তীব্র সমালোচনার মুখে পাবনা ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে এক নেতাকে।
অব্যহতি পাওয়া খাইরুল ইসলাম রাজাকারের ছেলে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক মাসুদ রানা ও যুগ্ম আহ্বায়ক সজিব মালিথা।
পাবনা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সা. সম্পাদকের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে রোববার দুপুরে ওই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে খাইরুলের বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ঈশ্বরদীর স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধারা জানান, দীর্ঘ ১২ বছর পর গত ৩১ জুলাই তিন মাসের জন্য ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ২০ সদস্যের এই কমিটিতে মাসুদ রানাকে আহ্বায়ক ও সজিব মালিথাকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়।
দলে অনুপ্রবেশের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, ঘোষিত কমিটির ৮ নম্বর সদস্য খাইরুল ইসলাম ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ঈশ্বরদীর চিহ্নিত রাজাকার শহরের মশুড়িয়া পাড়ার (ভাটাপাড়া) এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।
বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যে হৈচৈ পড়ে যায়। তারা বিষয়টি ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী মালিথা এবং স্থানীয় এমপি বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাসের দৃষ্টিতে এনে প্রতিকার দাবি করেন।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মাসুদ রানা জানান, কমিটিতে খাইরুল ইসলামের নাম আসায় চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়। রোববার দুপুরে খাইরুলকে অব্যাহতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ পাবনা জেলা কমিটি।
কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সজিব মালিথা জানান, দীর্ঘদিন পর তড়িঘড়ি করে কমিটি ঘোষণা করায় দলের মধ্যে হাইব্রিডদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। খাইরুল ইসলাম মৃত রাজাকার আবুল হোসেনের পুত্র জানার পর তাকে পাবনা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ পাবনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, ‘ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক এক মেয়রের সুপারিশে রাজাকারের ছেলে খাইরুল ইসলাম কমিটিতে এসেছে। জেলা কমিটির পক্ষ থেকে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে ঈশ্বরদীতে কমিটি দেয়া আমাদের ভুল হয়েছে। রাজাকারের ছেলে কমিটিতে থাকায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।’
ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইছাহক আলী মালিথা জানান, খাইরুল ইসলাম রাজাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। রাজাকারের ছেলে আওয়ামী লীগের সংগঠনে ঢুকে পড়ায় দলের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এক কুচক্রী দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির লক্ষ্যে এভাবে স্বাধীনতাবিরোধীর ছেলেকে দলে প্রবেশ করিয়েছে।’
পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, শুধু আবুল হোসেন রাজাকারের ছেলে খাইরুল ইসলামই আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করেনি। ঈশ্বরদীতে অনেক রাজাকারের ছেলেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদ-পদবি দখল করেছে।
আওয়ামী লীগ থেকে রাজাকার পরিবারের সদস্যদের বহিষ্কার করতে তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। দলে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র থাকতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলে ফ্যাসিবাদীরা ফিরে আসবে বলে শুক্রবার মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে সকালে জেলা জামায়াত আয়োজিত কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘এমন কোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন না যাতে আমাদের জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হয় এবং ফ্যাসিস্টরা ফিরে আসার সুযোগ পায়।’
তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজি ও দখল বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হলে পুনরায় ফিরে আসার সুযোগ পাবে ফ্যাসিস্টরা। জাতীয় ঐক্য অটুট রেখে মানবিক বাংলাদেশ গড়তে হবে।’
উন্নয়নের নামে আওয়ামী লীগ সরকার ২৬ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে অভিযোগ করে শফিকুর বলেন, সেই ফ্যাসিস্টদের আশ্রয় আর বাংলার মাটিতে হবে না।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের সংঘটিত সকল হত্যার বিচার চাই। মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই যুদ্ধ চলবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত দীর্ঘ ৫৩ বছরের প্রত্যেকটি খুন, গুম ও অপকর্মের বিচার বাংলার মাটিতে হবে। যারা বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মের মানুষের ওপর জুলুম-অত্যাচার করেছে, জমি দখল করেছে, ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করেছে, অন্যায়ভাবে সম্পদ লুণ্ঠন করেছে,তাদের ইজ্জতে হাত দিয়েছে, সেসব দুষ্কৃতিকারীদের তালিকা তৈরি করে জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে।’
আরও পড়ুন:অবৈধ ইটভাটায় সয়লাব হয়ে গেছে যশোর।
জেলায় ১৪৪টি ইটভাটা থাকলেও সেগুলোর ১১৪টিই অবৈধ বলে জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, পরিবেশ আইনের ব্যত্যয় ও ডিসির লাইসেন্স না থাকায় ওই ভাটাগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার বৈধতা নেই। এমনকি জেলার কোনো ভাটাই সব শর্ত পূরণ করেনি।
জিগজ্যাগ পদ্ধতির মাত্র ৩০টি ইটভাটা এখন পর্যন্ত মোটামুটি আইনসিদ্ধভাবে চলছে বলে দাবি পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের।
যশোরের বেশির ভাগ ভাটার বৈধতা না থাকার বিষয়টি এর আগে আন্তমন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও উঠে আসে। এমন বাস্তবতায় সম্প্রতি অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মাঠে নামার ঘোষণা দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক এমদাদুল হক জানান, গত এক মাসে ১৮টি ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। শিগগিরই অবৈধ ভাটাগুলো উচ্ছেদে কাজ শুরু হবে।
২০১৩ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনে সংশোধনী এনে ইটভাটার জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়।
নির্দিষ্ট এলাকায় ইটভাটার জায়গা, ভাটার দূরত্ব ও সংখ্যা নির্ধারণের নির্দেশনাও সে সময় দেওয়া হয়। এমনকি লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা চালালে দুই বছরের জেল ও ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান সংযোজন করে ‘ইট প্রস্তুত ও ভাটা (নিয়ন্ত্রণ) সংশোধন আইন, ২০১৯’ বিল সংসদে পাস হয়।
ধারা-৪ এ সংশোধনী এনে বলা হয়, চলমান যেকোনো আইনে যা কিছুই থাক না কেন, ইটভাটা যে জেলায় অবস্থিত, সেই জেলার জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণ না করলে কোনো ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করতে পারবেন না। কিন্তু যশোরের প্রেক্ষাপটে এ সবের ব্যত্যয় ঘটে আসছে ২০১৯ সালের সংশোধনীর পরও।
পবিবেশ আইন অনুযায়ী, এক কিলোমিটারের মধ্যে আবাসিক এলাকা, সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন বন, বাগান, জলাভূমি, কৃষি জমি, বিশেষ কোনো স্থাপনা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা অনুরূপ কোনো স্থান বা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে ১ কিলোমিটার বা ১ হাজার মিটার দূরত্বে ভাটা স্থাপন করতে হবে। একই সঙ্গে ভাটাগুলো এখন জিগজ্যাগ পদ্ধতির হতে হবে।
১২০ ফুট চিমনির সনাতনী ভাটা এখন আর আইনসিদ্ধ নয়, কিন্তু যশোর জেলার অধিকাংশ ভাটার ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় ঘটে চলেছে।
আইনের ব্যত্যয় ঘটলেও অনেকে এর আগে ছাড়পত্র সংগ্রহ করেছেন। যদিও বিধি অনুযায়ী, পরিবেশ আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে নিষিদ্ধ এলাকার সীমানার ভেতরে ইটভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার অনুমতি বা ছাড়পত্র বা লাইসেন্স দিতে পারবে না। অথচ এর আগে অনেকেই নানা বাঁকা পথে হাসিল করেছেন ছাড়পত্র।
