জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্টের দিন ভুয়া জন্মদিন পালন করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জাতির সঙ্গে প্রতি বছর তামাশা করেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শনিবার ১৫ আগস্ট উপলক্ষে ভার্চুয়াল এক আলোচনা সভায় যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে এক নির্মম, বেদনাদায়ক হত্যাকাণ্ড ১৫ আগস্ট। এদিনে ভুয়া জন্মদিন পালন করে বেগম খালেদা জিয়া জাতির সঙ্গে তামাশা করছেন। আপনার কর্মসূচি পরিবর্তন করেছেন কেক কাটার পরিবর্তে দোয়া মাহফিল করেছেন কিন্তু জন্মদিন পালন করছেন।’
বিভিন্ন নথিতে খালেদা জিয়ার অন্তত পাঁচটি জন্ম তারিখ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর দিন তথা জাতীয় শোক দিবসে (১৫ আগস্ট) আনন্দ-উৎসব করে জন্মদিন পালন করে আসছে বিএনপি। গত কয়েক বছর ধরে অবশ্য এদিন কেক না কেটে দোয়া মাহফিল আয়োজন করে দলটি।
জাতির পিতার মৃত্যুবার্ষিকীর দিন খালেদা জিয়ার ভুয়া জন্মদিন পালনে বিভিন্ন মহলে রয়েছে নানা সমালোচনা। এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি প্রধানের জন্মদিনসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য চেয়েছে হাইকোর্টও।
ওবায়দুল কাদের জানান, মেট্রিকুলেশন সনদ অনুযায়ী বেগম জিয়ার জন্মদিন ৯ আগস্ট ১৯৪৫; বিবাহ সনদে ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৫, পাসপোর্ট সনদে ১৯ আগস্ট ১৯৪৫। আবার দাবি করেন ১৫ আগস্ট ১৯৪৫ তার জন্মদিন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, একজন মানুষের এতগুলো জন্মদিন থাকা নিয়ে দীর্ঘদিনের রহস্য এখন নতুন করে বেগম জিয়াই উন্মোচন করেছেন। অবশেষে করোনা টেস্টের জন্য দেয়া তথ্যে জানা গেল খালেদা জিয়ার জন্মদিন ৮ মে, ১৯৪৬।
ওবায়দুল কাদেরের মতে, দেশকে নেতা ও মেধাশূন্য করতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। যারা হত্যা করেছে তারা শান্তির বাংলাদেশ চায় না। তারা অস্থিতিশীল বাংলাদেশ যায়।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকটি বড় বড় মেগা প্রকল্প নিয়ে তারা মিথ্যাচার করে। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়নি বিশ্বব্যাংক তাদের ভুল স্বীকার করেছে। তবুও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মেগা প্রকল্প নিয়ে মিথ্যাচার করছে বিএনপি।
‘পরাজিত ও প্রতিক্রিয়াশীল চক্রদের বলতে চাই, বঙ্গবন্ধু একজন নিরপেক্ষ রাজনীতিবিদ থাকার কারণে এত সংঘাত, এরপরও আপনারা রাজনীতি করার সুযোগ পাচ্ছেন।’
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল আমিন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতান, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ইকবাল আর্সলান, সাধারণ সম্পাদক এমএ আজিজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শরফুদ্দিন আহমেদ ও ইমার্সিভ চেয়ারম্যান সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের রাজনীতির রহস্য পুরুষ হিসেবে পরিচিত সিরাজুল আলম খান আর নেই। তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে শুক্রবার এ রাজনৈতিক তাত্ত্বিকের মৃত্যু হয়।
ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ রাসেল জানান, দুপুর সোয়া দুইটার দিকে ঢামেক হাসপাতালে মৃত্যু হয় সিরাজুল আলম খানের। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়েছিল।
তিনি জানান, সিরাজুল আলম খানকে ২০ মে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে নেয়া হয় আইসিইউতে।
এর আগে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের সভাপতি ও সিরাজুল আলম খানের ঘনিষ্ঠ শরীফ নুরুল আম্বিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সিরাজুল আলম দাদা ভাইয়ের পরিবার নিশ্চিত করেছে যে, তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আজ দুপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।’
সিরাজুল আলম খানের ঘনিষ্ঠ ইয়াসমিন ইতি রাজনৈতিক তাত্ত্বিকের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দিয়ে ক্যাপশনে লিখেন, ‘আমার বাপি দাদা সিরাজুল আলম খান আর নেই। আমি খুব খারাপ একটা মেয়ে যে বাবার এই সময়ে পাশে থাকতে পারল না।’
রাজনৈতিক তাত্ত্বিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও লেখক সিরাজুল আলম খান বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের স্থপতি হিসেবেও পরিচিত। তিনি ১৯৬২ সালে ‘স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াস’ প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৪১ সালের ৬ জানুয়ারি নোয়াখালীতে জন্ম সিরাজুল আলম খানের। তিনি ছিলেন খোরশেদ আলম খান ও সৈয়দা জাকিয়া খাতুন দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান।
