২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আবিষ্কার হলেও চীনের উহান শহরে ছোঁয়াচে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল আরও কয়েক বছর আগে। এক বছর আগের এক গবেষণায় এ তথ্য উদঘাটন হলেও প্রতিবেদনটি অপ্রকাশিত অবস্থাতেই রেখে দেয়া হয়েছে এতদিন।
গবেষণায় বলা হয়, উহানের যে বাজার থেকে করোনাভাইরাস প্রথম ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হয়, সেখানে সামুদ্রিক মাছ ও নানারকম প্রাণীর মাংস কেনাবেচা চলছিল ২০১০-এর দশক থেকে। খাদ্য ও পোষ্য হিসেবে বিক্রিত প্রাণীর তালিকায় ছিল ৩৮টির বেশি প্রজাতির বন্যপ্রাণী।
প্রমাণ মিলেছে যে, বিক্রি হওয়া হাজারো পশু করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিল।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন, যুক্তরাজ্য ও কানাডার একদল বিজ্ঞানীর এ গবেষণা প্রতিবেদনটি অপ্রকাশিত ছিল এক বছরের বেশি সময় ধরে।
গবেষকরা প্রতিবেদনটি প্রকাশের জন্য প্রথমবার ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকীর কাছে পাঠায়। সে সময় এবং পরে আরও দুই বার প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে সাময়িকীটি।
এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কাছে পাঠানো হলে সেখানেও অপেক্ষমান থেকে যায় গবেষণা প্রতিবেদনটি। সম্প্রতি অনলাইনে এটি প্রকাশ করে বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচারের সায়েন্টিফিক রিপোর্টস।
করোনাভাইরাসের উৎস এবং এটি প্রাণী থেকে মানুষে ছড়িয়েছে, নাকি গবেষণাগারে তৈরি- সে বিষয়ে এ গবেষণা আলোকপাত করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
চীনের কি ল্যাবরেটরি অফ সাউথওয়েস্ট চায়না ওয়াইল্ডলাইফ রিসোর্সেস কনজারভেশন, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকরা হুয়ানান সিফুড মার্কেটসহ উহানের বেশ কয়েকটি বাজারে ঘুরে তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করেছেন।
তারা জেনেছেন, বাজারগুলোকে বছরের পর বছর ধরে বিক্রি হয়ে আসা গন্ধগোকুল, কুকুর, মিংক, র্যাকুনসহ বিভিন্ন প্রজাতির বিপুলসংখ্যক প্রাণী রূপ পরিবর্তিত বেশ কয়েক ধরনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিল।
করোনাভাইরাস বন্য প্রাণী থেকে মানবদেহে সংক্রমিত হয়েছে, নাকি গবেষণাগারে তৈরির পর দুর্ঘটনাবশত ভাইরাসটি পরিবেশে ছড়িয়েছে- সে প্রশ্নে গত কয়েক মাস ধরেই উত্তপ্ত বিশ্ব রাজনীতি। ৪৩ লাখের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া ভাইরাসটির উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হতে দিনরাত এক করে খাটছেন বিজ্ঞানীরাও।
সায়েন্টিফিক রিপোর্টসে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনটির তথ্য সঠিক হলে করোনার উৎস সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক ধারণাই সত্য হবে। মহামারির শুরু থেকেই বেশিরভাগ বিজ্ঞানী বলে আসছেন, মানবদেহে সংক্রমিত হওয়ার আগে প্রাকৃতিকভাবেই জন্ম নিয়েছে ভাইরাসটি।
ব্লুমবার্গ জানায়, কয়েক বছর আগে চীনের হুবেই প্রদেশে জীবাণু থেকে সৃষ্ট একটি রোগ অসুস্থ করে তুলেছিল হাজারো মানুষকে। মূলত সেই রোগের উৎসের অনুসন্ধানে গবেষণা করতে গিয়েই বেরিয়ে আসে উহানের বাজারগুলোতে করোনা সংক্রমণের বিষয়টি।
চার বছর আগে গবেষণাটির কাজ শুরু করেছিলেন কি ল্যাবরেটরি অফ সাউথওয়েস্ট চায়না ওয়াইল্ডলাইফ রিসোর্সেস কনজারভেশনের ভাইরাসবিশেষজ্ঞ ড. শিয়াও জিয়াও। ২০১৭ সালের মে থেকে ২০১৯-এর নভেম্বর পর্যন্ত উহানের চারটি বাজার ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেন তিনি।
গবেষণা প্রতিবেদনটির প্রধান লেখক শিয়াও জানান, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে উহানে নিউমোনিয়াধর্মী রহস্যময় রোগ ছড়িয়ে পড়ে উহানে। পরবর্তীতে এটি করোনাভাইরাস হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার আগেই অন্যান্য বিজ্ঞানীদের সঙ্গে সমন্বয় করে নিজের গবেষণার জন্য সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করতে শুরু করেন তিনি।
