছে সেটা জানতে অন্য বইও পড়ব। আমরা আসলে যা পড়ি সেটা খুব শর্টকাট। সেখানে গভীরভাবে কোনো কিছু দেখানো হয় না। তাই সেটা জানতে হলে পড়াশোনার বিকল্প নেই।’
বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও অর্জন
রুশো দেশ এবং দেশের বাইরের অসংখ্য প্রতিযোগিতা ও অলিম্পিয়াডে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ওপেন কনটেস্ট অলিম্পিয়াডে রুশো প্রতিযোগিতা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারদের সঙ্গে।
বাংলাদেশ ম্যাথমেটিক্স অলিম্পিয়াড, বাংলাদেশ ফিজিক্স অলিম্পিয়াড, জামাল নাল কেমিস্ট্রি অলিম্পিয়াড চ্যাম্পিয়ন এবং জামাল নাক্রল জ্যোতির্বিদ্যা উৎসব, ন্যাশনাল সাইবার অলিম্পিয়াড, বাংলাদেশ জ্যোতির্বিদ্যা অলিম্পিয়াডসহ অসংখ্য প্রতিযোগিতায় আঞ্চলিকভাবে বিজয়ী হয়েছে রুশো।
এ ছাড়া বাংলাদেশ আইকিউ অলিম্পিয়াডে চ্যাম্পিয়ন এবং ভারতের সিপিএস অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছে। বাংলাদেশ বিজ্ঞান সংগঠন থেকে গুগল-আইটি অলিম্পিয়াডে চ্যাম্পিয়ন পদক পেয়েছে।
এ ছাড়াও রুশো জিতেছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন অলিপিয়াড ও প্রতিযোগিতা। রুশোর অর্জন সম্পর্কে জানা যাবে https://rusho.org/ এই ঠিকানায়।
আরও পড়ুন:চাকরি, পরিবার আর সংসার সামলাতে গিয়ে বারবার লেখাপড়া পড়েছে বাধার মুখে। তবুও কি থেমে থাকা চলে? বয়স তো নয়-ই, বরং ইচ্ছা থাকলে কোনো জটিলতাই যে লেখাপড়া থামাতে পারে না তাই প্রমাণ করলেন ঠাকুরগাঁওয়ের আরেফা হোসেন। স্বপ্ন জয় করেছেন তিনি।
বুধবার উত্তরায় বেসরকারি অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভোকেশনে ৬২ বছর বয়সে পাবলিক হেলথ বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রির সার্টিফিকেট গ্রহণ করেন এই অদম্য নারী। ২০১৭ সালে ৫৭ বছর বয়সে মাস্টার্স পাস করা আরেফা ২০১৯ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যান।
স্বামীর মৃত্যুর পর এই নারীর সংসার এখন দুই ছেলে নিয়ে। বড় ছেলে আশিক হোসেন নিউজবাংলার প্রতিবেদক হিসেব কর্মরত। ছোট ছেলে আদিব হোসেন অনল পড়ছেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিকমিউনিকেশন বিভাগে।
দীর্ঘ পথ পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাস করা যে আরেফার জন্য কতটা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল, তা বোঝা যায় তার কথাতেই।
তিনি জানান, বয়স যখন চার তখন মাকে আর আট বছর বয়সে বাবাকে হারান। এরপর শুরু হয় তার জীবন সংগ্রাম। ঠাঁই হয় নাটোরের একটি অনাথ আশ্রমে। সেখান থেকেই স্থানীয় একটি স্কুল থেকে ১৯৭৬ সালে মাধ্যমিক পাস করেন তিনি।
১৯৮০ সালে নার্সিংয়ে ডিপ্লোমা শেষ করে নার্সিং পেশায় যোগ দেন আরেফা। একসময় বিয়ে করেন, হন সন্তানের জননী। কিন্তু তার পরও পড়াশোনা করার একটি ইচ্ছা মনে রয়েই গিয়েছিল। বড় ছেলের বয়স যখন ১০ বছর, তখন স্বামীর অনুপ্রেরণায় নিজের বিএসসি শেষ করার একটি সুযোগ পান।
শিক্ষাছুটি নিয়ে সে সময় তিনি ভর্তি হন মহাখালীর সেবা মহাবিদ্যালয়ে। ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দুই বছরের জন্য পরিবার ছেড়ে চলে আসেন ঢাকার মহাখালীতে। সেখান থেকেই স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
তবে সংসার-পরিবার সামলাতে গিয়ে এর বেশি সেবার এগোতে পারেননি। ফিরে যান কর্মক্ষেত্র ঠাকুরগাঁওয়ে। সেখানেই চাকরি করতে থাকেন। এরই মধ্যে তার ছোট ছেলের জন্ম হয়। বড় ছেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট চুকিয়ে চাকরিতে যোগ দেন।
আরেফা আবার চিন্তা করলেন মাস্টার্স শেষ করার কথা। এ নিয়ে নিজের মধ্যেই নানা দোটানা তৈরি হয়। কিন্তু স্বামীর অনুপ্রেরণায় আবারও সিদ্ধান্ত নেন পড়াশোনাটা শুরু করবেন। একপর্যায়ে তিনি ভর্তি হন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাবলিক হেলথ বিষয়ে।
এ যেন এক নতুন চ্যালেঞ্জ। প্রতি সপ্তাহে সাপ্তাহিক ছুটির দিন ঠাকুরগাঁও থেকে প্রায় সাড়ে ৪০০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে রাজধানী ঢাকায় আসতেন মাস্টার্সের ক্লাস ধরতে। দিনভর ক্লাস শেষে আবার রাতেই ফিরতেন সেই সাড়ে ৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে। পরদিন ফিরতে হতো কর্মক্ষেত্রে। এভাবেই পার করেছেন দুটি বছর।