জেলায় এমন ভাটাও রয়েছে, যেখানে এক কিলোমিটার তো দূরের কথা, ২০ গজের মধ্যেই রয়েছে বসতবাড়ি। ১০০ গজের মধ্যে ঘনবসতি গ্রাম রয়েছে। ভাটা নির্মাণের ক্ষেত্রে কোনো শর্তই মানা হয়নি।
আবার সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিকভাবেও চলছে কয়েকটি ইটভাটা। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই, আবাসিক এলাকায় ধানী ও কৃষি জমি নষ্ট করে নির্মাণ করা হয়েছে ইটভাটা।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কবরস্থান ও মসজিদ, শতাধিক পরিবারের বসতি গ্রামসহ রয়েছে স্পর্শকাতর অনেক প্রতিষ্ঠান। বিগত সময়ে পরিবেশ আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙুল দেখিয়ে ভাটা নির্মাণ করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এক কিলোমিটারের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে—জেলায় এমন ভাটার সংখ্যা রয়েছে ১১০টি। এর অনেকগুলো জিগজ্যাগ হলেও পরিবেশ আইন মানা হয়নি। শর্ত পূরণ না করেই চলছে এসব ভাটার কার্যক্রম। যে কারণে অবৈধ ভাটার তালিকায় পড়েছে সেগুলো।
ওই তালিকা থেকে বছর কয়েক আগে ৩৩টি ভাটার ব্যাপারে যশোর পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা সদর দপ্তরের মনিটরিং ও এনফোর্সমেন্ট শাখায় প্রতিবেদন পাঠিয়েছিল। আইনগত বৈধতা না থাকায় ওই ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল প্রতিবেদনে। তারপরও ভাটাগুলোর অধিকাংশই এখন চলছে বহাল তবিয়তে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, ডিসির লাইসেন্স ও পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই ভাটাগুলো চলায় সেগুলোর বেশির ভাগের পাশেই রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা। ভাটার কারণে নষ্ট হয়েছে কৃষিজমি। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আবাসিক এলাকার ওপর।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, জেলার অবৈধ ১১৪টি ভাটার ওপর সম্প্রতি নজরদারি শুরু হয়। এরই মধ্যে গত ২৭ ডিসেম্বর ও ৮ জানুয়ারি জেলার ১৮টি অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালায় অধিদপ্তর। আইনগতভাবে না হলেও পরিবেশ আইনের ব্যত্যয় ঘটলে একে একে সেগুলো উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
অধিদপ্তর আরও জানায়, জেলায় খাতা-কলমে এখন যে ৩০টি বৈধ ভাটা আছে, তাদের ব্যাপারেও নতুন করে খোঁজখবর নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক এমদাদুল হক ইউএনবিকে বলেন, ‘ভাটা-সংক্রান্ত সব অসঙ্গতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে মাঠে নামা হচ্ছে। সব ধরনের দেন-দরবার উপেক্ষা করে জনস্বার্থে এবং এলাকার পরিবেশ সমুন্নত রাখতে অবৈধ সব ভাটা উচ্ছেদে কাজ শুরু হয়েছে।
‘অনেক ভাটার আংশিক ভেঙে দেওয়াও হয়েছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা করা হচ্ছে।’
তার ভাষ্য, ‘যশোরে (পরিবেশ নিয়ে) কোনো অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। আগে কী হয়েছে, সেটি বিবেচ্য নয়। এখন সব ভাটাই বিধি অনুযায়ী চালাতে হবে। পরিবেশ আইনের ব্যত্যয় ঘটলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জের ভৈরবের বেসরকারি স্বদেশ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির জরায়ু কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ওই প্রসূতির নাম শাবনুর আক্তার (২২), যিনি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের কদমচাল গ্রামের নুরুল ইসলামের স্ত্রী।
ভৈরব শহরের বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালটিতে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।
খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মেহেদী ওই হাসপাতালে পরিদর্শন ও রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ওই সময় রোগীর অবস্থা গুরুতর দেখে রাতেই তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরে থানা পুলিশ হাসপাতালে যায়।
