শাটডাউনের মধ্যে বিয়ে সেরে কনে নিয়ে মাইক্রোবাসে করে ফিরছিলেন বর। সড়কে তাদের গাড়ি আটকায় পুলিশ। এরপর ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন বরকে।
সিলেট নগরের হুমায়ুন রশীদ চত্বর এলাকায় শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে শুক্রবার দুপুরে ফেসবুকে কয়েকটি বিয়ের ছবি আপলোড করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা ইলিয়াসুর রহমান ইলিয়াস। ক্যাপশনে লেখা, ‘গতকাল বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানে।’
শাটডাউন ঘোষণার প্রথম দিন ৮ নম্বর ওয়ার্ডে এই বিয়েগুলো সম্পন্ন হয়। সেগুলোতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর ইলিয়াস। ফেসবুকে দেয়া সেসব ছবির মধ্যে বর-কনেসহ অতিথিদের সঙ্গে ছবিতে দেখা গেছে তাকেও। কারও মুখেই ছিল না মাস্ক।
করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে সাত দিনের শাটডাউন চলছে। গত বুধবার জারি করা শাটডাউনের প্রজ্ঞাপনে ২১ দফার নির্দেশনার মধ্যে আছে, জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পিকনিক পার্টি ইত্যাদি), রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
শাটডাউন কার্যকরে বৃহস্পতিবার থেকেই সারা দেশের মতো সিলেটে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিজিবি ও সেনাবাহিনী। মাঠে রয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতও।
কেউ অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হলে কিংবা বিয়েসহ সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে জরিমানা গুনতে হচ্ছে। গত দুই দিনে সিলেট জেলায় অন্তত ৪০০ ব্যক্তিকে প্রায় ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
অথচ রাজনৈতিক নেতারা, বিশেষত ক্ষমতাসীন দলের নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা শাটডাউনের নির্দেশনা ভেঙে ও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে অবাধেই অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। জনসমাগম করে নির্বাচনি প্রচারও চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা।
শাটডাউনে নগরীতে সিটি মেয়র আরফিুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের চালানো অভিযানে উপস্থিত ছিলেন সিটি কাউন্সিলররাও।
‘সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে নিজেই শাটডাউনের নিদের্শনা ভেঙে বিয়ের আয়োজনে উপস্থিত হওয়া কেন?’
জবাবে কাউন্সিলর ইলিয়াসুর রহমান ইলিয়াস বলেন, ‘জাঁকজমক বিয়ে নয়, আসলে ঘরোয়া অনুষ্ঠান ছিল। আমার ওয়ার্ডোর বিয়া। এর লাগি একটু দেখা দিয়া আইছি। যাওয়ার লাগি যাওয়া আরকি।’
যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের জন্মদিন ছিল বুধবার। এ উপলক্ষে শুক্রবার দুপুরে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার প্রাঙ্গণে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে সিলেট মহানগর যুবলীগ।
মহানগর যুবলীগের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার ছাড়াও মহানগর ও ওয়ার্ড যুবলীগের বিপুল নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
শাটডাউনে এই জনসমাগম প্রসঙ্গে মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিধিনিষেধ ঠিক আছে। আমরা অল্প মানুষ দরগায় দোয়া করছি।
‘এর পরে বাইরে গরিব, অসহায়, ছিন্নমূল মানুষের মাঝে আমরা আম ও মাস্ক বিতরণ করেছি। মূলত গরিব মানুষকে সাহায্য করতেই উদ্যোগ নেয়া হয়।’
হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর ৭০২তম ওরশ শরিফ ছিল বৃহস্পতিবার। করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আগেই ওরশের সব আনুষ্ঠানিকতা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল মাজার কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয় শাটডাউন।
সেদিন অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী নিয়ে শাহজালাল মাজারের ওরশে উপস্থিত হন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সিলেট-২ আসনের সাবেক সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী। মাজারে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে গিলাফ দেন তিনি।
সে সময়ের ছবি ওই দিনই নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন শফিকুর। ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘হযরত শাহ জালাল (রহ.) ৭০২তম পবিত্র উরশ শরিফ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার পক্ষে মাজারে গিলাফ ছড়াচ্ছি...কবির উদ্দিন আহমদ, সৈয়দ এপতেয়ার হোসেন পিয়ার, আলম খান মুক্তি, শেখ জালাল ফরিদ উদ্দিন, কবিরুল ইসলাম কবির, হোসিয়ার আলমসহ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে...।’