জানা যায়, আড়াই বছরে স্তন্যপায়ী, পাখি ও সরীসৃপসহ ৩৮ প্রজাতির ৪৭ হাজারের বেশি বন্যপ্রাণী বিক্রি হয়েছে বাজারগুলোতে। খাদ্য ও পোষ্য হিসেবে বিক্রিত প্রাণীগুলো বাজারে ভীষণ অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকত।
সেখানেই প্রাণী থেকে মানুষ কিংবা মানুষ থেকে প্রাণীতে সংক্রমণযোগ্য বিভিন্ন ধরনের ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত হতো তারা। ইনফ্লুয়েঞ্জা, জলাতঙ্ক ও পাখির দেহে রোগ সৃষ্টিকারী করোনাসহ বেশ কয়েক ধরনের করোনাভাইরাসও ছিল এসব রোগের মধ্যে।
অসুস্থ প্রাণীগুলোর মধ্যে একটি ছিল গন্ধগোকুল। ২০০৩ সালে ছোঁয়াচে সার্স ভাইরাস মহামারির উৎস ছিল এই প্রজাতিটি। সার্স ভাইরাস ২০২০ সালে বৈশ্বিক মহামারির রূপ নেয়া করোনাভাইরাসেরই সমগোত্রীয়।
গত বছর করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পরপরই এসব তথ্য সমন্বিতভাবে প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু তাদের প্রত্যাখ্যান করা হয়।
প্রতিবেদনের সহ-লেখক অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ড. ক্রিস নিউম্যান বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম এই তথ্যগুলো তখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। গবেষণার ফল চমকে দেবে সবাইকে। এসব তথ্য জেনে ডব্লিউএইচও’ও বিস্মিত হবে।
‘কিন্তু এর কিছুই হয়নি। প্রথমে যে সাময়িকীতে প্রকাশের জন্য প্রতিবেদনটি পাঠানো হয়, তারা পরিস্থিতি অনুযায়ী এর গুরুত্ব বুঝতেই পারেনি।’
নিউম্যান জানান, প্রতিবেদনে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে যে মহামারির কেন্দ্রস্থলে খাদ্য হিসেবে জীবিত প্রাণী বিক্রি হচ্ছিল। মহামারির শুরুর দিনগুলোতেই এটি প্রকাশ করা উচিত ছিল।
পরে আরও দুই বার পুনর্মূল্যায়ন ও সংশোধন করে পাঠানো হলেও তখনও প্রকাশ করা হয়নি প্রতিবেদনটি।
পরবর্তীতে করোনাভাইরাসের উৎসবিষয়ক বেশ কয়েকটি গবেষণায় মহামারির সম্ভাব্য উৎসস্থল হিসেবে উহানের বাজার বলে জানা গিয়েছিল। বেইজিংয়ের গবেষকদের একটি দল এবং চীনে করোনার উৎস অনুসন্ধান করতে যাওয়া ডব্লিউএইচও’র বিশেষজ্ঞরাও একই মত দিয়েছেন।
যদিও এসব গবেষণার আগে ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে উহানের বাজার থেকে করোনা ছড়ানোর বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছিল চীনের সরকার। বরং ভাইরাস ইউরোপের কোনো দেশ কিংবা যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে এসেছে বলে সে সময় দাবি করে বেইজিং।
ড. শিয়াও জানান, যেসব বাজারে তিনি ঘুরেছেন, সেগুলোতে বিক্রির জন্য রাখা প্রাণীর ৩০ শতাংশের দেহেই গুলির আঘাত বা ফাঁদে আটকা পড়ে আহত হওয়ার ক্ষত ছিল। অর্থাৎ সেগুলো বন্যপ্রাণী ছিল।
চারটি বাজারের ১৭টি দোকানের একটিও বৈধভাবে বন্যপ্রাণীর ব্যবসা করছিল না বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। কারণ কোনো দোকানমালিকই এসব প্রাণী কোথা থেকে আনা হয়েছে, কিংবা কোয়ারেন্টিনে ছিল কি না- সে সংক্রান্ত কোনো সনদ দেখাতে পারেননি।
জ্ঞানভিত্তিক সাময়িকী স্প্রিঙ্গার নেচার ডব্লিউএইচও এবং সংস্থাটির করোনাবিষয়ক কারিগরি প্রধান মারিয়া ভ্যান কারখোভের কাছে গবেষণা প্রতিবেদনটি ই-মেইলের মাধ্যমে পাঠিয়েছিল। কিন্তু দুটি ই-মেইলই প্রাপকদের নজর এড়িয়ে যায়।
করোনাভাইরাস উহানের ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির গবেষণাগার থেকে ছড়িয়েছে বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের অনেক রাজনীতিক।
যুক্তরাষ্ট্রের অপ্রকাশিত একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে কিছুদিন আগে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাস মহামারির খবর প্রকাশের আগেই ২০১৯ সালের নভেম্বরে উহান ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির তিন গবেষক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
সে সময় প্রতিষ্ঠানটির কতজন গবেষক অসুস্থ হয়েছিলেন, কখন অসুস্থ হয়েছিলেন, হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কি না এসব তথ্যও উল্লেখ করা হয়েছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনটিতে।