বর্তমানে প্রসূতি ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার বড় ভাই সোহেল মাহমুদ বৃহস্পতিবার রাতে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ছোট বোন শাবনুর আক্তার প্রসূতি হিসেবে প্রসব বেদনা নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় স্বদেশ হাসপাতালে ভর্তি হয়। এ সময় তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সন্ধ্যায় তাকে সিজার করলে একটি মেয়ে শিশুর জন্ম নেয়। তারপর হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমানের নিকট থেকে জানতে পারি, আমার বোনের জরায়ু কেটে ফেলা হয়।
‘আমার বোনের সিজার অপারেশন করেছে ডাক্তার মিশুতি রানী ঘোষ। এরপর ঘটনাটি আমি পুলিশকে অবহিত করি। এরপর ডাক্তারের পরামর্শে আমার বোনকে রাতেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেছি। সেখানে এখন চিকিৎসা চলছে।’
এ বিষয়ে স্বদেশ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রসূতির সিজার করার পর জরায়ু সেলাই করার সময় বারবার ফুলে গেলে সেলাই করা যাচ্ছিল না। এতে তার রক্তক্ষরণ চলছিল। কিন্তু বন্ধ করা যাচ্ছিল না।’
অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক মিশুতি রানী ঘোষ বলেন, ‘অপারেশন শেষে জরায়ুর মুখ সেলাই করার সময় বারবার ফুলে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। পরে রোগীর অভিভাবকের সাথে কথা বলে তাকে বাঁচাতেই জরায়ু কেটে ফেলতে হয়। এটা ভুল চিকিৎসা নয়।’
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহম্মদ বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি আমার হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার মেহেদিকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। ঘটনাস্থলে এই ডাক্তার রোগী দেখে তার অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করার পরামর্শ দেন।
‘ঘটনাটি কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জনকে অবহিত করা হলে তিনি আজ শুক্রবার তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করে দিয়েছেন। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিন মিয়া বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল হাসপাতালে যাই (বৃহস্পতিবার) রাত সাড়ে ৯টায়। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার এসে রোগীকে ঢাকায় পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ করেন।
‘রোগীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’
আরও পড়ুন:ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শুকানপুকুরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আওয়ামী লীগের পলাতক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমানকে কৌশলে পুনর্বাসনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এরশাদ আলীসহ স্থানীয় একাধিক রাজনীতিক ও কিছু ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট এ ইউপি চেয়ারম্যান পরিষদ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
জনসেবা অব্যাহত রাখতে নিয়ম অনুসারে ইউপি সদস্য সুমন রানাকে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ করে বাকি প্যানেল গঠন করা হয়।
বর্তমানে ইউপিতে নাগরিক সেবা অব্যাহত থাকলেও প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কৌশলে অনাস্থা এনে এরশাদ আলীসহ অন্যরা পলাতক চেয়ারম্যানকে পুনর্বাসনের চেষ্টায় আছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
তাদের ভাষ্য, সম্প্রতি কৌশল জানাজানি হলে ইউনিয়নবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এমন বাস্তবতায় যেকোনো সময় ওই ইউনিয়নে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
পলাতক চেয়ারম্যানকে পুনর্বাসনের ‘কৌশল’
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, প্রথমে চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক বরাবর শুকানপুকুরী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ সুমন রানার বিরুদ্ধে অনাস্থার প্রস্তাব এনে একটি আবেদন জমা দেওয়া হয়। সেখানে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ সুমন রানার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ উল্লেখ করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেন ৯ জন ইউপি সদস্য।