এ বিষয়ে শুক্রবার রাতে কল করা হলে শফিুকর রহমান চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দরগাত ইটা তারা (দরগাহ কর্তৃপক্ষ) দিছইন, আমরাও দিছি একটা রাতে। এটাত কোনো অসুবিধা নাই।
‘তবে না দেয়াটা ভালা। খাদেম একজনে লইয়া রাখছইন। এটা আসলে ভুলই হয়ে গেছে। খেয়াল করছি না। বাদ দিলাইন; এটা লইয়া নিউজ করার দরকার নাই।’
২৮ জুলাই সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচন। শাটডাউন চলাকালে সব ধরনের প্রচার বন্ধ রাখতে প্রার্থীদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনই নিজের নির্বাচনি এলাকার বিভিন্ন মসজিদে যান হাবিব। নামাজ আদায় শেষে সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন, বক্তৃতাও দেন। তবে এসব কর্মসূচির কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি।
অথচ শাটডাউনের মধ্যে মসজিদে নামাজ আদায়ে যেতে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ৯টি নির্দেশনা দেয়া হয়। তাতে বলা হয়, আগত মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
শাটডাউনের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ নির্বাচনি এলাকা দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি এলাকায় একটি মসজিদে মাগরিবের নামাজ শেষে মুসল্লিদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করেন হাবিব। রাতে নিজের ফেসবুকে কুশল বিনিময়ের একাধিক ছবি প্রকাশ করেন তিনি।
এতে দেখা যায়, হাবিবসহ উপস্থিত প্রায় কারও মুখে মাস্ক নেই। সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা না মেনে সবাই গাদাগাদি করে আছেন।
সে সময় মসজিদে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নামাজ শেষে জনাপঞ্চাশেক লোক হাবিবকে ঘিরে ধরেন; করমর্দন করেন। বেশির ভাগের মুখেই মাস্ক ছিল না। এমনকি হাবিবের মাস্কও নামানো ছিল থুতনিতে। এরপর উপস্থিত জনতার উদ্দেশে ভোট চেয়ে বক্তৃতাও দেন তিনি।
ওই রাতে দক্ষিণ সুরমার একটি কমিউনিটি সেন্টারে হাবিবুর রহমান হাবিবের সমর্থনে সভা হয়। তাতে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী অংশ নেন।
এরপর শুক্রবার ফেঞ্চুগঞ্জের রাজনপুর জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন হাবিব। ওই দিনও নামাজ শেষে তিনি মুসল্লিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এরপর নেতা-কর্মীদের নিয়ে হজরত ইসহাক আলী শাহ্ (রহ.), হজরত শাহ্ সৈয়দ আলী (রহ.) ও হজরত গোলাপ শাহ্ (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করেন।
এ বিষয়ে শুক্রবার রাতে সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। রাতে হাবিবের ই-মেইল আইডি থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই মসজিদে জড়ো হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। তাতে বলা হয়, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুসল্লিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন হাবিব।’
নেতাদের শাটডাউনের নির্দেশনা উপেক্ষা প্রসঙ্গে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘শাটডাউন বাস্তবায়নে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। কাউকেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না।
‘রাজনৈতিক নেতা-জনগণ সবাইকেই এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে; আমাদের সহযোগিতা করতে হবে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বৃহস্পতিবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন শেষে বিজিবি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। দুপুরে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া প্রতিবেশী দেশটির জান্তা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেন তিনি।
পরে তিনি ১১ বিজিবির অধীন চাকঢালা বিওপি (বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট) পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের পালিয়ে আসার স্পটগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমসহ বিজিবি রামুর সেক্টর ও অধীনস্ত বিজিবি ব্যাটালিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র জোন কমন্ডার ও অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ এসিসহ বিজিবির কর্মকর্তারা।
