রাজনীতির মাঠে দীর্ঘদিন দেখা নেই রাজনৈতিক জোট ১৪ দলের। করোনা শুরুর পর থেকে মাঠে তাদের উল্লেখযোগ্য কোনো কর্মকাণ্ড নেই। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো নানা মানবিক কার্যক্রম চালালেও কোথাও নেই ১৪ দল। কদাচিৎ তাদের দেখা মেলে কোনো জুম আলোচনায়।
১৪ দলের শরিক দলগুলোর অভিযোগ, সবচেয়ে বড় শরিক আওয়ামী লীগের নিষ্ক্রিয়তার কারণে ১৪ দল সক্রিয়তা হারিয়েছে। অনেকের মতে, ১৪ দলের কোনো কার্যকারিতা এখন আর নেই। অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করছে জোটের সবচেয়ে বড় শরিক আওয়ামী লীগ।
বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিহত করতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কয়েকটি রাজনৈতিক দল নিয়ে ২০০৪ সালে গঠিত হয় রাজনৈতিক জোট ১৪ দল। সে সময় থেকে জোটের সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করে আসছিলেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা মোহাম্মদ নাসিম। তার মৃত্যুর পর এ দায়িত্ব পান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু।
গঠনের সময় এই জোটের উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা, পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা।
মূলত তিনটি বিষয় সামনে রেখে গঠিত হয় ১৪ দল। এগুলো হলো জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অবস্থান; উন্নয়নমূলক কাজের ভিশন এবং সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান।
১৪ দলে আওয়ামী লীগ ছাড়াও রয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), গণতন্ত্রী পার্টি, সাম্যবাদী দল, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, গণ-আজাদী লীগ, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, জাতীয় পার্টি (জেপি)।
২০০৮ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় নিয়ে ২০০৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট মহাজোট। এ সময় ১৪ দলের কয়েকজন নেতাকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেয়া হয়।
২০১৪ সালের নির্বাচনেও দেখা গেছে এ ধারা। এই দুই মেয়াদে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বিভিন্ন সময় মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।
কিন্তু ২০১৯ সালের নির্বাচনে টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে মন্ত্রিসভায় শরিকদের রাখেনি দলটি। বর্তমানে সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য রয়েছেন ১৭৫ জন। শরিক দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটির ৭ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ৬ জন, তরীকত ফেডারেশনের ২ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ২ জন এবং বিএনএফের ১ জন সংসদ সদস্য।
মন্ত্রিসভায় স্থান না পাওয়ায় ১৪ দলের বেশ কয়েকজন শীর্ষনেতা প্রকাশ্যেই আওয়ামী লীগের সমালোচনায় মুখর হন। এতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ১৪ দলের অন্যান্য শরিক দলের মনোমালিন্য প্রকাশ্যে আসে, দৃশ্যমান হয় নানা মতবিরোধও।
তার ওপর ১৪ দলে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের মধ্যেও নানা কারণে ভাঙন দেখা যায়। অভ্যন্তরীণ নানা সংকটে জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে একটি অংশ বেরিয়ে গিয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি নামে আলাদা দল গঠন করে।
আবার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ভেঙেও বাংলাদেশ জাসদ নামে আলাদা দল গঠন হয়েছে। সাম্যবাদী দল ও গণ-আজাদী লীগেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। দুই টুকরা হয়েছে বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনও। অর্থাৎ শক্তি কমেছে শরিক দলগুলোর।
দেশে গত বছর করোনা শুরুর পর থেকে একযোগে খুব একটা কর্মসূচিও পালন করতে দেখা যায়নি ১৪ দলকে। বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতেও একপ্রকার নিষ্ক্রিয় এ জোট। মাঝেমধ্যে অনলাইনে দু-একটি আলোচনা সভা করা হলেও জোটের মধ্যে আগের মতো সেই মিল আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এমনকি গত বছরের ডিসেম্বরে যাত্রাবাড়ীর সড়কদ্বীপে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বসানো নিয়ে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর বিরোধিতার মুখে আওয়ামী লীগসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও ১৪ দলের পক্ষ থেকে তখন কোনো সমন্বিত কর্মসূচি দেখা যায়নি।
১৪ দলের অন্যতম শরিক দলগুলো এ নিষ্ক্রিয়তার দায় ঠেলছে আওয়ামী লীগের দিকে। তাদের দাবি, বড় শরিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের নিষ্ক্রিয়তা ১৪ দলের জন্য ভালো নয়।
জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১৪ দলের শরিক দলগুলো ভেতরে বিভিন্ন রাজনৈতিক লেনদেন নিয়ে সমস্যা আছে। এ সমস্যা দীর্ঘদিন ধরেই আছে। সেটা আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে কখনও সমাধান হয়, কখনোবা ঝুলে থাকে। সাম্প্রতিককালে আওয়ামী লীগ ১৪ দলে কিছুটা নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। এটা ১৪ দলের ভেতরে অসন্তোষ তৈরি করেছে।