কেন মাস্টার্সের কথা চিন্তা করলেন জানতে চাইলে আরেফা হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারিভাবে এমপিএইচ করার সুযোগ সে সময় ছিল না। আগে এক জায়গা থেকেই এটা হতো, নিপসম বাংলাদেশ থেকে। পরে সরকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও মাস্টার্স করার সুযোগ তৈরি করে আমাদের জন্য।
‘তাই চিন্তা করলাম লেখাপড়া করা তো আর ভুল না, যদি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারি তাহলে হয়তো ভালো লাগবে। নিজেরও একটা ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা করব, সে থেকেই আরকি।’
আরেফা বলেন, ‘আমার স্বামী আমাকে পড়াশোনার বিষয়ে অনেক সমর্থন দিয়েছে। তার উৎসাহও এ ক্ষেত্রে অনেকটা কাজে দিয়েছে। তার অনেক ইচ্ছা ছিল আমি যেন কনভোকেশনটাতে অংশ নিই। তারও ইচ্ছা ছিল এটাতে থাকার। কিন্তু সে সেটা দেখে যেতে পারল না।’
তিনি বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও থেকে আসা-যাওয়া খুবই কষ্টকর, যেহেতু অনেক দূরের পথ। অনেক লম্বা সময় লাগে। প্রতি সপ্তাহে আমাকে ছুটির দিনগুলোতে আসতে হয়েছে। সারা রাত জার্নি করে সকালে পৌঁছাতাম, ক্লাস করে আবার সারা রাতের জার্নি শেষে বাড়িতে পৌঁছাতাম। পরের দিন অফিসও করতে হতো।
‘কিন্তু সেই কষ্ট এখন আর মনে হচ্ছে না। এখন মনে হচ্ছে কষ্ট কাজে লেগেছে। আর আমার এই ডিগ্রির জন্য কিন্তু চাকরির শেষ পর্যায়ে আমি প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে অবসরে যাওয়ার সুযোগ পাই। এখন একটি বেসরকারি নার্সিং কলেজের অধ্যাপক হিসেবে কাজ করার সুযোগও পাচ্ছি। আমি বলব, এটা আমার ৬২ বছর জীবনের একটি বড় অর্জন।’
আরেফা মনে করেন, শিক্ষার জন্য কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই। ইচ্ছা থাকলে যেকোনো বয়সেই পড়শোনা করে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়।
আরও পড়ুন:নেট দুনিয়ায় হালের আলোচিত ভিডিও ৯০ দশকের মাঝামাঝিতে বলিউডে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘ম্যায় খিলারি তু আনারি’। অক্ষয় কুমার আর শিল্পা শেঠির অভিনীত ‘চুরা কে দিল মেরা’ গানটির জনপ্রিয়তা আজও কমেনি। তাই তো ভারত থেকে ৬ হাজার ৯৫৭ কিলোমিটার দূরের দেশ নরওয়ের এক বিয়েতে গানটিতে নেচে ভাইরাল হয়েছেন একদল তরুণ।
ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা ক্লিপে ব্যাকগ্রাউন্ডে সিগনেচার টিউন বাজলে নাচের দলটিকে ক্যামেরার উল্টো দিকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এরপর শুরু হয় দুর্দান্ত এক পারফরম্যান্স। ভিডিওটি নজর কেড়েছে বলিউড সেলিব্রিটিদেরও।
শিল্পা শেঠি ক্লিপটি নিয়ে মন্তব্য করা ব্যক্তিদের মধ্যে প্রথম৷ তিনি লেখেন, ‘ওএমজি। আপনারা গানটিকে হনন করেছেন। এটি সত্যিই আমার হৃদয় চুরি করেছে।’
গায়িকা সোফি চৌধুরী লেখেন, ‘তোমরা অসাধারণ। আমার পরবর্তী ভিডিওতে তোমাদের চাই।’
একজন সাধারণ ব্যবহারকারী লেখেন, ‘আমি যদি কখনও বিয়ে করি, তখন এমন একটি পারফরম্যান্স চাই।’
কয়েকজন তো লিখেছেন, ‘আমরা পুরো পারফরম্যান্স দেখতে চাই।’
ভিডিওটি এখন পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় ২৬ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে। ক্যাপশনে লেখা, ‘চিন্তা করবেন না, এড শেরিন তোমাকে পেয়ে গেছেন।’
ধারণা করা হচ্ছে, কুইক স্টাইল গায়ক এড শেরিনের কথা এখানে বলা হয়েছে।
View this post on Instagram
কুইক স্টাইল বলিউড ট্র্যাকে পারফর্ম করতে পছন্দ করে। এর আগে একটি ভিডিওতে গ্রুপটি শাহরুখ খানের ‘ম্যায় হুন না’ সিনেমা থেকে ‘তুমসে মিলকে দিলকা জো হাল’-এর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল। মন্তব্য বিভাগে আগুনের পাশাপাশি লাল হার্ট-আই ইমোজিতে প্লাবিত হয়েছিল ক্লিপটি।
‘বার বার দেখো’ সিনেমায় ‘কালা চশমা’ গানের সুরে নাচের সময় অল-মেন গ্রুপটির পারফরম্যান্স অনেকেরই মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছিল।
মন্তব্য