প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হলে চীনের গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর অভিযোগটি আরও জোরালো হতে পারে।
চলতি বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৯০ দিনের মধ্যে করোনাভাইরাসের উৎসবিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন। চলতি মাসেই প্রকাশ করা হতে পারে প্রতিবেদনটি।
আরও পড়ুন:পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর মোহনায় জেলের জালে এবার ধরা পড়েছে ২৬ কেজি ২৫০ গ্রাম ওজনের একটি কোরাল মাছ।
পরে সেই মাছটি কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারে বিক্রি করা হয়েছে ৩২ হাজার ৭৫০ টাকায়।
কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারের ‘কুয়াকাটা ফিস পয়েন্টের’ পরিচালক নাসির উদ্দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মাছটি কেনেন।
তিনি বলেন, ‘সাগর মোহনায় সচরাচর এত বড় মাছ পাওয়া যায় না। আজ দুপুরে মাছটি মার্কেটে আসার পর এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নেই।’
স্থানীয় জেলেরা জানান, গত মঙ্গলবার কুয়াকাটার বাবলাতলা এলাকার জেলে রাসেল ‘মায়ের দোয়া’ নামের তার ট্রলারটি নিয়ে গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে রওনা হন। পরবর্তীতে বলেশ্বর নদীর সাগর মোহনায় রাত ২টার দিকে রাসেলের জালে এ বিশাল কোরাল মাছটি ধরা পড়ে।
রাসেল বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ শুরুর পর থেকে সাগরে মাছ পড়ে না। ভাগ্য সহায় বলে এত বড় মাছ আল্লাহ দিয়েছেন। মাছটি তীরে নিয়ে আসলে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা মাছটি ক্রয় করতে চেয়েছেন। পরে কুয়াকাটা মাছ বাজারে এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে মাছটি বিক্রি করেছি।’
জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, নদ-নদী এবং সাগরে বিভিন্ন মাছ পাওয়া যায়। সব সময় বড় মাছ ধরা পড়ছে না। সামুদ্রিক কোরাল এর চেয়েও অনেক বড় হয়।
সরকারের দেয়া ৬৫ দিন সাগরে সব ধরনের মাছ ধরার সফল কার্যক্রমের কারণেই এ ধরনের মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখার ভোল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ওই ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তাকে আটক করেছে পুলিশ।
অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদের সাঁথিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
আটক তিনজন হলেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর, ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম ও ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী। তাদের তিনজনেরই বাড়ি পাবনা জেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী।
আরও আসছে…
আরও পড়ুন:
সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কে যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পাথরবাহী ট্রাকের ধাক্কায় ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ৪ আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গৌরীনগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি গোলাম দস্তগীর আহমদ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সিলেটগামী পাথরবাহী একটি ট্রাক সিএনজিচালিত অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দিলে ৬ জন যাত্রী গুরুতর আহত হন। পরে তাদেরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
হাসপাতাল সূত্রে নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি হলেন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার লুবিয়া গ্রামের বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সী নয়ন মিয়া।
এ ঘটনায় নয়ন মিয়ার ভাই ৪০ বছর বয়সী হারুন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নয়াগাঙ্গের পাড় গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী শাহ আলম, নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার রঞ্জিত সাহার ছেলে ২৩ বছর বয়সী পার্থ সাহাসহ অজ্ঞাতনামা আরও একজন আহত হয়েছেন।