‘১৪ দলকে সক্রিয় রাখতে হলে বড় শরিক আওয়ামী লীগের একটি বড় ভূমিকা থাকা দরকার। বর্তমানে যে সমস্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ চলছে, করোনাভাইরাস, দুর্নীতির ভাইরাস আর জঙ্গি ভাইরাস- এই তিন ভাইরাস মোকাবিলা করতে হলে ১৪ দলের আরও সক্রিয় ভূমিকা সর্বস্তরে দরকার। সে হিসেবে আওয়ামী লীগ তার উদাসীনতা, নিষ্ক্রিয়তা, শিথিল ভাব পরিহার করলে আর সক্রিয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হলে তা দেশের জন্য মঙ্গলের, সরকারের জন্য মঙ্গলের।’
১৪ দলের অন্যতম নেতা এবং বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া মনে করছেন, গত নির্বাচনের পর ১৪ দল তার কার্যকারিতা হারিয়েছে। তার মতে, ১৪ দল এখন অতীত।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১৪ দলের তো কার্যকারিতাই নেই। এটা যদিও আমার ব্যক্তিগত মত। যদিও অতীতে ১৪ দলের অনেক অবদানই আছে। কিন্তু গত নির্বাচনের পর থেকে এটা কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলেছে। আমার সঙ্গে হয়তো অনেকেই একমত হবেন না। প্রতিটি দল যার যার মতো কাজ করছে।
‘এখনকার সরকার হলো আওয়ামী লীগের। ১৪ দলের সরকার নেই। সরকারের আমলে যা হচ্ছে, কোনো শৃঙ্খলা নেই, ন্যায়নীতি নেই বা সরকারের নৈতিক ভিত্তিও অনেক দুর্বল। এর ফলে অনেক জায়গায় অনেক বিশৃঙ্খলা আছে। চুরি, দুর্নীতি, লুটপাট, লুণ্ঠন- এগুলো থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করা এবং দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা- এগুলো কিছু হচ্ছে। ডেভেলপমেন্ট কিছু হচ্ছে, কিন্তু এটা হচ্ছে দুর্নীতির বিনিময়ে।’
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে সরকার অনেকটা উপেক্ষা করছে বা নজর দিচ্ছে না। আওয়ামী লীগও নানাভাবে বিশৃঙ্খলায় জড়িয়ে গেছে। আমার বিবেচনায় গত নির্বাচনের পর সরকারের নৈতিক ভিত্তি এত দুর্বল হয়েছে যে, কোনো জায়গায় নীতিনৈতিকতার বালাই নেই।
‘১৪ দলের কোনো ফাংশনও নাই, এখন কি ১৪ দল সরকারের বিরুদ্ধে মুভমেন্ট করবে? কাজেই ১৪ দল এখন অতীত’, যোগ করেন তিনি।
১৪ দলের অন্যতম নেতা ও আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস অবশ্য নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। হাসানুল হক ইনুর অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইনু ভাই আমাদের ১৪ দলের একটি শরিক দলের সভাপতি। সে হিসেবে তিনি কী মন্তব্য করেছেন, সেটি না দেখে বা না জেনে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’
১৪ দলের কার্যক্রম কেমন চলছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতির কারণে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক রুটিনে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন দিবসে আমরা আলোচনাগুলো করি।
‘আমার জানামতে, ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সমন্বয়কের নিয়মিত যোগাযোগ আছে। বিভিন্ন বিষয়েই তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হয় বা মতবিনিময় হয়।’
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ৯ম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি)-এর বৈঠক চলছে ।
রাজধানীর শের-ই-বাংলানগর এলাকার এনইসি কনফারেন্স রুমে আজ সকালে এ বৈঠক শুরু হয়।
বাংলাদেশের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং সফররত পাকিস্তানের জ্বালানি মন্ত্রী আলি পারভেজ মালিক নিজ দেশের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
দীর্ঘ ২০ বছর বিরতির পর বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে শেষবার ২০০৫ সালে জেইসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
বর্তমান সরকারের গৃহীত সংস্কার ও নীতিমালা প্রণয়নের কাজ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সঠিক নয়। বরং সংস্কার কার্যক্রম পুরোপুরি চালু থাকবে। সোমবার অন্তর্বর্তী সরকার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম উপদেষ্টা পরিষদের কার্যক্রম নিয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সরকারের গৃহীত সংস্কার ও নীতিমালা প্রণয়নের কাজ নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার যে কথা বলা হয়েছে, এটা সঠিক নয়; বরং সংস্কার কার্যক্রম পূর্ণোদ্যমে চালু থাকবে।
এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদ নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর না করা পর্যন্ত নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে যাবে এবং উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকও নিয়মিত অনুষ্ঠিত হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