বান্দরবানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রুমা থানার দুটি মামলায় বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি এক নারীকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদসহ মামলায় ৫৭জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বান্দরবান সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইন বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে একাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীরা জানান, রুমা থানার জিআর মামলা নং- ৪ ও ৭ মামলায় পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর মধ্যে ৫২জনকে দু’দিন করে রিমান্ড এবং একজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়।
এর আগে বান্দরবান জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় ১৮জন নারী ও ৩৯জন পুরুষ বন্দিকে দুটি গাড়িতে করে আদালতে হাজির করা হয়। সম্প্রতি বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে লুটের ঘটনায় তাদেরকে রুমা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে বান্দরবানে চলমান যৌথ অভিযানে সন্দেহভাজন আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৬জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় গত দুই দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জেলায় বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এমন বাস্তবতায় হিট অ্যালার্ট জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
টানা দাবদাহে অতিষ্ঠ সীমান্তবর্তী জেলাটির মানুষ। হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা।
তীব্র দাবদাহে হিট অ্যালার্ট জারি করে জেলা প্রশাসনের ভাষ্য, খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে।
জেলায় দিনের বেশির ভাগ সময় তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। এতে কম আয়ের শ্রমজীবী মানুষরা পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণশ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, ইজিবাইকচালক ও ভ্যান-রিকশাচালকদের গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে। হতাশ হতে দেখা গেছে তাদের।
প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না অনেকে।
দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড এলাকার ভ্যানচালক আবদুর রহিম বলেন, ‘যে তাপ পড়চি, তাতে বাইরি বের হওয়া যাচ্চি না। তাপে হাত-পা জ্বালাপুড়া করচি। ছায়ায় গিয়িও শান্তি নেই।’
আবহাওয়া অফিসের চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘তীব্র দাবদাহ আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে, তবে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।’
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের কালকিনিতে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে তিনজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
ওই কলেজছাত্রীর মা এ মামলা করেন বলে বৃহস্পতিবার সকালে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
মামলার প্রধান আসামি ও তার পরিবারের সদস্যরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন।
স্থানীয়, পুলিশ ও কলেজছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার একটি গ্রামের নাজমুছ সাকিবের সঙ্গে একই এলাকার কলেজছাত্রীর প্রায় দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর জেরে গত শুক্রবার রাতে ওই কলেজছাত্রীকে তার বসতঘরে একা পেয়ে ধর্ষণ করেন নাজমুছ সাকিব।
এ ঘটনা জানতে পেরে স্থানীয় লোকজন সালিশ করে নাজমুছ সাকিবকে জিজ্ঞাসা করলে ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে করবেন বলে তিনি আশ্বাস দেন, কিন্তু সালিশের বেশ কয়েক দিন পার হলেও ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে না করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান সাকিব।
পরে কলেজছাত্রীর মা বাদী হয়ে নাজমুছ সাকিবসহ তার পরিবারের তিনজনকে আসামি করে আদালতে ধর্ষণের মামলা করেন। এর প্রেক্ষাপটে থানা পুলিশ ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে চিকিৎসা পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়।
মামলার বাদী কলেজছাত্রীর মা বলেন, ‘আমার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণ করেছে নাজমুছ সাকিব, কিন্তু এখন আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চায় না বলে ধর্ষণকারীসহ তার পরিবারের তিনজনের নামে আমি মামলা করেছি। আমি এর বিচার চাই।’