বাবা সরকারি চাকরিজীবী হওয়ায় তার বদলির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় থাকার অভিজ্ঞতা হয়েছে সিরাজুল আলম খানের। ১৯৫৬ সালে খুলনা জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন তিনি। তিনি ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ সময়কালে ঢাকা কলেজ এবং ১৯৫৮ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন।
সিরাজুল আলম খানের বাবা খোরশেদ আলম খান স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় পড়ালেখা করেন। শৈশব থেকেই বাবাকে পথপ্রদর্শক হিসেবে পেয়েছিলেন এ রাজনৈতিক তাত্ত্বিক।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দৃশ্যমান সর্বশক্তি নিয়োগের পরও আওয়ামী লীগের সৎ, সজ্জন হিসেবে পরিচিত প্রার্থী আজমত উল্লা খান হেরে গেছেন। সরকার তথা আওয়ামী লীগের অর্জন সুষ্ঠু নির্বাচন। দলটির নেতারা বলছেন, গাজীপুরের মতো বাকি চার সিটিতেও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।
সিটি করপোরেশনগুলোর মধ্যে রাজশাহী ও খুলনায় ক্ষমতাসীন দলের অবস্থান ভালো হলেও বরিশালে ততটা সুবিধাজনক নয়।
গাজীপুরের মতো বরিশালে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী না থাকলেও দলে আছে বিভেদ। পাশপাশি ইসলামী আন্দোলনের মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম শক্তিশালী প্রার্থী। এমন বাস্তবতায় ঐক্যবদ্ধ হতে না পারলে গাজীপুরের মতো বরিশালেও পরাজয় ঘটতে পারে আওয়ামী লীগের।
এ নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বরিশালের সন্তান জাহাঙ্গীর কবির নানক। দলের পক্ষে বরিশালে কেন্দ্রীয় প্রচার কমিটিতেও রয়েছেন তিনি।
নিউজবাংলাকে নানক বলেন, ‘মান-অভিমান মিটে গেছে। সবাই একযোগে কাজ করছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন।’
আগামী ১২ জুন বরিশাল সিটিতে নির্বাচন হবে। সে হিসাবে ভোটের আর বাকি তিন দিন। নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ১১ সদস্যের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল, সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ কাজ করছে নগরে।
বরিশাল সিটিতে এবার বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর বদলে মনোনয়ন পেয়েছেন তার চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত। এ নিয়ে চাচা, ভাতিজার মধ্যে দ্বন্দ্বের বিষয়টি প্রকাশ্য রূপ পেয়েছে।
সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বিপুলসংখ্যক অনুসারী রয়েছে তার। তার বাবা আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা। তাকেই কেন্দ্রীয় প্রচার প্রতিনিধি দলের প্রধান করা হয়েছে। তিনি ভাইকে নিয়ে একাধিক দলীয় কর্মসূচিও পালন করছেন; করেছেন কোলাকুলিও, তবে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলেছে, এ বিভেদ মেটার নয়।
সূত্রগুলো বলেছে, বাবা-ছেলে তাদের জায়গায় অন্য কাউকে দেখতে চান না। দলের বৃহৎ অংশ দুজনের সঙ্গে। স্বাভাবিকভাবেই তারা কেউ প্রার্থীর পক্ষে আন্তরিকভাবে কাজ করবেন না।
বরিশালের প্রয়াত মেয়র শওকত হোসেন হিরণের অনুসারী নেতা-কর্মী এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের সমর্থক নেতা-কর্মীরা খোকন সেরনিয়াবাতকে সমর্থন দিচ্ছেন, কিন্তু বরিশালের প্রার্থীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা কম। একসময় তিনি যুবলীগের সদস্য থাকলেও পরবর্তী সময়ে পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী হয়ে যান।
এদিকে চাচা-ভাতিজার মন কষাকষির পাশাপাশি ছাত্রলীগের সাবেক প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার বিরোধিতাও এখন বরিশালের মানুষের মুখে মুখে। সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারীরা প্রথম দিকে নির্বাচনী মাঠে না থাকলেও এখন দৃশ্যমান। তবুও সংশয় রয়েই যায় যে, তারা আদৌ আন্তরিকভাবে কাজ করবেন কি না। কেননা সাদিক চাচার পক্ষে ঢাকা থেকে বৈঠকে যোগ দিলেও শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে দুই পক্ষ আলাদা কর্মসূচি পালন করে। এতে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে; মামলা হয়।
এর আগে খোকনের মনোনয়ন ঘোষণার পরও এক দফা সংঘর্ষ হয়। তখন থেকে কিছু নেতা-কর্মী এখনও জেলে রয়েছেন।
বরিশাল নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আবুল খায়ের আবদুল্লাহর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য মীর আমিন উদ্দীন বলেন, ‘এখন দৃশ্যমান বিরোধ নেই। আমরা চেষ্টা করব নৌকার সব ভোট যেন খোকন সেরনিয়াবাত পান। তাহলে কেউ বিজয় ঠেকাতে পারবে না।’