একসময় সচ্ছল জীবন ছিল শুভর পরিবারের। নোয়াখালী সোনাইমুড়ী বজরা গ্রামে কিছু জমিও কিনেছেন। পিতা দুই ভাই প্রবাসে থাকায় পরিবার ভালোই চলছিল। প্রবাসে থেকে পরিবারের ভরণপোষণ চালিয়ে ৫ লক্ষ টাকা সঞ্চয় করেন। এখন এ টাকা সবই হারিয়েছেন।সব টাকাই অনলাইন জুয়া খুইয়েছেন।সোনাইমুড়ী থানার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা ইতিপূর্বে এ থানায় যোগদান করেন। মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে লোভে পড়ে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হন। তার একাউন্টে থাকা প্রায় ৮ লক্ষ টাকা হারিয়ে এখন নিঃস্ব। উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের হৃদয় স্থানীয় চৌমুহনী বাজারে মোবাইল দোকান দেন। তার পিতা দীর্ঘ বছর থেকে আমেরিকায় বসবাস করেন। বিদেশ থেকে উপার্জিত অর্থ তার একাউন্টে বেশি পাঠান। সে ব্যবহার করেন দামি মোবাইল। একপর্যায়ে মোবাইল জুয়ায় আসক্ত হয়ে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা হারিয়েছেন।
জানা যায়, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা।এ এখানকার বাসিন্দারা ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে বেশি পাড়ি জমান। এলাকার লোকজন বেশিরভাগ বিত্তশালী। তাই এখানে মুঠোফোন অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। লোভে পড়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও তরুণেরা এই জুয়ায় বেশি আসক্ত হচ্ছেন। জুয়ার নেশায় বুঁদ হয়ে সর্বস্ব হারাতে বসেছেন তাদের অনেকে। এ কারণে বাড়ছে পারিবারিক অশান্তি ও দাম্পত্য কলহ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সহজে প্রচুর টাকা উপার্জনের লোভে পড়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য মানুষ এই জুয়ায় জড়িয়ে পড়ছে। তরুণদের অনেকেই কৌতূহলবশত এই খেলা শুরুর পরেই নেশায় পড়ে যাচ্ছে। প্রথমে লাভবান হয়ে পরবর্তী সময় খোয়াচ্ছে টাকা। বিভিন্ন নামের প্রায় ১০ থেকে ১২টির মতো অ্যাপসে সবচেয়ে বেশী জুয়া খেলা হয়। এসব অ্যাপসে ১০ টাকা থেকে শুরু করে যেকোন অঙ্কের টাকা দিয়ে শুরু করা যায়।
এসব অ্যাপসের অধিকাংশই পরিচালনা করা হচ্ছে রাশিয়া, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকে। বাংলাদেশে এগুলোর এজেন্ট রয়েছে। তারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জুয়ায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ বা প্রদান করে থাকে। এজেন্টরা বিদেশী অ্যাপস পরিচালনাকারীদের কাছ থেকে হাজারে কমপক্ষে ৪০ টাকা কমিশন পায়।
সোনাইমুড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তরুণ, যুবক, পুলিশ সদস্য, দিনমজুর এবং কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও অনলাইন জুয়ার ফাঁদে জড়িয়ে পড়ছে।
সোনামুড়ী ডিগ্রী কলেজের এক কলেজ শিক্ষার্থী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানালেন, তিনি এবং তার বন্ধুরা ৫০০ টাকা জমা দিয়ে খেলা শুরু করেছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই টাকা হারিয়ে গেছে। পরবর্তীতে ১৫-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। পৌর শহরের এক চাকরিজীবী বাড়তি আয়ের আশায় অনলাইন জুয়ার ফাঁদে পড়ে কয়েক লাখ টাকা হারিয়ে এখন ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। এসব অ্যাপের অধিকাংশই বিদেশ থেকে পরিচালিত হলেও বাংলাদেশে এদের স্থানীয় প্রতিনিধি বা দালাল রয়েছে, যারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা আদান-প্রদান করেন। প্রতি হাজার টাকায় এজেন্টরা অন্তত ৪০ টাকা কমিশন পায়। এর ফলে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে।
সোনাইমুড়ী ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক নোমান বলেন, এ উপজেলার সাধারণ মানুষ বেশি মোবাইল জুয়ায় আসক্ত হচ্ছেন। কি খবর প্রতিনিয়ত শোনা যাচ্ছে। আবার পরে প্রচারিত হচ্ছে। এটা এখন সামাজিক ব্যাধি।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম বলেন, এ উপজেলা বাসী প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় ইউরোপের লোক বেশি বসবাস করে। বহু লোক অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে লাখ লাখ টাকা খুইয়েছেন। প্রতিদিনই থানায় এইসব ভুক্তভোগীরা আসে আইনগত সহযোগিতা পেতে। জুয়া খেলা আইনত দ-নীয় অপরাধ। আমরা অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।শুধু স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী নয়, এদের খপ্পরের পুলিশের উদ্বোধন কর্মকর্তা,সাধারণ জনগণ ও ব্যবসায়ীরা পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।
সাময়িক বন্ধ থাকার পর আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল সেবা পুনরায় চালু হয়েছে। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সকাল ১১টা থেকে পুরো রুটে নিরবচ্ছিন্নভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে যাত্রীদের সাময়িক ভোগান্তির জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে এবং যাত্রীদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনার পর মেরামতের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে আজ সকালেই রুটটি পুনরায় চালু করেছে, যাতে যাত্রীদের ভোগান্তি কমানো যায়।