পরে সেই আবেদনের জের ধরে ১৩ জানুয়ারি ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডের পাতায় প্যানেল চেয়ারম্যান-২ মো. এরশাদ আলী স্বাক্ষরিত এক পাতার একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের রেজুলেশন ও অপর একটি পাতায় আটজন ইউপি সদস্যের স্বাক্ষর সংবলিত পাতা সংযুক্ত করা হয়। এ পাতায় সভার স্থান দেখানো হয় ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে।
ওই রেজুলেশনে বলা হয়, ‘অদ্যকার অত্র আলোচনায় শুকানপুকুরী ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমানের (পলাতক) মাধ্যমে ইউপির সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা ও সভায় বিস্তর আলোচনা করা হয়। এরপর সভার সভাপতি প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এরশাদ আলীর উপস্থিতিতে সদস্যদের জানান, প্যানেল চেয়ারম্যান-১ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে স্বেচ্ছাচারিতা করে আসছেন, যা জেলা প্রশাসকের বরাবরে অনাস্থার প্রস্তাব আনয়ন করি।
‘তাই ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আনিছুর রহমানের (পলাতক) মাধ্যমে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনা তথা জনসেবা অব্যাহত রাখা একান্ত জরুরি মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন।’
রেজুলুশনে উল্লেখ করা হয়, সর্বসম্মতিক্রমে পলাতক চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা তথা জনসেবা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়।
প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে দুই ইউপি সদস্যের ভাষ্য
কারণ জানতে এ প্রতিবেদক যোগাযোগ করেন অনাস্থা কাগজে স্বাক্ষর করা দুজন ইউপি সদস্যের সঙ্গে। তারা হলেন মো. আমজাদ ও ধর্ম নারায়ণ রায়।
ইউপি সদস্য আমজাদ বলেন, ‘৪ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে আমার বাড়ির সামনে স্থানীয় সাবেক দুজন সদস্য মোটরসাইকেল নিয়ে আসেন। তারা আমাকে কৌশলে ইউনিয়ন বিএনপির নেতা তরিকুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি অন্যান্য ইউপি সদস্যরাসহ বিএনপির ইউনিয়ন পর্যায়ের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত। রাতের খাবারের বিশাল আয়োজনও করা হয়েছে। আমি কোন কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না।
‘পরে জানানো হলো, আমাকে বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে স্বাক্ষর করতে হবে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে, তা মিথ্যা। তিনি খুব ভালোভাবে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। এসবই আলোচনা হচ্ছে। এরপর এক প্রকার জোর করেই আমাকে রাতের খাবার খাওয়ানো হলো এবং পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে স্বাক্ষর করতে হলো। কিন্তু আমি সিলমোহর দিইনি।’
ইউপি সদস্য ধর্ম নারায়ণ রায় বলেন, ‘একই তারিখে স্থানীয় বাসিন্দা তোষর এবং রফিকুল আমাকে একটা জায়গায় সমস্যার কথা বলে কৌশলে ইউনিয়ন বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখি বিএনপির অন্যান্য রাজনীতিক নেতাসহ অন্যান্য ইউপি সদস্যরা রয়েছেন। আমাকে রাতের খাবারের জন্য বারবার বলা হচ্ছে। কিন্তু কী কারণে এত আদর-আপ্যায়ন, বুঝতে পারছিনা। জিজ্ঞাসা করলেও কোনো উত্তর পাই না।
‘সমাজ রক্ষার্থে সকলের সাথে রাতের খাবার খেলাম। এরপর আমাকে এক প্রকার চাপ দেওয়া হয় প্যানেল চেয়ারম্যান সুমন রানার বিরুদ্ধে অনাস্থা কাগজে স্বাক্ষর করতে। কিন্তু আমি তার সমর্থক। তিনি ভালো মানুষ।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাক্ষর দিতে প্রথমে রাজি না হলেও পরে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ স্বাক্ষর করেছে। আমি কেন করব না, এ কথা তোলে। অনেকক্ষণ তর্ক-বিতর্কের পর সই করে সেখান থেকে আসতে হয়েছে। পরে আমি লিখিত চিঠি দিয়ে বিষয়টি প্যানেল চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি।’
ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ভবেষ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘প্যানেল চেয়ারম্যান-১ সুমন রানার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনে অনাস্থা আনা হয়েছে, তা আমার কাছে ভিত্তিহীন মনে হয়েছে।’
