নান্দনিক সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব।
রোববার সিলেটের একটি হোটেলের কনফারেন্স কক্ষে সাংবাদিকদের সামনে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।
ইশতেহারে হাবিব বলেন, ‘উন্নয়ন রাজনীতির এই সময়ে এই উপনির্বাচনটি এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই উপনির্বাচনকে সামনে রেখে এই আসন নিয়ে আমার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নের একটি রূপরেখা তৈরি করেছি। আমার প্রতি আপনাদের আস্থা ও সহযোগিতা থাকলে আমি সর্বশক্তি ব্যয় করে নান্দনিক সিলেট-৩ আসন উপহার দিতে বদ্ধপরিকর।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষণস্থায়ী জীবনকে ভোগে নয় বরং ত্যাগ এবং সেবায় নিয়োগ করে কেবলই অমরত্ব লাভ করা সম্ভব। তাই প্রবাসজীবনে থেকে বারবার ফিরে এসেছি আপনাদের কাছে, মাটির টানে, নাড়ির টানে। সম্পূর্ণ মোহমুক্ত থেকে কাজ করেছি শিকড়ের টানে।
‘সেই তাগিদ থেকেই মূলত নির্বাচনে আমার অংশগ্রহণ। আর এ যাত্রায় আপনাদের অকৃত্রিম ভালোবাসাই আমার সম্পদ, আমার পুঁজি, আমার সফলতার অবলম্বন। এই অবলম্বন আমি ধরে রাখতে চাই আমৃত্যু।’
হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থায় জনগণই সব ক্ষমতার উৎস।
এ সময় তিনি আগামী ২৮ জুলাই সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে উন্নয়নের স্বার্থে নৌকা প্রতীকের বিজয় নিশ্চিতের আহ্বান জানান।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলসহ দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ইশতেহারে হাবিবুর রহমান হাবিব আরও বলেন, ‘সব ভোটার কিন্তু রাজনীতি করে না। আবার সবাই আওয়ামী লীগকেই সমর্থন করবে, এমনটিও নয়। তবে এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সবাই থাকবে অভিন্ন। উন্নয়ন অভিন্ন নীতিতে দলীয় সংকীর্ণতাকে পরিহার করেই সম্ভব প্রভূত উন্নয়ন।’
নির্বাচিত হলে নিজ আসনের উন্নয়নে এই নীতি অবলম্বন করার অঙ্গীকার করেন আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী।
ইশতেহারে হাবিবুর রহমান হাবিব সিলেট-৩ আসনের তিনটি উপজেলার প্রধান প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করে পর্যায়ক্রমে সেগুলো সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন।
দক্ষিণ সুরমা
উপজেলার সুরমা নদীতে দুটি সেতু, লালাবাজারে সেতু ও মসজিদ, কামালবাজার বাসিয়া নদীতে সেতু, মোগলাবাজার ইউপির খালোমুখ বাজারে সেতু, দক্ষিণ সুরমার অংশে সুরমা নদীর তীরে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে ও দক্ষিণ সুরমার আবদুস সামাদ আজাদ চত্বর (চন্ডিপুল) থেকে রেলগেট পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে বক্স ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণের প্রতিশ্রতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী।
ফেঞ্চুগঞ্জ
তার কর্মপরিকল্পনায় ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার উন্নয়ন কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে জুড়ি নদীতে সেতু, কুশিয়ারা নদীর তীরে (ফেঞ্চুগঞ্জ অংশে) দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে ও কটালপুর সেতু (আমিরগঞ্জ হতে উত্তরপাড়া) নির্মাণ এবং ফেঞ্চুগঞ্জকে পৌরসভায় উন্নীতকরণ ও মৎস্যজীবীদের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ।
বালাগঞ্জ
হাবিবুর রহমান হাবিবের বালাগঞ্জ উপজেলার উন্নয়ন পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে একটি কৃষি শিল্প ও একটি কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা, বড়ভাগা নদীতে সেতু, দেওয়ানবাজার-সুলতানপুর-খন্দকারবাজার রাস্তায় উজান বড়ভাঙ্গা সেতু ও কুশিয়ারা নদীতে সেতু নির্মাণ।
আরও আছে মৌলভীবাজার রাজনগরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন, বালাগঞ্জ বাজার সংস্কার করে ড্রেনেজব্যবস্থা উন্নতকরণ, পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের সঙ্গে বালাগঞ্জ উপজেলা সদরে যোগাযোগ নিশ্চিতকরণে কুশিয়ারা ডাইকের বন্ধ হওয়া কাজ চালু করা ও বালাগঞ্জ সরকারি কলেজে অনার্স কোর্স চালুর জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ।
ক্ষমতাসীন দলের এই প্রার্থী আরও যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তার মধ্যে আছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে একটি ইপিজেড প্রতিষ্ঠা, খেলাধুলার সুযোগ তৈরি ও ভালো মানের খেলোয়াড় তৈরির লক্ষ্যে তিন উপজেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণ এবং শিশুদের বিনোদনের ব্যবস্থা নিশ্চিতের পাশাপাশি বয়স্কদের জন্য পার্ক তৈরি করা।
তিন উপজেলায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, প্রতি ইউনিয়নে সম্ভব না হলেও উপজেলায় একটি করে পাবলিক লাইব্রেরি, প্রতি উপজেলায় একটি করে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন হাবিবুর রহমান হাবিব।