মেট্রোরেলের চলমান প্রকল্পটি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় নাগরিক সমাজ।
বৃহস্পতিবার সকালে সাভার উপজেলা পরিষদের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় মেট্রোরেলের এমআরাটি-৫ ও এমআরটি-৬-এর চলমান প্রকল্পটি হেমায়েতপুর থেকে নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ অথবা দিয়াবাড়ি থেকে সাভারের রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পে সরকার যদি কোনোরকম জটিলতা মনে করে তাহলে এমআরটি-৬ প্রকল্প উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে বিরুলিয়া হয়ে সাভার রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। পর্যায়ক্রমে তা নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিও জানান তারা।
কর্মসূচিতে সড়কের উপর দিয়ে সম্ভব না হলে মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেলের যে প্রকল্প রয়েছে, সেই প্রকল্পে সাভারকে যুক্ত করার দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন সাভার নাগরিক কমিটির সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি কামরুজামান খান।
তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের প্রকল্প সাভার পৌর এলাকার শেষ সীমানা পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর আবেদন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবকে এ ব্যাপারে অবগতপত্র দেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে রেলমন্ত্রী, সচিব ও মহাপরিচালকে পত্র দিয়ে এবং সরাসরি সবকিছু অবগত করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত সাভারবাসী রেলসেবা পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে। সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাভারের লাখ লাখ মানুষ মেট্রেরেলের সুবিধা প্রত্যাশা করেন। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া হক, সাভার নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষানুরাগী সালাহউদ্দিন খান নঈম, সাভার পৌর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মিজানুর রহমান মাসুদ, সংস্কৃতিকর্মী স্বরণ সাহা, প্রভাত ডি রোজারিও, বন্ধুরহাট যুব সংগঠনের আলোকুর রহমান, জাগরণী থিয়েটারের সভাপতি আজিম উদ্দিনসহ আরও অনেকে।
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরের পশ্চিমে মেঘনা নদীতে এমভি মৌমনি নামে একটি কার্গো জাহাজ ডুবে গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাসানচরের পশ্চিমে ইসলাম চরের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে। জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে পণ্য নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিল।
সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জেলেদের সহযোগিতায় জাহাজের ১১ নাবিককে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। তবে জাহাজের মাস্টার নিখোঁজ রয়েছে।
দুর্ঘটনার পরপরই নাবিকরা জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দিয়ে সহযোগিতা চান। পরে ৯৯৯-থেকে হাতিয়া নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে সহযোগিতার জন্য বলা হয়।
বেলা ২টার দিকে হাতিয়া কোস্টগার্ড ও নলচিরা নৌ-পুলিশের দুটি টিম উদ্ধার করার জন্য হাতিয়ার নলচিরা ঘাট থেকে রওনা হয়।
হাতিয়া কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট হারুনর রশিদ বলেন, ‘ঘটনাটি ঘটেছে ভাসানচরের পশ্চিমে ইসলাম চরের কাছে সাগর মোহনায়। খবর পেয়ে কোস্টগার্ডের একটি দল ট্রলার নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলেদের সহযোগিতায় ১১ নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে জাহাজের মাস্টারকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।’