সচিব আরও বলেন, ‘পরিষদে তিনি (সুমন রানা) সবার সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন এবং নাগরিক সেবা অব্যাহত রেখেছেন। তার বিরুদ্ধে আমাকেও কেউ কোনো দিন কোনো মৌখিক অভিযোগ দেননি।’
সভার বিষয়ে যা বললেন ইউপি সচিব ও সদস্য
ইউনিয়ন পরিষদ সচিব বলেন, ‘৪ জানুয়ারি, ৭ জানুয়ারি ও ১৩ জানুয়ারি কোনো সভা ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমসহ পরিষদের কোনো স্থানে অনুষ্ঠিত হয়নি। যেসব সভার কথা বলা হচ্ছে, তা গোপনে বা প্রকাশ্যে অন্য কোথাও হয়ে থাকতে পারে। তা আমার জানা নাই।’
ইউপি সদস্য ধর্ম নারায়ণ রায় বলেন, ‘১৩ তারিখ সকাল ১১টায় প্যানেল চেয়ারম্যান-২ সভা ডেকেছিল। আমি সময়মতো পরিষদে আসলেও সভা হয়নি।
‘আমি জানতে চাইলে তিনি গোপনে স্থানীয় দুলাল নামের এক লোকের বাসায় মিটিং হবে বলে জানান। কিন্তু আমি সেখানে যাইনি। পরিষদের কাজ শেষে বাড়ি চলে আসি।’
স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিযুক্ত প্যানেল চেয়ারম্যানের ভাষ্য
স্থানীয় বাসিন্দা জিলানি হোসেন বলেন, ‘যে চেয়ারম্যান জনগণের ভোটে নির্বাচিত হননি, তিনি জনগণের কথা ভাববেন না, এটাই স্বাভাবিক। তাই তিনি আমাদের দুর্ভোগে ফেলে আজও পর্যন্ত পলাতক রয়েছেন। আমরা নাগরিকসেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা তার পুনর্বাসন চাই না।
‘পরিষদ তাকে ছাড়া বেশ ভালো চলছে। আমরা সুন্দর সেবা পাচ্ছি। শুনছি অনেকে পলাতক চেয়ারম্যানের টাকার কাছে বিক্রি হয়েছে। আমরা নতুন কোনো ষড়যন্ত্র মেনে নেব না।’
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ এরশাদ আলী ইউনিয়ন পরিষদে সভা না করা এবং কোনো ব্যক্তির বাসায় বসে সভা করার বিষয়টি স্বীকার করেন।
তিনি জানান, নিরাপত্তাজনিত কারণে পরিষদে সভা করতে পারেননি।
তিনি কেন পলাতক ও বিতর্কিত চেয়ারম্যানকেই পুনর্বাসন করতে চান, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বর্তমান দায়িত্বরত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তোলেন।
অভিযুক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান সুমন রানার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং পরিষদে নাগরিক সেবা অব্যাহত আছে কি না, তা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করার আহ্বান জানান।
ইউনিয়ন বিএনপির নেতা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাড়িতে পরিষদের কোনো বৈঠক হয়নি; সিদ্ধান্তও হয়নি। আমার হাত ভেঙে যাওয়ায় আমি অসুস্থ। তাই রাজনীতিক নেতা ও পরিষদের সদস্যরা দেখতে এসেছিল। এর বেশি কিছু না।’
তবে চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, ‘আবেদনসহ অন্যান্য কাগজ আমি পেয়েছি। উভয় পক্ষকে ডেকে শুনানি করা হবে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
‘কোনো কৌশলগত বিষয় আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে। তবে নিয়ম-বহির্ভূত কাউকে পুনর্বাসন করার সুযোগ নেই।’
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
সাত সদস্যের এ কমিটিতে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
কমিটির সদস্য পদে আরও যে পাঁচজনের নাম রয়েছে তারা হলেন ওসমান গনি (ক্রীড়া অনুরাগী), মানিক রায় (কোচ), মো. মামুন (রেফারি), দিবস তালুকদার (ক্রীড়া সাংবাদিক) এবং আরিফুর রহমান (ছাত্র প্রতিনিধি)।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে কমিটির অনুমোদনপত্র পাঠানো হয় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
এ ছাড়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়য়ের সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সচিব, সচিবের একান্ত সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব বরাবর অনুমোদনপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়।