এদিকে ইসলামী আন্দোলনের মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম শক্তিশালী প্রার্থী। গত দুই বছরের নির্বাচনগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ইসলামী আন্দোলন শক্তিশালী দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪০ হাজারেরও বেশি ভোট পায় ডানপন্থি রাজনৈতিক দলটি। এ ছাড়া বরিশাল সিটি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার দিন বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর উপস্থিতি তার জনপ্রিয়তার প্রমাণ দেয়।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ‘টেবিলঘড়ি’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা কামরুল আহসান বিএনপি ঘরানার স্বতন্ত্র প্রার্থী। তিনি বরিশালের বিএনপি দলীয় প্রয়াত মেয়র আহসান হাবিব কামালের ছেলে।
কামাল বরিশাল নগর বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মৎস্যজীবীবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।২০১৩ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তৎকালীন মেয়র শওকত হোসেনকে ১৭ হাজার ভোটে হারিয়েছিলেন তিনি। বাবার এই প্রভাব কামরুলের ক্ষেত্রেও কাজ দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। তা ছাড়া অধিকাংশ ওয়ার্ডে বিএনপি-জামায়াতের কাউন্সিলর প্রার্থী থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান বিএনপির সমর্থকদের ভোট পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
দলের হয়ে বরিশাল সিটি নির্বাচনের প্রচার কমিটিতে থাকা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খোকন আবদুল্লাহ ও সাদিক আব্দুল্লাহ চাচা-ভাতিজা, একই পরিবারের সন্তান। তাদের মধ্যে সাময়িক দূরত্ব তৈরি হয়েছিল, তবে এখন সবাই একযোগে কাজ করছেন।
‘তাদের দুজনেরই অভিভাবক দলের সিনিয়র নেতা আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে সব সমস্যার সমাধান হয়েছে। নৌকার জয় হবেই ইনশাআল্লাহ।’
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে কথা হয় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের সঙ্গে। তিনি আওয়ামী লীগের বিভেদকে দেখছেন স্বার্থের দ্বন্দ্ব হিসেবে।
রাজনৈতিক এ পর্যবেক্ষক বলেন, ‘রাজত্ব হারানোর ভয়ে একটি অংশ মেয়র প্রার্থীকে সহায়তা করবে না, এটা স্বাভাবিক। দল ঐক্যের চেষ্টা করছে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে দূরত্ব রয়েই যাবে; বরং তারা বিরোধী পক্ষকে নির্বাচিত দেখতে চাইবে যাতে নিজেদের প্রভাব ও প্রতিপত্তি নষ্ট না হয়।’
আরও পড়ুন:চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য (এমপি) বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে লড়তে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন নায়ক ফেরদৌস।
ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে সম্প্রতি এই দলীয় ফরম সংগ্রহ করেন তিনি।
ফেরদৌস দুই দশকের ক্যারিয়ারে দুই বাংলায় উপহার দিয়েছেন বহু ব্যবসা সফল সিনেমা। চলচ্চিত্র জগতের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নানা সময় সক্রিয় দেখা গেছে তাকে। তিনি ক্ষমতাসীন এ দলের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য।
চিত্রনায়ক ফারুকের আসনে ফেরদৌসের আওয়ামী লীগের টিকিটে এমপি হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে ফেসবুকে প্রথম প্রসঙ্গটি তোলেন আরেক নায়ক ওমর সানী। এর আগে বিনোদন জগতের আরও কয়েকজনের নামও এসেছে এই আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে। এর মধ্যে আছেন অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান, কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তারাও।
সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৫ মে মারা যান চিত্রনায়ক ফারুক। পরে তার আসন শূন্য ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ঢাকা-১৭ শূন্য আসনে ভোট হবে আগামী ১৭ জুলাই। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় আগামী ১৫ জুন, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৮ জুন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ জুন।
সিদ্দিক নিজেই চালাচ্ছেন প্রচারণা, ফেরদৌসের সক্রিয় আছেন। আর আলমগীরের নাম তুলেছেন চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমান। তবে আলমগীরের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি এখনও।
নায়ক ফেরদৌস বনানী ডিওএইচএস এলাকায় বসবাস করছেন অনেক দিন ধরেই। এবার এ এলাকার মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চান তিনি।
দেশব্যাপী অসহনীয় লোডশেডিং এবং বিদ্যুৎ খাতে সীমাহীন লুটপাট ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার প্রতিবাদে হারিকেন ও মোমবাতি জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে শহরের দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের করে বাতিরকল বিদ্যুৎ অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে দলটি। এতে নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