ফার্মগেটে মেট্রোরেল দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর উত্তরা-মতিঝিল রুটে ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। কর্তৃপক্ষ আরও সতর্কতা অবলম্বন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
উল্লেখ্য, রবিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ফার্মগেট মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের সামনে মেট্রোরেলের একটি ভারি বিয়ারিং প্যাড ছিটকে পড়ে পথচারী আবুল কালাম নিহত হন। এই ঘটনায় উত্তরা-মতিঝিল রুটের মেট্রোরেল চলাচল তখন বন্ধ রাখা হয়েছিল।
রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আরও ৮ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। প্রাথমিকভাবে গ্রেপ্তারদের নাম পরিচয় জানায়নি ডিবি।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আরও ৮ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ অংশে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’-তে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এটি দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থান করছে।
সোমবার সকালে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত বিশেষ বিজ্ঞপ্তি নম্বর-৫ এ বিষয়টি জানানো হয়।
অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাত ৩টার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৬০ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ১৩০০ কিলোমিটার, মোংলা থেকে ১২৮০ কিলোমিটার এবং পায়রা বন্দর থেকে প্রায় ১২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর-পশ্চিমমুখী হয়ে ক্রমশ শক্তিশালী হতে পারে এবং ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যা বা রাতে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র থেকে ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় প্রায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার বেগে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি সাগর বর্তমানে অত্যন্ত উত্তাল রয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।
এরই প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে আগে জারি করা ১ নম্বর সতর্ক সংকেত নামিয়ে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে না যেতে এবং উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ স্থানে অবস্থান করার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সাগরে ঢেউয়ের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় দেশের উপকূলীয় এলাকায় থাকা জেলেদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ঘুমের মধ্যে এক মাদরাসা ছাত্রকে বিভৎসভাবে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত ছাত্রকে আটক করা হয়েছে।
সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম। এর আগে, রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৬নম্বর ওয়ার্ডের বাটরা আল মাদরাসাতুল ইসলামিয়া মাখফুনুল উলুম মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো.নাজিম উদ্দিন (১৩) উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নের জাহানাবাদ গ্রামের ওবায়েদ উল্ল্যার ছেলে। অপরদিকে, আটক আবু ছায়েদ (১৬) ময়মনসিংহ জেলার টেঙ্গাপাড়া গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বাটরা আল মাদরাসাতুল ইসলামিয়া মাখফুনুল উলুম মাদরাসার আবাসিক বিভাগে থেকে নাজিম ২২ পারা ও ছায়েদ ২৩ পারা পবিত্র কোরআন হেফজ সম্পন্ন করে। গত ১০-১৫ দিন আগে টুপি পরা নিয়ে নাজিম ও আবু ছায়েদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে মাদরাসার এক শিক্ষক বিষয়টি জানতে পেরে তাদের মধ্যে মিটমাট করে দেয়। কিন্ত এ ঘটনার জের ধরে নাজিমের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে সোনাইমুড়ী বাজার থেকে ৩শত টাকা দিয়ে একটি ধারালো ছুরি কিনে নিয়ে আসে ছায়েদ। প্রতিদিনের ন্যায় রোববার রাতে মাদরাসার আবাসিক কক্ষে ঘুমিয়ে যায় ১৪জন ছাত্র ও একজন শিক্ষক। রাত আড়াইটার দিকে অন্য ছাত্রদের অগোচরে ছায়েদ ঘুম থেকে উঠে ঘুমের মধ্যে নাজিমকে জবাই করে দেয়। ওই সময় নাজিমের গলার গোঙরানির আওয়াজ শুনে একই কক্ষে থাকা ছাত্র-শিক্ষক ঘুম থেকে জেগে উঠে এ ঘটনা দেখতে পায়।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, খবর পেয়ে ভোররাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। অভিযুক্ত ছাত্রকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি জব্দ করা হয়। টুপি পরা নিয়ে দুই ছাত্রের মধ্যে বিরোধের সূত্র ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটে। লাশের সুরতহাল শেষে মরদেহ উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।
মন্তব্য