গত ১৯ জানুয়ারি অনুমোদন হওয়া ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাত সদস্যের অ্যাডহক কমিটির অনুমোদনপত্রে লেখা রয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ২ (১৫)-এ উল্লিখিত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার সংশ্লিষ্ট গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপর অর্পিত ক্ষমতা অনুসরণে ঝালকাঠি জেলার জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ৮-এ বর্ণিত পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক সদয় অনুমোদিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:টানা তিন দিন ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পানির সংকটে ছিল কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল। তবে সোমবার রাতে নতুন মোটর লাগানোর পর পানির সংকট কেটেছে।
গত তিন দিন পানি না থাকায় ভোগান্তিতে ছিলেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে ভর্তি থাকেন হাসপাতালে। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে রোগী ও স্বজনসহ সহস্রাধিক মানুষ অবস্থান করেন।
প্রতিদিন এখানে ২০ হাজার লিটার পানি প্রয়োজন। হাসপাতালে পানির সংকটের কারণে অন্তত ৩০ জন রোগী অন্যত্র চলে গেছে বলেও খবর পাওয়া যায়।
পানির মোটর বিকল হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালটিতে শনিবার বেলা ১১টা থেকে শৌচাগারসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। পানি সংকটে শৌচাগার থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে।
টানা দুই দিন বিকল হয়ে যাওয়া মোটরটি সচল করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয় কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের মাধ্যমে পানি সরবরাহের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাতে প্রয়োজন মেটেনি।
কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) তত্ত্বাবধায়ক ডা. নূর মোহাম্মদ শামসুল আলম বলেন, ‘বিগত তিন দিনে রোগীদের অনেক ভোগান্তি হয়েছে, এটা সত্য। তবে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে সমস্যা সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু করেছি।
‘গতকাল রাতে একটি নতুন মোটর লাগানোর পর পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।’
আরও পড়ুন:তিন দিনের মাথায় অবশেষে মিয়ানমারে আটকে রাখা বাংলাদেশি তিন পণ্যবাহী জাহাজ ছেড়ে দিয়েছে আরাকান আর্মি।
মিয়ানমার থেকে পণ্য নিয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে নাফ নদীর মোহনা থেকে বৃহস্পতিবার তিনটি কার্গো আটক করা হয়েছিল।
টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এতেশামুল হক বাহাদুর সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে আটক কার্গো জাহাজের মধ্যে দুটি বাংলাদেশ-মিয়ানমার নাফ নদের জলসীমা নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। অন্যটি সেখানে ছিল।
টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তারা মিটিংয়ে বসেছেন। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন থেকে পণ্যবাহী চারটি কার্গো জাহাজ কক্সবাজার জেলার টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশে আসার পথে আরাকান আর্মি আটক করে তাদের জিম্মি করে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুটি করে পর্যায়ক্রমে চারটি কার্গো আটক করে এ সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী।
আরাকান আর্মির সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে ছাড়পত্র নিয়ে গত শনিবার একটি কাঠবাহী কার্গো বন্দরে আসে। তিন দিন পর বাকি তিনটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
মিয়ানমারে সংঘাতের মধ্য দিয়ে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের বেশির ভাগ এলাকা দখলে নেয়। এ সংঘাতের প্রভাব পড়েছে টেকনাফ স্থলবন্দরের সীমান্ত বাণিজ্যে। বেশ কিছুদিন ধরে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
বিচ্ছিন্নভাবে যেসব পণ্য আমদানি হয়, তাও ইয়াঙ্গুন শহর থেকে। এ শহর থেকে আসার পথে নাফ নদীতে প্রবেশ করতে রাখাইন রাজ্যের সীমান্ত হয়ে আসতে হয়।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, কার্গো জাহাজগুলোতে ৫০ হাজার বস্তা শুঁটকি, সুপারি, কফিসহ বিভিন্ন পণ্যের আনুমানিক ৫০ কোটি টাকার মালামাল রয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য