এ সময় পুলিশের বাধার মুখে পড়েন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাটের কারণে জনজীবনে মহাবিপর্যয় নেমে এসেছে। তারা কথায় কথায় শতভাগ বিদ্যুতের বুলি ওড়ায়। কিন্তু, পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, সরকারের এমপি-মন্ত্রীরাই দ্রব্যমূল্য, লোডশেডিং নিয়ে একেঅপরকে দোষারোপ করছেন। অথচ তারাই বিদ্যুৎ খাতের টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছেন।’
এ সময় দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক ডা. মাহাবুবুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ, উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, যুগ্ম আহবায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধি দল বাতিরকলে অবস্থিত পিডিবির ময়মনসিংহ দক্ষিণ কার্যালয়ের উপকেন্দ্রে স্মারকরিপি দেয়।
আরও পড়ুন:বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ভারতে থেকে যে কোনো সময় দেশে ফিরতে পারবেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
অনুপ্রবেশের মামলায় মেঘালয়ের শিলং জজ কোর্ট থেকে খালাস পাওয়ার প্রেক্ষাপটে তার এ সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতিক শাখার মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
রফিকুল ইসলাম বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সালাহউদ্দিন আহমেদের দেশে ফেরার আবেদন মঞ্জুর করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ভারতের আসাম রাজ্যের গৌহাটিতে বাংলাদেশ মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আসাম থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য তাকে ট্রাভেল পাস দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে মিশনকে জানানো হয়েছে।
সালাহউদ্দিন কবে দেশে ফিরতে পারবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা তার ওপর নির্ভর করবে। তিনি যে কোনো সময় দেশে ফিরতে পারবেন।
পাসপোর্ট না থাকায় সালাহউদ্দিন দেশে ফিরতে ট্রাভেল পারমিটের জন্য গৌহাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে আবেদন করেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার আবেদন মঞ্জুর করে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি গৌহাটিতে সহকারী হাইকমিশনকে জানায় বলে নিশ্চিত করেছেন রফিকুল ইসলাম।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ ঢাকার উত্তরা থেকে নিখোঁজ হওয়া সালাহউদ্দিন আহমেদকে ৬৩ দিন পর ১১ মে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে স্থানীয় পুলিশ উদ্ধার করে। তাকে সেখানকার একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর পরদিন তাকে শিলং সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বৈধ কাগজপত্র ছাড়া ভারতে প্রবেশের অভিযোগে ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী সালাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার দেখায় মেঘালয় থানা পুলিশ। একই বছরের ২২ জুলাই ভারতের নিম্ন আদালতে আনুষ্ঠানিকভাবে তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে অভিযোগ গঠন করা হয়।
সালাহউদ্দিন আহমেদ ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন। এরপর সরকারি চাকরি ছেড়ে তিনি রাজনীতিতে আসেন। ২০০১ সালে তিনি কক্সবাজার থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপি ক্ষমতায় এলে তিনি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী হন।
ভারতে আটকের আগে বিএনপির মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করছিলেন সালাহউদ্দিন। দলের কর্মসূচি ও নেতা-কর্মীদের কাছে শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশনা গণমাধ্যমে পাঠানোর কাজ করতেন তিনি।
ভারতে আটকের সময় সালাহউদ্দিন আহমেদ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। এ অবস্থায়ই বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিলে তাকে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য করা হয়।
আরও পড়ুন:কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে নৌকার মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে আটটি কেন্দ্রে ভোটে কারচুপি করেছেন বলে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছেন হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী। তিনি উখিয়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
মঙ্গলবার রাতে কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর পক্ষে নির্বাচনী পথসভায় এমন বক্তব্য দিলে বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের নজরে আসে৷
উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এস এম ইমরুল কায়েস চৌধুরীর বক্তব্যের বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
বৃহস্পতিবার ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক আশাদুল হক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে ৮ তারিখ প্রকাশিত সংবাদে কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব এস এম ইমরুল কায়েস চৌধুরীর বক্তব্যের বিষয়ে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করার জন্য সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়কে পত্র দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
গত মঙ্গলবার কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান কায়সারুল হক জুয়েলকে উদ্দেশ্য করে ইমরুল কায়েস বলেন, ‘কায়সারুল হক জুয়েল তুমি একজন অকৃতজ্ঞ ও অমানুষ। কারণ গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে গিয়ে তোমার জন্য আটটি কেন্দ্রে আমি ভোট ডাকাতি করেছি।’
আরও পড়ুন:সংলাপ নিয়ে সরকার তথা আওয়ামী লীগ আপাতত ভাবছে না বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, সংলাপের কথা শুনে বিএনপির নেতাদের আবারও জিহ্বায় পানি এসেছে। কিন্তু আমরা এ নিয়ে আপাতত ভাবছি না, ভাবব কি না সেটা পরের বিষয়। গতবার দুই বার তাদের সঙ্গে সংলাপে বসেছি। রেজাল্ট কী?
ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নিষেধাজ্ঞার জন্য নালিশ করতে করতে বিএনপি এখন নিজেরাই ফাঁদে পড়েছে। তারা নিজেরাই ‘ফাঁদে পড়ে কান্দে’। তারা নালিশ করে নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে পেয়েছে ভিসানীতি। এই ভিসানীতি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কাকে ভিসা দেবে, কাকে দেবে না, একটা সেই দেশের ব্যাপার। আমরাও আমাদের দেশে কাকে ভিসা দেব, কাকে দেব না, সেটাও আমাদের ব্যাপার।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেবের জিহ্বায় পানি আসছে। মনে করছে আওয়ামী লীগ তাদেরকে সংলাপে ডাকবে। এই সংলাপের কথা আমরা ভাবছি না। নিরপেক্ষ কে? আপনার নেত্রী বলেছে শিশু এবং পাগল। শিশু এবং পাগল ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। কাজেই আপনি শিশু এবং পাগলের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরপেক্ষ ব্যক্তি খুঁজে বের করুন। তারপর বোঝা যাবে কী হবে।
তিনি বলেন, আর এটা নিয়ে মাথা খারাপ করে কাজ নেই, এই তত্ত্বাবধায়ক আর আসবে না, তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে। এই মরা জিনিসকে আর জীবিত করার চেষ্টা করবেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করেনি, এটা নিষিদ্ধ করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নমিনেশন লন্ডন থেকে দেয়, ঢাকা থেকে দেয়, নয়াপল্টন থেকে দেয়, গুলশান থেকে দেয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে নমিনেশন বিক্রি করে। এটাই হচ্ছে বিএনপি। মনে আছে ওই নমিনেশন বাণিজ্য, অনেকের পকেট খালি করেছে। একেক জায়গায় তিনজন চারজন করে নমিনেশন পেয়েছে, এটা হচ্ছে বিএনপি।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন ছিল না। খালেদা জিয়ার ইচ্ছায় নির্বাচন কমিশন ছিল আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন। পার্লামেন্ট আইন করে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন নিয়ে আপনাদের চিৎকার করার কোনো কারণ নেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিদেশিরা চায় নিরপেক্ষ নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রী দেশি বিদেশিদের আশ্বস্ত করে বলেছেন যে, নিরপেক্ষ অবাধ নির্বাচন করব। বিএনপি চায় তত্ত্বাবধায়ক। বিএনপি চায় শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। এটা মামা বাড়ির আবদার।
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র গিলে খেয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা গিলে খেয়েছে। এরা মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ গিলে খেয়েছে। এদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। এরা যদি ক্ষমতা ফিরে পায়, বিএনপি নামের বিষধর সাপ গোটা দেশ গিলে খাবে।
সম্প্রতি বিএনপির সঙ্গে সংলাপ নিয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু একটি বক্তব্য দেন, যা নিয়ে চলছে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা।
আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ১৪ দলের সমাবেশে দেয়া ওই বক্তব্যে তিনি জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহের কথা বলেন। তবে আওয়ামী লীগের অন্য নেতারা বলেছেন, এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেই।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য