সিলেট-৩ আসনের আওতাধীন বিভিন্ন খাল ও নদী খনন করে সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং কুশিয়ারা ও সুরমা নদীর ভাঙন রোধে বিশেষ করে বালাগঞ্জের পূর্ব পৈলনপুর ও পশ্চিম গৌরীপুর বালাগঞ্জ সদর, দক্ষিণ সুরমার কুচাই ও মোল্লারগাঁও ইউনিয়ন, উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ মাইজগাঁও, উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের নদীর তীর সুরক্ষাকল্পে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
এ ছাড়া তিন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মসজিদ ও মাদ্রাসাগুলোর উন্নয়ন, মন্দির নির্মাণ ও সংস্কার কার্যক্রমসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য সর্বজনীন শ্মশানঘাট নির্মাণ, স্কুল-কলেজগুলোয় অ্যাকাডেমিক ভবন ও সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
হাবিব বলেন, ‘নান্দনিক সিলেট-৩ আসন গড়ে তোলার লক্ষ্যেই পরিচালিত হবে আমার সব কার্যক্রম। আমার রাজনীতি হবে কল্যাণের। আমার রাজনীতি হবে সম্প্রীতির। আমার রাজনীতি হবে মানুষের জীবনমান উন্নয়নের।’
ইশতেহার ঘোষণার শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন হাবিবুর রহমান হাবিব। একই সঙ্গে জাতীয় চার নেতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ উৎসর্গকারীসহ সব শহিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবির উদ্দিন, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, বিধান কুমার সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আরমান আহমদ শিপলু উপস্থিত ছিলেন।
ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফারুক আহমদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছালেহ আহমদ হীরা, উপদপ্তর সম্পাদক মজির উদ্দিন, উপপ্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বদরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, এর আর সেলিম, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য তাহমিন আহমদ, রাহাত তরফদার ও জুমাদিন আহমদ।
আরও ছিলেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু, জেলা তাঁতী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন, বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান মফুর, সাধারণ সম্পাদক আনহার মিয়া, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আহমদ, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত আলী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাসিত টুটুল এবং তিন উপজেলার সব ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
আরও পড়ুন:সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মিজানুর রহমান রিপন (৪৮) নামের এক স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর ও লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটেছে। মিজানুর রহমান রিপন ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে।
গত রবিবার সন্ধার দিকে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ বাজারে এই ঘটনা ঘটে। মিজানুর রহমান রিপন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমর সংবাদ পত্রিকার দৌলতপুর উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি নিউজ বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে কাজ করে আসছেন। এঘটনায় ওই দিন রাতে ভূক্তভুগী নিজে বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
এযাহার সূত্রে জানাযায়, গত ৮ জুন উপজেলার তারাগুনিয়া থানার মোড় এলাকার তারাগুনিয়া ক্লিনিকে আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রশুতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি সহ উপজেলার বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী সংবাদ প্রকাশ করে। তারি জের ধরে উপজেলা বাজারে থাকা সরকার নিষিদ্ধ ক্লিনিক বেবি নার্সিং হোম এর মালিক আহসান হাবিব কালুর ছোট ছেলে খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারে তাকে মারধর করে।
এবিষয়ে মিজানুর রহমান নামের ওই গণমাধ্যম কর্মী বলেন, গতকাল বিকেলে আমি উপজেলা বাজারে বাড়ির দৈনন্দিন বাজার করছিলাম এসময় খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারের বেবী ক্লিনিক মালিকের ছেলে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় সে আমাকে বলে আমার হাসপাতালে যে ডাক্তার আসে সেই ডাক্তারের নামে তুরা নিউজ করেছিস বলে আমার উপর হামলা চালিয়ে বেদড়ক মারধর করে। এঘটনার পর আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
গণমাধ্যম কর্মীকে মারধরের বিষয়ে, দৌলতপুর উপজেলার একজন প্রবীন গণমাধ্যম কর্মী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে এটি কখনই কাম্য নয়। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া উচিৎ।