বিষয়টি জানার জন্য অভিযুক্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের এলাকায় পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘এই ঘটনা জানতে পেরে আমরা নাজমুছ সাকিবকে জিজ্ঞেস করলে ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেয়, কিন্তু ঘটনার বেশ কয়েক দিন পার হলেও ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে না করে ধর্ষণকারী ও তার পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়, তবে ওই যুবকের বিরুদ্ধে এই ধরনের ঘটনা আরও আছে।’
কালকিনি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ‘কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আদালতে একটি মামলা হয়েছে। পরে ওই ছাত্রীকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জে একটি মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কায় মামা-ভাগ্নে নিহত হয়েছেন।
সদরের ভৈরব মহাসড়কের কামালিয়ারচর এলাকায় বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন বাজিতপুর উপজেলার কৈলাগ গ্রামের দিলবাহারের ছেলে মামুনুর রশিদ মামুন (২৫) ও একই এলাকার আবদুল্লাহ আল রাজিবের ছেলে আশরাফুল ইসলাম লাদেন (২০)। সম্পর্কে তারা মামা-ভাগ্নে।
কটিয়াদী হাইওয়ে থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মামুন এবং তার ভাগ্নে লাদেন মোটরসাইকেল করে বাজিতপুর থেকে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে যাওয়ার সময় কামারিয়ারচর এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলটিকে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগামী বাস ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তারা।
‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় বাসটিকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।’
ওসি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
ময়মনসিংহের নান্দাইলে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
পৌর শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চারি আনি পাড়া এলাকায় বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ৩৫ বছর বয়সী নাজমা আক্তার একই এলাকার আবদুল মান্নানের স্ত্রী। তিনি চার সন্তানের মা।
নান্দাইল মডেল থানার ওসি আবদুল মজিদ বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া শেষে রাতে পান কিনতে বের হন নাজমা আক্তার। বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় পরিবারের লোকজন তার খোঁজ শুরু করলে সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে ধানক্ষেতে ওই নারীকে ক্ষতবিক্ষত উলঙ্গ অবস্থায় মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা।
‘পরে খবর পেয়ে নাজমার পরিবারের লোকজন গিয়ে তাকে শনাক্ত করে। এরপর পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চাঁন মিয়া, ফাহিম ও নাঈম নামে তিন যুবককে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। নাজমার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা প্রক্রিয়াধীন।’
আরও পড়ুন:গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে গরু চুরি মামলার এক আসামির ছুরিকাঘাতে ওই মামলার বাদী হত্যার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তি মারা যান।
নিহত রাহিদুল ইসলাম বাবু (৩২) উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের পূর্বগোপালপুর গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে।
বুধবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নে আমলাগাছি-ঢোলভাঙা সড়কের বেলতলা নামক এলাকায় হামলা চালিয়ে আহত করা হয় তাকে।
মামলার জেরেই রাহিদুলকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
গাইবান্ধার সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) উদয় কুমার সাহা নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, চলতি বছরের একটি গরু চুরি মামলার বাদী ছিলেন রাহিদুল ইসলাম। আর ওই মামলর আসামি ছিলেন খলিলসহ অন্যরা।
উদয় কুমার বলেন, সেই মামলার জেরে বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মহদীপুর ইউনিয়নে আমলাগাছি-ঢোলভাঙা সড়কের বেলতলা নামক এলাকায় একই মামলার আসামিরা পরিকল্পিতভাবে রাহিদুলের ওপর হামলা চালায়। ওই সময় হামলাকারীরা রাহিদুলের বুকে ছুরিকাঘাত করে। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তিনি মারা যান।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক পুলিশি তদন্তে আসামিরাই রাহিদুলকে হত্যা করেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঘটনার পরপরই একজনকে আটক করা হয়েছে। চুরি মামলার মূল আসামি ও ঘটনার সাথে জড়িত খলিলসহ অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতিও চলছে।
মন্তব্য