মোহাম্মদ ওহায়েদুল ইসলাম নামে জাহাজের মালিক পক্ষের একজন জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে জাহাজটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তবে ডুবে যাওয়ার সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি। জাহাজে থাকা লোকজনের সঙ্গে প্রথমে কথা বলা গেলেও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় পরে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। জাহাজটি চট্টগ্রাম থেকে মালামাল নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিল। জাহাজে ১২ জন নাবিক ছিল।
আরও পড়ুন:ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এমপির প্রচেষ্টায় বিদ্যুতের লোডশেডিং থেকে অনেকটাই রক্ষা পেয়েছে চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলার প্রায় ৮ লাখ মানুষ। চালু হয়েছে বন্ধ থাকা ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। বিষয়টি এক ভিডিও বার্তায় নিশ্চিত করেছেন তিনি।
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ নসরতপুরে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সম্প্রতি চালু হয়েছে। এতে করে ব্যারিস্টার সুমন এমপির সংসদীয় এলাকায় আগের তুলনায় লোডশেডিং কমেছে। আগে এখানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৫-১৬ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকতো না। বর্তমানে দিন-রাত মিলে ১৬ থেকে ১৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন ওই এলাকার মানুষ। প্রচণ্ড গরমের এই সময়ে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং কমে আসায় জনজীবনে ফিরেছে স্বস্তি।
পবিত্র রমজান মাসে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অতীষ্ঠ হয়ে এমপি সুমনের কাছে এর সমাধান চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হন চুনারুঘাট-মাধবপুরবাসী। তিনি নিজ সংসদীয় এলাকার জনগণের বিদ্যুৎ-ভোগান্তির খবর শুনে ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় লোডশেডিং কমানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সমাধান না হলে তিনি মহাসমাবেশের ডাক দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।
পরবর্তীতে ব্যারিস্টার সুমনের ঐকান্তিক চেষ্টায় ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র চালুর মাধ্যমে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে আসে।
ভিডিও বার্তায় এই খবর দিতে গিয়ে এমপি সুমন বলেন, ‘গ্যাস সংযোগ না থাকায় নসরতপুর ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এতোদিন বন্ধ ছিল। গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে কেন্দ্রটি চালু হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, আর আগের মতো অতটা লোডশেডিং হবে না।
‘যদি আবারও অসহনীয় লোডশেডিং হয়, তবে পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহি করতে হবে জনগণের কাছে।’
পরিশেষে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিব, ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ইনচার্জসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় সৈকতে ভেসে এসেছে বিরল প্রজাতির ‘ইয়েলো-বেলিড সি স্নেক’।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাতিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাহবুব মোর্শেদ লিটন। আগের দিন বুধবার বিকেলে উপজেলার কমলার দিঘি সমুদ্র সৈকতে সাপটি দেখা যায়।
মাহবুব মোর্শেদ লিটন বলেন, ‘বুধবার বিকেলের দিকে তানিম নামে এক যুবক ঘুরতে যান উপজেলার চর ঈশ্বর ইউনিয়নের কাজির বাজারের কমলার দিঘি সমুদ্র সৈকতে। ওই সময় তিনি সাপটি দেখতে পান। এরপর স্থানীয় কিছু লোকজনও সেখানে গিয়ে সাপটি দেখতে পান। আমি বিষয়টি স্থানীয় বনবিভাগকে জানিয়েছি। এরপর ওই সাপের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।’
উপকূলীয় বন বিভাগ নোয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ বলেন, ‘ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। এটি একটি বিষধর সাপ। উভচর প্রাণী হিসেবে বিভিন্ন প্রজাতির সাপ জলে ও স্থলে প্রায় সময় দেখা যায়। তবে এই প্রজাতির সাপ বিরল। এগুলো এই অঞ্চলে তেমন একটা দেখা যায় না। সাপটি সন্ধ্যার দিকে উপকূলে উঠে মানুষের আনাগোনা দেখে আবার সাগরে চলে যায়।’
মন্তব্য