এঘটনায় দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হুদা জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অভিযুক্ত খালিদ হাসান আর্জু
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কর্তৃক ফেনী এলাকায় গত '২৪ এর ভয়াবহ বন্যা পরবর্তী বিভিন্ন উন্নয়নমূলক, সংস্কার ও পুর্নগঠন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) সকাল ১১ টায় ফেনী ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের দুর্গাপুরে হাবিব উল্যাহ খাঁন উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ উপলক্ষে এক আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, বিবিপি, ওএসপি, জিইউপি, এনএসডব্লিউসি, পিএসসি।
বিমান বাহিনী প্রধান ফেনী এলাকায় বন্যা পরবর্তী উন্নয়নমূলক সংস্কার ও পুর্নগঠন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন। হাবিব উল্যাহ খান উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বৃক্ষরোপণ ও পরে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন। উদ্বোধন উপলক্ষে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সহায়তায় ছাগলনাইয়া উপজেলার হাবিব উল্যাহ খান উচ্চ বিদ্যালয় এর নবনির্মিত শাহীন ভবন উদ্বোধন এবং দুর্গাপুর সিংহনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নুরুল কোরআন ইসলামিয়া মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেন।
এ ছাড়া বিমান বাহিনী কর্তৃক ফেনী জেলার বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম, বন্যা দুর্গতদের জন্য মেডিকেল সেবা পরিচালনা ও চিকিৎসা সেবা সহায়তা প্রদান কার্যক্রম পরিদর্শন ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন বিমান বাহিনী প্রধান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিমান বাহিনী প্রধান ফেনী জেলায় ২০২৪ সালের আকস্মিক বন্যাকালীন ও বন্যা পরবর্তী সময়ে বিমান বাহিনীর ভুমিকার ভূয়সী প্রসংশা করেন এবং পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে যে সকল প্রতিষ্ঠান আর্থিক, ত্রাণ ও বিভিন্নভাবে সার্বিক সহায়তা প্রদান করেছেন তাদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বিমান বাহিনীর উন্নয়ন কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতেও বিমান বাহিনী দেশ ও জনগণের পাশে থাকবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
তিনি আরো বলেন, বন্যার সাথে তৎকালীন বৈরী আবহাওয়া ও বিছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পেশাদারিত্বের সাথে বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসে, যা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিল। এ পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা দিকনির্দেশনায় এবং বিমান বাহিনী প্রধানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ভয়াবহ এ বন্যাদুর্গত কুমিল্লা, নোয়াখালী এবং বিশেষ করে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী জেলায় হেলিকপ্টার ও ইউএভি এর মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে এরিয়াল রেকোনাইসেন্স মিশন পরিচালনা করে বন্যা দুর্গত মানুষের সহায়তায় প্রয়োজনীয় জরুরী উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ ও চিকিৎসা কার্যক্রমে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
বিমান বাহিনীর সূত্র জানায়, সামগ্রিকভাবে বিমান বাহিনী বন্যা পরবর্তী এ পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী উপজেলার বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এতিমখানা, ধর্মীয় উপাসনালয় ও রাস্তা-ঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ এবং সংস্কার কার্যক্রম ইতিমধ্যে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া, দূর্গাপুর, ছাগলনাইয়্যা-এ অবস্থিত হাবিব উল্যাহ্ খান উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রমবর্ধমান ছাত্র-ছাত্রী ও স্থানীয় জনসাধারণের চাহিদা বিবেচনা করতঃ শাহীন ভবন নামে একটি চারতলা ভিত বিশিষ্ট দুইতলা ভবন আসবাবপত্রসহ নির্মাণ করা হয়েছে, যেটি দুর্যোগকালীন সময়ে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে। এ উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলো মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করেছে ঢাকাস্থ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বাশার ও বিমান বাহিনী ঘাঁটি একে খন্দকার।
অনুষ্ঠানে সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (প্রশাসন), বিমান ঘাঁটি বাশারের এয়ার অধিনায়ক, বিমান বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ, ফেনী জেলা প্রশাসক, সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য